আবার_প্রেম_হোক #নুসরাত_জাহান_মিম ১৩.

0
674

#আবার_প্রেম_হোক
#নুসরাত_জাহান_মিম

১৩.
হঠাৎ করেই দমকা হাওয়া বয়ে গেলো।হাওয়ায় মিশলো সামান্য ধূলিকণাও।গাছের পাতাগুলো কিঞ্চিৎ নড়েচড়ে উঠলো।এ যেনো বৈশাখের আগাম বার্তা!বৈশাখী ঝড় বোধহয় জানান দিচ্ছে ‘আমি আসছি তোমরা তৈরি থেকো আমার স্বাগতমে!’ সেজন্যই হয়তো পহেলা বৈশাখ নিয়ে লোকজনের এতো আমোদ,এতো ফূর্তি।গ্রামে-গঞ্জে,শহরে-বন্দরে বৈশাখী মেলার রোল পড়ে যায়।কিন্তু কারও হৃদয়েও যে সামান্য কয়েকটা বাক্য ঝড় বইয়ে দিতে পারে তা কি কেউ জেনেছে?বুঝেছে কি তার মনোবস্থা?পেরেছে কি পড়তে তার অনুভূতিশূন্য মুখশ্রী?সে নিজেও কি জানতে পেরেছে ঝড়ের আগাম বার্তা?

চাঁদ প্রণয়ের হাতে মাইক থামিয়ে দিয়ে চলে যেতে উদ্যত হতেই শুনতে পায় প্রণয়ের গম্ভীর কন্ঠস্বর,

“ভেবেছিলাম মেয়েটা বোধহয় নিজের প্রোটেকশনে বহু বাক্য ব্যয় করবে।কিভাবে নিজের সম্মান বাচানো যায়।নিজের নামে লাগানো মিথ্যা অপবাদগুলো মোছা যায়।কিন্তু আমি বরাবরই অবাক হয়েছি সে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণিত করতে একটুও চেষ্টা করেনি।এমন মেয়ে মানুষ আমি আজ পর্যন্ত দেখিনি।আমি জাস্ট রীতিমতো অবাকই হয়েছি।এটাও ভাবতে পারছিনা যে,সে আমার প্রেমে পড়েছে।কজ তার হাবভাব দেখলেই বোঝা যায় এই মেয়ে কারো প্রেমে পড়তে পারেনা।আর আমার প্রেমে যে পড়তে পারেনা তা তখনই বুঝেছি যখন ফ্রেন্ডদের ডেয়ার কমপ্লিট করার পর আমার কলার ধরে আমার ফ্রেন্ডদের সাথে তর্ক আর আমারই আরেক ফ্রেন্ড পূর্ণর সামনে আমারই ব!দনামি করতে শুনছিলাম, ‘সমস্যা টা কি আপনাদের?আমি সত্যি ই বুঝতে পারছিনা!এখানে নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে এসেছি,হাসির পাত্র হতে নই!প্রথমদিন এসেই অপ্রত্যাশিতভাবে এক অপরিচিত ছেলে ডেয়ার বলে অযথাই ছুয়ে চলে গেলো।পরে জানতে পারি সে নাকি মেডিকেলের মেয়েগুলোর ড্রিম বয়!আরে ভাই তাতে আমি কি করবো?আমি কি কাউকে একবারও বলেছি যে ঐ বিড়ালাক্ষী মানবকে আমার মনে ধরেছে বা সেই মানব আমার ড্রিম বয়?’ তো আপনারা কী বুঝলেন?যেই মেয়ে আমারই ফ্রেন্ডের সামনে আমার ব!দনাম করতে ভয় পায়না ঐ মেয়ে কেমন হতে পারে?আর আমার প্রেমে পড়বেই বা কেনো?আমি কখনোই এটা বুঝে উঠতে পারিনি,আমি দেখতে শুনতে আর দশটা ছেলের মতোই তবুও আমাকে নিয়ে এতো মাতামাতি।আমার পাশে দাঁড়ানো এই মেয়েটার কাছে হয়তো আমি অপছন্দীয়।তার মতোই এমন আরও অনেকেই আছে যারা আমায় পছন্দ দূরে থাক চেনেওনা।সো স্টপ ডুয়িং সাচ রিডি!উকুলাস থিংস!আর সে শেষে এও বললো সে চায় আমি যেনো আজীবন ‘মেয়ে এলার্জেটিক’ হয়ে থাকি।আই জাস্ট রিয়েলি কান্ট বিলিভ এমনও মেয়ে হয়?আমার যতদূর লাগছে মিস চাঁদ আপনি নিজেই একজন ‘ছেলে এলার্জেটিক’?”

এ কথা শুনে ঘুরে তাকালো চাঁদ তবে কিছু বললোনা।বলার মতো কিছু পেলোও না।তার লজ্জা লাগছে।সে প্রণয়ের ব!দনা!মী করেছে,সেগুলো সে শুনেও নিয়েছে এমনকি মাথায়ও গেথে রেখেছে।হুবুহু তাকে মিমিক্রি করেছে!যার জন্যই চাঁদ মুখে কলুপ এটেছে।কিছুই বলতে পারছেনা।শুধুই শুনছে।

প্রণয় আবারও বলছে,

“আর আপনারা,শুনুন!যেই মেয়ে নিজের জন্য একটা বাক্যও ব্যয় করেনি।অপর একটা ছেলের নামে মিথ্যা দুর্নাম করছেন বলে সে তার প্রতিবাদ করলো।সে কি আদৌ খারাপ কিছু করতে পারে?সে তো ঠিকই বললো তার পাশে দাঁড়ানো ছেলেটা নাকি একজন শুদ্ধ ব্যক্তিত্বের মানব?সে আমায় শুদ্ধ হিসেবে নিয়েছে বলে শুদ্ধ লেগেছে।অশুদ্ধ হিসেবে নিলে অশুদ্ধই লাগতো।এটা যার যার চিন্তাধারা।মনে যা মুখেও তাই এমন পেচহীন মেয়ে আমি দুটো দেখিনি।এখন বলুন আপনাদের ভুল ধারণা কি ভাঙলো?”

সবাই উচ্চস্বরে বলে উঠলো,

“হ্যা”

প্রণয় আবারও বললো,

“যাচাই-বাছাই না করে কোনোকিছু রটাবেন না।ইটস আ হাম্বাল রিকুয়েষ্ট।আর এই মেয়েটার দু-একটা প্রশংসা করেছি বলে ভাববেন না আমি মেয়েদের সাথে প্রাণবন্ত হয়ে যাবো।আমার মা আর তিন ফ্রেন্ড বাদে অন্য কোনো নারীর কথা-ছোয়া আমার বরাবরই অপছন্দীয়।আর এরা বাদে বাকি সব মেয়েতেই আমার এ!লার্জি ছিলো আর আজীবন থাকবে!এনি কুয়েশ্চন?”

কেউই কিছু বললোনা।তাই প্রণয়ই বললো,

“ওকে ডিসমিস”

বলতেই সবাই একে একে চলে যেতেই প্রণয়ও যাবে এমন সময় চাঁদ পেছন থেকে ডেকে উঠলো,

“এক্সকিউজ মি?মি.বিড়াল?”

কয়েকবার ডাকার পরও প্রণয় চলে যাচ্ছে বলে দৌড়ে চাঁদ তার সামনে আসায় বিরক্ত হলো প্রণয়।ভ্রু কুচকালো তবে কিছু বললোনা।মৌনতা অবলম্বণ করলো।তা দেখে চাঁদ বললো,

“শুনুন মি.বিড়াল অতিরিক্ত ভাব দেখাবেন না বুঝেছেন?আপনার সাথে গায়ে পড়ে কথা বলার জন্য ডাকিনি যে এভাবে ভাব দেখিয়ে চলে আসছেন”

“আপনি আমায় কখন ডেকেছেন?আমিতো শুনিনি”

“শুনবেন কি করে?আপনিতো কানে কালা।সে যাইহোক শুনুন বিড়াল”

“এই মেয়ে আপনার আমাকে কোন দিক দিয়ে বিড়াল মনে হয়?”

“কেনো?আপনার এই বিড়ালাক্ষীজোড়া?তাছাড়া আপনি যেই ফর্সা বাপরে!পুরোই বিড়াল!”

“হোয়াট রা!বি!শ!”

“হোয়াটেভার।থ্যাংক ইউ বিড়াল”

রাগ সংবরণ করে প্রণয় বললো,

“কি জন্য?”

“সবকিছু ঠিক করার জন্য”

“যা করেছেন আপনি ই করেছেন।আমি শুধু ব্যবস্থা করে দিয়েছি”

“আপনি না থাকলে হতোনা”

“আপনার পুরো নাম আগে বললে বহু আগেই হয়ে যেতো কজ যেই মেয়ে মেডি এডমিশনে ৯৮ পেতে পারে সে যে কেমন বইপোকা আর ছেলে এলার্জেটিক সবাই আগেই বুঝে যেতো।এতো কাহিনীর দরকার হতোনা”

“এসব ফালতু পপুলেশনের প্রয়োজন আমার নেই।আমার সাধারণ জীবন-যাপন ই পছন্দ।সাহায্য করেছেন থ্যাংক্স বলেছি ব্যাস এইটুকুই।অবশ্য থ্যাংক্স না বললেও কিছু হতোনা কারণ সমস্যায়ও পড়েছি আপনাদেরই বদৌলতে।আর একটু বেশি প্রশংসা করেছি বলে ভা….”

চাঁদকে বলতে না দিয়ে প্রণয়ই বললো,

“ভাববেন না আমি আপনার প্রেমে পড়ে গেছি বা এমন কিছু।চাঁদের এসব প্রেম ট্রেমে কোনো ইন্টারেস্ট নেই।এগুলো মানুষ কেবলই সময় অপচয়ের জন্য করে।আর দুনিয়ার যত সুদর্শন পুরুষই চাঁদের সামনে দিয়ে যাক না কেন ভুলবশত একবার চোখ পড়ে গেলে দ্বিতীয়বার সেখানে তাকানোর মতো ভুল চাঁদ করেনা,করবেওনা।তাইতো?”

চাঁদ দ্বিতীয়দফা অবাক হলো।চোখের পলক ফেললো ঘনঘন।তা দেখে প্রণয় বললো,

“আপনার মতো অতো বই বিষয়ক জ্ঞানী নই বলে এডমিশনে ৯৮ ঠিকই পাইনি তার মানে এই নয় যে জীবনের জ্ঞান আমার নেই।আপনার মতো মেয়ে আর আমার বেস্টফ্রেন্ডের মতো ছেলেদের দেখলে বোঝাই যায় বই ছাড়া অন্য কিছুর প্রেমে পড়া আপনাদের দিয়ে অসম্ভব।আমার ফ্রেন্ডের বিষয় আলাদা।আপনার জন্য একেবারেই অসম্ভব কজ বাংলাদেশের হিস্ট্রি ই আপনি বদলে দিয়েছেন।সরি নতুন হিস্ট্রি গড়েছেন।যার জন্যই চোখ দুটো অকালে খুই*য়েছেন।সেটা অবশ্য আপনার ব্যাপার।আর নিশ্চিন্তে থাকুন কারণ আমি জানি আর বুঝতে পেরেছি আমি আপনার অপছন্দের একজন।আমাতে আপনি মোটেও ইন্টারেস্টেড নন।একচুয়ালি আপনি বই ছাড়া আর কিছুতেই ইন্টারেস্টেড হতে পারেন না”

চাঁদ ভ!ড়কে বললো,

“আপনি আমাকে রীতিমতো অপমান করছেন!আমি কোনো ছেলেতেই ইন্টারেস্টেড নই।আর আমি জড়বস্তুও না যে কখনো ইন্টারেস্টেড হবোনা বা হইনি!আর আপনি আমার অপছন্দ…. ”

“আমি জানি আপনি আমায় দুচোখে দেখতে পারেননা।এটা অবশ্যই স্বাভাবিক।হুট করে সকালে যা হয়েছে এমন ভাবা অস্বাভাবিক না।আপনি যে আমাকে বিড়াল বাদে আরও কী কী ট্যাগ দিতে পারেন আমি বুঝতে পারছি।আর আমার সম্পর্কে এমনিতেই অনেককিছু ধীরে ধীরে জানতে পারবেন।তবে আমি নিজেই আপনাকে একটা বিষয় জানাচ্ছি।মাথায় গেথে রাখার অনুরোধ রইলো।”

চাঁদ ভ্রু কুচকে তাকালো কেবল।প্রণয় চাঁদের চোখে চোখ রেখেই বলতে লাগলো,

“আমি বরাবরই মেয়েদের থেকে দূরে থাকি।কথা বলতেও বিরক্ত লাগে।নিশ্চয়ই এই কয়েকঘন্টায় জেনে গেছেন তাদের থেকে দশ হাত দূরে থাকি?আসলেই কিন্তু থাকি!আপনার সাথে মি!সবিহেভ করেছি বলে শুধরানোর চেষ্টা করতে গিয়েই হাত ধরা।আপনি একটু বেশি ই ভাবেন।তাই বলছি আবারও।আমার কোনোকালেই কোনো বা!জে ইন্টেশন ছিলোনা।আর আপনার সাথে যা বলার ছিলো বলে দিয়েছি।আশা করছি আমাদের আর কখনোই কথোপকথনের দরকার পড়বেনা।আর আপনি আমার অনেক সামনে দাড়িয়ে আছেন।আমার খুবই আজব লাগছে।প্লিজ লিভ”

চাঁদ থমকালো,ভ!ড়কালো।অপ!মানিত হলো ভীষণ। কিছু বলতে পারছেনা সে।শেষের কথা তার আত্মসম্মানবোধে লেগে গেলো যেনো।চুপচাপ চলে যাচ্ছিলো এমন সময়ই রিহা সামনে এসে বললো,

“তখনকার জন্য আমি সরি চাঁদ।তুমি প্লিজ কিছু মনে করোনা?আসলে প্রণয় আমাদের সবার প্রাণ।আর তুমি নিজেই বলেছো ও… ”

“বুঝেছি আপু।সমস্যা নেই।আপনার ফ্রেন্ডের ক!লার ধরেছি বলে আপনাদের গায়ে লাগবে এটাই স্বাভাবিক।কিন্তু কেনো ধরেছি তা হয়তো আপনাদের বলতে হবেনা?আর প্লিজ আপুরা আপনারা এরপর থেকে এমন ডেয়ার কাউকে দেবেন না।শুনেছি আপনাদের গ্যাং নাকি ফেমাজ।আপনারা সাত জন নাকি এই মেডির টপ সেভেন।আপনাদের থেকে এমনটা আশা করবেনা হয়তো কেউই।”

“কে বললো আমরা টপ সেভেন?ইউ আর দি টপার!আমরা কেউই কিন্তু এডমিশনে ৯৮ তো দূরের ৯৪ ও ক্র‍্যাক করতে পারিনি।হায়েস্ট ছিলো প্রণয় আর অরণের।ওরা ৯২ আর ৯৩ পেয়েছিলো।”

“অরণ?”

অরণ রিহার পাশে থেকেই বললো,

“হেই”

“আপনি ই ৯৩?”

“না।তোমার বিড়ালাক্ষী মানব ৯৩।ও আমাদের স্টিল ক্যাপ্টেন।টানা তিন বছরই”

“ওহ!”

রবিন বললো,

“আমিও সরি চাঁদ।তুমি আমার কথায় কষ্ট পেয়োনা কেমন?”

“না না ভাইয়া ইটস ওকে”

মির বললো,

“হেই বিড়ালিনী শোনো”

“বিড়ালিনী মানে?”

“আমার বন্ধুকে বিড়াল বলছো তাই তোমায়ও বললাম”

“কিন্তু আমার চোখ তো কালোই”

“তো কি হয়েছে?ফর্সাতো তুমিও।এখন অনেকটা লাল ও দেখাচ্ছে।আবার দেখো বাম হাতের নখও বড়।বিড়ালিনীর থেকে কোনো অংশে কম কি?

“নখতো এমনিই রেখেছি।কাটতে আলসেমো লাগে বলে….”

“থাক সেসব।আমার কথা শোনো।আমরা ওকে প্রতি বছর ই এই ডেয়ার দেই।সববার ও রাজি হয়না।যেই মেয়েই দেখাইনা কেন।কিন্তু এবার…”

মুখ ফসকে সব বলে দিচ্ছে বলে মিরের মুখ চে!পে ধরলো মিরা।চে!পে ধরেই বললো,

“চাঁদ তুমি যাও বোন।তোমার সাথে আমরা অন্যসময় আড্ডা দেবো।তোমার ক্লাস শুরু হবে।লেট করো না।আজ প্রথম দিন মিস দিওনা।তোমার ফ্রেন্ডরাও ওয়েট করছে।নবীনবরণে দেখা হবে কেমন?যাও এখন”

গম্ভীরভাবে চাঁদ বললো,

“চলেই যাচ্ছিলাম”

বলেই সেখান থেকে চলে আসলো।

চাঁদ যেতেই মিরের মুখ ছাড়ে মিরা।মির লম্বা লম্বা শ্বাস নিতে নিতে বললো,

“সমস্যা কী তোর?”

“সমস্যা আমার নাকি তোর হ্যা?”

পূর্ণতা সামনে এসে বললো,

“তোরা আর লাগিস না প্লিজ”

মির বললো,

“আমি তো শুধু এটাই বলছিলাম যে প্রণয় কখনোই আমাদের ডেয়ার এক্সেপ্ট করেনি।সবাই তো ঠিকই বলছে এই মেয়েতে কিছু আছে যার জন্যই…”

প্রণয় গম্ভীরভাবে বললো,

“কিছুই নেই।তোরা এবার যে কোনো ঘাপলা করবি তা বুঝেছিলাম আগেই।অরণ আমায় বলে দিয়েছিলো তোরা এবার ডে!ঞ্জারা!স পানিশমেন্ট দিবি যার জন্যই আমায় কাজটা করতে হয়েছে”

সবাই অরণের দিকে রা!গী চোখে তাকালো।পূর্ণতা অরণকে বললো,

“সবকিছু তোর জন্য হয়েছে।তোর এতো উদারতা কবে যাবে হ্যা?তোর জন্য একটা মেয়ের কতটা অসম্মান হলো।আর প্রণয় তুইও যে খুব ভালো করেছিস তা কিন্তু নয়”

প্রণয় পাল্টা জবাব দিলো,

“তোরা নিজেরা যে প্রতিবছর মাত্রাতিরিক্ত খারাপ করিস তা কি আমি একবারও বলেছি?”

মিরা সবাইকে থামাতে বললো,

“জাস্ট স্টপ গাইজ!আমাদের সবার ই দোষ।কিন্তু মাঝ দিয়ে মেয়েটার মনে দাগ কেটে গেলো।প্রথম দিন এসেই এতোকিছু।এই মেয়ে টপার।স্বাভাবিক ই প্রথম দিন নিয়ে এক্সাইটেড ছিলো।আমাদের জন্য সব নষ্টতো হলোই।তুই মেয়েটাকে শেষে দিয়ে বা!জেভাবে ই!নসাল্টও করলি প্রণয়!”

“আমি?”

“এখানে প্রণয় নামে আর কে আছে?”

“কিন্তু কিভাবে?”

“সেসব তুই বুঝবিনা।বোঝার হলে কখনো এমন কথা বলতি ই না”

“মেয়েটাকে যেতে বলেছি তাই?”

“তুই ই ভালো জানিস”

“মিরা তুইও কিন্তু জানিস আমি মেয়েদের সাথে কথা বলা পছন্দ করিনা।প্রবলেমে পড়ে বলেছি।এখন যেহেতু সব ঠিক হয়েছে আমি তাকে যেতে বলতেই পারি”

“ভালোভাবেও বলা যায়”

“আমি এভাবেই কথা বলি সেটা যে তোরা নতুন জানছিস এমন তো না?”

“তুই কখনোই বুঝবিনা”

পূর্ণতা এবার বললো,

“মিরা তুই সবসময় বেশি ভাবিস।নিজেকে জ্যোতিষী ভাবা বন্ধ কর।তখনও অরণকে নিয়ে বেশি ভেবেছিস।এখনো মেয়েটাকে নিয়ে ভাবছিস।আমি মানছি মেয়েটা কষ্ট পেয়েছে।তবে প্রণয়তো এমনই এতে এমন করার কি আছে?”

অরণ সামনে এসে বললো,

“স্টপ পূর্ণ।মিরু মোটেও ভুল বলছেনা বা বলেনি।হ্যা,ও কোনো জ্যোতিষী না।তবে তোর থেকে অন্যকে বোঝার ক্ষমতা ওর বরাবরই বেশি।আমি নিজেও মেয়েটাকে দেখেছি।ফর্সা মুখটা অ!পমানে থমথমে হয়ে লাল হয়ে গিয়েছিলো।চোখে চশমা থাকলেও সেই চোখে ছিলো একরাশ অ!পমানিতো হওয়ার রেশ।এন্ড আই গেস মিরার শেষের কথায়ও মেয়েটা কষ্ট পেয়েছে”

মিরা বললো,

“আমিও তাই ভাবছি অরণ।”

অরণ বললো,

“তুই মেয়েটার কাছে যাবি ভাবছিস?”

“ভাবছিলাম ই!”

“এখন যাসনা ক্লাস হচ্ছে হয়তো।শেষ হলে যাস।”

“ঠিক আছে চল”

“তোরা সবাই ক্লাসে যা।আর আজ যা হয়েছে ভুলে যা।খামোখা নিজেদের মাঝে এসব নিয়ে মন রেশারেশির কি দরকার?”

রিহা বললো,

“আমিও তাই বলছি।তোরা শুধু শুধু নিজেদের মাঝে ঝগড়া করছিস”

মির বললো,

“সবই বুঝলাম তবে মিরা আমার মুখ কেন চে!পে ধরলো বুঝলাম না”

পূর্ণতা বললো,

“ডাফার কোথাকার!কখনো বুঝবিওনা।ক্লাসে চল বুঝাচ্ছি”

সবাই ক্লাসে যাচ্ছে কিন্তু অরণ দাঁড়িয়ে আছে বলে রবিন বললো,

“দাঁড়িয়ে আছিস কেনো?”

“বইটা ধর।আমার ব্যাগে ভরে রাখবি।আমি একটু পর আসছি”

প্রণয়ের দিকে রবিন তাকাতেই সে বলে,

“যা তুই”

সবাই যেতেই প্রণয় অরণের দিকে তাকিয়ে বললো,

“কেনো দাড়িয়েছিস আমি জানি।তবে সেটার উত্তর আমার জানা নেই।তাই অযথা ঘাটাস না”

“তুই যে উত্তর জানিস না সে আমিও জানি।তবে আমি যা জানি তুই কি তা জানিস?”

To be continued…

[বিঃদ্রঃগল্পের শুরুতে একবার বলেছিলাম।আবারও বলছি!গল্পটা সম্পূর্ণ কাল্পনিক।তাই কেউ অযথা বাস্তবতার সাথে মেলাতে যাবেন না।]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here