অবাধ্য_বাঁধনে #পলি_আনান [পর্ব সংখ্যা ৩২খ]

0
667

#অবাধ্য_বাঁধনে
#পলি_আনান
[পর্ব সংখ্যা ৩২খ]
____________________
৭৪.
রাত তিনটা বাজতে চললো ঈশান বেঘোরে ঘুমোচ্ছে তার সামনে পড়ে আছে ল্যাপটপ।ল্যাপটপের স্কিনে ভাসছে ঈশার মুখ, দুজনে এতক্ষণ ভিডিও কলে কথা বলছিল কিন্তু কথার মাঝে ঘুমিয়ে পড়ে ঈশান।ক্লান্ত শরীরে এই দুচোখ মেলে রাখার আর কোন শক্তি নেই।ঈশা চুপচাপ দেখছে ঈশানের ঘুমন্ত মুখ।আজ তার পরিক্ষা শেষ হয়েছে তাই এখন থেকে তার ছুটি।সেই আগের মতো ঘুরা ফেরা জীবনের আনন্দ ফিরে আসবে।ঈশা হাত নাড়িয়ে কাচের চুড়িগুলো দেখে সেদিন ঈশান মেলা থেকে চুড়িগুলো কিনে দিয়েছিল তাকে।সেদিনের পর কাটলো তিনমাস এই কয়েক মাসে কত কি পালটেছে তাদের জীবনে কিন্তু ভালোবাসা পালটেনি দুজনের প্রতি দুজনের ভালোবাসা শ্রদ্ধাবোধ বরং সময়ের তালে তালে বাড়ছে।

হাতের চুড়ি খুলে বিছানার এক কোনে রাখলো ঈশা গায়ের শাড়িটা নিয়েই ঘুমিয়ে পড়তে উদ্যত হলো।ঈশানের অনুরোধে শাড়ি পরেছিল সেই দশটা থেকে ভিডিও কলে কথা চলছিল তাদের কিন্তু তিনটার আগেই ঘুমিয়ে গেলো ঈশান।কল কেটে শুয়ে দু’চোখ বন্ধ করলো ঈশা এখন সে ঘুম দেবে শান্তির ঘুম।
.
বিছানায় তিনটে জামা রেখে উলটে পালটে দেখছে ঈশা।আজ সে কোনটা পড়বে?তিনটাই ভালো লাগছে তাই তো তার এত ভাবনা।ঈশান বলেছে বিকালে বের হবে কতদিন পর একান্ত বের হওয়ার সুযোগ হলো।হঠাৎ ঈশার কক্ষে হন্তদন্ত পায়ে প্রবেশ করলেন সুলতানা মেয়ের হাত টেনে বলেন,

” কোথায় যাবে?”

” ঈ..ঈশানের সাথে।”

” কোথাও যাবে না তুমি।একদম কোথাও না।”

মায়ের কথায় অবাক হলো ঈশা।সন্দিহান চোখে তাকাতে সুলতানা টেনে ধরলো তার হাত।

“চলো তোমার বাবার কাছে ”

” কেন আম্মু কি হয়েছে?”

” চলো আগে তারপর সব শুনতে পাবে।”

মায়ের হঠাৎ এমন আচরণে ঘাবড়ে গেল ঈশা।মুজাহিদ হাসান তখন কপালে হাত ঠেকিয়ে বসে আছেন ঈশাকে দেখে কিছুটা স্বাভাবিক হলেন তিনি।ঈশা গিয়ে বসলো তার বাবার পাশে মুজাহিদ হাসান মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে বলেন,

“তোমায় কিছু কথা বলবো চুপচাপ শুনবে।”

” হুম।”

” ঈশানের সাথে তোমার বিয়ে আমরা ঠিক করেছি আবার আমরাই এখন ভেঙে দিতে চাইছি এত তোমার মতামত কি?”

মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো ঈশার।বসা থেকে ত্বরান্বিত উঠে দাঁড়ালো সে।

” এসব কি বলছো কেন বলছো?”

” আমি জানি ঈশানের প্রতি তোমার অনুভূতি তৈরি হয়েছে সময়ের সাথে সাথে যা তোমায় পুড়িয়ে মা র বে।তাই এখনি সময় সঠিক সিদ্ধান্তের।”

” বাবা এসব কেন বলছো?”

” ঈশান ক্ষমতার দাপট দেখায় তা আমি জানতাম কিন্তু ঈশান যে ক্রিমিনাল মাইন্ডের তা তো জানতাম না।”

” কি করেছে ঈশান?কেন এসব বলছো?”

মুজাহিদ হাসান ঈশার দিকে তার মোবাইল বাড়িয়ে দিলেন। স্কিনে একটি ছবি যেখানে দেখা যাচ্ছে ঈশান অয়নের গাল চেপে রেখেছে আর অয়নের হাত পা চেয়ারের সাথে বাঁধা চোখে কালো কাপড়।এমন আরো বেশ কয়েকটি ছবি একেরপর এক দেখলো ঈশা।মা বাবার কাছে এসব ছবি কি করে গেল?ভয়ে গলা শুকিয়ে এলো তার।

” এবার কেন বারণ করেছি নিশ্চিয়ই বুঝতে পারছো?যে ছেলে আমাদের আত্মীয়দের ক্ষতি করে সেই ছেলের প্রতি আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।আমি মেনে নিয়েছিলাম টাকা দিতে পারিনি আমার অন্যয় কিন্তু অয়ন কি দোষ করেছিল?সেই কদিন অয়ন নিখোঁজ করেছিল এই ঈশান শাহরিয়ার।”

” বাবা উনারা বিয়ে ভাঙার কথা এসব জানলে..”

ঈশার কথা থামিয়ে দিলেন সুলতানা মেয়েকে ধমক দিয়ে বলেন,

” সেসব আমরা জানবো তোমাকে ভাবতে হবে না।তুমি শুধু ওই ছেলেকে ভুলে যাবে।আহারে অয়নের মতো ভালো ছেলে আর কয়টা পাওয়া যায়?গুন্ডা ছেলেটা কেন অয়নের উপর অত্যাচার করলো।”

” অয়ন ভাই ভালো?অয়ন ভাই মোটেও ভালো না।

” ঈশা একটা চড় লাগাবো।ঈশানের মোহে পড়ে এখন উদ্ভট কথা বলছো।”

মায়ের কথা উপেক্ষা করে বাবার দিকে তাকালো ঈশা।

” বাবা তুমি আমায় বুঝবে এই বিয়ে ভেঙ্গে দিও না ঈশান জানতে পারলে সব তছনছ করে ছাড়বে।”

ঈশার কথায় তেতে উঠলেন সুলতানা।মেয়ের হাত টেনে বলেন,

” তুই এখনো এই বিয়েতে মত দিচ্ছিস?”

” হ্যাঁ কারণ সত্যাটা আমি…”

আকস্মিক চড় পড়ার শব্দে মাথা তুলে তাকালেন মুজাহিদ হাসান।ঈশা গালে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে অপরদিকে সুলতানা রেগে অগ্নিশর্মা। বড় হওয়ার পর বাবা মা কখনো ঈশার গায়ে হাত তুলেনি তুলবে কি করে?একমাত্র আদরের মেয়ে অথচ আজ চড় বসিয়ে দিল!গালে হাত দিয়ে মুজাহিদ হাসানের পাশে বসে পড়লো ঈশা তার মাথা একটুও কাজ করছে না।মুজাহিদ হাসান চোখ রাঙিয়ে তাকালেন সুলতানার দিকে।

” আমি বুঝতে পারছি তোমার খারাপ লাগছে।কিন্তু এখন যা তোমার কাছে প্রকাশ করবো সেটা আমি কখনো চাইনি তোমাকে জানাতে।যদি তুমি অয়নের ব্যপারটা জানার পরেও ঈশানের পক্ষপাত না করতে আমি জানাতাম না কিন্তু এখন জানাবো।নাও এই কল রেকডটা মন দিয়ে শুনবে।”

ঈশা হাত বাড়িয়ে ফোনটা নিলো পুরোটা কল রেকর্ড সে শুনছিল ঈশানের খুব কাছের কেউ তার বিষয়ে একের পর এক বলছে।এগুলো কি আদৌ সত্যি?হয়তো তাই।কল রেকর্ডের মাঝামাঝি সময়ে যখন ঈশা শুনতে পেল ঈশান রেপিস্ট ঈশার মাথায় যেন আকাশটা ভেঙ্গে পড়লো।ভালোবাসা জমানো হৃদয়টায় এক নিমিষে খরার ন্যায় শুষ্ক চৌচির হয়ে গেল।

” বাবা এসব মিথ্যে আমি ঈশানকে বিশ্বাস করি বাবা।”

” নিজ কানে শুনেছো তুমি?এরপর আমার কিছু বলার নেই।”

“ঈশান রেপিস্ট নয় আমি ঈশানের সাথে কথা বলবো আমাকে জানাতে হবে এসব ষড়যন্ত্রের কথা।”

ঈশা উঠে দাঁড়ালো পা বাড়াতে পথ রুদ্ধ করলো সুলতানা।

” তুমি কোথাও যাবে না ঈশা।এখন তুমি ওসব কথা ঈশানকে জানাতে গেলে তোমার কি ধারণা ও তোমায় ছেড়ে দেবে?উলটো তোমার সঙ্গে খারাপ কিছু হবে।”

” সবটা না জেনে সত্যিটা না জেনে আমি তার এই মিথ্যার কাহিনী সত্যি ভেবে নিবো?আর বিয়েটে ভেঙেও দেব?”

“অবশ্যই ভাঙবে যা বলছি তোমার ভালোর জন্য বলছি। বিয়ে ভাঙার পর ঈশান নিশ্চয়ই আমাদের ছেড়ে কথা বলবে না আর সেই জন্য সব পরিকল্পনা করা আমাদের শেষ।এক্ষুনি তুমি ব্যাগপত্র ঘুছিয়ে নাও আমার বান্ধবী শম্পার বাসায় তোমায় পাঠিয়ে দিব।

” আম্মু…”

” ঈশা এতদিন আমরা জেনে এসেছি আমাদের অবাধ্য মেয়ে তুমি নও।”

ঈশা দ্বিতীয়বার কথা বলার সাহস পেল না।ছোট ছোট পা ফেলে এগিয়ে গেল নিজের রুমে।
.
দুপুর গড়িয়ে বিকেল হলো।আজ ঈশাকে নিয়ে বের হওয়ার কথা ছিল বিধায় নিচে গাড়ি নিয়ে অপেক্ষা করছিল ঈশান।এতগুলো কল দেওয়ার পরেও ঈশার নাম্বার বন্ধ দেখে কিছুটা দুশ্চিন্তায় পড়লো।উপায়ন্তর না পেয়ে ঈশাদের ফ্লাটে গেল ঈশান।দরজা খুললেন মুজাহিদ হাসান অনন্য দিনের তুলনায় তার মুখে হাসি নেই।মনে খটকা লাগলো ঈশানের কোন গন্ডোগোল হয়নি তো? ঈশান প্রতিদিনের ন্যায় সোফায় গিয়ে বসলো ভেতরের রুম থেকে কান্নার আওয়াজ স্পষ্ট শুনলো ঈশান।কে কাঁদছে?ভেতরটা ভয়ে কুঁকড়ে উঠলো ঈশানের।

” কিছু কি হয়েছে আঙ্কেল?ঈশা কোথায়?এতবার ফোন দিলাম ধরলো না।”

” তোমাকে কথাটা যে কি করে বলি…”

ভীষণ ইতস্ত বোধ করছিলেন মুজাহিদ হাসান দ্বিধাবোধ নিয়ে তাকালেন ঈশানের দিকে।

” ঈশার কিছু হয়েছে প্লিজ আমায় বলুন এভাবে চুপ করে আছেন কেন?”

” ঈশা নেই বাবা।”

” নেই মানে!”

“ও চলে গেছে কোথায় গেছে কি উদ্দেশ্যে গেছে আমরা কিচ্ছু জানি না।”

ঈশান উঠে দাঁড়ালো দ্রুত পায়ে এগিয়ে গেলো ঈশার রুমে।তার পিছু পিছু চললো মুজাহিদ হাসান।সুলতানা ঈশার রুমে বসে অলীক কান্না কাঁদছিলেন।ঈশানকে দেখে তার কান্নার আওয়াজ ক্রমাগত বাড়তে থাকলো।

” ঈশা হঠাৎ এমনটা কেন করবে?আপনাদের কোথাও ভুল হচ্ছে।”

মুজাহিদ হাসান টেবিল থেকে একটি কাগজ এনে ঈশানের হাতে দিলেন।ঈশান সেটি পড়ে স্তব্ধ হয়ে যায় কাগজে লেখা ছিল, ” আমি আমাকে ঘুছিয়ে নিতে চাই।এই বিয়ে করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।আমি কেন বাড়ি ছেড়েছি সেই জবাবদিহি করতে বাধ্য আমি নই।ঈশানকে বলে দিও আমার অপেক্ষায় যেন না থাকে।”

ঈশান কয়েক সেকেন্ড চুপচাপ রইলো সুলতানার কান্নার স্বর তার মস্তিষ্কে উথাল-পাতাল ঝড় সৃষ্টি করছে।

” ঈশা এমন করতে পারে না কখনোই না।”

” আমি ভেবে পাচ্ছি না আমার মেয়ের এতটা সাহস কি করে হলো সে…”

ঈশানের সন্দিহান চোখের আদলে পড়ে মুজাহিদ হাসান কিছুটা ন্যাকা কান্নার ভান ধরলেন।মাথায় হাত দিয়ে ঘুরে পড়ার অভিনয় করে গড়িয়ে পড়লেন মেঝেতে ঈশান দ্রুত তাকে ধরে নেয়।

” আমার মেয়ে, আমার মেয়ে কেন এমন করলো।”

” আমি ঈশাকে খুঁজে বের করবো এভাবে বললেই সব শেষ হয়ে যাবে না।এমন দুঃসাহস দেখানোর জবাব তাকে দিতেই হবে।”

ঈশানের কণ্ঠে মিশে ছিল ক্ষোভ।সুলতানা ভয় পেয়ে গেলেন থতমত খেয়ে বলেন,

” আমি চাই না ওই মেয়েকে যে মেয়ে আমাদের সম্মানে কালি মেখে যায়।”

” কিন্তু আমার তাকে চাই।
ন্যায় করলেও চাই অন্যায় করলেও আমার তাকেই চাই।”
৭৫.
আতঙ্কে ঈশার মুখটা যেন নীল হয়ে গেছে গলা শুকিয়ে যাচ্ছে বার বার।সুলতানার ছোট বেলার বান্ধবী শম্পা আগে তারা ঈশাদের এলাকায় থাকতো।গত তিন বছর আগে ভাড়া বাড়ি ছেড়ে নিজেদের এক তলার বাড়িতে উঠেছে।ঈশাদের বাড়ি হতে শম্পাদের বাড়ি আসতে প্রায় এক ঘন্টা লেগে যায়।তাই আগের মতো আসা যাওয়া খুব কম হয় তাদের।ঈশা শেষ বার এসেছিল প্রায় একবছর আগে।তাই তো জায়গাটা চিনতে তার খুব একটা অসুবিধে হয়নি।শম্পা নিজের মেয়ের মতো আদর যত্ন করেন ঈশাকে আজ যখন জানতে পারলো ঈশা আসবে তখন খুশি মনে হরেক রকমের রান্নার কাজে লেগে গেছেন এসব খাবার আদৌ ঈশার গলা দিয়ে নামবে?হয়তো না।শম্পার এক ছেলে সাঈদ আর ছেলের বউ নেহা এবং নাতনিকে নিয়ে বসবাস।রাত প্রায় বারোটা বাজতে চললো ডাইনিং টেবিলে সবাই মজা করে খাচ্ছে কিন্তু খাওয়ার গলা দিয়ে নামছে না ঈশার।ভয়ে আতঙ্কে তার জান যায় যায় অবস্থা।ওই দিকের কি খবর সেটাও এখনো জানা হলো না।ঈশার এই উদাসীন ভাব দেখে কিছুটা রেগে গেলেন শম্পা।

” তোর মা বাবা কবে থেকে এত হেঁয়ালিপনা শুরু করেছে বলতো?তোর বিয়ে দিবে একটু খোঁজ খবর নিবে না?”

শম্পার ছেলে সাঈদ মাথা তুলে তাকালো ঈশার দিকে হাসিখুশি চঞ্চল মেয়েটার কি হাল হয়েছে।

” চিন্তা করিস না ঈশা তোর ভাইয়া আছে না?তোর জন্য যোগ্য পাত্র খুঁজে বের করবো।”

সাঈদের কথায় মলিন হাসলো ঈশা।নেহা তার পাতে এটা ওটা বেড়ে দিচ্ছে।সাঈদের পাশে বসেছে নেহার ভাই অলক ছেলেটা বারবার অপাদমস্তক খুটিয়ে খুটিয়ে দেখছে ঈশাকে।এই মেয়েটাকে সে কোথাও যেন দেখেছে কিন্তু কোথায় দেখেছে? তা মোটেও মনে আসছে না।ঈশাকে নিয়ে ভাবতে ভাবতে একপ্রকার নিজের সাথে নিজে যুদ্ধ করছে অলক।
.
ঘামে ভিজে একাকার ঈশানের গায়ের শার্ট।ছেলেটে হন্য হয়ে খুঁজছে ঈশাকে।ফ্লাটের সিসি ক্যামরা থেকে স্পষ্ট দেখা গেছে ঈশা কাধে ব্যাগ নিয়ে মাথায় ওড়না চেপে হাটা ধরেছে।এরপর আর ঈশার সম্পর্কে কোন হদিস পেল না ঈশান।মেয়েটার প্রতিটা আত্নীয়র বাড়িতে যোগাযোগ করেছে কিন্তু ঈশা নেই।ঈশান যতটা পারা যাত আশেপাশে লোক লাগিয়ে খুঁজছে ঈশাকে।মাহমুদা এই সম্পর্কে কিচ্ছু জানেন না অবশ্য তাকে এসব জানাতে ঈশান নিজেই বারণ করেছে।

” ঈশান চল খেয়ে আসি আন্টি বার বার ফোন করছেন।”

রাসেলের কথায় কিছুটা রেগে গেলো ঈশান।
” তোকে বলেছিলাম আম্মুকে ম্যানেজ করতে, বলবি অফিসে আছি এত বিরক্ত কেন করছিস রাসেল?”

” ঈশান প্লিজ চল খেতে যাই।না খেলে তোর শরীর খারাপ হবে।”

” এই ব্যপারে আরেকটা কথা বললে খুব খারাপ হয়ে যাবে রাসেল।আগে ঈশাকে খুঁজে আন এই মেয়ের মাথায় হঠাৎ কোন ভূত ঢুকেছে যে সে পালিয়ে গেছে?সে কি বোঝাতে চাইছে?তার ফ্রিডম চাই?আমি কি তাকে ফ্রিডম দি নাই?”

” ঈশান আমার সন্দেহ হচ্ছে ঈশা যদি চলে যাবে তাহলে আজ কেন তোর সাথে বের হওয়ার জন্য রাজি হবে?ঈশা তোকে ভালোভাবে চেনে তোর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করার মূল্য কতটা সেটা ঈশা জানে এমনটা সে করবে নারে।”

রাসেলের কথা শেষ হতে রাজিব এগিয়ে আসে ঈশানের কাছে।ছেলেটারো আজ বেহাল দশা ঈশানের প্রতিটা নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করা যে তার দায়িত্ব।

” ভাই ঈশার ফুফু,খালা,মামা সবার বাড়ির আশেপাশে খোঁজ নিয়েছি ঈশার সাথে তাদের কোন যোগাযোগ হয়নি।তবুও আমি লোক রেখেছি সন্দেহ জনক কিছু পেলে আমাদের জানাবে।”

” হুম তুই এবার বাড়ি যা।”

” জি ভাই।”

ঈশানের নির্দেশ পেয়ে রাজিব চলে গেলো।হৃদয় এতক্ষণ তার লোকদের সাথে আলাপ পরামর্শ করছিল রাত প্রায় সাড়ে বারোটা বাজে এবার তার বাড়ি ফেরা দরকার তাই ঈশানের কাছে গিয়ে বলে,

” আমি আমার লোকদের চারদিকে ছড়িয়ে দিয়েছি বাস স্ট্যান্ড,হসপিটাল,রেল স্টেশন,রেস্টুরেন্টে আরো কিছু জায়গায় ছড়িয়ে দিয়েছি খবর পেলে আমাকে জানাবে।”

“তাহলে তুমি বাড়ি যাও।”

হৃদয় তার গাড়ি নিয়ে চলে গেলো। ঈশাদের বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে রইলো ঈশান এবং রাসেল।রাসেলের ক্লান্ত মুখখানি দেখে মায়া লাগলো ঈশানের কপট হেসে সে বলে,

” বাড়ি যাবি?চল যাই।”

” ঈশা এমনটা কেন করবে?আমার মাথা কাজ করছে না।অনু কাঁদছে ঈশা তাকেও কিছু বলেনি।”

“চলে গিয়ে লাভ নেই রাসেল ঠিকি আমার সামনে সে আসবে ধরা পড়বে।”
#চলবে___

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here