#আমার_ফুলবাবু❀
#পর্ব_০৫ & ০৬
#ফিহা_আহমেদ(লেখনীতে)
(❌কপি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ❌)
#৫.
‘কাকি আম্মা ঝুমা পড়াশোনা করে না?'(ইভান)
— কইত্তো রে বাপ।খায়ের এর লাইগা মাইডার পড়ালেহা বন্ধ কইরা দিছি।(লতা মন খারাপ করে বললো)
— এইডা কোনো কথা হইলো কাকি আম্মা।আন্নে ঝুমারে ভর্তি করাই দেন।আমি আছি যদি খায়ের কিছু করে হাত-পা ভাইঙ্গা ঘরে বসাই দিয়াম নি।(ইভান)
— ঠিক আছে বাপ।তুই গিয়া ঝুমারে ভর্তি করাই দিয়া আয়।(লতা)
— ঠিক আছে কাকি আম্মা।(ইভান)
______
ইভান ঝুমাকে নিয়ে গ্রামের স্কুলে নিয়ে আসলো।
— আরে ইভান যে কেমন আছো?
— ভালা আছি। আন্নে কেমন ভালা আছেন স্যার?(ইভান)
— আলহামদুলিল্লাহ ভালো। তা ঝুমাকে নিয়ে স্কুলে কেন?
— স্যার ওরে এইহানে ভর্তি করাইতে নিয়া আসছি।(ইভান)
— আচ্ছা আমার সাথে এসো।ভর্তির সব কাগজ-পত্র নিয়ে আসছো?(স্যার)
— কিরে ঝুমা নিয়া আইছচ সব?(ইভান)
— হ ভাই নিয়া আইছি।(ঝুমা)
ইভান ঝুমাকে অষ্টম শ্রেণিতে ভর্তি করিয়ে দিল।
— ভালা কইরা পড়াশোনা করবি। ভালো রেজাল্ট করলে শহরে নিয়া তোরে পড়াশোনা করামু। (ইভান)
— সত্যি কইতাছ ইভান ভাই।(ঝুমা খুশি হয়ে বললো)
— হ সত্যি কইতাছি।(ইভান)
— ইভান ভাই একখান কথা কই?(ঝুমা)
— বইলা পেল।(ইভান)
— আন্নে শহরে কহন যাইবেন?(ঝুমা)
— কালকেই চইলা যামু। (ইভান)
ইভানের কথায় ঝুমার মন খারাপ হয়ে গেল।
ঝুমা মন খারাপ করে বললো ,,,,
— কাইল কি যাইবেন গা।আর কটাদিন থাহেন না।
— কেন রে?(ইভান)
— এমনেই।(ঝুমা)
— পরীক্ষা শুরু হইবো দু’দিন পর থাইকা।তাই কালকেই চইলা যামু।(ইভান)
— বুজচ্ছি।(ঝুমা)
______
— আরে আন্নে এই বাড়িতে কেন?(জুঁই)
— আজব তোমায় বলতে হবে নাকি আমি কেন এসেছি। আমি ধ্রুবর সাথে দেখা করতে এসেছি। ভেবে পাই না ধ্রুব এমন গাইয়া মেয়ে বিয়ে করলো কিভাবে।(আয়রা)
— আন্নে আমায় গাইয়া কইলেন কেন?(জুঁই)
— ফালতু মেয়ে তোমার সাথে তর্কে না যাওয়াই ভালো।(আয়রা মুখ ভেংচিয়ে বললো)
আয়রা ধ্রুবর রুমে ডুকতে যাবে জুঁই বাঁধা হয়ে সামনে দাঁড়ালো।
— সমস্যা কি তোমার সামনে থেকে সরো বলছি।(আয়রা)
— যাইতাম না আমি। অন্য বেডি আমার সোয়ামীর রুমে যাইবো না।(জুঁই)
— সরে দাঁড়াবে নাকি ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিতে হবে।(আয়রা রেগে যাব)
জুঁইকে দরজার সামনে থেকে সরতে না দেখে আয়রা হাত উঠিয়ে থাপ্পড় দিতে যাবে তার আগেই কেউ আয়রার হাত ধরে ফেললো।
— ফিহা তুমি। (আয়রা)
— হ্যাঁ আমি।তুমি জুঁইকে থাপ্পড় মারতে গেলে কেন?(ফিহা)
— এমন একটা গাইয়া মেয়েকে তুমি ভাবি কি করে মেনে নিচ্ছ।ভাবতেই অবাক লাগছে।দেশে কি মেয়ের অভাব ছিল।তাই বলে এমন ,,,,, (আয়রা)
— সেটা আমাদের ফ্যামিলির ব্যাপার।তুমি হাত ওঠালে কেন জুৃঁইয়ের ওপর।তোমায় এত বড় স্পর্ধা কে দিয়েছে। আর তোমায় বাড়িতে কে ঢুকতে দিয়েছে। মা …… মা। (ফিহা মাকে চিৎকার করে ডাকা শুরু করলো)
তাহিরা রুম থেকে বেরিয়ে আসলো।
— ফিহা মা কি হয়েছে?(তাহিরা)
— মা এই অসভ্য মেয়েকে বাড়িতে ঢুকতে দিয়েছে কে?তুমি জানো এই মেয়ে জুঁইয়ের গায়ে হাত তুলতে চেয়েছে। জুঁইকে কটু কথা শুনিয়েছে।(ফিহা রেগে বললো)
— আয়রা তুমি এসেছ ভালো কথা জুঁইকে অপমান করছো কেন?(তাহিরা)
— আমি ধ্রুবর কাছে এসেছি আন্টি।কিন্তু এই অসভ্য মেয়েটা আমায় ধ্রুবর রুমে ঢুকতে দিচ্ছে না।(আয়রা)
— অসভ্য জুঁই নয়।অসভ্য তুৃমি।(ফিহা)
বলে ফিহা আয়রার হাত ধরে টেনে বাড়ির দরজার বাহিরে এনে আয়রার মুখের ওপর দরজা বন্ধ করে দিল।
— পরে দেখে নিব এই গাইয়া মেয়েটাকে আমি।(আয়রা)
বলে আয়রা রেগে চলে গেল।
— জুঁই তুমি দরজা খুলেছ?(ফিহা)
জুঁই মাথা নিচু করে বললো ,,,,,
— হুম।
— এখন থেকে কেউ আসলে আমি দরজা খুলব ঠিক আছে। (ফিহা জুঁই এর মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললো)
— ঠিক আছে আপামনি। (জুৃঁই)
— জুঁই ভাইয়ার ঘুৃম ভাঙ্গেনি।(ফিহা)
— এহন ও ঘুমায়।(জুঁই)
— তাহলে গিয়ে উঠিয়ে দেও।যাও।(ফিহা)
— না।(জুঁই)
— ভয় লাগছে।ভয় পয়ো না।যাও উঠিয়ে দেও।বলবে আজ মেলা আমরা সবাই ঘুরতে যাব।যাও জুঁই।(ফিহা)
— আইচ্ছা। যাইতাছি। (জুঁই)
_____
— কে ধাক্কাধাক্কি করছে।(ধ্রুব ঘুমো ঘুমো কন্ঠে বললো)
জুঁই কিছু না বলে ধ্রুবর পিঠে হাত দিয়ে ধাক্কিয়ে যাচ্ছে।ধ্রুব চোখ খুলে পিছনে ফিরে দেখে জুঁই হাত দিয়ে ধাক্কিয়ে যাচ্ছে।
— এই মেয়ে ধাক্কাচ্ছ কেন?(ধ্রুব ধমক দিয়ে বললো)
জুঁই দ্রুত সরে দাঁড়ালো।জুঁই মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে।
— কথা বলছো না কেন?আমার ঘুমের বারোটা বাজিয়ে দিলে তুমি। (ধ্রুব ধমক দিয়ে বললো)
— আপামনি কইছে আন্নেরে ঘুমের থাইকা উঠাই দিতাম।আমাগো সবাইরে মেলায় নিয়া যাইতেন।(জুঁই ভয়ে ভয়ে বললো)
জুঁইয়ের ভীতু মুখের দিকে ধ্রুব স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো।
— মেয়েটার ভীতু মুখটা এতো কিউট লাগছে কেন।এই মেয়ের ওপর রাগ করতেই পারি না আমি।তবে কি মায়ের কথা সত্যি হতে যাচ্ছে। আমি কি মেয়েটাকে পছন্দ করতে শুরু করে দিয়েছি।(ধ্রুব জুঁইয়ের দিকে তাকিয়ে মনে মনে বললো কথাটি)
জুঁই চলে যেতে নিবে ধ্রুব পিছন থেকে বলে উঠলো ,,,,,
— সবাইকে বলো রেডি হতে মেলায় যাব।
জুঁই ধ্রুবর দিয়ে ফিরে খুশি হয়ে বললো ,,,,,
— সত্যি ফুলবাবু।
জুঁইকে খুশি হয়ে কথা বলতে দেখে ধ্রুব হাসলো কিছু বললো না।জুঁই দৌঁড়ে ফিহার রুমে আসলো।
— আপামনি আপামনি।(জুঁই)
— কি খবর মেডাম স্যার রাজি হলো?(ফিহা)
জুঁই লজ্জা পেল ফিহার কথায়।
— হুম।(জুঁই লজ্জা ভাব নিয়ে বললো)
— কিহ্। এটা ও সম্ভব। ভাই তাহলে চেঞ্জ হচ্ছে। বাহ্ জুঁই বাহ্।এত দ্রুত আমার পেয়ারে ভাইটাকে বদলে দিচ্ছ তুমি।(ফিহা)
জুঁই কিছু না বলে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মুচকি হাসছে।
— আচ্ছা শোন তুমি সবুজ রঙের কাপড় নিয়ে এসো।আমি তোমায় তোমায় পড়িয়ে দিয়ে সুন্দর করে সাজিয়ে দিব।যাও। (ফিহা)
জুঁই মাথা নাড়িয়ে চলে গেল।
______
ফিহা জুঁইকে সুন্দরভাবে কাপড় পড়িয়ে নিজে ও নীল রঙের কাপড় পড়ে নিল।
— হয়েছে তোমাদের।(ধ্রুব)
— হলো ভাই। আসছি।(ফিহা রুম থেকে চেঁচিয়ে বললো)
— মা তুমি ও আমাদের সাথে আসো।(ধ্রুব)
— বাচ্চাদের মতো কথা বলছিস কেন ধ্রুব। এখন কি আমার ঘুরাঘুরির বয়স।তোরা যা ঘুরাঘুরি কর।আমি রেস্ট করি।(তাহিরা)
ধ্রুব হাসলো মায়ের কথায়।
— চল ভাই। (ফিহা)
জুঁইয়ের দিকে তাকাতেই ধ্রুব থমকে গেল।
— এই সবুজ রঙের কাপড়টি তৈরি হয়েছে যেন জুঁইফুলের জন্য ই।মা-শা-আল্লাহ। জুঁইফুল তো আমায় তার প্রেমে ফেলে দিচ্ছে। কন্ট্রোল ধ্রুব কন্ট্রোল।
— উহুম উহুম। ভাই দেখেই যাবি।যাবি না।(ফিহা)
ফিহার কথা শুনে ধ্রুব দ্রুত জুঁই এর থেকে চোখ সরিয়ে নিল।
— তো যাওয়া যাক।(ধ্রুব কোনোরকমে কথাটি বললো)
®ফিহা আহমেদ
_____
#৬.
তিনজন মেলায় চুড়ির দোকানে দাঁড়িয়ে আছে।ফিহা একেক রঙের চুড়ি বের করে জুঁইয়ের হাতে পড়িয়ে পড়িয়ে দেখছে।
— ভাই নীল রঙটা ঠিক আছে দেখ তো।(ফিহা)
ধ্রুব কিছু না বলে অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে নিল।
— আমি একটু আসছি তুই জুঁইয়ের সাথে থাক।(ফিহা)
বলে ফিহা তাদের দু’জনকে রেখে অন্য দোকানে চলে গেল।জুঁই হাত দিয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে চুড়ি গুলো দেখছে।ধ্রুব জুঁইকে পর্যবেক্ষণ করছে।
— মামা ঝুড়িটা দেন তো।(ধ্রুব)
ধ্রুবর কথায় জুঁই অবাক হলো।
— ঝুড়ি দিয়া কি করবেন ফুলবাবু?(জুঁই)
— তুমি জেনে কি করবে?(ধ্রুব)
জুঁই মুখ ফুলিয়ে গালে হাত রেখে বলে ,,,,,
— আন্নের মেয়ে বান্ধবীগরে দিবেন।
জুঁই এর কথায় ধ্রুবর কাশি ওঠে গেল।জুঁই ধ্রুবর পিঠে হালকা হালকা করে থাপ্পড় দিয়ে চুড়িওয়ালাকে বলে উঠলো ,,,,,
— মামা আন্নের দোকানে পানি আছে?
চুড়িওয়ালা পানির বোতল এগিয়ে দিল।জুঁই ধ্রুবর সামনে পানির বোতল ধরে বললো ,,,,,
— নেন পানি খান।
ধ্রুব ঢকঢক করে পানি খেল।ধ্রুবর অবস্থা দেখে জুঁই মুখ টিপে হাসছে।ধ্রুব যে তার কথায় বিষম খেল জুঁই ভালো করেই বুঝেছে।জুঁইয়ের বয়স পনেরো বছর।জুঁই ওতোটা ও অবুঝ নয়।জুঁইকে মুখ টিপে হাসতে দেখে ধ্রুব ধমক দিয়ে বললো ,,,,,
— এই মেয়ে হাসছো কেন?
জুঁই থতমত খেয়ে বললো ,,,,,
— কই হাসলাম।এটা আমার একখান রোগ ফুলবাবু।
— মুখ টিপে হাসি আবার কারোর রোগ হয়।আমায় বোকা বানাচ্ছো।(ধ্রুব)
— সত্যি কইতাছি এটা আমার রোগ ফুলবাবু।(জুঁই কাঁদো কাঁদো হয়ে বললো)
— কতবড় ফাজিল মেয়ে আমায় বোকা বানাচ্ছে।(ধ্রুব জুঁইয়ের দিকে তাকিয়ে মনে মনে বললো)
— আমার সামনে আসো।(ধ্রুব)
ধ্রুবর কথায় জুঁই ধ্রুবর সামনে এসে দাঁড়ালো।
ধ্রুব একেক রঙের একটা করে চুড়ি জুঁইয়ের হাতে পড়িয়ে দিয়ে দেখছে জুঁইকে কোন রঙটা মানাবে।সব রঙের চুড়ি দেখা শেষ লাল ছাড়া।
— মামা লাল রঙেরটা দেন তো।(ধ্রুব)
জুঁই ধ্রুবর দিকে হা করে তাকিয়ে আছে।
— মুখে মশা ডুকে যাবে।মুখ বন্ধ করো।(ধ্রুব)
ধ্রুবর কথায় জুঁই লজ্জা পেয়ে অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে নিল। ধ্রুব লাল রঙের চুড়িগুলো জুঁইয়ের হাতে পড়িয়ে দিয়ে বললো ,,,,,
— হুম।পারফেক্ট।মামা চুড়িগুলো প্যাক করে দেন সাথে কালো রঙের গুলো ও দিবেন।
ধ্রুবর কথামতো চুড়িওয়ালা লাল-কালো রঙের চুড়িগুলো প্যাক করে দিল।
ফিহা দূর থেকে ব্যাপারটা উপভোগ করলো।ফিহা ইচ্ছে করেই সরে এসেছে তাদের দু’জনের থেকে।তাদের দু’জনকে একা ছেড়ে দিল।
— এই পাগলগুলো কখন আসবে।এই দু’জনের মাঝে এতক্ষণ আমি কাবাব মে হাড্ডি হয়েছিলাম। এখন একা একা বোর হচ্ছি।(ফিহা)
ফিহার পিছন থেকে কেউ বলে উঠলো ,,,,
— কাবাব মে হাড্ডি আর হতে হবে না সুন্দরী আমি চলে এসেছি।
ফিহা পিছনে ফিরতেই চোখ দু’টো আপনাআপনি বড় হয়ে গেল।
— ফাহাদ ভাইয়া তুমি।তুমি এখানে কি করছো?(ফিহা)
— আমার জানকে দেখতে ইচ্ছে করছে তাই চলে আসলাম মেলায়।কোনো সমস্যা তোর।(ফাহাদ)
— তো তোমার জানকে গিয়ে দেখ এখানে কি করছো।যাও এখান থেকে বলছি।ভাইয়া দেখলে কি ভাববে।(ফিহা)
— দেখুক তাতে আমার ই ভালো।তোরে ধরে বেঁধে আমার সাথে বিয়ে দিয়ে দিবে।(ফাহাদ হেসে বললো)
(ফাহাদ ধ্রুবর ছোট বেলার বন্ধু।ফাহাদ ফিহাকে ছোটবেলা থেকেই লাইক করে।ফিহা ও ফাহাদকে লাইক করে। কিন্তু ধ্রুবকে ভীষণ ভয় পায় ফিহা। ধ্রুবর ভয়ে এগোতে পারছে না ফিহা)
— ভাইয়া প্লিজ যাও।(ফিহা)
— যাব না।(ফাহাদ)
— তোমার যখন আমায় এতো ই বিয়ের করার শখ আমার ফ্যামিলির কাছে যাও।(ফিহা)
— ঠিক আছে যাচ্ছি।(ফাহাদ)
ফাহাদকে সামনে এগোতে দেখে ফিহা ফাহাদের হাত ধরে ফেললো।
— আরে ভাইয়া তুমি কোথায় যাচ্ছো?(ফিহা ভীতু কন্ঠে বললো)
— কোথায় আবার তোর ভাইয়ার কাছে।আমার আর তোর বিয়ের কথা বলতে।(ফাহাদ হেসে বললো)
— তুমি কি পাগল হয়ে গেছ। প্লিজ যাও এখান থেকে।(ফিহা)
— এক শর্তে যেতে পারি।(ফাহাদ)
ফাহাদ একটা শাড়ির প্যাকেট ফিহার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললো ,,,,,,
— আগামীকাল শাড়িটি পড়ে ভার্সিটিতে আসবি।
— কিন্তু ,,,,, (ফিহা)
— ঠিক আছে আমি তোর ভাইয়ার কাছে যাচ্ছি।(ফাহাদ)
— আচ্ছা ঠিক আছে পড়ে আসব।(ফিহা)
— এইতো গুড গার্ল।(ফাহাদ)
— এখন তো যাও প্লিজ।(ফিহা ফাহাদের দিকে অসহায় ভাবে তাকিয়ে বললো)
— যাচ্ছি।নিজের খেয়াল রাখবি।আল্লাহ হাফেজ।(ফাহাদ)
বলে ফাহাদ চলে গেল।ফাহাদ চলে যেতেই ফিহা সস্তির নিঃশ্বাস ফেললো।
ফাহাদ যাওয়ার পাচঁ মিনিট পর ই নুশা, পিকু আর নিহা ফিহার সামনে এসে দাঁড়ালো।ফিহা তাদের দেখে মুখ ফিরিয়ে নিল।
— আরে ফিহু জানু রাগ করছো কেন একটু ই তো দেরি হলো। (পিকু ফিহাকে জড়িয়ে ধরে বললো)
— এতক্ষণ লাগলো আসতে?(ফিহা)
— সরি বললাম তো।(পিকু)
— ঠিক আছে যা মাপ করে দিলাম।(ফিহা)
— চল ফুচকা খেতে খেতে আড্ডা দেওয়া যাক।(নুশা)
— ঠিক আছে চল।(ফিহা)
______
ধ্রুব জুঁইকে নিয়ে ফুলের দোকানে এসে দাঁড়ালো।ধ্রুব ফুলের ঝুড়ি থেকে একখানা বেলীফুলের গাজরা হাতে নিয়ে জুঁইয়ের চুলের খোঁপায় পড়িয়ে দিল।ধ্রুবর একেকটা কাজে যেন জুঁইয়ের হার্ট অ্যাটাক করার মতো অবস্থা হয়ে গেছে।অবশ্য জুঁইয়ের ভালোই লাগছে।কারন সে তার ফুলবাবুকে ভালোবাসে।
— ভাই আপনার বউয়ের খোঁপায় বেলীফুলের গাজরাটা দারুণ মানিয়েছে।(ফুলওয়ালা)
ধ্রুব ধন্যবাদ বলে জুঁইকে নিয়ে দোকান থেকে সরে আসলো।
— কিছু খাবে?(ধ্রুব)
— বাদাম খামু।(জুঁই ঝটপট কথাটি বললো)
ধ্রুব মুচকি হাসলো।ধ্রুব জুঁইয়ের হাত ধরে বললো ,,,,
— চল আমার সাথে।
কিছুক্ষণ হাঁটার পর ধ্রুব জুঁইকে নিয়ে ছোট্ট একটা দোকানের সামনে এসে দাঁড়ালো।
— মামা এক প্যাকেট বাদাম দেন তো।(ধ্রুব)
বাদামওয়ালা বাদামের প্যাকেট দিল ধ্রুবর হাতে।ধ্রুব জুঁইকে দোকানের সাথে থাকা বেঞ্চে বসিয়ে দিয়ে বললো ,,,,,
— এখানে বসে খাও।
— আন্নে খাইতেন না ফুলবাবু?(জুঁই)
— না।তুমি খাও।(ধ্রুব)
জুঁই মাথা নাড়িয়ে প্যাকেট থেকে বাদাম বের করে খাওয়া শুরু করলো।আর ধ্রুব গালে হাত দিয়ে জুঁইয়ের খাওয়া দেখছে।
হঠাৎ ধ্রুব জুঁইয়ের হাত থেকে বাদামের প্যাকেটটি নিয়ে নিল।হঠাৎ এমন হওয়াতে জুঁই চমকে উঠলো।জুঁই ধ্রুবর দিকে তাকালো।ধ্রুব প্যাকেট থেকে বাদাম বের খাওয়া শুরু করলো। নিজে কয়েকটা খেয়ে জুঁইকে হা করতে বললো।জুঁই তো ধ্রুবর কর্মকাণ্ড দেখে ই হা হয়ে রয়েছে।ধ্রুব জুঁইয়ের মুখে বাদাম দিয়ে দিল।
পিছন থেকে ফিহা এসে বললো ,,,,,
— ভাই হলো তোদের চল বাড়ি যাই এবার।মা টেনশন করছে।
ফিহার কথায় ধ্রুব হুঁশে আসলো।জুঁইয়ের সাথে সাথে ধ্রুব ও বাচ্চাদের মতো আচরণ শুরু করলো।
— এসব কি করছি আমি।ধ্রুব এই মেয়েটা তো তোকে প্রেমের জালে ফাঁসাচ্ছে।(ধ্রুব মনে মনে বললো)
— হ্যাঁ চল।(ধ্রুব)
ধ্রুব উঠে চলে গেল সামনে।ফিহা জুঁইয়ের হাত ধরে নিয়ে আসলো।
______
— এতো দেরি হলো কেন আসতে?(তাহেরা)
— মা আসলে একটু ঘুরাঘুরি করেছি তো তাই লেট হয়ে গেল।সরি মা। (ফিহা)
তাহিরা ধ্রুবর দিকে তাকাতেই ধ্রুব মুচকি হেসে রুমে চলে গেল।
— যাক ছেলেটা লাইনে আসতাছে।(তাহিরা)
বলে তাহিরা জুঁইয়ের কপালে চুমু দিল।জুঁই লজ্জা পেয়ে দৌঁড়ে রুমে চলে গেল।তাহিরা আর জুঁই পিছন থেকে হাসা শুরু করলো।
— বুঝলে মা তোমার ছেলে না আজ অনেক কান্ড ঘটিয়েছে। যা আমি নিজের চোখে দেখলাম।আমার এখন ও বিশ্বাস হচ্ছে না এটা আদোও কি আমার ধ্রুব ভাই।(ফিহা)
— কি করেছে আমার ধ্রুব ফিহা?(তাহিরা)
তারপর ফিহা মেলায় ঘটে যাওয়া সব ঘটনা বলতে শুরু করলো মাকে।তাহিরা সব শুনে মনের মধ্যে শান্তি পেল।
#চলবে…..
#ফিহা_আহমেদ(লেখনীতে)
(বানানে ভুল-ভ্রান্তি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।)
[❌কপি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ❌]/[গল্পের কোনো অংশ ই কপি করা যাবে না]