তুমি_হৃদয়ে_লুকানো_প্রেম #তাহিরাহ্_ইরাজ #পর্ব_২৪

0
644

#তুমি_হৃদয়ে_লুকানো_প্রেম
#তাহিরাহ্_ইরাজ
#পর্ব_২৪

প্রথম পরীক্ষা শেষ। ওপর ওয়ালার শুকরিয়া আদায় করতে করতে ফুরফুরে মেজাজে ভার্সিটি প্রাঙ্গনে হাজির হলো তৃষা। আশেপাশে তাকিয়ে বন্ধুদের খোঁজ করে চলেছে। গেল কোথায় সব? পরীক্ষা শেষে উধাও হয়ে গেল কি? তৃষা যখন খোঁজাখুঁজিতে মগ্ন ঠিক তখনই তার সম্মুখে হাজির হলো সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত এক ব্যক্তি! বিস্মিত তৃষার কণ্ঠনালী হতে বেরিয়ে এলো,

” আপনি! ”

” হাঁ আমি। কেন অন্য কাউকে আশা করছিলি বুঝি? ”

” অন্য কারোর কথা ছাড়ুন। আপনাকে তো এখানে মোটেও আশা করিনি। ”

অপর প্রান্তে থাকা মানুষটি মৃদু হাসলো। শুধালো,

” আমি বুঝি এতটাই আনএক্সপেক্টেড? ”

” সে আর বলতে? ”

তৃষা এবার নিজেকে ধাতস্থ করে প্রশ্ন করলো,

” তা আপনি এখানে! হঠাৎ আমাদের ভার্সিটিতে কেন?”

তৃষার সরল প্রশ্নে মানুষটি কিঞ্চিৎ অপ্রস্তুত হলো বুঝি! নিজেকে সামলিয়ে বললো,

” এখানে আসা কি বারণ? ভুলে যাস না আমিও এখানকার সাবেক স্টুডেন্ট। এখানে আসতে আমার রিজনের দরকার নেই। অধিকার আছে। বুঝলি? ”

” লও ঠ্যা লা! সামান্য কথায় মানবাধিকার পর্যন্ত চলে গেলেন? আশ্চর্য তো! ”

অপর প্রান্তে থাকা নিশাদ ভ্রু কুঁচকে বললো,

” ফ্যাঁচ ফ্যাঁচ বাদ দিয়ে বল পরীক্ষা কেমন হলো? ”

তৃষা খুশিতে গদগদ হয়ে জবাব দিলো,

” আলহামদুলিল্লাহ্ খুউব ভালো হয়েছে। পাশ কনফার্ম। ইমপ্রুভমেন্ট দিতে হবে না। ”

নিশাদ ওর মাথায় গা|ট্টা মে রে বললো,

” ছা*গলি! এই তোর পড়াশোনার নমুনা? সামান্য পাশের খুশিতে আত্মহারা হয়ে যাচ্ছিস? দাঁড়া তূর্ণ’কে জানাচ্ছি। ”

তৃষা বিদ্রুপের স্বরে বলে উঠলো,

” এহ্! এমন ভাব করছেন যেন ভাইয়া কিছু জানে না। শুনুন ভাইয়া আমার ব্যাপারে এ টু জেড সবই জানে। ”

” তবুও গা|ধা পি টি য়ে ঘোড়া করতে পারলো না? ”

তৃষা চরম আশ্চর্যান্বিত হলো!

” আ আমাকে গা ধা বললেন? এত সুন্দর কিউট মেয়েটা গা ধা! আমি গা ধা হলে আপনি কি? হাঁ? আস্ত এক ভাল্লুক। সারাক্ষণ খ্যা খ্যা করে। ভাইয়ের বন্ধু তো নয় যেন আপন ভাই। খালি শাসন আর শাসন। ”

বিগড়ে যাওয়া মেজাজ নিয়ে সেথা হতে প্রস্থান করলো তৃষা। আর নিশাদ বেচারা? কাশতে কাশতে অবস্থা কাহিল। শেষমেষ আপন ভাইয়ের সাথে তুলনা!

নিশুতি রাত। উন্মুক্ত বাতায়ন গলিয়ে কক্ষে প্রবেশ করছে হাওয়া। দুয়া এবং তৃষা বইপত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসে রয়েছে বিছানায়। দু’জনেই পড়াশোনায় মগ্ন। কখনো কখনোবা অমনোযোগী হয়ে নিজেদের মধ্যে ফুসুরফুসুর করছে। তা ঠিকই নেত্রপাত হলো সিঙ্গেল সোফায় থাকা মানুষটির। সে মোবাইলে দৃষ্টি নিবদ্ধ রেখে বলে উঠলো,

” এই যে দুই আদুআপা! পরশুদিন যে পরীক্ষা মনে আছে তো? নাকি ফুসুরফুসুর গুজুরগুজুর করতে করতে ভুলে গেছেন? ”

তৃষা কিছু বলার পূর্বেই দুয়া তীব্র প্রতিবাদ জানালো।

” একদম বাজে কথা বলবে না। আমরা আদুআপা হলাম কি করে? আমরা বুঝি বাংলার সেই আদুভাইয়ের মতো বছরের পর বছর একই ক্লাসে ছিলাম? ”

তূর্ণ চোখ তুলে তাকালো।

” ছিলি না। কিন্তু থাকতে কতক্ষণ? কে বলতে পারে ইমপ্রুভমেন্ট দিতে দিতেই হয়তো অনার্সে ছয়-সাত বছর লাগিয়ে দিলি? ”

তৃষা ন্যা কা কাঁদো কাঁদো ভাব নিয়ে বললো,

” তুমি এতবড় অভিশা*প দিতে পারলে ভাইয়া? আমি নাহয় বোন। পর হই। কিন্তু দুয়া? ও তো তোমার বউ। জানের জান প্রাণের প্রাণ। তোমার গিলা, কলিজা, ফুসফুস ব্লা ব্লা ব্লা। তোমার অনাগত কু*টুশ সোনাদের মা জননী। তাকে তুমি এতবড় কথাটা বলতে পারলে? একটুও আত্মা কাঁপলো না? ”

এতখানি গাঁ*জা শুনে দুয়া স্তব্ধ! আর তূর্ণ? সে কটমট করে তাকালো বোনের দিকে। কড়া কণ্ঠে বললো,

” আগামী পাঁচ সেকেন্ডের মধ্যে তোরা দু’টো যদি পড়ায় মন না দিস? কানের নিচে ধপাধপ কয়টা লাগিয়ে দেবো। বিশ্বাস কর বেহনা। আমার হাত-পা কিংবা আত্মা একটাও কাঁপবে না। ”

ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে দু’জনেই বইয়ে মুখ গুঁজে দিলো। তখনই শোনা গেল পুরুষালি কণ্ঠস্বর,

” কিসের কাঁপাকাঁপির কথা বলছিস তূর্ণ? ”

তিনজনেই কক্ষের দ্বারে তাকালো। নিজাম সাহেব জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে। উনি ভেতরে প্রবেশ করতে করতে পুনরায় প্রশ্ন করলেন,

” কিসের কাঁপাকাঁপির কথা বলছিস বললি না তো? ”

তূর্ণ মোবাইলে দৃষ্টি নিবদ্ধ করে বললো,

” তোমার গুণধর কন্যাদের কাঁপাকাঁপির কথা বলছিলাম। দু’জনে পড়তে পড়তে এতটাই কাহিল হয়ে পড়েছে যে কাঁপাকাঁপি শুরু হয়ে গেছে। ”

এতবড় মিথ্যা কথা! একে অপরের মুখ চাওয়াচাওয়ি করলো দুয়া এবং তৃষা। দুয়া গরম চোখে গুণধর স্বামীর পানে তাকালো। তূর্ণ তাতে পাত্তা দিলে তো? নিজাম সাহেব অবশ্য এসব খেয়াল করলেন না। উনি মুচকি হেসে দুই কন্যার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন।

” মন দিয়ে পড় ঠিক আছে? একটানা বেশিক্ষণ পড়িস না আবার। মাথা ধরে যাবে। একটু বিশ্রাম নিয়ে নিয়ে পড়িস। ”

তূর্ণ বাবার দিকে তাকিয়ে বললো,

” আব্বু ভুল জায়গায় ভুল সাজেশন দিলে‌। এরা দু’জন পড়ার মাঝখানে বিশ্রাম নেবে কি করে? এনারা তো বিশ্রামের ফাঁকে ফাঁকে পড়াশোনা করছে। ”

তূর্ণ’র অতিরঞ্জিত কথায় বিরক্ত হয়ে দুয়া শ্বশুড়ের দ্বারস্থ হলো।

” বাবা! তোমার এই মিস্টার পারফেকশনিস্ট ছেলে সে-ই তখন থেকে আমাদের অপমান করছে। পড়ায় ডিস্টার্ব করছে। একে এখান থেকে যেতে বলো তো। আমরা পড়ায় মন বসাতে পারছি না। ”

তূর্ণ মোবাইল হাতে সোফা ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো। পড়নে থাকা টি শার্টের কলার ঠিক ঠিক করতে করতে বললো,

” এমন মিথ্যা বলিস না রে পুতলা। আল্লাহ্ পাপ দেবে পাপ। এখনো সময় আছে ভালো হয়ে যা। ভালো হতে পয়সা লাগে না। ”

ভেংচি কাটলো দুয়া। তূর্ণ বক্র হেসে কক্ষ থেকে বেরিয়ে গেল। নিজাম সাহেব ওদের দুজনকে ভালোমন্দ পরামর্শ দিয়ে সেথা হতে বেরিয়ে গেলেন।

আদিত্যর কিরণে আলোকিত ধরনী। ইউনিভার্সিটি চত্বর পেরিয়ে কথা বলতে বলতে বাহিরে এলো দুয়া এবং বন্ধুমহল। দুয়া এবং তৃষা বন্ধুদের বিদায় জানিয়ে নিজ গন্তব্যে অগ্রসর হতে লাগলো। স্বল্প সময়ের মধ্যেই পৌঁছে গেল গন্তব্যে। শ্বেত রঙা গাড়ির দেহে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে তূর্ণ। হাতে মোবাইল। ওদের লক্ষ্য করে পকেটে মোবাইল পুরে রাখলো। হাস্যরসাত্মক কণ্ঠে শুধালো,

” কি রে জমজ আদুআপা? পরীক্ষা কেমন হলো? ”

দুয়া কাঠিন্য মিশ্রিত স্বরে বললো,

” বলবো না। ”

” হুয়াই? ”

” আগে এই আদু-কদু বলা বন্ধ করো। নাহলে নো আন্সার। ”

সশব্দে হেসে উঠলো তূর্ণ এবং তৃষা।

” দুয়া বেবি অসাম বলছোছ। উম্মাহ। লাবু বেবি। ”

তৃষা ফ্লাইং কিস করতেই দুয়াও বিনিময়ে ফ্লাইং কিস ছুঁড়ে দিলো। তূর্ণ মহাশয় একাকী বিড়বিড় করতে লাগলো,

” ঢং দেখে বাঁচি না। চোখের সামনে জলজ্যান্ত জামাই। তাকে অভুক্ত রেখে ননদকে চুমু দেয়া হচ্ছে! আল্লাহ্ পাপ দেবে রে পাপ। ”

দু’জনে তার এই কষ্ট মিশ্রিত বাক্য শুনতে পেলে তো? তারা তো নিজেদের মতো আলাপচারিতা করতে করতে গাড়ির পেছনের সিটে বসে পড়লো। তূর্ণ উদাসীন বদনে গাড়ির ড্রাইভিং সিটে বসলো। হৃদয়ের অন্তঃস্থলে লাউড স্পিকারে বেজে চলেছে বেলাল খানের স্বর,

” কাটে না যে বেলা একাকি একেলা
ভালবাসা এ কি জ্বালা.. ”

দৃষ্টিসীমার বাহিরে চলে গেল গাড়িটি। কাকতালীয় ভাবে রাস্তার ওপাশে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটি তূর্ণ-দুয়াকে একত্রে দেখতে পেল। ঈষৎ জ্বলন অনুভূত হলো তার অন্তঃপুরে। মলিন হাসলো জাবির। সেথা হতে দৃষ্টি সরিয়ে কফিশপে প্রবেশ করলো। বসলো এক শূন্য চেয়ারে। সেথায় বসে জীবনের সমীকরণ মেলাতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো। সে-ই ছোটবেলা থেকে সাজেদা তাকে বলে এসেছে দুয়া তার বউ হবে। সে যেন কখনো অন্য মেয়েতে বিমোহিত না হয়, প্রেমের সম্পর্কে না জড়ায়। মাতৃভক্ত জাবির তা বরাবরই মান্য করে এসেছে। কখনো অন্য মেয়ের পানে মুগ্ধ চাহনিতে তাকায়নি। দুয়াকেই তার হবু স্ত্রী হিসেবে জেনে এসেছে। মেনে এসেছে। মনের কোণে হবু বউ নামক মেয়েটির জন্য দিনকে দিন সুক্ষ্ম অনুভূতি জাগ্রত হতে লাগলো। তার ধ্যান ধারণায় শুধুমাত্র একটি নাম। জাহিরাহ্ দুয়া! কিন্তু আজ? তার হৃদয়ে লুকায়িত রমণী অন্য কারোর ঘরণী। তূর্ণ’র স্ত্রী।‌ একান্ত আপনজন; সহধর্মিণী। তার জন্মদিনের দিনেই তো চিরজীবনের জন্য বাঁধা পড়লো ওরা দু’জনে। ওদের দুজনকে একত্রে দেখলে বুকের ভেতর চিনচিন ব্যথা অনুভূত হয়। কেমন যাতনায় পিষ্ট হয় অন্তঃস্থল। সে কি করে সইবে এই যাতনা? ভুলবে কি করে হৃদয়ে লুকায়িত রমণীকে? তাকে মনে করে প্রেম প্রেম অনুভব করাও যে গুনাহ! অন্যায়।

কোলাহলে মুখরিত এক্সাম হল। পকপক পকপক করে চলেছে পরীক্ষার্থীরা। হঠাৎই পিনপতন নিরবতায় ছেয়ে গেল কক্ষটি। ডিউটিরত শিক্ষক চলে এসেছে। তাকে দেখেই সকলে অবাক! মেয়েদের হৃদয়ে ভালোবাসার লাল নীল সবুজ গোলাপ প্রস্ফুটিত করা মানুষের যে আগমন ঘটেছে। সকলের ক্রাশ লেকচারার আদ্রিয়ান আয়মান তূর্ণ হাজির! মানুষটির পড়নে কালো রঙা শার্ট। শার্টের দু স্লিভ গুটিয়ে কনুইয়ে তুলে রাখা। দৃশ্যমান লোমশ হাতের একাংশ। শার্টের একটিমাত্র বাটন উন্মুক্ত তাতেই বাজপাখির নজরে তাকিয়ে দুষ্টু মেয়েদের দল। তাদের বে”হায়া দৃষ্টি ঘুরে বেড়াচ্ছে স্যার নামক মানুষটির এদিক সেদিক। দুয়া প্রথমে তূর্ণ’কে দেখে অবাক হলেও তা মুহুর্তের মধ্যেই ঈর্ষায় রূপান্তরিত হলো। লুচু মেয়েরা তার বরকে তো চোখ দিয়েই গি’লে খাচ্ছে। দ্যাখো কেমন ফা**তরা নজরে তাকিয়ে! কয়েকজন তো বসতেও ভুলে গেছে। অসহনীয় ঢং দেখে দুয়া’র শরীর গিজগিজ করতে লাগলো। তূর্ণ’র আদেশে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েগুলো বেকুব হয়ে গেল। চটাপট বসে পড়লো নিজস্ব সিটে। তূর্ণ সামনের সারিতে পেপার সাপ্লাই করে পেছনে পাস করার আদেশ দিলো। দুয়া মাঝের সারির তৃতীয় বেঞ্চে বসে দোয়া দরুদ পাঠ করে নিজেকে শান্ত করার প্রয়াস চালালো। কিছুটা সফল হলোও বটে।

পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর এক ঘন্টা অতিবাহিত হয়েছে। এই এক ঘন্টায় দুয়া বেচারি শান্তিমতো লিখতে পারলো কোথায়? মেয়েদের ঢং দেখতে দেখতেই ওর অবস্থা বেগতিক। মাথায় দাউ দাউ করে অ*গ্নিসংযোগ হচ্ছে। হবে না কেন? কারণ তো অবশ্যই রয়েছে। যেমন:

তূর্ণ পরীক্ষার্থীদের পেপারে সিগনেচার করছিল। প্রতি বেঞ্চে যখনই যাচ্ছিল মেয়েদের ঢং অমনি শুরু হয়ে গেল। কেউ হাত দিয়ে চুল ঠিক করছে। কেউবা পা নাচিয়ে চলেছে। কেউ কেউ মুখ টিপে হাসছে। মনে হচ্ছে দি কপিল শর্মার শো চলছে। কারো কারোর লজ্জায় মুখ কমলা হয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো লেখালেখি বাদ দিয়ে হা করে স্যারকে গলাধঃকরণ করছে। একজন তো অস*ভ্যতামির সর্বোচ্চ সীমা অতিক্রম করে স্যারের হাতে হাত স্পর্শ করার মতো দুঃসাহস অবধি দেখিয়ে ফেলেছে। তূর্ণ যথাসময়ে নিজেকে সামলিয়ে ক্ষীণ কিন্তু কঠিন স্বরে মেয়েটিকে সাবধান বাণী শোনালো ” বিহেভ ইওরসেল্ফ। ” স্যারের কঠিন চাহনি দেখে মেয়েটি দমে গেল। তূর্ণ বিরক্ত হয়ে পরবর্তী বেঞ্চে অগ্রসর হলো। দুয়া এসব ঠিক লক্ষ্য করেছে। পারছে না পে ত্নী মেয়েটাকে উচিত শিক্ষা দিতে। কত বড় স্পর্ধা! তার স্বামী নামক স্যারের ওপর লুচু নজর দেয়! আবার হাত ধরতে যায়! বে*দ্দপ মেয়ে!

পরীক্ষার ইতিমধ্যে দেড় ঘন্টা অতিবাহিত হয়েছে। তূর্ণ এবং সাথে থাকা সুন্দরী ম্যাম পাশাপাশি দাঁড়িয়ে। সুন্দ্রী ম্যাম যদিওবা তূর্ণ’র থেকে বয়সে কয়েক বছরের বড় কিন্তু এত রসিয়ে রসিয়ে কথা বলছে যে দুয়া ফুলে ফেঁপে উঠছে। এই বুঝি বি*স্ফোরণ ঘটলো! দু’জনের মধ্যে নিরাপদ দূরত্ব বিরাজমান। তূর্ণ ঠ্যা লা য় পড়ে ম্যামের হা হা হি হি আর বকবক টলারেট করছে কিন্তু দুয়া! সে তো নিজের পরীক্ষা বাদ দিয়ে তার ভদ্রবেশী জামাইকে ভ*স্মীভূত করে চলেছে। একপর্যায়ে তূর্ণ’র চোখে চোখ পড়লো দুয়া’র। তূর্ণ চোখের ইশারায় শুধালো ” কি? এক্সামে মনোযোগ দে। ” দুয়া রাগত চাহনিতে তাকিয়ে দৃষ্টি সরিয়ে নিলো। মনোযোগ দিলো পরীক্ষায়। তূর্ণ মুচকি মুচকি হেসে চলেছে।
°

পরীক্ষা হল থেকে বেরিয়ে এলো দুয়া এবং বন্ধুমহল। তৃষা এবং পুষ্পি অবশ্য অনুপস্থিত। বিশাল খ্যাক খ্যাক করে চলেছে,

” আদ্রিয়ান স্যার আস্ত নি|ষ্ঠুর। ক্যামনে পারলো আমারে নিঃস্ব করতে? হ্যার লাগি আমার কনফার্ম পাশ করা সাবজেক্ট এখন দোদুল্যমান। পাশ ও ফেলের মাঝখানে গড়াগড়ি খাইতাছে। এইসব সহ্য করা যায়? ”

দুয়ার দিকে তাকিয়ে,

” এই দুয়া ছে ম ড়ি? তোর ধারে বিচার দিলাম। তুই বিচার করবি এর। কেমন বউ তুই? স্বামীরে টাইট দিতে পারোছ না? ”

দুয়া এক্সাম হল থেকেই বেরিয়েছে থমথমে মুখে। চোয়াল তার শক্ত। বিশালের কথায় আগুনে ঘি ঢেলে দেয়ার মতো অবস্থা হলো। খ্যাক করে উঠলো মেয়েটা।

” সারাবছর পড়ালেখা করবি না আর পরীক্ষা শেষে স্যারদের দোষারোপ করবি? স্যাররা কি পরীক্ষার হলে গা*ঞ্জা খাইতে আসে? ওনারা ডিউটি দেবে না? ছা”গল একটা। ”

বড় বড় কদম ফেলে সেথা হতে প্রস্থান করলো দুয়া। বন্ধুমহল তো অবাক!

” যাহ্ বাবা! এই মাইয়া কার রাগ আমার ওপর ফি’ক্কা
মা”রলো? হাঁ? ”

চলবে.

[ কেমন লাগলো হাস্যরসাত্মক পর্বটি? কমেন্ট করে জানাবেন কিন্তু। ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here