ছোট সাহেবের অত্যাচার – পর্ব ১২+১৩

0
497

ছোট সাহেবের অত্যাচার
Writer:Bushratuzzaman Shoya
Part:12+১৩
.
—— কি???
এই মাসেই হবে অসম্ভব।
.
—— এই মাসেই হচ্ছে বিয়েটা ব্যাস।
ভালো একটা দিন দেখে শুধু বিয়ের তারিখ টা ঠিক করা।
.
—— ড্যাড।
.
আমি আমার রুমে চলে গেলাম,,,,,,,,,,
আমি আমার রুমে বসে রয়েছি,,,,,,,,,
আর শুধু ভাবছি এই বৃষ্টিতে আমার সাথে কি কি হল আজকে,,,,,,,,,
.
যখনই বিদ্যুৎ চমকানোর জন্য ছোট সাহেবকে জড়িয়ে ধরেছিলাম সেই কথা মনে পড়াতেই আমি মুখ লুকিয়ে নিচ্ছি লজ্জায়,,,,,,,,,
ঠিক ওইসময় আপু আসল আমার ঘরে,,,,,,,,,
আমার মুখ হাত দিয়ে লুকানো দেখে বলছে,,,,,,,,,
.
—— কি রে এত লজ্জা কিসের???
.
আমি সাথে হাতটা নিচে নামিয়ে নিলাম,,,,,,,,,
আর নিজেকে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছি,,,,,,,,,
আপু আবার আমাকে বলছে,,,,,,,,,,,
.
—— বললি না তো।
লজ্জা পাচ্ছিস কেন????
.
—— কোথায় লজ্জা পাচ্ছি আমি???
আমি তো এমনিই হাতটা দিয়ে মুখ লুকিয়েছিলাম।
.
—— যে মিথ্যে কথাটা বলতে পারিস না সেইটা কেন বলতে যাস???
আর তুই আমার কাছ থেকে কিছুই লুকিয়ে রাখতে পারবি না।
বল কি হয়েছে???
.
আমি বাধ্য হয়েই আপুকে সব কিছু খুলে বললাম,,,,,,,,,,
আপু আমার কথা শুনে হাসছে,,,,,,,,
আর বলছে,,,,,,,,
.
—— ভালো ভালো।
দেখেছিস আল্লাহও চাই তোরা দুইজন এক হ।
.
—— আমি আর কিছুই বললাম না।
.
—— ওইদিকে চল।
সবাই ওইদিকে আছে।
.
.
.
আপু আমাকে সবাই যেইখানে রয়েছে সেইখানে নিয়ে গেল,,,,,,,,,,
আমাকে বসিয়ে দিল,,,,,,,,,,
সাহেব আমাকে বলছেন,,,,,,,,,
.
—— মা তুই তো এই বিয়েতে রাজি আছিস???
তুই রাজি না থাকলে এই বিয়ে দিব না।
এইটা তোর পুরো জীবনের ব্যাপার।
.
—— আপনি আমার লাইফের জন্য যা যা ভেবেছেন তা কি কখনও খারাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এইবারও আপনি আমার জন্য কোন খারাপ কিছু ভাবছেন না।
আমি রাজিই আছি বাবা।
মাফ করবেন সাহেব।
.
—— বাবাটাই ঠিক ছিল রে মা।
.
—— বাবা।
.
উনারা সবাই কথা বলছেন বিয়েটা কবে করানো যাই সাথে সঙ্গীত,,,,,,
হাতে মেহেদী লাগানো,,,,,,,,
গায়ে হলুদ,,,,,,,,
.
তারপর বিয়ে,,,,,,,,
উপর থেকে ছোট সাহেব চিল্লিয়ে চিল্লিয়ে আমাকে ডাকছেন,,,,,,,,,
.
—— এই ছোঁয়া কোথায় রে তুই????
তাড়াতাড়ি আই উপরে।
.
হঠাৎ করে উনার এইরকম ডাকে সবাই হাসছে,,,,,,,,,
আর বলছে,,,,,,,,
.
—— ইসস এখন ছোঁয়াকে ডাকছে।
আবার বলে বিয়ে করবে না।
.
—— বোধ হয় আবার কোন প্রয়োজন পড়েছে।
.
—— আরে কোন কিছু খুজে পাচ্ছে না।
তাই ডাকছে।
আরে দাঁড়িয়ে থাকিস না যা যা পাগল হয়ে যাচ্ছে।
.
.
.
আমি আর এইখানে একমুহুর্ত দাঁড়িয়ে না থেকে উপরে চলে গেলাম উপরে,,,,,,,,,
ছোট সাহেবের ঘরের বাইরে দাঁড়িয়ে বলছি,,,,,,,,,,
.
—— ছোট সাহেব আমাকে ডাকছিলেন।
.
ছোট সাহেব আমার দিকে ঘুরে বলছেন,,,,,,,
.
—— হুম ডাকছিলাম।
ভিতরে আই।
.
আমি ভিতরে ঢুকলাম,,,,,,,,,
ভিতরে ঢুকার সাথে সাথেই বলছি,,,,,,,,,
.
—— ছোট সাহেব আমাকে কেন ডাকছিলেন???
.
—— তুই আমার,,,,,
.
—— কি আপনার???
.
—— তুই আমার গিটার কোথায় রেখেছিস??
.
—— এত রাতে আপনি গিটার দিয়ে কি করবেন ছোট সাহেব???
.
—— গান গাইতে মন চাইছে,,,বাজাতে মন চাইছে।
কোথায় রেখেছিস বল???
.
—— আপনার পিছনে রাখা আছে।
ভালো করে দেখুন।
.
—— ওও।
.
.
.
আমি চলে যাচ্ছিলাম ঠিক তখন পিছন থেকে হাতটা টেনে ধরলেন ছোট সাহেব,,,,,,,,,
আমি পিছন ঘুরে তাকিয়ে বলছি,,,,,,,,,
.
—— আপনার কি আরও কিছু লাগবে ছোট সাহেব???
.
—— না আমার কিছুই লাগবে না।
.
—— তাহেলে হাত ধরে টান দিলেন কেন ছোট সাহেব???
.
—— তোকে দেখার জন্য।
.
—— আমাকে দেখবেন মানে??
.
—— না মানে এইটাই দেখছি তোর মধ্যে এমন কি আছে যে সবাই দেখে তোকে আমার সাথে বিয়ে দিচ্ছে।
কিন্তু সেটা আমি দেখতে পাচ্ছি না।
.
—— আর দেখে চিনতে হবে না।
বেশি চিনতে গেলে প্রেমে পড়ে যাবেন।
.
উনি আবার আমার হাতটা টান দিয়ে পিছন দিকে হাতটা নিয়ে বলছেন,,,,,,,,,
.
—— প্রেমে পড়ব তাও আবার তোর।
ইম্পসিবল।
.
আমি হাতটা ছুটিয়ে নিয়ে বলছি,,,,,,,,,
.
—— চিনতে থাকুন আমাকে তখন বলবেন প্রেমে পড়েছেন কিনা।
.
আমি এক দৌড়ে নিচে চলে আসলাম,,,,,,,,,
সবাই আমাকে জিজ্ঞাসা করছে,,,,,,,,
.
—— কি রে তোকে কি বলল রে???
.
—— আর হাসতে হাসতে বের হচ্ছিস কেন???
.
—— না কিছু না।
.
.
.
আমি আমার রুমে চলে আসলাম,,,,,,,,,
রুমে এসে হাসতে হাসতে শুয়ে পড়লাম,,,,,,,,,
.
ছোট সাহেব আমার কথা শুনে শুধু মাথা চুলকাচ্ছেন,,,,,,,,
তারপর উনি লাইটটা অফ করে দিয়ে শুয়ে পড়লেন,,,,,,,,,
যখনই উনি চোখ বন্ধ করছেন সাথে সাথে আবার চোখ খুলে ফেলছেন,,,,,,,,,,
.
—— আরে আমি চোখ বন্ধ করে শুধু ছোঁয়াকেই দেখছি কেন????
.
আবার চোখ বন্ধ করছেন,,,,,,,,,
আবার চোখ খুলছেন,,,,,,,
এইভাবে নিয়ে অনেকবার হয়ে গেছে,,,,,,,,
.
—— এই মেয়ে তো দেখি আজকে আমার চোখের ঘুম কেড়ে নিয়েছে।
ড্যাত দেখলে দেখলাম আমি তো ঘুমিয়ে পড়লাম,,,,,,,,,
.
.
.
চলবে
ছোট সাহেবের অত্যাচার
Writer:Bushratuzzaman Shoya
Part:13
.
সকাল সকাল আমার ঘুমটা ভেঙ্গে গেল,,,,,,,,,,
আমি বাইরে চলে আসলাম,,,,,,,,,
এখনও আমার চোখে ঘুম,,,,,,,,,
.
তাই চোখ ডলতে ডলতে হাঁটছি,,,,,,,
হঠাৎ করেই কারোর সাথে ধাক্কা খেলাম,,,,,,,,
চোখ খুলেই দেখি ছোট সাহেব,,,,,,,,,
.
দেখি ছোট সাহেব আমার কোমড়ে হাত দিলেন,,,,,,,
ছোট সাহেবেরও অবস্থা খারাপ,,,,,,,,
চুল একদম এলোমেলো হয়ে রয়েছে,,,,,,,,
.
আমার উনাকে দেখে খুব হাসি পাচ্ছে,,,,,,,,
উনাকে দেখে এমন মনে হচ্ছে উনি সারারাত ঘুমাতে পারেননি,,,,,,,,,
আমি নিকেকে কন্ট্রোল করে বলতে লাগলাম,,,,,,,,
.
—— ছোট সাহেব আমাকে ছাড়ুন।
.
উনি আমাকে ছেড়ে দিলেন,,,,,,,,,
ছেড়ে দিয়ে বলতে লাগলেন,,,,,,,,
.
—— এই তুই কি দেখে চলতে পারিস না সামনে যে কেউ রয়েছে।
.
—— আমি না হয় না দেখে চলছিলাম।
কিন্তু আপনি তো দেখে দেখে চলছিলেন।
আপনি তো আমাকে দেখে সাইড দিতে পারতেন।
.
—— দ্যাখ ছোঁয়া বেশি বেশি কথা বলবি না।
এমনিতে সারারাত ঘুমুতে পারি নাই।
.
—— সেইটা তো আপনাকে দেখেই বুঝা যাচ্ছে ছোট সাহেব।
আপনার সব চুল এলোমেলো হয়ে রয়েছে।
.
—— এই ছোঁয়া বেশি কথা বলবি না।
তোর জন্যই তো সারারাত ঘুমুতে পারি নাই।
.
—— যাক বাবা আমি আবার কি করলাম??
.
—— নিশ্চুপ।
.
—— কি হল বলুন কি করেছি আমি???
যার কারনে আপনি ঘুমুতে পারেননি।
.
.
.
উনি কোন কিছু না বলে শক্ত করে আমার হাতের বাহু দুটোকে ধরলেন,,,,,,,,
এমনভাবে ধরেছে যে প্রচুর ব্যথা করছে,,,,,,,,
মনকে শক্ত করে বলতে লাগলাম,,,,,,,,
.
—— আজব তো এমন কি করেছি যে আপনি ঘুমাতে পারেন নি।
তা না বলে আমার হাতের বাহু দুটোকে ধরলেন।
আপনার শক্ত শক্ত হাত দিয়ে।
.
—— তোর জানতে হবে তুই কি করেছিস???
.
—— আমার জানার অধিকার আছে ছোট সাহেব।
.
—— না তোকে জানতে হবে না।
এইবার চুপ করে থাক।
.
—— আমি চুপ থাকব না।
আমি জেনেই ছাড়ব কি এমন করেছি যে আপনার চোখের ঘুম আমি কেড়ে নিয়েছি।
.
পিছন থেকে আপু একটা কাশি দিল,,,,,,,,,
সে বলে‌ উঠল,,,,,,,
.
—— বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত তুমি তোমার হবু স্ত্রীর মুখ দেখতে পারবে না প্রান্তিক।
.
—— আমি দেখতে চাই না এর মুখ।
আমার দেখার কোন ইচ্ছা নেই।
.
—— ইসস।
.
.
.
পুষ্পিতা বলে উঠল,,,,,,,
.
—— আমি জেনে খুব খুশি হয়েছি ছোট ভাইয়া আর ছোঁয়া ভাবি তোমাদের দুইজনের বিয়ে হবে।
.
—— আরে পুষ্পিতা তুই কখন আসলি???
.
—— অনেক রাত করে ভাইয়া।
বড় ভাবি কি বলল বিয়ের আগে হবু স্ত্রীর মুখ দেখা যাবে না।
তুমি তবুও হ্যাংলার মত করে এইখানে দাঁড়িয়ে রয়েছ।
.
—— যাচ্ছি যাচ্ছি।
.
ছোট সাহেব চলে গেলেন,,,,,,,,
পুষ্পিতা আমার কাছে আসল,,,,,,,,
আমি পুষ্পিতাকে জিজ্ঞাসা করছি,,,,,,,,
.
—— এত দেরি হল কেন আসতে???
.
—— গাড়ি নষ্ট হয়ে গেছিল তাই দেরি হয়েছে আসতে।
.
—— ও।
.
—— আমার ঘরে আস তো।
বড় ভাবি তুমিও আস তো।
তোমাদের দুইজনের জন্য গিফট নিয়ে এসেছি।
.
—— হুম চল।
.
.
.
পুষ্পিতা আমাদের দুইজনকে ওর ঘরে নিয়ে গেল,,,,,,,,,
বাবা আর বাকি সবাইরা নিচে চলে এসেছে,,,,,,,,
ছোট সাহেবও নিচে চলে এসেছে,,,,,,,,,
.
বাবা বলতে লাগলেন,,,,,,,,,,
.
—— বিয়ের তারিখ আর বাকি সব অনুষ্ঠানের তারিখও ফিক্সড হয়ে গেছে।
.
—— কি???
সব কিছুই ঠিক হয়ে গেছে।
.
—— কবে কবে???
.
—— বলছি তো বলছি।
এক সপ্তাহ পর ঠিক মেহেদী লাগানোর অনুষ্ঠান হবে আর তারপর গায়ে হলুদ।
আর তারপর বিয়ে।
.
ছোট সাহেব মুখ ঘুমড়ো করে বসে রয়েছে,,,,,,,,
আমি,পুষ্পিতা আর আপু নিচে চলে আসলাম,,,,,,,,,
দাদীমা আমাকে টেনে নিজের কাছে বসিয়ে নিল,,,,,,,,,,
.
আমি কিছুই বুঝতে পারলাম না,,,,,,,,,,,
এইখানে কি কি বিষয় নিয়ে কথা হচ্ছে,,,,,,,,,,
বাবা আবার বলা শুরু করলেন,,,,,,,,,,
.
—— তার আগে যদি তোমরা সঙ্গীতের অনুষ্ঠান করতে চাও তাহলে কালকে বা পরশু দিন করতে পার।
.
—— ঠিক আছে।
.
.
.
ছোট সাহেবের বন্ধুরা আসল,,,,,,,,,,
বাবা তাদেরকে দেখে বলছে,,,,,,,,,,
.
—— এই কয়েকদিন আসনি কেন???
আজকে আসলা।
.
—— কাজে ব্যস্ত ছিলাম আঙ্কেল।
.
—— তোমাদের তো কাজ দিতে চাই।
.
—— কি কাজ আঙ্কেল???
.
—— তোমাদের বন্ধুর তো বিয়ে করাচ্ছি।
সব দায়িত্ব তোমাদেরক দিতে চাই।
.
—— কার সাথে আঙ্কেল???
.
—— ছোঁয়ার সাথে।
.
—— আঙ্কেল আপনি কোন চিন্তা করবেন না সব দায়িত্ব আমরা নিচ্ছি।
.
ছোট সাহেব মুখ একবার ওইদিকে নিচ্ছেন আর একবার ওই দিকে,,,,,,,,
উনার বন্ধুরা উনার কাছে আসলেন,,,,,,,
আর বলতে লাগলেন,,,,,,,
.
—— কি বলেছিল রিলেশন করে না????
তাহলে এইসব কি দোস্ত বিয়ে।
লুকিয়ে রাখতে পারবি না।
.
.
.
চলবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here