মিশেছো_আলো_ছায়াতে #Writer_Sintiha_Eva #part : 07

0
427

#মিশেছো_আলো_ছায়াতে
#Writer_Sintiha_Eva
#part : 07

🍁🍁🍁

সায়ন : এভাবে কোথায় যাচ্ছিস। খেয়ে যাহ।

সায়নের কথায় সিমথি ঘাড় ঘুরিয়ে খাবার টেবিলের দিকে তাকায়। রহিমা বেগম কে বসে থাকতে দেখে ঘাড় ফিরিয়ে নেয়। শান্ত গলায় বলে,,,,

সিমথি : খিদে নেয়।

সিমথি চলে যেতে নিলে সায়ন এডে হাত টেনে ধরে। কাটা জায়গায় জোরে চাপ পড়তেই সব্যথায় সিমথি চোখ-মুখ কুঁচকে ফেলে। তবুও নিজেকে স্বাভাবিক রেখে সায়নের দিকে তাকায়। ইফাজ আর রোজ ও এসে সায়নের পাশে দাঁড়ায়।

সিমথি : ভাইয়া প্লিজ ফোর্স করবি না। আমি খাবো না।

সিমথির কথায় সায়ন পাত্তা না দিয়ে মিমের দিকে তাকায়। মিম খাবার আনতে চলে যায়। সায়ন সিমথিকে টেনে সোফায় নিয়ে বসিয়ে দেয়। ব্যান্ডেজ ছাড়া কাটা জায়গায় চাপ পড়তেই গলগলিয়ে র/ক্তপাত শুরু হয়। মিম খাবার টেবিলে রাখতেই সায়ন খাবার হাতে নেয়। প্লেট থেকে রুটি ছিড়তে নিলেই হাতের দিকে তাকিয়ে চমকে যায়।

সায়ন : আমার হাতে র/ক্ত আসলো কোথা থেকে

সায়নের কথায় মিম ব্যস্ত গলায় বলে,,,

মিম : কোনো আক্কেল জ্ঞান নেয়। হাত কিভাবে কাটলে।

মিমের কথায় সায়ন বোকার মতো উত্তর দেয় ,,,,

সায়ন : আমি জানি না। আমার হাত তো কাটেনি।

আচমকা সায়নের কিছু মনে পড়তেই সায়ন সিমথির হাতের দিকে তাকায়। সঙ্গে সঙ্গে সায়নের বুক টা মোচড় মেরে উঠে। সিমথির হাত টেনে ব্যতিব্যস্ত গলায় চেঁচিয়ে উঠে,,,,,

সায়ন : মিম তাড়াতাড়ি ফাস্ট এইড বক্স নিয়ে আসো।

সায়নের কথায় সবাই সিমথির হাতের দিকে তাকায়। মিম দৌড়ে ফাস্ট এইড বক্স আনতে চলে যায়। রোজ সিমথির সামনে হাঁটু গেড়ে বসে পড়ে। ইফাজ সিমথির বা পাশে সোফায় বসে।

ইফাজ : তোর হাত কিভাবে কাটলো সিমথি।

ইফাজের কথায় সিমথি স্বাভাবিক দৃষ্টিতে সায়নের দিকে তাকায়। অতঃপর শান্ত গলায় বলে উঠে,,,,

সিমথি : হয়তো কোথাও লেগেছে। জানি না সঠিক।

সিমথির এমন কথায় সায়ন রেগে যায়।

সায়ন : একটা থা/প্প/ড় লাগাবো বোকা ভাবিস আমাদের। আমি বুঝিনি কার রাগ কার উপর ঝেড়েছিস।

ইফাজ : আহ সায়ন চুপ কর। সিমথি এদিকে তাকা।

ইফাজের কথায় কোনোরকম ভ্রুক্ষেপ না করে উঠে দাঁড়ায়।

সিমথি : আমার লেট হচ্ছে। বাই

সিমথি চলে যেতে নিলে সায়ন সিমথির কনুইয়ের কাছে টান দিয়ে পুনরায় বসিয়ে দেয়। অতঃপর চেঁচিয়ে উঠে,,,,

সায়ন : মিম তোমার আসতে এতোক্ষণ লাগে।

সায়নের চেঁচানো তে মিম দৌড়ে আসতে আসতে থমকে যায়। এই প্রথম সায়ন মিমের সামনে উঁচু গলায় কথা বললো। মিম কে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে সায়ন উঠে মিমের হাত থেকে বক্স টা নিয়ে ঝাঁঝালো কণ্ঠে বলে,,,

সায়ন : বেক্কলের মতো দাঁড়িয়ে আছো কেনো।

মিম কান্না আটকে সায়নের দিকে তাকায়। সায়ন দ্রুত সিমথির পাশে বসে হাত টেনে নিজের কোলে রাখে। অতঃপর যত্নসহকারে হাত টা ব্যান্ডেজ করে দেয়। রাগান্বিত সুরে সিমথির দিকে তাকিয়ে বলে,,,,

সায়ন : আর কোনোদিন অন্যের রাগ নিজের উপর ঝাড়লে তোকে আমি জাস্ট মে/রে দেবো।

সায়নের দিকে তাকিয়ে সিমথি অদ্ভুত একটা হাসি দেয়।

সিমথি : ভাবীপুর সাথে নেক্সট আরেকদিন এমন বিহেভ করলে তোকে আমি মে/রে দেবো গট ইট।

সিমথির কথায় সায়ন ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়। কই সায়ন রেগে আছে বোন হয়ে রাগ ভাঙ্গাবে তা না মায়ের মতো উল্টো ওকেই শাসন করছে। সিমথি উঠে মিমের কাছে চলে যায়।

সিমথি : ও ভাবীপু

সিমথির এই ডাক টা শুনলেই মিমের মন ভালো হয়ে। মিম হাসি মুখে সিমথির দিকে তাকায়। মেয়েটার মাঝে অদ্ভুত কিছু আছে। একপলক তাকালে নিমিষেই মন ভালো হয়ে যায়। সিমথি মিমের চোখের দিকে তাকিয়ে বেখেয়ালি স্বরে বলে উঠে,,,,

সিমথি : কান্না করো না। ভাইয়া এমনই। একটু শাসন করে ঠিক করে নাও।

সিমথির কথায় মিম হাসে।

সিমথি : বাই।

সায়ন সিমথিকে পেছন থেকে খেয়ে যাওয়ার জন্য অনেকবার ডাকে। কিন্তু সিমথি সায়নের ডাক কানে না তুলে বেরিয়ে যায়।

______________

গ্রীষ্মের প্রখর রোদে জনসাধারণের মন যখন এক পশলা বর্ষণের জন্য অপেক্ষা মান। তখনই অম্বর জুড়ে কালচে মেঘের আনাগোনা। ঝড়ো হাওয়ায় রাস্তায় অবহেলায় পড়ে থাকা ধুলোগুলো স্বাধীনভাবে উড়তে শুরু করে। এরই মাঝে হঠাৎ হঠাৎ বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। সময়ের পালাক্রমে আকাশের বুক ছিড়ে বেরিয়ে আসা শীতল পানির কণা উত্তপ্ত শহরকে মুহুর্তের মধ্যে শীতল করে দেয়। ঘড়ির কাটায় তখন দুপুর একটা বাজে। মেঘা ঘড়ির দিকে তাকিয়ে উপরের ঠোঁট দিয়ে নিচের ঠোঁট চেপে ধরে টেনশনে। ভয়াবহ বৃষ্টিপাতের জন্য রাস্তায় কোনো রিকশা বা কিছুই নেই। আবার নেটওয়ার্কের ও বড় সমস্যা হচ্ছে। আজ যদি নিজের গাড়িটা নিয়ে আসতো তাহলেই এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হতো না। কথাগুলো মনে মনে ভেবে মেঘা নিজেই নিজেকে গালিগালাজ করতে থাকে। আচমকা পাশে কারো উপস্থিতি অনুভব করতেই মেঘা চমকে পাশে তাকায়। পাশের লোকটা কে দেখে মেঘা দুপা পিছিয়ে যায়। ভয়ে দুটো ঢোক গিলে।

মেঘা : আজ তুই শেষ মেঘা। ( মনে মনে)

মেঘাকে এভাবে পিছিয়ে যেতে দেখে সামনে ব্যক্তিটা বাঁকা হাসে। মেঘার দিকে দুপা এগিয়ে যায়। মেঘা ভয়ে ভয়ে লোকটা কে উদ্দেশ্য করে প্রশ্ন ছুঁড়ে মারে,,,,

মেঘা : আপনি এখানে কি করছেন?

মেঘার কথায় লোকটা শব্দ করে হেসে দেয়। যেনো মেঘা কোনো জোকস বলেছে আর সামনে লোকটা তা শুনে মজা পেয়েছে। মেঘা বোকার মতো লোকটার হাসির দিকে তাকিয়ে থাকে আর মনে মনে ভাবতে থাকে হাসার মতো কি বললো।

মেঘা : উফফস আয়াশ প্লিজ হাসবেন না!

আয়াশ এবার চোয়াল শক্ত করে মেঘার দিকে এগিয়ে যায়।

আয়াশ : চড়িয়ে গাল লাল করে দেবো। কি তখন থেকে আপনি আপনি করছো।

আয়াশের কথায় মেঘা একটা শুকনো ঢোক গিলে। ভয়কে ভেতরে চাপা দিয়ে রাগ মিশ্রিত স্বরে বলে,,,

মেঘা : আপনি কও আমার বর লাগেন যে তুমি তুমি করবো হাহ।

মেঘার কথায় আয়াশ এবার দারুন চটে যায়। মেঘার খোলা চুলগুলো মুঠোয় পুরে নিজের দিকে টান দেয়। মেঘা আশ্চর্য হয়ে ব্যথায় চোখ মুখ খিঁচে নেয়।

আয়াশ: বড্ড বাড় বেড়েছিস। রাত থেকে ফোন দিচ্ছি ধরিস না কেনো। ঢং করিস আমার সাথে।

মেঘা : চুল ছাড়ুন ব্যথা পাচ্ছি। নিমোকারাম একটা তিনমাস ধরে ফোন দেন না। আমি নিজে থেকে দিলে ইগনোর করেন। এখন আসছে ভালোবাসা দেখাতে।

মেঘার কথায় আয়াশ চুলে আরো জোরে চাপ দেয়। দাঁতে দাঁত চেপে মেঘার মুখের কাছে মুখ নিয়ে বলে,,,,

আয়াশ : এটা হলো কথায় কথায় ভাইয়া ডাকার শাস্তি। মনে আছে ওইদিন সবার সামনে ভাইয়া ডেকেছিলে।

মেঘা : তো কি আদি ভাইয়া দের সামনে ওগো শুনছো বলে ডাকতাম। নিষ্ঠুর লোক চুল ছাড়ুননননন।

আয়াশ মেঘাকে ধাক্কা দিয়ে ছেড়ে দেয়। মেঘা পড়তে পড়তে নিজেকে কন্ট্রোল করে। রাগান্বিত দৃষ্টিতে আয়াশের দিকে তাকায়। ইচ্ছে করছে লোকটা মাথা ফা/টি/য়ে দিতে। অ/স/ভ্য একটা ।

আয়াশ : আমাকে মনে মনে বকা অফ কর।

মেঘা : এই চুপ থাকুন তো। সহ্য হচ্ছে আপনাকে আমার। কোন পা/গ/লে ধরেছিলো আপনাকে ভালোবাসলাম।

আয়াশ : সো স্যাড । কি আর করবে বলো। সবই তোর ব্যাড লাক।

মেঘা : হুমম জানি জানি।

মেঘা গাল ফুলিয়ে অন্যদিকে তাকায়। আয়াশ মুচকি হেসে দেয়। এক পা এক পা করে মেঘার,দিকে এগিয়ে যায়। আচমকা পেছন থেকে মেঘাকে ঝাপটে ধরে। মেঘা পড়তে পড়তে নিজেকে সামলে নেয়। রাগান্বিত দৃষ্টিতে আয়াশের দিকে তাকালে আয়াশ একটা ইনোসেন্ট লুক দেয়।

আয়াশ : সরি মেঘপরী।

আয়াশের কথায় মেঘা ভ্রুক্ষেপহীন দৃষ্টিতে আকাশের দিকে তাকায়। বৃষ্টি অনেকটাই কমে এসেছে। এবার হসপিটালের পৌঁছাতে হবে নয়তো সিমথির কাছে ঝাড়ি খেতে হবে। মেঘা আয়াশকে ছাড়াতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। কিছুতেই আয়াশের সাথে কথা বলবে না। কি পেয়েছে ওকে। যখন তখন ওর উপর রাগ ফলাবে। আর এমন হবে না। মানবে না এই জুলুমবাজী মেঘা। সামান্য ভাইয়া ডাকার জন্য তিনমাস কথা অফ। কতবড় পাষাণ লোক টা।

আয়াশ : ও মেঘপরী কথা বলবে না।

মেঘা : ছাড়ুন ওটি আছে আমার। এমনি লেট হয়েছে। সিমথি আজ আমাকে সেই ঝাড় দেবে।

আয়াশ : উহু শ্যালিকা জানে তার বান্ধবী এখন বান্ধবীর জামাইয়ের সাথে আছে।

মেঘা : কে কার জামাই?

আয়াশ : কেনো আমি তোমার জামাই।

মেঘা : ফেসবুকের স্ট্যাটাস বলেছে বয়ফ্রেন্ড কে জামাই ভাবিস না বইন ব্রেকআপ হলে বিধবা হয়ে যাবি।

মেঘার মুখে এমন কথা শুনে আয়াশ হাসবে না কাঁদবে এটাই ভুলে যায়। আয়াশ হতভম্বের মতো মেঘার দিকে তাকিয়ে থাকে। এই সুযোগে মেঘা আয়াশের হাতে চিমটি মারে। ব্যথায় আয়াশ মেঘাকে ছেড়ে দিতেই মেঘা হেসে ছাউনির নিচ থেকে বেরিয়ে পড়ে। আয়াশের দিকে তাকিয়ে চোখ টিপে বলে উঠে,,,,

মেঘা : আমার রাগ ভাঙ্গানো এতোটা সহজ নহে বালক। অপেক্ষা করতে হবে আপনাকে ও।

কথাটা বলে মেঘা এগিয়ে যায় উদ্দেশ্য কোনো রিকশা পেলে উঠে পড়বে। এদিকে মেঘার কথা গুলো আয়াশের কানে আসতেই আয়াশ শব্দ করে হেসে দেয়। হাসির একপর্যায়ে বলে উঠে,,,,

” “প্রহর শেষে আলোর রাঙায়
সেদিন চৈত্র মাস
তোমার চোখে দেখেছিলাম
আমার সর্বনাশ!! ” ”

( ~~রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর~~~)

_______________

সিমথি : কি ম্যাডাম প্রেমালাপ এতো তাড়াতাড়ি শেষ।

কেবিনে প্রবেশ করতেই সিমথির কথায় মেঘার পা অটোমেটিক অফ হয়ে যায়। ঢোক গিলে সিমথির দিকে তাকায়। মেঘাকে তাকাতে দেখে তুহিন মেঘার মাথায় গাট্টা মারে। অতঃপর টেবিলের উপর বসে আফসোসের সুরে বলে উঠে,,,,

তুহিন : দুধের বাচ্চা ও প্রেম কইরা বেড়ায় আর আমি এতো বড় হইয়া কি করলাম।

তুহিনের কথায় রোদেলা সায় মিলিয়ে তুহিনের কাঁধে হাত রেখে বলে উঠে,,,,

রোদেলা : তুহিন ভাই বাঁইচা থাইকা কি লাভ ম/ই/রা যা।

রোদেলায় এহেন কথায় তুহিন নিজের কাঁধ থেকে রোদেলার হাত এক ঝটকায় ছেড়ে দেয়। বেচারি এটার জন্য প্রস্তুত না থাকায় হাত গিয়ে ঠাস করে টেবিলে বারি খায়। রোদেলা মুহুর্তেই রণচণ্ডী রূপ ধারণ করে তুহিনের দিকে তাকায়। তুহিন ঘাবড়ে গিয়ে কিছুটা দূরে সরে যায়।

তুহিন : আজ তুই শেষ ব্রো ( বিড়বিড়িয়ে)

রোদেলা : তুহিনের বাচ্চা ( হালকা চেঁচিয়ে)

সিমথি ওদের কান্ড বিরক্ত হয়ে হাতের কলম টা তুহিনের মাথা বরাবর ছুঁড়ে মারে। তুহিন ব্যথায় সিমথির দিকে তাকায়।

সিমথি : ব/ল/দের তিন নাম্বার বাচ্চার দল চুপ যা।

মেঘা : একি সিমথি গোর হাতে ব্যান্ডেজ কেনো। কি হয়েছে।

সিমথি : নাথিং

মেঘা : চড়িয়ে গাল লাল করে দেবো।

সিমথি : আয়াশ ভাইয়ার ডায়লগ আমাকে মারিস

সিমথির কথায় মেঘা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়। সিমথি মেঘাকে ক্রস করে নিজের কেবিনে যায়।

তুহিন : আসলে কাল দাদি আম্মা সিমথির আবারো কথা শুনিয়েছে। আর সিমথিকে তো তুই জানিসই।

তুহিনের কথা শুনে মেঘা একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে।

___________

সিমথি : একি আপনি এখানে কি করছেন?

সিমথির কথায় আদি দরজার দিকে তাকায়। সিমথিকে দেখে আদি একটা হাসি দেয়। ইশশ কত্তোগুলো ক্ষণ পর সেই মুখটা দেখার সুযোগ হলো। ভাগ্যিস আজ তিন্নীর ডিসচার্জ করা হবে। তার জন্যই তো আ্বারো হসপিটালে আসা। আজ অবশ্য আদি আর মেহেরই আছে। ইশান আর তিন্নীর বাবা চলে গেছে।

সিমথি : কি আজব কথা বলছেন না কেনো? এখানে কেনো এসেছেন?

আদি : তোমার জন্য।

আদির কাটকাট উত্তরে সিমথি প্রচন্ড বিরক্ত হয়। এই লোকটাকে দেখলেই মাথা অসহ্য যন্ত্রণা হয়। কেনো হয় সেটা কেবল সিমথিই জানে। সিমথি রাগান্বিত সুরে বলে,,,

সিমথি : একদম তামাশা করবেন না। বের হোন বলছি।

সিমথির কথায় ভ্রুক্ষেপ না করে আদি সিমথির দিকে এগিয়ে যায়। আদিকে এগুতে দেখে সিমথি সটান দাঁড়িয়ে থাকে। চোখেমুখে রাগ ঝরে পড়ছে।

সিমথির কাছে এসে আদি সিমথিকে একটানে ভেতরে এনে দরজা লাগিয়ে দরজার সাথে চেপে ধরে । অজ্ঞাত বশত আদিও সিমথির কাটা জায়গায় চাপ দিয়ে ধরে। সিমথি ব্যথায় চোখ বুঁজে নেয়। আদি সিমথির মুখের দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। কেমন একটা ঘোর কাজ করছে নিজের মধ্যে। আদি ডানে বামে মাথা নাড়িয়ে নিজেকে সামলায়।

আদি : ও সিয়াজান

আদির ডাকে সিমথি চট করে চোখ খুলে ফেলে। চোখের সামনে ভেসে ওঠে একটা সাদা কালো স্মৃতি। কানে ভেসে আসে একটা মেয়েলি কন্ঠস্বর। যার কম্পিত ধ্বনি টা ছিলো ” ও আদি “। সিমথি জোরে একটা শ্বাস নেয়। আদিকে সরাতে নিলে আদি পুনরায় ব্যথার জায়গায় চাপ দিয়ে ধরে। সিমথি এবার নিজেকে সামলাতে না পেরে অন্যহাতে আদির শার্টের কলার চেপে ধরে। চোখে অশ্রুকণা এসে হানা দেয়। সিমথি যথাসম্ভব নিজেকে সামলে রাখে। অস্পষ্টসুরে আদির কলার টেনে বলে উঠে,,,

সিমথি : আদি ভাইয়া প্লিজ ছাড়ুন।

সিমথির মুখে পুনরায় ভাইয়া শুনে আদি রেগে যায়। রাগে হাসে জোরে চাপ দিয়ে সিমথিকে নিজের একদম কাছে নিয়ে আসে। হাত টা পেছনের দিকে পেচিয়ে ধরে হালকা চেঁচিয়ে বলে,,,

আদি : আর একবার ভাইয়া ডাকবি তোকে আমি জাস্ট মে/রে দেবো। তোকে মে/রে আমি নিজেও ম/রে যাবো খুশি হবি তুই তাই না। এতোবার যে সরি বললাম তার কোনো দামই দিচ্ছিস না। কেনো এমন করছিস। আমাকে কেনো দূরে দূরে রাখছিস। কষ্ট হচ্ছে আমার। বুুকের ভেতরে অদৃশ্য শূন্যতা অনুভব করছি। প্লিজ সিয়াজান। আমাকে একটু দয়া কর। ভুলগুলো শুধরে নেওয়ার একটা সুযোগ দে। প্লিজ।

আচমকা সিমথি খোলা হাতে আদিকে একটা ধাক্কা মারে। চেচিয়ে বলে উঠে,,,,

সিমথি : আপনি একটুও বদলান নি আদি। এখনো আগের মতোই আছেন। আমাকে কষ্ট দিয়ে ব্যথা দিয়ে অপমান করে আপনি অদ্ভুত রকমের তৃপ্তি পান সেটা আমি জানি। এককাজ করুন এভাবে ব্যথা না দিয়ে একটু আগে যে বললেন মে/রে ফেলবেন এটাই করুন। কি হলো মা/রু/ন।

সিমথি চোখের অশ্রুকণা মুছে কেবিন থেকে রক্তাক্ত হাত নিয়েই বেরিয়ে যায়। পেছনে আদি এখনো স্তব্ধ হয়ে আছে। আচমকা নিজের হাতের দিকে তাকাতেই বুকটা মোচড় দিয়ে উঠে। হাতে এতো র/ক্ত কিভাবে এলো। তাহলে কি সিমথির হাত কাটা ছিলো। কথাটা মাথায় আসতেই আদি পাশে থাকা চেয়ারে একটা স্বজোরে লাথি দেয়। নিজের প্রতি ঘৃণা হচ্ছে। নিয়তি যেনো আদির বিমুখ হয়ে আছে। পণ করে রেখেছে সিমথির কাছে যতবারই আসবে ততবারই এমন অঘটন ঘটাবে। এটা কি আদির পাপের শাস্তি নাকি ভাগ্যের লেখন।

কেবিনের ভেতরে ঘটে যাওয়া দৃশ্য আদি আর সিমথি ব্যতিত আড়াল থেকেও অন্য একজন দেখে। কোনো কারণে সেই অজ্ঞাত ব্যক্তির ঠোঁটের কোণায় হাসি ফুটে উঠে। তবে সেই হাসির উদ্দেশ্য অভাবনীয়।

চলবে,,,

( কি বলবো জানি না। কিছু বলার ও ভাষা নেই। আসলে ব্যস্ততার জন্য গল্পটা সম্পূর্ণ কাল লিখতে পারিনি তাই পোস্ট করা হয়নি। আজ লিখে শেষ করলাম। আসলে পড়াশোনার প্রচুর চাপ 😟। ভুলক্রটি মার্জনীয়। ধন্যবাদ ❤️)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here