#রোদহীন_বিকালে_তুমি✨
#ইশা_আহমেদ
#পর্ব_১১
৩১.
“স্যার ম্যামের বিয়ে হয়েছে আলভি শাহরিয়ারের সাথে।আর আলভি শাহরিয়ার আবার ম্যামের বেস্টফ্রেন্ড ফারিহা ইয়ানাতকে ভালোবাসে।আবার ফারিহা ইয়ানাত আলভি শাহরিয়ারের বেস্টফ্রেন্ড রোদ চৌধুরীকে ভালোবাসে।”
“ব্যা’স ব্যা’স আর বলা লাগবে না!যার সাথে আনিশার বিয়ে হোক না কেনো ও শুধু আমার।আর কারো নয়।আর সুহান এখন গাড়িটা আলভি শাহরিয়ারের বাড়ির সামনে নিয়ে যাও।আমি আনিশা বেবিকে একটু দেখবো”
সুহান নামের ছেলেটা গাড়ি ঘুরিয়ে আলভিদের বাসার সামনে আনে।আলভি আর আনিশা রুমের বেলকনিতে আছে।আনিশা আলভিকে খাইয়ে দিচ্ছে সুপ।আলভি কিছু সময় পর পর বি*র*ক্তি*তে নাক মুখ কুঁ’চকাচ্ছে।আনিশা হেসে ফেলল আলভির এমন অবস্থা দেখে।
আলভি বি*র*ক্তি নিয়ে বলে,,,”হাসছো কোনো তুমি আমি একদমই সুপ খেতে পারি না আর তুমি আমার অবস্থা দেখে হাসছো ফা’জি’ল মেয়ে”
আনিশা আলভির মুখ মুছাতে গিয়ে আলভির উপর পরে যায়।আলভিও আনিশাকে ধরে পরে যাওয়া থেকে কোনোমতে বাঁ’চে।আনিশা কেঁ’পে উঠে আলভির স্পর্শে।তাড়াতাড়ি করে উঠে যায়।অস্থির হয়ে জিজ্ঞেস করে,,,,”কোথায় লেগেছে আপনার বলুন দেখি দেখি”
আলভি বলল,,,”কোথাও লাগেনি আনিশা এখানে অ’স্থি’র হওয়ার কিছু নেই শান্ত হও”
আনিশা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে নিজেকে শান্ত করে।দূর থেকে তুহিন নামক লোকটা রা*গে ফো’স’ফা’স করতে থাকে।রে*গে বলে,,,,আমি তোর কাছ থেকে আমার আনিশা বেবিকে কে*ড়ে আনবোই আলভি।”
কথাটা বলেই বাঁ’কা হাসে তুহিন।সুহান ছেলেটা তুহিনকে বলে,,,”স্যার এখানে বেশি সময় থাকলে সবাই স’ন্দে’হ করতে পারে আমরা কি এখন যেতে পারি”
তুহিন কিছু সময় আনিশার দিকে তাকিয়ে থেকে বলে,,,,”হ্যা চলো”
৩২.
আলভি এখন মোটামুটি সুস্থ হাঁটতেও পারে।আজকে অফিসে যাবে।আনিশাও ভার্সিটিতে যাবে।এই একমাসে দু’দিন গিয়েছে মাত্র।আনিশা রেডি হয়ে নিচে যায়।আলভি আগে থেকেই রেডি হয়ে বসে ছিলো।খেয়ে গাড়ির কাছে আসে।এখন থেকে ড্রাইভারই গাড়ি ড্রাইভ করবে।আলভি আনিশাকে ভার্সিটির সামনে নামিয়ে দেয়।
আনিশা চলে যাচ্ছিল তখন আলভি পেছন থেকে ডেকে বলে,,,”শোনো ছেলেদের থেকে দূরে থাকবে ইয়ামিন ছা’ড়া অন্যকারোর দিকে তাকাবেও না।বুঝেছো!”
কথাটা বলেই আলভি গাড়ি নিয়ে চলে গেলো।আনিশা আলভির যাওয়ার পানে হা করে তাকিয়ে থাকে।আলভি ভাবছে সে হুট করে কেনো এমন কথা বলল!আনিশা কোনো ছেলের দিকে তাকাক বা কথা বলুক তাতে ওর কি আর সেদিনই বা আনিশার দিকে ওই ছেলেটা তাকিয়ে ছিলো বলে ওর কেনো রা*গ হচ্ছিল এতো!আলভি আপতত এই সব চিন্তা বাদ দিলো।
আনিশা হা করে তাকিয়ে থাকতে দেখে ইয়ামিন আনিশার কাছে এগিয়ে আসে।আনিশার কাছে এসে বলে,,,,”তুই এইখানে এমন ভাবে দাঁড়িয়ে আছিস কেনো?”
আনিশার ধ্যা’ন ভাঙে।ও হেসে বলে,,,,”এমনিই চল ভেতরে যাই ফারু কই ও আসেনি।”
আনিশার কথার মাঝেই ফারিহা গাড়ি থেকে নামে।আনিশা হাসে ফারিহাকে দেখে আজ অনেক দিন পর মেয়েটাকে দেখলো।রোদও গাড়ি থেকে নামলো।ভার্সিটির সবাই প্রায়ই তার আর ফারিহার বিয়ের কথা জেনেছ। রোদ আনিশাকে দেখে হাসে।হেসে বলে,,,”কেমন আছো আনিশা”
আনিশাও হেসে বলে,,,”আমি আলহামদুলিল্লাহ ভালোই আছি রোদ ভাইয়া আপনি কেমন আছেন”
রোদও হেসে বলল,,,”হ্যা আমিও ভালো আছি।তোমাকে একটা কথা বলবো বলবো ভাবছিলাম কিন্তু বলে উঠতে পারিনি আমি কি বলতে পারি”
আনিশা হেসে বলল,,,”আপনি বলতে পারেন ভাইয়া”
রোদ কিছুটা ই’ত’স্ত’ত করে বলল,,,,”আসলে আমার একটা বোন ছিলো ঠিক তোমার মতো তুমি কি আমার বোন হবে?”
আনিশা আবারও হাসলো।হেসে বলল,,,,”এটা বলতে আপনার এতো ই’ত’স্ত’ত করতে হচ্ছিল ভাইয়া আমি তো রাজি আপনার বোন হতে”
আনিশার রাজি হওয়ায় রোদের চোখে মুখে খুশির ঝলক দেখা গেলো।রোদ বলল,,,,”সত্যি বলছো আনিশা তুমি”
আনিশা হাসে রোদের খুশি দেখে তার ছোট্ট একটা কথায় যদি ভালো লাগে কারো কেউ বোন পায় তাহলে সে রাজি আছে।রোদের চোখ মুক দেখেই বোঝা যাচ্ছে সে কতটা খুশি।রোদ কিছু সময় গল্প করে চলে গেলো একটু পরই ক্লাস নিতে হবে তার।রোদ চলে যেতেই ফারিহা আলভির কথা শোনার জন্য হা’স’ফা’স করছে।
আনিশা বলে,,,”কিছু কি বলবি ফারু”
ফারিহা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে,,,,”আলভির কি অবস্থা”
আনিশা হাসে।সে জানে ফারিহা আলভির খবর জানার জন্যই অ’স্থি’র ছিলো।আনিশা বলে,,,”উনি এখন ঠিকই আছে।ডাক্তার বলেছে কিছুদিনের মধ্যে একেবারে সুস্থ হয়ে যাবেন”
ফারিহা আনিশার কথা শুনে স্বস্থির নিশ্বাস ফেলল।যাক এখন সে চি’ন্তা মু!ক্ত।আনিশা ফারিহাকে জিজ্ঞেস করলো,,,”তুই রোদ ভাইয়ার সাথে সুখে আছিস তো ফারু”
ফারিহা মলিন হেসে বলে,,,,”উনি খুব কেয়ারিং।আর খুব ভালো।আমায় খুব ভালোবাসেন।আমিও চে’ষ্টা করছি উনাকে মেনে নেওয়ার আর নিজের ভা*গ্যকেও”
আনিশা আর কথা বাড়ালো না।ওরা ওদের ক্লাসে চলে আসলো।ক্লাস করতে লাগলো।
৩৩.
“স্যার আপনি কি ভেবেছেন আনিশা ম্যামকে নিয়ে”
সুহান নামক ছেলেটা তুহিনকে কথাটা বলল।তুহিন সিগারেট টা’নতে টা’নতে বলল,,,”আমি ভেবে নিয়েছি কি করবো আমি।যা করার এই সপ্তাহের মধ্যেই করতে হবে আমি তোমাকে যা বলেছি তোমার ম’নে আছে তো সুহান”
সুহান ছেলেটা বলল,,,,”হ্যা হ্যা স্যার কিন্ত আপনি যে বাংলাদেশে এসেছেন সেইটা বড় স্যার আর ম্যাম জেনে গিয়েছে”
তুহিন বিরক্তিতে ভ্রু কুচকে বলল,,,”ওহ সিট ওরা কীভাবে জানলো।তোমায় বলেছিলাম না ওরা যাতে জানতে না পারে”
সুহান আমতা আমতা করে বলে,,,,আ..সলে স্যার হয়েছে কি…..
তুহিন রা*গে ফোসফাস করতে করতে চিল্লিয়ে বলল,,,,”shut up stupid.get out from here.”
সুহান যেতেই তুহিন পাশে থাকা কাঁচের টেবিলটায় লা’থি মারে।লা’থি মারতেই টেবিলটা পরে ভে*ঙে যায়।তুহিন চি*ল্লি*য়ে বলে,,,”এই স্টুপিড ছেলেটার জন্য সবাই জেনো যাবে এখন আমি বাংলাদেশে।জাস্ট অ*স*য্য”
তুহিন কিছু সময় বসে মা*থা ঠান্ডা করে।বাঁকা হেসে বলে,,,,”আমি পেয়ে গিয়েছি কি করতে হবে এখন আমার”
৩৪.
রুহানা আর রুহান চৌধুরী একটা ছবির সামনে দাঁড়িয়ে কাঁদছে। একটা ছোট্ট রুমে দাঁড়িয়ে আছে তারা।যেখানে ছোট্ট কোনো মেয়ে বাচ্ছার খেলনা আর জামা রয়েছে।রুহানাকে রুহান জড়িয়ে ধরে আছে।রুহান রুহানাকে শান্তনা দিচ্ছে।
রুহানা রুহানকে বলল,,,,”কেনো আমাদের কাছে আমাদের মেয়েটা নেই।কে আমার মেয়েটাকে আমার কাছ থেকে দূরে সরালো।”
রুহান বলল,,,”কি করবে বলো মেয়েটা এখন কি অবস্থায় আছে কে জানে!আমার মেয়েটা কার কাছে আছে কেমন আছে?”
রুহানা ফোন করে রোদকে।রোদ ফোন ধরতেই বলে,,,”ফারিহাকে নিয়ে চলে আসো দ্রুত আজকে যে তোমার বোনের জন্মদিন সেইটা হয়তো ভু*লে গিয়েছো”
রোদ ওপাশ থেকে বলে,,,”আমি তাড়াতাড়ি আসছি মম”
চলবে,,,,?