#কখনো_মেঘ_কখনো_বৃষ্টি #সমাপ্তি_পর্ব

0
337

#কখনো_মেঘ_কখনো_বৃষ্টি
#সমাপ্তি_পর্ব

গত কয়েকদিনে অসংখ্য ফোন আর ম্যাসেজ করেছে পূর্ণা, কিন্তু আশিকের মনটা বিতৃষ্ণায় ভরে ছিল। তাই ফোন রিসিভ করেনি। ম্যাসেজগুলোর শুরুতে ছিল ক্ষমা চাওয়া, তারপর ফিরে আসার অনুরোধ, আর শেষদিকে অভিযোগ।

আশিক কিছুদিন হোটেলে ছিল। চাচা চাচী ফোন করেছিলেন তাদের বাসায় যাওয়ার জন্য। কিন্তু আশিক যায়নি। কয়েকদিন পর একটা মেসে উঠেছে। সেখানেই চাচা চাচী আসেন দেখা করতে। আশিকের শাশুড়ি ওনাদের জানিয়েছেন আশিকের বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার ঘটনা। তবে তিনি এর জন্য অনেকাংশে আশিককেই দায়ী করেছেন। তার মতে আশিক বিয়ের পর বন্ধু বান্ধবের সাথে এত যোগাযোগ রাখা, পূর্ণার অপছন্দের পরও লারার সাথে কথা বলা এসবের কী দরকার ছিল! সেইজন্যই তো পূর্ণা নিজেকে সামলাতে পারেনি। আর তাই সেদিন অফিসে এমন সিনক্রিয়েট করে ফেলেছে। আশিকের চাচা বলেন,

“আশিক, এটা কী সমাধান হলো? তুমি মেসেই থাকবা? বৌ মাফ চাইতেছে, মাফ করে সব ঠিক করে নাও বাবা।”

“চাচা, ও মাফ চাইছে অফিসে সিনক্রিয়েট করার জন্য। কিন্তু এখনো ও এটাই ভাবছে লারার সাথে আমার অনৈতিক সম্পর্ক আছে। আমি অন্য মেয়েদের দিকে খারাপ নজর দেই। আপনাকে বোঝাতে পারবো না চাচা, আমার মানসম্মান কিছু বাকি রইলো না। যখন নিজের স্ত্রী এমন অভিযোগ করে, তখন মানুষ এটাই সত্য বলে ভাবে। আমি কাওকো বোঝাতে পারবো না যে আমার চরিত্রের এমন কোন ত্রুটি নেই। ও আমাকে চরমভাবে অসম্মানিত করেছে। এবং ভবিষ্যতেও করবে। কারণ এখনো ও ভাবে ও যা ভাবছে তাই ঠিক।”

“আমি বেয়াইনকেও এটাই বলেছি। তিনি বুঝতে পারছেন যে তার মেয়েটা অতিরিক্ত সন্দেহ করে। কিন্তু ওনার মতে তুমি চাইলে এটা মানিয়ে নিতে পারবে। তোমাকে তাই অনুরোধ করেছেন।”

“আমাকে ফোন দিয়েছিলেন চাচা। আমাকে তিনি বাড়ি ভাড়ার একটা অংশ দিবেন। সম্পদের কিছু অংশ দিয়ে দিবেন। এসব বলেছেন। চাচা আমি সম্পদ পাব, টাকা পাব এই লোভে কি বিয়ে করেছি বলেন তো? আমি জীবনে শান্তি চেয়েছি। কিন্তু ওনারা মা মেয়ে আমাকে এইসব প্রস্তাব দিয়ে বরং ছোটো করছেন। আমাকে বলছেন চাকরি ছেড়ে দিতে। আমাকো বলেন এইসব কোন সুস্থ আব্দার? আমি একটা শিক্ষিত ছেলে, সক্ষম ছেলে। আমি কেন সব ছেড়ে শাশুড়ি আর স্ত্রীর হাতের পুতুল হবো? কেন ওদের ইশারায় আর টাকায় আমায় জীবন কাটাতে হবে?”

“তোমার কথা যুক্তিযুক্ত। আমি পূর্ণার মায়ের সাথে কথা বলবো। ওনাকে বলবো যে সংসার করতে হলে পূর্ণা নিজের পাগলামি পেছনে ফেলে সংসার করবে আর দশটা মেয়ের মতো। না হলে তুমি বিকল্প ব্যবস্থা নিবে। আর ওনারও মেয়ের সংসারে অতিরিক্ত দখল দেওয়ার মানসিকতা বদলাতে হবে। আশিক আমি দুঃখিত বাবা। তোমাকে এমন একটা সম্পর্কে আমিই এনে ফেললাম। আসলে আমি কখনোই বুঝিনি এই শান্তশিষ্ট মেয়েটার এমন কেন সমস্যা আছে। তবে তুমি ওর ফেন ধরে কথা বলে নিও। শুনলাম অসুস্থ হয়ে গিয়েছে। খাওয়া দাওয়া করে না।”

আশিক মাথা নেড়ে সায় দেয়। চাচাকে আর বলে না যে পূর্ণার নাম্বারও ব্লক লিস্টে দিয়ে রেখেছে। শাশুড়ির নাম্বারও। কারণ পূর্ণা ঐ ফোন থেকেও ফোন করে। পল্লবীর নাম্বার ব্লক করেনি। কারণ পল্লবী ফোন দেয় না। ওর ফোন পূর্ণাও হাতে নেয় না। এছাড়া আননোন সকল নাম্বারও ব্লক অপশন দেওয়া। যেন পূর্ণা কোন নাম্বার থেকে কল করতে না পারে। আশিক চাকরিও ছেড়ে দিবে। অফিসে ওকে নিয়ে ফিসফাস হয়। ওর অস্বস্তি লাগে। দোষী নয়, এমন মানুষই বুঝবে নির্দোষ কাউকে দোষী করা হলে কেমন লাগে। পূর্ণার জন্য তাই কোন মায়া অনুভব করতে গিয়েও করে না আশিক।

***
মধ্যরাতে হঠাৎ ফোন বেজে ওঠে।
আশিক ফোন হাতে নিয়ে দেখে স্ক্রিনে ভেসে আছে শ্যালিকা পল্লবীর নাম। পল্লবীর ফোন দেখে একটু চিন্তায় পরে যায় আশিক। এই কয়দিনে আর সবাই কল দিলেও পল্লবী দেয়নি। দুলাভাই থেকে একটু দূরত্বই বজায় রাখে পল্লবী।

“হ্যালো। কে পল্লবী, না পূর্ণা?”

“আমি ভাইয়া।”

“কী ব্যাপার পল্লবী? এত রাতে?

” স্যরি ভাইয়া। কল দেব দেব করেও সাহস করতে পারছিলাম না। তাছাড়া জানি আপনি আমাদের উপর বিরক্ত। তাই আপনাকে ঠান্ডা হওয়ার সময়ও দিতে চাইছিলাম। কিন্তু এখন মনে হয় কথা বলার সময় হয়েছে।”

“কী ব্যাপার বলো তো?”

“ভাইয়া, কোথাও একটু দেখা করতে পারবেন প্লিজ, শুধু দশ মিনিট সময় নেব।”

“তোমার বোন জানলে তোমার চুল ছিঁড়বে। আর আমাকে আরেক দফা বেইজ্জত করবে। একা কোথাও দেখা করতে পারবো না। কথা যা বলার সবার সামনে বলবে।”

“সবার সামনে বলা সম্ভব না ভাইয়া। প্লিজ। আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন। আপনাকে কারও কাছে আর ছোটো করবো না।”

“আচ্ছা আমি জানাবো। পূ্র্ণা আসবে তোমার সাথে? বা মা?”

“না, কেউ না। আমি একাই আসবো।”

“ওকে।”

****
নর্থ এন্ড ক্যাফে রোস্টার, খুব প্রিয় কফিশপ পূর্ণার। ছুটিরদিনগুলোর বিকেলটা আগে এখানেই কাটাতো আশিক আর পূর্ণা। আজ সেখানেই পল্লবীকে আসতে বলেছে আশিক। নিরিবিলি ছিমছাম পরিবেশে কথা বলাটা সহজ হবে।

“দেখা করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।”

“পল্লবী, আমি এখন তোমাদের বাড়িতে ফিরতে চাই না। আমার আসলে ঘরজামাই হওয়াটাই ভুল হয়েছে। ”

পল্লবী কফিতে আলতো চুমুক দেয়। গলাটা হালকা কেশে পরিষ্কার করে নেয়।

“সমস্যাটা ঘরজামাই হওয়াতে না ভাইয়া। আপনি ভাবছেন আপু আপনাকে নিয়ন্ত্রণ করতে চায়,
ব্যাপারটা আসলে তা নয়। আমাদের পরিবারের কিছু নোংরা অতীত আপনাকে জানানো দরকার, তাহলে হয়তো আপনি আপুর মানসিক অবস্থাটা বুঝতে পারবেন। আর সেই জন্য আজ আমার এখানে আসা।”

একটানা কথা গুলো বলে চুপ করে পল্লবী। আশিক অবাক হলেও ওকে কথা গুলো শেষ করার সময় দেয়।

“ভাইয়া আপনি জানেন না, আমার আব্বুর একটা দ্বৈত জীবন ছিল। সমাজের সবার থেকে আব্বু এই দ্বৈত সত্ত্বা আড়ালে রাখতেন। বহুগামী পুরুষ ছিলেন তিনি। তার নানা অবৈধ সম্পর্ক আমাদের সংসারে সবসময় টানাপোড়েন নিয়ে হাজির হতো। সমস্যাটা প্রথম আম্মুর নজরে আসে যখন আম্মু দ্বিতীয়বার প্রেগন্যান্ট হয়। অর্থাৎ আমি গর্ভে থাকাকালীন সময়ে। ছোটো একটা বাচ্চা মেয়ে আর দ্বিতীয় প্রেগন্যান্সির চাপে আম্মু অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তখন আমাদের গ্রাম সম্পর্কের এক ফুপুকে নিয়ে আসেন দাদী। একসময় আম্মু আবিষ্কার করেন আব্বুর সাথে ঐ মহিলার একটা অবৈধ সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। সেসময় দাদী আম্মুকে বলেন যে আম্মু আব্বুর দেখাশোনা করতে পারছে না বলেই আব্বু এমন করেছেন। অর্থাৎ আব্বুর অপরাধেও আম্মুই দায়ী হোন। যাই হোক সেই মহিলাকে বাড়ি পাঠিয়ে সে যাত্রায় সংসার রক্ষা হয়।”

আশিক হাঁ করে পল্লবীর গল্প শুনছে। কফিতে চুমুক দিয়ে আবার কথা শুরু করে পল্লবী।

“দ্বিতীয়বার আব্বুর সম্পর্ক ধরা পড়ে অফিসের কলিগের সাথে। এবং সেসময় আপু অনেকটাই বিষয়গুলো বুঝতে শুরু করেছিল। সেই মহিলাকে বিয়ে করতে মরিয়া হয়েছিল আব্বু। নানা বাড়ির হস্তক্ষেপে তা হয় না। নানা আব্বুকে অনেক টাকাপয়সাও দিয়েছিলেন যেন সংসারে সতীন না আনেন। আব্বু বিয়ে করেননি ঠিকই। তবে সেই টাকার অনেকাংশ নাকি ঐ মহিলাকে পেছু ছাড়াতেই গিয়েছে। ”

“তারপর।”

“তারপর আর কী। আসলে আম্মুকে কখনো শান্তিতে ঘর সংসার করতে দেখিনি আমরা। আড়ালে আবডালে এসব চলছিলই আব্বুর। বিয়ে করেননি ঠিক। তবে নিজেকে শোধরানোর চেষ্টাও করেননি। আম্মুর জীবনটা ভীষণ মানসিক কষ্টে কেটেছে। কিন্তু সবাই আম্মুকেই ধৈর্য ধরতে বলতো। স্বামীকে আঁচলে বাঁধার পরামর্শ দিতো। বলতো আম্মুরই ভুল। আম্মু শুরু থেকেই চোখে চোখে রাখলে আব্বু অন্য মহিলাতে আসক্ত হতেন না। আম্মু আব্বুর চাহিদা পূরণে ব্যর্থ ছিল এমনটাও শুনতে হতো।”

পল্লবীর গল্পের সাথে সাথে যেন পূর্ণার মনোজগৎটা একটু একটু করে পরিষ্কার হতে থাকে আশিকের কাছে। পূর্ণা সেই আচরণগুলোই করেছে, যা ও ছোটোবেলা থেকে শুনে এসেছে। স্বামীকে আঁচলে বাঁধা, নজরে রাখা। এসবকিছুর ভিত তৈরি হয়েছে সেই ছোটোবেলায়

“ভাইয়া, কিছু ভাবছেন?”

“নাহ। তুমি বলো।”

“তারপর যখন সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়ে আম্মু প্যারালাইজড হলেন, আব্বুর এই স্বেচ্ছাচারিতা বেড়ে গেল বহুগুণ। কমবয়সী এক মেয়েকে বাড়ির কাজ দেখাশোনার কথা বলে বাড়িতে নিয়ে আসেন। আমরা সব বুঝতাম কী হচ্ছে, কিন্তু আব্বুকে আটকাতে পারতাম না, ভীষণ বদরাগী ছিলেন। আম্মু রাত দিন শুধু নিজের মৃত্যু কামনা করতো সেইসময়। এই অসুস্থ পরিবেশ থেকে বের হওয়ার জন্য আমি নিজেকে পড়ালেখার জগতে আবদ্ধ করে ফেলি। সরকারি মেডিকেলে সুযোগ পাই, ঢাকায় বাসা হওয়ার পরও হলে উঠি আমি। কিন্তু আপুতো বের হতে পারেনি। পিঠাপিঠি বোন আমরা, আমার উচিত ছিল আপুর কথা ভাবা, তা না করে নিজে পালিয়ে বেঁচেছি। দিনের পর দিন অসুস্থ পরিবেশ, মায়ের কান্না এগুলো আপুর মানসিক অবস্থা একদম ভঙ্গুর করে দিয়েছে। তারপর একদিন হঠাৎ আব্বু স্ট্রোক করেন। ম্যাসিভ এট্যাক ছিল, আব্বু বাঁচেনি। আব্বুর মৃত্যুর পর ঐ মেয়েকে টাকা পয়সা দিয়ে বিদায় করা হয়।”

অকপটে স্বীকার করে যাওয়া পারিবারিক গোপন ইতিহাস অবাক করে আশিককে। এই সাত মাসে কখনো পূর্ণা এসব নিয়ে কিছু বলেনি। আশিককে চুপচাপ দেখে আবার কথা শুরু করে পল্লবী। জানে না ভাইয়া তার বোনের কষ্টটা বুঝতে পারবে কি না, তবে আজ এসব বলা ভীষণ দরকার।

“আমার বোনটা আপনাকে সত্যি খুব ভালোবাসে ভাইয়া। আমি বোন হয়ে বোনের পাশে দাঁড়াইনি, ফলাফল আজ ও এমন হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এখন ওর জগত ও আপনার মধ্যে খুঁজে নিয়েছে। আপনি ওর হাত ছাড়বেন না প্লিজ। ওকে সুস্থ করে তুলুন ভাইয়া। ছোটবোন হিসেবে আমার অনুরোধ। প্লিজ ভাইয়া।”

****
প্রচন্ড জ্বর পূর্ণার। গতকাল থেকে বলতে গেলে প্রায় অচেতন। হাসনা হেনা বেগমের অসহায় লাগে। নিজে জীবনে কোনদিন সংসারে সুখ শান্তি পাননি। মেয়েকে সবসময় তাই স্বামীকে চোখেচোখে রাখতে বলতেন, তিনি কি ভুল করেছিলেন!
আসলেই তো যে খারাপ হবে, তাকে কি চোখে চোখে রাখা যায়?

সারাজীবন তো তিনি স্বামীকে চোখ হারিয়েছেন,
কী লাভ হয়েছে তাতে? স্বামী স্বাভাবিক ভাবে দ্বিতীয় বিয়ে করলেও হয়তো তিনি এত কষ্ট পেতেন না। কিন্তু সমাজে ভালো স্বামীর তকমা ঝুলিয়ে সারাজীবন লোকটা শুধু ওনাকে মানসিক অশান্তি দিয়ে গিয়েছেন। এখন মেয়েটার ভাগ্যও কি এমনই হবে?

এমনই এলোমেলো ভাবনায় মশগুল ছিলেন হাসনাহেনা বেগম। হঠাৎ আশিককে রুমে ঢুকতে দেখে অবাক হয়ে যান। পেছন পেছন পল্লবীও আসে।

“আম্মু ভাইয়া আর আপুকে একটু একা ছেড়ে দাও। চলো আমরা অন্য রুমে যাই।”

কথা না বাড়িয়ে মেয়ের সাথে হুইলচেয়ার ঠেলে বের হয়ে যান হাসনাহেনা বেগম। জলপট্টি দেওয়ার রুমালটা হাতে তুলে নেয় আশিক, চোখ মেলে আশিককে দেখে স্বর্গীয় হাসি ফুটে ওঠে পূর্ণার মুখে।

***
পূর্ণা আর আশিক বসে আছে মনোরোগ বিশেষজ্ঞে দিলারা জামানের চেম্বারে। নিয়মিত কাউন্সিলিং এ আসছে পূর্ণা আর আশিক। নিজেদের মরিচা ধরা দাম্পত্য জীবন এখন অনেকটা সুস্থির। ভালোবাসা তাদের আগেও ছিল, এখনো আছে। তবে এখন সেই গলায় চেপে রাখা ফাঁসটা আর নেই। আশিক আর নিজের সুস্থ সুন্দর দাম্পত্য জীবনের জন্য মনোরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হতে রাজি হয়েছিল পূর্ণা।

কাউন্সিলিং শেষে আশিকের কাঁধে মাথা রেখে বাড়ি ফিরছে পূর্ণা। ইতোমধ্যে লারার সাথে কথা বলে ক্ষমা চেয়েছে। লারাও বলেছে ও সব কিছু ভুলে গিয়েছে। পূর্ণার মানসিক অবস্থাটা খুলে বলেছিল আশিক। অফিস ছাড়েনি আশিক। ছাড়লে ফিসফাসগুলোই সত্য হয়ে থাকতো। স্বাভাবিক ভাবেই সবার মুখোমুখি হয়েছে মনে সাহস রেখে। এখন আর পুরানো কথা তোলে না কেউ।

সিগন্যাল পড়লে আশিক আর পূর্ণা যে রিকশায় বসে আছে তা থামে। এক পথশিশু এগিয়ে আসে বেলীফুলের মালা নিয়ে। দশটি মালাই কিনে নেয় আশিক।

“এত মালা দিয়ে কী হবে আশিক?”

দুষ্টু হাসি খেলে যায় আশিকের মুখে,

“আমার জন্য কাঁচা ফুলের মালা দিয়ে সাজবে তুমি।ফুলকুমারি শরীর থেকে বেলীফুলের সুবাস নেব।”

একটা আলতো ঘুষি মারে পূর্ণা, তবে চোখেমুখে উপচে পড়ছে হাসি, স্রষ্টার কাছে আর চাওয়ার কিছু নেই ওর।ফিসফিস করে আশিককে বলে “ভালোবাসি তোমায়, খুব খুব ভালোবাসি।”

(সমাপ্তি)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here