#অর্ধাঙ্গিত_পূর্নিমা
#সারপ্রাইজ_পর্ব…(১)
[এই পর্ব কাহিনীর অতীত নিয়ে]
.
-আয়ান।ঘুম থেকে উঠবি কখন তুই?এতো ঘুমাতে ভাল্লাগে?(আয়েশা)
-উফফ আপু ভাল্লাগে না।ঘুমাতে দিবি তুই?(আয়ান)
-না দিবো না।লেখা পড়া নাই তোর?
-ওই আম্মু…. তোমার এই মেয়েকে বিয়ে দিবা কবে?জ্বালায়া মারতেছে আমারে।(চেচিয়ে)
.
কথা বলতে দেরি আর পিঠে ঠাস ঠাস করে দুইটা থাপ্পড় পড়ে গেলো।উফফ আম্মমু গো আমি শেষ।
.
আয়ানের চিৎকার শুনে ওর মা হাজির।
-উফ সকাল বেলা তোদের ঝগড়া শুরু।ফজরের নামাজ তো একটাও পড়বি না।আবার একজন আরেকজনকে প্রতিদিন তাড়াতাড়ি তুলতে হবে।(আম্মু)
-তোমার মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দিতে পারো না?পরের বাড়ির মেয়েকে আর কতো খাওয়াবা?(আয়ান)
.
এতোক্ষন তো হাত দিয়া খাইছিলো।এটা বলার সাথে সাথে দেখে ঝাড়ু নিয়ে আসতেছে আয়েশা।আয়ান তো উঠে দৌড়।
-উফফ এদের জ্বালায় আর পারা যায় না।(আম্মু)
.
দৌড়াতে দৌড়াতে দুজনেই হাপিয়ে গেছে।
-উফফ আপু এই সকাল বেলা এতো না দৌড়ালেও পারিশ।
-তুই যেই বাদর।তোকে না দৌড়ালে কাকে দৌড়াবো?
-তুই বানদন্নী।ফকিন্নি।আসছে আমাকে বাদর বলতে।
-আয়ানের বাচ্চা।
-বাচ্চা ফাচ্চা বাদ দে।২০০টাকা দে।কলেজে যাইতে হবে আমার।
-আমার কাছে টাকা নাই।
-এই আমার লাগবে কিন্তু।না দিলে কথা নাই যা।
-ওই তুই কি আমারে ব্যাংক পাইছিশ?প্রতিদিন তোরে টাকা দিতে হবে?
-আরে প্রতিদিন কই চাইলাম।সপ্তাহে ৭টা দিন টাকা চাই মাত্র।আর উনি সপ্তাহে প্রতিদিন বানায় দিলো?এহ
-তো এক সপ্তাহে কয় দিন হয় শুনি?
-সে আমি কি জানি।তুই টাকা নিয়ায় যা।আমি ফ্রেশ হতে যাচ্ছি।
.
.
টেবিলে বসে বসে চা খাচ্ছে আর এদিকে সাব্বিরের ফোন।
-কিরে ব্যাটা।আর কতো সময় লাগাবি?রুহি আমারে জ্বালাইতেছে তোর দেখা নাই এই জন্যে।
-আরে আজকে তো রুহির সাথে দেখা করার কথা।দোস্ত ৫মিনিট আসতেছি।
রুহির সাথে দেখা করতে হবে একদম ভুলে গেছিলাম।
.
দৌড়ের উপরে কলেজে গেলাম।ম্যাডাম রাগ করে লেকের পাশে বসে আছে।
-ট্রেন সবসময় লেট কেনো করে?(আয়ান)
-…..(চুপ)
-আরে ট্রেন এ উঠে নাই তো অনেক মানুষ।তারা কিভাবে বুঝবে আর।হাহ।কাকে কি বলছি(আয়ান)
-কুত্তা, বিলাই, ফকিন্নি।তুই একে তো লেট এ আসছিশ আবার আমাকে খুটা দিতেছিশ?তোরে আজকে খাইছি।
এই বলে কিল ঘুসি শুরু আয়ানকে।
.
-উফফ আর মাইরো না ব্যাথা পাইতেছি।
-আরো মারবো।
-আগে আমার কথা শুনে তো নাও।
-না।
-আরে আমাদের মিশনের ব্যাপারে।
এইবার রুহি থামছে।আয়ানের মিশনে ওর বরাবরই অনেক বেশি আগ্রহ।
-আজ কোথায় যাবে মিশনে?আমাকে একদিন নিয়ে চলো না প্লিজ।
-যাবা তুমি?
-হে হে আমি যাবো।
-কিন্তু বাসায় কি বলবা?
-আরে বাসায় বলবো খালার বাসায় যাচ্ছি।বাকিটা খালাকে বলে ম্যানেজ করে নিবো।
-সিউর?
-হে একদম।
.
.
রাত ১১টা..সাব্বির আয়ানের বাসার সামনে এসে হাজির..রুহিকে পিক করতে হবে।সাব্বির আর আয়ান বাইক নিয়ে রুহির খালার বাসার সামনে যায়।সেখানে গিয়ে রুহিকে কল করতেই সে বেরিয়ে আসে।আয়ান জানে এইবারের মিশনটা কঠিন।কিন্তু তাও রুহিকে নিতে হলো।কারণ রুহির প্রতিবারের বায়না।আর ভালোবাসার মানুষকে কতোবার না করা যায়।
.
-দোস্ত,শুনছি এইবারের জ্বীনটা একটু বেশি ভয়ানক।ও নাকি কোন কথা না শুনে আগে মাইর শুরু করে।সেখানে রুহিকে নিয়ে যাওয়া?
-ইউনুস আছে সাথে।ওকে নিয়েই যাইতেছি।
-ইউনুস আছে বুঝলাম।কিন্তু এই কাজ আর কতোদিন?আমাদের কি ঠ্যাকা বল তুই?জীবনের ঝুকি নিয়ে জ্বীন বস করতে যাওয়া।এটা কি ঠিক?
-সামনে যে খারাপ শক্তি রা আসবে না আমাদের কাছে এর কি কোন গ্যারান্টি আছে?
-তো আমরাই কেনো?অন্য কেউ পারে না?
-আমার ভাল্লাগে তাই।
-ধুর আমাকে কেনো নিয়ে আসিশ।আমার ভয় করে ইয়ার।
-চিল্লাইশ না রুহির বাসার সামনে এসে গেছি।
–
.
.
সাব্বির এর আগেও দুইটা থাপ্পড় খাইছে জ্বীনেদের কাছে।তাই ওর ভয়টা বেশি।যদিও আয়ান বসে আনার পড়ে তারা ক্ষমা চেয়ে নিছে।কিন্ত যখন থাপ্পড় দেয় ভাই জ্বীনেরা।তখন ঠ্যালা বুঝা যায়।
.
-রুহি রেডি?
-হে একদম।
-রুহিকে আয়ান তার বাইকের পিছনে নিয়ে যাওয়া শুরু করলো নাইসুদের এলাকায়।
.
মিশন নাইসুদ শুরু।
.
.
নাইসুদ এর জংগলের কাছে আসতেই শরীরে কাটা দিয়ে উঠে রুহি আর সাব্বিরের।
ইউসুফ ফাতিনের কানে কানে বলে,
-আয়ান,ওর শক্তি কিন্তু অনেক।সাবধানে কাজ কইরো।
-আচ্ছা ঠিক আছে।
.
আসতে আসতে তারা ভিতরের দিকে এগুতে থাকে।যতো এগুচ্ছে ভয় যেনো তাদের মুচড়ে ধরছে।একটা শেয়াল হঠাৎ ডেকে উঠে।রুহি লাফ মারে।
-উফফ এমনেই ভয়ে বাচতেছি না।আবার এই মেয়ের লাফালাফি।(সাব্বির)
-আরে ভাই চুপ কর।আর চল এইবার।
.
.
সামনে যেতেই হঠাৎ কিছু একটা রুহির পা পেচিয়ে ধরে।রুহি চেচাচ্ছে।কিছু একটা রুহির পা টেনে পিছনের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।এদিকে সাব্বির ও চেচাচ্ছে যে তোরে বলছিলাম রুহিকে না নিয়ে আসতে।কিন্তু আয়ান তখন ব্যস্ত অন্য কাজে।সে তখন নাইসুদ এর গুহার দিকে এগুচ্ছে।ইউসুফকে পাঠিয়ে দেয় রুহিকে বাচাতে। আজ যা করবে আয়ান একাই করবে।তার ক্ষতি হোক কিন্তু রুহি যাতে সেইফ থাকে।সাব্বিরকে সাথে নিয়ে এগুচ্ছে সে।চারিদিকে খা খা অন্ধকার।আবার সাথে ঝি ঝি পোকার ডাক।পাশে থাকা গাছ গুলোও যেনো হাসছে।সাব্বিরকে আয়ান সেদিকে তাকাতে না করছে।
গাছের উপর থেকে কথা ভেসে আসছে,
-উফ অনেক দিন হলো মানুষের গোস্ত খাওয়া হয় না।আজ যদি পাওয়া যায়।
.
সাব্বিরের এবারে ভয়ে পশ্রাব করে দেওয়ার মতো অবস্থা হয়ে গেছে।সে কেদে দেওয়ার মতো।
.
আসতে আসতে তারা নাইসুদ এর গোহার কাছে যায়। সেখানে অনেক গুলো বাদুর পাহাড়া দিচ্ছে। গোহার ভিতর থেকে অনেক আর্তনাদ আসছে।চেচানোর আর্তনাদ।
-আয়ান তার লাঠি বের করে।সেগুলো দিয়ে সজোরে মাঠিতে আঘাত করতেই আলো জ্বলে উঠে।আর বাদুর গুলো সেই আলোর ঝলকানীতে সরে যায়।এই লাঠি পরের ১ঘন্টা আর কাজ করবে না।তাই সে আর সাব্বির জলদি ভিতরে ঢুকে যায়।
সেখানে গিয়ে দেখে নাইসুদ ইউসুফকে পেটাচ্ছে আর রুহি সাইডে বাধা।
-স্বাগতম আয়ান।
-নাইসুদ।আমি এখানে কথা বলতে এসেছি।
-কথা বলতে না।তুই আমাকে নিজের গোলাম বানাতে এসেছিশ আমি জানি সেটা।
-দেখ নাইসুদ এটা একদমই সত্য না।আমরা সবাই আল্লাহর গোলাম।তুই আর আমি শুধু বন্ধু হবো।খারাপ শক্তির আবির্ভাব খুব জলদি হবে।তখন আমার তোকে খুব প্রয়োজন হবে।
-এতো কিছু আমি জানি না।আমি এখানে আছি।আমাকে শান্তিতে থাকতে দে।
-না নাইসুদ।দিবো না।তুই আমার সবচেয়ে দরকারী অস্ত্র।তোকে আমার লাগবে।আমি জানি, তোকে চিনি আমি।আমি জানি তুই রাজি হবি।
-এতো বিশ্বাস।চল একটা খেলা খেলি।
-কি খেলা?
-মৃত্যুর খেলা।যদি তুই জিতিস তাহলে যা বলবি করবো।আর যদি হারিশ তাহলে তোর প্রেমিকা আমার।
-তোর খেলা এটাই ছিলো।আমার বিশ্বাস এর উপর।আমি চিনি তোকে।তুই মেয়েদের কিচ্ছু করিশ না।আমাকে পরীক্ষা করতে এটা বলছিশ তুই।
.
নাইসুদ অবাক হয়ে যায়।
-বাহ।এতো কঠিন সময়েও জোশ না দেখিয়ে ঠান্ডা মাথায় জিতে গেলি?আমি তোর প্রতি মুগ্ধ।তোর দলে আমিও আছি যা।
সাব্বির আর আয়ান তো নিজেকে বিশ্বাসই করাতে পারছিলো না যে।এতো সহজে সব ঠিক হয়ে যাবে।
.
নাইসুদ, ইউসুফকে ছেড়ে দেয় আর তাদের ভালোভাবে জংগল থেকে বের করে দেয়।
আয়ানের দলে আরো এক শক্তি যোগ হয়।
-এতো সহজে কিভাবে হয়ে গেলো আয়ান?(সাব্বির)
-সব সময় মাথায় রাখিশ সাব্বির।কঠিন জিনিশ তাড়াতাড়ি হয়।
.
.
#চলবে
..
.
পার্ট ৫ এর শুরু থেকে মিলে যাবে গল্প আগের মতোন।গল্পটা অন্যরকম।ধাচ এ লিখতেছি।আশা করি এমন স্টাইল আগে পড়েন নি কখনো আপনারা।সারপ্রাইজ পর্ব ২ ও আসবে।কিভাবে আর কেনো আয়ান এই কাজ গুলো বাদ দিয়েছিলো।সাড়া পেলে সন্ধ্যার আগে পার্ট ৫ পেয়ে যাবেন।নাহলে রাত এ।