#জৈষ্ঠ্যের_প্রেম (পর্ব-৯)

0
266

#জৈষ্ঠ্যের_প্রেম (পর্ব-৯)
লেখনীতে— ইনশিয়াহ্ ইসলাম।

—————
জুনের স্বামীর নাম হলো আবির রহমান। আবিরের খালাতো ভাই নাহুলের জন্য মৌসন্ধ্যাকে নাহুলের মা বিশেষ পছন্দ করেছেন। এই পছন্দ হয়ে যাওয়ার কথাটা গ্রীষ্ম জানতে পারল রাতে ঘুমাতে যাওয়ার সময়। সাবাব আজ তার সাথে ঘুমানোর জন্য এসেছে। সাবাব বেশ হাস্যজ্জ্বল ভাবেই বলল,
-‘জানো ভাই, একটা মজার কান্ড ঘটেছে।’

ফোনে ব্যস্ত থাকা গ্রীষ্ম পাশে শুয়ে থাকা ছোট ভাইয়ের দিকে তাকায় একবার। তারপর পুনরায় নিজের ফোনের স্ক্রিনে চোখ রেখে বলল,
-‘কী ঘটেছে!’
সাবাব একটু নড়ে চড়ে বলল,
-‘মৌয়ের বিয়ের প্রস্তাব এসেছে। আবির ভাই খালাতো ভাই নাহুলের জন্য।’

কথাটা শোনার পর গ্রীষ্মের হাত থেমে গেল। চোখ মুখটা শক্ত হয়ে গেল। অবশ্য সেইসবে সাবাবের খেয়াল নেই। সে বলল,
-‘ওই যে একটা মহিলা বারবার বর্ষা আর মৌ’দের সাথে গল্প পাতছিল তারই ছেলে। আমার তো তখনিই স’ন্দে’হ হচ্ছিল। এমনটাই আঁচ করছিলাম। তবে কোনটাকে যে মহিলা পছন্দ করেছে সেটা বুঝিনাই।’

গ্রীষ্ম স্মৃতি হাতড়ে গতকালের দৃশ্যটা বের করল। নির্জনে বসে সেই মহিলা গতকাল মৌসন্ধ্যার সাথে বেশ গল্প করছিল। এমনকি মৌসন্ধ্যার প্রতি খুব যত্ন দেখিয়েছে, না খেয়ে আছে শুনে কেমন রিয়্যাক্টও করেছে। তারও তখন মনের ভেতর এমন কিছুর ইঙ্গিত আসছিল। তবে সে ভাবতে পারেনি এত দ্রুত এমন কিছু ঘটে যাবে। সে ফোনটা হাত থেকে রেখে দিল। বেড সাইড ল্যাম্পটা জ্বা’লি’য়ে দিতেই সাবাব বলল,
-‘কী হলো ভাই! লাইট দিলে যে।’
-‘ওঠ তো রজব। কোনো কিছু আলোচনা করতে হল বসে করতে হয়। নইলে মজা নেই।’

সাবাবের আরেকটা নাম রজব। আরবি মাসের নাম। এই নামে তাকে তার দাদা-দাদি আর গ্রীষ্ম ছাড়া আর কেউ ডাকেনা। মাঝে মাঝে অবশ্য গ্রীষ্মও সাবাব বলে। তবে খুবই কম সময়ে সেটা হয়ে থাকে।
সাবাব ভাইয়ের কথা শুনে একপ্রকার লাফিয়ে শোয়া থেকে উঠে বসে। তারপর বেশ উৎসাহী হয়ে বলল,
-‘এক্সাইটেড লাগছে তাইনা? সত্যি বলতে আমিও বেশ এক্সাইটেড। এই বিয়ে খেতে এসে পাত্রী পছন্দ করে ফেলাটা কিন্তু মজারই।’
গ্রীষ্ম ছোট ভাইয়ের এই বেশি বেশি আনন্দটা সহ্য করতে পারল না। মৃদু ধ’ম’কের সুরে বলল,
-‘লাফালাফি কম কর। আমি এখন যা জিজ্ঞেস করব তার উত্তর দিবি। ঠিক আছে?’
-‘ওকে।’

গ্রীষ্ম একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে শুধালো,
-‘বিয়েটা নিয়ে সকলে কি ভাবছে! হবে?’
সাবাবকে একটু ভাবুক দেখালো। মাথা হেলিয়ে বলল,
-‘মনে হচ্ছে আবার হচ্ছে না। কাউকে এই ব্যাপারে জোর দিয়ে কথা বলতে দেখিনি। তবে ফুফুর হাব ভাবে মনে তো হচ্ছে না কিন্তু মেজো আব্বু আর ছোট আব্বু বলছেন প্রস্তাব ভালো। বিয়েটা দিলেই হয়। নাহুল নামের সেই ছেলে নাকি ডাক্তার। হার্ট স্পেশালিস্ট না কি যেন!’

গ্রীষ্ম চুপ করে শুনল। হার্ট স্পেশালিস্ট? তাতে কি! মৌসন্ধ্যার কি হার্টের সমস্যা আছে নাকি! সেই ডাক্তারের সাথে বিয়ে দিলে সে কি চিকিৎসা করে সারিয়ে তুলবে! আর চিকিৎসার জন্য ডাক্তার বিয়ে করতে হবে কেন? হাসপাতালে গেলেই তো কত ডাক্তার পাওয়া যাবে। যত্তসব! চাচাদের এসব ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার পাত্র পছন্দ করার রোগটা আর গেল না! হঠাৎ করেই তার মাথায় খেলে গেল ইঞ্জিনিয়ার শব্দটি। আশ্চর্য! সে নিজেও তো একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। ভালো বেতনের চাকরি করছে। পাশাপাশি বাবার সাথে ব্যবসাও সামলায়। অর্থনৈতিক, সামাজিক এমনকি রাজনৈতিক দিক দিয়েও সে সফল মানুষ। তবে! তার সাথে সমস্যা কী? ডাক্তার থেকে ইঞ্জিনিয়ার কোন অংশে কম? সে সাবাবকে বলল,
-‘জৈষ্ঠ্য কী বলে! ওর কি মতামত?’
-‘ও আর কি বলবে! বাপ মা যেখানে দিবে সেখানেই করার কথা।’
কথাটা বলেই সে ঠোঁট বাঁকায়। মুহূর্তেই তার মনে পড়ল মৌসন্ধ্যার জীবনের এক কঠিন সময়ের কথা। সে বলল,
-‘না ন ভাই। একটা ব্যাপার আছে।’
-‘কী?’
-মৌয়ের তো বিয়ে নিয়ে এর আগেও এক কাহিনি গিয়েছিল। সেই ঘটনার রেশ ধরেই ফুপা মৌয়ের বিয়ের ব্যাপারে নিজস্ব মতের স্বাধীনতা দিয়ে দিলেন। মৌ যদি পছন্দ না করে তাহলে তাকে জোর করা যাবেনা।’
-‘তাই নাকি? ঘটনাটা খুলে বল তো!’

সাবাব সব কিছু খুলে বলল। মৌসন্ধ্যার সেই অতীত জেনে গ্রীষ্ম মনে মনে চাপমুক্ত হলো। কিন্তু কিছুসময়ের জন্যই। কেননা মৌসন্ধ্যার পছন্দ নিয়েই তো কথা! যদি সে পছন্দ করে বসে হার্ট স্পেশালিস্টটাকে! তবে কি হবে?
-‘রজব!’
-‘বলো ভাই।’
-‘জৈষ্ঠ্য কাউকে পছন্দ করে? মানে আজকালকার মেয়েদের প্রেম থাকে সেটা না হলেও পছন্দ থাকেই। ওর যদি তেমন কিছু থাকে তবে তো মনে হয় না বিয়েটা হবে।’
-‘ওর পছন্দ নিয়ে বা প্রেম নিয়ে তো আমি জানিনা। তবে ও একটা হাবা। ওর সাথে কে প্রেম করবে?’
মৌসন্ধ্যাকে এভাবে বলাতে গ্রীষ্মের রা’গ হলো। বলল,
-‘এভাবে বলছিস কেন?’
-‘তো আর কীভাবে বলব! আষাঢ় ভাই যে ওরে পছন্দ করে ও সেটা এখনও বোঝেনাই। গ’র্দ’ভ না হলে?’

গ্রীষ্ম চমকে উঠল। আষাঢ়কে নিয়ে সে নিজেও ভেবেছে। আষাঢ়ের কাজ কর্ম চোখে লাগার মতো। তবে সেটা সত্যি তা মেনে নিতে গ্রীষ্মের ক’ষ্ট হলো। বলল,
-‘তাই নাকি! কবে থেকে?’
-‘মৌয়ের কলেজে ওঠার পর থেকেই মনে হয় ভাই ওরে পছন্দ করে। অবশ্য সেটা আমাদের মনে হয়।’
-‘আমাদের বলতে?’
-‘আমার আর মুকিত ভাইয়ের। শ্রাবণ ভাইয়া অবশ্য জানেনা। আর আষাঢ় ভাইয়ের মৌরে পছন্দ করার কথাটা আমরা যে জানি সেটাও আষাঢ় ভাই জানেনা। আমরা আন্দাজ করছি কেবল।’
-‘এতদূর আন্দাজ করে ফেললি কীভাবে!’
-‘আজব! একটা ছেলে হয়ে আরেকটা ছেলের দৃষ্টি আচার আচরণ বুঝব না? আমি কি এখনও ছোট নাকি? কি যে বলো!’
গ্রীষ্ম চোখ ছোট করে সাবাবের দিকে তাকালো। বেশ বড় হয়ে গেছে বোধ হয় ছেলেটা। যদি তার অনুভূতিও ধরে ফেলে? না না, বুঝতে দেওয়া চলবেনা।
-‘তুই শিউর আষাঢ় জৈষ্ঠ্যকে পছন্দ করে?’
সাবাব হাসল। সেই হাসিতে কিছু একটা ছিল। গ্রীষ্ম চিন্তায় পড়ল। সাবাব বলল,
-‘আমি শুধু আষাঢ় ভাই না তোমারটাও হান্ড্রেড পার্সেন্ট শিউর হয়ে বলতে পারি যে তুমি মৌকে পছন্দ করো।’

গ্রীষ্ম ভূত দেখার মতো চমকে উঠল। মেরুদন্ড বেয়ে এক শীতল স্রোত বয়ে গেল। এই গোপন কথাটা বোঝার কি খুব দরকার ছিল সাবাবের? সে এদিক ওদিক দৃষ্টি নড়চড় করল। সাবাবের ঠোঁটের কোণে তখন চো’র ধরার মতো বিজয়ের হাসি।
-‘বাজে কথা বলছিস কেন?’
-‘বাজে কথা? আচ্ছা ঠিক আছে। তুমি শিউরিটি চাইছিলে আষাঢ় ভাইয়েরটা নিয়ে। আমি তো বললাম রেফারেন্স সহ। এখন তুমিই ভালো জানো তোমারটা কতটা সত্যি। আমি যদি ভুল ধরে থাকি সেটাও তুমিই জানো যদি ঠিক ধরে থাকি সেটাও তুমিই জানো।’

গ্রীষ্ম পরাজয় মেনে নিল। সাবাবের দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে বলল,
-‘বেশি বড় হয়ে গিয়েছিস তাই না? বড় ভাইয়ের মন পড়ে ফেলছিস!’
সাবাব একটু বিজ্ঞের মতো ভান করে ঠোঁট দুটো চেপে বলল,
-‘উমম, হ্যাঁ!’

গ্রীষ্ম আলতো হাতে সাবাবের কপালে চাটি মারল। সাবাব বলল,
-‘তবে ভাই! মৌয়ের জন্য আষাঢ় ভাইকে আমার পছন্দ না। ভাইয়া ওকে খুব চাপ দেয়। যখন তখন কথা শোনায়। আমারই ভালো লাগেনা। ছোট দেখে কিছু বলতেও পারিনা। বড় ভাইয়া অবশ্য বলে। সে তো কারো ধার ধারেনা।’
-‘শরৎ? কি বলে!’
-‘এই যে আষাঢ় ভাই বাজে কিছু বললে বড় ভাইয়া বলে এমন করবেনা।’
-‘সেও কি মৌকে পছন্দ করে!’
-‘আরে না! সেইরকম না। বড় ভাইয়ার কাছে মৌ, বর্ষা, জুন আপু, চৈত্র, এপ্রিল সবগুলোই এক সমান।’
-‘ওহ!’

দুজনেই চুপ করে রইল আবার। সাবাবই নিরবতা ভাঙে।
-‘ভাই!’
-‘হু?’
-‘মৌকে তুমি যদি ভালোবেসে থাকো তবে আমি তোমার সাথে আছি। আমার তোমাকেই ওর জন্য বেস্ট মনে হচ্ছে।’
গ্রীষ্মের ঠোঁটে প্রচ্ছন্ন হাসি। বলল,
-‘তাই?’
-‘হুম। তবে ভালোবাসো যদি তবেই! পছন্দ টছন্দ এমন থাকেই অনেক। তোমার কি সেইরকম পছন্দ?’
-‘আমি নিজেও বুঝতে পারছিনা। তবে আমার মনে হয় আমারই ওকে বিয়ে করা উচিত। আমি যে ওর অনেক ব..’

কথাটা বলতে গিয়েও থেমে গেল গ্রীষ্ম। ছোট ভাইয়ের সামনে এই কথাটা বলা ঠিক হবেই না। সে চোখ বন্ধ করে ফেলল। সেই ছবিটা চোখে এখনও ভাসে। হাস্যজ্জ্বল মৌসন্ধ্যার আঁচল খসে পড়া উন্মুক্ত বক্ষের সেই ছবিটা তাকে এখনও তাড়া করে। সম্পূর্ণ অনিচ্ছাকৃত ভাবেই সে ওইরকম এক দৃশ্যের সাক্ষাৎ পেয়ে গিয়েছিল যা সে চায়নি কখনো। উহু! মৌসন্ধ্যার ভরা যৌবনের সেই আবেদনময়ী ছবিটা তাকে মৌসন্ধ্যাকে পছন্দ করার পথে টানেনি!
তার তো তখনিই মৌসন্ধ্যাকে পছন্দ হয়েছিল যখন সে সারাদিন কাজ শেষে ক্লান্ত হয়ে ফিরে শ্রাবণদের সাথে আড্ডায় মশগুল ছিল। সেই সময়েই তো শাড়ি পরিধানকৃত মিষ্টি মুখের সুন্দর মেয়েটি রুমে প্রবেশ করেছিল। মজার ব্যাপার সে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে মৌসন্ধ্যাকে দেখলেও মৌসন্ধ্যা তাকে খেয়ালই করেনি। সে একমনে বাকিদের সাথে কথা বলায় ব্যস্ত ছিল। যখন সে ঘাবড়ে গিয়ে গ্রীষ্মের দিকে তাকালো গ্রীষ্মের অবচেতন মনের কোথাও কেউ হেসে উঠছিল।
-‘ভাই? কি হলো ঘুমাও নাকি!’
-‘হুম ঘুমাবো। তুইও ঘুমা। আর শোন! এই কথাটা কেউ যেন না জানে?’
-‘আশ্চর্য! না জানলে বিয়ে করবে কীভাবে?’
-‘তুই যে বললি ভালোবাসতে হবে।’
-‘ভালোবাসা এমন জিনিস যা ভালোবাসার পরেও আমরা নিজেরাই বুঝিনা। টেরই পাই না। আমার মনে হয় তোমার ভালোবাসাটা হয়ে গেছে নয়তো হওয়ার পথে।’
-‘তুই লাভ গুরু নাকি?’
-‘বন্ধুরাও এই কথা বলে ভাই।’

তারপর দুই ভাই হেসে ফেলল। সাবাব ভাবল কথাটা শ্রাবণ আর মুকিতের কানে দিতেই হবে। পরে যদি আষাঢ় ওদের দলে টেনে নেয়? উহু! তা হতে দেওয়া যাবেনা। বড় ভাইয়ের উপর আর কেউ আছে নাকি?
এলাকার বড় ভাইয়ের পাওয়ার যেমন বেশি ঘরের বড় ভাইয়ের পাওয়ারও তেমন বেশি। বড় ব্যাপারটাতেই আলাদা ভাব আছে। হাহ!

২০.
মৌসন্ধ্যার মা মেয়ের মত নিতে গেলে স্পষ্ট তাকে জানানো হলো এই বিয়েতে তার মত নেই। অগত্যা এই নিয়ে আর কেউ কোনো কথা বলল না। তবে গ্রীষ্মের মা আর খালা একটু গো ধরলেন। তাদের ধারণা এতে জুনের সংসারে ঝামেলা হতে পারে। গ্রীষ্মের খালা বললেন,
-‘রাজি হয়ে গেলেই তো পারে। এত ভালো প্রস্তাব আর আসবে?’

খাবার টেবিলে বসা প্রতিটা মানুষ কথাটা শুনল। তবে কিছু বলল না। তবে তিনজোড়া চোখ বেশ বি’র’ক্তি নিয়ে তার দিকে তাকালো। শরৎ, আষাঢ়, গ্রীষ্ম তিনজনই কথাটা শুনে রে’গে গেল! মৌসন্ধ্যা কি ফেলনা? তার জন্য আরো ভালো প্রস্তাব আসবেনা সেটা কে বলল?

আষাঢ় গ্রীষ্মের খালাকে বলল,
-‘আর ভালো প্রস্তাব আসবেনা মানে কি! ডাক্তার আর আহামরি কী? ব্যবসায়ীর কাছে এসব কিছুর কোনো পাত্তা আছে নাকি! হুহ!’

সবাই আষাঢ়ের দিকে তাকালো এবার। শরৎ ভ্রু কুঁচকে ফেলল। সে ভবিষ্যৎ ডাক্তার! ভবিষ্যৎ কী! এই তো আর দুই মাসের মধ্যে পুরোপুরি ডাক্তার হয়েই যাবে। এখনও তো তাকে ডাক্তারই বলা হয়। সে বলল-
-‘ডাক্তার আহামরি কি মানে? ভুলে যেও না অসুখ হলে ডাক্তারের কাছেই যাও।’
মুকিত হেসে বলল,
-‘এইতো! ডাক্তার বাবুর গায়ে লেগে গেল কথাটা।’

কথা অন্যদিকে ঘুরে গেল মুহূর্তেই। সবাই হাসাহাসি শুরু করল। গ্রীষ্ম আড়চোখে দূরে বসা মৌসন্ধ্যার দিকে তাকালো। মেয়েটা চুপচাপ খাচ্ছে। গ্রীষ্মের মনে মনে কু ডাকছে। আষাঢ় আর শরৎ কী তার ভাই থেকে প্রতিদ্বন্দী হতে যাচ্ছে নাকি? উফ! আর ভাবা যাচ্ছেনা।

——————–
মেয়েরা সবাই জুনের রুমে। আবির ছেলেদের সাথে বাহিরে গেছে। কথার মাঝেই ছেলেদের কথা উঠল। বর্ষা একবার এর তো আরেকবার ওর কথা বলছে। কেমন ছেলে পছন্দ সেটাও বলছে। এভাবে সবাই আলোচনা করছে নিজেদের পছন্দ নিয়ে। জুনের দুইটা খালাতো বোনও আছে এর মধ্যে। তাদের একজনের কথা শুনে বর্ষা আর মৌসন্ধ্যা হা হয়ে গেল। মেয়েটা বলছে তার নাকি শরৎকে পছন্দ। ক্ষ্যা’পাকে কি করে পছন্দ হলো সেটা মৌসন্ধ্যারা ভেবেই পেল না। তবুও চুপ করে রইল। কিছুই বলল না। জুন বলল,
-‘আশ্বিনটা সবচেয়ে সুন্দর। আসলে হয়তো দেখতে পারতি। বেচারার পরীক্ষা চলছে। নইলে আসতে পারত। কল করে বারবার বলছিল আপা রা’গ করো না। আমার খুব খা’রা’প লাগছে। কিন্তু কি করব? ইয়ার ফাইনাল!’
তৃণা চট করে বলল,
-‘আশ্বিনের চুল গুলো মৌসন্ধ্যার খুব পছন্দের।’
-‘আশ্বিনের চুল পছন্দ হয়? আশ্বিনকে না?’

সবাই হেসে উঠল এই কথা শুনে। মৌসন্ধ্যা তৃণার দিকে অ’গ্নিদৃষ্টিতে তাকালো। একদিন কথার ছলে বলেছিল যে আশ্বিনের চুলগুলো সুন্দর। এখন সেটা এভাবে প্রদর্শন করা হবে সে কি জানত সে? এদিকে রুমে ঢুকতে গিয়ে সাবাব কথাটা শুনে ফেলল। শুনেই তো তব্দা খেয়ে গেল। এদিকে সে আছে গ্রীষ্ম ভাইয়ের সাথে কীভাবে মৌসন্ধ্যার সেটিংস করানো যায় সেই ধান্দাতে কিন্তু মৌসন্ধ্যা পছন্দ করে বসে আছে তার আপন ভাই আশ্বিনকে। এখন সে কি করবে? একই মায়ের পেটের ভাইয়ের সাথে বিশ্বাসঘা’ত’ক’তা করবে? নাকি বড় ভাইয়ের সাথে। কি যে মুসিবত!

#চলবে।
(আপনারা এত কৃপণ কেন? একটা গঠনমূলক মন্তব্য করলে কি হয়? আজকের এই বড় পর্বটা লিখতে গিয়ে হাতটা ব্যথা হয়ে গেছে। এখনও টনটন করছে। আর সেখানে আপনারা ছোট একটা মন্তব্য করতে চান না।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here