তুমি_হৃদয়ে_লুকানো_প্রেম #তাহিরাহ্_ইরাজ #পর্ব_৯

0
778

#তুমি_হৃদয়ে_লুকানো_প্রেম
#তাহিরাহ্_ইরাজ
#পর্ব_৯

মুখোমুখি দাঁড়িয়ে তূর্ণ এবং রিয়া। মেয়েটার চোখে নোনাজল। ক্ষণে ক্ষণে কম্পিত হচ্ছে কায়া। তূর্ণ দীর্ঘশ্বাস ফেলে মোলায়েম কণ্ঠে বললো,

” কাঁদছো কেন? ওদের সামনে কান্না করে নিজেকে আরও অবলা প্রমাণ করতে চাইছিলে? বৈশিষ্ট্যগত ভাবেই মেয়েরা পুরুষদের তুলনায় দুর্বল। উইক। তাই বলে বিপদের মুখে পড়েও অবলা নারী হয়ে থাকতে হবে তা তো হতে পারে না। তুমি কি জানো না আমাদের ইসলাম ধর্মে নিজেকে বাঁচাতে আত্মরক্ষা করার আদেশ দেয়া আছে? জীবন বাঁচানো ফরজ। তাহলে তুমি বিপদের মুখে পড়েও কেন কাঁদবে? সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে নিজেকে রক্ষা করার। প্রথমে মুখে প্রতিবাদ করবে। মুখে কাজ না হলে হাতে। যদিওবা তুমি ছোট মানুষ। তোমার হাত চালানোর দরকার নেই। হিতে বিপরীত হতে পারে। তুমি মুখেই প্রতিবাদ করবে। কণ্ঠে এতটা তেজ ঢেলে বলবে যে, বিপরীতে থাকা মানুষটা দমে যেতে বাধ্য হবে। বুঝতে পেরেছো? ”

ক্রন্দনে দিশেহারা হয়ে পড়লো রিয়া। বড় ভাইয়ের মতো মানুষটার উপদেশমূলক কথাগুলো ওকে বড্ড অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। সে বুঝতে পারছে তার দ্বারা ভুল হয়েছে। প্রতিবাদ করা উচিত ছিল। তূর্ণ বিষয়টি বুঝতে পেরে মুচকি হাসলো। ওর মাথায় স্নেহের হাত বুলিয়ে দিয়ে বললো,

” মন খারাপ করো না। আজ যা হওয়ার হয়ে গেছে। এরপর থেকে ইনশাআল্লাহ্ তোমার মধ্যে পরিবর্তন আসবে। ভীত মেয়েটা তেজস্বীনি হয়ে উঠবে। কি? পারবে না? ”

মেয়েটা কাঁদতে কাঁদতে তূর্ণ’র ডান হাত আঁকড়ে ধরলো। আবেগঘন কণ্ঠে বলতে লাগলো,

” ভাইয়া! তোমাকে অ অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আজ তুমি আমাকে যেভাবে বোঝালে আ আমার সবসময় মনে থাকবে। রিয়া আর ভয় পাবে না। ভয়কে জয় করার চেষ্টা করবে। তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া। ”

মুচকি হাসলো তূর্ণ।

” দ্যাটস্ লাইক অ্যা গুড গার্ল! ”

তূর্ণ’র অধরকোণে হাসির রেখা। ওর ডান হাতটি আঁকড়ে ধরে রয়েছে রিয়া। ভার্সিটি থেকে ফেরার পথে চলন্ত রিকশায় বসে এই দৃশ্য দেখতে পেলো দুয়া। হতবিহ্বল হয়ে তাকিয়ে রইলো! বোধগম্য হলো না কিছুই। ইচ্ছে সত্ত্বেও রিকশা থামিয়ে আর সবটা বোঝা হলো না। মুহুর্তের মধ্যেই দৃষ্টিসীমার বাহিরে চলে গেল ওরা।
_________

রিয়ার মুখে সবটা শুনে দুয়া এবং তৃষা অবাক! তৃষা উৎফুল্ল হয়ে বললো,

” ইয়েস! এই না হলে আমার ভাইয়া! জাস্ট ফাটিয়ে দিয়েছে। ”

দুয়া মুচকি হাসলো।

‘ এবার আমার সব প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেছি। আমার আগেই বোঝা উচিত ছিল। তূর্ণ ভাইয়া যেমন মানুষ এমন আচরণ ওনার দ্বারাই সম্ভব। উনি তো বরাবরই অন্যের বিপদের সময় ঝাঁপিয়ে পড়তে সদা প্রস্তুত। আসলেই দুর্দান্ত! ‘

মনে মনে ওসব ভাবলেও মুখে বললো,

” তৃষা শুনলি তো? তূর্ণ ভাইয়া কিন্তু কোনো মা*রামারি ফাটাফাটি করেনি। স্রেফ এক চ”ড়েই দাঁত নড়িয়ে দিয়েছে। ”

তৃষা দাঁত কেলিয়ে হাসলো।

” ইয়াহ। ভাইয়া এমনি এমনি জিম করে বুঝি? বুঝতে হবে বেবি। ওটা জিম করা শক্তপোক্ত হাত। গণ্ডারের মতো। দেখ ওই লু”চ্চাটার দাঁত আছে নাকি পড়ে গেছে! থাকলেও ওই দাঁত দিয়ে ইহজীবনে বুঝি কিছু চিবোতে আর পারবে না। ”

সশব্দে হেসে উঠলো দুয়া এবং রিয়া। সঙ্গ দিলো তৃষা নিজেও। দুয়া’র অধর কোণে লেপ্টে তৃপ্তিকর হাসির রেখা। তৃষাকে বললো,

” আমি বরাবরের মতই আবারো বোকামি করতে যাচ্ছিলাম। তূর্ণ ভাইয়া যে কোনো অকাজ করবে না এ তো বোঝা উচিত ছিল। ভাগ্যিস সরাসরি ওনাকে জিজ্ঞেস করিনি। নইলে মশাই এত সুন্দর একটা বিষয়কে ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে কি করে ফেলতো‌। নিজের প্রশংসা শুনতে ওনার আবার অ্যালার্জি আছে কিনা! হুহ্! বাইরের মানুষের জন্য উনি শান্তশিষ্ট লেজ বিশিষ্ট ভদ্রলোক। শুধু আমার সাথেই কূচুটিপানা করে। ”

” কূচুটিপানা! হা হা হা! ভাইয়ার ডিকশনারি থেকে শব্দ চুরি? ” ভ্রু নাচিয়ে প্রশ্ন করলো তৃষা।

দুয়া মুখ ফিরিয়ে ভেংচি কাটলো।

” ওটা মোটেও ওনার শব্দ নয়। মাস্টার মানুষ এসব বলে নাকি? ওটা তো বাংলার জনগন্সদের চিরচেনা শব্দ। ”

” আচ্ছা? আজকে ভাইয়া আসুক। জিজ্ঞেস করবো নে। সাবধানে থাকিস বেবি। ভাইয়া তার শব্দ চুরির দায়ে তোর নামে মামলা না ঠুকে দেয়? ”

দুয়া চোখমুখ কুঁচকে তাকাতেই ফিক করে হেসে উঠলো তৃষা।

গোধূলি লগ্ন। মাগরিবের সালাত আদায় করে ব্যস্ত সকলে। তাসলিমা রান্নাঘরে নাস্তা বানাচ্ছে। সোফায় পাশাপাশি বসে মোবাইলে ইনস্টাগ্রাম রিলস্ দেখছে তৃষা এবং নিশি। বাকিরা নিজ নিজ কক্ষে। এসময় কলিংবেল বেজে উঠলো। তাসলিমা রান্নাঘর থেকে উঁচু কণ্ঠে বলে উঠলো,

” তৃষা! দেখ তো কে এসেছে। ”

অনিচ্ছা সত্ত্বেও মোবাইল রেখে উঠে দাঁড়ালো তৃষা। পা বাড়ালো দরজার দিকে। দরজা খুলতেই হতবাক হয়ে গেল মেয়েটা। উৎফুল্ল কণ্ঠে ডেকে উঠলো,

” চাচু! ”

চাচুকে আলিঙ্গন করলো তৃষা। নাজমুল সাহেব মুচকি হেসে ভাতিজির মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন। তৃষা দ্রুত পায়ে লিভিং রুমে এসে জোরে জোরে সবাইকে ডাকতে লাগলো।

” আব্বু, আম্মু। ভাইয়া! কে কোথায় আছো? তাড়াতাড়ি এসো। দেখো কে এসেছে! ”

তাসলিমা ঘাবড়ে গিয়ে দ্রুত রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে এলো। এসেই মুগ্ধ হলেন। বাবার বুকে লেপ্টে নিশি। কতদিন পর বাবা মেয়ের আলিঙ্গন! তাসলিমা মুচকি হেসে বললো,

” আরে ভাই? কতদিন পর দেখা? কেমন আছো? ”

নাজমুল সাহেব মেয়েকে বুকে আগলে রেখেই বললো,

” আসসালামু আলাইকুম ভাবি। আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো আছি। তোমরা কেমন আছো? ”

” ওয়া আলাইকুমুস সালাম। আমরাও আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো আছি। ”

তৃষাও পাশ থেকে ফটাফট জবাব দিলো,

” আমিও ভালো আছি চাচু। ”

নাজমুল সাহেব মুচকি হেসে মেয়েকে বাহুবন্ধন হতে মুক্ত করলেন। মেয়ের ললাটে চুমু এঁকে দিলেন। নিশি আবেগতাড়িত হয়ে বাবাকে পুনরায় জড়িয়ে ধরলো। সিঁড়ি বেয়ে নামতে নামতে এই দৃশ্য দেখতে পেলেন নিজাম সাহেব। পিছু পিছু মোবাইল হাতে নামছে তূর্ণ। বড় ভাইকে দেখে নাজমুল সাহেব সালাম দিলেন।

” আসসালামু আলাইকুম ভাইয়া। কেমন আছো? ”

” ওয়া আলাইকুমুস সালাম। আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো আছি। হোয়াট অ্যা প্লেজেন্ট সারপ্রাইজ! তুমি আসবে আগে বলোনি তো? ” নিজাম সাহেবের কণ্ঠে বিস্ময়!

” আসলে ভাইয়া কাজ তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে গেল। তাই ভাবলাম বিদেশের মাটিতে পড়ে থেকে আর কি লাভ? তারচেয়ে বরং আপন নীড়ে ফিরে আসি। অবশ্য আমি আসার আগে তূর্ণ’কে জানিয়েছিলাম যে আমি দেশে আসছি। ”

নিজাম সাহেব আড়চোখে তাকিয়ে দেখতে পেলেন তূর্ণ মোবাইলে দৃষ্টি নিবদ্ধ করে রেখেছে। পড়নে তার ধূসর বর্ণের টি শার্ট এবং ট্রাউজার। তূর্ণ মোবাইলে দৃষ্টি নিবদ্ধ রেখেই বললো,

” ইচ্ছে করেই জানাইনি। আগে থেকে জানালে নিশুর এই ছিঁচকাদুনে রূপটা দেখা হতো না। ”

কথাটা কর্ণ কুহরে পৌঁছাতেই নিশি বাবার বুক থেকে মুখ তুলে তাকালো। ডান হাতের উল্টো পিঠে অশ্রু বিন্দু মুছে বললো,

” ভাইয়া! আমি ছিঁচকাদুনে নই। আমাকে ছিঁচকাদুনে বলবে না। ”

” ছিঁচকাদুনেকে ছিঁচকাদুনে বলবো না তো কি বলবো? সেন্টিখোর? ”

নিশি গাল ফুলিয়ে বাবাকে বললো,

” আব্বু তুমি কিছু বলছো না কেন? ভাইয়া কিন্তু পঁচা বকছে। ”

নাজমুল সাহেব মুচকি হেসে সোফায় বসলেন। পাশে বসলো নিশি।

” তূর্ণ আমার মেয়ে নাহয় একটু ইমোশনাল। তাই বলে এভাবে বলবে? ”

তূর্ণ মোবাইল থেকে দৃষ্টি সরিয়ে বললো,

” চাচু প্লিজ। তুমিও জানো আমিও জানি। তোমার মেয়ে একবার কান্না শুরু করলে অশ্রুর হ্রদ তৈরি হয়ে যায়। শুধু শুধু মিথ্যা সান্ত্বনা দিয়ে কি লাভ? ”

ফিক করে হেসে উঠলো তৃষা। ভাইকে সমর্থন জানিয়ে বললো,

” ভাইয়ার সাথে আমি পুরোপুরি একমত। ”

নিশি একথা শুনে ওকে চোখ রাঙানি দিলো। তা দেখে কপট ভয় পাওয়ার ভঙ্গিমা করলো তৃষা। উপস্থিত বড়রা এ দেখে মৃদু হেসে উঠলো।

দিবাকরের মিঠি রৌদ্র ছুঁয়ে যাচ্ছে ধরনীর বুকে। তূর্ণ দ্রুত পায়ে মোবাইল এবং কার রিং হাতে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হচ্ছে। ঠিক তখনই কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে একপ্রকার ছুটে এলো ছোট বোন তৃষা।

” ভাইয়া! ভাইয়া দাঁড়াও। ”

দাঁড়ালো তূর্ণ। ওর ঠিক পাশে এসে ব্রেক কষলো তৃষা।

” কি হয়েছে? এভাবে ছোটাছুটি করছিস কেন? ”

হাঁপাতে হাঁপাতে তৃষা বললো,

” ভাইয়া অলরেডি অ অনেক লেট হয়ে গেছে। এখন রিকশা করে ভার্সিটি গেলে ফার্স্ট ক্লাস নির্ঘাত মিস্। তুমি একটু আমাদের ড্রপ করে দাও না। প্লিজ। ”

বোনের অনুনয় শুনে তূর্ণ হাঁটতে হাঁটতে বললো,

” যেই দরকার পড়লো অমনি আমাকে মনে পড়লো? অন্য সময় তো চিনিস ই না। কি স্বার্থপর রে তুই! ”

পেছনে থাকা তৃষা ভেংচি কাটলো। যদিওবা তা তূর্ণ’র অগোচরে রয়ে গেল। তূর্ণ প্রাঙ্গনে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ির কাছে পৌঁছালো। ডান হাতে কার ডোর খুলে দিলো। তৃষা খুশি খুশি ঝটপট বসে পড়লো পেছনের সিটে। তূর্ণ দরজা আটকে মুচকি হাসলো। গিয়ে বসলো ড্রাইভিং সিটে।
.

দুয়া কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে তড়িঘড়ি করে সিঁড়ি বেয়ে নেমে এলো। বাড়ির বাহিরে রাস্তায় আসতেই দেখতে পেলো গাড়ি দাঁড়িয়ে। আর তাতে বসে তূর্ণ মশাই! দুয়া কিছুটা অবাক হলো! তা লক্ষ্য করে তূর্ণ ব্যাঙ্গ করে বললো,

” ম্যাডাম অনেকক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছি। আপনার কৃপা হলে গাড়িতে বসুন। ধন্য করুন আমাদের। ”

ভ্যাবাচ্যাকা খেল দুয়া। এবার ধমক দিয়ে বসলো তূর্ণ।

” গাড়িতে বস বেদ্দপ! ক্লাস শুরু হতে আর কতক্ষণ বাকি জানিস? ”

দুয়া তাড়াতাড়ি পেছনের ডোর খুলে তৃষার পাশে বসে পড়লো। ডোর আটকে কোলের ওপর ব্যাগ রেখে বললো,

” শুধু শুধু বকাঝকা করছো কেন? আমি তো হঠাৎ তোমাকে দেখে অবাক হয়েছি। তাই একটু লেট হয়েছে।”

গাড়ি চালু করে তূর্ণ বললো,

” আচ্ছা? তাই নাকি? আমাকে দেখে এতটাই অবাক হয়েছিস যে সাত মিনিট পেরিয়ে গেল? তোদের মতো দুই দুইটা অলসকে ড্রপ করতে গিয়ে আজ আমার লেট হয়ে গেল। তোরা তো স্টুডেন্ট নামক ক”লঙ্ক। টিচাররা তোদের আগে পৌঁছে যায় আর তোরা? পিপীলিকার মতো গুটিগুটি পায়ে ইচ্ছেমতো গিয়ে হাজির হোস। ”

দুয়া চক্ষু ছোট করে বললো,

” টিচাররা যদি সময়ের আগেই পৌঁছে যায় আমরা কি করবো? ”

তৃষা সঙ্গ দিয়ে বললো,

” এছাড়াও তারা সবাই ভার্সিটির কাছাকাছি থাকে। আসতে সময় লাগে না। এখানে আমাদের দোষ কোথায় বলো তো? ”

তূর্ণ সম্মুখে রাস্তায় দৃষ্টি আবদ্ধ রেখে বললো,

” তোদের মতো লজিকলেস পাবলিকের জন্য দেশ আজ রসাতলে যাচ্ছে। ”

পেছনে থাকা দুই মানবী ভেংচি কেটে তাদের আপত্তি জানালো। তা দেখে বক্র হেসে গাড়ি চালানোয় মনোনিবেশ করলো তূর্ণ।

সন্ধ্যা প্রহর। জনশূন্য লিভিংরুম। টি টেবিলের ওপর রাখা ক্ষুদ্র যন্ত্রটি বেজে চলেছে কখন থেকে। সালাত সম্পন্ন করে নিজ কক্ষ হতে বেরিয়ে এলেন তাহমিদা। টেবিলের ওপর রাখা মোবাইলটি হাতে নিয়ে কলার আইডি দেখে মুচকি হাসলেন। কল রিসিভ করে সালাম দিলেন,

” আসসালামু আলাইকুম আপা। কেমন আছো? ”

” ওয়া আলাইকুমুস সালাম। আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো আছি ভাবি। তোমরা সবাই কেমন আছো? ”

সোফায় বসলেন তাহমিদা।

” এই তো আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো আছি। এতদিন পর আমাদের কথা মনে পড়লো বুঝি? ”

” না না। কি যে বলো না তুমি? তোমাদের কথা তো সবসময়ই মনে পড়ে। আসলে ব্যস্ত থাকি বুঝোই তো। এর ওপর আবার শরীরটা কয়দিন ভালো ছিল না। ”

উৎকণ্ঠিত হলেন তাহমিদা।

” সে কি? কি হয়েছিল? তুমি এখন ঠিক আছো তো আপা? ”

” ভাবি চিন্তা করো না। আলহামদুলিল্লাহ্ এখন ভালো আছি। ”

” কি হয়েছিল তোমার? ডক্টর দেখিয়েছো? ”

” ও-ই প্রেশার হাই হয়ে গেছিল। ডক্টর আর ডাকিনি। জাবির, তানু ওরা তো পা’গল হয়ে গেছিল প্রায়। ”

বড় শ্বাস ফেলে তাহমিদা বললেন,

” সে তো স্বাভাবিক। মা ছাড়া ওদের কাছে কেইবা আছে? আমরা তো কত দূরে! ”

সাজেদা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন,

” মন খারাপ করো না ভাবি। আমি এখন ঠিক আছি। আর আমার ছেলেমেয়ে একা কোথায়? আল্লাহ্ আছে। তোমরা আছো। ”

” তা তো বটেই। তারপরও। তোমার ভাই কত করে বললো বগুড়া থেকে চলে আসতে। তুমি তো আসতেই চাও না। ”

” নিজের ঘর ছেড়ে অন্য কোথাও ভালো লাগে না ভাবি। এছাড়াও ওই শহর এখন বড্ড অপরিচিত লাগে। ভালো লাগে না। ”

” হুম এই বলেই তো সবসময় পাশ কাটিয়ে যাও। ”

সাজেদা মৃদু হেসে বললো,

” এসব ছাড়ো তো। এবার বলো আমার ভাতিজা, ভাতিজি ওরা কেমন আছে? ”

” আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো আছে। জাবির, তানু ওরা কেমন আছে? ”

” এই তো আলহামদুলিল্লাহ্। তানজিনা কোথায় এখন? শ্বশুরবাড়ি? ”

” হাঁ ওখানে। ”

কথোপকথন চলতে থাকলো ননদ ভাবীর মধ্যে।

চলবে.

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here