যে_বর্ষণে_প্রেমের_ছোঁয়া #আনিশা_সাবিহা পর্ব ২৬

0
679

#যে_বর্ষণে_প্রেমের_ছোঁয়া
#আনিশা_সাবিহা
পর্ব ২৬

খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হেঁটে ড্রয়িংরুমে এসে দাঁড়াল স্বচ্ছ। আধভেজা তার শরীর। ভেজা শার্ট শুঁকিয়ে যেতে চলল। সারারাত কেটেছে গাড়িতেই৷ খোলা গ্লাস দিয়ে আসা বৃষ্টির বিন্দুগুলোকে বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করেনি মোটেও। নিজের ঘরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে সিঁড়িতে উঠতে যাবে তখনি নিজের মাকে হন্তদন্ত হয়ে আসতে দেখল। হাতে তার ফোন। কাকে যেন কল করলেন মিসেস জেবা। তৎক্ষনাৎ বেজে উঠল স্বচ্ছের ফোনটা। স্বচ্ছের ফোনের রিংটোন বাড়িতেই পেয়ে চকিতে সিঁড়ির কাছে তাকালেন মিসেস জেবা। অতঃপর তড়িঘড়ি করে ছেলের নিকটে এলেন৷ অতি চিন্তা নিয়ে বললেন,
“কোথায় ছিলে এতক্ষণ? এই অবস্থায় বাড়ির বাইরে পা রাখো কীভাবে? এখনো তো ঠিক করে হাঁটতেও পারো না। কোথায় যাওয়া হয়েছিল?”

স্বচ্ছ সময় নিয়ে বাহানা দিয়ে বলল,
“বাড়িতে বসে কতদিন থাকা যায় মা? বাহিরে একটু আশপাশ ঘুরতে বেরিয়েছিলাম। আর কিছু না।”

“সারারাত ঘুরতে হয় তোমার? বাড়ির ছেলে কেন সারারাত বাইরে থাকবে?”

স্বচ্ছ অবাক হলো মায়ের কথায়৷ তার মা কী করে জানল? গলা খাঁকারি দিয়ে শুধাল,
“মা, তোমায় কে বলল আমি সারারাত বাহিরে ছিলাম?”

“তোমার ভাই সৌমিত্র।”

তখনি হয় সৌমিত্রের আগমন। নিজের ফোন হাতে নিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে গেম খেলতে খেলতে নিচে নামছে সে। স্বচ্ছের দৃঢ় ইচ্ছে করল সৌমিত্রের হেস্তনেস্ত করতে। তবে শান্ত থাকল সে। সৌমিত্র তার ভাইকে দেখামাত্র ঘাড় চাপড়িয়ে বলল,
“আরে ভাই! নট ইন্টারেস্টেড থেকে সারারাত মেয়ের বাড়ির সামনে? নট ব্যাড!”

মিসেস জেবা ভ্রু কুঁচকে সূক্ষ্ণ নজরে দেখলেন এবার নিজের দুই ছেলেকে। বুঝলেন না তাদের কথোপকথন।
“কোন মেয়ে? কার বাড়ির সামনে কথা বলা হচ্ছে?”

স্বচ্ছ তড়িঘড়ি করে সৌমিত্রের মুখে এক থাবা দিয়ে সরিয়ে দিলো। স্বাভাবিক কণ্ঠে বলার চেষ্টা করল,
‘আরে মা! ওর কথা তোমরা কেন সবসময় সিরিয়াসলি নাও সেটাই তো বুঝিনা। ও তো নেশা না করেও নেশাখোরের মতো যাচ্ছেতাই বকে। স্টুপিড কোথাকার!”

সৌমিত্র দাঁত বের করে হাসল। ভাই এবং মায়ের পাশ কাটিয়ে যেতে যেতে গানের সুরের ন্যায় বলে উঠল,
“সব দোষ এখন সৌমিত্র ঘোষ হবে! সত্যি কথার ভাত নেই বলে।”

মিসেস জেবা দুই ছেলের কর্মকাণ্ডের কিছুই বুঝলেন না। তবে স্বচ্ছের ঠিকই বোধগম্য হয়েছে সৌমিত্রের প্রতিটা কথা।

মুখ হা করে বেঘোরে ঘুমিয়ে যাচ্ছে ফারাহ। টেবিলে মাথা লাগিয়ে গভীর ঘুমের মৃদু শব্দ তুলছে নাক দিয়ে। টেবিলের আশেপাশে, নিচে, উপরে পড়ে আছে যাবতীয় কাগজ, পেন্সিল, বিভিন্ন ডিজাইনের কাপড়৷ মাথার উপরে স্লিপ মাস্ক কপালে নেমে এসেছে। চোখমুখ ফুলে উঠেছে নিদ্রার অভাবে। ফোনের রিংটোন বিকট হয়ে এসে ঠেকল ফারাহর কানে। হকচকিয়ে উঠে উদ্ভ্রান্তের ন্যায় হাতাতে থাকল টেবিল। ফোন হাতে পেয়েই রিসিভ করে ক্রুদ্ধ হয়ে কর্কশ গলায় বলে উঠল,
“তোমাদের সমস্যা কী হ্যাঁ? কালকে পইপই করে বারণ করে এসেছি না? যে ঘূর্ণিঝড়, সিডর, আইলা যা ইচ্ছে হয়ে যাক আমায় কল করবে না। কানে কালা তোমরা?”

ফোনের ওপাশ থেকে এলো কাঁপা বিনয়ী কণ্ঠ। অফিসের ম্যানেজার বলল,
“ম্যাম, আমরা তো আপনাকে বিরক্ত করতে চাইনি। আসলে একটা ক্লায়েন্ট এসেছিল। বিয়ের শাড়ির জন্য।”

“তো ওখানে কি বিয়ের শাড়ি কমতি পড়েছিল?”

“না, ম্যাম। আসলে উনি দাবী করছেন উনাকে অন্য শাড়ি দেওয়া হয়েছে। মানে ভুল করে অন্য ডিজাইনের শাড়ি চলে যায়। আমরা চেক করে দেখলাম আসলেই ঠিক বলছেন উনি। আমাদের মার্কেটে সবচেয়ে এক্সক্লুসিভ শাড়িটা অর্ডার করেছিলেন যেটা আপনি কয়েক পিসই স্টোক করে রাখতে বলেছিলেন সেটাই অর্ডার করেছেন। আমাদের এখানে তো একটাও ওই শাড়ি নেই। দুই পিস আপনি নিয়ে গিয়েছিলেন৷ ক্লায়েন্ট নানান কথা শোনাচ্ছেন ম্যাম।”

ফারাহ দপ করে জ্বলে উঠল যেন। চোখেমুখে রাগ নিয়ে বলল,
“কথা শোনাচ্ছে মানে কী? আমাদের সম্পর্কে তার জ্ঞান আছে কি নেই? আমরা সহজে এসব ভুল করি না। কথা শোনালেই শুনবে তোমরা। মানুষ মাত্র তো ভুল। মুখে তালা মে/রে দাও উনার। আমি আসছি এখনি।”

হাতে ব্যাগ নিয়ে চটপট করে ওয়েটিং রুমে প্রবেশ করল ফারাহ। একহাতে চোখ ঘষছে। কোনোরকমে উপরে একটা গাউন পরিধান করে ফ্রেশ হয়ে ছুট লাগিয়েছে অফিসের দিকে। ওয়েটিং রুমে পা রাখতেই সোফায় বসারত মানুষটিকে দেখে থমকে গেল তার দুটো পা। চলা বন্ধ হলো। লোচন দুটি স্থির হলো। চোখে চিকন ফ্রেমের হালকা পাওয়ারের চশমা এবং হলুদ পাঞ্জাবি পরিহিত মানুষটিকে চিনতে মুহূর্ত সময়টাও নিলো না। এই লোকটার কথা সে প্রায় প্রতিদিন ভেবেছে। লোকটাই এমন যে ভাবতে হয়ত বাধ্য করেছে। তার শেষ কথাটির অর্থ খুঁজেছে শুধু।

মেজাজ গরম করে অস্থির মনে বসে ছিল শৌভিক। এখানে আসার পরই তাকে প্রায় পঁয়তাল্লিশ মিনিট ধরে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। অন্যদিকে তার কিছু বন্ধু কল দিয়ে যাচ্ছে কিছু কাজের জন্য। সব মিলিয়ে মাথাটা বেশ গরম। পায়ের ধুপধাপ শব্দে মাথা তুলে তাকালে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকা এক চেনা নারীর দিকে নজর আটকালো তার। অভিভূত হয়ে উঠে দাঁড়াল সে। হালকা হাসি এলো মনে মনে। তবে হাসল না। মনে প্রশ্ন জাগল এই মানবীর কী কাজ এখানে?

ম্যানেজার এলো। ভবঘুরে ফারাহর ধ্যান ভাঙাল। শান্ত গলায় বলল,
“ম্যাম, ইনিই তিনি। যার শাড়ি নিয়ে সমস্যা হয়েছিল।”

শৌভিক বুঝতে পারল। এই উদ্ভট মেয়েটিই কোম্পানির কোনো দায়িত্বে আছে। ফারাহ নিজেকে ধাতস্থ করে হালকা কেশে বলল,
“আপনি? শাড়ি নিয়ে ঝামেলা করছিলেন?”

শৌভিকও নিজেকে সামলে জবাবে বলল,
“তা একটু করছিলাম। বাট গোলমাল আপনার জানলে হয়ত ঝামেলাটা করতাম না।”

ফারাহ গোলগোল চোখে তাকাল। উৎসুক হয়ে জানতে চাইল,
“কেন?”

“নারী জাতির সাথে গোলমাল জিনিসটা আমার একেবারেই অপছন্দ। কারণ তাদের সাথে কথা বাড়ানো মানে নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মা/রা। এমনটাই আমি মনে করি।”

ফারাহ কিছু বলতে চাইল। শৌভিক তার আগেই আরো বলে ফেলল,
“তার উপর আপনার মতো ঝালযুক্ত মানুষের সাথে গোলমাল করা আমার মতো মিষ্টি মানুষের শোভা পায় না। এখন দয়া করে শাড়িটা যদি পাল্টে দিতেন। ধন্য হতাম।”

“আপনি কি আমাকে ইনসাল্ট করছেন?”

কিছুটা রাগ নিয়ে জানতে চাইল ফারাহ। শৌভিক হেঁসে উঠল। তার মনখোলা হাসিটা বেশ সুন্দর। ফারাহ এক পলক না চেয়ে পারল না। শৌভিক বলল,
“আজকাল মানুষ প্রশংসা আর অপমানের পার্থক্য বোঝে না। এটা কোনো কথা হলো? আমি স্বয়ং সরোয়ার সাহেরের একমাত্র কন্যাকে ইনসাল্ট করব! সেই যোগ্যতা কি আমার তৈরি হয়েছে?”

ফারাহ সরু চোখে তাকাল। শুধাল,
“আপনি আমায় চেনেন?”

“কিছু কিছু ক্ষেত্রে চিনে নিতে হয়।”

ফারাহ মুখ বাঁকাল। শৌভিকের হাতে শাড়ি ধরিয়ে দিয়ে বলল,
“আপনি আমায় সেদিন সাহায্য করেছিলেন বলে আপনার সঙ্গে আজ কথা বাড়ালাম না। শোধবোধ!”

শৌভিক ধন্য হওয়ার মতো মুখভঙ্গি করে বলল,
“থ্যাংক ইউ মিস। অনেক বড়ো উপকার করলেন। আজকে আসি। আর হ্যাঁ শাড়ির কোনো সমস্যা দেখা দিলে নিশ্চয় আবার বিরক্ত করতে চলে আসব।”

ফারাহ অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসের সহিত বলল,
“ফারাহ সাহেরের ডিজাইন করা শাড়িতে সমস্যা দেখা দেবে? কোনোমতেই না।”

শৌভিক উত্তর দিলো না। ফারাহর পাশ কাটিয়ে চলে আসতে নিলো। কাঁচের দরজা ঠেলে বের হওয়ার আগে পিছু ফিরে বলল,
“আপনার আরেকটা উপকার করতে খুব ইচ্ছে করছে।”

ফারাহ পিছু ফিরে কৌতূহলী দৃষ্টিতে চায়। শৌভিক দরজা ঠেলে বের হতে হতে বলল,
“পরবর্তীতে অন্তত মাথায় উপর স্লিপ মাস্ক না লাগিয়ে চুল ঠিকমতো আঁচড়ে আসবেন। নয়ত এক সেকেন্ডের জন্য আমার মতো আমজনতা ভাববে, সরোয়ার সাহেবের কন্যার মাথার তার ছিঁড়ে এভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এটা আবার কিছু জ্ঞানী সাংবাদিক প্রচারও করে দিতে পারে। বি কেয়ারফুল!”

তব্দা খেয়ে ঠাঁই দাঁড়িয়ে রইল ফারাহ। মাথার উপর থেকে আই মাস্ক সরিয়ে নিচে ফেলে দিয়ে সেখানে থাকা থাই গ্লাসের সামনে দাঁড়াল সে। এলোমেলো চুলের বাহার দেখে সত্যিই মনে হচ্ছে সে সদ্য পাগলাগারদ থেকে পালিয়ে আসা এক রোগীর মতো দেখাচ্ছে। রাগ দুঃখে চোখমুখ জড়িয়ে এলো তার। পরবর্তীতে এই লোকের সামনে দাঁড়াতে তার একশ বার ভাবতে হবে।

জায়গাটা রাস্তার মোড়ের সেই চায়ের দোকান। এখানকার চায়ের দোকানদারের বানানো চা টা বেশ ভালো মানতেই হবে। সৌমিত্র প্রায় প্রতিদিন বন্ধুবান্ধব নিয়ে বিকেলের দিকে এখানে একবার করে চা খেয়ে আসে। মাঝে মাঝে স্বচ্ছ উপস্থিত থাকলেও আজ নেই। এই অনুপস্থিতির কারণটা হয়ত কিছুটা আন্দাজ করতে পারে সৌমিত্র। সে শুনেছে মোহ তার বাড়িতে নেই। পুরো বাড়িটাই ফাঁকা। স্বচ্ছের সাথে সৌমিত্রেরও বেড়েছে চিন্তা। হঠাৎ সৌমিত্রকে বিস্ময়ে ফেলে উপস্থিত হয় স্বচ্ছ। গাড়ি থেকে নেমে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে গম্ভীর গলায় এসে বলে,
“আমার নামেও একটা চা দিতে বল জলদি।”

স্বচ্ছকে পেয়ে স্বচ্ছের বন্ধু যেন হা/মলে পড়ল। চায়ে চুমুক দিয়ে দাঁত কেলিয়ে জিজ্ঞেস করল,
“কী রে স্বচ্ছ! কী শুনছি এসব? তুই নাকি প্রেমের জোয়ারে হাবুডুবু খাচ্ছিস? ঘটনা সত্যি নাকি?”

স্বচ্ছ চটে গিয়ে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে প্রথমেই সৌমিত্রের দিকে। সে জানে এসব বলা তার ভাইয়েরই কাজ। তবে তার কোনো কথা বলতে ইচ্ছে হয় না এই মুহূর্তে। ফোন বের করে ঘাঁটাঘাঁটি করতে চাইতেই রাস্তার বিপরীত পাশে এক মেয়ের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকাল। এই মেয়েটাকে স্বচ্ছ চেনে। হ্যাঁ, এটাই তো বোধহয় মোহের বান্ধবী। আচ্ছা, মেয়েটা তো জানতেই পারে মোহ কোথায়! তৎক্ষনাৎ সে আগপাছ না ভেবেই জোরে ডাক ছাড়ল।
“এই মেয়ে শোনো!”

রাস্তার পাশ দিয়ে হেঁটে সবেমাত্র বাড়ি ফিরছিল তানিয়া। কোনো কঠিন স্বর পেয়ে পাশ ফিরে তাকায় সে। সেদিন যাদের সাথে ঝামেলা হয়েছিল তাদের চিনতে বিন্দুমাত্র ভুল হলো না তানিয়ার৷ বিলম্ব না করে জোরে পা চালালো সে। সেদিনের ভুলের কারণে যদি শা/স্তি পেয়ে হয় আবার? এই ভেবে আতঙ্ক ঘিরে ধরল তাকে।

তানিয়ার জোর কদমে হাঁটা দেখে মাথায় রাগ চড়ে বসল স্বচ্ছের। সৌমিত্র কিছু না বুঝে জিজ্ঞেস করল,
“ভাই! ওই মেয়েটাকে চেনো তুমি? ডাকছ কেন?”

“মেয়েটা মোহের বান্ধবী। জানতে চাই, ও মোহের সম্পর্কে জানে কিনা!”

“ও কি বলবে? দেখছ না! তোমার ডাকেই পালাচ্ছে।”

“বলবে না কেন? তুই বলাবি তাকে দিয়ে।”

সৌমিত্রের চক্ষু চড়কগাছ তখন।
“কী বলো ভাই! আমি কীভাবে?”

“তুই যদি তার সঙ্গে কথা বলে জানাতে পারিস আমায় মোহের বিষয়ে তাহলে তোকে তোর রিসেন্ট ফেবারিট ব্র্যান্ডের বাইক কিনে দেব।”

সৌমিত্র যেন হাতে চাঁদ পেয়ে গেল। অবিশ্বাস্য গলায় বলল,
“আরে আরে! সত্যি?”

“আমার কাজটা করে দিয়েই দেখ! মেয়েটা গেল। জলদি থামা গিয়ে।”

সৌমিত্র এক মুহূর্ত দেরি করল না। একপ্রকার ছুট লাগায় তানিয়ার দিকে। হাত দিয়ে ডাকল,
“ও হ্যালো, মিস! শুনুন।”

তানিয়ার হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে এলো এবার। আজ বুঝি তার নিস্তার নেই!

ব্যাগ থেকে সব কাপড় নামিয়ে রাখতে ব্যস্ত মোহ। ইথান জানালা দিয়ে বাড়ির পেছনের বাগান দেখছে। হুট করে প্রশ্ন করছে,
“মাম্মা! ওই বাগানে যাই?”

“কাল সকালে আমি নিয়ে যাব তোমায়। একা যেতে হবে না।”

ইথান বিনাবাক্যে রাজি হয়। মোহ কাপড় নামাতে গিয়ে হুট করেই কাপড়ের ভাঁজ থেকে একটা ছবির মতো কিছু পড়তে দেখল। বেশ আগ্রহের সহিত নিচু হয়ে সেটা হাতে তুলল। হ্যাঁ, এটা তো ছবিই! ছবি উল্টিয়ে দেখতেই গলা শুঁকিয়ে এলো তার। মুখে এক ফ্যাকাসে ভাব চলে এলো। হাত দুটো অনবরত কাঁপছে। তার সাথে তার প্রিয় বান্ধবীর ছবি। কতই না আহ্লাদের সহিত তোলা ছবিটা। এই স্মৃতি তার কাছে বেদনাদায়ক। ইথান মোহের হাতে ছবি দেখে এক লাফে মায়ের কাছে এলো। মায়ের পাশ ঘেঁষে দাঁড়িয়ে ছবির দিকে তাকিয়ে আগ্রহ নিয়ে জিজ্ঞেস করল,
“ছবিতে তোমার পাশে এটা কে মাম্মা?”

ইথানের প্রশ্নে নিষ্ক্রিয়, নির্ণিমেষ হয়ে দাঁড়িয়ে রইল মোহ। কারণ ইথানের প্রশ্নের উত্তর দেওয়া তার পক্ষে বেশ জটিল!

চলবে…

[বি.দ্র. ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। গল্পটি সম্পূর্ণ কাল্পনিক।]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here