#অবাধ্য_বাঁধনে
#পলি_আনান
[পর্ব সংখ্যা ৩৯গ]
____________________
বেশ কিছুক্ষণ সুলতানার অপেক্ষায় ঈশা বসেছিল কিন্তু রাত বাড়লো সুলতানার ঘুম ভাঙলো না।ঈশান এই সময় আর বাড়ি ফিরবে না তাই আজ এ বাড়ি থাকবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়।মুজাহিদ হাসানের মুখটা কেমন মলিন হয়ে গেছে একে তো স্ত্রীর অসুস্থতা তার উপর মেয়েটার এই বাজে হাল কিছুতেই সহ্য করতে পারছেন না তিনি।ঈশার চোখে মুখে আজ ভয়ের ছাপ মেয়েটা এত আতঙ্কগ্রস্ত কেন?ঈশান কি তাকে মে রে ছে?আসার সময় নিশ্চয়ই শিখিয়ে পড়িয়ে দিয়েছে কাউকে যেন কিচ্ছুটি না বলে।তবে সুলতানার ভাষ্যমতে লিপির কথাই সত্যি এক বছর না হতে মেয়েটাকে অত্যাচার করে বের করে দেবে।বুকের ভেতরটা চিনচিন ব্যথার অনুভব করলেন মুজাহিদ হাসান।ঈশানকে তিনি বিশ্বাস করেন ছেলেটা যে ঈশাকে তার সর্বোচ্চটা দিয়ে আগলে রাখবে সেটাও মানেন কিন্তু সত্যি মিথ্যা কথার আড়ালে সবটা ঝাপসা লাগছে দু’চোখে।
” বাবা বসার ঘরে আসো একটু কথা আছে।”
ঈশা কিছু বলবে?নিশ্চয়ই গোপন কথা।মুজাহিদ হাসান আশার আলো দেখলেন মেয়েটার বাহু টেনে হাঁটতে সাহায্য করে নিয়ে গেলেন বসার ঘরে।
” বাবা তুমি কি ঈশানকে ভুল বুঝলে?”
” আমি সেই কথা একবারেও বলেছি?”
” না তোমার সেই কথাগুলো কেমন যেন ছিল।যাই হোক আমার নিরাপত্তার প্রয়োজন বাবা অয়ন ভাই যা তা শুরু করেছে।”
” কেন কি করেছে সে?”
ঈশা পর পর সবটা খুলে বলল।রাগে মুজাহিদ হাসানের ঘাম ঝরছে দাঁতে দাঁত চেপে মেয়ের সামনে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করছেন না হলে এতক্ষণে অকথ্যা ভাষায় কয়েকটা গালি দিলে শান্তি পেতেন।
” এখানে দোষ আমার আমি ঈশানকে মিথ্যা বলেছি কিন্তু অয়ন ভাই যে আজ এমনটা করবে আমি স্বপ্নেও ভাবিনি।শ্রেয়া আপুর বিয়ের সময় উনি একই কাজ করতেন তোমাকে বলবো বলেও বলিনি।”
” কেন বলনি?এর সমাধান তখনি হতো।যখন যা হবে তার সমাধান ঠিক তখনি করতে হবে এখন দেখলে তো মাথা চড়া দিয়ে উঠলো অসভ্য ছেলেটা।”
” সরি বাবা আমি বুঝতে পারিনি।”
” এখন রুমে যাও ঈশান একা।তোমার মা আজ আর উঠবেন না মনে হয়।”
ঈশা পা খুঁড়িয়ে চলে গেলো নিজের কক্ষে।ঈশান কপালে হাত ঠেকিয়ে শুয়েছিল ঈশার পাশে বালিশ দেওয়া, পানির জগ গ্লাস ঠিকঠাক ভাবে রাখা এসব কে করেছে?ঈশান!
” তুমি হাঁটছো কেন?ডাক দিলেই তো নিয়ে আসতাম।”
ঈশান উঠে এলো ঝটপট হাতে দরজা রুদ্ধ করে ঈশাকে পাঁজাকোলে নিলো।বিছানায় বসিয়ে সে বসলো তার মুখোমুখি।
” চলুন রাতের খাবারটা খেতে হবে।”
” না আমার আজ খাবার গলা দিয়ে নামবে না।প্লিজ আমায় আর জোরাজোরি করো না আমার ভালো লাগছে না।”
” ঠিক আছে শুয়ে পড়ুন লাইটটা অফ করে দিন।”
.
মেয়েকে কাছে পেয়ে সুলতানার অস্থিরতা কমেছে।ঈশাকে চোখের আড়াল করতে বড্ড দ্বিধা লাগে তার।মেয়েটা চোখের আড়াল হলেই কেঁদে কেটে বুক ভাসান।হঠাৎ মায়ের এমন আচরনে বড্ড চিন্তায় ফেলছে ঈশাকে।সকালের নাস্তা আজ হোটেল থেকে আনা হয়েছে।সুলতানার অসুস্থতার কথা শুনে অনু আর অপেক্ষা করলো না সকাল সকাল এই বাড়িতে হাজির হলো মেয়েটা।সকালে নাস্তার ব্যবস্থায় হাতে হাত লাগিয়ে কাজ করছে সে।
ঈশান আজ আর অফিস যাবে না।নাস্তা শেষে ল্যাপটপটা নিয়ে বসার ঘরে বসেছে সে।মুজাহিদ হাসান অফিসে চলে গেছেন।হঠাৎ তার চোখের সামনে আবির্ভাব হলো অনুর।হাত ভরতি ফলের ট্রেই।
” আঙ্কেল বলে গেছেন নাস্তা শেষে আপনাকে ফল কেটে দিতে।”
” রেখে যাও।”
“তবে দুলাভাই এখানে একটা স্পেশাল ফল আছে।এই যে কলাটা দেখুন এই কলাটা কিন্তু জোড়া কলা।”
” হুম তা তো দেখতেই পারছি।”
” যদি সাহস থাকে এটা আপনাকে খেতে হবে।সাহসের কথা কেন তুলেছি এটা সিক্রেট।”
” তুমি এই কলায় কি মিশিয়ে দিয়েছো আগে সেটা বলো।”
” কিছুই করিনি বাসার অবস্থা করুন আর আমি আপনার সাথে মজা করবো এতটাও পাগ ল আমি নই।যাই হোক খেয়ে দেখুন।”
ঈশান কলাটা ঘুরিয়ে ফিরে দেখলো তারপর ধীরে ধীরে পুরো কলাটা খেয়ে শেষ করে তাকালো অনুর দিকে।
” কলা খেতে কলার মতো লেগেছে এখানে আবার সিক্রেট কি ছিল?”
” যারা জোড়া কলা খায় তাদের জোড়া বাচ্চা হয়।”
” মিথ্যা কথা ভাগো এখান থেকে।”
অনু ঠোঁট বাকালো হঠাৎ সেখানে উপস্থিত হয় ঈশাদের বাড়িতে কাজ করা সেই খালাটি।ঈশানের দিকে তাকিয়ে জিভে কামড় বসিয়ে বলে,
” ও জামাই এইডা সইত্য জুড়া কলা খাইলে জুড়া বাইচ্চা হয়।অনু আফা সইত্য কথা কইছে।”
ঈশান সন্দিহান চোখে দুজনকে পরখ করলো।ঈশান দ্রুত মেসেজ করলো রাসেলকে এই ব্যপারে জানতে চাইলে রাসেল নিজেও একই কথা বলে।ঈশান চুপচাপ ল্যাপটপটা হাতে নিয়ে উঠে এলো ঈশার কক্ষে।ঈশা তখন শুয়ে ছিল হঠাৎ শরীরে ভার অনুভব হতে চমকে তাকালো।ঈশান তাকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরেছে।
” সরি ঈশা একটা ভুল করে ফেলেছি।”
” কি করেছেন?উঠুন আমি এবার ম রেই যাব।”
” আমি জোড়া কলা খেয়ে ফেলেছি আমাদের নাকি এবার জোড়া বাচ্চা হবে।তুমি এইটুকুনি মানুষ দুইটা বাচ্চা সামলাতে পারবে?”
ঈশার ভীষণ হাসি পেল এই কাজ যে অনু করেছে সে যানে।তাই ভনিতা করে বলে,
” খেলেন কেন?এখন কি হবে?”
” আমি কি জানতাম জোড়া খেলে জোড়া বাচ্চা হয় আজ প্রথম শুনেছি।”
” জেনে শুনে খাবেন তো।অনু মানেই সাংঘাতিক কিছু এই কথা বার বার ভুলে যান কেন?”
ঈশান ঈশার উদরে হাত রাখলো।ঈশা তাকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালালো কিন্তু ঈশান এক চুলো নড়লো না।
“সরি আমি ভুলে খেয়ে ফেলেছি তুমি একটু সামলে নিও।”
১০২.
অনুকে আজ দেখতে আসবে আর সেই নিয়ে চলছে সকলের মহা ব্যস্ততা।দোলন বলেছে হয়তো আজ কাবিনটাও হয়ে যাবে।যেহেতু আগের পূর্ব পরিচিত শুধু আজ সকলে এক হবেন একটু আলোচনায় বসবেন।অনু কি করবে ভেবে পেল না রাসেল বললো বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসতে এদিকে দোলন তাকে চোখে চোখে রাখছে এবার কি হবে?ভয়ে গলাটা শুকিয়ে গেল মেয়েটার।ঈশাকে জানানো হলো ঈশা বললো সবাইকে সত্যিটা জানিয়ে দেওয়া ভালো হবে আর এই ছাড়া কোন উপায় নেই।অনু ঠিক তাই করলো সে মুখোমুখি হলো বেলায়েতের।
” বাবা শুনছো একটা কথা ছিল।”
” বল মা হাতে অনেক কাজ।”
” বাবা আমি…”
থেমে গেল অনুর গলার স্বর।মেয়ের ভাব ভঙ্গিমা বড্ড সন্দেহ লাগলো বেলায়েতের কাছে তাই তাকে তাড়া দিয়ে বলেন,
” কি বলবে বলো।”
” বাবা আমি এই বিয়ে করতে পারবো না।আমি বিয়ে করে ফেলেছি।”
অনু ভয়ের তাড়নায় মিথ্যা বলে বসলো সে তো বিয়ে করেনি কিন্তু এই ছাড়া আর রাস্তা নেই।
” কি বললে তুমি আরেকবার বলো।”
” আমি একজনকে ভালোবাসি তাকে বিয়ে করেছি বাবা।ঈশানের ভাই রাসেল তুমি চেনো উনাকে।”
দেহের সমস্ত শক্তি দিয়ে মেয়ের গালে চড় বসালেন বেলায়েত।ঝোক সামলাতে না পেরে মেঝেতে ছিটকে পড়লো অনু।দোলন সহ অনুর চাচা চাচীরা এগিয়ে এলো তার কাছে।
” তোমার মেয়ে কি বলেছে শুনেছো?সে নাকি বিয়ে করে ফেলেছে আমার একমাত্র মেয়ে তাকে নিয়ে আমার স্বপ্ন জল্পনা কল্পনা।”
দোলন অবিশ্বাস্য চোখে তাকালো অনুর দিকে।অনুর গাল চেপে বলেন,
” তোর বাবা সত্যি বলেছে?কথা বল এটা সত্য?”
অনু মাথা দুলালো।দোলনের রাগটা আকাশচুম্বী হলো অনুর চুল টেনে দাঁড় করিয়ে বেদম প্রহার করতে থাকেন তার চাচা চাচী ধরতে গিয়েও কোন লাভ হলো না।দোলন রাগের তাড়নায় কাচের গ্লাসটা ছুড়ে দিলেন অনুর মাথায়।
” তোর কত বড় কলিজা তুই বিয়ে করেছিস তুই আমাদের মেয়ে না।মেয়ে হলে এমনটা করতে তোর বুক কাঁপতো।”
বেলায়েতে এগিয়ে গেলেন মেয়ের কাছে গম্ভীর কণ্ঠে বলেন,
” যা করার করেছো তুমি ওই ছেলেকে ছেড়ে দেবে।”
” কেন বাবা ওদের মাঝে কি এমন সমস্যা আছে যে আমাকে ছাড়তে বলছো?আমি তো কোন ক্রুটি খুঁজে পাইনি।”
” রাসেল ছেলেটা ওনাদের নিজেদের সন্তান নয়।তাকে দত্তকে আনা হয়েছে।”
” তো?ঈশান ভাই আর রাসেল দুজনকে এক চোখে দেখা হয়।”
” তুমি ওসব বুঝবে না আর বুঝলে এত বড় অন্যায় করতে না।তুমি ওই ছেলেকে ডিভোর্স দেবে।”
” কোনদিন না।শুধু শুধু নিজের অহেতুক জেদ আমার ঘাড়ে চাপিয়ে কেন দিচ্ছো?”
বেলায়েত ভীষণ রেগে গেলেন।অনুর চুল টেনে বের করে দিলেন ঘরের বাইরে।
“বেরিয়ে যা বাড়ি থেকে। আজ থেকে তুই আমাদের মেয়ে না।তুই আমাদের কেউ না।”
নিজের জেদের কাছে আজ ব্যথাটাও হেরে গেলো অনুর।এর আগেও সে অনেকবার ইশারা ইঙ্গিতে বুঝিয়েছে সে অন্য কাউকে পছন্দ করে কিন্তু দোলন সবটা এড়িয়ে গেছেন ঈশানের পরিবারটাকে তাদের পছন্দ নয় এর মূল কারণ নিশ্চয়ই ঈশান।সে তো আর ঈশানকে বিয়ে করবেন না।নাকি মূল সমস্যা রাসেল তাদের সন্তান নয় বলে?এই মুহূর্তে ঈশাদের বাড়ি যাওয়া ছাড়া আর কোন পথ নেই অনুর কাছে তাই সে সেখানেই গেলো।মেয়েটার অবস্থা দেখে হতবিহ্বল ঈশান।ঈশা তো কেঁদেই ফেললো গালে তিনটে আঙুলের ছাপ স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।সুলতানা চুপচাপ তাকিয়ে রইলেন অনুর দিকে যেখানে তিনি নিজের মেয়ে নিয়ে সন্দিহান সেখানে অন্যর মেয়েকে নিয়ে এই মুহূর্তে নাক গলানো মানানসই নয়।
ঈশান বেজাজ রেগে গেছে রাসেলের উপর।সে দ্রুত বাসা থেকে বেরিয়ে গেল রাসেলের সাথে দেখা করবে বলে।নিজের বাড়ি ফিরতে মুখোমুখি হলো আবিদ শাহরিয়ারের তিনি গম্ভীর স্বরে বলেন,
” একা কেন এসেছো?বাড়ির বউ কোথায়?”
দু’চরণ থমকে গেল ঈশানের।বাবা কি বললেন ‘বাড়ির বউ!’ তবে ঈশাকে কি উনি গ্রহণ করেছেন?
” কিছু প্রশ্ন করেছি আমি।”
” ও কিছুদিন সেখানে থাকবে।”
” তুমি আবিদ শাহরিয়ারের ছেলে তো?বিয়ের পর তোমার মাকে ছাড়া এক মুহূর্ত থাকতাম না আর তুমি..যাজ্ঞে সে সব কথা।ঈশাকে নিয়ে এসো আমি বেশি দিন এখানে থাকতে পারবো না পরিবারটা পরিপূর্ণ রেখে দেখে যেতে চাই।”
ঈশান সন্দিহান চোখে চোখ রাখলো আবিদ শাহরিয়ারের।ভ্রু যুগল কুচকে সে বলে,
” তুমি ঈশাকে মেনে নিয়েছো?আর মেনে নিলেই বা কেন?”
” মেনে নিয়েছি, তবে কেন মেনে নিয়েছি তা বলবো না।”
বুকে চেপে থাকা পাথরটা এক নিমিষে সরে গেল ঈশানের অপরদিকে লিপি তাদের দিকে তাকিয়ে আছে ক্রুদ্ধ দৃষ্টিতে সেদিকে তাকিয়ে ঠোঁট বাকিয়ে হাসলো ঈশান।
” লিজাকে বিয়ে করতে বাধ্য করবে না বাবা?”
ঈশানের খোঁচানো কথা বুঝতে পারলেন আবিদ তিনি কড়া নজরে তাকালেন ছেলের দিকে।
” তা তুমি কি এখন তাই চাইছো নাকি?”
“এখন এসব রাখো ছোট ছেলের বিয়ে নিয়ে ভাবো।”
” সে এই যুগের ছেলে আমি আর কি ভাববো খোঁজ নিয়ে দেখো তিনিও প্রেমে মজে আছেন।”
আবিদ শাহরিয়ার দাঁড়ালেন না বড় বড় পা ফেলে চলে গেলেন নিজের কক্ষে।বাবার মতিগতি ঠিক ভালো ঠেকলো না ঈশানের এক নিমিষে কি করে পালটে গেল এই মানুষটা।
.
আজ ঠান্ডা ঠান্ডা আবহাওয়ায় রাসেল গভীর ঘুমের মগ্ন।হঠাৎ ঘুমের মাঝে গালে চড় পড়ায় বেশ চমকে তাকালো সে।ঈশান তার দিকে তাকিয়ে আছে রক্তিম দৃষ্টিতে।রাসেল বুঝে উঠার আগে ঈশান তার কলার টেনে বিছানার থেকে নামিয়ে আনে।
” কি করছিস ঈশান তোর বউ নিয়ে ভেগে যাইনি তো।আরে ছাড় ভাই।”
” তুই একটা অপদার্থ ছেলে ইচ্ছে করছে গালটা লাল করে দিতে।”
” আমি আবার কী করলাম?”
” তুই জানিস অনু কি অবস্থায় আছে?অনুর যে বিয়ে ঠিক হয়ে যাচ্ছে সেই ব্যপারে তোর হেলদোল নেই!তুই আম্মুকে একটি বার জানালিও না।”
” তোর বিয়ের এত ঝামেলা তার মাঝে..”
” তার মাঝে মানে কী?আমাকেও একবার জানাতি অথচ জানাসনি।তুই এক্ষুনি মাকে সবটা বলবি।”
” আমার ভয় লাগছে তুই ম্যানেজ করে দে না।”
” পারবো না তুই তোরটা সামলাবি।”
রাসেল কি বলবে কি করবে ভেবে পেল না।মাহমুদার সামনে দাঁড়িয়ে নিশ্বাসটা বন্ধ হয়ে এলো তার।পরিক্ষার সময়েও এতটা নার্ভাস লাগেনি যতটা আজ লাগছে।রাসেলের হাটু কাঁপার ভাব ভঙ্গিমা দেখে ঈশান নিজেই সবটা খুলে বললো।রাসেল আর অনুর সম্পর্ক নিয়ে প্রথমে মাহমুদা ইতস্তত বোধ করলেও পরবর্তীতে তিনি রাজি হয়ে যান।অনুর হালের কথা শুনে বড্ড ঘাবড়ে গেলেন তিনি তাই তো দেরি না করে অনুর পরিবারের কাছে দ্রুত প্রস্তাব নিয়ে যান ঈশান এবং মাহমুদা।
১০৩.
” ভাইয়া শেষ মেষ আপনিও আমার সাথে বেইমানি করলেন?আপনি ঈশাকে মেনে নিলে আমার মেয়ের কি হবে?”
” তোমার মেয়ের জন্য ছেলের অভাব হবে না।আমি লিজাকে অনেক বড় ঘরে বিয়ে দেবো।অনেক ধুমধাম করে নানান আয়োজনে।”
” চাই না আমার সেসব কিছু আমার মেয়ে স্বপ্ন দেখে এসেছে ঈশান তার বর হবে আর এখন…”
ন্যাকা কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন লিপি।তার কান্না দেখে কোন হেলদোল হলো না আবিদ শাহরিয়ারের।বরং মনের সুখে তিনি টিভি দেখছেন তবে ভেতরে ভেতরে সবটা জ্বলেপুড়ে ছারখার হয়ে যাচ্ছে তার।এতদিনের বানোয়াট নাটক যখন সম্মুখে এলো তখন কি করে যে তিনি নিরব রইলেন এখনো ভেবে নিজেও কুল পেলেন না।নিস্তব্ধতা এখন একমাত্র রাস্তা তার কাছে।
#চলবে__