ভালোবাসি হয়নি বলা-Part 26

0
213

#ভালোবাসি_হয়নি_বলা
#লেখকঃmahin_al_islam
#পর্বঃ২৬
মাহিনঃ আমার মাথাটা একটু ব্যাথা করতেছে একটু টিপে দিবা
উফফফ এই মানুষটা এত বাহানা জানে
আমি নিজেই উনার কাছে গিয়ে বসে পড়লাম
আমিঃ ওকে শুয়ে পড়ুন
উনি আমার কোলে মাথা দিয়ে শুয়ে পরলেন
আমি এখন খুব ভালো করেই বুঝতাছি
সব তার বাহানা ছিল
উফফফফ
মাহিনঃ থাক আর মাথা টিপা লাগবেনা এখন শুয়ে পড়েন অনেক রাত হয়ে গেছে বেশি রাত হলে আবার তোমার শরীর খারাপ করবে তখন আবার দুজনেই অসুস্থ হয়ে পরবো কেউ কারো সেবা করতে পারবোনা
আমিঃ একদম ন্যাকামি করবেন না বুঝছেন আমার রাত জাগা অভ্যাস আছে আর আপনি ন্যাকামি না করে শুয়ে পড়ুন আর ঘুমিয়ে পড়ুন তাড়াতাড়ি
মাহিনঃ কেন আমি জেগে থাকলে কি তোমার সমস্যা হয় আচ্ছা তুমি আমাকে সত্যি করে বলোতো তুমি কি সত্যিই আমাকে কখনো মেনে নিবে না সারাজীবন কি আমরা এরকম করে থাকব নাকি আমাদের একটা সুন্দর সংসার হবে সুন্দর দু’চারটা বেবি হবে
আমিঃ আমি এখন ওসব নিয়ে কোন কথা বলতে চাচ্ছি না আপনি অসুস্থ সুস্থ হয়ে ওঠেন তারপরও এসব নিয়ে কথা বলা হবে
মাহিনঃ না আমি এক্ষুনি উত্তর নেব আর সেটা তুমি আমাকে দিবা
আমিঃ অনেক রাত হয়ে গেছে আম্মু এসে যদি আমাদের মাঝে এই রকম কথাবার্তা শুনতে থাকে তাহলে খারাপ ভাববে তাই বলতেছি এখন ঝগরা করা ঠিক হবে না সকালে এসব নিয়ে কথা বলব
মাহিনঃ আমি এসব নিয়ে কথা বলতে ধরলেই তুমি যে কোন একটা অজুহাত দেখিয়ে কথাগুলো কাটিয়ে যাও আমি শুনতে চাই সমস্যা কি তোমার
আমিঃ আমার কোন সমস্যা নেই আপনি আগে সুস্থ হয়ে ওঠেন এখন আমার মাথায় শুধু একটাই টেনশন আপনি কবে সুস্থ হবেন তাই বলতেছি এখন কোন ধরনের কথা বলবেন না আরো উত্তেজিত হবেন না আপনি যদি এখন উত্তেজিত হয়ে যাও মাথায় টেনশন নেন তাহলে আপনার যে কোনো একটা দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে সেটা আমার মেনে নিতে অনেক কষ্ট হবে তাই আমি চাচ্ছি আপনি এখন ঘুমিয়ে পড়েন আর নিজেকে একটু সুস্থ করে তুলতে সাহায্য করুন
উনি চুপচাপ চোখ বন্ধ করে ঘুমানোর চেষ্টা করলেন
উনি চুপচাপ শুয়ে পড়লেন ওনার এই অবস্থা দেখে আমি একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললাম
আস্তে আস্তে হয়তো অনেক ঘুমিয়ে পড়লেন ওনার ঘুমন্ত মুখটা একদম বাচ্চা বাচ্চাদের মত লাগতেছে
আমি আধা শোয়া হয়ে বিছানার উপর গা এলিয়ে দিয়ে আছি
চোখ দুটো অনেক মায়াবী মুখের উপর আটকে আছে ওখানন থেকে সরতে চাচ্ছে না
এই জন্যই তো বলি নিজের চোখকে পরের মায়া পড়ে যায় বেইমান চোখ নিজের খেয়ে নিজের সবকিছু আর অন্যের জন্য কান্না করে
আমি হঠাৎ করে ওনার দিকে ঝুকে গেলাম নিজেও জানিনা কেন আমার মাঝে এরকম হচ্ছে
আমি আসতে আসতে ওনার কাছে চলে যাচ্ছি
আমি ওনার এতটা কাছে চলে এসেছে যে কোন আর নিঃশ্বাসের আওয়াজ টা আমার কানে বাজতেছে
আমার হার্টবিটে কেউ মনে হয় হাতুড়ি পিটাচ্ছে
হচ্ছে
আমি আলতো করে আমার ঠোঁটদুটো উনার কপালে বসিয়ে দিলাম কয়েক সেকেন্ড ধরে রাখে সরে আসলাম
চুপচাপ উনার গায়ের কাথাটা টেনে দিয়ে আমিও কাতার ভিতরে শুয়ে পড়লাম
মাথাটা আলতো করে ওনার বুকের মাঝে নিয়ে গেলাম আমার চোখদুটো বন্ধ করে নিলাম
আমার এখন মনে হচ্ছে পৃথিবীর সবথেকে সেরা জায়গা আমার এইটা
আমি যদি এই জায়গায় থাকি তো আমাকে এখান থেকে কেউ কোথাও নিয়ে যেতে পারবে না
আসলে মেয়েদের সবথেকে আস্থা ভরসা স্থান হল তাদের স্বামির বুক
নিজে নিজে অনুভব করতে লাগলাম আসলে স্বামির শুখটা কোথায়
উনার বুকে শুয়ে থাকতে থাকতে যে কখন ঘুমিয়ে গেছে সেটা নিজেও জানিনা
সকালে ঘুম ভাংলো পাখির মিষ্টি শব্দ শুনে
চোখ দুটো খুলে দেখি সকালের রুদ্র মামা মিষ্টি আলওয়ে ছড়িয়ে দিচ্ছে সারা পৃথিবী
বাহ উনার ঘর থেকে তো সকালের অনুভূতিটা অনেক সুন্দর হয়
আমি বিছানা থেকে উঠে জানোনা থেকে পর্দার একটু ফাক করলাম আর ফাঁক করতেই মিষ্টি রোদের আলোর ঝিলিক মেরে গেল উনার মুখে
ওনি গা মোড়ামোড়ি দিলেন আমি হয়তো ভাবলাম উনি উঠে যাবে কিন্তু না আবার ঘুমিয়ে পড়লেন
উনার আবার ঘুমিয়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখে আমার কেন জানি খুব রাগ হচ্ছে
অসুস্থ মানুষ একটু তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠবে নাস্তা করবে তাড়াতাড়ি সুস্থ হবে তা না করে উল্টোটা হচ্ছে দাড়াও দেখাচ্ছি মজা
আমি টেবিলে থাকা থেকে এক গ্লাস পানি নিয়ে আসলাম
পানিগুলো সোজা ওনার মুখে ছুড়ে মারলাম
আমি ঘুমিয়ে ছিলাম হঠাৎ করে মনে হচ্ছে ছাদ ভেদ করে বৃষ্টির পানি আমার মুখে পড়তেছে
আড় চোখে পানি পরতেই চোখ থেকে ঘুমটা যেন উধাও হয়ে গেল আর আমার চোখদুটো অটোমেটিকলি খুলে গেল
চোখ দুটো খুলে পাশে তাকিয়ে দেখি
দিপা খিলখিল করে হাসছে তার মানে বুঝতে পারলাম কাজটা ওর
আমি অনেকটা রাগী লুক নিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে রইলাম
মাহিনঃ আমার এত সাধের ঘুম তুমি উধাও করে দিলে তাও আবার এত সকাল-সকাল এটা করার কারণ কি
আমিঃ আপনার মত আলসিয়া মানুষ আমি কখনো দেখি নাই কেউ এতো সকাল করে ঘুমিয়ে থাকে
মাহিনঃ কেউ থাকে কিনা জানিনা তবে আমি ঘুমিয়ে থাকি আর তুমি আমাকে এভাবে জাগাইলা কেন
আমিঃ আমার মন চাইছে তাই আমি জাগিয়ে দিয়েছি আপনার মন চাচ্ছে ঝগরা করতে কিন্তু আমার এখন ঝগড়া করার কোন ইচ্ছা নাই সকাল হয়ে গেছে এখন আমি একটু বাহিরে যাই দেখি বাইরের পরিবেশটা কিরকম
মাহিনঃ বাহিরে যাই হ্যা বাহিরে যাই মনে কি আমাকে সকাল সকাল ঘুম থেকে তুলে এখন আপনি বাইরে যাবে আর আমি একা রুমে থেকে কি করব
আমিঃ হাতের বৃদ্ধাঙ্গুল টা আছে না মুখে নিয়ে ললিপপের মত করে চুষতে থাকেন আমি বাইরে থেকে ঘুরে বেরিয়ে আসতেছি
মাহিনঃ এত বড় সাহস তোমার তুমি আমাকে এইভাবে বলো ওকে সুস্থ হতে দাও তারপর তোমার উপর আমি এসব রিভেন্স নেব
আমি মুখ ভেংচি দিয়ে বেরিয়ে আসলাম রুম থেকে
উফফফ আর কতদিন যে লাগবে সুস্থ হতে সুস্থ আগে হয়ে নেই তারপর দেখব তুমি কত দূর জাইতে পারো আর আমি কতদুর যাইতে পারি
আমি বাইরে বেরিয়ে দেখি ছুটকি রুম থেকে বেরিয়ে আসতেছে
ছুটকিঃ কি ভাবি এত তাড়াতাড়ি ঘুম ভেঙে গেল
আমিঃ আমি প্রতিদিন এরকম সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে পড়ি
ছুটকিঃ প্রতিদিন রাত আর আজকের রাত কি এক ভাবি
আমিঃ দেখো সকাল সকাল ফাজলামো শুরু করবা না এখন চলো নিচে যাউ আর আম্মুকে একটু সাহায্য করি
ছুটকিঃ আচ্ছা তবে পরে সব কিছু বলতে হবে কিন্তু
আমিঃ কি বলব অনেকটা অবাক হয়ে ছুটকির মুখের দিকে তাকিয়ে রইলাম
চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here