তুমি_হৃদয়ে_লুকানো_প্রেম #তাহিরাহ্_ইরাজ #পর্ব_১৬

0
828

#তুমি_হৃদয়ে_লুকানো_প্রেম
#তাহিরাহ্_ইরাজ
#পর্ব_১৬

ফোনের দু প্রান্তে দু’জন। আবেগে আপ্লুত। মেয়েটার কপোল ছুঁয়ে গড়িয়ে পড়ছে নোনাজল। ওপাশ হতে শোনা গেল আদুরে নিষ্পাপ কণ্ঠস্বর,

” আপু! ”

সশব্দে কেঁদে উঠলো দুয়া। জাহিনের আদুরে কণ্ঠে নিজেকে সামলাতে ব্যর্থ হচ্ছে। ভেজা কণ্ঠে থেমে থেমে বললো,

” ভাইয়্যু! আমার ভাইয়্যু! ত্ তুই সত্যিই আমাকে ফোন করেছিস? ”

প্রশ্নের উত্তর দিলো না জাহিন। বরং নিজের আকুতি পেশ করলো।

” আপু তুমি। তুমি চলে আসো। তোমাকে ছাড়া আমার কান্না পাচ্ছে। আমি কেঁদে ফেলছি আপু। ভালো লাগছে না। আব্বু কাঁদে। আম্মু কাঁদে। আমিও কাঁদি। তুমি প্লিজ আসো। আসো না। ”

ক্রন্দনরত দুয়া মুখে হাত রেখে চাপা কান্নায় ভেঙ্গে পড়লো। ওপাশ থেকে জাহিন বোনের ক্রন্দন ধ্বনি টের পেল। আদুরে গলায় বলে উঠলো,

” কাঁদে না আপু। তুমি না গুড গার্ল? গুড গার্ল কাঁদে না। খালামণি, তূর্ণ ভাইয়া বকবে। কাঁদে না। ”

” ভাইয়্যু! ”

” হাঁ আপু। তু তুমি কেঁদো না। আমিও কাঁদছি না। আমরা না গুড? কাঁদি না তো। ”

দুয়া ভাঙা গলায় বললো,

” কাঁদছি না। আমরা তো গুড। আমার ভাইয়্যু সবচেয়ে গুড বয়। একদম স্ট্রং। তাই না? ”

জাহিন মাথা নেড়ে সম্মতি পোষণ করলো।

” হাঁ আমি স্ট্রং।‌ অন্নেক স্ট্রং। বাহুবলীর মতো। ”

কান্নার মাঝেও হেসে উঠলো দুয়া।

” তাই? আমার ভাইয়্যু বাহুবলীর মতো স্ট্রং? ”

” হাঁ। তুমিও স্ট্রং। আমার দুই আপুই ইয়া শক্তিশালী। কাঁদে না ঠিক আছে? ”

জাহিন হাত নাড়িয়ে শক্তির মাত্রা বুঝালো। দুয়া নিঃশব্দে হাসলো। হাতের উল্টো পিঠে অশ্রু কণা মুছে বললো,

” আমার ভাইটা এখন কি করে? স্কুলে গিয়েছিল? ”

” হুঁ গিয়েছিলাম। তুমি জানো আপু আজকে ক্লাস টেস্ট ছিল। আমি হায়েস্ট মার্ক পেয়েছি। ম্যাম আমাকে গুড বয় বলেছে। ”

” তাই? মাশাআল্লাহ্! আমার ভাইটা ভবিষ্যতে ইনশাআল্লাহ্ আরো ভালো করবে। ”

” হুঁ।‌ হুঁ। আব্বুও তাই বলেছে। আমি বড় হয়ে সায়েন্টিস্ট হবো। একদম নিউটন। অনেক সূত্র বানাবো। ”

দুয়া হাসিমুখে টাফটেড বেঞ্চে বসলো।

” হাঁ আমার ভাইয়্যু অনেক সূত্র বানাবে। সবাই সে-ই সূত্র মুখস্থ করবে। বইয়ে থাকবে সূত্রগুলো। ”

খুশি হলো ছোট্ট প্রাণটা। সোফায় ভালোমতো বসে বললো,

” আপু? ”

” হাঁ ভাইয়্যু। বলো। ”

” আমি না? তখন সহজ সহজ সূত্র বানাবো। সবাই আমাকে ভালো বলবে। বকবে না। ”

দুয়া হেসে উঠলো ভাইয়ের সরল কথায়। সম্মতি পোষণ করে বললো,

” ঠিক আছে। তুমি একদম সোজা সোজা সূত্র বানাবা। স্টুডেন্টরা এতে খুউব খুশি হবে। তোমার প্রশংসা করবে। ”

খুশিতে গদগদ হলো জাহিন। আদুরে কণ্ঠে ছোটাপু’র কাছে কত কথা বলতে লাগলো। দুয়া খুশিমনে তা শুনছিল। সহজ-সরল কথার জবাব দিচ্ছিল। ওর ইন্ট্রোভার্ট ভাইটা এত কথা বলতে জানে? এত মিশুক! কখনো তো বুঝতে পারেনি। হয়তো ছোট বাচ্চাটা এই স্বভাব প্রকাশ করেনি বলে। আজ অবশেষে সাময়িক দূরত্বে দু’জনের মধ্যকার ব্যবধান ঘুচে গেল। আদুরে আলাপে লিপ্ত হলো দুই ভাই-বোন!

আঁধারে নিমজ্জিত বসুধা। উন্মুক্ত জানালা গলিয়ে মৃদু হাওয়া প্রবেশ করছে কক্ষে। ছুঁয়ে যাচ্ছে কায়া। ডান কাত হয়ে শুয়ে রয়েছে দুয়া। দেহে জড়ানো ব্ল্যাংকেট। বাম পাশে হেডবোর্ডে হেলান দিয়ে বসে রয়েছে তূর্ণ। চোখে চিকন ফ্রেমের চশমা। হাতে উপন্যাসের বই। সমস্ত মনোযোগ বইয়ের পাতায়। দুয়া বাম কাঁধে মুখ এনে আড়চোখে তাকালো স্বামীর পানে। পড়নে তার শুভ্র রঙা টি শার্ট এবং ট্রাউজার। লালচে চুলগুলো এলোমেলো রূপে কপালে পড়ে রয়েছে। সদ্য ফ্রেশ হয়ে আসায় চুলগুলো স্বল্প সিক্ত। চোখে চশমা। সমতল কাঁচের আড়ালে লুকায়িত চক্ষুতে দৃষ্টি নিবদ্ধ হতেই মেয়েটার গলা শুকিয়ে গেল। অজানা অনুভূতি ঘিরে ফেললো আষ্টেপৃষ্ঠে। শুকনো ঢোক গিলে তৎক্ষণাৎ দৃষ্টি সরিয়ে নিলো দুয়া। এসব কি করছিল সে? নিজেকে নিজেই ধমকে দিলো। শক্ত হয়ে পড়ে রইলো বিছানায়। ঘুম আসছে না। বরং রাজ্যের সমস্ত চিন্তাভাবনা মস্তিষ্কে কিলবিল করে বেড়াচ্ছে। যেই দুয়া সর্বদা প্রেম ভালোবাসা থেকে দূরে দূরে থেকেছে। নিজেকে প্রস্তুত করেছে হালাল সঙ্গীর জন্য আজ সে বিবাহিতা। তারও রয়েছে একান্ত একজন মানুষ! বড্ড চেনা। কাছের সে-ই মানুষটি। তবুও ‘কিন্তু’ রয়ে যায়। চেনা পরিচিত মানুষটি আজ আর শুধুমাত্র কাজিন নয়। তার বিবাহিত স্বামী। বিষয়টি যত দ্রুত সম্ভব মেনে নেয়া উচিত। এতেই কল্যাণ। মহান স্রষ্টার সন্তুষ্টি। তবুও ভাই মেনে আসা মানুষটিকে স্বামীর আসনে বসাতে সময় লাগছে। অস্বস্তি হচ্ছে। ইনশাআল্লাহ্ সব ঠিক হয়ে যাবে। হয়তো একটু সময়ের প্রয়োজন। টাইম ইজ দ্যা বেস্ট হিলার। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিশ্চয়ই সবটা স্বাভাবিক হয়ে উঠবে। তারাও হয়ে উঠবে অন্য সবার মতো স্বাভাবিক দম্পতি! আসলেই তাই?

স্বাভাবিক দম্পতি বিষয়টি মনে হতেই কুঁকড়ে গেলো মেয়েটা। মস্তিষ্কে হানা দিলো কত দুষ্টু চিন্তাভাবনা। নিজেকে ছিঃ ছিঃ বলে নিজেই আবার লাজে রাঙা হলো। মুখ লুকালো বালিশে। তূর্ণ বইয়ের পাতা থেকে দৃষ্টি সরিয়ে দুয়া’র পানে তাকালো। মেয়েটা এত নড়চড় করছে কেন? এনি প্রবলেম? মনের কথা মুখে আনলো তূর্ণ।

” দুয়া! ”

পুরুষালি ডাকে হকচকিয়ে গেল দুয়া! ভয় হলো তার উল্টোপাল্টা চিন্তাভাবনা মানুষটি জেনে যায়নি তো? পরক্ষণে বোধগম্য হলো সে ভুলভাল ভাবছে। মনের কথা তূর্ণ ভাইয়া জানবে কি করে? দুয়া ক্ষীণ স্বরে জবাব দিলো,

” হুঁ? ”

” ঘুমাসনি? ”

দুয়া ডান কাত হয়েই জবাব দিলো,

” না। ঘুম আসছে না। ”

বক্র হেসে তূর্ণ বললো,

” তাই? কালকের মতো ঘুম পাড়িয়ে দেবো? ”

লাজে র’ক্তিম হলো মুখশ্রী। মৃদু স্বরে আপত্তি জানালো তৎক্ষণাৎ।

” না না। আ আমি ঠিক আছি। ”

অধর কা’মড়ে হাসলো তূর্ণ। বইয়ে দৃষ্টি নিবদ্ধ করে বললো,

” তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়। নাহলে আমি কিন্তু নিজস্ব পন্থায় ঘুম পাড়িয়ে দেবো। ”

মেয়েটা ইচ্ছে স্বত্ত্বেও কিছু বলতে পারলো না। কণ্ঠনালী যেন অবরুদ্ধ! শব্দমালা বের হচ্ছেই না। অগত্যা চুপটি করে শুয়ে রইলো। ঘুমের আগের দোয়া দরুদ পাঠ করতে করতে একসময় তলিয়ে গেল নিদ্রায়। দুয়া ঘুমিয়ে গেছে নিশ্চিত হতেই তূর্ণ হাতে থাকা বইটি বন্ধ করলো। চশমা এবং বই রাখলো পার্শ্ববর্তী বেড সাইড টেবিলের ওপর। টেবিল ল্যাম্প বন্ধ করতেই ড্রিম লাইটের আলোয় ছেয়ে গেল কক্ষ। তূর্ণ পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকালো তার অর্ধাঙ্গীর পানে। মাইরা’র পানে! চোখেমুখে ফুটে উঠলো তৃপ্তিকর আভা। অধর কোণে চিকন হাসির রেখা। আস্তে করে মাইরা’র পানে ঝুঁকে গেল তূর্ণ। তার মনোবাসনা পূরণ করতেই বুঝি ঘুমন্ত ললনা বাম কাত হয়ে শুলো। খুশি হলো প্রেমিক চিত্ত। ধীরে ধীরে হাতটি বাড়িয়ে দিলো। আলতো ছোঁয়ায় কপালে পড়ে থাকা ছোট ছোট চুলগুলো সরিয়ে দিলো। চোখের পাতায় হালকা ফুঁ দিতেই ঘুমন্ত ললনা নড়ে উঠলো। মুচকি হাসলো তূর্ণ।

” মাইরা! আমার চিরসঙ্গিনী মাইরা! কি আছে তোমাতে? তোমার এই মায়াবী মুখশ্রীতে কেন এত মায়া? যে মায়াজালে জড়িয়েছি বহুকাল পূর্বে। বেড়োতে পারিনি আজও। বের হতেও চাই না।‌ আবদ্ধ থাকতে চাই তোমাতে। আমার মাইরা’তে! ”

তৃপ্তিময় হাসলো তূর্ণ। ঘুমন্ত সঙ্গিনীর কপালের মধ্যভাগে এঁকে দিলো অধরের ছোঁয়া। ঘুমের ঘোরে দুয়া হালকা নড়ে উঠলো। কিন্তু নিদ্রা ভঙ্গ হলো না। প্রেমিক পুরুষটি সন্তুষ্ট চিত্তে হাসলো। আস্তে করে শয্যা গ্রহণ করলো তার মাইরা’র পার্শ্বে। কোমল হাতটি নিজের রূক্ষ হাতের মুঠোয় আবদ্ধ করে নিলো। মোহাচ্ছন্ন কণ্ঠে বলতে লাগলো,

” মাইরা! তোমায় দেয়া এ নামটি শুনলে তুমি অবাক হবে কি? জানতে চাইবে না কেন তোমায় ডাকছি ‘মাইরা’? ”

মানুষটির তৃপ্তিময় হাস্যোজ্জ্বল মুখখানা দেখলো না রমণী। মিস করে গেল অতি মোহনীয় এক সম্বোধন। মাইরা!
°

আদিত্যর কিরণে উজ্জ্বল বসুন্ধরা। ঘুমের ঘোরে নড়েচড়ে উঠলো দুয়া। হালকা হলো নিদ্রা। নেত্রপল্লব খুলতে গিয়েও ব্যর্থ। যেন আঠালো কিছুতে আটকে রয়েছে। আস্তে ধীরে ডান হাতে কপালে পড়ে থাকা এলোমেলো চুল সরিয়ে চোখ মেলে তাকালো। চক্ষুতারায় দৃশ্যমান হলো নতুন এক দিন। এক নতুন সূচনা। মুচকি হাসলো মেয়েটি। দু হাতে আড়মোড়া ভাঙ্গতে গিয়ে বাধাপ্রাপ্ত হলো। সরু চোখে তাকালো বাম পাশে। হতবিহ্বল হয়ে গেল মুহুর্তেই! তার কোমল বাঁ হাতটি আবদ্ধ পুরুষালি হাতের আঁজলায়। শক্ত রূপে আবদ্ধ করে রেখেছে। যেন ছেড়ে দিলেই হাতছাড়া হবে। সকাল সকাল এমন দৃশ্য মোটেও প্রত্যাশা করেনি দুয়া। বিস্মিত চাহনিতে তাকিয়ে রইলো কিছুক্ষণ। যখন হুঁশ ফিরল আরেক দফা অবাক হলো! দ্রুততার সহিত হাতটি ছাড়িয়ে নিতে গিয়েও নিলো না। আস্তে ধীরে আদুরে কায়দায় হাতটি ছাড়িয়ে নিলো। অতঃপর তড়িৎ বেগে উঠে বসলো। গলায় ভালোমতো ওড়না জড়িয়ে দেহ হতে ব্ল্যাংকেট সরিয়ে নিলো। পা নামালো জমিনে। বিছানা ত্যাগ করে আরেকবার তাকালো ঘুমন্ত সঙ্গীর পানে। এবার নিজের হাতে দৃষ্টি পড়তেই কেমন ভিন্নরকম অনুভূতি হলো। যে অনুভূতি সম্পর্কে অজ্ঞাত সে! পরিচিত নয়। মেয়েটা এলোমেলো চিন্তাভাবনা করতে করতে ওয়াশরুমের দিকে পা বাড়ালো। উদ্দেশ্য ফ্রেশ হয়ে নেয়া।

ইউনিভার্সিটি চত্বর! ক্যান্টিনে বর্গাকৃতির টেবিল ঘিরে বসে রয়েছে বন্ধুরা। একমাত্র দুয়া অনুপস্থিত। তৃষা সিঙ্গাড়ায় কা’মড় বসিয়ে নাটুকে কণ্ঠে বললো,

” দোস্তরা। বি রেডি। তোমাদের সামনে পেশ করতে চলেছি বছরের সেরা চমকপ্রদ সংবাদ। ”

বিশাল নাকমুখ কুঁচকে বললো,

” পেটুক মাইয়া! আগে খা। তারপর বল। নইলে আগে বল এরপর খা। দুইডা একলগে করতে গিয়া ডিরেক্ট জগাখিচুড়ি! ”

তৃষা সিঙ্গাড়া মুখে দাঁত কেলিয়ে হাসলো। তা দেখে নাক ছিটকালো বিশাল।

” ছিঃ! ”

” হা হা হা। ঠিক আছে। আগে খাই। তারপর বলি। তোরা রেডি থাক। ”

পুষ্পি মুখ খুললো এবার।

” এমনভাবে রেডি হতে বলতাছোছ যেন বসুন্ধরা সিটি কিংবা যমুনা ফিউচার নিয়া যাবি। ”

তৃষা আপত্তি জানালো।

” উঁহু। নো বসুন্ধরা নো যমুনা। অনলি মঙ্গল গ্রহ। ”

” আচ্ছা? তা কি সংবাদ শুনি? ” জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে বিন্দু।

তৃষা এক ঢোক পানি পান করে বেশ ভাব নিয়ে বসলো। সকলের দৃষ্টি ওর দিকেই নিবদ্ধ। তৃষা গম্ভীর স্বরে প্রথম শক দিলো।

” তূর্ণ ভাইয়া বিয়ে করে ফেলছে। ”

” ওহ্ আচ্ছা। ”

পরক্ষণেই হতবিহ্বল হলো বিন্দু! বড় বড় চোখ করে শুধালো,

” কি! আদ্রিয়ান স্যার ব্ বিয়া করছে? কবে? ”

” তিনদিন আগে। ”

পুষ্পি চেয়ার থেকে পড়তে গিয়েও পড়লো না। তার ক্রাশ কিনা বিয়ে করে ফেলেছে। তা-ও না জানিয়ে! এতবড় দুঃখ রাখবে কোথায়? তিয়াশ এসবে বিশ্বাস করলো না। অবিশ্বাসের স্বরে বললো,

” বোকা পাইছিস? তোর ভাইয়া বিয়ে করলো আর কাকপক্ষী টেরও পেলো না! এটা কি নাটক সিনেমা? ”

” উঁহু কোরিয়ান ড্রামা। ”

বিন্দু তৃষার পিঠে ঘুiষি মে রে বললো,

” ফা জি ল মাইয়া! ঢঙ করিছ না। সত্যি করে বল কি বলতে চাস। ”

তৃষা মিথ্যা মিথ্যা ব্যথায় কঁকিয়ে উঠলো। চোখ রাঙানি দিয়ে বললো,

” সত্যিই আমার ভাইয়া বিয়া করছে। আর তোদের দুয়া বেবিও। ”

” দুয়া! ও আবার কি করেছে? স্পষ্ট করে বলছিস না কেন? খালি কথা প্যাচায়। ”

তিয়াশ এর কণ্ঠে অসন্তোষ প্রকাশ পাচ্ছে।

” আরে ভাই তোরা বুঝতে পারছিস না কেন? তূর্ণ ভাইয়া আর দুয়া দু’জনেই বিয়ে করে ফেলছে। ”

” কাকে? ”

বিস্ময়ে অভিভূত বিশাল! বাকি বন্ধুরাও স্তব্ধ! বিন্দুর মুখ ফসকে পানি পরে গেল। তৃষা ক্ষি’প্ত হয়ে একটা স্ল্যাং ইউজ করে বললো,

” একে অপরকে। ”

” হোয়াট! ”

হতবাক সকলে! মুখ চাওয়াচাওয়ি করে চলেছে একে অপরের। প্রকৃত বিষয়টা বোধগম্য হচ্ছে না? নাকি বিশ্বাস হতে চাইছে না? পুষ্পি কম্পিত কণ্ঠে বললো,

” ত্ তুই এসব কি বলছিস তৃষ? আদ্রিয়ান স্যার আর দুয়া? বিয়ে করছে! তা-ও একে অপরকে! ওহ্ মাই আল্লাহ্! এ এটা সত্যি? ”

” হুম পাঁচশ পার্সেন্ট সত্যি। ”

” অবিশ্বাস্য! ”

বিশালের কথা শুনে তৃষা দাঁত কেলিয়ে হাসলো।

” বিশ্বাস হয় না? বছর ঘুরতে না ঘুরতেই বান্ধবী যখন বাচ্চা কোলে নিয়া আইবো আর কইবো ‘ মিট ইয়্যর ভাগিনা ‘ তখন বিশ্বাস হইবো নে। ”

তিয়াশ এখনো ঘোর কাটিয়ে উঠতে পারছে না।

” তুই সত্যি বলছিস তৃষ? দুয়া সত্যিই? ”

” হ রে ভাই সত্যি। দুয়া কাল আসবে নে। তখন ওকেই জিজ্ঞাসা করিস। ”

বিশাল পুনরায় ঘোরাচ্ছন্ন কণ্ঠে বলে ফেললো,

” অবিশ্বাস্য! ”

” আসলেই অবিশ্বাস্য! কেমনে কি হইলো বুইন? ”

পুষ্পি প্রশ্নবিদ্ধ চাহনিতে তাকিয়ে রয়েছে তৃষার পানে। তা লক্ষ্য করে তৃষা কিঞ্চিৎ অপ্রস্তুত হলো। এবার? বিয়ের খবর তো দিয়েই দিলো। এখন বলবে টা কি? সত্যি নাকি মিথ্যা? নাকি অর্ধ সত্যি? তৃষা যখন ভাবনায় লিপ্ত তখনই কর্ণ কুহরে পৌঁছালো,

” কি অবিশ্বাস্য? আর কে বিয়ে করেছে? ”

হকচকিয়ে গেল সবাই! এ কোথা থেকে উদয় হলো? এবার? ওদের সম্মুখে এসে দাঁড়ালো অযাচিত আগন্তুক। পুনরায় জিজ্ঞেস করলো কে বিয়ে করেছে। পুষ্পি বিরক্ত হয়ে চরম সত্যিটা বলেই ফেললো,

” দুয়া। ”

” হোয়াট! ”

ওপাশের মানুষটি চরম আশ্চর্যান্বিত! তা লক্ষ্য করে ওরা ঘাবড়ে গেল। এবার? কাণ্ড ঘটে গেল রে! ওহ্ নো!

চলবে.

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here