বিষাক্তময় আসক্তি – পর্ব ৪৫

0
621

#বিষাক্তময়_আসক্তি(The Villain 😈)
#Sumaiya_Akter_Mim
#পর্ব_৪৫………….🌼

“মিটিং শেষ করে ইরফান সোজা নিজেদের রুমে চলে আসে,আয়ানার থেকে একমিনিটের দূরত্ব তাঁর কাছে অনেক বেশি মনে হয়। রুমে প্রবেশ করতে ইরফানের হাসি হাসি মুখটা মিনিটে বদলে যায় আর সম্পূর্ণ মুখ জুড়ে ফুটে উঠে রাগ ।। চোয়ালে শক্ত করে সামনের দিকে তাকিয়ে আছে রাগের কারনে সারা মুখ লাল টকটকে রং ধারন করেছে। দাঁতে দাঁত খিচে রাগ কমানোর চেষ্টা করছে কিন্তু সে বরাবরই ব্যর্থ হচ্ছে,বড় বড় পা ফেলে রুমের ভেতরে প্রবেশ করে আয়ানার হাত টান মেরে বিছানার উপর থেকে টেনে তুলে।।। হঠাৎ আচমকা টান পরায় টাল সামলাতে না পেরে হুমরি খেয়ে পরে ইরফানের বুকে।। ইরফান খুব শক্ত করে আয়ানার বাহু চেপে ধরে রেখেছে এতে করে আয়ানার খুব ব্যথা লাগছে কিন্তু ব্যথা থেকে ভয় বেশি হচ্ছে।। ইরফানের এই রূপ আয়ানা খুব ভয় পায় , ইরফান রেগে গেলে তাঁর মধ্যে হিংস্রতা ফুটে উঠে আর সে তখন নিজের কন্ট্রোলে থাকে না ।।আয়ানা ভয়ে চোখ খিচে বন্ধ করে রেখেছে,সে বুঝতে পারছে না এখন সে কি করেছে যে ইরফান এতো বেশি রেগে গেলো সে তো রুম থেকে বেরও হয়নি বসে বসে শুধু মুভি দেখছিল তাহলে। ভয়ে মুখ থেকে কথা বের হচ্ছে না ।।।

—-তোমার সাহস কী করে হয় আমি ব্যতীত অন্য ছেলের দিকে তাকানোর হুম, আন্সার মি! জোরে চিৎকার করে।।
ইরফানের এই ভবন কাঁপানো চিৎকার শুনে আয়ানা কেঁপে উঠলো ভয়ে থরথর করে কাঁপছে সে। তাঁর মাথায় কিছু আসছে না সে কখন অন্য ছেলের দিকে তাকালো।আয়ানা কোনো কিছু না বুঝতে পেরে ফুঁপিয়ে কেঁদে দিলো তা দেখে ইরফানের রাগ আরেক ধাপ বেড়ে গিয়েছে ইরফান রেগে গিয়ে আয়ানার মুখ খুব শক্ত করে চেপে ধরে এতোটা শক্ত করে ধরেছে মনে হচ্ছে মাংস বেধ করে হাড্ডি ভেঙ্গে যাবে ইরফান দাঁতে দাঁত খিচে বললো,,,

—-আমি নিষেধ করেছি না আমার সামনে একদম কাঁদবে না ইনফেক্ট কখনো কাঁদবে না তাহলে আমি সব শেষ করে দিবো। তুমি ভুলে যাও আমি কি? আমার কাথার মানে কি।ধমক দিয়ে।
আয়ানা এইবার জোরে জোরে চিৎকার করে কান্না করতে লাগলো।আয়ানার কান্না দেখে ইরফান ভরকে গেলো সে তাড়াহুড়ো করে হাত সরিয়ে নিলো আয়ানার মুখ থেকে। চোখ বুজে জোরে নিঃশ্বাস ফেলে নিজের রাগ কমানোর চেষ্টা করলো চোখ খুলে আয়ানার দিকে তাকিয়ে জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে আলতো হাতে আয়ানার গালে স্লাইট করে শান্ত গলায় বললো,,,

—আমি তোমার চোখের পানি একদম সহ্য করতে পারি না তুমি জানো সেটা তাহলে কেনো সবসময় ভুল করে আমাকে রাগিয়ে দাও আর নিষেধ করার শর্তে ও কাঁদছো কেন চোঁখের পানি মুছে দিতে দিতে বললো।।

—-আ-আপনি না করার পরও কেনো আমাকে এতো জোরে ধমক দিলেন আর আপনি আমাকে বকবেন না বলেছিলেন তবুও বকলেন আর কান্না পেলে আমি কন্ট্রোল করতে পারিনা বলে নাক ঢলতে লাগলো।।
আয়ানার কথা শুনে ইরফান হেসে দিলো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কপালে ডিপ কিস করে গালে হাত রেখে বললো,,

—-সরি মেরি জান আমার ভুল হয়ে গিয়েছে আর হবে না বলে ঠোঁটে আলতো কিস করে।।আয়ানা লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে ফেলে। ইরফান হঠাৎ মুখ শক্ত করে আয়ানাকে ছেড়ে দিয়ে টিভির সামনে গিয়ে ডিভিডি প্লেয়ারটার খুলে ফেলে ড্রয়ার থেকে বেশ কয়েকটি ডিভিডি প্লেয়ার নিয়ে সেগুলো বাস্কেটে ফেলে দিলো তা দেখে আয়ানা ঠোঁট উল্টিয়ে বললো,,

—-এগুলো কেনো ফেলছেন আপনি এগুলো আমার প্রিয় মুভি।প্লিজ ফেলবেন না 🥺
ইরফান কটমট চোখে তাকালো আয়ানার দিকে তারপর দাঁতে দাঁত চেপে বললো,

—–আমি ছাড়া অন্য ছেলেকে দেখার খুব শখ তোমার তাই না! আজকে এর জন্য তোমাকে পানিশমেন্ট পেতে হবে আয়ু জান বাঁকা হেসে।।
ইরফানের কথা শুনে আয়ানা ঢোক গিললো। ইরফান আয়ানার কোমর জড়িয়ে আয়ানাকে নিজের সাথে চেপে ধরে বলল,
—-তো কী শাস্তি পেতে চাও মেরি জান। তোমার জন্য আমার কাছে খুব সুন্দর সুন্দর শাস্তি আছে বলে গলায় নাক দিয়ে স্লাইট করে জোরে নিঃশ্বাস টেনে নিলো।।
আয়ানা ভয়ে কাঁপা কাঁপা গলায় বললো,,,

——শা-শাস্তিইই।

—–হুম শাস্তি। তোমাকে আমার ভাষায় নতুন শাস্তি দেবো যাতে করে আমাকে ছাড়া অন্য কোনো ছেলেকে দেখার দুঃসাহস না করতে পারো বলে গলায় আলতো ভাবে কামড় দিলো কিন্তু আয়ানার খুব জোরে লেগেছে আয়ানা মৃদু চিৎকার করে বললো,,,

—-আ-আমি কাউকে দেখিনি সত্যি বলছি। ফুঁপিয়ে কেঁদে দিয়ে।।‌
ইরফান কামড়ের জায়গায় হাল্কা ঠোঁট ছুঁইয়ে বললো,,,

—-তাই ! তাহলে টিভিতে কাকে দেখছিলে।।।
ইরফানের কথা শুনে আয়ানা ফ্যালফ্যাল করে ইরফানের দিকে তাকালো তাঁর মানে এই জন্য ইরফান তাকে শাস্তি দিবে বলছিল।।সে তো টিভিতে তাঁর ফেবারিট মুভি ভ্যাম্পায়ার দেখছিল।ছোট থেকে ভ্যামপায়ারের প্রতি তাঁর আলাদা ভালো লাগা কাজ করে তাই সে সবসময় এদের সম্পর্কে জানার আগ্ৰহ হতো বলে বিভিন্ন মুভি গল্পের বই পড়তো কিন্তু সে মনে করতো এরা বাস্তবে আছে কিন্তু যখন বড় হলো তখন জানতে পারে এরা শুধু রূপকথা গল্পের মাঝে সীমাবদ্ধ এদের রিয়েল লাইফে কোনো অস্তিত্ব নেই।।হরর মুভি সে ভীষণ ভয় পায় তাই কখনো দেখে না এগুলো দেখলে সে খুব ভয় পায় রাতে ঘুমাতে পারে না কিন্তু ভ্যাম্পায়ের মুভি সে শুধু ভ্যাম্পায়ারকে দেখার জন্য দেখে কারন এসব মুভির হিরো ভ্যাম্পায়ার গুলো দেখতে অনেক সুন্দর হয় আর এদের লাভ স্টোরি গুলো খুব ইন্টারেস্টিং হয় যা একদম আলাদা তাই তাঁর ভালো লাগে দেখতে তাঁর বাসায়ও অনেক ভ্যাম্পায়ারের গল্পের বই আছে যা সে পড়ে শেষ করেছে।।কিন্তু যখন রক্ত খাওয়া কিংবা ভয়ংকর কিছু ব্যাপার মুভিতে আসে তখন সে চোখ মুখ কান খিচে বন্ধ করে রাখে কিংবা স্কিপ করে দেয়।।।
লেখিকা সুমাইয়া আক্তার মিম।।।

কিছুক্ষণ আগে,🌸
মিটিং শেষ করে ইরফান রুমে প্রবেশ করে দেখে আয়ানা টিভির দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি করে হাসছে,তা দেখে ইরফান ভ্রু কুঁচকে টিভির দিকে তাকালো।। টিভিতে ভ্যাম্পায়ার মুভি চলছে সেখানে একটা খুব সুন্দর ভ্যাম্পায়ার তাঁর নীল নীল চোখে তাকিয়ে আছে খুব সুন্দর দেখতে যেমনটা সব ভ্যাম্পায়ারা হয়।। ইরফান তাকে ব্যতীত অন্য ছেলের দিকে তাকাতে দেখে খুব রেগে যায়,আয়ানা তাকে ছাড়া আর কাউকে দেখতে পারবে না হোক সেইটা ধরা ছোঁয়ার বাহিরে।আয়ানা ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে তা দেখে ইরফানের মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে এমন করে তো তাকে দেখার কথা কই কখনো তো দেখেনি এটা ভেবে রাগের ধাপ বেড়ে গিয়েছে আরো চোখ মুখে হিংস্রতার আভা ফুটে উঠেছে ইরফান জোরে জোরে নিঃশ্বাস ফেলেও রাগ কমাতে পারছে না, তখন আয়ানা কিছুটা হেসে টিভির দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো,,,,

—হায় ভ্যাম্পায়ার গুলো কতো হ্যান্ডসাম ডেশিং আর কুল। এদের এতো সুন্দর হতে কে বলেছে ইচ্ছে করছে,,,,, বলার আগে ইরফান আয়ানার হাত টেনে বিছানার উপর থেকে তুলে।।।এসব কথা শুনে রাগের মাত্রা ছাড়িয়ে যায় আর সে কন্ট্রোল হারিয়ে ফেলে।।।।

বর্তমান, ইরফান আয়ানার ঘারে স্লাইট করছে।আয়ানা ভয়ে চোখ খুলতে পারছে না, ইরফানের রাগ সম্পর্কে তাঁর ধারণা আছে এখন দেখা যাবে সত্যি সত্যি ভ্যাম্পায়ার হয়ে তাঁর রক্ত চুষে খেয়ে ফেলেছে, হঠাৎ ইরফান আয়ানার কানে হিসহিসি করে বলে উঠলো,

—-খুব শখ ভ্যাম্পায়ার দেখার তাইনা। আজকে সব শখ মিটিয়ে দিবো। আমি কী আমার আয়ু জানের কোনো শখ অপূর্ণ রাখতে পাড়ি বলো। (বাঁকা হেসে)।।
আয়ানা ইরফানের কথা শুনে ভয়ে এবার কাঁপতে লাগলো, ইরফান খুব শক্ত করে জড়িয়ে রেখেছে তাকে আয়ানা ভিতু গলায় ঢোক গিলে বললো,,,

—প্লিজ আর হবে না। এবারের মতো ছেড়ে দিন প্লিজ। আমি সত্যি বলছি আর হবে না, আমি আর কখনো এসব দেখবো না এবারে মতো ছেড়ে দিন প্লিজজজজ।।
করুন গলায়।

—-উহু !আমার জানের ইচ্ছে আমি অপূর্ণ রাখি কী করে বলো।প্রথম তোমার শরীরের রক্ত খাওয়া দিয়ে শুরু করি কেমন বলে আয়ানার ঘারে নাক দিয়ে স্লাইট করতে লাগলো।।
আয়ানা কিছুটা কেঁপে উঠলো, কাঁপা কাঁপা গলায় বললো,,
—ভ্যাম্পায়ারের মতো রক্ত খাবেন তাহলে ভ্যাম্পায়ের মতো একটু উরে দেখান তো 🙄
আয়ানার কথা শুনে ইরফান কটমট চোখে আয়ানার দিকে তাকালো, ক্ষানিক বাঁধে বাঁকা হেসে আয়ানা কিছু বুঝে উঠার আগে খুব জোরে কামড় বসিয়ে দিল ঘারে।।আয়ানা ব্যথায় আহ্ করে চিৎকার করে উঠলো, খুব ব্যথা পেয়েছে সে চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি ঝড়ছে।।আয়ানা একটু সরে আসতে নিলে ইরফান আরো শক্ত করে পেঁচিয়ে ধরে ব্যথা স্থানে ঠোঁট ছুয়ালো।।। মাথা উঁচু করে আয়ানার দিকে তাকিয়ে আয়ানার চোখের পানি মুছে দিয়ে চোখের পাতায় চুমু খেয়ে বললো,,,,

—–আর কখনো কোনো ছেলের দিকে তাকাবে না আমি ব্যতীত হোক সেটা ধরা ছোঁয়ার বাহিরে কিন্তু আমার একদম সহ্য হয় না তুমি অন্য কাউকে দেখলে।বলো আর কখনো দেখবে না, তাহলে আমার খুব কষ্ট হয়। অসহায় ভাবে বললো কথাটা কথা বলার সময় গলা কিছুটা কাঁপছিল ইরফানের।।
আয়ানা ইরফানের দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে মাথা নাড়িয়ে না বললো। ইরফান স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে আয়ানার কপালে চুমু খেলো বেশ কিছুক্ষণ আয়ানাকে নিজের বুকের সাথে জড়িয়ে রেখেছে,তারপর কপালে চুমু খেয়ে বাঁকা হেসে বলল,,,,

—-ভুল করেছো তাঁর জন্য শাস্তিতো পেতে হবে মেরি জান।। রাতে তোমার জন্য খুব সুন্দর শাস্তির ব্যবস্থা করেছি,একটু অপেক্ষা করো মেরি জান।।।
আয়ানা ঢোক গিলে বড় বড় চোখে তাকিয়ে বললো,,,

—আরো শাস্তি পেতে হবে।।।
—হুম। এখন তো শাস্তির কিছুই করিনি।।
আয়ানা ভিতু গলায় বলল,
—আর না প্লিজ!ঘার ব্যথা হয়ে গিয়েছে আমার।আর হবে না তো বলছি ঠোঁট উল্টিয়ে।।
—ব্যথা দিয়ে আদর করে তা সারিয়ে দিয়েছি এখন অন্য ভাবে শাস্তি পেতে হবে,যাতে করে এক ভুল দ্বিতীয় বার করার চেষ্টা কিংবা ভুল না করো ।ডেবিল হেসে।।
আয়ানা আর কিছু বলল না ঠোঁট উল্টিয়ে ভাবতে লাগলো ইরফান নতুন কী শাস্তি দিতে পারে তাকে শুধু মাত্র একটু মুভি দেখেছে বলে এতো শাস্তি। কেনো যে এই ভ্যাম্পায়ার মুভি দেখতে গেলো।‌লেখিকা সুমাইয়া আক্তার মিম।।
ইরফান আয়ানাকে ছেড়ে দিয়ে রুমের ভেতরে যতো ভ্যাম্পায়ার বুক আছে সব নিয়ে বাসক্টেটে ফেলে দিয়ে এতে আগুন ধরিয়ে দিলো।‌আয়ানা বিছানায় বসে ঠোঁট উল্টিয়ে তা দেখছে।সব হয়েছে এই খয়রাতি ভ্যাম্পায়ারের জন্য।।।। তাঁর ঘার টা ব্যথা করে দিয়েছে ইরফান ঘার ঢলতে ঢলতে।।‌

________________________________

“দুপুরের খাবারের সময় কোনো আওয়াজ না করে চুপচাপ খাবার ফিনিশ করে আয়ানা।এখন যদি কিছু বলে তাহলে তখনের রাগ আবার জাড়বে তার উপর ইরফান এর থেকে ভালো কোনো কথা না বলে খেয়ে নেওয়া।। ইরফান চুপচাপ আয়ানাকে খাইয়ে নিজেও খেয়ে নিলো। তারপর রুমে গিয়ে ল্যাপটপ নিয়ে বসে পরে।।আয়ানা তাঁর পাশে বসে নখ কামড়াছে তাঁর মাথায় আসছে না এখন সে কি করে রাতের শাস্তির হাত থেকে বাঁচবে।। হঠাৎ ইরফানের ধমকে কেঁপে উঠল,,,

—-ছি আয়ু নখ কামড়াছো কেনো, পেটে সমস্যা হবে যাও হাত মুখ ধুয়ে আসো।।আয়ানা মুখ ভেংচি কেটে ওয়াশরুম থেকে হাত মুখ ধুয়ে আসে।।মনে মনে ভাবে আজকে রাতে আমি খেয়ে তারাতাড়ি ঘুমিয়ে পরবো তাহলে আর শাস্তি দিতে পারবে না হে এটাই করবো বলে হেসে দিয়ে বিছানার উপরে গিয়ে বসে পরে। ইরফান আয়ানার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে ল্যাপটপে কাজ করতে মনোযোগ দিলো, এখন আর তাঁর জানকে কিছু করবে না এমনেতেই রাতের কথা শুনে ভীষণ ভয় পেয়েছে।। ইরফান ল্যাপটপে কাজ বাদ দিয়ে আয়ানার দিকে তাকিয়ে আছে, তাঁর পিচ্চি পরী তাঁর সামনে সে কী কাজে মনোযোগ দিতে পারে।।

❀❀রাতের বেলা,,,,
রাতের খাবার খেয়ে আয়ানা ইরফানের সাথে তারাতাড়ি করে রুমে চলে আসে আর কোনো দিকে না তাকিয়ে বিছানার উপর গুটিসুটি মেরে ব্ল্যানক্টে জড়িয়ে শুয়ে পরে ইরফান সেদিকে তাকিয়ে বাঁকা হেসে খুব জোরে রুমের দরজাটা লাগালো এতো জোরে আওয়াজ হয়েছে যার কারণে আয়ানা কিছুটা ভয় পেয়ে চোখ খিচে বন্ধ করে ফেলে।। ইরফান রুমের সব দরজা বন্ধ করে রুমের পর্দা গুলো দিয়ে দেয়।।আয়ানা দোয়া পরছে না জানি ইরফান তাকে সত্যি সত্যি না খেয়ে ফেলে।। হঠাৎ খুব কাছ থেকে ইরফানের উপস্থিতি বুঝতে পেরে আয়ানা কিছুটা কেঁপে উঠে চোখ আরো খিচে বন্ধ করে নিয়েছে এমন ভাব করছে সে ঘুমিয়ে গিয়েছে। ইরফান আয়ানার কপালে আঙ্গুল দিয়ে স্লাইট করে থুতনিতে এসে থামছে বেশ কয়েকবার এমন করে আরেকটু কাছে এগিয়ে যায় আয়ানার এবার শরীর মাত্রাতিরিক্ত কাঁপছে। ইরফান আয়ানার কপালে ডিপলি কিস করে হাতের বাহু ধরে টেনে বসিয়ে দিল, হঠাৎ এমন হওয়া আয়ানা চমকে যায় ড্যাবড্যাব করে ইরফানের দিকে তাকিয়ে আছে ইরফান আয়ানার দিকে তাকিয়ে বলল,,,

—–শাস্তি পাওয়ার আগে কোনো ঘুম নেই, এখন তোমার শাস্তি পাওয়া বাকি। বাঁকা হেসে।।

—-আমার খুব ঘুম পেয়েছে প্লিজ আজকের মতো ছেড়ে দিন প্লিজ। অসহায় ভাবে বললো।

—-নোপ বেবি! আজকে ছাড়া যাবে না। চুপচাপ এখানে বসে থাকো বলে বিছানা থেকে উঠে রুমের লাইট অফ করে একটা টেবিল ল্যাম্প জ্বালিয়ে দেয় আয়ানা অন্ধকার ভয় পাবে তাই।।।টিভির সামনে গিয়ে একটা ডিবিডি প্লে করে রিমোট নিয়ে বিছানায় আয়ানার পাশে বসে পরে।আয়ানা গোল গোল চোখে ইরফানের দিকে তাকিয়ে আছে এটা কেমন শাস্তি।মুভি দেখাবে আগে বললে হতো এতো ড্রামা করার কী আছে।আয়ানা ইরফানের থেকে চোখ সরিয়ে টিভির দিকে তাকালো মুভি শুরু হচ্ছে হঠাৎ করে খুব জোরে বিদঘুটে আওয়াজে আয়ানা ভয় পেয়ে এক চিৎকার দিয়ে ইরফানকে আঁকড়ে ধরলো। টিভিতে রক্ত দিয়ে বড় বড় অক্ষরে লেখা হয়েছে হান্টাড্ হরর মুভি।।আয়ানা ভয়ে ইরফান কে খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরেছে, ইরফান বাঁকা হেসে আয়ানার গালে হাত রেখে টিভির দিকে জোর করে মুখ করে কিন্তু আয়ানা আবার তারাতাড়ি করে ইরফানকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আর জোরে জোরে নিঃশ্বাস ফেলতে লাগলো কাঁপা কাঁপা গলায় বললো,,,,

——আমার খুব ভয় করছে প্লিজ প্লিজ এটা বন্ধ করুন আরেকটু শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।। ইরফান বাঁকা হেসে বললো,,

—–এটা তোমার শাস্তি। এখন সোজা হয়ে মুভি দেখো আর আমাকে ও দেখতে দাও।।। সোজা করে বসিয়ে।।আয়ানা মাথা নাড়িয়ে না করছে আর হাত ছুটোছুটি করছে ইরফান খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রাখে যাতে করে নড়াচড়া না করতে পারে।।।
টিভিতে ঝুমঝুম বৃষ্টি আর ভয়ংকর আওয়াজে হচ্ছে নিস্তব্ধ রুমে জেনো একটা ভুতুড়ে ভুতুড়ে পরিবেশ সৃষ্টি করেছে,আয়ানা চোখ বন্ধ করে রাখলেও কান বন্ধ করতে পারছে না দুই হাত ইরফানের হাতে বন্দী।।আজকে যদি কোনো রকম বেঁচে যায় তাহলে ভ্যাম্পায়ার মুভি দেখাতো দূরের কথা কখনো আর এই খয়রাতি ভ্যাম্পায়ারের নামও নিবে না।আজকে শুধুমাত্র এই খয়রাতির জন্য এমন হচ্ছে।।।(খয়রাত অর্থ ভিক্ষা করা যেহেতু ভ্যাম্পায়াররা মানুষের অনুমতি ছাড়া তাদের শরীর থেকে রক্ত প্রান করে এই জন্য আয়ানার ভাষায় এরা খয়রাতি 😁)

“ইরফান আয়ানার দিকে তাকিয়ে শান্ত গলায় বললো,
—-চোখ খোলো আয়ু! নাহলে ডাবল পানিশমেন্ট পেতে হবে।।।।

—–উহু ।মাথা নাড়িয়ে না বললো।
ইরফান ধমক দিয়ে বললো চোখ খুলতে।আয়ানা ভয়ে ভয়ে চোখ খুলে, সামনে ভুতের মুভি আর সাথে তাকে চেপে আছে আস্ত বড় রাক্ষস সামনের তুলনায় তাকে আকড়ে ধরা রাক্ষস বেশি ভয়ানক।।মুভিতে নায়িকা একটি বাড়িতে একলা ঘুমাচ্ছিল হঠাৎ কিছু একটা আওয়াজ হতে সে মোমবাতি জ্বালিয়ে রুমের বাহিরে যাওয়ার জন্য পা বাড়ায় যেহেতু বৃষ্টি হচ্ছে তাই বাড়িতে বিদ্যুৎ নেই।।নায়িকা ভয়ে ভয়ে সামনে পা রাখছে তাঁর কপাল বেয়ে বিন্দু বিন্দু ঘাম ঝরছে সাথে পাল্লা দিয়ে হার্ট বিট খুব দ্রুত চলছে নায়িকার সাথে সাথে আয়ানার ও একই রকম অবস্থা হয়েছে সে আল্লাহ আল্লাহ করছে আর মনে মনে নায়িকাকে বের হতে না করছে।। হঠাৎ খুব জোরে একটা আওয়াজ হয় আর সাথে সাথে নায়িকার মোমবাতি বন্ধ হয়ে যায় সম্পূর্ণ মুভির সিন অন্ধকার দেখাচ্ছে তা দেখে আয়ানা চিৎকার দিয়ে ইরফানের উপর উঠে বসে তাকে সামনে থেকে জরিয়ে ধরে খুব শক্ত করে তা দেখে ইরফান কিছুক্ষণ শান্ত ভাবে তাকিয়ে দেখে হঠাৎ করে জোরে জোরে হাসতে লাগলো।আয়ানা ভয়ে থরথর করে কাঁপছে আরো শক্ত করে ইরফানকে জড়িয়ে ধরেছে পারছে না এখনি ইরফানের বুকের ভেতরে ঢুকে পরে, ইরফান মুচকি হেসে আয়ানাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে এক হাত দিয়ে অন্য হাত দিয়ে টিভির রিমোট নিয়ে টিভি অফ করে দেয়।আয়ানা এখনো কাঁপছে তা দেখে ইরফান বালিশে হেলান দিয়ে ব্ল্যানকেট জড়িয়ে দিলো দুজনের শরীরে,আয়ানা এখনো আগের মতো তাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে তাঁর বুকে মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে আছে ইরফানও খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরে তাঁর পিচ্চি পরীকে মাথায় ভালোবাসার পরশ এঁকে দিলো। লেখিকা সুমাইয়া আক্তার মিম।আয়ানার কাঁপুনি কমে এসেছে কিছুটা এখন শান্ত ভাবে সম্পূর্ণ শরীর এলিয়ে দিয়ে ইরফানের উপর শুয়ে চোখ বন্ধ করে রেখেছে ইরফান আয়ানার মাথা বিলি কেটে দিচ্ছে আর নানা কথা বলছে আয়ানার সাথে আয়ানা শুধু হু হা করছে।বেশ কিছু সময় পর আয়ানার সাড়া না পেয়ে ইরফান আয়ানার দিকে তাকিয়ে দেখলো তাঁর বুকে গুটিসুটি মেরে ঘুমিয়ে গিয়েছেছে ইরফান আয়ানার কপালে চুমু খেয়ে জড়িয়ে ধরে চোখ বন্ধ করে নিলো চোখ বন্ধ করতে আয়ানার ভিতু মুখ দেখে আনমনে হেসে দেয়।।। ইরফান আয়ানাকে ভয় দেখানোর জন্য এমন করেছে,আয়ানা ভুত খুব ভয় পায় তাই শাস্তি দেওয়ার নামে ভয় দেখিয়েছে শাস্তি দিবে এটা মিথ্যা কথা ছিল। আজকে আয়ানাকে ভয় দেখিয়ে আয়ানার ভিতু মুখ দেখে খুব হাসি পেয়েছে ভয় পেয়ে যখন আয়ানা তাকে জড়িয়ে ধরেছিল তখন অন্য রকম শিহরণ বয়ে গিয়েছে মনে এটাই তো চেয়েছিল তাঁর আয়ু জান ভয় পেয়ে তাকে নিজের থেকে জড়িয়ে ধরবে আর সে তখন মন ভরে তা ফিল করবে।।।

#To_be_continued………..🦋
#Happy_Reading

লেখিকা সুমাইয়া আক্তার মিম✵

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here