★★★ক্রাশশ যখন বড় আপু★★★
#লেখক_আসিফ
~~~পর্ব_১৭~~~
.
.
ঘুম থেকে উঠতে,,,অনেক দেরি হয়ে গেছে।নীলা আপুকে আনতে যেতে হবে….। আপুর শশুড় বাড়ি তেমন দুরে না,,,কাছেই যেতে দশ মিনিট লাগবে।।।
মামা আমাকে ডেকে দিলেন,,,মাইশা রেডি হয়ে গেছে।।।আমাকে রেডি হতে বললেন।।।ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে। হাল্কা নাস্তা করে,,,মাইশাকে ডেকে আনতে গেলাম।
আরেকটা কথা বলা হয় নি,,,,মাইশার আব্বু কিন্তু আমাদের পুরো এলাকা পরিচয় করিয়ে দিছে।।আমি মাইশাকে বিয়ে করছি।।।এলাকার লোকজন আমাকে জামাই জামাই বলে ডাকে।।মাইশা আমি একসাথে গেলে ত,,,অনেক পিচ্ছি এসে বলবে,,,।আপু এটাই কি দুলাভাই।।আমি পরছি মাইক্কা চিপায়।।রাফি এই নিয়েও অনেক রাগারাগি করছে।কিন্তু এখন সব কিছু ভালোভাবেই জেনে গেছে। তাই আর কিছু বলে না।।তবে মাইশার আব্বু মাইশা আর রাফির সম্পর্কের কথা যানে না।।।।মাইশা রাফিকে এক করা একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়াবে।।।
মাইশাকে ডেকে নিয়ে,,,বেড়িয়ে পড়লাম।নীলা আপুর শশুড় বাড়ির উদ্দেশ্যে।সাজিদ কালকেই আপুর সাথে গিয়েছিল।।।সাজিদ এবার এস এস সি দিয়েছে।।কলেজে উঠবে।। মামা,,,বাজারে গেছে কি যেন আনার জন্য,,,।মিস্টি হয়ত নিয়ে যাবে।।,,মামা,,আমি,মাইশা গাড়ি নিয়ে নীলা আপুর বাসার সামনে।।
সাজিদকে,,দেখছি,,,নীলা আপুর ননদ মীমের সাথে ভাব জমিয়ে তুলেছে।।আমাদের বাসার ভিতরে নিয়ে গেলো।…নীলা আপুকে খুজতে লাগলা আপু,,তার রুমে কাপড় গোছাচ্ছিল।।দুলাভাই হেল্প করছে।।
— আপু,,,(মাইশা)
— আসতে এতক্ষন লাগে তোদের,,,কেমন আছিস বস এখানে??(নীলা আপু)
— দেরিতো হইছে আসিফের জন্যই? দিনের ১১ টা পর্যন্ত ঘুমাইছে।(মাইশা)
— কি আমার জন্য দেরি হইছে? নাকি তর মেকাপ করতে করতে দেরি হইছে?(আমাদের কথা কাটাকাটা সব সময় ই হয়)
— আমি কই মেকাপ করলাম,,আমি এমনেই সুন্দর,,,কি দুলাভাই আমি সুন্দর না???(মাইশা)
— হুম,,নীলার থেকেও?(মজা করে হয়ত বলছে।কিন্তু আপুর রাগি চোখ দেখে বুজা যাচ্ছে আজ দুলাভাইয়ের খবর আছে।।।)
— দেখছিস,,,?(মাইশা ভেংচি কেটে)
— সব ময়দার গুন?(বিরবির করে)
— এই তোরা থামবি?(নীলা আপু)
— হুম থেমে গেছি,,,দুলাভাই কেমন আছে?(আমিল
— ভালো,,,তুমি?কাল ত অনেক খাটাখাটনি গেছে।।।(দুলাভাই আমাকে বললো)
— কেন দুলাভাই আমি মনে হয় কিছু করি নাই?(মাইশা রাগ দেখিয়ে)
— কি করেছিস তুই,(আমি)
— আপুকে সাজাইছে কে?(মাইশা)
— কে?(দুলাভাই)
— কে আবার আমি?(মাইশা)
— তার জন্য এমন হইছে?(দুলাভাই)
— কিহ,,,সুন্দর হয়নি,,?আমার সাজানো এলাকা জুরে বিখ্যাতো আর আপনি বললেন সুন্দর হয় নি?(মাইশা প্রায় কেদে দিবে)
— কখন বললাম,,,,সুন্দর হয় নি,,,।তোমার আপুকে দেখে চোখ ফেরাতে পারি নি আমি।।।(দুলাভাইয়ের কথা সুনে মাইশা অনেক খুশি আর আপু মনে হয় লজ্জা পাইছে)
— হইছে আর পাম দিতে হবে না?(নীলা আপু)
— আচ্ছা ঠিক,,,আছে,,,খেতে ডাকছে চলো?(দুলাভাই)
দুলাভাই অনেক ভদ্র আপুকে অনেক ভালোবাসে।।এবং বাসবে সেই আশা আছে।।আমরা খেতে বসলাম।।আগে থেকে সবাই বসে আছে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে।।সাজিদ ত দুলাভাইয়ের ৯ম শ্রেনীতে পড়া বোনের সাথে ভালোই ভাব জমিয়ে দিয়েছে।।।আসলে বর্তমান যুগ টাই এমন ছোট ছোট ছেলে মেয়ে এগুলো খুব ভালোভাবে বুজে।। যাক দুলাভাইয়ের বোন দেখতে খারাপপ না।।।সাজিদের সাথে মানাবে ভালো।।এখানে কিছু বলবো না।আগে বাসায় যাই তার পর সাজিদকে আমার এক্সপিরিয়েন্স দিয়ে সাজিদকে পাক্কা প্রেমিক বানিয়ে দিবো।
খাওয়া শেষ করে বাসার দিকে রওনা দিচ্ছি।।। আপুর ননদ আসছে আমাদের সাথে।।সাজিদ ত দেখি মহা খুশি।মনে তাহলে লাড্ডু ফুটছে।।
সাজিদকে ডেকে,,,
— সাজিদ,,,সব দেখছি কিন্তু?(আমি কিছুটা ভয় দেখিয়ে)
— ভাইয়া কাউকে বইল না প্লিজ,,,আমাদের প্রেমটা করিয়ে দেও প্লিজ?(সাজিদ আমাকে অনুরোধ করে বলছে)
— সমস্যা নাই।।তুই শুধু আমার কথা মতো কাজ করবি,,,নীলা আপুকে আমি বুঝাবো।।(আমি)
— আচ্ছা ভাইয়া তাই হবে? (সাজিদ)
— আচ্ছা আগে বাসায় চল,,,(বাসায় এসে পরেছি।)
আমি মালামাল কিছুটা বহন করে নিচ্ছি,,।।সাজিদকে ছেড়ে দিছি আপুর ছোট কিঊট ননদের সাথে।।।বাসায় এসে পরছি।বাসায় ভালোই আনন্দ ফিরে আসলো।।।
বলা হয় নি আপুর শুশুড়বাড়িতে,,,শশুড়,শাশুড়ি,,,আর ছোট একটা ননদ,,,নাম শান্তা।।। শশুড় শাশুড়ির মাসাল্লাহ অনেক ভালো ব্যবহার। আমাকে,,বাবা বাবা বলে ডেকেছে।অল্পতে মানুষকে আপন বানিয়ে দিতে পারে।।।
দুলাভাই ফ্রেশ হতে চলে গেছে।আপু ফ্রেশ হয়ে এসেছে।মাইশা,,, শান্তাকে,,, মাইশাদের বাসায় নিয়ে গেছে ঘুরিয়ে আনতে।। সাজিদ আমি রুমে বসে আছি।খুব ক্লান্ত লাগছে একটু রেস্ট নেই।।।কিন্তু সাজিদ ত আমাকে ঘুমাতে দিচ্ছে না।
— ভাইয়া কি ভাবে কি করবো?(সাজিদ)
— তর কিছু করতে হবে না,,,আমি সব করে দিব।।তুই শুধু শান্তার আশেপাশে থাকবি আর একবার ছাদে,,,নিয়ে যাবি আরেকবার বাসায় নিয়ে আসবি।।(আমি কি বুদ্ধি দিচ্ছি নিজেও জানি না)
— কি যে বলো ভাইয়া,,,(সাজিদ)
— এখন ঘুমাবো,,, বিকেলে কাজ হয়ে যাবে।।। তুই অ ঘুমা।।(বলেই আমি ঘুমিয়ে পড়লাম)
সাজিদও আমাকে ডাকে নাই,,,,লম্বা একটা ঘুম দেওয়ার পর সাজিদ ডেকে তুলছে।।।
— ভাইয়া ভাইয়া,,,বিকেল হয়ে গেছে তো?(সাজিদ)
— তুই কখন বিকেল হবে সেই অপেক্ষায় ছিলি নাকি?(সাজিদকে হেসে হেসে বললাম)
— হুম,,,না?(সাজিদ)
— ফ্রেশ হয়ে আসি,,,তুই যা।।
ফ্রেশ হয়ে এসে দেখি সবাই টিভি দেখছে,,,।আমাকে দেখে দুলাভাই বলছে.
— কিহ ঘুমের রাজা,,,ঘুম ভাংছে তাহলে?(দুলাভাইয়ের কথা শুনে মাইশা বলে উঠলো)
— বললাম না,,,আসিফ শুধু ঘুমায়।।(মাইশা লেগে থাকে সব সময়)
— ভালো করছি?(আমি)
— মাইশা চুপ করতো,,,আসিফ একটু বেশি ঘুমায় তাই বলে এত কথা বলতে হয় না।।।(নীলা আপু,,আমাকে বুজে ভালো)
তার পর সোফায় বসে অনেকক্ষন কথা বলে,,,ছাদে যাবো ঠিক করলাম।বাহিরে যাওয়া নিষেধ এখন,,,,।
আপু, দুলাভাই,শান্তা,,মাইশা আমাদের আগেই চলে গেছে।।আমি সাজিদ ইচ্ছা করেই দেরি করলাম।।কি করে শান্তাকে পটানো যায় সাজিদের জন্য????
ছাদে যাবার আগে,,নিচ থেকে সবার জন্য আইস্ক্রিম নিয়ে গেলাম,,।এখন এসব খাওয়া ঠিক না তার পরও যে গরম পরছে।।সবাইকে আমি দিচ্ছি আর সাজিদকে পাঠালাম শান্তাকে দেওয়ার জন্য।।মাইশা কিছুটা বুজতে পারছে?
— কিরে কি প্লানিং চলছে?(মাইশা)
— তোকে বলতে পারি যদি তুই হেল্প করিস(আমি)
— করবো,,,বল।(মাইশা)
— শান্তার প্রেমে সাজিদ হাবুডুবু খাচ্ছে।।
— অহ আচ্ছা,,,আমি আগে থেকেই ধারনা করছি।।(মাইশা)
— হুম তর দরকার পরলে হেল্প করিস।।
— আচ্ছা।।
— আপু তোমরা কথা বলো আমরা এদিকে যাচ্ছি।।।(আমরা ছাদের আরেক পাশে যাবো শান্তা মাইশার সাথে)
— শান্তা এদিকে আসো,,,(আমি)
আমরা এক জায়গায় বসলাম,,,বিকেল্টা অনেক সুন্দর লাগছে।
— কেমন লাগছে শান্তা,,?(আমি)
— জ্বি ভাইয়া ভালো?(আমার সাথে বিয়ের দিন ই অনেক ফ্রি হয়ে গেছে)
— তো,,,শান্তার কোনো বফ টফ আছে?(আমিই খুজ খবর নিচ্ছি)
— না ভাইয়া,,,, আর এই সব ভাইয়া সুনলে মেরে ফেলবে আমাকে?(শান্তা)
— ভালো,,এইসব না করাই ভালো?(আমি)
— আচ্ছা ভাইয়া তোমাদের প্রেমের কাহিনিটা বলো সুনি?(শান্তার সাহসি প্রশ্ন)
— আমাদের,,প্রেমের কাহিনি।।কার সাথে।।(আমি ঠিক বুজতে পারছি না।কার কাছ থেকে সুনলো।আপু বলে দিলো)
— মাইশা আপুর আব্বুর কাছে, তোমাদের নাকি পরিক্ষার পর বিয়ে।।।(শান্তা)
— কথা ছিল,,,কিন্তু পরিক্ষাই ত হবে না।মনে হয় না এই জিবনে মাইশার সাথে আমার বিয়েটা হবে?(আমি ও মজা করে মিথ্যাটাই বললাম)
— না,,,,শান্তা,,।আসিফ ভাইয়ার সাথে নিধি আপুর বিয়ে ঠিক হইছে।।আর মাইশা আপুর বিয়ে আটকানোর জন্য অভিনয় করে যাচ্ছে।।(সাজিদ)
— মানে বুজলাম না।।(শান্তা)
তারপর সব কিছুই বললাম।।শান্তার মুড অফ হয়েছে।সাথে মাইশার অ।।সাজিদ যে কেন সত্যটা বলতে গেলো।আনন্দটাই মাটি।।
–আচ্ছা চলো বাসায় যাই,,,সন্ধ্যা হয়ে গেছে।।।(দুলাভাই এসে)
–হুম চলেন,,(মাইশা)
আমি আর শান্তা পিছনে,,,সাজিদকে ইশারায় সামনে যেতে বললাম।।।
— শান্তা,,,?(আমি শান্তাকে ডাক দিলাম)
— জ্বি বলেন ভাইয়া,,,(শান্তা)
— সাজিদকে তোমার কেমন লাগে?( আস্তে আস্তে বলছি যেন কেউ না সুনে)
— কেন ভাইয়া,,,এই কথা কেন বলছেন?(শান্তা)
— সাজিদ তোমার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে।।তুমি সাজিদকে তীরে তুলে নেও।।(একটু হাসি মাখা কন্ঠে বললা)
— ভাইয়া সুনলে আমাকে মেরে ফেলবে,,,?(শান্তা)
— ভয় পেয়ো না।নীলা আপু দুলাভাই আমি মেনেজ করবো তুমি শুধু বলো।।তোমার পছন্দ হয় কি না।।
— আসলে ভাইয়া আমি অই ভাবে ভেবে দেখিনি।।আমাকে ভাবতে দেন আমি আপনাকে পরে জানাবো।।(শান্তা)
বাসায় চলে আসলাম,,,।সবাইকে নাস্তা করার জন্য ডাকছে।।সাজিদ আমার সাথে বসছে।।
— ভাইয়া কি কথা হলো?(সাজিদ)
— হইছে যা হবার রুমে বলবো।।এখন শুধু শান্তার দিকে মাঝে মাঝে দেখবি আর মুচকি হাসবি?(আমি)
— আচ্ছা,,,।(সাজিদ)
যা বলছি অক্ষরে অক্ষরে পালন করছে সাজিদ।।শান্তা আমাকে ইশারায় বলছে সাজিদকে থামতে বলতে,,সবাই দেখবে।।।
— সাজিদ চেপে যা,,,মনে কর কাজ হয়ে গেছে।।(সাজিদকে বললাম)
নাস্তা করে,,,আমার রুমে লুডু খেলার আয়োজন করলাম।।।এই সুযোগে সাজিদের কাজ টা করে দিতে হবে।।।
— ভাইয়া সাজিদ যেভাবে হাসছিল আমার দিকে চেয়ে,,,।আমার খুব হাসি পাচ্ছিল,,,,আপনি শিখিয়েছেন তাই না।।(শান্তা আমাকে আলাদা ভাবে বললো)
— সাজিদ কিন্তু ছেলে ভালো।কোনো মেয়ের সাথে রিলেশন নাই।।ছিল ও না।।(আমি)
— আপনি কিভাবে জানেন?(শান্তা)
— আমাদের গুলো ডেখেইত সময় শেষ।।কিভাবে করবে।।
শান্তা আমার কথা সুনে হাসছে।।
–আচ্ছা সাজিদকে বইলেন আমার সাথে কথা বলতে।।(শান্তা)
আমরা খেলা শেষ করে যে যার রুমে,,,খেলায় আমার হার হয়েছে,,, ২০০ টাকার খাওয়া খাওয়ানোর জরিমানা।।। কালকে সকালে খাওয়াবো।।
— ভাইয়া কি করলে?(সাজিদ সুয়ে সুয়ে)
— নাকে তেল দিয়ে ঘুমা মনে কর কাজ হয়ে গেছে।।তুই কথা বলতে বলছে শান্তা।।।(আমার কথা সুনে সাজিদ খুশিতে আত্মহারা।।)
— কেমনে হলো,,,?(সাজিদ)
— আমার কাজ শেষ এবার নিজের টা নিজে করো।হেল্প লাগলে বইল।।(আমি বলে ঘুমিয়ে পরলাম)
সকালে ঘুম থেকে ঊঠতে সেই ১১ টা।।তাও আবার নীলা আপুর ডাকে,,,।
— আসিফ উঠ,,,শান্তা কে কি বলছিস??(নীলা আপুকে কি সব বলে দিল শান্তা)
.
.
চলবে….