আবার_প্রেম_হোক #নুসরাত_জাহান_মিম ৩০.

0
674

#আবার_প্রেম_হোক
#নুসরাত_জাহান_মিম

৩০.
“ভাই আর ভাবির কেমিস্ট্রি জাস্ট অসাধারণ লাগে আমার!”

হঠাৎ উজানের কন্ঠস্বর শুনতে পেয়ে ঘুরে তাকালেই সকলে দেখতে পায় সে আর তন্ময় তাদের দিকেই আসছে।দু’জনে সামনে আসতেই তন্ময় বলে,

“হ্যা ভাই।হুটহাট যখন দু’জনই অজান্তে এমন কিছুই বলে ফেলে,যা শুনলে আমার প্রেম প্রেম পায়।মনে হয় না জানি দু’জনের মাঝে কতখানি প্রেম ছিলো!”

“কলা অতিরিক্ত পেকে গেলে পচে যেতে বাধ্য হয়,তা জানিস কি?”

বলেই অন্যকোথাও যাওয়ার জন্য পা বাড়াতে নিলেই চৈত্রের প্রশ্নে পা জোড়া থমকায় প্রণয়ের,

“আমার বোনটাকে খুব ভালোবাসেন প্রণয়?”

সহসাই জবাব আসেনা প্রণয়ের।কিছুক্ষণ চৈত্রের পানে তাকায় সে।অতঃপর গম্ভীরভাবে শিথিল দৃষ্টি সহিত বলে,

“বাসতাম”

বলে যেতে নিলে আবারও চৈত্রের প্রশ্নে নিজেকে স্থির করে প্রণয়,

“এখন বুঝি বাসেননা?”

অতঃপর সেভাবে থেকেই প্রণয় জবাব দেয়,

“জানিনা”

চৈত্রের আরও কিছু বলার পূর্বেই প্রণয়ের গম্ভীর কিন্তু শান্তস্বর ভেসে আসে,

“কাইন্ডলি নো মোর কুয়েশ্চন ভাইয়া”

অমৃতা আর শিফা পাশাপাশি বসে আছে।অনেক্ক্ষণ যাবৎ ই শিফা তার দিকে আঁড়চোখে চেয়ে দৃষ্টি ফিরিয়ে নিচ্ছে।সে যে কিছু বলার চেষ্টা করছে তা বুঝতে পেরে অমৃতাই গলা খাকারী দিয়ে বলে,

“কিছু বলবে তুমি?বা বলতে চাও?”

অমৃতার প্রশ্নে তার দিকে অবাক চোখে তাকায় শিফা।অতঃপর আমতাআমতা করে বলে,

“না মানে।আসলে…”

অমৃতা হেসে বলে,

“যা বলতে চাও বলে ফেলো,সমস্যা নেই।আমি কিছু মনে করবোনা”

খানিকটা ইতস্তত করে মাটির দিকে চেয়ে শিফা বললো,

“আসলে আপু….আপনি সেদিন পালালেন কেনো?”

অমৃতার হাসি বিস্তৃত হয়।হাসির রেখা ঠোটে এঁকেই সে বলে,

“না পালালে বুঝি এতো সুশ্রী আর স্নেহময়ী একটা ভাবি পেতে?”

অমৃতার কথা শুনে চোখ তুলে তাকায় শিফা তার দিকে।অতঃপর দৃষ্টি আকাশপানে নিবদ্ধ করে বলে,

“তা অবশ্য পেতাম না”

“দু’টো ভালোবাসার মানুষকে এক করতে পেরেছি এতেই আমার শান্তি”

“আপনার নামে যে কত বদ!নাম রটলো?”

“অমন দু’একটা বদ!নামে অমির কিছু হয়না।ইম…নাম কী তোমার?”

“শিফা”

“শিফা শব্দের অর্থ জানো?”

“হিম।নিরাময়”

“এর মানে বুঝলে?”

“মানে?”

“তুমি যার জীবনে যাবে তার সকল দুঃখ-কষ্ট-ব্যাথা নিরাময় করে দিবে”

বলেই হাসলো অমৃতা।শিফা তা শুনে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে,

“সত্যি যদি তা হতো আপু!”

“ভালোবাসো নাকি কাউকে?”

শিফা হাসার চেষ্টা করে বলে,

“কোথায় আর ভালোবাসা?আপনার টা বলুন।বিয়ের দিন শুনেছিলাম বয়ফ্রেন্ডের সাথে নাকি গেছেন?সত্যি কি তাই?আপনার বয়ফ্রেন্ড আছে?”

“হ্যা আছেতো।আর বয়ফ্রেন্ডের সাথেই গিয়েছিলাম তবে পালাতে নয়।চাঁদ আপুর বিয়েটা প্রণয় জিজুর সাথে কনফার্ম করতে।আর একা ছিলাম নাতো।আমার বয়ফ্রেন্ডের একটা বান্ধবীও ছিলো।তার বাসায় ই ছিলাম।”

অমৃতার সোজাসাপটা উত্তরে মেয়েটার প্রতি শিফার নেগেটিভ চিন্তাভাবনা চলে গিয়ে পজিটিভ চিন্তাদের আশ্রয় হয়।অতঃপর সে বলে,

“আচ্ছা।আজকালকার যেই যুগ আপু।ছেলেদের বিশ্বাস করা যায়না।করতে নেইও আসলে”

“আমাদের নয় বছরের সম্পর্ক শিফা”

শিফা স্মিত হেসে বলে,

“নয় হোক আর দশ-বারোই হোক আপু।যে পর্যন্ত তাকে পেয়ে না যাচ্ছি সে কখনোই আমার না।”

তখনই শোনা যায় চাঁদের কন্ঠস্বর,

“প্রেম সবসময়ই হারাম শিফা।সে যত বছরের সম্পর্কই হোক না কেন”

বলতে বলতেই শিফার পাশে এসে বসে চাঁদ।বসে লম্বা শ্বাস টানে সে।অতঃপর শুনতে পায় শিফার প্রশ্ন,

“তাহলে সবাই প্রেম করে কেনো ভাবি?”

জবাবটা অমৃতা দেয়,

“সেই প্রবাদটা শোনোনি?’প্রেম স্বর্গ থেকে আসে’।একটা সুখকর অনুভূতি নিয়ে।এ অনুভূতি শ্রেষ্ঠ অনুভূতির একটা শিফা”

এমতাবস্থায় রিদি ওদের তিনজনকে আড্ডা দিতে দেখে নিজেও এসে পাশে দাড়ালে শুনতে পায় শিফার সন্দেহজনক কন্ঠ,

“প্রেম যদি স্বর্গ থেকেই আসে তবে তাকে হারাম কেনো ঘোষণা করা হলো আপু?”

চাঁদ এবার অমৃতার দিকে তাকায়।অপেক্ষায় আছে তার জবাবের।কিন্তু সে চুপ।অর্থাৎ তার কাছে কোনো জবাব নেই।অতঃপর হঠাৎ করে রুবার কন্ঠ শুনে তার পানে তাকায় সকলে,

“যে জিনিসকে হারামই ঘোষিত করা হয়েছে তা স্বর্গ থেকে কি করে আসতে পারে শিফু?”

উশ্মি ফোন হাতে নিয়ে রুবার পাশে দাঁড়িয়ে বলে,

“তবুও তো মানুষ প্রেম করে।এবং জেনেশুনেই করে”

সব মেয়েদের এক জোট হয়ে গল্প করতে দেখে রিহা তাদের কাছে এসে জিজ্ঞেস করে,

“কী নিয়ে আলাপ হচ্ছে লেডিস?”

শিফা রিহার জবাব দেয়,

“প্রেম নিয়ে আপু”

কপাল কুচকে রিহা জিজ্ঞেস করে,

“প্রেম নিয়ে মানে?”

“মানে প্রেমকে হারাম করা হয়েছে কেনো এসব আরকি”

রিহার সোজাসাপ্টা জবাব,

“যেটা হারাম সেটা সারাজীবন হারামই থাকবে শিফা।কেনো করা হয়েছে এ নিয়ে গবেষণা করার আমরা কে?বিধাতা যা হারাম করেছেন তা কেয়াম!ত অব্দি হারামই থাকবে।হয়তোবা কেয়াম!তের পরেও”

উশ্মিরও সোজাসাপটা প্রশ্ন,

“তবুও তো মানু্ষ প্রেম করছে আপু।প্রেম করে বিয়েও করছে।এই যে প্রণয় ভাইয়া আর ভাবিই তো করলো?”

রিহা কপাল কুচকে উশ্মিকে প্রশ্ন করে,

“প্রণয় আর চাঁদ প্রেম করেছে এটা তোমায় কে বললো?”

“কে আর বলবে আমিই বললাম”

“ভুল বললে।ওরা কখনোই প্রেম করেনি”

উশ্মির কিছু বলার পূর্বেই চাঁদের শীতল কন্ঠস্বর শোনা যায়,

“ভুলে গেলে আপু?তোমার সামনে দাঁড়ানো মেয়েটা ব্যারিস্টার।বারী মে!রে কথা নেওয়া তার শিরায়-উপশিরায় বিদ্যমান”

উশ্মি চাঁদের কথা শুনে হালকা হেসে মোবাইল জিন্সের পকেটে রাখতে রাখতে বললো,

“বাহ!তুমিতো বেশ বুদ্ধিমতী ভাবি।বুঝেছোই যখন বলেই দাওনা তোমাদের সম্পর্কটা এক্সেক্টলি ছিলো কিরকম?কেনো এতো টান?কেনোই বা তুমি ও শহর ছেড়ে এখানে পাড়ি জমিয়েছো?আর কেনোই বা ভাই কেবল তোমায় এবং তোমায় বিয়ে করতেই এতো মিথ্যা জিনিস সাজিয়েছে?কেনোই বা তুমি আমার ভাই থেকে এতোদূরে চলে এসেছো?টপার অফ বিডি হয়ে কি করেই বা তুমি নিজের স্বপ্ন জলাঞ্জলি দিতে পারো ভাবি?”

To be continued….

[বিঃদ্রঃআমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত কেনোনা আমি দু’টো ভুল করে ফেলেছি।প্রথমত গতকাল চৈত্র প্রণয়কে তুমি করে বলে ফেলেছে।সেটা আপনি হবে।আর গল্পটা যখন শুরু করি তখন উজান রায়হানকে নাম ধরে ডেকে ফেলেছে।আসলে রায়হান,রামিম,প্রণয় এরা তিনজন সমবয়সী আর এদের থেকে অনেকটাই ছোট উজান।এমনকি তার বোন উশ্মি থেকেও।আর উশ্মি নিজেই রায়হান,প্রণয় আর রামিমের ছোট।উজান বাকিদের থেকে ঠিকই বড় কিন্তু এই কয়েকজনেরই ছোট।একটু কষ্ট করে বুঝে নেবেন প্লিজ।আমি পরবর্তীতে বিষয়গুলো এডিট করে দেবো।আর এ পর্বের পুরোটা লিখে শেষ করতে পারিনি।রাতের দিকে এর বর্ধিতাংশ দেবো।আপাতত এতোটুকুই পড়ুন।আর হ্যা গল্পটা সম্পূর্ণ কাল্পনিক!]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here