#অবাধ্য_বাঁধনে
#পলি_আনান
[পর্ব সংখ্যা ২১ক]
_____________________
কান্নার দরুনে মৃদু শরীর কাঁপছে ঈশার।প্রচন্ড জেদ মাথায় চড়া হতেই কান্না বাড়লো তার।নাকটা কেমন জমাট বেঁধে গেছে অনেকবার টেনে টেনে নিশ্বাস নেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে নিজের প্রতি নিজেই বিরক্ত সে।একটু কাঁদলেই নাকটা এত জ্বালায় কেন?
ঈশানের উপস্থিতি ঈশার খারাপ লাগা বাড়ালো।মেয়েগুলো বেশিভাগ সময় তার সাথে খারাপ ব্যবহার করে আর সেটা তার সয়ে গেছে কিছু বলতে চাইলেও পারবে না।সিনিয়র বলে মাথা কিনে রেখেছে।কিন্তু ঈশান তো দেখে নিয়েছে ঈশাও কারো কাছে অপদস্ত হয়।পান থেকে চুন খসলে ঈশানকে অপদস্ত করতে ছাড়ে না সেই ঈশানকে আগামীতে চোখ তুলে কিছু বলা যাবে না। নিশ্চয়ই ছেলেটা এসব কথা তুলে খোটা দেবে।ভাবতেই কান্না পেলো ঈশার।শরীরটা কেঁপে উঠলো পুণরায়।নাকের পানি এসে গেছে হাতের টিস্যুর সাহায্যে ঘষে ঘষে নাকটা পরিষ্কার করতে গিয়ে কেমন লাল করে ফেলেছে।
ঈশান পাশে দাঁড়িয়ে তার কার্যকলাপ দেখছে।মেয়েটা কেমন ফোঁপাচ্ছে।
” নাকটা এবার ছিড়ে রাস্তায় পড়বে।তখন আমার গায়ের ঘ্রাণ শুকবে কে শুনি?এত দামি দামি পারফিউম লাগানোটা তো বৃথা যাবে।”
ঈশা চটজলদি তাকিয়ে চোখ সরালো।ঈশানের গায়ের গন্ধ সে শুকবে কেন?অদ্ভুত কথাবার্তা।একটা বাস এসে থামলো ঈশা দ্রুত পায়ে উঠে পড়লো বাসে।তার পিছু পিছু বাসে উঠে ঈশান।দেশে আসার পর লোকাল বাসেই তার যাতায়াত ছিল।
ধীরে ধীরে যখন তার জীবন পালটে গেলো তখন পালটে গেলো যাতায়াত ব্যবস্থা।আজ অনেকদিন পর আবার লোকাল বাসে উঠা হলো।ঈশা চটজলদি একজন বৃদ্ধার পাশে খালি সিটে বসতে চাইলো।ঈশান তার কান্ডকারখানা বুঝতে পেরে বাহু টেনে অপর পাশে থাকা খালি সিটে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে আনে।ঈশান গায়ের সাথে গা ঘেষে ঈশাকে জানলার পাশে বসতে বাধ্য করে।ঈশার প্রচন্ড রাগ হলো সিনক্রিয়েট না করে নাক ফুলিয়ে বসলো বেশ চেপে।ঈশান চুলে হাত বুলিয়ে আরামে গা এলিয়ে দিলো সিটে।পকেট থেকে মাক্স বের করে দ্রুত মুখ ঢাকার প্রয়াশ চালালো।যেহেতু লোকাল বাস সেই হিসেবে হুড়োহুড়ি করে বেশ মানুষজন উঠলো অনেকেই বসার স্থান পেলো অনেকেই দাঁড়িয়ে রইলো বাস ছুটলো তার গতিতে।ঈশার এবার নিজের প্রতি প্রচন্ড রাগ লাগলো অনুকে একা ফেলে রেখে এসেছে সে।ব্যাগ থেকে ফোন বের করে অনুর নাম্বার তুলতে ঈশান বলে,
” রাসেলের দায়িত্বে ছেড়ে এসেছি অনুকে।ফোন করে ওদের ডিস্ট্রাব করো না।ঠিক সময় মতো বাসায় পৌঁছে দেবে।”
ডিস্ট্রাব! এখানে ডিস্ট্রাবের কি পেলো ঈশান?সে তার বান্ধবীর খোঁজ নেবে এখানে…
ঈশার ভাবনারা বেশি দূর গেলো না তার আগে ঈশান বলে,
” মেয়েগুলো কতদিন ধরে তোমায় বিরক্ত করছে?”
সচল মস্তিষ্ক অচল হয়ে এলো ঈশার।ঈশানের সামনে এই ব্যপারে কথা বলতে তার ইচ্ছে করছে না নিজের ইগোতে লাগছে প্রচন্ড।ঈশান বুঝতে পেরে দমে যায়।বাস জায়গায় জায়গায় থামছে এবং যাত্রী তুলছে মানুষের জায়গা না হলে ঠেসে ঠেসে যাত্রী দিয়ে ভরতি করছে কন্টাক্টর।কিছুটা সময়পর কন্টাক্টর এলো ভাড়া নিতে ঈশা টাকা হাতে নিতে ঈশান ভাড়া মিটিয়ে দিলো ঈশা কপট রাগ দেখিয়ে বলে,
” টাকার গরম দেখাচ্ছেন?আমার ভাড়া আমি মিটিয়ে দিতাম আপনাকে তো বলিনি।”
” তোমার ভাড়া তুমি দিতে আমার সিটের ভাড়াটা তো দিতে না?”
“অবশ্যই না।আপনাকে আমি সেধে সেধে আমার সাথে বাসে উঠাইনি।”
” এত কৃপনতা করে না জান।কাছের মানুষের জন্য কৃপনতা করা বেমানান।”
জান!কাছের মানুষ!থমকে গেলো ঈশা।ঈশান তাকে জান ডেকেছে।এই মানুষটা তো তার সহ্যর বাঁধ ভাঙছে।
” আপনি কিন্তু লিমিট ক্রস করছেন ঈশান।আমার পাশ থেকে উঠুন।”
“কেন ওই বুড়ো দাদুটাকে বসাবে পাশে?আমাকে বিয়ে না করলে এমন বুড়ো দেখে বিয়ে করিয়ে দিবো তোমায়।তখন শারীরিক মানসিক দিক না কুলিয়ে ঠিকি এই জোয়ান ছেলের কাছেই আসবে।”
ঈশা দাঁতে দাঁত চাপলো।কোলে থাকা ওড়নাটা খামছে ধরলো সহসা।ঈশান তার কান্ড দেখছিলো এই মুহূর্তে মেয়েটাকে রাগিয়ে দিতে বড্ড বেশি ভালো লাগছে।
” ভয় পায় না জান বুড়োর সাথে বিয়ে দিবো না।”
জান জান শুনতে শুনতে ঈশা মাথা চেপে ধরলো।এই মানুষটা কি তার পিছু ছাড়বে না কখনো?ঈশান হাসে ঈশাকে জান বলে ক্ষেপাতে তার বড্ড ভালো লাগছে।ওত তেল মশলা মাখিয়ে বাদ বাকি প্রেমিকের মতো প্রেম তার ধারা হয়তো কখনো হবে না কিন্তু কে জানে মাঝে মাঝে কিছু অসাধ্য সাধন হয়ে যায় তার জীবনে।যেমন ঈশা। এই মেয়েটাকে তো জানে মা রা র পরিকল্পনা সাজিয়েছিলো ঈশান কিন্তু একটা পর্যায়ে সে নিজেই জানে ম র লো।বেফাঁস ফেসে গেলো ঈশার প্রেমে।
বাসের ভীড় ফাঁক ফোকরে ঈশানের চোখ পড়লো একটা জোড়া কপোতকপতির দিকে।ছেলে আর মেয়েটাকে দেখে বোঝা যাচ্ছে তারাও ভার্সিটির স্টুডেন্ট।ছেলেটার কোলে মেয়েটার হাত সেই হাতটা আবদ্ধ ছেলেটার বাম হাতে।ঈশানের মনের কোনে শীতল হাওয়া বয়ে গেলো।ঈশার কোলে থাকা হাতটার কাছে নিজের হাত এগিয়ে নিলো।করে বসলো এক ভয়ানক কান্ড
ঈশার চিকন চিকন আঙুলের ফাঁকে তার আঙুল গুলো মিলিয়ে দিলো।টেনে নিলো ঈশার হাত।ডান হাটুর উপর স্থির রইলো সে হাত জোড়া।ঈশা চমকে গেলো লহমায় হাত ছাড়াতে চেষ্টা চালালো।
” প্লিজ ঈশান এমন করবেন না।এখানে আমার পরিচিত মুখ থাকতে পারে।”
” তাতে কী ঈশা আমরা তাদের ক্ষতি করছি না।”
” আপনি অবুঝের মতো কেন কথা বলছেন হাত ছাড়ুন।”
” আমার ভালো লাগছে।সো হাত ছাড়া হবে না।”
ঈশা তবুও মোচড়ামুচড়ি করলো কিন্তু ঈশান হাত ছাড়লো না।এভাবে ঘনিষ্ঠ ভাবে কেউ কখনো তার হাত ধরেনি।হাত ধরেনি ভুল কথা ভালোবাসার সম্ভাষণ নিয়ে কেউতো ধরেনি।ঈশা কাঁপছে কপালে দেখে মিললো চিকন ঘামের।মেয়েটার কাঁপা-কাঁপি অনুভব করলো ঈশান।কিঞ্চিৎ হাসি ফুটে উঠলো ঈশানের মুখে।
” তোমার নাকি এঙ্গেজমেন্ট হয়েছে যার সাথে হয়েছে সেকি কখনো তোমার হাত ধরেনি?”
ঈশা থমকে গেলো।এটা তো মিথ্যা ছিলো কে ধরবে তার হাত।
” আমায় মিথ্যা বলেছিলে তাই না ঈশা?”
“…… ”
” এই হাত ভালোবাসার আবেশে প্রথম আমি ছুঁয়েছি,আর আমাতেই শেষ হবে কথা দিলাম।”
এই সিরিয়াস প্রেম প্রেম মুহূর্তে ঈশার ভীষণ হাসি পেলো।ঈশান তাকে ভালোবাসে তবে সে কি বাসে?বাসেনা।সে যদি অন্য কাউকে ভালোবেসে হাত ধরে তবে কি হবে ঈশানের এই ওয়াদার?ঈশান তো নিজের কাছেই হেরে যাবে।
” আপনি এত কনফিডেন্স নিয়ে কথাটা কি করে বললেন ঈশান?ধরুন আমি ভালোবাসলাম অন্য কাউকে তখন তার হাতে হাত রাখাতে দ্বিধবোধ কখনো জন্মাবেনা।”
” তুমি আমায় চেনো না মেয়ে।”
ঈশান ঠোঁট বাঁকিয়ে পাশে তাকাতে দাঁড়ানো অবস্থায় একটি ছেলে নজরে এলো।লহমায় পৈশাচিক হাসি হাসলো ঈশান।ঈশা খেয়াল করলো ঈশানের মুখভাব পালটে গেছে সে কেমন অন্য মনষ্ক হয়েছে উঠেছে।ঈশা আলগোছে হাত সরাতে নিলে ঈশান চেপে ধরলো ঈশার হাত চোখ গরম করে তাকিয়ে বলে,
” মুখ কুলুপ এঁটে বসে থাকো এরপর যা হবে তাতে তোমার কোন মতামত গ্রহণ করবো না।”
আগামাথা ঈশা কিছুই বুঝলো না। একজন লোক নামবে তাই বাস থামাতে বলে কন্ট্রাক্টর।সেই লোকের পিছু পিছু নামলো ঈশান এবং ঈশা।ঈশা ভেবে পায় না এখনো তাদের গন্তব্য স্থান আসেনি তাহলে ঈশান কেন নামলো?
ঈশা কিছু বলতে চাইলেও ঈশান তাকে ইশারায় থামিয়ে দেয়।বড় বড় পা ফেলে ঈশান হাঁটছে সামনের দিকে ঈশা তার হাঁটার সাথে কিছুতেই পেরে উঠলো না তবুও পায়ে পা মিলিয়ে চলার চেষ্টা চালিয়ে গেলো।বড় রাস্তা ছাড়িয়ে ঈশান একটি গলিতে প্রবেশ করে এখানে শুধু ঈশান নয় তার সামনে একটি যুবক রয়েছে।এদিকটায় মানুষের শোরগোল বেশ কম ঈশার ভয় লাগলো ঈশান কি কু মতলব এঁটে তাকে এখানে নিয়ে এসেছে?সে কি খারাপ কিছু করবে? ঈশার দুচরণ থেমে গেলো ঝাকিয়ে সরিয়ে দিলো ঈশানের হাত।চলার মাঝে থামলো ঈশান।
” কি সমস্যা?”
” আপনার মনে যদি আমায় নিয়ে খারাপ কিছু থাকে তবে এক্ষুনি তা মুছে ফেলুন।আমার সাথে বাজে কিছু হওয়ার আগে আপনাকে শেষ করতে দুবার ভাববো না।”
ছুটে চলার মাঝেও কিঞ্চিৎ হেসে ফেললো ছেলেটা।তার ঈশা তাকে এই চিনেছে?অবশ্য এটা নিয়ে ঈশানের খারাপ লাগলো না কে হয় সে তার?ঈশার দিক থেকে কেউ না।কি করে ঈশানকে সে নিরাপদ ভাববে?এত যুক্তি দিয়ে কথা বোঝানোর সময় ঈশানের নেই তার সামনে অনেক কাজ।সামনের যুবকটি ঈশার কন্ঠে পেছনে ফিরে তাকায়। ঈশান সর্তক দৃষ্টি নিক্ষেপ করে চারিপাশে,নাহ মানুষজন দেখা যাচ্ছে না।
ঈশান যুবকটিকে ইশারায় ডাকে।যুবকটি দ্বিমত পোষণ না করে এগিয়ে যায়।ঈশান তার মুখের মাক্স সরাতে যুবকটি পালাতে উন্মত্ত হয় তবে তার আগেই ঈশান তাকে ধরে ফেলে।চোখের পলকে পরিস্থিতি পালটে যায় ঈশান আগন্তুক যুবকটিকে বেদম প্রহার করছে।মানুষটার নাক ফেটে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে ঠোঁটে।গালের কিছু অংশ ছিলে গেছে বাজে ভাবে। ঈশা ঈশানকে থামানোর চেষ্টা চালায় তাতে লাভ না হয়ে বরং বিপরীত কিছু হয়।যুবকটিকে মা রা র সময় একটা ঘুষি তার বাহুতে লাগে মুহূর্তে মনে হয়েছে হাত ছিড়ে এখনি পড়ে যাবে।ঈশা আবিষ্কার করলো ঈশান রক্তে মাংসে গড়া মানুষ হলেও মনে প্রাণে দেহের শক্তিতে সবটা লোহার মতো।
” ইসমাইল কোথায়?”
যুবকটি এবার কাতর চাহনি নিক্ষেপ করলো।ঈশার নামটা বড্ড পরিচিত মনে হয়েছে।কিয়ৎক্ষণ চিন্তা ভাবনা পর মনেও পড়লো ইসমাইল সে যে ঈশানের টাকার জন্য তার বাবাকে বিশ্রি ভাবে গা লা গা ল করেছে।এরপর ঈশান তাকে এনে মুজাহিদ হাসানের পা ধরে মাফ চাইতে বাধ্য করে।
” কি রে মা র কম হয়েছে কথা বল।”
” ইসমাইল ভাইয়ের কথা আমি জানি না বিশ্বাস করুন জানি না।তার সাথে আমার শেষ কাজ হয়েছে আপনাকে মা রার সময় আর কোন কাজ করা হয়নি আমাদের।”
” জানিস না মানে?ইসমাইলের ঠিকানা আমায় দে।”
ঈশান আবার তাকে মা র তে থাকে লোকটা লুটিয়ে পড়ে রাস্তায়।
” আমি এসব কাজ ছেড়ে দিসি।আমার বউ বাঁচার কসম আমি এসবে আর নাই।ইসমাইল ভাইয়ের সাথে আমার কোন যোগাযোগ নাই।”
” ইসমাইলের খোঁজ পাবো কী করে?”
“বড় সাহেবের নাম্বার ঠিকানা আপনাকে দিচ্ছি যোগাযোগ করুন।ইসমাইল ভাই তার আন্ডারে কাজ করেন।”
যুবক ব্যক্তিটির সাথে কাজ সেরে ঈশান পুণরায় উলটা দিকে হাটা ধরে ঈশা কপট রাগ দেখিয়ে দূরে দূরে হাটতে থাকলো।ঈশান তার রাগের কারণ বুঝলো না ঈশার হাত টেনে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরতে ব্যথায় অস্পষ্টে ‘আহ” শব্দ বেরিয়ে আসে।
ঈশান অবাক হয় হন্তদন্ত হয়ে ছুঁয়ে দেয় ঈশার গাল।
” কি হয়েছে ঈশা?কোথায় লাগলো?কি করে লাগলো?”
” হাত ভেঙে আবার বলছেন কি হয়েছে?”
” মানে?”
” ওই মানুষটাকে ধরতে গিয়ে আপনার ঘুষি লেগে আমার হাত ভেঙ্গে গেছে।”
” আমার কাযে বাঁধা দাও কেন তুমি?যা হয়েছে একদম বেশ হয়েছে।”
” আপনি মানুষ নন ঈশান একটা আঘাতে আমি নেতিয়ে যাচ্ছি আর বাকিদের যে আঘাত করেন তারা…”
” এই আঘাত গুলো তোমার জন্য নয় মিস ঈশা এগুলো অন্য কারো জন্য জমা।”
৪২.
ঈশা যথা সময় বাড়ি ফিরলো গোসল সেরে খাওয়াদাওয়া সম্পূর্ণ করে একটু বিশ্রাম নেওয়ার উদ্দেশ্যে লুটিয়ে পড়লো বিছানায়।দেয়াল ঘড়িতে জানান দিলো চারটা বেজে এসেছে হাতের ব্যথাটা এখনো তাজা।আজ আর টিউশনি যেতে ইচ্ছে করছে না ভেবে ঘুমানোর জন্য উদ্যত হয় ঈশা।সুলতানা তখন হুড়মুড়িয়ে প্রবেশ করেন ঈশার কক্ষে।
” তুই আর অনু একসাথে বাড়ি ফিরিস নি?”
” হ্যা…না কি জন্য হঠাৎ এই প্রশ্ন?”
” অনুর মা ফোন করলেন অনু নাকি এখনো বাসায় ফিরেনি সে ভাবীকে বললো তুই তার সাথে আছিস কিন্তু তুই তো বাসায় ফিরলি তিন ঘন্টা আগেই।”
ঈশা থমকে গেলো অনু রাসেলের সাথে আছে ভেবে ভয়টা বাড়লো বহুগুনে।মায়ের চোখে ফাঁকি দেওয়া সহজ নয় তিনি সন্দিহান চোখে তাকিয়ে আছেন।
” কিরে অনু কই তুই জানিস না?”
” হয়তো দিহানের সাথে আছে আমি খোঁজ নিচ্ছি তুমি যাও এখন।”
ঈশা ফোন করলো অনুকে।অনু একটা বারের জন্যেও ঈশার ফোন তুলেনি, কেন তুলেনি?নিশ্চয়ই ভয়ে ঈশার ভালোবাসা যতটা গভীর রাগ তার থেকেও গভীর।ঈশা নির্দ্বিধায় ফোন করলো ঈশানকে।ঈশার ফোন পেয়ে দিনের আকাশে চাঁদ দেখা অবস্থা ঈশানের।
” বলো ঈশা হঠাৎ?”
” আপনি বলেছেন অনুকে রাসেল ভাই বাড়ি পৌঁছে দেবে তাহলে অনু কেন এখনো বাড়ি ফিরেনি?”
” আমিও রাসেলের কাছে জানতে চেয়েছি সে কেন আসেনি উত্তর হলো অনুর সাথে আছে। কতদিন পর তারা একা সময় কাটানোর সুযোগ পেলো।”
” একা সময় কাটানোর মানে কি ঈশান?”
” তুমি জানো না রাসেল আর অনু রিলেশন শীপে আছে?”
সিলিংটা যেন মুহূর্তে ঈশার মাথায় ভেঙ্গে পড়লো।এত বড় কথা অথচ সে জানে না।
” কবে থেকে?”
ঈশান ঈশার কাছে আসল তথ্য আড়াল করে বলে,
” আমি সঠিক বলতে পারছি না।”
ঈশা ফোন রাখলো।অনুর কাছে কখনো সে কিছু আড়াল করেনি অথচ অনু এতবড় কথা আড়াল করলো। বন্ধুত্বের এই দাম দিলো!
#চলবে___