বিষাক্তময় আসক্তি – পর্ব ৪৬

0
644

#বিষাক্তময়_আসক্তি(The Villain 😈)
#Sumaiya_Akter_Mim
#পর্ব_৪৬…………🌼

“সকাল ১১:৩০মিনিট বাজে ঘড়িতে।আয়ানা পিটপিট করে চোখ খোলে চারিদিকে তাকিয়ে দেখলো বেশ বেলা হয়ে গিয়েছে, আশেপাশে কোথাও ইরফান নেই। গতকাল বেশ রাত করে ঘুমানোর ফলে উঠতে দেরি হয়ে গিয়েছে। কালকের কথা জীবনেও ভুলবে না সে,বেশ ভয় পেয়েছে বেচারি।। ইরফান খুব সকালে ঘুম থেকে উঠেছে, ঘুম থেকে উঠে প্রতিদিনকার মত আয়ানার কপালে চুমু খেয়ে বেশ কিছুক্ষণ তাকিয়ে ছিল আয়ানার দিকে ঘুমের ঘোরে তা অনুভব করতে পেরেছে কিন্তু ঘুমের কারণে চোখ খুলতে পারেনি আর গভীর ঘুমে তলিয়ে যায়।। হঠাৎ বাহিরের থেকে অনেক মানুষের আওয়াজে আয়ানা ভাবনার জগত থেকে ফিরে আসে। আওয়াজ মূলতঃ বাগানের কাছ থেকে আসছে নিশ্চয়ই গ্ৰামের লোকজন উপস্থিত হয়েছে বাহিরে কিন্তু কেনো?এই বাড়িতে সবসময় ছোট খাটো মানুষের ভিড় লেগে থাকে যেহেতু খান বংশের কথা ছাড়া এখানের কোনো কিছু সম্ভব নয় তাই নানা কাজে নানা সমস্যায় এখানে অসংখ্য মানুষের যাতায়াত রয়েছে কিন্তু বিশেষ কোনো বিষয় ছাড়া এতো মানুষের ভিড় হয় না কখনো নিশ্চয়ই বিশেষ কোনো ব্যাপার আছে। বিছানায় হাঁটু ভাঁজ করে বসে গালে হাত দিয়ে এসব ভাবছে আয়ানা। বিছানা থেকে নেমে দেখার সাহস নেই কেনো এতো মানুষের ভিড় তা জানার, কালকে যা হয়েছে তাঁর পর তো একেবারেই নেই হঠাৎ রুমের ভেতরে তাড়াহুড়ো করে সাফিয়া প্রবেশ করলো তাঁর সাথে দুজন মেয়ে র্সাভেন্টও রয়েছে।। সাফিয়াকে দেখে আয়ানা বিছানা থেকে নেমে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে পরলো।। সাফিয়া আয়ানার সামনে এসে তাড়া দিয়ে বলতে লাগলো ,,,

—-আয়ানা জলদি ফ্রেস হয়ে আস। ইরফান ভাইয়া বলেছে তাড়াতাড়ি তোকে রেডি করে নিয়ে খাবার টেবিলে উপস্থিত হতে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে।।।আয়ানার হাতে তাওয়ালে দিয়ে।।।।আয়ানা সাফিয়ার দিকে ভ্রু কুঁচকে বললো,,,

—-আচ্ছা বাহিরে এতো মানুষ জন কেনো? আজকে কি বিশেষ কোনো দিন।।‌
আয়ানার কথা শুনে সাফিয়া বিষ্ময় নিয়ে তাঁর দিকে তাকিয়ে রইল বেশ কিছুক্ষণ সময় পর ফিক করে হেসে দিল সে।। তাকে এমন হাসতে দেখে আয়ানা ঠোঁট ফুলিয়ে বললো,,,

—-হাসছো কেনো সাফিয়া দি আমি কি হাসার কথা বলেছি নাকি।।‌এতো মানুষ সকাল সকাল নিশ্চয়ই কোনো কারনে এসেছে তাই না।।‌
সাফিয়া মৃদু হেসে আয়ানার গাল টেনে বললো,,,

—–জ্বী ম্যাম আজকে সবাই এখানে এসেছে আপনার জনাবের জম্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে।সারা গ্ৰামের মানুষ এই দিন খুব বড় করে আয়োজন করে। ইরফান ভাইয়ার জম্মদিন উপলক্ষে সবাই সকাল আটটা বাজে এখানে এসে উপস্থিত হয়েছে শুভেচ্ছা জানাতে।।।
আয়ানা চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে সাফিয়ার দিকে। চোখের পলক ফেলে অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলো,,,,,

—-আজকে এরোগেন্ট ম্যানের জম্মদিন।।
আয়ানার কথা শুনে আবার হেসে দিলো সাফিয়া তারপর হাসি মুখে বললো,,,,

—–জ্বী আজকে আপনার এরোগেন্ট ম্যানের জম্মদিন।আর আজকের দিনে এখানে খুব বড় করে জম্মদিন পালন করা হয়। শুধু কাশ্মীর নয় দেশের বাহিরেও ইরফান ভাইয়ার জম্মদিন উদযাপন করা হয়।। কালকে থেকে তা নিয়ে হৈ হুল্লোড় শুরু হয়ে গিয়েছে নানা জায়গায় থেকে গিফট আর জম্মদিনের শুভেচ্ছা আসছে বিভিন্ন চ্যালেনেও নিউজে প্রতিবারের মতো সমলোচনা জম্মদিন শুভেচ্ছা আর আগের জম্মদিনের ছবি দেখাচ্ছে সকাল থেকে তো এসব নিয়ে সবাই ব্যস্ত। আজকে আবার রাতে অনেক বড় পার্টি হবে বাহিরে কিছুক্ষণ বাদে তাঁর আয়োজন শুরু হবে ।।‌গতকাল আম্মিজান আর আমি ভাইয়ার জম্মদিন উপলক্ষে মাজারে গিয়েছিলাম ভাইয়াকে আম্মিজান বলেছে তোকে ভাইয়া সাথে করে নিয়ে জেতে কিন্তু ভাইয়া সাফ সাফ নিষেধ করে দিয়েছে তাই এসব বিষয় অবগত না তোর বুঝতে পেরেছিস।।। মুচকি হেসে।। এখন জলদি জলদি ফ্রেস হয়ে পর ভাইয়া নাস্তা করতে নিচে যেতে বলেছে তারপর আবার গ্ৰামে যাবে।।‌আয়ানাকে তাড়া দিয়ে বললো সাফিয়া।।
আয়ানা কিছু না বলে মুখ ফুলিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেল ফ্রেশ হতে। আজকে ইরফানের জম্মদিন আর সে কিছু জানে না কথাটা ভাবতেই রাগ হচ্ছে খুব।। ইরফানের ভয়ে বাড়ির কেউ তাঁর কাছে আসে না তাই হয়তো বলতে পারেনি কিন্তু ইরফান তো বলতে পারতো কিন্তু কেউ কি নিজে নিজের জম্মদিনের কথা বলবে বিরক্ত লাগছে সব কিছু আয়ানার কাছে।।। ইরফান তো তাঁর ছোট থেকে ছোট বিষয় গুলো নিখুঁত ভাবে খবর রাখে, জানে তাঁরও উচিত ছিল ইরফানকে জানার তাঁর প্রত্যেক বিষয়ে খেয়াল রাখার এসব কথা ভেবে আয়ানা বেশ বিরক্ত হয় নিজের উপর হঠাৎ করে কিছু একটা মনে পড়তে মুখে হাসি ফুটে উঠে জলদি জলদি করে ফ্রেশ হয়ে গাঢ় নীল কালারের গ্ৰাউন পরে সাথে শরীরে ভালো ভাবে উরনাটা সেট করে ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে আসলো।। সাফিয়া আয়ানাকে দেখে মৃদু হেসে নিচে যাওয়ার উদ্দেশ্যে পা বাড়ালো যাওয়ার পূর্বে সাফিয়াকে কিছু শিখিয়ে দিলো আয়ানা যা শুনে সাফিয়া হেসে বললো,,,,

—-ঠিক আছে আমি গার্ড কে বলে সব কিছু ব্যবস্থা করে দিতে বলব কেমন আয়ানার গাল টেনে।।আয়ানা মৃদু হেসে দুজনে নিচে চলে গেলো নাস্তা করার জন্য।।‌

“লাল রঙের মাঝে হালকা কালো রঙের মিশ্রণ পাঞ্জাবি পরেছে ইরফান, হাতে দামি ওয়াচ চোখে সবসময়ের মতো হাল্কা সুরমা চুল গুলো কে জেল দিয়ে সেট করে রেখেছে পায়ে দামি “সু”দেখতে অনেক বেশী সুন্দর লাগছে সবসময়ের মতো নজর কাড়া সুন্দর যাকে বলে।আয়ানা নিচে নেমে ইরফানকে খাবার টেবিলে এইভাবে হিরো সেজে বসে থাকতে দেখে হা করে তাকিয়ে আছে তাঁর দিকে জেনো চোখ সরানো দায় হয়ে পড়েছে। আজকে প্রথম এমন হা করে সে ইরফানকে দেখছে ইরফান সবসময় এমন ভাবে থাকে কিন্তু আজকে জেনো প্রথম সে ইরফানকে দেখছে।। ইরফান আয়ানাকে নিচে নামতে দেখে টেবিল থেকে উঠে এসে আয়ানার হাত ধরে নিজের পাশে বসিয়ে দেয় আয়ানা এখনো হা করে তাকিয়ে আছে তা দেখে ইরফান বাঁকা হেসে ভ্রু নাচিয়ে আয়ানার দিকে তাকিয়ে ফিসফিস করে বলে,,,,,,,

—–আমাকে দেখার জন্য সারাজীবন পরে আছে মেরি জান এখন খাবার ফিনিশ করো খুব দেরি হয়ে গিয়েছে আজকে নিশ্চয়ই খুব ক্ষুধা পেয়েছে তোমার। খাবার আয়ানার মুখের কাছে নিয়ে এসে বললো।।।
ইরফানের কথা শুনে আয়ানা লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে ফেলল তারপর কিছু একটা মনে করে মুখ ফুলিয়ে খাবার খেতে লাগলো।তা দেখে ইরফান জিজ্ঞাসা করলো,,,,,

—–কী হয়েছে মেরি জান খেতে ইচ্ছে করছে না।। আমি অন্য ফ্রুডস কাস্টার্ড বানিয়ে নিয়ে আসতে বলি কাস্টার্ড এর বাটি রেখে একজন র্সাভেন্টকে বলতে নিবে তাঁর পূর্বেই আয়ানা মুখ ফুলিয়ে বলে উঠে,,,

—না লাগবে না আমি এটাই খাবো মাথা নিচু করে।। ইরফান আয়ানার কথা শুনে বেশ কিছু সময় আয়ানার দিকে তাকিয়ে থেকে পুনরায় খাবার খাওয়াতে লাগলো।।।।খাবার খাওয়ানো শেষ হলে আয়ানা চুপচাপ নাকে হাত চেপে ইরফানের হাত থেকে দুধটুকু খেয়ে নিলো। ইরফান শুধু আয়ানার দিকে শান্ত ভাবে তাকিয়ে আছে আর আয়ানার হাবভাব বুঝার চেষ্টা করছে তাঁর জান যে কিছু নিয়ে মন খারাপ করেছে তা সে বেশ বুঝতে পেরেছে তাঁর জান যখন রাগ করে কিংবা মন খারাপ করে তখন চুপচাপ বসে থাকে কিছু বলে না শুধু হু হা করে এখনও তা করছে তাই তাড়াতাড়ি করে নাস্তার পর্ব শেষ করে রুমে চলে যায়।।

“ইরফান আয়ানাকে নিয়ে রুমে প্রবেশ করে আয়ানাকে উদ্দেশ্য করে বললো,,,

—–আয়ু জান গ্ৰামে যেতে হবে জলদি জলদি রেডি হয়ে নাও।।। পাঞ্জাবির হাতা গুটাতে গুটাতে বললো।।
আয়ানা কিছু না বলে মুখ ভার করে বিছানার উপর বসে পড়ে তা দেখে ইরফান শান্ত গলায় বললো,,,,

—-কী হয়েছে?মন খারাপ কেনো!আয়ানার সামনে দাঁড়িয়ে প্রশ্ন করলো।।।
আয়ানা মাথা নিচু করে বললো,,,

—-কিছু না! বলে বিছানা থেকে উঠে কার্বাডের দিকে এগুতে নিলে ইরফান আয়ানার হাত শক্ত করে ধরে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো।।আয়ানার থুতনিতে হাত রেখে মুখ উঁচু করে ধরে বললো,,,

—-কী হয়েছে?কথা বলছো না কেনো? আমার কিন্তু রাগ হচ্ছে শান্ত গলায়।।।
আয়ানা নিচের দিকে তাকিয়ে ফ্লোরে পায়ের নোখ দিয়ে ঘসছে কিছু বলছে না।।‌ইরফান কিছুক্ষণ চুপ থেকে আয়ানার কোমরে হাত রেখে আরেকটু গভীরভাবে জড়িয়ে ধরে নাকে নাক ঘষে বলতে লাগলো,,,

—কালকের ভয় কী এখনো কাটেনি। কালকের জন্য মন খারাপ,স্যরি মেরি জান আর এমন শাস্তি দিবো না এবার তো কথা বলো।।।
যে ইরফান কখনো স্যরি বলতো না সে এখন মিনিটে হাজার বার স্যরি বলে তাঁর জানকে ।।।
আয়ানা ইরফানের দিকে তাকিয়ে ঠোঁট ফুলিয়ে বললো,,,

—–আজকে আপনার জম্মদিন আমাকে কেউ জানালো না কেনো। সবাই আপনাকে কতো সুন্দর সুন্দর গিফট আর উইশ করেছে আমি কিছু করতে পারিনি আমার খুব খারাপ লাগছে বলে মাথা নিচু করে ফেলল।।।
আয়ানার কথা শুনে ইরফান নিচের দিকে তাকিয়ে হেসে দিল তারপর সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে আয়ানাকে আরেকটু নিজের সাথে মিশিয়ে গাল টেনে বললো,,,,

—-আমার আয়ু জান কী কষ্ট পাচ্ছে তাঁর বরকে উইশ করতে না পেরে।নাকে নাক ঘষে।।

—-হুম।। ঠোঁট ফুলিয়ে।।।
ইরফান মৃদু হেসে বলল,,
—-আমার জান আমার কাছে সবচেয়ে বড় গিফট আর কোনো দামি গিফটের আমার প্রয়োজন নেই।‌পৃথীবিতে আমার জানের চেয়ে দামী গিফট আমার জীবনে আর কিছু হতে পারে না আমার জীবনের সবচেয়ে দামি সুন্দর গিফট যা আমার জীবন যাকে ছাড়া আমার কোনো অস্তিত্ব নেই যে শুধু আমার যার নিঃশ্বাস প্রশ্বাস আর তাঁর সব কিছুর অধিকারী আমি।।। আমার ভালোবাসা আমার জীবনের সেরা গিফট।।আয়ানার গালে আলতো করে হাত রেখে আবার বলে উঠলো,,,

—–তুমি আমার জীবনে পাওয়া সেরা গিফট এর থেকে বেশী কিছু আমার প্রয়োজন নেই আমার শুধু তোমাকে লাগবে আর কিছু না।। বুঝতে পেরেছো।আয়ানা ইরফানের দিকে মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে আছে,এই লোকটার মতো করে কেউ তাকে এতো ভালোবাসতে পারবে না এতো ভালোবাসা যে সে তুলনায করতে পারবে না।।‌আয়ানার চোখ চিকচিক করছে আয়ানা মাথা নাড়িয়ে হ্যা জানালো তখন দরজায় কেউ নক করতে ইরফান তাকে ভেতরে আসতে বললো।।

“একজন র্সাভেন্ট রুমে প্রবেশ করে মাথা নিচু করে টেবিলের উপর একটা ট্রে রেখে চলে গেল।।আয়ানা ট্রে থেকে এক বাটি পায়েস নিয়ে মৃদু হেসে এক চামচ পায়েস ইরফানের দিকে ধরলো ইরফান মৃদু হেসে পায়েস টুকু খেয়ে নিল তাঁর মুখে চিকচিক করছে খুশি আয়ানা পায়েস খাইয়ে দিয়ে ধিরে গলায় বললো,,,

—-শুভ জম্মদিন!
ইরফান আয়ানার কথায় হেসে আয়ানাকে এক চামচ পায়েস খাইয়ে দিয়ে কপালে চুমু খেয়ে বললো,,,
শুধু পায়েসের মিষ্টি চলবে না এর থেকেও বেশি মিষ্টি আমার আজকে চাই বাঁকা হেসে আয়ানার ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে বললো।‌। লেখিকা সুমাইয়া আক্তার মিম
আয়ানা লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে নিলো কিছু বলতে পারছে না সে। ইরফান আয়ানার কোমর জড়িয়ে আয়ানাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে দিলো।আয়ানা আবেশে চোখ বন্ধ করে নিলো বেশ কিছুক্ষণ পর আয়ানাকে ছেড়ে দিয়ে বললো,,,,

—-এবার ঠিক আছে! এখন গিয়ে রেডি হয়ে আসো আমরা বের হবো কেমন। আঙ্গুল দিয়ে ঠোঁট মুছে।।আয়ানা লজ্জায় মুখ তুলতে পারছে না।মাথা নাড়িয়ে চলে যায় চেঞ্জিং রুমে রেডি হতে।।‌

“ইরফান মোবাইল নিয়ে বারান্দায় দাঁড়িয়ে কথা বলছে।বেশ কিছুক্ষণ ধরে আয়ানা রেডি হচ্ছে।। ইরফান মোবাইলে কথা বলা শেষ করে রুমে প্রবেশ করে থমকে যায়।।বেশ কিছুক্ষণ আয়ানার দিকে অপলক চোখে তাকিয়ে থাকে খুব সুন্দর লাগছে তাঁর জানকে কিন্তু ভালো করে পর্যবেক্ষণ করে ইরফানের চোখ লাল হয়ে যায় মুখ শক্ত করে শান্ত গলায় জিজ্ঞাসা করল,,,,

—-শাড়ি কেনো পরেছো আয়ু? আমি নিষেধ করেছিলাম তোমাকে শাড়ি কখনো না পড়তে তারপর কেনো শাড়ি পড়া হয়েছে।। থমথমে গলায়।।
আয়ানা শাড়ি ঠিক করছিলো ইরফানের কথা শুনে চমকে তাঁর দিকে তাকালো।‌ইরফানের লাল লাল চোখ দেখে আয়ানা ভয়ে শুকনো ঢোক গিললো।।

“ইরফান আয়ানাকে শাড়ি পরতে দেখে বেশি খুশি হয় কিন্তু বিয়ের পর শাড়ি পরার পর সে অসুস্থ হওয়ার পর ইরফান সাফ সাফ নিষেধ করে শাড়ি না পরার জন্য আয়ানাও ভয়ে আর কখনো শাড়ি পরেনি।। বিয়ের প্রথম প্রথম এক টানা শাড়ি পরার ফলে আয়ানার রেশ হয়ে যায় শরীরে তাই ইরফান নিষেধ করেছে শাড়ি পরতে আর তাঁর কথা না শুনলে আয়ানার অবস্থা খারাপ হবে তা আয়ানা জানে তাই কখনো আর শাড়ি পরেনি কিন্তু আজকে ইরফানের মনের মতো করে সেজেছে আয়ানা।লাল শাড়ি,দুই হাতে লাল রেশমী চুড়ি,কানে দুল,নাকে সাদা হিরের নজপিন আর লম্বা চুলগুলো ছেড়ে দিয়ে এতে ব্রাশ করে নিয়েছে এতটুকু এতে জেনো আয়ানাকে অসাধারণ লাগছে মনে হচ্ছে লাল টুকটুকে পরী যার রূপের বর্ণনা হয় না।।আয়ানা মিররে নিজেকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছে,, আগের তুলনায় অনেক বেশি সুন্দর হয়ে গিয়েছে।। আগের থেকে আরো ফর্সা হয়ে গিয়েছে কিছুটা মোটা হয়েছে গাল গুলো আগের তুলনায় আরো কিছুটা ফোলা ফোলা হয়ে গিয়েছে আর সাদা গাল দুটোতে গোলাপী রঙের আভাটা আরোও বেড়ে গিয়েছে গালে গুঁতো মারলে তুলতুল করে এতোটা সফট।।এক কথায় আরো বেশি কিউট লাগছে তাকে নিজেকে এই ভাবে খুঁটিয়ে দেখতে নিজের কাছে লজ্জা লাগছে আয়ানার।শাড়িটা লাস্ট বারের মতো ঠিক করে নিচ্ছে এমন সময় পেছন থেকে ইরফানের আওয়াজ শুনে ভয় পেয়ে যায়। লেখিকা সুমাইয়া আক্তার মিম।

“ইরফান আয়ানার বাহু শক্ত করে চেপে ধরে রাগি গলায় বললো,,,

—-তুমি ইচ্ছে করে এমন করেছো! তোমাকে আমি নিষেধ করেছি নিজের ক্ষতি করার চেষ্টা করবে না। তুমি নিজেকে যতোটা আঘাত করবে আমাকে তাঁর চেয়ে বেশি ক্ষতবিক্ষত করবে।। তোমাকে আমি বলেছি শাড়ি না পড়তে এতে তোমার সমস্যা হয় কিন্তু তুমি শাড়ি পরেছো নিজেকে কষ্ট দিতে আর আমাকে মারতে তাইতো। জোরে চিৎকার করে।।।
ইরফানের চিৎকার শুনে আয়ানা চোখ চেপে বন্ধ করে নিলো।।এই ভিলেনটা একটু বেশি বুঝে।সে তো সেজেছে এনার জন্য কিন্তু উল্টো বুঝসে সে।আয়ানাকে চোখ বন্ধ করে রাখতে দেখে ইরফান আয়ানার হাত আরেকটু শক্ত করে চেপে ধরে এতে করে আয়ানা ব্যথায় মৃদু আওয়াজ করে উঠল। ইরফান আবার বলতে লাগলো,,,,

—-তোমার আমার প্রতি রাগ হলে আমাকে শাস্তি দিবে কিন্তু নিজের ক্ষতি করে আমাকে আঘাত করতে চাইলে এর থেকে দিগুন আঘাত আমি তোমার প্রিয় জিনিস কে করবো। সব কিছু ধ্বংস করে দিবো আমি, যদি নিজের ক্ষতি করার চেষ্টা করছে তো।

—–উফফ্।আগে আমার কথাটা তো শুনোন।।এক দিন শাড়ি পরলে কিছু হবে না। তখন প্রথম প্রথম শাড়ি পরেছি অভ্যেস ছিল না এক টানা অনেক দিন পরায় একটু সমস্যা হয়েছে মাঝে মাঝে একটু আকটু পরলে কিছু হবে না এতে করে শাড়ি পরার অভ্যেস হবে আমার শাড়ি পরতে ভীষণ ভালো লাগে।প্লিজ আজকে পরি না। বিরক্তি নিয়ে বললো।।।
ইরফান আয়ানার কথা শুনে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে।আয়ানার গালে হাত রেখে শান্ত গলায় বলে,,,

—-তুমি জানো তোমার একটু কষ্ট একটু আঘাত আমাকে কতোটা ক্ষতবিক্ষত করে! পরবর্তী থেকে এমন কিছু করবে না তোমর একটু আঘাতের মাসুল আমার সারা শরীর রক্তাক্ত করে তাঁর দাম চুকায় থমথমে গলায়।।‌
ইরফানের কথা শুনে আয়ানা কিছুটা ভয় পেয়ে গেলো,সে ইরফানের হাত শক্ত করে ধরে বললো,,,

—-আমি এমন কিছু করবো না ট্রাস্ট মি!

—-আই ট্রাস্ট ইউ মেরি জান।আয়ানার কপালের চুল গুলো কানের পেছনে গুজে দিয়ে।।।
আজকে তোমাকে লাল টুকটুকে বউ লাগছে মেরি জান। নেশা ভরা কন্ঠে।।
আয়ানা ইরফানের কথা শুনে লজ্জায় ইরফানের বুকে মুখ গুজে নিলো তা দেখে ইরফান মুচকি হেসে আয়ানাকে নিজের বাহু ডোরে শক্ত করে জড়িয়ে নিল।।। লেখিকা সুমাইয়া আক্তার মিম।।

🌸 ইরফান আয়ানাকে নিয়ে গ্ৰামে উপস্থিত হলো।আয়ানা গাড়ি থেকে নামতে ইরফান তাকে নিজের সাথে মিশিয়ে নিয়ে সামনের দিকে পা বাড়ালো।।গ্ৰামের সকল মানুষ এখানে উপস্থিত আছে সবার মুখে এঁটে আছে হাঁসি।। সকলের মুখে ইরফানের জয় গান।চারিপাশে মানুষ জন দাঁড়িয়ে আছে এদের মাঝ দিয়ে আয়ানা ইরফানের হাত ধরে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে সামনে পিছনে গার্ড মনে হচ্ছে কোনো রূপকথার রাজা রানি যাচ্ছে আর সকলে তাদের অভিবাদন জানাচ্ছে ভেবে আয়ানা মৃদু হাসলো।।।

“ইরফান আয়ানা দুজনে মিলে গ্ৰামের সকলের হাতে বিভিন্ন জিনিসের প্যাকেট দিচ্ছে। এতে রয়েছে সকলের জন্য কাপড়,টাকা, শীতের পোশাক, আরো অনেক কিছু। ইরফানের জম্মদিন উপলক্ষে সকলকে প্রতিবার অনেক দামি দামি জিনিস দেওয়া হয় আর তা ইরফান নিজে দেয় নাহলে গার্ড দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেন।। সকলের এই দিন খুব আনন্দের সাথে কাটে।এই দিনে সবাই নিজেদের ঘরে ঘরে ইরফানের জম্মদিন উৎযাপন করেন আর ইরফানের দীর্ঘআয়ুর প্রার্থনা করে।। খুব সুন্দর করে সাজানো হয় সম্পূর্ণ কাশ্মীর সাথে সজ্জিত হয় প্রত্যেক ঘর আর ঘরের মানুষজন তাদের কাছে এই দিনটা ঠিক ঈদের মতো আনন্দের।। প্রতিটি বিশেষ দিনে ঠিক এমন করে সকলকে উপহার দেন খান বংশের লোকজন তাই তাদের শ্রদ্ধা সম্মানের পাশাপাশি লোকের ভালোবাসা অনেক।। ইরফান সকলের কাছে কতোটা দামি তা সকলের কাজে বুঝা যায়।। বিশেষ করে আজকে জম্মদিনের উপলক্ষে গ্ৰামের শিশুরা ভীষণ খুশি তাঁরা আজকে নতুন জামা, জুতা,খেলনা ,বই খাতা, প্রয়োজনীয় জিনিস আর অনেক চকলেট, চিপস, পছন্দের জিনিস পেয়েছে। সাথে করে সকলে ইরফানের জন্য গিফটও নিয়ে এসেছে, সকলের গিফট গুলো একটা গাড়িতে গার্ডরা তুলে রাখছে এই বিষয়টি আয়ানার কাছে খুব ভালো লাগলো যে ইরফান সকলের জিনিসকে প্রাধান্য দিয়েছে।।আয়ানার আজকে ভীষণ আনন্দ লাগছে, সকলকে গিফট দিতে ভীষণ ভালো লাগছে।।গিফট দেওয়ার পর খাওয়া দাওয়া করে ইরফান আয়ানাকে নিয়ে এখান থেকে সোজা মাজারে চলে যায় সেখানে বেশ কিছুক্ষণ থেকে বাড়ি চলে আসে।‌সন্ধ্যা হয়ে আসছে গেস্ট চলে আসবে, পার্টির আয়োজন করা প্রায় শেষের দিকে।। আজকে সারা দিন বেশ ভালো গিয়েছে আয়ানার মনটা ফুরফুরে লাগছে ।।এখন রাতের সারপ্রাইজের অপেক্ষা শুধু।।।।
(গল্পটা কেমন হয়েছে সকলকে গঠন মূলক মন্তব্য করার অনুরোধ রইল।আর গল্প লেইট কেনো হয় তা আমি আগের পর্ব গুলোতে জানিয়েছি তাই সকলকে অনুরোধ রইল গল্পের পাশাপাশি তাঁর সাথে লিখা প্রয়োজনীয় কথা গুলো পড়ার কারন এখানে গল্প সম্পর্কে কিংবা রাইটারের অসুবিধা সুবিধা সকল কথা উল্লেখ করা হয় কিন্তু আপনারা তা না পড়ে অহেতুক প্রশ্ন করেন কিন্তু আমি আপনাদের প্রশ্নের উত্তর আগে থেকে দিয়ে রাখি তা আপনারা দেখুননা তাই দেখার অনুরোধ রইল । ধন্যবাদ সবাইকে।।।)

#To_be_continued……….🌼
#Happy_Reading🦋

লেখিকা সুমাইয়া আক্তার মিম✵

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here