অর্ধাঙ্গিত_পূর্নিমা পার্ট:১৩ সিজন:১ এর শেষ পর্ব

0
542

#অর্ধাঙ্গিত_পূর্নিমা
পার্ট:১৩
সিজন:১ এর শেষ পর্ব
Written By Ayat Mushtarih Ayan
.
.
রাফইয়াদদের জগতের গেট এর সামনে আয়েশা দাঁড়িয়ে আছে।তার গন্তব্য ভিতরে যাওয়া।কিন্তু হঠাৎ সেখান থেকে কাউকে বেরিয়ে আসতে দেখছে সে।চেহারাটাও চেনা চেনা।সেখান থেকে কাছে আসতেই দেখে,
আরে এতো রুহি।তার মানে সে এতোদিন এখানে বন্দি ছিলো?কিন্তু সে একা কেনো।আয়ান কোথায়?
.
রুহি ও সেই জগৎ থেকে বের হয়ে আয়েশাকে দেখে চমকে যায়।ইউসুফকে আর দেখা যাচ্ছে না।কারণ সে মানুষদের মাঝে এসে গেছে।এখানে জ্বীনরা অদৃশ্য থাকতেই পারে।রুহি আশেপাশে ইউসুফকে খুজেও পায় নি।ইউসুফ এটা বুঝতে পারলে তাকে হালকা করে জানিয়ে দেয়,
-আমি আছি।ভয়ের কিছু নেই।
রুহি একটু সাহস পায়।সে সামনের দিকে এগিয়ে আয়েশার কাছে যায়।
-রুহি তুই এখানে?
-ভাবী তুমি এখানে কি করো?
-আমি একটা কাজে এসেছি।
-আপু এখন এখানে থাকা যাবে না। আমাদের জলদি বাসায় যেতে হবে।
-আরে রুহি।থাম,কি হয়েছে বল আপু।
-আপু এখন বলার সময় নেই।আয়ান ভিতরে আছে।আমাদের জলদি বাসায় যেতে হবে।না হলে কখন কি হয়ে যায় আমাদের জানা নেই।
-কি বলতেছিস?আয়ান ভিতরে?তাহলে তোরা বাসায় যাবি কেনো?
-আপু আমার কাছে একটা শক্তি আছে।
-কি শক্তি?
-আমি একটা মুহুর্তকে ফিরিয়ে আনতে পারবো। যেটা ঘটে গিয়েছিলো।
-মানে?
-ধরো আমাকে যেই রাতে এখানে আনা হয়েছিলো।সেই রাত এ আমি সবাইকে ফিরিয়ে আনতে পারবো।মানে সব আগের মতো হয়ে যাবে।
-সত্যি?
-হে আপু।এটা এই অস্ত্র আয়ানের কাছে ছিলো।আমি নিয়ে এসেছি আপু।
-আচ্ছা চল তাহলে দ্রুত বাসায়।
.
.
রাফইয়াদ এর চোখ খুলতেই সে দেখে তার হাত পা বাধা।আশেপাশে তাকিয়ে দেখে তার শত্রু আমইয়াদ দাঁড়ানো।সে কল্পনার জগতে আছে ঠিক কিন্তু সে ভুলেই গেছিলো এখানে সব বাস্তবের মতো হয়।তার হাত পা বাধা থাকায় সে যাদু ও করতে পারছে না।
-কিরে আসিয়ুস?আমার জগতে চলে এলি?
আসলে অস্ত্র খুজতে খুজতে খুজতে সে কোথায় চলে এসেছে তার নিজের ও খেয়াল নেই।এখন তো দেখা যাচ্ছে এটা শত্রু পক্ষের আড্ডা।
-দেখ আমইয়াদ।আমাদের শত্রুতা আগে ছিলো।এখন নেই।
-আগে ছিলো মানে?৫দিন আগেও তুই আমার সৈন্যদের হত্যা করেছিলি।আর আজ শত্রুতা শেষ?
-আমইয়াদ এটা আমি আসিয়ুস না।আমি রাফইয়াদ।আর তুই ভালো করে জানিস আমি মিথ্যা বলি না।
-তুই মিথ্যা বলিস না কিন্তু ছলনা করতে উস্তাদ। এতো দিন পর তোকে সামনে পাইছি।ছেড়ে কিভাবে দেই বল।
-এটা ভালো হচ্ছে না কিন্তু আমইয়াদ।
.
রাফইয়াদ এর হাত এর মাঝে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করতে থাকে আমইয়াদ।ব্যাথায় কুকড়ে যাচ্ছিলো সে।সে বার বার এখন নিজের বোকামির জন্য পস্তাচ্ছে।
.
-রুহি আর আয়েশা তাদের বাসায় এসে পরে।রুহিকে দেখে সবাই ভুত দেখার মতো চমকে যায়।ফারহান সহ রুহির পরিবার এতোক্ষন টেনশনে ছিলো যে আয়েশা কোথায়। তাদের মনে হচ্ছিলো যে তাদের পরিবার এ হয়তো বড় কোন সমস্যা হয়েছে। কিন্তু এখন আয়েশার সাথে রুহিকে দেখে সবাই ভেবেই নিয়েছে হয়তো রুহিকে আয়েশা বাচিয়ে নিয়ে এসেছে
-রুহির মা রুহিকে দেখে কান্নাকাটি শুরু করে দেয়।ফারহান কিছুটা অভিমান এর সুর এই বলে,
-আমাকে বলে গেলেও পারতে।এতোটা আপন ও কি হই নি আমরা?
-বলার সুযোগটা হয় নি।
-হে তা তো হবেই না।
-ফারহান,এক বাচ্চার বাবা তুমি।এখনো আবেগ কাজ করে কেনো এতো তোমার মাঝে?
-আমার আবেগ বেশি তা তুমি জানোই।
-আবেগ দিয়ে দুনিয়া চলে না ফারহান।
-উফফ ভাষণ শুরু।
-ধুর।আরাভ কই?
-মায়ের অপেক্ষা করছে।
আয়েশা আরাভকে দেখতে চলে যায়।
রুহিকে সবাই একেক প্রশ্ন জিজ্ঞেস করতেছিলো কিন্তু তার কোন উত্তর নেই।
তার চিন্তা ভাবনা এক জায়গাতেই আটকা আছে।
কিন্তু আয়ানকে নিয়ে সবার চিন্তা কম।কারণ এর আগেও আয়ান এভাবে গায়েব হয়েছে।আবার ফিরেও এসেছে।কিন্তু রুহি তো জানে এই বারের ব্যাপারটা ভিন্ন।
.
রুহি তার রুম এ যায়।হঠাৎ ইউসুফ ও সেখানে হাজির কারো রুপ ধরে।
-রুহি সময় খুব কম।এটা ব্যবহার করো।
-কিন্তু পরে যদি কাজ না হয়?
-হবে রুহি।হবে।
-যদি আবার সব আগের মতোই হয়?আমাকে আবার সেই রাজ্যে পাঠানো হয়?
ইউসুফ চিন্তায় পড়ে যায়।আসলেই তো।এমন হলে কি হবে?সবাই যদি সব ভুলে যায়?তখন কি হবে?নাকি মনে থাকবে তাদের?
সব চিন্তার অবশান ঘটিয়ে সেই অস্ত্র নিজের রুমের বিছানায় ঢিল মারে রুহি।নিয়ত রাখে যাতে এই রাত এ ফিরে যায় সে।
.
তাই হয়।সময়ের চাকা ঘুরে যায়।কিছুক্ষনের মাঝেই নিজেকে সেই সময়ে আবিস্কার করে রুহি যেখানে সে ছিলো।তার এক মুহূর্তের জন্য যেনো বিশ্বাসই হচ্ছিলো না।তার সব মনে আছে।কিন্তু বাকি সবার কি মনে আছে কি না তা এখন প্রশ্ন।সে দ্রুত নিচে যায়।সে নিচে যেতেই আয়েশা তার দিকে আসে।
-রুহি?এসব কি হচ্ছে?
-আপু অস্ত্রের যাদু।
-আমার মতো তো সাধারণ যারা আছে ফারহান তোমার আম্মু আব্বু তাদের তো সব গোলমাল লেগে যাবে।
-আপু সম্ভবত হবে না।কারণ শুনেছিলাম যে যারা এই অস্ত্রের ব্যাপারে জানে না তাদের কিছই মনে থাকবে না।কিন্তু যাদের জানা আছে তাদের মনে থাকবে কি না সিউর না।যেহেতু তোমার মনে আছে।তার মানে সবার ই মনে আছে।
.
.
আয়ান নিজেকে তার রুমে আবিষ্কার করে।সে বুঝে যায় কেউ হয়তো তার সেই অস্ত্র ব্যবহার করেছে যা তাকে রাফইয়াদ দিয়েছিলো।সে এখন কোন সময়ে আছে তা বুঝার চেষ্টা করছে।সে মোবাইল হাতে নিয়ে সময় দেখে।আরে এটা তো সেই রাত যখন রুহি গায়েব হয়েছিলো।এর মানে রুহি?
.
সে দেরি না করে সাব্বির এর বাসায় চলে যায়।সাব্বিরও হয়তো বেচে আছে।সাব্বির হয়তো আজ ঝগড়া করে বাসা থেকে বেড়িয়ে আসবে।আয়ান বাইক নিয়ে সাব্বির দের বাসার সামনে যায়।সাব্বির ঝগড়া করে বের হয়েই আয়ানকে দেখতে পায়।
-কিরে তোকে না বললাম তোর বাসায় আসতেছি?তুই এলি যে?
-তোকে নিতে এলাম।
-এতো দরদ কোথা থেকে এলো?
আয়ান কিছু না বলে সাব্বিরকে জড়িয়ে ধরে।
.
সাব্বির কিছু বুঝতে পারে না।
.
.
মিম আবার বেচে উঠেছে।কিন্তু তার সাথে কি হয়েছিলো তার মনে নেই।শয়তানী শক্তির মনে আছে কিন্তু সে মিমকে বলে বা মেরে তার একটা লোক হারাতে চায় না।সে মিমকে সাবধান করে দেয় যাতে রুহির উপর আঘাত না করে।
.
.
রাফইয়াদ তার রাজ্যে ফিরে এসেছে।নিফাদ আসিয়ুস ফেরত গেছে।কিন্তু নিফাদ এর কিছু মনে নেই।রাফইয়াদ বুঝে গেছে যে তার অস্ত্রের ব্যবহার হয়েছে।
সে এটাও জানে আয়ান ওরা এবার প্রস্তুত হয়ে যুদ্ধে আসবে।রাফইয়াদ ও তাই বলছে।
.
আসো আয়ান বাবা।আমি প্রস্তুত।বাবা ছেলের যুদ্ধের জন্য আমি প্রস্তুত।
.
.
#সমাপ্ত।
.
.
আমার ব্রেক দরকার।তাই সিজন ১শেষ করলাম।সিজন ২ শুরু হতে একটু দেরি হবে।সামনে এইচএসসি পরিক্ষা আবার জন্ডিস পজিটিভ।আশা করি সবাই বুঝতে পারবেন।কেমন লাগলো সিজন ১ জানাবেন।আর গঠনমূলক কমেন্ট আশা করছি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here