পালিয়ে বিয়ে – পর্ব ৫-৮

0
202

#পালিয়ে_বিয়ে
#Concept_2
#Part_5
#Written_By_Nilima_Zabin_Tanmona

অরুনিমার সাথে অর্নীল মিটিং করলো আর পাশে বসে ছিল মিম। কনফারেন্স এর সময় অরুনিমা একটা কথাও শোনেনি অর্নীলের। সারাক্ষণ শুধু রাগে ফুঁসছিল। কনফারেন্স শেষ হওয়ার পর অরুনিমা অর্নীলকে বলল

-স্যরি মিস্টার চৌধুরী এইবার প্রজেক্ট আপনাকে আমি দিতে পারবনা।
-As your wish! আমিও ভেবেছি এখন থেকে অরুনিমা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রির কোনো প্রজেক্ট চৌধুরী গ্রুপ নিবেনা।
-Whattt? তুমি আমার কোম্পানির প্রজেক্ট রিফিউজ করছো? (রেগে গিয়ে অরুনিমা) ভাবতে পারছো তোমার কত কোটি টাকা লস হবে???
-জীবনে এত টাকা ইনকাম করেছি যে আমার পরবর্তী প্রজন্মরাও বসে বসে খেলে শেষ হবেনা। আর এই প্রজেক্ট এ বড়জোর ২০০ কোটি টাকা লস যাবে। এতে আমার কিছু আসে যায়না। মিমের খুশির কাছে এই টাকা কিছুই না।
-এত অহংকার তোমার অর্নীল?
-সেইটা তো জানার কথা!!
-তুমি অন্ধ হয়ে গেছো সিম্পলি তুমি অন্ধ হয়ে গেছো এই ফালতু মেয়েটার পাল্লায় পরে৷ (চিল্লিয়ে অরুনিমা)
-How dare you?? মিমকে ফালতু মেয়ে বলার সাহস তুমি কোথায় পেলে? (অরুনিমাকে থাপ্পর মেরে অর্নীল)
-অর্নীল?? (অর্নীলের দিকে তাঁকিয়ে অরুনিমা) তোমার এত বড় সাহস তুমি তোমার বউয়ের সামনে আমায় মারলে? (অরুনিমার রাগ কন্ট্রোলের বাইরে চলে গেছে) অরুনিমা খান কে তুমি চড় মারলে!! (অর্নীলের টেবিলের উপরে থাকা গ্লোব ছুঁড়ে মেরে অরুনিমা)

অরুনিমার এই রুপ দেখে মিম বসা থেকে দাঁড়িয়ে গেল। অর্নীল বলল

-এখন শুধু চড় মেরেছি এরপর যে কি করব সেইটা আমি নিজেও জানিনা। Get out. I say out (চিৎকার করে অর্নীল)
-ঠিক আছে আজ চলে যাচ্ছি বাট I will see you! (মিমের দিকে আঙুল তুলে অরুনিমা)

অরুনিমা চলে গেল। মিম অর্নীলের শার্ট খামচে ধরে বলল

-আপনি মারলেন কেন ওনাকে?
-ও যা বলেছে এইটা ওর জন্য অনেক কম হয়ে গেছে।(রাগ হয়ে বসে পরলো অর্নীল)

মিম অর্নীলের থেকে একটু দূরে দাঁড়ালো। অর্নীল এতে অনেক কষ্ট পেলো। অর্নীল মিমকে টান দিয়ে নিজের কোলে বসালো।

-তুমিও কি আমার থেকে দূরে সরতে চাইছো? (মিমের মুখের উপর মুখ রেখে)
-না। আপনি এখন অনেক রেগে আছেন তাই আপনার সামনে আসতে ভয় লাগছিল।
-তুমি আমাকে ভয় পাও?
-তেলাপোকার থেকেও বেশি৷

এই কথা শুনে অর্নীল হেসে দিল। মিম ও হেসে দিল৷

অন্যদিকে অরুনিমা সোজা অর্নীলের আম্মুর কাছে যায়।

-আন্টি আন্টি! (খুব জোরে চেঁচাচ্ছে অরুনিমা)
-কি হয়েছে অরুনিমা? তুমি হঠাৎ আমাদের বাড়িতে? (অনু)
-দি আন্টি কোথায়? আন্টির সাথে আমার কথা আছে।
-হ্যা বল। (সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামতে নামতে অর্নীলের আম্মু)
-আন্টি আজকে অর্নীল কি করেছে জানেন? (রাগে এখনো চোখ লাল হয়ে আছে অরুনিমার)
-কি করেছে?
-ও আজকে আমায় থাপ্পর মেরেছে ওই ফালতু মেয়েটার জন্য আন্টি। আজকে ওই মেয়েটাকে নিয়ে অর্নীল মিটিং এটেন্ড করেছে। আমার কোম্পানির প্রডাক্ট ও রিফিউজ করেছে৷
-Whattt? অর্নীল তোমায় মেরেছে? (অবাক হয়ে অর্নীলের আম্মু)
-হ্যা আন্টি। বাপি যদি জানে তাহলে সে অর্নীলকে মেরে ফেলবে। আন্টি আপনি আমায় বলেছেন অর্নীলই আমার স্বামী হবে৷। আজকে ৪ বছর ধরে ওর জন্য আমি অপেক্ষা করছি। কই আন্টি আমি তো অর্নীলকে পেলাম না। উলটো ও ওই রাস্তার মেয়েটাকে বিয়ে করেছে তাও কাউকে না জানিয়ে। আমার সব স্বপ্ন,,সব চাওয়া ওই রাস্তার মেয়েটা নষ্ট করে দিয়েছে। আন্টি আমি ছাড়ব না ওই মিমকে। (নিজের হাত নিজে মুঠো করে অরুনিমা)
-শান্ত হও। আপাতত তোমার বাপিকে এসব বলার দরকার নেই৷ আমি দেখছি। (অর্নীলের আম্মু অরুনিমাকে শান্তনা দিয়ে)
-আন্টি যে কোনো কিছুর বিনিময়ে আমি আমার অর্নীলকে চাই ই চাই। এতে যদি আমাকে সর্বোচ্চ খারাপ হতে হয় আমি তাইই হব। চললাম আমি।

অরুনিমা চলে গেল। অর্নীলের আম্মুকে অনু বলল

-আম্মু তুমি কি ঠিক করছো? মিমের মত শান্ত শিষ্ট মেয়েই তো সব মা তার বউমা হিসেবে চায়। আর তুমি এভাবে কেন অরুনিমাকেই ভাইয়ের বানাতে চাইছো? ভাইয়ের কথা তো তোমার ভাবা উচিৎ।
-অনু! অর্নীল কি ভেবেছিল আমার কথা? আমার মান সম্মান স্ট্যাটাস এর কথা কি ও ভেবেছিল? শেষমেশ ও #পালিয়ে_বিয়ে করল!!! ছিঃ
-মা ভাইয়ের কোনো দোষ নেই। ও ঠিক কাজই করেছে। যাকে ভালবাসে তাকে বিয়ে করেছে। তাছাড়া মিম কম কিসে? অরুনিমার চেয়েও বেশি সুন্দর মিম। শিক্ষিত আর নম্র, ভদ্র। তাহলে প্রবলেম কি ওর টাকা নেই তাই??
-হ্যা সেইটাই। আর আমি মিস্টার খানকে কথা দিয়েছি অরুনিমাই হবে চৌধুরী পরিবারের একমাত্র বউ। যেভাবেই হোক আমি অর্নীলকে ওই মেয়ের থেকে নিয়ে আসবই৷ ওই মেয়ের জন্য ও বাড়ি ছেড়েছে,,আমায় মা বলে ডাকেনা,,আমার কাছে আসেনা। (কেঁদে দিলে মিসেস চৌধুরী)
-কেঁদো না। (মিসেস চৌধুরীকে শান্তনা দিল অনু)

এদিকে অরুনিমা সারাদিন কিছু খায়নি। অর্নীলের প্রেমে পুরো পাগল অরুনিমা। অর্নীলের জন্য যা খুশি করতে পারে অরুনিমা। মিম ও যে পাগলের মত ভালবাসে অর্নীলকে। নিজের থেকে বেশি বিশ্বাস করে ও অর্নীলকে। আর অর্নীলের দুনিয়া হচ্ছে মিম।

ওইদিন অর্নীল তারাতারি অফিস শেষ করে মিমকে নিয়ে বাড়ি চলে এলো। বাইরে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি পরছে। অনেক অন্ধকার হয়ে গেছে বাইরে। সন্ধ্যা শেষ হয়েছে। অর্নীল খাটে মিমের কোলে মাথা দিয়ে শুয়ে আছে আর মিম জানালা দিয়ে বাইরে বৃষ্টি দেখছে। অর্নীল মিমের দিকে তাঁকালো। মিমের দিকে ঘুরে অর্নীল বলল

-বাইরে কি?
-বৃষ্টি।
-এভাবে এক দৃষ্টিতে কেউ বৃষ্টি দেখে নাকি?
-দেখতে যে হবেই কারণ এই বৃষ্টি তেই তো শুরু হয়েছিল অর্নীল মিমের জীবনের পথচলা। এই বৃষ্টিতেই তো মিম এসেছিল অর্নীলের কাছে।
-মনে রেখেছো তুমি? (মিমের হাত ধরে অর্নীল নিজের বুকের উপর রেখে)
-চাইলেও তো ভুলা যাবেনা।

…………৩ বছর আগে………

অর্নীল অফিস থেকে বাসায় ফিরছে গাড়ি নিয়ে। বাইরে প্রচন্ড বৃষ্টি। ঠিকমত গাড়ি ড্রাইভ করা কষ্টকর। রাত তখন ৯ টা। অর্নীলের আম্মু ফোন দিল অর্নীলকে।

-আব্বু তুমি কোথায়? বাইরে তো প্রচন্ড বৃষ্টি।
-হ্যা আম্মু। আমি আসছি। রাস্তায় আছি।
-সাবধানে এসো।
-হুম। এখন বাই।
-ওকে বাই। আর সাবধানে কিন্তু।
-ওকে আম্মু।

অর্নীল ফোন কাটতে কাটতেই দেখলো গাছের নিচে একটা মেয়ে বসে আছে আর শীতে প্রচন্ড কাঁপছে। অর্নীল গাড়ি থামালো। এরপর গাড়ি থেকে নেমে মেয়েটার কাছে গেলো। অর্নীল ব্লেজার খুলে মেয়েটাকে দিল। আর মেয়েটা অর্নীলের দিকে তাঁকালো। মেয়েটার তাঁকানো দেখে অর্নীল পুরো স্টপ হয়ে গেল। এত সুন্দর একটা মেয়ে হয় কি করে???

-হ্যালো। তুমি এখানে এইভাবে বসে আছো কেন?
-আমি বাসায় যেতে পারছিনা। ভার্সিটির বাস মিস করেছি। (বলেই মেয়েটা কাঁদতে শুরু করলো)
-বাসা কোথায় তোমার?
-গ্রিন লেইন রোড,,রামপুরা।
-চল আমি তোমায় বাসায় ছেড়ে আসছি।

আর কিছু বলার আগেই মেয়েটা সেন্সলেস হয়ে যায়। মেয়েটার চুল অর্নীলের ঘড়ির সাথে আটকে যায় আর অর্নীল মেয়েটাকে ছুঁতেও দ্বিধা বোধ করছে। নিজের দি কেই কোনোদিন ছোঁয়নি বড় হয়ে আর এই মেয়েটাকে কিভাবে ছোঁবে? অর্নীল সম্পুর্ণ ভিজে গেছে। অতশত আর না ভেবে অর্নীল মেয়েটাকে কোলে নিয়ে গাড়িতে বসায়। মুখ সাদা হয়ে গেছে মেয়েটার। অর্নীল দ্রুত গাড়ি চালায় আর গ্রিন লেইন রোডে যায়। এখানে দুইটা বাড়ি তাও ভাঙাচূড়া। এখন অর্নীল বুঝতে পারছেনা মেয়েটার বাড়ি কোনটা! এইদিকে মেয়েটার কন্ডিশন ও ভাল না। অর্নীল সিট বেল্ট খুলে গাড়ি থেকে নামে আর প্রথম বাড়িটায় নক করে।

-এক্সকিউজমি! আমি আসলে একটা মেয়েকে বৃষ্টিতে ভিজতে দেখেছিলাম রাস্তায়। আপনাদের কি কেউ মিসিং? মেয়েটা এই রোডের ঠিকানাই দিয়েছিল। ভার্সিটির বাস মিস করেছিল।
-হ্যা আমার আপু মিম। কোথায় সে? (মিমের চাচাত বোন রিন্তি)
-আমার গাড়িতেই। সেন্সলেস হয়ে আছে ও। আমি নিয়ে আসছি।

এরপর অর্নীল মিমকে ওর ঘরে দিয়ে একবার পিছন ফিরে চলে যায়। সারারাস্তা অর্নীল আনমনে ছিল। বারবার মিমের বসে থাকা জায়গাটায় তাঁকাচ্ছিল। বারবার চাইছে মেয়েটার চিন্তা মাথা থেকে বের করে দিতে কিন্তু পারছেনা অর্নীল। মেয়েটার মায়াভরা মুখটাই মনে পরছে বারবার। অর্নীল বাসায় এসে ফ্রেশ হলো। ডিনার করতে গিয়ে কিছু খেল না। ভাল লাগছেনা!

-ভাই কি হয়েছে? খাচ্ছিস না কেন? (অনু)
-দি ভাল লাগছেনা। খাব না।
-অল্প একটু খা।
-না। আমার ঘরে এক কাপ কফি পাঠিয়ে দিস।
-ভাই শ্যুগারের ওষুধ টা তো খেতে হবে।
-দি যা বলেছি তাইই করিস।

এই কথা বলে অর্নীল চলে গেল নিজের ঘরে। বারান্দায় দাঁড়িয়ে বৃষ্টি দেখছে আর কফি খাচ্ছে অর্নীল। কোনোদিন ও অর্নীল বৃষ্টি দেখেনি আর কোনো মেয়ের কথা মাথায় ও আনেনি। কিন্তু আজ তো ওই মেয়ের ভাবনা সরছেই না!!! অর্নীল নিজেই নিজেকে বলল

-ছিঃ অর্নীল তুই কোনো মেয়ের কথা ভাবছিস!!

ল্যাপটপ নিয়ে অফিসিয়াল কিছু কাজ করলো অর্নীল রাত ২ টা পর্যন্ত। এরপর ঘুমিয়ে গেল।

পরেরদিন সকালবেলা অর্নীলের অফিসে……

-Good morning Sir. (অর্নীলের পিএ শৈলি) আপনার সাথে কিছু কথা ছিল।
-তারাতারি বল।
-স্যার জবি’র প্রিন্সিপাল এসেছেন। দেখা করতে চাইছেন আপনার সাথে।
-আসতে বল। (কম্পিউটারের দিকে তাঁকিয়েই)
-আসব? (প্রিন্সপাল)
-প্লিজ স্যার। (দাঁড়িয়ে অর্নীল) বসুন।
-মিস্টার চৌধুরী আপনাকে আমি ইনভাইট করতে এসেছি।
-কিসের?
-আগামীকাল জবি’র একটা স্পেশাল অনুষ্ঠান আছে। চিফ গেস্ট হিসেবে আপনি থাকবেন প্লিজ।
-স্যার যদিও আমি ভার্সিটির কোনো ফাংশনে যাইনা। বাট কালকে চেষ্টা করব। যেহেতু আপনি নিজে এসেছেন।
-ধন্যবাদ আপনাকে।
-স্যার কি খাবেন বলুন?
-না মিস্টার চৌধুরী এখন কিছু খাব না। আসছি আমি। আপনার অপেক্ষায় থাকব। আপনি না আসলে সিরিমনি শুরু হবেনা।
-আমি আসব। (হ্যান্ডশেক করে অর্নীল)

-শৈলি?
-Yes Sir
-কালকের মিটিং ক্যান্সেল করে দাও। আর কালকে আমি আসব না অফিসে। তুমি আর ম্যানেজার মিলে সব ঠিক রেখো। প্রবলেম হলে কল করো।
-জ্বি স্যার।

অর্নীল ভাবছে মেয়েটা কেমন আছে কে জানে? আর নামটা সুন্দর “মিম”।

পরেরদিন অর্নীল আধা ঘন্টা লেইট করে ভার্সিটি তে গেলো। সবাই অর্নীলের পথপানে চেয়েছিল। সবাই জানে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেসম্যান অর্নীল চৌধুরী আজকে আসছে চিফ গেস্ট হিসেবে। সবাই অর্নীলকে দেখে খুশি হয় আর ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানায়। সব মেয়েরা ক্রাশড অন অর্নীল। সবাই হা করে দেখছিল অর্নীলকে। এতদিন শুধু নিউজেই দেখেছে আর আজ বাস্তবে!! অর্নীল ওর চেয়ারে বসলো আর ঠিক তখনি এনাউন্সমেন্ট যে করছিল সেই মেয়ের দিকে তাঁকালো অর্নীল। মেয়েটাকে দেখে অর্নীল দাঁড়িয়ে গেল আর সানগ্লাস খুলে দেখলো মেয়েটাকে। এইটা তো সেই মায়াবতী!! মনে মনে বলল অর্নীল।

চলবে#পালিয়ে_বিয়ে
#Concept_2
#Part_6
#Written_By_Nilima_Zabin_Tanmona

অর্নীল এনাউন্সমেন্ট করার সময় দাঁড়িয়ে গেল। নিজের চোখ থেকে সানগ্লাস খুলে অবাক চোখে তাঁকিয়ে রইলো মেয়েটির দিকে। আরে এ তো সেই মায়াবতী!! মনে মনে বলল অর্নীল। এরপর অর্নীল একটু মুচকি হেসে নিজের জায়গায় বসে পরলো। অনুষ্ঠান পুরোটাই মিম হোস্ট করেছে। অর্নীল যে ঠিক কতবার আঁড়চোখে মিমকে দেখেছে সেইটা সে নিজেই জানেনা। অনুষ্ঠান শেষে অর্নীল সেখান থেকে বেরিয়ে আসে। অর্নীল গাড়ির লক খুলতে যাবে ঠিক তখন-ই পেছন থেকে কেউ স্যার বলে ডাকলো। অর্নীল পেছনে তাঁকালো।

-আপনি কে? (অর্নীল)
-স্যার পরশুরাতে যে আমার বোন মিমকে নিয়ে আমাদের বাসায় এসেছিলেন। মনে নেই?
-ওহ! রিন্তি না কি যেন??
-হ্যা স্যার রিন্তি।
-আপনার বোন এখন কেমন আছে?
-জ্বি ভাল। ও এই ভার্সিটির স্টুডেন্ট। কথা বলে যান ওর সাথে। আর ও তো জানেনা যে আপনিই ওকে ওইদিন বাসায় এমেছিলেন।
-That’s doesn’t matter!! ওকে বাই।
-ওকে স্যার।

এরপর অর্নীল চলে গেল। রিন্তি মনে মনে বলল

-এত হ্যান্ডসাম কেন উনি? ইশ ওইদিন ভেজা অবস্থাতে দেখেই প্রেমে পরে গিয়েছি। আর আজ এই লুকে!! অর্নীল চৌধুরী বাস্তবে এতটা সুন্দর বুঝতাম না যদি এখন না দেখতাম। ☺☺☺☺

রিন্তির ভাবনার ছেদ ঘটালো মিম।

-কিরে রিন্তি কি ভাবছিস বাসায় যাবি না?
-অর্নীল চৌধুরীর সাথে দেখা হয়েছিল।
-উনি তো আজকের চিফ গেস্ট ছিলেন। হতেই পারে দেখা।
-পরশু রাতে উনিই তোকে সাহায্য করেছিলেন।
-কিহ? এসব কি বলছিস?
-তোর কি মনে নেই?
-না। ওনার চেহারা তো আমি ওইদিন ভাল মত দেখিইনি। শিট! আজকে তো অন্তত থ্যাংকস দিতে পারতাম যদি জানতাম। 😑😑
-চল চল। আর থ্যাংকস দিয়ে লাভ নেই। বাসায় চল।
-হুম চল।

অর্নীল সোজা বাসায় গেল। বাসায় গিয়ে চেয়ারে বসে পরলো। চোখ বন্ধ করে দুলছে আর আজকের কথা ভাবছে।

-আচ্ছা ওই মেয়েটাকে দেখার পর আমার এমন কেন হচ্ছে? গত দুইটাদিন ধরে আমি ঠিকঠাক যে কিছুই করতে পারছিনা। অর্নীল চৌধুরীর এমন কেন হবে? মনে হচ্ছে শ্যুগার ও বেড়ে যাবে। (এসি থাকা সত্ত্বেও অর্নীল রীতিমতো ঘামছে) এরই মাঝে অরুনিমা কল করলো অর্নীলকে।

-হ্যা অরুনিমা বল।
-তুই কোথায়? আজকে না আমার অফিসে আসার কথা তোর।
-আজকে আর কোথাও বের হব না।
-অর্নীল It’s not fare. আজকে ভেবেছিলাম তোকে নিয়ে ঘুরতে যাব আর তুই?
-What? আমি যেতে পারব না।
-অর্নীল প্লিজ!! তুই সবসময় আমায় avoid করিস কেন বল তো? সেই ছোট থেকে একসাথে পড়াশোনা করেছি। আর তুই কিন্তু জানিস আমি তোকে ভালবাসি। তাও আমায় এইভাবে কেন avoid করিস?
-অরুনিমা তোকে আগেই বলেছি আমার দ্বারা এসব সম্ভব না। আর হ্যাঁ তোকে তো না ই। আর আজকেও শুনে রাখ তুই জাস্ট আমার ফ্রেন্ড আর একজন বিজনেস পার্টনার। যথেষ্ট রেসপেক্ট দেই। সেই রেসপেক্ট নিজে নষ্ট করিস না। বাই।

অর্নীল অরুনিমার সাথে কথা বলে ফোন কেটে দিল। অরুনিমাও মন খারাপ করে অফিস থেকে বাসায় চলে এলো।

অর্নীলের দিন অফিস আর বিজনেস নিয়েই কেটে যায়। আর কয়েকদিন পর পর ট্যুরে যেতে হয় বাইরে।

হঠাৎ একদিন………

অর্নীল খুব দ্রুত বাসা থেকে বেরিয়ে যায়। অনেক জোরে ড্রাইভ করছে। কারণ অফিসে আজ একটা ইম্পরটেন্ট মিটিং আছে। অরুনিমা অলরেডি ৩ বার কল করে ফেলেছে। অর্নীল মনে মনে নিজেকে বকতে শুরু করলো। ৪৫ মিনিটের রাস্তা অর্নীল ২৬ মিনিটে গেলো। দৌঁড়ে কনফারেন্স রুমে গেল। কোনোদিন অর্নীল কাউকে স্যরি আর প্লিজ বলেনি। আজ লেইট হওয়া সত্বেও অর্নীল স্যরি বলল না। কনফারেন্স রুমে ঢুকেই সবাইকে বলল

-Let’s start.
-৪০ মিনিট লেইট অর্নীল। কোথায় ছিলি? (অর্নীলের সামনে গিয়ে অরুনিমা)
-পরে বলি। এখন কাজ শুরু কর৷
-একটাবার তো স্যরি বলতে পারতিস? ওনারা এতক্ষণ ওয়েট করছে।
-এক্সকিউজমি??😏😏😏। কাকে কি বলছিস তুই?? যা নিজের জায়গায়। (সামান্য মুখ ভেঙিয়ে অর্নীল)

এরপর অর্নীল কনফারেন্স শুরু করলো। ৫০ মিনিট পর অর্নীল সেখান থেকে বেরিয়ে এলো।

-কিরে তুই লেইট করলি কেন? (পেছন পেছন অরুনিমা)
-ঘুমাচ্ছিলাম। (নিজের কেবিনে ঢুকে অর্নীল)
-Like seriously? তুই ঘুমাচ্ছিলি? (হেসে দিয়ে অরুনিমা)
-কেন? আমি কি ঘুমাইনা?
-তুই আর্জেন্ট মিটিং ভুলে যাবি। এমন ঘুম কোনোদিন ই ঘুমাস না। কাহিনী কি বল তো?
-কাজ করতে দে। তোর অফিসে যা। (কম্পিউটারের দিকে তাঁকিয়ে অর্নীল)
-তুই কি আমায় তাড়িয়ে দিচ্ছিস?
-আজকে আমার অফিসে employee এপয়েনমেন্ট আছে সো আমি বিজি। বিরক্ত করিস না যা।
-যাচ্ছি। বিকেলে অফিস শেষে রেস্টুরেন্টে যাব। মাথায় যেন থাকে।
-আমি পারব না।
-অর্নীল প্লিজ সবসময় না না করিস না তো।
-অরুনিমা এইবার কিন্তু লিমিট ক্রস হয়ে যাচ্ছে। (অরুনিমার দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাঁকিয়ে অর্নীল)
-ওকে বাবা যাচ্ছি। Bye see you soon.

অর্নীলকে বাই জানিয়ে অরুনিমা চলে গেল।

-স্যার সবাই বাইরে ওয়েট করছে। ভাইবা শুরু করব? (অর্নীলের পিএ)
-ইয়াহ। আর তুমি দেখো সব। আমাকে টেনো না এর মাঝে।
-স্যার! আপনি নিবেন না?
-না। কারো এক্সপিরিয়েন্স দেখার দরকার নেই। রেজাল্ট ভাল হলে নিয়ে নিও। স্পেশালি যারা রিসেন্টলি পাস করেছে ওদের প্রায়োরিটি বেশি দিও।
-কিন্তু স্যার এই কোম্পানি টপে আছে আপনার মেধা আর শ্রম দিয়ে। সেখানে এক্সপিরিয়েন্স ছাড়া কিভাবে আমি লোক নিব?
-শৈলি তুমি হয়ত ভুলে যাচ্ছো এক্সপিরিয়েন্স দিয়ে কাজ হয়না। রিসেন্টলি যারা পাস করেছে হয়ত এইটাই তাদের প্রথম জব। তাদের এক্সপিরিয়েন্স আসবে কোথা থেকে? আজকাল এক্সপিরিয়েন্স এর জন্য এরা বেকার। বাট চৌধুরী গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিতে এসব রুলস নেই। তারা এখানে থেকে শিখবে আর জানবে।
-রিয়েলি স্যার U r great. আমি তাহলে শুরু করছি।
-হুম।

শৈলি চলে যাওয়ার পর অর্নীল ফাইল চেক করছিলো। সেখানে মিম ও ছিল। শৈলি যখন মিমের ভাইবা নিচ্ছিলো তখন অর্নীল শৈলিকে কল করে।

-হ্যা স্যার বলুন।
-মেয়েটাকে আমার কেবিনে নিয়ে আসো৷
-জ্বি স্যার আসছি।

শৈলি মিমকে অর্নীলের কেবিনে নিয়ে এলো। অর্নীল ইশারা দিয়ে শৈলিকে চলে যেতে বলল। মিমকে বলল

-বসুন। (চেয়ার দেখিয়ে)
-চুপচাপ বসলো মিম।

হঠাৎ অর্নীলের হার্টবিট বেড়ে গেল। অর্নীল খুব অস্বস্তি ফিল করছে। চোখ বন্ধ করে অর্নীল নিজেকে কন্ট্রোল করলো। মিমকে জিজ্ঞেস করলো

-What’s your name?
-মিম।
-সার্টিফিকেটস?
-এই যে স্যার। (মিম একবারো তাঁকায়নি অর্নীলের দিকে)
-এখানে জাস্ট ইন্টার মিডিয়েট সার্টিফিকেট আছে। এই সার্টিফিকেট দিয়ে কোনো কোম্পানি চাকরি দেয়না। (সার্টিফিকেট গুলো মিমের দিকে দিয়ে)
-আমি জানি স্যার। আমার অনার্স কম্পলিট। মাস্টার্স এ এডমিট হতে পারছিনা একটা জব না হলে।
-ফাইনান্সিয়াল প্রবলেম?
-মিম মাথা নাড়ালো।
-আপনার পেরেন্টস?
-নেই।
-থাকছেন কোথায়?
-চাচার বাড়িতে। এতদিন বাবার সেভিংস দিয়ে পড়াশুনা করেছি কিন্তু এখন আর সম্ভব নয়। কিন্তু আমি পড়াশুনা ছাড়তে চাইনা। (মিমের মন খারাপ হয়ে গেলো)
-বাসায় চলে যান। আপনার জব এপলিকেশন এপ্রুভ হচ্ছেনা।
-কিন্তু স্যার এইটা যে আমার খুব বেশি দরকার।
-জবির স্টুডেন্ট তো আপনি?
-হুম।
-যাই হোক সার্টিফিকেট গুলো নিয়ে বেরিয়ে যান।

এরপর মিম সেখান থেকে চলে এলো। অর্নীল সাথে সাথে ফোন হাতে নিল। প্রিন্সিপালকে ফোন দিল অর্নীল।

-স্যার অর্নীল চৌধুরী বলছি।
-জ্বি মিস্টার চৌধুরী বলেন৷
-রিসেন্ট অনার্স পাস করা মেয়ে মিম। আপনার ভার্সিটির স্টুডেন্ট। কালকে থেকে ও মাস্টার্স ক্লাস করবে। ওর এডমিশন ফরম নিব আমি।
-মিস্টার চৌধুরী ওকে।
-আমি আমার PA কে পাঠিয়ে দিচ্ছি। এক্ষুণি দিয়ে দিবেন।
-জ্বি মিস্টার চৌধুরী।

শৈলি ফরম এনে অর্নীলের হাতে দিল। সাথে মিমের কনটাক্ট নাম্বার ও এনে দিল শৈলি। অর্নীল নাম্বার টা ফোনে সেইভ করলো মিম নাম দিয়ে। বিকেলে অরুনিমা কল দিচ্ছিলো কিন্তু অর্নীল রিসিভ করলো না। সন্ধ্যায় অর্নীল বাসায় যাওয়ার সময় লেকের পাশে এসে দাঁড়ালো। মিমকে কল করলো অর্নীল। কিছুক্ষণ পর রিসিভ ও করলো মিম।

-কে বলছেন?
-কালকে থেকে ভার্সিটি তে যাবেন। আপনার এডমিশন হয়ে গেছে।
-মানে? আপনি কে বলছেন?
-Well wisher.
-নাম?
-হবে কিছু একটা।
-প্লিজ বলুন। কে আপনি?
-By the way আর কোথাও আপনি জবের জন্য এপ্লাই করবেন না।
-আপনি কি করে জানেন আমি জবের জন্য এপ্লাই করছি? (মিম অবাকের পর অবাক হচ্ছে)
-জানতে হয়। Anyways talk to you soon. Bye. Take care.

অর্নীল ফোন কেটে দিল। ফোন কাটার পর অর্নীল নিজেই নিজেকে বলছে “এই মেয়েটার সাথে কথা বললে আমার এমন হয় কেন?” অর্নীল বাসায় চলে আসে। ফ্রেশ হয়ে স্ন্যাকস করে অর্নীল। অর্নীলের এই অস্বাভাবিক আচরণ অনুর চোখে পরলো কিন্তু অণু কিছু বলল না অর্নীলকে।

অর্নীল রাতে ঘুমাতে গেলো ১ঃ৩৩ এ। ফোন নিয়ে ঘাটাঘাটি করছিল হঠাৎ মিমের কথা মনে পরে যায়। তখন মিমকে ফোন না দিয়ে টেক্সট করলো অর্নীল।

-Hey!! Ghumiyesen? (হে ঘুমিয়েছেন)

কিছুক্ষণ পর মিম রিপ্লাই দিল

-R you mad? Eto rate ekta meyek kono vodro chele text korena.(আর ইউ ম্যাড? এত রাতে একটা মেয়েকে কোনো ভদ্র ছেলে টেক্সট করেনা)
-seriously? Tahole hoyto ami ovodro. 😁😁(সিরিয়াসলি? তাহলে হয়ত আমি অভদ্র)
-ajeeb chele. Good bye. 😡(আজিব ছেলে গুড বাই)
-Take care mayaboti. (টেক কেয়ার মায়াবতী)
-apni amy chinen kivabe bolun tow? (আপনি আমায় কিভাবে চিনেন বলুন তো?)
-2 eye,,1 look, 1 point just 1 shoot. (2 চোখ, 1 দৃষ্টি,,1 পয়েন্ট, মাত্র একটা শুট)
-asolei apni pagol. 😂😂😂😂(আসলেই আপনি পাগল)
-BTW eto rate apni jege asen kno? (যাইহোক এত রাতে আপনি জেগে আছেন কেন)
-kaj korchi. (কাজ করছি)
-ki kaj? (কি কাজ)
-papers ready korci new job er. (পেপারস রেডি করছি নিউ জবের)
-emn ta vulew korben na. Tahole ami ekhon jevabe kotha bolsi thik tar ulta hye jabo. (এমন টা ভুলেও করবেন না। তাহলে আমি এখন যেভাবে কথা বলছি ঠিক তার উলটা হয়ে যাব)
-ke apni?(কে আপনি?)
-well wisher. (ওয়েল উইশার)

চলবে

Climax abhi baki hein😋😋#পালিয়ে_বিয়ে
#Concept_2
#Part_7
#Written_By_Nilima_Zabin_Tanmona

অর্নীল অনেক রাত পর্যন্ত মিমের সাথে টেক্সট আদান প্রদান করলো। মিম ও এক সময় রেগে গেছে। মিম অর্নীলের উপর রেগে গিয়ে লাস্ট এসএমএস লিখলো

-ki prblm apnr? Amr phn er balance zacche tow😡
-Nothing matter. BTW ghuman. Have a nice dream. Shuvo ratri☺

এরপর মিম আর কোনো রিপ্লাই দিল না। রাত তখন ৩ টা ৫৬. অর্নীলের ঘুম আসছেনা। বারবার মেসেজগুলো রিড আউট করছে অর্নীল। একটা সময় অর্নীল ইঠেউঠে গিয়ে বারান্দায় দাঁড়ালো আর চাঁদের আলোতে নিজেকে রাঙিয়ে তুলল। অর্নীল মনে মনে ভাবছে

-মিমের কথা শুনলেই কেন আমার এমন হচ্ছে? নিজেকে তো কন্ট্রোল করা সম্ভব হয়না তখন। আচ্ছা আমি এত কেন ভাবছি ওর কথা? অর্নীল চৌধুরী এভাবে কোনো মেয়ের কথা ভাবতে পারেনা। (অর্নীল নিজেই নিজের উপর বিরক্ত)

বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতেই ফজরের আজানের শব্দ শুনলো অর্নীল। নিজে ঘড়ির দিকে তাঁকিয়ে দেখলো ৫ঃ০৭. এরপর অর্নীল ট্রাউজার আর শু পরে মর্নিং ওয়াকে বের হয়। আজকে অনেকক্ষণ দৌঁড়ালো অর্নীল। বাসায় এসে এক্সারসাইজ করে, ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে যায় অফিসে। অর্নীল যে এই প্রথম পুরো রাত জেগেছে তা কিন্তু না। তবে আজকের রাত জাগাটা অনেক বেশি স্পেশাল মনে হচ্ছে অর্নীলের কাছে।

অফিস করে সন্ধ্যায় বাসায় চলে আসে অর্নীল। ল্যাপটপ নিয়ে অফিসিয়াল কিছু কাজ শেষ করে খাটে শুয়ে পরে৷ ভাবতে ভাবতে কখন অর্নীল ঘুমিয়ে গেছে সেই খবর নেই। হঠাৎ অর্নীলের ঘুম ভেঙ্গে যায় ফোনের শব্দে। অর্নীল প্রচন্ড বিরক্ত হয়। ফোন হাতে নিয়ে দেখলো call from Mim. বেশ বড় সড় ধাক্কা খেল অর্নীল মানে অবাক হলো। অর্নীল ঘুরে শুয়ে ফোন কেটে দিয়ে ব্যাক করলো।

-আপনি নিজেকে কি ভাবেন হ্যাঁ? (রেগে গিয়ে মিম)
-তুমি কি আমায় চিনো? আর হ্যা আমি কাউকে আপনি আপনি করতে পারিনা। তাই তুমি বললাম। (ঘুম চোখে অর্নীল)
-না চিনিনা। আপনি আমায় এডমিশন করিয়ে দিলেন আবার আমার সাথে কথা বললেন। আর আজকে আমার ফোনে ১০০০ টাকা রিচার্জ ও করে দিয়েছেন। আমার কি মান সন্মান নেই নাকি?
-আমি রিচার্জ করে দিয়েছি কে বলল? (অর্নীল কোলবালিশ ধরে)
-ভাব কম নিবেন। আপনার নাম্বারে আমি কালকেই টাকা ফেরত দিয়ে দিতাম কিন্তু এখন নেই তাই দিতে পারছিনা। নয়ত আপনাকে দেখিয়ে দিতাম। (প্রচন্ড রেগে আছে মিম)
-এই যে মিস কুল ডাউন। এইটা আহামরি কিছু হয়নি। রিয়েকশন টা অসহনীয় হয়ে যাচ্ছে শুধু।
-আপনি তো চরম বেয়াদব😡😡। চুরি চুরি আবার সিনাজুরি😏😏😏।
-কিহ? আমি চোর? Like seriously? (অর্নীল উঠে বসলো)
-হ্যা সিরিয়াসলি। যত্তসব। বাই।

মিম ফোন কেটে দিল। অর্নীল তো রেগে আগুন কারণ মিম অর্নীলকে চোর বলেছে। অর্নীল ঘড়িতে তাঁকিয়ে দেখলো ১১ টা বাজেনি। অর্নীল টি শার্ট আর ট্রাউজার পরা অবস্থাতেই গাড়ি নিয়ে আর ফোনটা হাতে নিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে গেল। অর্নীলকে বেয়াদব বলা!! এর মজা তো আজ ও বুঝবে৷ ৪০ মিনিট পর অর্নীল রামপুরা গিয়ে পৌঁছালো। মিমের বাসার সামনে দাঁড়িয়ে মিমকে কল করলো।

-আপনি আবার ফোন করে আমার ঘুম ভাঙ্গাচ্ছেন? আপনি কিন্তু বেশি করে ফেলছেন😡😡
-আমাকে দেখার অনেক ইচ্ছা না তোমার? বাসা থেকে বেরিয়ে আসো। আমি তোমার বাসার সামনেই। (দাঁত কটমট করে অর্নীল)
-কিহহহহ? (মিম শোয়া থেকে বসে পরলো) আপনি নির্ঘাত পাবনা ফেরত পাগল। যত্তসব। ফোন রাখুন৷
-কে পাগল time will say. Come outside right now. সময় ৩০ সেকেন্ড। Otherwise আমি তোমার বাসায় চলে যাব।
-আরে আশ্চর্য!!!

মিম কিছু বলার আগেই অর্নীল ফোন কেটে দিল। মিম খুব দ্রুত বেরিয়ে এলো। অর্নীল কালো টি শার্ট আর হোয়াইট ট্রাউজার পরা ছিল। মিম সত্যি সত্যিই একটা ছেলেকে দেখে অবাক হয়ে যায়। পেছন দিকে ঘুরে দাঁড়িয়ে ছিল অর্নীল।

-এক্সকিউজমি🙄(মিম)
-অর্নীল পেছনে ঘুরে তাঁকালো।
-অর্নীলকে দেখে মিমের চোখ বড় বড় হয়ে গেলো। মিম বারবার চোখ ঘষছে। দুই পা পেছালো মিম।
-পেছাচ্ছো কেন? 🤨🤨
-আয়ায়ায়ায়ায়াপনি? (তুতলাতে তুতলাতে মিম) অর্নীল চৌধুরী???
-এখনো সন্দেহ আছে? (ভ্রু উঁচু করে অর্নীল)
-আপনিই তাহলে আমার সাথে কথা বলতেন আর আমায় এডমিশন আপনিই করিয়েছেন? (ঢোক গিলল মিম)
-কে যেন বেয়াদব? আর কে যেন থিফ?(চোর)
-ইয়ে মানে i am extremely sorry. আমি জানতাম না তো ওইটা আপনি ছিলেন। (মাথা নিচু করে মিম) আমি অনেক বেশি লজ্জিত।
-তোমার হাত খরচ নেই?
-এসব জেনে আপনি কি করবেন?
-এভাবে কেউ দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলে অন্যকিছু ভাববে। যে জন্য এসেছি সেইটা করি আগে। এই নাও এইটা রাখো। (একটা খাম মিমের দিকে এগিয়ে দিয়ে অর্নীল)
-কি আছে এতে?
-রাখো। কি আছে বাসায় গিয়ে দেখো৷
-কিন্তু আমি নিব কেন?
-আমি দিচ্ছি তাই।
-আমি কিন্তু এর মানে বুঝছি না। এসব কি? আমিই বা কেন নিব? আর আপনিই বা কেন আমার পিছু লাগলেন?
-বেশি কথা একদমই আমার পছন্দ নয়। বাসায় যাও আর একটু পর কল দিচ্ছি রিসিভ কর। বাই৷

অর্নীল সেখান থেকে চলে এলো। গাড়িতে বসে রীতিমত ঘামছে অর্নীল। বাবাহ বাঁচলাম!! এই মেয়েটার সামনে গেলে কেন যে এত দ্রুত হার্ট পাম্প করে?? এসব ভাবছে অর্নীল।

অর্নীল ফোন দেওয়ার আগেই মিম অর্নীলকে ফোন দিল।

-মিস্টার চৌধুরী আপনাকে আমি অনেক রেসপেক্ট করি। আপনি তো আজ আমায় পুরো অপমান করলেন। টাকা কেন দিয়েছেন আপনি আমাকে? (মিম কেঁদে দিল)
-মিমের কথা শুনে অর্নীল গাড়ি ব্রেক করলো। কাঁদছো কেন?
-আমায় কি এখন আপনিও দয়া করছেন মিস্টার চৌধুরী? আমি তো দয়া নিয়েই বেঁচে আছি। তার উপর আপনি দয়া করছেন? (মিম অনর্গল কাঁদছে)
-Listen মিম আমি কাউকে দয়া করছিনা৷ আমি যাকে ভাল…..(কথা পুরোটা শেষ করলো না) কান্না বন্ধ কর।
-প্লিজ। আপনার টাকা নিয়ে যান প্লিজ। আমি ভাল আছি।
-কালকে সকালে দেখা কর। কালকেই নিব।
-কোথায় আসব?
-বেইলি গার্ডেনে।
-আচ্ছা।

মিম ফোন কেটে দিয়ে আবারো কাঁদতে শুরু করলো। এইদিকে অর্নীল পরে গেলো মহা ঝামেলায়। তবুও অর্নীলের কাছে এইটা কিছু ছিল না। অর্নীল বাসায় এসে ঘুমিয়ে গেল আর কালকের প্রিপারেশন নিচ্ছিলো। মিমের চোখে নেই ঘুমের লেশমাত্র।

পরেরদিন সকালে মিম হাতে খামটা নিয়ে বেইলি গার্ডেনে বসেছিল। তখনি অর্নীল আসলো। শার্ট আর ব্লেজার পরে। অর্নীল মিমের পাশের সিটে মুখোমুখি হয়ে বসলো। মিম অর্নীলের দিকে তাঁকালো না।

-এই নিন আপনার টাকা। (নিচের দিকে তাঁকিয়ে মিম)
-টাকা লাগবেনা তো আমার।
-প্লিজ নিন।
-ভনীতা আমার পছন্দ নয়। সরাসরি বলছি তোমাকে দেখলেই আমি কন্ট্রোলের বাইরে চলে যাই। এই কয়েকদিনে বুঝে গেছি without you i am incomplete.
-স্যার? (অবাক হয়ে মিম)

চলবে

এক্সামের প্যারায় প্যারিত😑 তাই লেইট#পালিয়ে_বিয়ে
#Concept_2
#Part_8
#Written_By_Nilima_Zabin_Tanmona

অর্নীল বেইলি গার্ডেনে গিয়ে বসলো। মিম সেখানে আগে থেকেই ছিল। অর্নীলকে দেখে মিম বলল

-এই নিন আপনার টাকা। (অর্নীলকে টাকার খাম টা এগিয়ে দিয়ে মিম)
-আমার টাকা লাগবেনা। যা বলার সেইটাই বলি৷ (মিমের থেকে কমপক্ষে 2 হাত গ্যাপ রেখে বসলো অর্নীল)
-আপনি আর কি বলবেন?
-ভনীতা আমার একদম পছন্দ নয়। যা বলছি সরাসরি। প্রথম দেখাতেই তোমায় ভাল লেগে গেছে। শুধু ভাল লেগেছে বললে ভুল হবে infact ভালবেসে ফেলেছি। (অর্নীল কথা বলতে বলতে দাঁড়িয়ে গেলো)
-প্লিজ!! আপনি তো সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মেছেন তাই আপনার কাছে attraction টাই ভালবাসা মনে হচ্ছে। আমার জীবনে ভালবাসা আসেনি আর কখনো আসবেও না। আর ২ দিনের দেখায় কেউ কাউকে আর যাই হোক ভালবাসতে পারেনা। (মিম ও দাঁড়িয়ে গেল)
-You are absolutely কারেক্ট। ভালবাসা দুই দিনে হয়না শুধু এক জোড়া চোখের ২ সেকেন্ডের চাহনিতেই যা সর্বনাশ হওয়ার হয়ে যায়। আর ভালবাসতে দুইদিন লাগেনা, ২ সেকেন্ডের সেই চাহনিই লাগে। (মিমের দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাঁকিয়ে অর্নীল)
-মিস্টার চৌধুরী আপনি ঘোরের মধ্যে আছেন। কি বলছেন আপনি এসব? যেই মেয়ে অন্যের দয়ায় বেঁচে আছে সেই মেয়ের মায়ায় কেউ পরুক সেইটা আমি চাইনা।
-এক্সকিউজ মি অর্নীল চৌধুরী কোনোদিন ঘোরে কোনো ডিসিশন নেয়নি আর এখনো নিচ্ছেনা। Whatever, অর্নীলের চোখ যেখানে একবার পরে সেই রিসোর্স অর্নীলেরই হয়ে যায়। তুমি আমায় চাও নাকি না চাও সেইটা কথা না। কথা হচ্ছে আমি তোমায় চাই। Do u got it?
-মিস্টার চৌধুরী আপনি কিন্তু আপনার লিমিট ক্রস করে ফেলছেন। কেন নিজের ইমেজ এভাবে নষ্ট করছেন??
-মিম নিজের জিনিস চাইলে কেউ কোনোদিন ইমেজ হারায় না। ইচ্ছে ছিল না বিয়ের মত ফালতু বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার কিন্তু তোমায় দেখার পর ধারণা পালটে গেছে। তোমায় চাই জাস্ট তোমায়!! (সানগ্লাস উঁচিয়ে মিমকে দেখিয়ে)
-আমি চাইছিনা আপনাকে। আপনার মত হ্যান্ডসাম,,ড্যাশিং,,ডিপ পার্সোনালিটির ছেলেকেই সব মেয়ে চায়। কিন্তু সেই স্বপ্ন আমি দেখিনা ইভেন দেখতে পারিনা। (কেঁদে দিল মিম)
-কিন্তু কেন?
-কারণ আমার সেই অধিকার নেই।
-যদি আমি দেই সেই অধিকার? (মিমের দিকে তাঁকিয়ে অর্নীল)
-মিস্টার চৌধুরী আপনাকে আমি বোঝাতে পারবনা। প্লিজ পথ ছাড়ুন আমি যাব।
-অর্নীল চৌধুরী এই প্রথম কারো কাছে নত হলো তাও একটা মেয়ে। আর সেই মেয়েটা তুমি। তারপরেও তোমার এত এটিটিউড?
-এটিটিউড এর প্রশ্ন নয় এইটা। আমার ফিউচারবিহীন লাইফের প্রশ্ন। আমার নিজের কাছেই লজ্জা লাগছে যে আপনি আমায় বিয়ে করতে চাইছেন!! তাও আমার মত মেয়েকে? আপনি আমার থেকে ভাল হাজার গুন মেয়ে ডিজার্ভ করেন। যার কাছে রাজত্ব ও থাকবে আর রুপ,গুণ ও থাকবে। (চোখ মুছে মিম হাঁটার জন্য পা বাঁড়ালো)
-ওয়েট!! (পেছন থেকে মিমের হাত ধরে অর্নীল)
-মিম সাথে সাথে শিহরিত হয়ে গেল অর্নীলের ছোঁয়া পেয়ে।
-এক্ষুণি বলে যাও যে তুমি আমায় ভালবাসো। Right now. তোমাকে দেখিয়ে দিতে চাই সব বড়লোক ছেলে এক না,,আর সব ছেলেরাও এক না। বিশ্বাস করতে পারো।
-পারব না আমি বলতে।
-তুমি পারবে
-পারবনা।
-চেলেঞ্জ accepted. চাইলে এক্ষুণি তোমায় বিয়ে করতে পারতাম বাট করবনা। Anyway take your time. চল বাসায় দিয়ে আসি তোমায়।
-না৷ আমি যেতে পারব। আর দয়া করে আপনি কোনোদিন আমায় ফোন দিয়েন না।
-সেইটা তো দিতেই হবে তুমি চাইলেও আর না চাইলেও।
-প্লিজ মিস্টার চৌধুরী ছাড়ুন এসব আবেগ।
-বাসায় গিয়ে জানিও। বাই।

মিম নিরুপায় হয়ে অর্নীলের দিকে তাঁকিয়ে রইলো। অর্নীল গাড়ি নিয়ে চলে গেল। (বাকি কাহিনী আরেকদিন হবে😘😘😘)

……………….😍বর্তমানে😍……………….

-কি সারারাত কি পুরোনো কথা ভাবতে ভাবতেই পাড় করবে নাকি? আর বৃষ্টি তো এখনো থামছেনা। (মিমের কোলে শুয়ে অর্নীল মিমের ভাবনার ছেদ ঘটালো)
-আপনি ঘুমান না কেন? কয়টা বাজে?
-১২ঃ০৬
-এক্ষুণি ঘুমান। সকালে অফিস যেতে হবে। আপনার সেই পুরনো প্রেমিকার সাথে তো আবার কাল দেখা হবে😏😏😏
-মিম? বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে কিন্তু।😡
-কোনো বাড়াবাড়ি হচ্ছেনা। 😏

ওরা দুইজন মজা করছিল আর তখনি খুব জোরে বজ্রপাত হলো। মিম তখন পাগলের মত গিয়ে অর্নীলকে জড়িয়ে ধরলো। আর চোখ গুলো ভয়ে বন্ধ করে আছে।

-মিম? পিচ্ছিরা এসবে ভয় পায় জানতাম কিন্তু এতটা যে পায় তা জানতাম না। (অর্নীল ও মিমকে জড়িয়ে ধরলো)

মিম পারছেনা অর্নীলের বুকের ভেতরে ঢুকে যায়। মিমের নিঃশ্বাস অর্নীলকে পাগল করে দিচ্ছে। অর্নীল মিমের বাঁধা চুল রিবনে টান দিয়ে খুলে দিল। মিম আরো জোরে অর্নীলকে জড়িয়ে ধরলো। মুখে একটা কথাও বলছেনা মিম। অর্নীল মিমকে শুইয়ে দিল। মিম অর্নীলের টি শার্ট টেনে ধরলো। অর্নীল মিমের শাড়ির আচল সরিয়ে দিল। এইবার মিমের হুশ আসলো ও কি করছে!! মিম উঠে যেতে চাইলে অর্নীল বাঁধা দিল।

-সরুন আমি উঠবো। (অর্নীলকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে মিম)
-না। হাজার চাইলেও এখন তুমি আমার কাছ থেকে সরতে পারবেনা। (মিমের গলায় চুমু দিয়ে অর্নীল)
-বেশি হয়ে যাচ্ছে কিন্তু (মিমের নিঃশ্বাস ভারী হচ্ছে)
-একটুওনা। (মিমের ঠোঁটে আঙুল দিয়ে মিমকে চুপ করালো অর্নীল)

এরপর মিম কিছুই বলল না। অর্নীল রাতে ঘুমাচ্ছিলো আর হঠাৎ রাত আড়াইটার দিকে অনু ফোন দিল। অর্নীল বেঘোরে ঘুমাচ্ছিল মিমকে জড়িয়ে ধরে। ফোন ছিল ভাইব্রেট করা। মিম ফোন নিয়ে দেখলো “Dee” নাম দিয়ে সেইভ করা। মিম ভাবলো রিসিভ করবে নাকি অর্নীলকে ডাকবে? ভাবতে ভাবতে মিম নিজেই কল রিসিভ করলো।

-আসসালামুয়ালাইকুম দি। (ঘুম ভাব ভাঙিয়ে মিম)
-ওয়ালাইকুম সালাম। ভাই কোথায়? (অনু খুব চিন্তিত)
-ঘুমাচ্ছে। কোনো সমস্যা হয়েছে দি? চিন্তায় আছেন মনে হচ্ছে!! (অর্নীলের হাত সরিয়ে মিম উঠে বসলো)
-ভাইকে এক্ষুণি দাও ফোনটা। ওর সাথে কথা আছে।
-ধরুন দি দিচ্ছি।

মিম অর্নীলকে ডেকে ফোন দিল অর্নীলের হাতে। অর্নীল কথা বলতে বলতে খুব হাইপার হয়ে গেল। তারাতারি ফোন কেটে অর্নীল ফ্রেশ হয়ে মিমকে নিয়ে বেরিয়ে গেলো। এখনো মিম কিছুই জানেনা যে এত রাতে মিম কোথায় যাচ্ছে আর অর্নীলই বা এত চিন্তায় আছে কেন?

-কি হয়েছে বলুন? এত রাতে কোথায় যাচ্ছি আমরা? (মিমের ও টেনশন বেড়ে গেল)
-কথা বলো না মিম। (অনেক জোরে গাড়ি চালাচ্ছে অর্নীল)

কিছুক্ষন পর মিম দেখলো অর্নীল বিশাল বড় একটা বাড়ির সামনে গাড়ি থামালো। মিমের হাত ধরে দৌঁড়ে বাড়িতে ঢুকলো অর্নীল। মিম বুঝতে পারলো এইটা অর্নীলের বাড়ি। সব জায়গায় অর্নীল আর অনুর ছবি দেখেই মিম বুঝলো। মিম কোনোদিন এ বাড়িতে আসেনি বিয়ের আগে ও পরে এই প্রথম। অর্নীল সবার আগে ওর আম্মুর ঘরে গেল। অনু পাশে বসে কাঁদছে।

-আম্মুর কি হয়েছে দি? আম্মু? (অর্নীল ওর মায়ের মাথায় হাত রাখলো)
-তুই এসেছিস আব্বু? (অর্নীলের আম্মু অর্নীলের গালে হাত দিয়ে)
-হ্যা আম্মু। কেমন আছো এখন তুমি?
-ভাল আছি। বউমাও এসেছে???
-হুম। (অর্নীল অবাক হলো ওর আম্মুর মুখে বউমা শুনে)
-কোথায়?
-মিম। আম্মুর কাছে বসো। (অর্নীল মিমকে ডাকলো)

মিম ভয়ে ভয়ে মায়ের সামনে বসলো। সালাম দিল আর জিজ্ঞেস করলো কেমন আছে? অর্নীলের আম্মু স্বাভাবিকভাবেই কথা বলল মিমের সাথে। অনু অর্নীলকে আর মিমকে আজ যেতে দিলনা। অর্নীল অনিচ্ছা সত্বেও থাকতে বাধ্য হলো আম্মুর কথা ভেবে। খুব বেশি অসুস্থ অর্নীলের আম্মু। মায়ের সামনে অনেকক্ষণ বসে থেকে নিজের ঘরে গেলো অর্নীল। অনেকদিন পর আজ নিজের ঘরে ঢুকলো অর্নীল। মিম অর্নীলকে বলল

-এখনো কত সুন্দর করেই গোছানো আছে আপনার প্রতিটা জিনিস!!
-দি আর আম্মুর চোখের মণি আমি। এসব তাদেরই কাজ।
-আম্মুকে সময় দিন। কালকে অফিস যেতে হবেনা।
-এই বাসায় থাকব না।
-আম্মু অসুস্থ। এখন আপনারা জেদাজেদি বন্ধ করুন দয়া করে।
-জেদ না মিম। কালকে সকালেই আমরা আমাদের বাসায় ব্যাক করছি৷
-আপনার ইচ্ছা।

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here