লাভ গেম -Part 11+12

0
238

#লাভ_গেম
#ফাবিহা_নওশীন
11+12.
রুশা আদ্রিশের দিকে তাকাল। আদ্রিশ চোখ মুখ শক্ত করে রেখেছে। রুশা কিছু বুঝতে পারছে না। জিজ্ঞেস করার সাহসও পাচ্ছে না। রুশার সন্দেহ হচ্ছে, মনে হচ্ছে এখানে সাংঘাতিক কিছু ঘটতে যাচ্ছে। সেজানের দিকে তাকাল। সেজান মাথা নিচু করে রেখেছে। শুধু সেজান না বাকি সবাই মাথা নিচু করে আছে।
রুশা আদ্রিশের দিকে তাকাল। আদ্রিশের মুখ থমথমে। রুশা ঢোক গিলে প্রশ্ন করল,
“আমরা কোথায় আছি?”
আদ্রিশ রুশার দিকে চেয়ে চোয়াল শক্ত করে বলল,
“ওয়েলকাম টু মাই জাহান্নাম।”
রুশার বুক কেঁপে উঠে। কাঁপা কাঁপা গলায় বলল,
“জাহান্নাম!”
রুশার শরীর থরথর করে কাঁপছে। আদ্রিশ ওর এক বাহু চেপে ধরে বলল,
“তোকে কি বলেছিলাম? যা খুশি করবি, মেনে নেব। কিন্তু ধোঁকা দিস না। ধোঁকা একদম সহ্য করতে পারি না।”
রুশা আমতা আমতা করে বলল, “ধোঁকা?”
আদ্রিশ ওর হাত আরো জোরে চেপে ধরে বলল,
“হ্যা ধোঁকা। সামনে থেকে ছুরি মারলে সহ্য করে নিতাম। কিন্তু তুই তো পেছনে থেকে ছুরি মেরেছিস। জারিফকে কি করে চিনিস? ওর সাথে তোর কিসের সম্পর্ক?”
“জারিফ কে? আমি তাকে চিনি না।”
আদ্রিশ ওর গলা চেপে ধরে বলল,
“জারিফকে চিনিস না? সকাল বেলায় অফিসের নিচে জারিফের লোকের সাথে কি করছিলি? ও তোকে জড়িয়ে ধরল কেন? ওর সাথে তোর কি কথা হয়েছে? কি বলেছিস ওকে? কিসের ইনফরমেশন দিচ্ছিলি? তোর মতো অনাথ মেয়েকে ভালোবেসে বিয়ে করে সংসার করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তুই এতদিন ধরে তার প্রচুর দাম দিয়েছিস। এখন আমি তার দাম দেব। আর সেটা হলো মৃত্যু। ভয়ানক মৃত্যু।”
রুশা আদ্রিশের হাত সরানোর চেষ্টা করছে ওর গলা থেকে। শ্বাস নিতে পারছে না। মনে হচ্ছে মারা যাবে। আদ্রিশ ওর গলা থেকে হাত সরাচ্ছে না। আদ্রিশ হঠাৎ ওর গলা ছেড়ে দিল। ও ছিটকে মেঝেতে পড়ে গেল।
রুশা হাঁপাতে লাগল। জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে। আদ্রিশ ওকে তুলে দাঁড় করিয়ে বলল,
“এটা কেন করলে? আমি কিসের কমতি রেখেছিলাম? কেন আমাকে এত বড় ধোঁকা দিলি?”
রুশা কাঁদোকাঁদো হয়ে বলল,
“আরে কি বলছেন? আমি কিছু করিনি। আমি চিনি না ওকে। জারিফ কে তাও জানি না। বিশ্বাস করুন আমাকে।”
“নাটক করছিস? নাটক করবি না। ও নিজে বলেছে।”
রুশা আকুতি মিনতি করছে।
“আমাকে বিশ্বাস করুন। আমি মিথ্যা বলছি না। ও আপনাকে মিথ্যা বলেছে। এটা নিশ্চয়ই কোনো ষড়যন্ত্র।”
আদ্রিশ ওর লোকদের ইশারা করল। ওরা এগিয়ে এলেই রুশা চেঁচিয়ে বলল,
“একদম আমার গায়ে হাত দিবেন না। খবরদার!”
আদ্রিশ রুশার হাত চেপে ধরে টানতে টানতে অন্য একটা ঘরে নিয়ে যাচ্ছে। রুশা বারবার অনুরোধ করছে ওর কথা শোনার জন্য। কিন্তু আদ্রিশ শুনছে না। একটা খাঁচার সামনে নিয়ে এল। খাঁচার উপর থেকে পর্দা সরাতেই রুশা চিৎকার করে উঠল।
আদ্রিশ খাঁচার বাঘ দেখিয়ে বলল,
“এই হচ্ছে চরিত্রহীন, ধোঁকাবাজির শাস্তি।”
রুশা আদ্রিশের হাত ধরে ভয়ে চিৎকার করছে আর কাঁদছে। কান্নার মাঝে বারবার বলছে,
“ওরা আমাকে ফাঁসাচ্ছে। আমি সত্যিই কিছু করিনি।”
আদ্রিশের চোখের কোনে পানি জমেছে। সেজান ওর দিকে চেয়ে আছে। অনেকগুলো বছর ধরে আদ্রিশকে চিনে। ওর চেয়ে ভালো ওকে আর কেউ চিনে না। ও যখন অন্য কাউকে শাস্তি দেয় তখন ওর চোখে মুখে তৃপ্তি থাকে। ঠোঁটের কোণে পৈশাচিক হাসি থাকে। কিন্তু আজ ওর মুখটা ফ্যাকাসে, চোখে ব্যথা ফুটে উঠেছে। প্রিয়তমা স্ত্রীকে শাস্তি দিতে খুব কষ্ট হচ্ছে।
আদ্রিশ রুশাকে ওর মুখের বরাবর করে বলল,
“দেখো, আমার চোখে পানি। আমি কাঁদছি। আদ্রিশ কোনো মেয়ের জন্য কাঁদছে। এর অর্থ বুঝো? বুঝলে আমাকে হার্ট না করে ভালোবাসতে।”
সেজান সাহস জুগিয়ে বলল,
“ভাই, ভাবীকে একটা সুযোগ…..
আদ্রিশ ওকে থামিয়ে বলল,
” আমার আইন সবার জন্য সমান। ওকে শাস্তি পেতেই হবে।”
রুশা আকুতি নিয়ে বলল,
“আমার খুব ভয় করছে। আমাকে ওই খাঁচায় দেবেন না। প্লিজ। আপনি যদি আজ এই ভুলটা করেন তবে খুব শীঘ্রই আপনাকে পস্তাতে হবে। নিজের হাতে নিজের নির্দোষ
স্ত্রীকে হত্যার জন্য নিজেকে ক্ষমা করতে পারবেন তো?আপনি আমাকে ছাড়া থাকতে পারবেন তো?”
আদ্রিশের মনটা হঠাৎ গলে গেল। সেজানের দিকে তাকাল। রুশাকে ছেড়ে দিয়ে বলল,
“ওকে নিয়ে এসো।”
সেজান সেই ছেলেটাকে নিয়ে এল। ওকে বেধড়ক মার মারা হয়েছে। নাক মুখ দিয়ে রক্ত পড়ছে। সোজা হয়ে হাঁটতে পারছে না। হেলেদুলে হাঁটছে। কোনো রকম প্রাণ নিয়ে বেঁচে আছে এমন।
আদ্রিশ ওকে দুহাতে তুলে বলল,
“তোকে ছেড়ে দেব, যদি সত্যিটা বলিস। তোকে তোর মালিকের কাছে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেব। রুশার সাথে তোর কি সম্পর্ক? সত্যি করে বলবি।”
রুশা ওকে দেখে বলল,
“ওকে আমি চিনি না। আমি অফিসের ভেতরে যাব তখন কোথায় থেকে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে। আমি সরিয়ে রাগ দেখিয়ে বললাম আপনি কে,উনি দুহাত উঁচু করে সরি বলে চলে যায়। কোনো সিনক্রিয়েট করিনি, আপনাকেও বলিনি যদি আপনি রেগে যান তাই।”
আদ্রিশ লোকটাকে লাথি মেরে বলল,
“ও যা বলছে ঠিক বলছে? ওর সাথে তোর কোনো সম্পর্ক নেই? একটা সত্যি কথার জন্য বেঁচে যেতে পারিস।”
লোকটা অবশেষে বলল,
“মালিক সাজিয়েছে ঘটনাটা। উনার সাথে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। মালিক আপনাকে ভাঙতে চেয়েছিল।”
আদ্রিশ আর বাকি সবার বুক থেকে যেন পাথর নেমে গেল। রুশা কান্নার মাঝেও হেসে ফেলল। আদ্রিশ ওকে একটা লাথি মেরে বলল,
“অনেক বড় ভুল করে ফেলেছিস। আজ সত্যিই আমি ভেঙেচুরে যেতাম। চল তোর মালিকের কাছে পাঠিয়ে দেই।”
আদ্রিশ একটা লম্বা রড তুলে ওর মুখে বারি মারল। মুখটা প্রায় থিতলে গেল। রুশা ভয়ে চিৎকার করে উঠল। আরেকটা বারি মাথায় মারল মাথা দিয়ে টগবগিয়ে রক্ত পড়তে লাগল। লোকটা হাত পা ছড়িয়ে কিছুক্ষণ কেঁপে নিস্তেজ হয়ে গেল। রুশা এমন দৃশ্য সহ্য করতে পারল না। শরীরের ভারসাম্য ছেড়ে মেঝেতে ঢলে পড়ল। আদ্রিশ ওকে দেখে হাতের রড ফেলে ওর কপালে চুমু খেয়ে কোলে তুলে নিল।
.
রুশা ঘুমের মধ্যে বারবার কেঁপে কেঁপে উঠছে। ওর ঠোঁট কাঁপছে। চোখ বেয়ে পানি পড়ছে। আদ্রিশ ওর পাশে বসে মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। রুশার হঠাৎ জ্ঞান ফিরল। চোখ মেলে আদ্রিশকে দেখে ভয়ে ছিটকে সরে গেল। তারপর চারদিকে চেয়ে নিজের অবস্থান বোঝার চেষ্টা করছে।
আদ্রিশ ওকে আশ্বস্ত করে বলল,
“তুমি সেফ আছো। বাড়িতে আছো।”
রুশা বিছানা থেকে নেমে গেল। ভয়ে ভয়ে আদ্রিশের দিকে তাকাল। আদ্রিশ বুঝতে পারছে রুশা বেশ ভয় পেয়েছে। এক দিক থেকে ভালোই হয়েছে। রুশা কখনো আদ্রিশের বিরুদ্ধে যাবার কথা ভাবতেও পারবে না।
আদ্রিশ উঠে দাঁড়াতেই রুশা ভয়ে ভয়ে বলল,
“আমার কাছে আসবেন না প্লিজ।”
আদ্রিশ ওর কথা না শুনে ওর কাছে গিয়ে জোর করে জড়িয়ে ধরল। রুশার হার্টবিট দ্রুত চলছে। শ্বাস উঠানামা করছে।
“সরি রুশা! আ’ম সরি। একটা ভুল বুঝাবুঝির জন্য তোমাকে সাফার করতে হলো।”
রুশা এখনও ওই দৃশ্য ভুলতে পারছে না। মনে হচ্ছিলো মরেই যাবে। আদ্রিশ ওর প্রতি দয়া করবে না। ওর ভয়ংকর একটা মৃত্যু হতে যাচ্ছে।
.
আদ্রিশের মন-মেজাজ ভালো নেই। জারিফ বিদেশে বসে বসে কল-কাঠি নাড়ছে। ওর স্ত্রীর দিকে নজর দিয়েছে। ওকে টার্গেট করে আদ্রিশের ক্ষতি করতে চেয়েছে। আর ও সে ট্রাপে পড়েও গিয়েছিল। আজ রুশাকে সারাজীবনের মতো হারিয়ে ফেলছিল। রুশা এতবার করে বলল বিশ্বাস করেনি।
আদ্রিশ ঘরে এসে দেখে রুশা এক কিনারে শুয়ে আছে। যেকোনো সময় পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। আদ্রিশ ওকে টেনে বিছানার মাঝে নিয়ে এল। রুশার ঘুমন্ত মুখের দিকে চেয়ে আছে। ওর কপালে, গালে, নাকে হাত বুলালো। রুশা একটু নড়ে-চড়ে উঠে। আদ্রিশ ওর নাকের ডগায় ঠোঁট ছুয়ালো। রুশা জেগে উঠল। আদ্রিশকে এত কাছে দেখে ঘাবড়ে গেল। রুশা কপাল কুঁচকে কিছু বলতে গেলে আদ্রিশ ওর ঠোঁটের উপর আঙুল রেখে ওর গলায় নাক ঘঁষলো। রুশা জমে ফ্রিজ হয়ে যাচ্ছে। ঠোঁটের উপর থেকে আঙুল সরিয়ে ওর কপালে, গালে চুমু খেয়ে বলল,
“বড্ড ভালোবাসি তোমাকে। কিন্তু ধোঁকাটা আমি নিতে পারি না। খুব যন্ত্রণা হয়। মাথা খারাপ হয়ে যায়। মাথায় খুন চেপে যায়। একটা দফারফা না করা পর্যন্ত শান্তি পাই না। তাই ভুল করে ফেলেছি। রুশা আমি তোমাকে মারার কথা ভাবতে পারি না। এখন থেকে আমি তোমাকে আরো আগলে আগলে রাখব। কারো ছায়া পড়তে দেব না।”
রুশা কিছু বলল না চুপচাপ ওর কথা শুনল। আদ্রিশ রুশাকে বুকে জড়িয়ে চোখ বন্ধ করল।
সকালে রুশার ঘুম ভাঙার পরেও নিজেকে আদ্রিশের বুকে আবিষ্কার করল। আদ্রিশ ওকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে রেখেছে। যেন আগলেই রেখেছে। রুশা নিজেকে আদ্রিশের কাছ থেকে ছাড়িয়ে নিল। কোনো এক সময় স্বপ্ন দেখতো স্বামী, সংসার, একজন ভালোবাসার মানুষ হবে, যে সব সময় আগলে আগলে রাখবে। সব সময় তার বুকে মাথা রেখে ঘুমাবে, দিনের সূচনা করবে। রুশা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল। ভাইয়ের মৃত্যুর পরে সব বদলে গেল।

আদ্রিশ অফিসের জন্য তৈরি হচ্ছে। রুশা টেবিল সাজাচ্ছে। আদ্রিশ ডাইনিং টেবিলে খেতে বসবে তখন সেজান এলো। রুশা ওকেও খেতে দিল। আদ্রিশ খেতে খেতে সেজানকে বলল,
“মন্ত্রী সাহেব আগামীকাল আমাদের বাড়িতে আসবে। তার সিকিউরিটির সর্বোচ্চ ব্যবস্থা করো। আর হ্যা কেউ যেন জানতে না পারে। মিটিংটা কিন্তু গোপন থাকবে নয়তো মন্ত্রী মশাইকে জবাবদিহি করতে হবে।”
সেজান আশ্বস্ত করে বলল যাতে কোনো চিন্তা না করে।
.
কিন্তু ঘটনা ঘটে গেল অন্যরকম। মন্ত্রী মশাই
বাড়িতে ঢুকতে না ঢুকতেই মিডিয়া এসে হাজির। একজন ব্যবসায়ীর বাড়িতে মন্ত্রী গোপনে কি কাজে এসেছেন? এরকম নানান প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে। তিনি যাওয়ার সময় আদ্রিশের উপর রাগারাগি করেছেন প্রচুর। আদ্রিশকে আর কোনো কাজে সাহায্য করবেন না বলে গেছে। আদ্রিশ তাই ক্ষেপে আছে, সেজানের উপর সব রাগ ঝেরেছে। কিন্তু বুঝতে পারছে না কে জানাল। কারণ সেজান ছাড়া আর কেউ জানে না এই ব্যাপারে। তখনই আদ্রিশের হঠাৎ মনে পড়ল রুশা ওদের সাথে খাচ্ছিল। তখন ও বলেছিল কথাটা। না চাইতেও ওর দিকে সন্দেহের আঙুল পড়ল। কিন্তু আদ্রিশ মুখে কিছু বলতে পারছে না। ঘরে গেল রুশার সাথে কথা বলতে। বিছানার উপরে ওর মোবাইল পেয়ে সেটা হাতে তুলে নিল। মোবাইল নিয়ে চুপচাপ নিজের আলাদা রুমে চলে গেল। পুরো মোবাইল ঘেটে তেমন কিছু পেল না। আর এদিকে রুশা মোবাইল খুঁজতে খুঁজতে ক্লান্ত। ওর কথাকে কল দেওয়া প্রয়োজন। আদ্রিশকে দরজার সামনে দেখে বলল,
“আমার মোবাইল দেখেছেন?”
আদ্রিশ মোবাইল বাড়িয়ে দিয়ে বলল,
“বসার ঘরে রেখে এসেছিলে। সামলে রাখো।”
আদ্রিশ ঘর থেকে চলে গেল। রুশা মোবাইল হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ওর স্পষ্ট মনে আছে মোবাইল বিছানার উপরে রেখেই ওয়াশরুমে গিয়েছিল। আদ্রিশ ওকে মিথ্যা বলল কেন? আর ওর মোবাইল নিয়ে কি করছিল? আদ্রিশ কি আবারও ওকে সন্দেহ করছে?
আদ্রিশ সিড়ি দিয়ে নামতে নামতে ভাবছে তাহলে কি সেজান? এতদিন ধরে সেজান ওর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে? এত বড় ধোঁকা?
চলবে..
(এখন থেকে রেগুলার দেওয়ার চেষ্টা করব।)
#লাভ_গেম
#ফাবিহা_নওশীন
১২.
দূরে মাগরিবের আজান ভেসে আসছে। রুশা বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে। ঝিরিঝিরি ঠান্ডা বাতাস বইছে। আকাশটাও মেঘলা। মনে হচ্ছে বৃষ্টি আসবে। রুশা বারান্দা থেকে রুমে গিয়ে আদ্রিশকে তৈরি হতে দেখে। রুশা বিছানায় গিয়ে বসে মোবাইল হাতে নেয়। আদ্রিশ তৈরি হয়ে রিভলবারে বুলেট চেক করছে। রুশা কিছুটা ভয় পেয়ে দাঁড়িয়ে থমথমে মুখে জিজ্ঞেস করল,
“এ সময় কোথায় যাচ্ছেন? আর আপনার হাতে ওটা কেন?”
আদ্রিশ রুশার ভয়ার্ত মুখের দিকে চেয়ে বলল,
“সেজানের বাড়িতে যাচ্ছি। ওর সাথে কাজ আছে।”
“উনাকে কল করলেই তো চলে আসবে। যাওয়ার কি দরকার?”
“দরকার আছে। ওর সাথে আমার বোঝাপড়া আছে। আমার সেজানকে সন্দেহ হচ্ছে।”
“সেজান ভাই! কি বলছেন? আপনি এই জন্য রিভলবার নিয়ে যাচ্ছেন?”
“হুম, ওর পাওনা মেটাতে প্রয়োজন পড়তে পারে।”
ওর কথা শুনে রুশা স্তব্ধ হয়ে গেল। সেজানকে ওর বরাবরই ভালো ছেলে মনে হয়েছে। সেজান এমন কিছু করতে পারে বলে মনে হয় না।
“আদ্রিশ, আপনার কোথাও ভুল হচ্ছে। আমি এই কয়দিনে যতটুকু বুঝেছি উনি আপনার জন্য প্রাণও দিতে পারেন। সে আপনাকে এত বড় ধোঁকা দিবে না। উনি তো আপনাকে খুব ভালো করে চিনেন। এমন কাজ মনে হয় না করবে। হতে পারে এটাও ষড়যন্ত্র। প্রথম বার আমাকে টার্গেট করেছে পরের বার সেজান ভাইকে। তাই অনুরোধ করছি না জেনে শুনে ভুল কোনো পদক্ষেপ নিবেন না। আগে উনার সাথে কথা বলে সব ক্লিয়ার করে নিন।”
“হুম। আগে কথাই বলব। আমি যাচ্ছি।”
“প্লিজ মাথা ঠান্ডা রাখবেন। সবকিছু জেনে-বুঝে নিবেন। রাগের বশে কিছু করবেন না। আমার খুব চিন্তা হচ্ছে।”
আদ্রিশ রিভলবার গুজে ওর দিকে একবার চেয়ে চলে গেল। রুশা ধপ করে বসে পড়ল।
ওর খুব চিন্তা হচ্ছে। মনে হচ্ছে আদ্রিশ সেজানের কোনো ক্ষতি করে দিবে। সেজান ওর এত বিশ্বস্ত, ওর সব কাজে সাপোর্ট করে, ভুল মনে হলেও কিছু বলে না, বসের আদেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করে, কয়েকবার নিজের জীবনের রিক্সও নিয়েছে। তবুও সেজানকে সন্দেহ করছে। উনার কি সন্দেহের বাতিক আছে? রুশার খুব জানতে ইচ্ছে করছে ওখানে কি হবে? যদি আদ্রিশ ওকে সাথে নিয়ে যেত? রুশা একবার ভাবল সেজানকে কল করে সব জানাবে কিন্তু পরক্ষণেই আদ্রিশের ভয়ে কল করল না। যদি আদ্রিশ জানতে পেরে রাগ করে? চিন্তায় চিন্তায় হাত পা অবশ হয়ে আসছে।
.
সেজান কিচেনে কফি বানাচ্ছে। পুরো বাড়িতে ও একাই থাকে। কাজের লোক সন্ধ্যার আগেই চলে যায়। সেজানের একা থাকতেই ভালো লাগে। কফি বানিয়ে মগে ঢালতেই কলিং বেল বেজে উঠল। ও মগ ডাইনিং টেবিলের উপরে রেখে দরজা খুলে আদ্রিশকে দেখে স্তব্ধ। অবাক হয়ে চেয়ে আছে। অবাক হওয়ারই কথা। আদ্রিশ সাধারণত ওর বাড়িতে আসে না। লাস্ট কবে এসেছে মনে নেই।
“ভাই, আপনি!”
আদ্রিশ ভেতরে ঢুকে চারদিকে চেয়ে বলল,
“আসতে পারি না? আসা নিষেধ?”
সেজান আলতো হেসে বলল,
“আপনারই তো বাড়ি। আপনি যখন ইচ্ছে আসতে পারেন।”
আদ্রিশ সোফায় আরাম করে বসল। টেবিলের উপরে পা তুলে দিল। সেজান দাঁড়িয়ে আছে। সেজানের আদ্রিশের ভাবভঙ্গি ভালো লাগছে না। আদ্রিশ অপ্রয়োজনে আসেনি।
“সেজান, মিটিংয়ের কথা কাকে বলেছো?”
সেজান অবাক হলো না। সকাল থেকেই বিষয়টা ওকে ভাবাচ্ছে। আদ্রিশ ওকে প্রশ্ন করবে সেটাও জানতো।
“ভাই, আমি কাউকে জানাইনি।”
“ভালো করে মনে করে দেখো। কারো সামনে মন্ত্রীর আসার কথা মুখে এনেছো কি-না।”
“আমি জানি আপনি আমাকে সন্দেহ করছেন।”
“অস্বাভাবিক কিছু?”
“না, সকাল থেকে আমি এটা ভেবেই অস্থির হয়ে পড়ছি। আমি ছাড়া আর কাউকে জানান নি। কিন্তু নিউজটা মিডিয়ার কাছে চলে গেছে। আর এ জন্য আমাকেই সন্দেহ করা উচিত। কিন্তু ভাই, আমি সত্যি বলছি আমি কাউকে কিছু বলিনি। আমি অনাথ। আপনি আমাকে সব দিয়েছেন। ছোট ভাইয়ের মতো ভালোবেসেছেন। এতগুলো বছর ধরে আপনার সাথে ছায়া হয়ে আছি। আপনার সাথে বেইমানি করার কথা ভাবতেও পারি না।
বেইমানির কি শাস্তি সেটাও আমি জানি। জেনেশুনে এত বড় দুঃসাহস দেখাবো আমি? এর পরেও যদি আমাকে সন্দেহ হয় তবে আপনি আমাকে যে শাস্তি দিবেন আমি মেনে নেব। কিন্তু আমিও শেষ পর্যন্ত ভাবীর মতো বলব আমি কিছু করিনি। কারণ এটাই সত্যি।”
আদ্রিশ রেগে গিয়ে বলল,
“সেজান, তুমি যাই বলো না কেন নিউজটা তোমার অথবা আমার দ্বারাই লিক হয়েছে। আমি কাউকে জানাইনি। আর তুমিও বলছো জানাও নি তবে কে? আর কিভাবে?”
সেজান মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে।
“ভাই, নাস্তা করার সময় কোনো সার্ভেন্ট ছিল সামনে?”
আদ্রিশ মনে করার চেষ্টা করে দেখল। কেউ ছিল না। আর ছিল না বলেই নির্দ্বিধায় সব বলেছে।
“না কেউ ছিল না।”
ওদের কথার মাঝে জানালার পাশে অস্পষ্টভাবে কাউকে দেখা যাচ্ছে। মানুষটা সেজানের চোখে পড়ল। ওর বাড়িতে কে উঁকি ঝুঁকি দিবে? সেজান আড়চোখে আরেকবার দেখল। কেউ নেই সেখানে। কিন্তু ওর মনে হচ্ছে একজনকে দেখেছে।
সেজান নিচুস্বরে বলল,
“ভাই, কেউ আপনাকে ফলো করছে। আপনি যেভাবে বসে আছেন সেভাবেই থাকুন। ডানে, বামে, সামনে, পেছনে কোনো দিকে তাকাবেন না।”
আদ্রিশ বুঝতে পেরে চোখের ইশারা দিল।
সেজান ফিসফিস করে বলল,
“ডান পাশের জানালায় একজন উঁকি দিচ্ছে।”
আদ্রিশ আড়চোখে সেদিকে তাকাল। তারপর দাঁড়িয়ে গিয়ে জোরে বলল,
“আমি যাচ্ছি। বাকি কথা আগামীকাল হবে।”
সেজানও দাঁড়িয়ে বলল,
“আচ্ছা ভাই, চলুন আপনাকে দরজা পর্যন্ত এগিয়ে দিচ্ছি।”
আদ্রিশ দরজার বাইরে বের হলো। গাড়ির কাছে যেতেই দুজন রিভলবার বের করল। তারপর বাড়ির দুদিক থেকেই ওই জানালার পাশটা ঘিরে ধরল।
সেই মানুষটা ওদের অস্তিত্ব অনুভব করে দৌড়ে পালাতে গেলে আদ্রিশ রিভলবার উচু করে ট্রিগারে আঙুল রেখে বলল,
“ডোন্ট মুভ। এক পা আগালে মাথার খুলি উড়িয়ে দেব।”
হুডি পরা লোকটা দাঁড়িয়ে গেল। আদ্রিশ অতি সাবধানে ধীরে ধীরে ওর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। কারণ আদ্রিশ ভালো করে জানে এমন ক্রিমিনালরা সব প্রস্তুত থাকে। ওদের দূর্বল ভাবার কারণ নেই। আদ্রিশ প্রায় ওর কাছে চলে গেছে। সেজান পেছনে। আদ্রিশ রিভলবার উঁচু করেই বলল,
“এদিকে ঘোর।”
হুডি পরা লোকটা ধীরে ধীরে ওর কথা মতো পেছনে ঘুরে, তবে পুরোপুরি পেছনে ঘুরে নি। হালকা পেছনে ঘুরে খুব দ্রুত আদ্রিশের হাঁটুতে আঘাত করল। আদ্রিশ হঠাৎ আক্রমণে নিজেকে সামলাতে পারেনি। হাঁটু ভেঙে নিচে পড়ে গেল। হাত থেকে রিভলবারটা পড়ে যায়। সেজান পেছনে থেকে গুলি ছুড়ে হুডি পরা লোকটা হাতের ছুরিটা ওর দিকে ছুড়ে মারে। ছুরিটা একদম ওর হাতে গিয়ে লাগে। লোকটা থামেনি। অলিম্পিকের খেলোয়াড়ের মতো দৌড়ে পালায়। আদ্রিশ আর সেজান উঠে দাঁড়িয়ে গুলি ছুড়ে। লোকটা দেয়াল টপকে বের হয়ে যায়। আদ্রিশ আর সেজান দেয়ালের ওপাশে যেতেই লোকটা একটা গাড়িতে চড়ে চলে গেল।
আদ্রিশ দেয়ালে লাথি মারল। আবারও হাতছাড়া হয়ে গেল লোকটা। গাড়িটা কাছে থাকলে ওকে ধরা যেত। আদ্রিশ রাগে ফোঁসফোঁস করছে। হাতের মুঠো শক্ত করে আছে।
.
রুশা রান্নাঘরে ঢুকে সব সার্ভেন্টকে বের হয়ে যেতে বলল। ও আজ রান্না করবে। সার্ভেন্টরা সবাই চমকে ওর দিকে চেয়ে আছে।
“কিন্তু মেম,,
“কোনো কিন্তু না।”
“আপনার যা চাই আমাদের বলুন আমরা করে দিচ্ছি।”
“বললাম না, আমি রান্না করব।”
“ঠিক আছে আমরা সাহায্য করে দিচ্ছি।”
রুশা রেগে গিয়ে বলল,
“শুনতে পাচ্ছেন না, আমি সবাইকে যেতে বলেছি।”
সবাই ওর কথামতো বাইরে চলে গেল। রুশা সবজি কাটছে। টমেটো, গাজর কাটছে। হঠাৎ রুশার চিৎকারে সবাই ছুড়ে আসে। ওর হাত কেটে গেছে। আঙুল ধরে ব্যথায় কাঁদছে। আঙুল থেকে গাঢ় লাল রক্ত পড়ছে। সার্ভেন্টরা বেশ ভয় পেয়ে গেল। মেম হাত কেটে ফেলেছে, স্যার এসে নিশ্চয়ই ওদের অবস্থা খারাপ করে দেবে। ওরা তাড়াতাড়ি ওর হাতে ব্যান্ডেজ করে দিল। কেউ কেউ মনে মনে ওকে বকছেও।
.
আদ্রিশ মুখ লাল করে ঘরে ঢুকল। রুশা ওকে দেখে শুকনো হাসল। ব্যান্ডেজ করা হাতটা ওড়নার দিয়ে ঢেকে নিল। আদ্রিশ রুশার পেছনে গিয়ে দাঁড়াল। ওর কাঁধের উপর হাত রাখে। হাতটা ডাম হাতের উপর সাপের মতো নেমে যাচ্ছে। রুশা বুঝতে পারছে না আদ্রিশ কি করতে চাইছে আর ও কি করবে। আদ্রিশ ওড়নার আড়ালে ঢাকা হাতটা ধরে বের করতেই রুশা ব্যথায় চিৎকার করে উঠে। আদ্রিশ হকচকিয়ে গিয়ে হাতটা ছেড়ে দেয়। রুশা হাতটা উঁচু করে ফু দিতে দিতে ছলছল চোখে আদ্রিশের দিকে তাকায়।
আদ্রিশ বিস্ময় নিয়ে বলল,
“তোমার হাতে ব্যান্ডেজ কেন?”
“সবজি কাটতে গিয়ে কেটে ফেলেছি।”
আদ্রিশ গর্জে উঠে বলল,
“সবজি! তুমি! তোমাকে সবজি কাটার জন্য এই বাড়িতে এনেছি? তুমি সবজি কাটতে কেন গিয়েছো? এতগুলো সার্ভেন্ট কি করছিলো? ওদের টাকা দিচ্ছি কিসের জন্য?”
রুশা আমতা আমতা করে বলল,
“ওদের দোষ নেই। আমি পাকনামি করতে গিয়েই এই অবস্থা করেছি।”
“তোমাকে আমি কতবার নিষেধ করেছি? তবুও কেন কথা শুনো না? আর লুকিয়ে রেখেছিলে কেন?”
“আপনি যদি রাগ করেন তাই। কোনোদিন পা কাটছি, কোনোদিন হাত। তাই দেখাতে চাইনি।”
“আমি বাজপাখি ভুলে যেও না। আর দেখি তোমার হাতটা। কতখানি কেটেছো? বেশি ব্যথা করছে? দাঁড়াও ডাক্তার ডাকছি।”
আদ্রিশ ওর হাত তুলে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখতে ব্যস্ত হয়ে পড়ল।
.
আদ্রিশ অফিসে যেতেই রুশার মোবাইল বেজে উঠল। ও কল রিসিভ করে ওয়াশরুমে ঢুকে গম্ভীর কন্ঠে বলল,
“আবার কিসের উপদেশ দিতে কল করেছো?”
“পিউ, আমি রকির কাছে সব শুনেছি। তুই কি পাগলামি করছিস বল তো? কয়েকদিন আগে তোকে প্রায় মেরেই ফেলছিল। মৃত্যুর মুখ থেকে বেঁচে এসেছিস। তারপর মন্ত্রীর বিষয়টি নিয়ে তোর উপর ওর আবার সন্দেহ হয়েছে। আর গতকাল তো সেজানের বাড়িতে গিয়ে ধরা পড়ে গেছিলি প্রায়ই। ফিরে আয় বোন আমার।”
রুশা দাঁত খিচিয়ে বলল,
“ফিরে যাওয়ার জন্য তো পিউ থেকে রুশা
হইনি। আমি আমার লক্ষ্য পূরণ না করে এক চুল নড়ব না। আমার এত সেক্রিফাইজের কি হবে? এই পাগল লোকটাকে বিয়ে করেছি, এক ঘরে থাকছি, খুব নিরীহ, বোকাসোকা মেয়ে সেজে আছি। কিসের জন্য? এই লড়াইয়ে আমি তোমাকে সামিল করিনি ভাইয়া, দলের কাউকেও সামিল করিনি। তোমার কোনো হেল্প নেইনি। এই লড়াইয়ে বাঁচলে আমি বাঁচব, মরলে আমি মরব। হার আর জিত দুটোই আমার। তাই প্লিজ বারবার কল করে সব ছাড়, ফিরে আয় এসব বলো না।”
“পিউ, তোর প্রাণের ভয় নেই? আদ্রিশ তোকে ছাড়বে না। মেরে ফেলবে। ভয়ংকর মৃত্যু দিবে। ও খুব ভয়ানক।”
“ভয়! ভয় বলতে আমার লাইফে কিছু নেই। আর জিত তো আমারই হবে। না জিতে মরব না। ছোট থেকে আজ পর্যন্ত আমি কখনও হারিনি। নাচ,গান, খেলাধুলা, পড়াশোনা কোনো কিছুতে কেউ আমাকে হারাতে পারেনি। আজ এই খেলায়ও আমাকে কেউ হারাতে পারবে না। জিত আমারই হবে।”
“বড্ড জেদ করছিস তুই।”
“আমি বরবরই জেদি। যেটা বলি করেই ক্ষান্ত হই।”
“পিউ, তুই ছাড়া আমার আর কেউ নেই। তুই আমার একমাত্র ছোট বোন। তোকে আমি হারাতে পারব না।”
“ভাইয়া, আমার কিছু হবে না। ভয় পেও না।আমি আমার কাজ শেষ করে খুব দ্রুতই ফিরব। রাখছি। আর হ্যা আমার জন্য তোমাকে কোনো প্রকার বিপদে পড়তে হবে না।”
“আমি আমার কথা ভাবছি না, পিউ।”
“আমার কথাও ভাবতে হবে না, ভাইয়া। আমি একদম ঠিক আছি৷ রাখছি।”
রুশা কল রেখে আলতো হাসল। মাথা কাত করে এদিক সেদিক করে বের হয়ে এল।
রুশা অর্থাৎ পিউয়ের ভাই শান মোবাইল রেখে রকির দিকে ঘুরে বলল,
“রকি, পিউকে থামাতে হবে। যথেষ্ট হয়েছে।আমি আর ওর এসব কর্মকাণ্ড আর মেনে নিতে পারছি না। আদ্রিশ যেদিন সত্যিটা জানতে কেয়ামত হয়ে যাবে। ওর সাথে সাথে আমরা, আমাদের দল সব শেষ হয়ে যাবে। ও সবার জন্য বিপদ ডেকে আনবে। বোনটা আমার বড্ড জেদি। বুঝতেই চাইছে না।কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং করেছিস ক্যারিয়ারের দিকে ফোকাস কর, বিয়ে করে স্বামীর সংসার করবে তা না কি যে করে বেড়ায়। লেডি মাফিয়া হবে। উফফ! রকি ওকে আর সাপোর্ট করবে না। বুঝাও ওকে।”
রকি উত্তর দিল,
“ঠিক আছে, এখন খেলাটা অন্যদিকে ঘোরাতে হবে। রুশাকে আমি এই খেলা থেকে বের করে আনব।”
চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here