#অবাধ্য_বাঁধনে
#পলি_আনান
[পর্ব সংখ্যা ৩৩ ক]
____________________
৭৬.
ঈশানের চোখে চোখ পড়তে দ্রুত চোখ সরিয়ে নেয় মীরা ঈশানের সাথে যতবার সাক্ষাৎ হয়েছে প্রতিবার ছেলেটার রাগী মুখটাই দেখেছে সে।মাঝে মাঝে মীরার মনে প্রশ্ন জাগে এই ছেলের সাথে প্রেম করার মতো সাহস বোধহয় একমাত্র ঈশারি আছে।মীরার চোরা চাহনি দেখে কিঞ্চিৎ হাসলো ঈশান।
” মিস মীরা সব ঠিক ঠাক?”
“জি।”
” কিন্তু আমার কোন কিছু ঠিক নেই ঈশা নেই আমি ভালো থাকি কী করে বলুন তো?”
মীরা জবাবা দিলো না সে এখনো আড় চোখে তাকাচ্ছে ঈশানের দিকে।ভয়ে জড়োসড়ো এইটুকুনি হয়ে গেছে সে।
” আমি আপনাকে কীভাবে সাহায্য করতে পারি ঈশান ভাইয়া?”
” ঈশা কোথায়?”
” একই প্রশ্ন আমারো।”
” আপনি নিশ্চয়ই জানেন ঈশা কোথায় আছে ঈশার সাথে আপনার ভালো সম্পর্ক।”
” আমি জানতাম আপনি আমাকে এই প্রশ্নটাই করবেন।ঈশার সাথে আমার যোগাযোগ হয়নি আমরা সবাই চাই ঈশা ফিরে আসুক।”
ঈশান বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো।গতকাল থেকে মীরা আর দিহানের উপর নজর রাখা হয়েছে যতটুকু পারা যায় তাদের সম্পর্কে খোঁজ করেছে ঈশান কিন্তু সন্দেহজনক কিছু পাওয়া যায়নি।তবুও মনের প্রশান্তির জন্য এদের জিজ্ঞেসবাদ করলো ঈশান।দিহান দাঁড়িয়ে ছিল কিছুটা দূরে হাত ইশারায় তাকে ডাকলো ঈশান।
” বলুন ভাইয়া।”
” ঈশা কি কোন পাসপোর্ট করিয়েছে?”
” না ভাইয়া।এসব হলে আমরা অবশ্যই জানতাম।ঈশা হুটহাট গায়েব হওয়ার মেয়ে না আর আপনি যেটা বললেন ও হয়তো স্বাধীনতা চাইছে?আমার মনে হচ্ছে এসব কিছুই না আঙ্কেল আন্টি কখনো ঈশার চাওয়া পাওয়াতে বাধা দেয়নি।আমার কেন জানি মনে হচ্ছে ঈশা এসব করেনি।”
“তাহলে কি ওর বাবা মা করতে বাধ্য করছে?”
” তবে?”
” সেটাও বুঝতে পারছি না।”
হতাশার শ্বাস ছাড়লো ঈশান।অদূরে বসে অনু কাঁদছে দু’চোখ মেয়েটার ফুলে আছে।
.
ঈশাকে খুঁজতে যে ঈশান এমন চিরুনি অভিযান চালাবে তা পূর্বেই সন্দেহ করেছিল মুজাহিদ হাসান।মেয়েটা নিরাপদ স্থানে আছে কিন্তু ঈশান তাকে যে করে হোক খুঁজে বের করবেই এটা কি ছেলেটার জেদ নাকি দৃঢ় প্রতিজ্ঞা?মেয়ের চিন্তায় সুলতানা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন যে পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে পাতালে গেলেও ঈশাকে খুঁজে বের করবে ঈশান।
” যে পরিস্থিতি দেখলাম আমার মেয়েটার মনে হয় নিস্তার নেই।”
মুজাহিদ হাসানের কথায় মাথা দুলালেন সুলতানা।
” আমার মেয়েটা শেষ আমার মেয়েটার জীবন আমরা নিজেরাই শেষ করে দিলাম।”
” দোয়া করো ঈশাকে যেন খুঁজে না পায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে মেয়েটাকে দূরে কোথাও পাঠিয়ে দিব।”
” এক কাজ করি ঈশানের মাকে সবটা জানিয়েদি তাহলে…”
” না না এই কাজ ভুলেও করা যাবে না।তার থেকে ভালো ঈশার পালিয়ে যাবার খবরটা ওনাকে জানানো যায় এতে নিশ্চিয়ই ঈশার প্রতি উনার ঘৃণা জমে যাবে।একবার যখন মনটা বিষিয়ে উঠবে তখন এই বিয়ে ভেঙ্গে যাবে।”
.
আজ ঈশানের সারাটা দিন গেলো ঈশাকে খুঁজতে খুঁজতে বাড়ি যাওয়ার সময় হয়ে উঠেনি তার।প্রতিটা স্থানে তন্ন তন্ন করে খুঁজছে,শহরের প্রতিটা মহিলা হোস্টেলে খোঁজ নিয়েছে কিন্তু ঈশার কোন হদিস নেই।জীবনের এমন কঠিন পর্যায়ে যে ঈশান পড়বে তা কখনো সে ভাবেনি।হাতের ফোনটা বেজে উঠতে স্কিনে মাহমুদার নাম্বার দেখে দ্রুত ফোন ধরলো ঈশান।
“আমি এসব কি শুনলাম?”
” কি শুনেছো তুমি?”
” ঈশা নাকি পালিয়েছে?”
” হুম।”
” আমায় আগে বলনি কেন?মেয়েটা কোথায় গেছে?সত্যি করে বলো ঈশান তুমি ঈশার সাথে খারাপ কিছু করনি তো?”
” আজব!আমি ওর সাথে খারাপ কি করবো?”
” তোর যে রাগ তোমার যে জেদ এতে মা রা মা রি বকাবকি তো সাধারণ ব্যপার।রাগে হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে মেয়েটার সাথে খারাপ ব্যবহার করোনি তো?”
” আমাদের মাঝে কোন ঝগড়া হয়নি কিছুই হয়নি হঠাৎ কি হলো কিচ্ছু জানি না।”
” এই কারণে কি কাল আমায় এত ব্যস্ততা দেখিয়েছো?সত্যটা বললে কি তোমার জাত চলে যেত?”
” আম্মু প্লিজ এসব বলে আমার মাথা বাকিটাও খারাপ করো না আমি অনেক প্যারায় আছি।”
” আমি কিচ্ছু জানতে চাই না আমি চাই ঈশা সুস্থা স্বভাবিক আগের মতো আমার কাছে আসবে ব্যস এইটুকুই।”
ঈশান ফোন রাখলো মাহমুদা কি করে জানলো এসব কথা?রুমা কি বলেছে?হয়তো।
৭৭.
সময় পেরিয়ে গেল আরো দুইদিন ঈশা এখানে আসার তিনদিন পূর্ণ হলো।মেয়েটা দিন দিন কেমন যেন হয়ে যাচ্ছে মলিন নিষ্প্রাণ।ঈশার দিকে যতবার তাকান মনটা ভেঙ্গে যায় শম্পার।অলক বাড়ি ফিরলো সন্ধ্যা সাতটায় বসার ঘরে ঈশাকে দেখে পুনরায় চিন্তা পড়লো সে।এই মেয়েটা কে?সে কোথায় দেখেছে এই মেয়েটাকে?
” নেহা একটু ভেতরে আসবে?”
অলকের ডাকে সাড়ালো দিলো নেহা।নেহার ভাই অলক বাড়ি থেকে অফিসটা বড্ড দূরে হয়ে যায়।তাই যাতায়াত ব্যবস্থা সুবিধার জন্য এই বাড়িতে তার থাকা হয়।
নেহাকে আসতে দেখে বিছানায় বসলো অলক নেহা বসলো তার ভাইয়ের পাশে।
” কিছু বলবে ভাইয়া?”
” ঈশা মেয়েটা কে?এখানে কেন থাকছে?”
” আর বললো না,মেয়েটার যে ছেলের সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছে সে নাকি খুব বড়লোক,বাড়ি ঘর,সম্মান প্রতিপত্তি কোন অংশে কম নেই।কিন্তু হঠাৎ তারা নাকি জানতে পারে ছেলের নাকি কি কি সমস্যা আছে।সেসব আমি জানি না আমাদের বলেনি।তাই মেয়েটা পালিয়ে এসেছে এখানে, অবশ্য মেয়েটা পালিয়ে আসেনি মেয়েটার বাবা মা এখানে পাঠিয়ে দিয়েছে আর ছেলেকে বলেছে মেয়ে পালিয়েছে।যে মেয়ে পালায় সেই মেয়েকে কে আর ঘরের বউ করতে চাইবে?”
” এত নাটকের কি দরকার ছিল?বিয়ে ভেঙে দিলেই হতো।”
” ছেলেদের সাথে এরা পাল্লা দিয়ে পারবে?তাই তো এত নাটক।”
” ওহ যাও তুমি।”
নেহা চলে গেলো অপরদিকে অলক অবশেষে চিনতে পারলো ঈশাকে।সেদিন রাতে তার বস ঈশান শাহরিয়ারের সাথে একটি মেয়েকে দেখে খটকা লাগে অলকের।তাদের অফিসে এতদিন সমালোচনা হয়েছিল তাদের বস ঈশানের নাকি এঙ্গেইজমেন্ট হয়ে গেছে কিন্তু কে সেই ভাগ্যবতী নারী তার দেখা পায়নি কেউ।অলক কয়েক ঘন্টা মন দিয়ে ভাবলো ঈশার ব্যপারে সে কি ঈশানকে সব কথা জানাবে?নাকি মেয়েটার পক্ষ নেবে।ভাবনা চিন্তার অতলে হারিয়ে গেলো অলক কিন্তু স্বার্থের দুয়ারে ডুবলো সে।মনে মনে স্বার্থের কথা ভেবে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নিয়ে নিল।
রাত নয়টায় বাড়ির বাইরে গেলো অলক বাড়ি পেরিয়ে প্রধান সড়কে উঠে হাটলো উদ্দেশ্যহীন।পকেট থেকে ফোন নিয়ে দ্রুত ডায়াল করলো ঈশানের নাম্বারে।অফিসের কর্মচারী হিসেবে কাজের যত কথা আছে সব কথা রাসেলের সাথে বলা হয় তাদের।সামনাসামনি যোগাযোগ ছাড়া ফোন কলে কখনো ঈশানের সাথে কথা হয়নি অলকের।তাই কোথা থেকে কি শুরু করবে মনে মনে সাজিয়ে নিল অলক।
ঈশানের ফোনে অলকের নাম্বার ছিল।স্কিনে অলক নামটা ভেসে উঠতে কিছুটা বিরক্ত হয় এখন অফিসের আলাপ করতে মোটেও ইচ্ছে করছে না।মাত্র শাওয়ার নিয়ে বেরিয়েছে সে।কাধে ঝুলে আছে ভেজা তোয়ালেটা।অনিচ্ছা স্বত্ত্বেও অলকের ফোন ধরলো ঈশান।
“স্যার আমি অলক।”
” বলো অলক।হঠাৎ আমায় ফোন করলে?অফিসের বিষয়ে কোন কথা থাকলে রাসেলকে ফোন দাও আমি এখন ভীষণ ব্যস্ত।”
” না না অফিস নয়।আপনাকে একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা জানানোর ছিল।”
” গুরুত্বপূর্ণ!”
” জ..জি অনুমতি পেলে বলতে পারি।”
” বলো”
” সেদিন মেলায় আপনার পাশে একজন মেয়েকে দেখেছিলাম আমরা যতদূর জানি আপনার এঙ্গেইজমেন্ট হয়ে গেছে স্যার।তবে উনি কি আপনার উডবি ওয়াইফ?”
” আমি তোমায় আমার পার্সনাল কথা কেন শেয়ার করবো?তোমার সাহস দেখে আমি অবাক হচ্ছি অলক।”
“দয়া করে রেগে যাবেন না স্যার আপনার পাশে যিনি ছিল তিনি..”
” হ্যা সে আমার উডবি ওয়াইফ আর কিছু? ”
” উনার নাম ঈশা?”
” তুমি ওর নাম কি করে জানলে?অলক সোজাসাপটা কথা বলো কেন ফোন করেছো?”
“ঈশা ম্যাডাম নিখোঁজ তাই না?”
” তুমি জানলে কি করে?”
” ঈশা ম্যাডামের খোঁজ আমি জানি স্যার।তিনি আমার নাকের ডগায় ঘুরছেন।”
” কি!আমায় সবটা খুলে বলো অলক প্লিজ তুমি যা চাও তাই পাবে প্লিজ অলক।”
ঈশানের কথায় ঠোঁট বাকিয়ে হাসলো অলক।
” উনি আমার বোনের শ্বশুর বাড়িতে আছেন আর এখানে আসার মূল কারণ তার সাথে যার বিয়ে ঠিক হয়েছে সেই ছেলের নাকি গোপন কোন তথ্য তারা জেনেছে।ছেলের চরিত্রে সমস্যা যাই হোক এমন ছেলের সাথে ঈশার বাবা মা কিছুতেই মেয়ে বিয়ে দেবেন না।ছেলের ক্ষমতার কাছে তাদের নত হতেই হবে তাই তো মেয়েকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছেন।”
দাঁড়ানো থেকে বসে পড়লো ঈশান।রাগে শরীর থরথর করে কাঁপছে। ঈশার বাবা মা এতটা চালবাজ।খুব ভালো অভিনয় করেছে তারা এরাই পুরুষ্কার পাওয়ার যোগ্য।
” ঈশা কোথায় আছে আমায় ঠিকানাটা দাও অলক।”
” তার আগে বলুন কোন সিনক্রিয়েট করবেন না আমার বোনের শ্বশুর বাড়িতে আমি চাই না কোন বদনাম রটাতে।”
” সিনক্রিয়েট তো আমি এমনিতেও করবো না।দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে আমার।এবার বলো তুমি কি চাও অলক?বাড়ি,গাড়ি,জমি,নাকি দেশ ছাড়তে চাও?”
” আমার কিচ্ছু চাই না আমাকে শুধু প্রমশন করে দিন।উচ্চপদস্থ কোন আসন গ্রহন করার ব্যবস্থা করে দিন।একদিনে ত্বরান্বিত বড়লোক হওয়ার ইচ্ছে আমার নেই, আমি না হয় ধীরে ধীরে পয়সা কামাবো।”
” তুমি খুব বুদ্ধিমান অলক।”
শেষোক্ত বাক্যটি বলে শব্দ করে হাসলো ঈশান তার হাসিতে তাল মেলালো অলক।
.
রাত প্রায় এগারোটা বাজতে চললো অলক এখনো বাড়ি ফিরেনি তাই এখনো কেউ খেতে বসেনি।ঈশা তার কক্ষে ঘুমে কাবু।হঠাৎ দরজা করাঘাতের শব্দে দরজা খুলতে যায় নেহা।সে ভেবেছিল তার ভাই এসেছে কিন্তু দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে অপরিচিত ব্যক্তিকে দেখে কিঞ্চিৎ অবাক হয়।
” আপনি কে?কাকে চাই?”
” ঈশাকে চাই।”
” ঈ..ঈশা!ঈশা কে আমরা চিনি না চলে যান এখান থেকে।”
নেহা ভয় পেয়ে যায় দ্রুত দরজা রুদ্ধ করতে গেলে থাবা মেরে পুনরায় দরজা খুলে ফেলে ঈশান।নেহাকে সাইড কাটিয়ে বড় বড় পা ফেলে ভেতরে প্রবেশ করে সে।তার সঙ্গে একে একে প্রবেশ করে বাইশ জন গার্ড রাসেল গিয়ে দাড়ালো ঈশানের পাশে।এক সঙ্গে এতগুলো মানুষ দেখে ভয়ে কুঁকড়ে উঠলো নেহা।একে একে রুম থেকে বেরিয়ে আসে বাকি সদস্যরা।শম্পা সাঈদ ঈশানকে দেখে বুঝতে বাকি রইলো না এরা ঈশাকে খুঁজতে এসেছে।
সাঈদ কিছু বলার জন্য উদ্যত হলে হাত ইশারায় তাকে থামিয়ে দেয় ঈশান।
” কোন কথা হবে না কোন আওয়াজ হবে না।আমি আমার কাজ সেরে চলে যাব।যদি কেউ কোন চা….”
ভেতরের কক্ষে পর্দার আড়ালে দুটো ছোট্ট পা দেখে চুপ হয়ে যায় ঈশান।এখানে একটা বাচ্চা আছে, ছোট ছোট পা ফেলে বাচ্চাটা এগিয়ে আসছে।পর্দা ঠেলে মায়ের সঙ্গে চোখা চোখি এক গাল হাসলো বাচ্চাটা।এই ছোট্ট বাচ্চাটি পিতামাতা নেহা এবং সাঈদ আর বাচ্চাটির নাম নুহা।বাচ্চাটিকে ঝটপট হাতে কোলে তুলে নেয় ঈশান।তার দাড়ি ভরতি গাল বাচ্চাটার গালে মেশাতে খিলখিলিয়ে হেসে উঠে।অদ্ভুত! এই বাচ্চাটা কি ঈশানকে আগে দেখেছে?একদমি না অথচ ঈশানের সাথে কত সুন্দর মিশে গেছে।বাচ্চাটাকে কোল থেকে নামালো না ঈশান কয়েক মিনিট তার সাথে খুনশুটি করে দিয়ে দিলো রাসেলের কোলে।বাকিদের উদ্দেশ্য করে বলে,
” আমি আমার হবু স্ত্রীকে নিয়ে যেতে এসেছি আশা করি আপনাদের কোন বাঁধা থাকবে না?”
ঈশানের দেখে স্তব্ধ সবাই তাদের মুখে রা নেই।ঈশান বড় বড় পায়ে শব্দহীন পুরোটা ঘর খুঁজে দেখলো।ঈশাকে।অবশেষে পেলো শেষের একটি কক্ষে মেয়েটা কাঁথা মুড়িয়ে শুয়ে আছে।ঈশানের সারাদিনের ক্লান্তি এক নিমিষে ঝরে পড়লো।হাটু মুড়ে বসলো ঈশার পাশে।
“বাহ!আমার দিন দুনিয়া অশান্ত করে তিনি শান্তিতে ঘুমাচ্ছেন।”
ঈশান ক্লান্ত মুখে কিঞ্চিৎ হাসলো ঈশার এলোমেলো চুলে বুলিয়ে দিলো হাত।ঈশার গাল চাপড়ে তাকে জাগানোর চেষ্টা চালালো ঈশান।কয়েকবার চেষ্টার ফলে মেয়েটা উঠেও গেলো সম্মুখ ঈশানকে দেখে ছিটকে উঠে বসলো সে।কাঁচা ঘুম ভেঙ্গে যাওয়ায় সবটা কেমন কেমন লাগছে সবচেয়ে বড় কথা ঈশানকে দেখে তার সবটা থমকে গেছে।
” কি ভেবেছিলে আমি তোমায় পাব না?চোর পুলিশ খেলতে আর ভালো লাগছে না ঈশা, চলো বাড়ি যাই।”
” আমি কোথাও যাব না।কোথাও না।
ঈশা লাফিয়ে বিছানা ছেড়ে নামলো তার উদ্দেশ্য এক ছুটে পালানো কিন্তু বসার ঘরে আসতে পা থমকে যায় তার।পুরো ঘরটা অচেনা মানুষে ভরতি বাড়ির সবাই চুপচাপ এক কোণে দাঁড়িয়ে আছে ঈশার বুঝতে বাকি নেই এখানে কি হয়েছে।ঈশান এসে দাঁড়ালো ঈশার পিছু।
” চলো ঈশা সবাইকে বিদায় জানাও।”
” আমি যাব না।”
” কেন?কেনো যাবে না?”
” কৈফয়ত দিতে আমি বাধ্য নই।”
” আমি কিচ্ছু শুনতে চাই না।আমাকে খারাপ হতে বাধ্যে করো না।”
” যে খারাপ তাকে আর কী খারাপ করবো?”
ঈশান ঈশার জেদের কাছে হার মানতে রাজি নয় মেয়েটাকে ভয় দেখানো প্রয়োজন।নেহার কোল থেকে নুহাকে এক প্রকার ছিনিয়ে নিলো ঈশান ঈশাকে উদ্দেশ্য করে বলে,
” তুমি যদি না যাও বাচ্চাটাকে আমি নিয়ে যাব।”
নেহা শব্দ করে কেঁদে উঠলো দ্রুত বসে পড়লো ঈশানের পদতলে।সে তার বাচ্চাকে হারাতে পারবে না কিছুতেই না।নেহার দিকে তাকিয়ে কলিজাটা মুষড়ে উঠলো ঈশার ঈশানের কোল থেকে নুহাকে নিয়ে বলে,
” আমার জন্য কারো ক্ষতি হোক আমি চাই না।আমি যাব চলুন।”
ঈশান হাসলো সে জানতো ঈশাকে এভাবে বাধ্য করা সম্ভব।নিজের ব্যাগপত্র নিয়ে সবাইকে বিদায় জানিয়ে ঈশানের পাশাপাশি চলছিল ঈশা।কিছুটা রাস্তা যাওয়ার পর পিচ ঢালা সড়ক আর সেখানে ঈশানের গাড়ি রাখা।তাই এইটুকু রাস্তা তাদের হেটে যেতে হবে।
” তুমি ভেবেছিলে আমার কাছ থেকে পালিয়ে বাঁঁচবে?কি বলেছিলাম মনে নেই?”
” আপনি জঘন্য।”
” এই জঘন্য মানুষটার সাথেই তোমার থাকতে হবে।কথা দিয়েছিলে তো আজীবন পাশে থাকবে এই কথা তোমার রাখতে হবে ঈশা।”
#চলবে__