#জৈষ্ঠ্যের_প্রেম (পর্ব-১৩)

0
254

#জৈষ্ঠ্যের_প্রেম (পর্ব-১৩)
লেখনীতে– ইনশিয়াহ্ ইসলাম।

২৭.
সন্ধ্যায় হল রুমে সবাই মিলে চা আড্ডা দেয়। রাতে খাওয়ার পরে আর কোনো কিছুতে যোগ দেওয়া হলো না কারো। কেননা সারাদিনের ব্যস্ততায় সকলেই ক্লান্ত ছিল।

পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে বর্ষা আর মৌসন্ধ্যা বিলের দিকে হাঁটতে বের হয়। বেশ ভোরেই ঘুম থেকে উঠে নামায পড়ে বেরিয়েছে তারা। বের হওয়ার আগে বর্ষা একশ টাকা নিয়ে বের হয়েছে। বিল থেকে একটু এগিয়ে গেলেই তাদের এলাকার এক চাচার চায়ের টং দোকান পড়ে। ভোর পাঁচটায় টং দোকানটা খোলা হয়। চা টা এত চমৎকার বানান! বর্ষা বহু দিন হলো খায় না। মন চেয়েছে তাই এবার খেয়েই ছাড়বে।

বিলের পরিবেশটা এত সুন্দর! মানুষজন নেই। একটু কুঁয়াশা পড়েছে। মাঝে মাঝেই শীতল হাওয়া বইছে। মৌসন্ধ্যা মাথার ওড়নাটা আরেকটু ভালো ভাবে টেনে দিয়ে জিজ্ঞেস করল,
-‘তুই সিউর এখন কোনো পুরুষ ওখানে বসে থাকবেনা?’
-‘মালেকা চাচী তো বলল আটটার দিকে মানুষজন আসে। এখন গেলেও হাতে গোণা দুই একজন পাবি।’

তারা টং দোকানে পৌঁছে দেখল বেশ কয়েকজন ভীড় বসিয়েছে সেখানে। মৌসন্ধ্যা উল্টো পথে ফিরতে নিলেই বর্ষা বলল,
-‘আরে দাঁড়া। এদের তো চেনা চেনা লাগছে।’

বর্ষা একটু সামনে এগিয়েই দেখতে পেল গ্রীষ্ম, শরৎ, শ্রাবণ, আশ্বিন, মুকিত, আষাঢ়, সাবাব সবকয়টা দল বেধে চা খাচ্ছে। সে দৌঁড়ে তাদের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। আকস্মিক বর্ষার আগমনে সবাই অবাক হয়ে গেল। শ্রাবণ বলল,
-‘এই! তুই এত সকালে এখানে কি করস! বে’য়া’দ’ব, যা বাড়ি যা। এখানে কেন আসছিস?’
-‘চা খাব ভাইয়া।’
-‘বাড়িতে চা নাই?’
-‘আমিও এই কথা এখন তোমাদেরকেও বলতে পারি।’
-‘আমরা ছেলে মানুষ। তুই মাইয়া। দোকানে চা খাইতে আসছস আবার একা একা!’
-‘একা না। মৌ আছে।’
-‘ওহ তোমার তো আবার তিনি বান্ধবী লাগে। যেখানেই বর্ষা সেখানেই মৌসন্ধ্যা। তা সে কোথায়?’
-‘এই তো আছে।’
পেছন ফিরে ডাকল বর্ষা,
-‘মৌ এই মৌ!’

মৌসন্ধ্যা এসে দাঁড়ালো। প্রথমেই গ্রীষ্মের মুখোমুখি হলো। গ্রীষ্ম তাকে দেখে স্মিত হাসে। সাদা সালোয়ার কামিজ পরিহিতা মৌসন্ধ্যাকে এই ভোরের মিষ্টি আলোয় অসাধারণ লাগছে। আবার মাথায় ঘোমটা দিয়েও রেখেছে। গ্রীষ্মের চট করে মনে হলো মৌসন্ধ্যাকে এভাবে ভীষণ মানায়।

আশ্বিন বোনদের দিকে একবার তাকিয়ে গেল আবার চায়ের অর্ডার দিতে।
-‘চাচা আরো দুই কাপ দিবেন।’
-‘বোইনেরা আসছে নাকি পিছন পিছন!’
আশ্বিন মৃদু হেসে বলল,
-‘জ্বি। বাচ্চা মানুষ অনুকরণ প্রিয়।’

কথাটা বর্ষা শুনল। একে তো বাচ্চা বলল। আবার বলে অনুকরণ প্রিয়!
-‘আমরা তোমাদের পেছন পেছন আসিনাই। আমরা তো জানিও না তোমরা আসবে। আমরা নিজেদের মতোই আসছি। এই দ্যাখো টাকাও আনছি।’

হাতের মুঠো খুলে একশ টাকাটা সবাইকে উদ্দেশ্য করে দেখালো সে। সাবাব আর মুকিত হো হো করে হেসে উঠল। হাসি থামিয়ে সাবাব বলল,
-‘বাহ! খুব ভালো। বহুত খুব! আজ আমাদের চা খাওয়ার টাকা তবে বর্ষা আপাই দিবে। আসেন আপা। এই টুলটাতে আপনি বসেন। আমাদের আপ্যায়ন গ্রহণ করেন।’
-‘কচু দিব। সব টাকা তুই দিবি। আমি এখন ফ্রীতেই খাব। ভালো হইছে। এখন আমার টাকাও বাঁচবে। তোরা সব বড় ভাই। আমরা দুইজন ছোট। খাওয়াবি তোরা।’

শরৎ এতক্ষণ চুপ করে থাকলেও এবার বিরাট এক ধ’ম’ক দিয়ে উঠল। বর্ষা আর মৌসন্ধ্যা দুজনেই বেশ ভ’য় পেয়ে গেল।
-‘এইটা ঝগড়া করার জায়গা? বে’য়া’দ’ব কোথাকার।’
বর্ষা অভিমান করে বলল,
-‘সব বকা আমাদেরই দাও শুধু। নিজের ভাই বলে তাকে বকো না। বুঝি তো সব!’

কথাটা শুনে শরৎ থ বনে গেল। আষাঢ় বলল,
-‘বর্ষা! চা খেতে আসছিস চুপচাপ চা খেয়ে চলে যা। কোনো কথা বলবিনা।’
-‘খাব না আর চা। আমরা যাচ্ছি। তোমরাই গেলো সব।’

বর্ষা মৌসন্ধ্যার হাত ধরে টেনে পেছন ফিরে হাঁটা ধরল। মৌসন্ধ্যা যেন এতে খুশিই হলো। দুজনে তাদের পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সময় বলল,
-‘আমরা নিজেরাই বানিয়ে খেতে পারব চা। কি বলিস মৌ!’
-‘হ্যাঁ। আমাদের হাত আছে। নিজের চা নিজেই বানিয়ে খেতে পারব। তুই শুধু শুধু রা’গ করিস। এই আবালদের পাত্তা দেওয়ার মানে আছে? এরা কিছুই বুঝেনা। শুধু ভ্যা ভ্যা করবে কথায় কথায়। ম্যান!’
-‘হা হা হা।’

সবগুলো কথা বেশ জোরেই সবাইকে শুনিয়ে শুনিয়ে বলল। ছেলেরা শুনেও কিছু বলল না। থাক! মেয়েরা এমনই, শুধু শুধুই বকবক করে। এদের দশটা কথায় নয়টা হলো আকামের। এদের ভাও দিতে নেই।

আশ্বিন ওয়ান টাইম কাপ গুলো নিয়ে দ্রুত পা চালিয়ে বোনদের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। বলল,
-‘নে ধর! আমি দিচ্ছি। আমার ট্রিট। তোদের টাকা দেওয়া লাগবেনা। তবুও নে। চা টা অপচয় করিস না। খাবার জিনিস!’

দুই বোন একে অপরের মুখের দিকে তাকিয়ে ইশারায় কথা বলল। তারপর চায়ের কাপ হাতে নেয়। বর্ষ বলে,
-‘তুমিই একমাত্র আমাদের ভাই। আজ থেকে আমাদের ভাই একটাই। কী বলিস!’
-‘হ্যাঁ মানে মামাতো ভাই আজ থেকে একটাই। এমনিতে আমার ভাই আছে তো। মৃন্ময় আছে তো! আনন্দ আর আদনানও আছে।’
-‘আচ্ছা ঠিক আছে। তবুও তোর কপাল কত ভালো! আমার ফাঁটা কপাল।’

বাকিদের চা খাওয়া শেষ। তারাও তাদের পেছন পেছন আসছে। সব কথা শুনেও চুপ করে আছে। গ্রীষ্মের অবশ্য ভালোই লাগল। মৌসন্ধ্যা তাকে ভাই না ভাবুক। তাহলেই হবে। চায়ে চুমুক দিয়ে মৌসন্ধ্যা আশ্বিনকে বলল,
-‘আশ্বিন ভাইয়া তোমার চুল গুলো এত সুন্দর কেন? আমাদের একটু এই সুন্দর চুলেও র হ স্য বাতলে দাও!’

আশ্বিন যেন খুব খুশি হলো। চুলে হাত বুলিয়ে বলল,
-‘তাই নাকি!’
-‘হ্যাঁ।’

মৌসন্ধ্যা আশ্বিনের চুলে আঙুল ছুইয়ে বলল,
-‘বেশ সিল্কিও!’
-‘চুলের যত্ন নিতে হয় বুঝলি! আমার একটা স্পেশাল হেয়ার প্যাক আছে। নিজে তৈরি করি। দাঁড়া তোদেরকেও আজ তৈরি করে দিব।’
-‘সত্যি তো?’
-‘হ্যাঁ।’
-‘বারোটার আগে দিও তবে।’
-‘আচ্ছা।’

পেছনে বাকিরা নিজেদের মধ্যে কথা বলছিল ঠিকই কিন্তু কেবল আশ্বিনের চুলের প্রশংসা শুনে সবারই কেন যেন খা’রা’প লাগল। সাবাব বলল,
-‘পাগল গুলা সুন্দর চুলও চিনেনা। তাকিয়ে দ্যাখ! আমার চুল গুলোর দিকে। যেমন সুন্দর তেমনি সুগন্ধিতে ভরপুর।’

বর্ষা আর মৌ চা শেষ করে কাপ গুলো এক পাশে ফেলে দিয়ে এক সাথেই বলে উঠল,
-‘ওয়াক থু!’

সাবাবের মুখটা ছোট হয়ে গেল। মুকিত শ্রাবণকে বলল,
-‘মিয়া ভাই! আমাদের চুলও ভালোই। তাই না?’
-‘তাই তো। আশ্বিনের চুল মাইয়াগো মতো। পাতলা পাতলা।’

আশ্বিন পেছন ফিরে ভাইদের জেলাসি উপভোগ করছে আর মুখ টিপে হাসছে। আষাঢ়ও বলল,
-‘আশ্বিনের তো চুলও পাকছে। মৌসন্ধ্যা সুন্দর চিনে নাকি?’

মৌসন্ধ্যার কথাটা শুনে এত রা’গ হলো! সে পেছন ফিরে বলল,
-‘আমি সুন্দর চিনি দেখেই বলছি। আর কার চুল সুন্দর? কাকের বাসা সবকয়টার। শুধু আশ্বিন ভাই আর ওনার চুল সুন্দর।’

চোখের ইশারায় গ্রীষ্মকে দেখাতেই সবাই গ্রীষ্মের দিকে তাকালো। গ্রীষ্ম নিজেই চমকে গেল। কি প্রতিক্রিয়া দিবে বুঝতে পারল না। মৌসন্ধ্যা নিজের বোকামি বুঝতে পেরে সামনে গিয়ে বর্ষার হাত ধরে দ্রুত হাঁটা ধরল। সাবাব গ্রীষ্মের কানের কাছে গিয়ে একটু ঢং করে বলল,
-‘ও না র চুল সুন্দর! ওহো…’
গ্রীষ্ম হাসে। সাবাব এবার জোরেই বলল,
-‘ভাই ফগ ইউজ করেছ নাকি?’
-‘না তো। কেন?’
-‘না মানে লোক তো নোটিস করে যখন ফগ ইউজ করে তখন।’

মুকিত আর শ্রাবণ কথাটা শুনে হা হা করে হেসে উঠল। আষাঢ়ের মেজাজটা গরম হয়ে গেছে। মৌসন্ধ্যার মুখে গ্রীষ্মের প্রশংসা সে মানতে পারছেনা।
শরৎ চুপ করে আছে। তার চেহারা দেখে বোঝা যাচ্ছেনা ভেতর ভেতর সে একটা কারণে গুমড়ে যাচ্ছে। তার এই ক’ষ্টটা সে কাউকে বলতেও পারছেনা।

বাড়ি ফিরে যে যার মতো এদিক সেদিক চলে গেল। এপ্রিল আর চৈত্র মৌসন্ধ্যাদের সাথে বেশ রা’গারা’গি করল কেন তাদেরকেও সাথে নিল না! তাদের বুঝিয়ে লাভ হলো না। তাই দুজনে রুমে চলে আসে।

বারোটার আগে হেয়ার প্যাক বানিয়ে আশ্বিন মৌসন্ধ্যাকে দিয়ে গেল। তার এই হেয়ার প্যাক দেখে শ্রাবণ, মুকিত, সাবাবও লাইন লাগিয়েছে। তাদের সবার জন্যই বেশি করে বানানো হলো। তারপর ভাই সবকয়টা এবং আবিরের চুলেও হেয়ার প্যাক লাগানো হলো।

২৮.
মৌসন্ধ্যা দুপুরে নানা নানুর রুম থেকে বের হয়ে উপরে উঠতেই গ্রীষ্মের দেখা পেল। গ্রীষ্ম তাকে দেখে মৃদু হাসে। বিনিময়েও সে নিজেও একটু হাসল। গ্রীষ্মই কথা বলল,
-‘ফ্রী আছো?’
মৌসন্ধ্যা একটু নার্ভাস হয়ে পড়েছিল। কি বলবে! পরে বলল-
-‘ভাবলাম একটু ঘুমাই। তাই ঘুমাতে যাচ্ছি।’
-‘ওহ। আচ্ছা যাও। ঘুমাও গিয়ে।’

মৌসন্ধ্যা চলেই আসছিল। কিন্তু মনে হলো গ্রীষ্ম কিছু বলবে তাই পেছন ফিরে বলল,
-‘কিছু বলবেন?’
-‘না তো। কি বলব?’
-‘ফ্রী আছি কিনা জিজ্ঞেস করলেন যে তাই মনে হলো।’
-‘ওহ।’
-‘আপনার বন্ধু আহরার ভাইয়া কোথায়?’
-‘আহরার? ও তো চলে গেছে।’
-‘কি! কখন?’
-‘গতরাতেই। ওর অফিসে হঠাৎ কাজ পড়ে গিয়েছিল। রাতেই রওনা হয়েছে।’
-‘কীভাবে গেল রাতে? না মানে বাসে নাকি?’
-‘না। আমার গাড়ি নিয়েই গেছে। ড্রাইভার ছিল সাথে।’
-‘আপনার গাড়ি লাগবেনা? আপনি তো এখানে। প্রয়োজন পড়তে পারে।’
-‘না। প্রয়োজন পড়বেনা। বাড়ির বাকি গাড়ি গুলো আছে তো।’
-‘ওহ আচ্ছা। আমি আসি তাহলে।’
-‘আচ্ছা যাও।’

মৌসন্ধ্যা চলে গেল। গ্রীষ্ম নড়ল না। মৌসন্ধ্যার যাওয়ার পানে তাকিয়ে রইল। গ্রীষ্মের মা এতক্ষণ দুজনকে কথা বলতে দেখেছেন। ভদ্রমহিলার কেন যেন মৌসন্ধ্যার সাথে গ্রীষ্মের কথা বলাটা ভালো লাগল না। ছেলের হাবভাবে পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। সে যা ভাবছে তা ভুল হলেই হয়।

রাতে গ্রীষ্মকে নিজের রুমে ডাকলেন। তার বোনও পাশে ছিলেন। দুজন মিলে চাপ দিতেই গ্রীষ্ম বলে ফেলল,
-‘আমার জৈষ্ঠ্যকে ভালো লাগে। আমি ওকে বিয়ে করতে চাই।’

গ্রীষ্মের মা খালা দুজনেই চমকে উঠলেন। কড়াভাবে তার মা নিষেধ করলেন,
-‘আজ বলেছ ঠিক আছে। আর কখনোই বলবেনা। ওই মেয়ের থেকে দূরে থাকবে।’
-‘কেন মা?’
-‘ওরা আমাদের সাথে যায় না বাবা। চামেলির মেয়েকে আমি পুত্রবধূ ভাবতেই পারব না। আমাদের স্ট্যাটাস ম্যাচ করেনা। তাছাড়া ও তোমার বোন হয়।’
-‘মা! এসব কি যা তা বলছ? আর বোন হয় মানে? আপন বোন তো নয়। তবে সমস্যা কোথায়?’

গ্রীষ্মের মা ছেলেকে স্পষ্ট বলে দিল কাল সকালেই ঢাকা ফিরে যাওয়ার জন্য। এসব নিয়ে সে যেন আর একটা কথাও না বলে।

গ্রীষ্ম দিশেহারা হয়ে উঠল। সে একবারও ভাবেনি যে মা এমন রিয়েক্ট করতে পারে। আসলে মায়ের আপত্তির কথা মাথাতেই আসেনি। তার মা উচ্চ বিলাসি চিন্তা ধারার। সে জানে মা ক্লাস নামক জিনিসটাকে খুব গুরুত্ব দেয়। কিন্তু মৌসন্ধ্যার ক্লাস কোন দিক দিয়ে খারাপ সে তা বুঝতে পারছেনা।

পরদিন সকালে আরেকটা ঘটনা ঘটে গেল। আবিরের সেই খালাতো ভাই নাহুল হাজির সকাল বেলায়। এসে সবার সাথে কুশল বিনিময় করে মৌসন্ধ্যার খোঁজ আগে করল। মৌসন্ধ্যা কোনটা? মৌসন্ধ্যা সিঁড়ির পাশেই দাঁড়িয়ে ছিল। তার খোঁজ করাতেই সিঁড়ি বেয়ে দ্রুত উপরে চলে গেল। সে বর্ষাকে গিয়ে বলল,
-‘ মহা ঝামেলায় পড়া গেল তো!’

বর্ষা অবশ্য তখনও জানেনা নিচে কি হচ্ছে।

#চলবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here