অর্ধাঙ্গিত_পূর্নিমা পার্ট:১১

0
181

#অর্ধাঙ্গিত_পূর্নিমা
পার্ট:১১
Written By Ayat Mushtarih Ayan
.
পেটে চাকু ঢুকার পরেও ঠাই দাঁড়িয়ে আছে আয়ান।ব্যাথা হচ্ছে না তার।কিন্তু রাফইয়াদ বলেই যাচ্ছে।তার কথা গুলো শোনা দরকার।নাহয় পরে ওকে হারানো যাবে না।
.
আমি নিজেই আসিয়ুস।সেই রাজ্যটা আমার।আমার মেয়ের নেশা ছিলো অনেক।যেই মেয়েকেই পেতাম।সব শেষ করে ছাড়তাম।একদিন এক পরহেজগার মানুষের মেয়েকে আমার ভাল্লাগছিলো।তার ক্ষমতা সম্পর্কে আমি জানতাম না।আমি ভাবতাম আমি জ্বীনদের মাঝে এতো শক্তিশালী আমার সাথে কে পারবে।এই তুচ্ছ মানুষ তো না ই।আমি সেই মেয়েকে ধর্ষণ করি।কিন্তু মারতে পারি নি।সেই পরহেজগার ব্যক্তি আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়।সে তার সমস্ত শক্তি দিয়ে আমার রুহ কে দুই ভাগ করে ফেলে।আমাদের রাজ্যের একটা ক্ষমতা ছিলো আমরা শত্রুকে আর কল্পনার জগতে পাঠিয়ে দিতে পারতাম।কিন্তু সে আমাকে তা ব্যবহারের সুযোগ দেয় নি।আমাকে এখানে এনে ফেলে।আমার নারীর প্রতি লোভ হওয়া আত্মা এক জায়গায়।আর আমি এক জায়গায়।সে এমন ভাবে তার শক্তি ব্যবহার করে যে আমার ২য় আত্মা কখনো মনে করতে পারবে না যে সে আমার অংশ।আবার আমি ও তাকে আনতে সেই রাজ্যে যেতে পারবো না।আমি অনেককে সেখানে পাঠিয়েছি তাকে আনার জন্য।কিন্তু পারিনি।আমি আমার দানব কেও তার দুনিয়ার পাঠিয়ে দিয়েছি।কিন্তু তাকেও বার বার কল্পনার রাজ্যে পাঠিয়ে দিতো সে।
.
এদিকে আমি অনেক চেষ্টা করতেছিলাম।আমি তন্ত্রমন্ত্রের দ্বারা নতুন অস্ত্র আবিষ্কার করি।যেটা দিয়ে একটা মুহুর্তকে পুনরায় আগের মতো করা যাবে।আমি জানতাম যদি আমি সেই কল্পনার জগতে যাওয়ার শক্তি আমার কল্পনায় গিয়ে আমার মুহুর্ত ফিরিয়ে আনার শক্তি দিয়ে সেই মুহুর্তটা শেষ করে দেই যখন আমি ওই মেয়েকে ধর্ষণ করেছিলাম।তাহলেই আমি আমার ২আত্মা এক করতে পারবো।
আমি অন্যদের বলতাম কল্পনায় যাওয়ার শক্তিটা আনতে।কিন্তু আমি জানতাম আয়ান তুই পারবি নিফাদকে সহ আনতে।কারণ কি জানিশ?
-কি কারণ?
-তুই আমার সন্তান।
-কিহ????
-হে।তুই আর আয়েশা জমজ তাই না?
-হে।
-আমি তোর মাকেই ধর্ষণ করেছিলাম।আর হে সেটার ফল স্বরুপ তোদের জন্ম।
-এ আমি মানি না।
-যেই চাকু এখন তোর পেটে।তা থেকে কিছুক্ষন ব্যাথা হবে তোর।এরপর আস্তে আস্তে তুই আমার রুপে রুপান্তিত হবি।আমার মতো তুই ও খারাপ শক্তিতে রুপান্তরিত হবি।আর হে,আমি যখন কল্পনার জগতে যাবো তখন তুই ই এই সব রাজ্য সামলাবি বাবা।
-না আমি মানি না।তোর মতো নর পিশাচ আমার বাবা হতে পারে না।
এই বলে আয়ান চাকু বের করে ফেলতে নেয় তার পেট থেকে।কিন্তু না তা তো হচ্ছে না।সে বের করতে পারছে না।আস্তে আস্তে তার চোখ কালো করে আসছে।রাফইয়াদ আজ অনেক খুশি,অনেক।আজ তার আত্মা পেয়েছে।সন্তানকে পেয়েছে।
সে জোরে জোরে হেসে হেসে বলতেছে।কি ভেবেছিলে আয়ান?জাদূর লাঠি তোমার বালিশের নিচে একাই গিয়েছিলো?আমি রেখেছিলাম,আমি।(বিস্তারিত সারপ্রাইজ পর্ব ২ এ বলা হবে।)
আয়ান মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।ছটফট করতে থাকে।আর কিছু মনে পড়ছে না।রুহি দৌড়ে এসে আয়ানের পাশে বসে।আয়ান..আয়ান?এই আয়ান।কি হচ্ছে তোমার।উঠে বসো।এ কি হচ্ছে?আমার জন্যই সব হচ্ছে।আমি যদি তোমাকে ওই সব থেকে ফেরত না আনতাম তাহলে আজ তোমার ও অনেক শক্তি থাকতো আর অনেক জ্বীন থাকতো।সব দোষ আমার।

.
মিমের মৃত্যুর পর এবার আয়েশার টার্গেট ইয়ামিন।আয়েশা তার শক্তির সম্পর্কে অনেক আগে থেকেই জানে।আয়ান অনেক কিছু না জানলেও আয়েশা সব জানে।এটাও জানে যে প্রকৃতির লিখা বদলানো যায় না।তার পেটে শয়তানের জন্ম হবে এটাও সে জানতো।কিন্তু সে আটকায় নি।কারণ তার ক্ষমতা নেই আটকানোর।কিন্তু সে মারতে তো পারবে।এবার তার ই পালা।কিন্তু সব কিছু ছাপিয়ে এর চেয়েও বড় শক্তিকে মারতে হবে।তার মায়ের সাথে হওয়া অন্যায়ের প্রতিশোধ নিতে হবে আয়েশাকে।আয়ান জানলে হয়তো আরো আগেই সব করে ফেলতে চাইতো কিন্তু সব কিছুর একটা সময় আছে।সে প্রস্তুত আছে আসিয়ুসকে মারতে।তার অস্ত্র তৈরি করতেছে।
.
.
রাফইয়াদ প্রস্তুত হচ্ছে তার অতীতে যাওয়ার জন্য।এদিকে আয়ান এখন রাফইয়াদ এর প্রধান অস্ত্র।
নিফাদ কে নিয়ে রাফইয়াদ যাবে।রুহি আর ইউসুফকে সেল এ আটকে রাখা হয়েছে।
.
-আপনার সর্বোচ্চ শক্তি নিয়ে ফিরে আসার জন্য অপেক্ষায় আছি বাবা।(আয়ান)
-ফিরে আসবো বাপ।এরপর আমরা রাজত্ব করবো।
-আপনি ফিরে আসতে আসতে আপনার সকল শত্রুদের আমি শেষ করে দিবো।
-হুম।আমি জানি।
.
আয়ান।তুই করতে থাক সব।আমি ফিরে এলে তোকে আর পাবো না।কারণ তোরা থাকবি ই না।তোদের মাকে সেই অতীতে আমি ছুয়েও দেখবো না।তো তোদের জন্ম আর কিভাবে হবে।হাহাহা।
.
-আয়ান এর হাতে সেই অস্ত্র দেওয়া হয়। আয়ান তা ছুড়ে মারে রাফইয়াদ এর দিকে।হয়ে গেছে।কাজ হয়ে গেছে।
.
কিন্তু বেচারা রাফইয়াদ ভুলেই গেছিলো এই জগতে এলে মানুষ তার হিতাহিত জ্ঞান ভুলে যায়।সে তার নিয়ত ভুলে যায় তার বাস্তবতা ভুলে যায়।এখন নিফাদ চলে গেছে তার কল্পনায় যেখানে সে রুহির সাথে আছে।আর রাফইয়াদ চলে গেছে তার কল্পনার জগতে যেখানে সে প্রথম বারের মতোন আয়ানের মা কে দেখেছিলো।
.
নিফাদ আর কল্পনার রাজ্যে রুহিকে পেয়ে অনেক খুশি।সেখানে সে রুহিকে নিয়ে ভালোই আছে।রুহি তার সব কথা রাখছে।আসলে একটা কথা আছে না?
-হাম কিতনে খুশ হে ইস দুনিয়া মে
যাহা হামে তুম মিল গেয়ে।
ইয়ে হো না পায়ে শায়েদ ইস দুনিয়ামে
পার হো জায়েগা আপনে কাহানিও মে।
.
সেখানে বাস্তব জীবনে পেলো না রুহিকে নিফাদ সেখানে কল্পনার জগতে রুহিকে পেয়ে গেলো।সে বাস্তব আর কল্পনার মাঝে পার্থক্যই করতে পারছিলো না।
আবার অন্য দিকে রাফইয়াদ আসিয়ুস রাজ্য দেখে খুসিতে আত্মহারা।সে ভুলেই গিয়েছে সে যে এখানে আসতে পারবে না।সে চারিদিকে দেখছে আর মুগ্ধ হচ্ছে।সে তার রাজ্যের দিকে এগুচ্ছে।সবাই তাকে দেখে মাথা নিচু করে রাখছে।মেয়েরা ভয়ে কাপছে।
.
আহ কি শান্তি।এটাই তো দরকার ছিলো।সব কিছু মাঝে সে এটা ভুলে গেছে যে তার পকেটে হাত দিতে।যেখানে অস্ত্র দুইটা রাখা ছিলো।মহলে গিয়েও সব আগের মতো দেখতে পায়।সবাই তাকে বরণ করে নেয়।রুমে গিয়ে সে তার জামা খুলে রাখে।আর তার রাজ্যের যে চুর ছিলো সে এসে তার পকেট থেকে অস্ত্র নিয়ে হাওয়া।এবার বেটা বুঝবে কোথায় এসে পড়েছে সে।
.
.
এদিকে আয়েশা প্রস্তুত হচ্ছে রাফইয়াদদের শহরে যাওয়ার জন্য তার টার্গেট রাফা আসিয়ুস।
.
.
আয়ান কি হলো তোমার?আমাকে চিনতে কেনো পারছো না?আমি রুহি?আমাকে চিনো না তুমি?
-তুই বাবার শত্রু না?আর আমি বাবাকে ওয়াদা করেছি সে ফিরে আসার আগে সবাইকে সাফ করে দিবো।
-আয়ান তুমি আমাকে মারতে পারো না।
-আমার বাবার সব শত্রুদের ই আমি মারবো।আগে তোকে এর পর ইউসুফ কে।হাহাহাহা হা।
-আয়ান ভাই।তুমি রুহিকে না চিনতে পারলে।আমাকে তো চেনার কথা।কত কাজ এ তোমার সাথে ছিলাম আমি।আমাকে ও ভুলে গেলে তুমি?
-তুই।তোকে তো রুহিকে মারার পরে মারবো।
-আয়ান ভাই।শয়তানী শক্তি যতো বেশি শক্তিশালী হোক না কেনো সে কখনোই ভালো শক্তির সাথে পারে না।তোমার ভিতর যাই থাকুক একদিন ভালো রুপে ফিরে আসবেই।
-আমার মুখে মুখে তর্ক?
এই বলে আয়ান ইউসুফকে মার শুরু করে।ইউসুফ নিজেকে বাচ্চাছিলোচনা না।কারণ সে আয়ানের গায়ে হাত তুলতে পারবে না।
আর আয়ান ইউসুফকে এমন ভাবে মারছিলো যে ইউসুফ এর মরার অবস্থা।কোন কিছু উপায় না দেখে পাশে থাকা পানির কলসি দিয়ে আয়ানের মাথায় আঘাত করে রুহি।আয়ান ব্যাথায় কুকরে উঠে আর মাটিতে পরে যায়।
.
.
#চলবে
.
১হাজার শব্দের মধ্যে লিখা শেষ করলাম।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here