তোর প্রেমেতে অন্ধ হলাম -Part 7

0
236

#তোর_প্রেমেতে_অন্ধ_হলাম
#লেখিকাঃ Tamanna Islam
#পর্বঃ০৭ (বোনাস)
প্রায় ঘন্টা খানিক পর সিয়া রা সবাই বাসায় এসে পরে। সিয়া বাসার ভেতরে এসে কোন কথা না বলেই নিজের ব্যাগ টা নিয়ে সোজা নিজের রুমে চলে আসে। দোলা তা বেশ ভালোই খেয়াল করে। বুঝতে পারছে যে এভাবে হুট করেই চলে আসাতে মেয়ের মন খারাপ। কিন্তু কি আর করবে উপায় ছিলো না। সিয়া ওপরে রুমে গিয়ে ব্যাগ টা বিছানার ওপর আছাড় মারে। কেমন একা একা হয়ে গেলো। ফোন টাও রাগের মাথায় অফ করে রেখেছিলো। এখন ফোন অন করে,, আর অন করতেই দেখে অনেক গুলো ফোন আরো অনেক গুলো মেসেজ। সবগুলোই অর্নীলের কাছ থেকে এসেছে। সিয়া তো ওকে না বলেই এসে পরেছে। এখন নিশ্চয়ই জানতে পেরেছে যে সিয়া সেখান থেকে এসে পরেছে তাই এভাবে পাগলের মতো করে ফোন দিচ্ছে।
শিউলি;; দোলা, এভাবে চলে আসলি কেনো রে?
দোলা;; মা তা তুমি বুঝবে না ছাড়ো বাদ দাও ওসব।
এই বলেই দোলা সেখান থেকে চলে যায়। মাঝখানে আরো বেশ সময় পার হয়ে যায়। সিয়া তবুও রুম থেকে বের হয় না। তাই দোলা নিজেই সিয়ার রুমে গিয়ে উঁকি দিয়ে আসে। গিয়ে দেখে সিয়া উপুড় হয়ে মুখ গোমড়া করে দিয়ে ফোন ঘাটছে। দোলা কিছু না বলেই এসে পরে।


আর ওদিকে অর্নীল যেনো আর থাকতে পারছে না, সে কোন ভাবে এইরাত টুকু পার করতে পারলেই শান্তি। ভোর হতে হতেই এখান থেকে আগে কেটে পরবে। অর্নীল বসে বসে এগুলোই ভাবছিলো তখনই তার রুমে অর্নীলের বাবা আসে….
সাগর;; অর্নীল!
অর্নীল;; হুম, এসো।
সাগর;; বলছি যে…
অর্নীল;; কাল ভোরেই আমি এখান থেকে চলে যাবো।
সাগর;; কিন্তু কেনো?
অর্নীল;; বাবা তোমার কথাতে এখানে এসেছিলাম, বিয়ে শেষ রিসেপশনও শেষ এখন আর থেকে কি করবো। আর এছাড়াও আমার অফিস আছে আমি আর থাকতে পারবো না।
সাগর;; আচ্ছা যা ভালো মনে করো, আমি জোর করবো না যেও কাল।
অর্নীল;; হুমমম।
সাগর চৌধুরী চলে আসে। রাত যখন বেশ গভীর তখন অর্নীল আবার সিয়া কে কল করে বসে। সিয়া তখন গভীর ঘুম। আচমকা ফোন আসাতে ঘুমের ঘোরেই ফোন টা রিসিভ করে নেয়।
সিয়া;; হ্যালো…
অর্নীল;; কেনো চলে গেলে?
সিয়া;; অর্নীল আপনি?
অর্নীল;; যা বলছি তার উত্তর দাও সিয়া,, কেনো না বলে কয়েই চলে গেলে।
সিয়া;; না মানে মা নিয়ে এসে পরেছে হুট করেই৷
অর্নীল;; তো আমাকে বলে তো যেতে। তুমি জানো কতো খুঁজেছি। এখন আমার ভালো লাগছে না মোটেও।
সিয়া;; আব… সরি।
অর্নীল;; আমি কাল আসছি।
সিয়া;; ওটা আপনার ব্যাপার।
অর্নীল;; হুমম কার ব্যাপার তা পরে বুঝাবো আগে আসতে দাও আমাকে।
সিয়া;; এতো রাতে না জেগে থেকে ঘুমান।
অর্নীল;; আসে না।
সিয়া;; তাহলে আমাকে ঘুমাতে দিন, কাল থেকে আবার কলেজে যেতে হবে।
অর্নীল;; তো আমি কি তোমার চোখ ধরে রেখেছি নাকি, ঘুমাও
সিয়া;; ফোন….
অর্নীল;; ফোন লাইনে রেখেই ঘুমিয়ে পরো। তুমি ঘুমাও আমি আছি।
সিয়া;; এখন কি সারারাত ফোন লাইনে থাকবে নাকি!
অর্নীল;; থাকলে থাকলো,, তুমি ঘুমাও বাট ফোন কাটবা না।
সিয়া;; আচ্ছা।
সিয়া ফোন লাইনে রেখেই আস্তে করে পাশে শুয়ে পরে। কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে আবার যে কখন ঘুমিয়ে পরেছে তা সিয়ারও খেয়াল নেই। দিয়া ঘুমাচ্ছে। আর অর্নীল একা একাই বকবক করছে। ফোন ওপর পাশ থেকে কোন আওয়াজ না পেয়ে অর্নীল বুঝলো যে সিয়া ঘুমিয়ে পরেছে তাই সেও ফোন লাইনে রেখে দিয়ে বিছানাতে গিয়ে শুয়ে পরে। এভাবেই সময় যায়।


পরেরদিন সকালে, সূর্যের একদম কড়া রোদ সোজা সিয়ার চোখের ওপরে পরে ফলে মূহুর্তেই সিয়ার ঘুম ভেঙে যায়। সিয়া হাই তুলতে তুলতে ঘুম থেকে ওঠে পরে। আড়মোড়া ভেঙে বসতেই সিয়ার খেয়াল হয় কাল রাতের ফোনের কথা। সিয়া ফট করে পাশে তাকিয়ে দেখে ফোন এখনো লাইনেই রয়েছে। ফোন কাটে নি। সিয়া বেশ অবাক হয়। ফোনের ওপরে সময় উঠেছে
৬ ঘন্টা ৫৪ মিনিট ৪০ সেকেন্ড। সিয়ার তো সোজা মাথায় হাত। মানে ভাবা যায় এত্তো সময় লাইনে ছিলো। ফোনে কতোই ব্যালেন্স ছিলো যে একটা বারও কেটে যায় নি। সিয়ার এখন ঠিক কেমন রিয়েকশন করা উচিত সে তা ভুলে গেছে। সিয়া ফোন টা স্পিকারে দিয়ে মুখের কাছে নেয়….
সিয়া;; হ্যালো অর্নীল..!
অর্নীল;; হুমম (ঘুমের ঘোরে)
একবার ডাক দেওয়াতে আবার অর্নীল সারাও দেয়। সিয়া ফিক করে হেসে দেয় এমন কান্ড দেখে।
সিয়া;; গুড মর্নিং…
অর্নীল;; ভেরি গুড মর্নিং সিয়াজান!
সিয়া;; অর্নীল সকাল ৮ টা বাজছে।
এটা শুনেই অর্নীল মনে হয় ওপর পাশ থেকে তড়িঘড়ি করে উঠে বসে পরে। অর্নীল ফোন টা কানে ধরে, আরেক হাত দিয়ে নিজের কপালে স্লাইড করছে।
অর্নীল;; সিয়া!
সিয়া;; হ্যাঁ, সকাল হয়ে গেছে। আর আপনি এতো মানে এতো অদ্ভুত কেনো বলুন তো। কেউ এভাবে ফোন সারা রাত লাইনে রাখে। আর ফোনের ব্যালেন্স শেষ হয় নি কেনো আপনার।
অর্নীল;; হয় নি,, আর তুমি কখন উঠেছো? আমার এখান থেকে ভোরে চলে যাওয়ার কথা এখন ৮ টা বেজে গেছে।
সিয়া;; আরে বেশি সময় হয় নি তো৷ এখন কি যেতে পারবেন না।
অর্নীল;; হুমম, আচ্ছা কলেজ আছে নাকি তোমার?
সিয়া;; হ্যাঁ।
অর্নীল;; আচ্ছা যাও।
সিয়া;; আচ্ছা বায়।
অর্নীল;; এই শুনো।
সিয়া;; জ্বি।
অর্নীল;; কোন ছেলের সাথে কথা বলবে না।
সিয়া;; আশ্চর্য আমার ফ্রেন্ড দের সাথে কথা বলবো না।
অর্নীল;; বলবে কিন্তু প্রয়োজনের বেশি না।
সিয়া;; ধুরু, রাখি।
অর্নীল;; আচ্ছা আরেকটা কথা।
সিয়া;; আবার কি?
অর্নীল;; আই লাভ ইউ।
সিয়া;; হুমমম।
অর্নীল;; কি হুম? এর প্রতিউত্তরে কিছু বলতে হয় জানো না।
সিয়া;; পারবো না বলতে এখন। রাখলাম আমি।
এই বলেই সিয়া ফোন কেটে দেয়। সে জলদি উঠে ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে নেয়। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে নিজের চুল ঠিক করছিলো তখনই হাতে খাবারের প্লেট নিয়ে দোলা রুমে আসে। এসেই দেখে সিয়া উঠে একদম ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে গেছে।
দোলা;; কিরে আজ থেকেই কলেজ যাচ্ছিস?
সিয়া;; হ্যাঁ, বাসায় থেকে বসে বসে বোর হওয়ার থেকে কলেজে যাই।
দোলা;; রেগে আছিস?
সিয়া;; কই, না তো।
দোলা;; মনে তো হয় রেগে আছিস। কাল এভাবে বিয়ে থেকে এসে পরলাম তাই।
সিয়া;; আরে বিয়ে তো শেষই,, আর রাগ করবো কেনো ধুরু কি যে বলো না মা। আচ্ছা বলো কিছু বলবে?
দোলা;; বলবো মানে, খেয়ে যা। এইযে নাস্তা।
সিয়া;; হুমম।
সিয়া একটা রুটি তে ডিম ভাজি নিয়ে রোলের মতো করে নিলো তারপর ব্যাগ টা কাঝে ঝুলিয়ে খেতে খেতে নিচে নেমে পরে। তারপর কলেজ।
আর অর্নীল নিজেও তার ব্যাগ সব প্যাক করে নেয়। মেরুন কালারের জেকেট টা নিজের ওপরে জড়িয়ে নিচ্ছে আরেক হাত দিয়ে কানে ফোন ধরে আছে।
অর্নীল;; দেখো যা যা প্রব্লেম হয়েছে সব ঠিক হয়ে যাবে। আসছি আমি। আর মানে কি এই সবের রাতুল। অফিস থেকে বের হয়েছি আমি ২ দিন হয়েছে নাত্র। এই দুই দিনই ঠিক ভাবে রাখতে পারো না কিছুই, এটা কোন কথা।
রাতুল (ম্যানেজার);; সরি স্যার।
অর্নীল;; রাখো, আসছি আমি।
এই বলেই অর্নীল ফোন কেটে দেয়। তারপর রুমে অর্নীলের বাবা আসে।
সাগর;; চলে যাচ্ছো?
অর্নীল;; হ্যাঁ,
সাগর;; বিকেলের দিকে আমিও চলে যাবো, একসাথে যেতেই পারতে৷
অর্নীল;; না তুমি থাকো, পরে আস্তে ধীরে আসা যাবে। ওদিকে অফিসে কিছু কাজ পরেছে তো জরুরি ভাবে যেতে হবে। বিকেলে তুমি ড্রাইভার কে নিয়ে এসে পরো।
সাগর;; কেনো তুমি ড্রাইভার কে সাথে নিবে না?
অর্নীল;; না।
এইবলেই অর্নীল সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে দ্রুত গাড়িতে উঠে পরে৷ তারপর চলে আসে৷ ঘন্টা দুয়েক পর সোজা নিজের অফিসে, বাড়িতে আর যায় নি। সেখানে গিয়ে পেনডিং কিছু ফাইল ছিলো সেগুলো চেক করে৷ মিটিং পোস্টপন্ড করা ছিলো তা সামলায়। অতঃপর সব কাজ শেষ করে। অর্নীল যেই না রকিং চেয়ারে তার ক্লান্ত দেহটা একটু এলিয়ে দেয়। তখনই তার মাথায় সিয়া এসে যেন বারি খায়। অর্নীল সময় দেখে ১০ বেজে গেছে। সে দ্রুত সিয়ার কলেজে যাওয়ার জন্য বাইরে বের হয়ে পরে।


অনু, শান্তি, সোয়াদ, সজিব সবাই বসে ছিল কলেজের মাঠে। তখনই সিয়া দ্রুত গিয়ে ধুপ করে অনুর পাশে গিয়ে বসে পরে।
অনু;; কিরে উড়নচন্ডী, কেমন আছোস?
সিয়া;; ঝাকা নাকা।
অনু;; হ হ,বিয়া খাইয়া আইলা। ঝাকানাকা তো থাকবাই। এই সত্যি কইরা বল কয়টা প্রপোজ পাইছোস আর সেটিং কার সাথে করলি?
সিয়া;; মানে কি আর বলি। আগে একটু দম ছাড় আমাকে একটু বসেতে দে। বাপরে বাপ।
শান্তি;; শুনেছি অর্নীল স্যার ও নাকি বিয়েতে গিয়েছিলো।
সিয়া;; এহ মানে হ্যাঁ কিন্তু তুই কীভাবে জানলি।
শান্তি;; বিবিসি নিউজ।
সিয়া;; আরে হ্যাঁ গিয়েছিলো। ওরা গেস্ট ছিলো ইনভাইট করা হয়েছে তো যাবে না।
অনু;; বাহ ভালোই তো। তা কথা হয় নি তোদের৷
সিয়া;; হয়েছে৷
শান্তি;; হুমম বুঝি বুঝি।
সিয়া;; আচ্ছা তোরা এভাবে আমাকে নিয়ে পরলি কেনো! বাদ দে না।
শান্তি;; তো পরবো না।
সিয়া;; ক্যান, আমি তোদের কোন পাকা ধানে মই দিছি।
শান্তি;; কি করছো আর কি করো নাই তা পেছনে চাইয়া দেখ।
শান্তির কথায় সিয়া পেছনে তাকায় আর পেছনে তাকাতেই দেখে কলেজ গেইট দিয়ে অর্নীল ভেতরে আসছে। হাটতে হাটতে বাম হাত দিয়ে নিজের চুল গুলো ঠিক করছে আর এগিয়ে আসছে। অর্নীল কে দেখেই সিয়া দাঁড়িয়ে পরে। আর বাকিরা সবাই চলেই যায়। সিয়া নিজেও কয়েক কদম এগিয়ে যায়।
সিয়া;; আপনি এসেও পরেছেন?
অর্নীল;; তো আসবো না। তুমি জানো না যে যখন শুনেছি তুমি চলে গেছো বুক টা কেমন ধক করে উঠেছিলো।
সিয়া;; আর যখন আপনার জীবন থেকেই চলে যাবো তখন!
অর্নীল;; এমন কোনদিন আমি জীবনে আসতেই দিবো না।
সিয়া;; আর যদি আসে।
অর্নীল;; এই আমি এতো শত কিছু বুঝি না আমি শুধু এই টুকু জানি যে তুমি আমার ব্যাস৷
সিয়া;; 😅😅,, আমি যাই আমার ক্লাস আছে।
সিয়া এসে পরতে ধরলে অর্নীল সিয়ার হাত শরে ফেলে। সিয়া একবার নিজের হাতের দিকে আরেকবার অর্নীলের হাতের দিকে তাকায়।
অর্নীল;; ক্লাস করতে হবে না চলো।
সিয়া;; আরে কিন্তু কিছুদিন পর টেস্ট আছে আমার। ক্লাস করতে হবে তো।
অর্নীল;; হাহ টেস্ট, চাইলে Question paper তোমার হাতে ধরিয়ে দিতে পারি। এবার চলো।
সিয়া;; আরে না, ক্লাস আছে। আর কোথায় যাবো।
অর্নীল;; আচ্ছা তুমি কি চাও যে তোমাকে সেই প্রথম দিনের মতো করে সবার সামনে দিয়ে টেনে নিয়ে যাই!!
সিয়া;; না 😒
অর্নীল;; তাহলে ভালোই ভালোই আমার সাথে চলো।
সিয়া;; যাচ্ছি তো, সব কথায় খালি ব্লেকমেইল করতে হয়।
অর্নীল চলে যার আর তার পিছু পিছু সিয়াও। অর্নীল গিয়ে তার গাড়ির সামনে দরজা খুলে দেয় সিয়া তাতে উঠে পরে। অর্নীল নিজেও গিয়ে ড্রাইভিং সীটে বসে গাড়ি স্টার্ট দেয়। গাড়ি চলছে আপন গতিতে।
সিয়া;; আচ্ছা আমরা কোথায় যাচ্ছি?
অর্নীল;; বিয়ে করতে?
সিয়া এক ঝটকায় নিজের মাথা অর্নীলের দিকে ঘুড়িয়ে নেয়। কি বলছে অর্নীল?
সিয়া;; এই কি বললেন, বিয়ে মানে কিসের বিয়ে?
অর্নীল;; আসলে কি আমি না তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবো না বুঝলে। তাই সোজা বিয়ে করে নিজের ঘরে তুলে নিবো তারপর পুরো টাই আমার তুমি।
সিয়া;; অর্নীল আপনি কি মজা করছেন আমার সাথে?
অর্নীল;; একদম না।
সিয়া;; অর্নীল গাড়ি থামান।
অর্নীল;;
সিয়া;; অর্নীল প্লিজ গাড়ি থামান।
অর্নীল গাড়ির ব্রেক কষে।
অর্নীল;; থামালাম এখন কি?
সিয়া;; আপনি পাগল? কি বলে যাচ্ছেন আপনি। বিয়ে মানে আমি আপনাকে বিয়ে করতে পারবো না। আমি বলেছি আমার কিছু সময় দরকার।
অর্নীল;; বিশ্বাস করেছো আমাকে?
সিয়া;; কি?
অর্নীল;; এই যে বিয়ের কথা বিশ্বাস করেছো আমাকে?
সিয়া;; তো বিশ্বাস করবো না।
অর্নীল;; এতে কি বুঝা যায় জানো? এতে বুঝা যায় যে তুমি আমায় বিশ্বাস করো। হাহাহাহা, আমি মজা করছিলাম। এখনই বিয়ে কেনো করবো। বিয়ে করতে কিছুটা দেরি আছে। কিন্তু দেখো না আমার বলার সাথে সাথেই তুমি আমাকে বিশ্বাস করে নিলে এর মানে বুঝা যায় যে তুমি আমাকে বিশ্বাস করো।
সিয়া যেনো হাবলাকান্ত হয়ে গেলো।
সিয়া;; কিন্তু আপনি জানেন আপনার এই কাজের জন্য এখন বিশ্বাস টা আমার ভেঙে গেলো।
অর্নীল;; ভাঙে নি। যদি ভেঙেই যেতো তাহলে আর আমার সাথে এখানে বসে থাকতে না। রেগে নেমে চলে যেতে।
সিয়া;; মানে এতো প্যাচ, এতো প্যাচ কীভাবে জানেন আপনি।
অর্নীল;; জানতে হয় জান। এবার বলো কোথায় যাবে।
সিয়া;; কোথায়?
অর্নীল;; আইসক্রিম পার্লারে যাবে?/
সিয়া;; আপনি নিয়ে যাবেন 😃?
অর্নীল;; কেনো নিয়ে যাবো না চলো।
অর্নীল সিয়াকে নিয়ে একটা বড়ো আইসক্রিম পার্লারের সামনে থামে। তারপর দুজনেই নেমে পরে।
অর্নীল;; বলো কোন ফ্লেভারের।
সিয়া;; চকোলেট।
চার কাপ চকোলেট আইসক্রিম অর্ডার দেওয়া হয়। আর সেগুলো আসতেই সিয়া খেতে শুরু করে। সিয়া খাচ্ছিলো আর অর্নীল তার দিকেই তাকিয়ে আছে।
অর্নীল;; সিয়া আমি কিছুদিনের জন্য বাইরে যাচ্ছি।
সিয়া;; কোথায়?
অর্নীল;; আউট অফ সিটি কাজের জন্য৷
সিয়া;; কবে আসবেন?
অর্নীল;; ২-৩ দিন সময় লাগবে।
সিয়া;; আচ্ছা।
অর্নীল;; সিয়া আর এই ২-৩ দিনের মাঝেই আমাকে আমার উত্তর চাই।
সিয়ার খাওয়া যেনো বন্ধ হয়ে গেলো অর্নীলের কথায়। সিয়া একটা দোটানার মাঝে রয়েছে৷ সিয়াকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে অর্নীল তাকে ডাক দেয়।
অর্নীল;; সিয়া!
সিয়া;; হুমমম।
অর্নীল;; আর হ্যাঁ, আমাদের বিয়ে হবে তাও দ্রুতই।
সিয়া;; দেখুন অর্নীল আমার মা আছে নানু আছে। আমি তাদের এই ব্যাপারে কিছুই বলি নি, তাদের বলতে হবে৷ আর বা…..
অর্নীল;; সিয়া সবই হবে। আর সবাই মেনেই নিবে। আর আমি অবশ্যই কারো মেনে নেওয়া বা না নেওয়ার তাবে-ধারে থাকবো না। আমি শুধু এই টুকুই জানি যে তুমি আমার।
সিয়া;; হুমম।
সিয়া আর অর্নীল সেখান থেকে চলে আসে। কলেজ টাইম প্রায় শেষই তাই অর্নীল সিয়াকে আর কলেজে না নামিয়ে সোজা তার বাসার সামনে নামিয়ে দিয়ে আসে। তবে অর্নীল কে সিয়া তার বাসার সামনে গাড়ি থামাতে দেখে বলে ওঠে….
সিয়া;; এই আপনি আমার বাসা কি করে চিনলেন?
অর্নীল;; বাসার এড্রেস পাওয়া, এটা কোন ব্যাপার হলো। আচ্ছা তুমি যাও আর হ্যাঁ ফোন টা অন রেখো৷ ফোন দেওয়ার সাথে সাথেই ধরবে।
সিয়া;; আচ্ছা।
সিয়া গাড়ি থেকে নেমেই বাসার ভেতরে চলে যায়। তবে এখানে বাধে আরেক বিপত্তি।




চলবে~~

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here