অর্ধাঙ্গিত_পূর্নিমা পার্ট:১০

0
164

#অর্ধাঙ্গিত_পূর্নিমা
পার্ট:১০
Written By Ayat Mushtarih Ayan
.
কি সুন্দর কথা,এতো কষ্ট করে যন্ত্র ব্যবস্থা করলাম আর এখন যন্ত্রের চাবি হিসেবে রাজ্যের সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যক্তিকে আমার কবজায় আনতে হবে।তার সাথে পেরে উঠাটা আমার দ্বারা সম্ভব?তাও চেষ্টা করতে দোষ কি?
.
সেই জন্তুটা এখন আমার বসে।আশা করি একে নিয়েই কাজ হয়ে যাবে।তাকে হয়তো এখানের পাহাড়া দেওয়ার মায়ায় রাখা হয়েছে।সেই মায়া আগে কাটাতে হবে।
.
লাঠি দিয়ে মায়া কাটিয়ে সেটাকে নিয়ে বের হলো আয়ান।এমন জন্তু দেখে সবাই ভয়ে কেপে উঠে।আয়ান শুধু একটাই ভয়ে আছে যদি এই জন্তুটাকে নিফাদ তার শক্তি দিয়ে কল্পনার জগতে পাঠিয়ে দেয় তখন কি হবে?
.
.
-বিশ্বাসঘাতক,আমি আয়েশা।আমাকে এতোদিন ব্যবহার করেছিশ তুই?
-কি বলছিশ মিম?মাথা ঠিকাছে?
-তুই বেইমান।আমাকে ব্যবহার করছিশ তুই,তোকে আমি শেষ করে দিবো।
-আমাকে কখনোই তুই শেষ করতে পারবি না।
-তোকে না পারলাম।ইয়ামিনকে তো পারবো।ও মরলেই তোরা শেষ।
-মিম নিজের লিমিট ক্রস করিস না।
-করবো ১০০বার।আর আমি মিম না আয়েশা।
-আহহ তুই পাগল হয়ে গেছিশ।
.
এরপর মিম তেড়ে যায় ইয়ামিন এর দিকে।কিন্তু তার আগেই শয়তানী শক্তি মিমকে আঘাত করে।মিম নিজেকে সামলাতে না পেরে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।ইয়ামিন মিম এর উপর বসে তার ঘাড় ঠাস করে মটকিয়ে দেয়।আর হে হে করে হাসতে থাকে।
.
কথায় আছে না পাপ ছাড়ে না বাপ কে।যেই শয়তানী শক্তির জন্ম মিম দিয়েছিলো তাই মিমকে শেষ করলো।
আয়েশা বিষয়টা দেখে হাসছে।লুকিয়ে লুকিয়ে।।কারণ তার একটা প্ল্যান এ মিমকে মারা সম্ভব হলো।আয়েশা ভালো করেই জানতো যে মিমকে মারা তার পক্ষে সম্ভব না।কিন্তু আয়েশার ক্ষমতা দেখে মিম তা ভুলে গিয়েছিলো।মিমের সেই জিনিষটার সুযোগ নিয়েই আয়েশা তাকে ভুজুং ভাজুং বুঝিয়ে পাঠিয়ে দেয় তার মালিক এর কাছে।আয়েশাও তাদের ডেরা দেখে নেয়।আর মিম সে তো বেচারি মারাই গেলো।
.
.
আয়ান নিফাদ এর রাজ্যের মহলের দিকে যাচ্ছে আয়ান।সাপের চার মাথার কুপ এ কেউ ই সামনে নিতে পারতেছিলো না।শরীর এতোটা বিশাল যে কোন অস্ত্রের আঘাত ও লাগছে না।নিফাদ যখন ই সেই জন্তুটাকে দেখে তার রুহ কেপে যায়।এ বেরি কিভাবে এলো।সে আরো ভয় এই জন্য পায় কারণ একে সেই সেই শক্তি দিয়ে কল্পনার জগতেও পাঠানো যাবে না।এমন ভাবেই সেট করা।কারণ নাহয় যে কেউ একে কল্পনার জগতে পাঠিয়ে যন্ত্রের উপর কবজা করে নিতো।এবার তো নিফাদ শেষ।সে অবাক হচ্ছে এ অচেনা মানুষটা কিভাবে কবজা করে নিলো এই প্রানীর উপর?
.
আয়ান সব ভেংগে চুরে মহলে প্রবেশ করে।এবার তার টার্গেট নিফাদ।যাদুর লাঠি দিয়ে নিফাদ কে উপরে তুলে ফেলে সে।আর সেই জন্তুর চার মাথার উপরের দিকে বসিয়ে রাখে।তার এখন টার্গেট এই জন্তু সহ রাফইয়াদদের জগতে যাওয়া।
.
ফারজানা গেট এর সামনে অপেক্ষা করতেছে।ফারজানা হেটে চলছে আর আয়ান সেই জন্তুর উপর।যে রাস্তা দিয়ে এসেছিলো সেখান দিয়ে যাওয়া সম্ভব না আয়ানদের।কারণ এতো বড় জন্তু নিয়ে সেখান দিয়ে যেতে পারবে না কখনোই।
.
রুহির অবস্থা সেখানে কাহিল।সে ভয়ে শেষ।তার কাছ থেকে তানজিলাকে নিয়ে চলে গেলো।আর তানজিলার রক্ত দিয়ে তারা উৎসবে মেতে উঠেছে।রুহির কলিজা শুকিয়ে কাঠ।সে শুধু চাচ্ছে আল্লাহ আয়ানকে পাঠিয়ে দাও প্লিজ।সে আসুক আর আমাকে বাচাক।কিন্তু সে ভালো করে জানে তা হয়তো হবে না।আজ তার শেষ দিন হবে হয়তো।তানজিলাকে শেষ করার পরেই হয়তো সে নর পিশাচ গুলো এসে রুহিকে ধরবে।আবার আফসোস ও হচ্ছে ইশ আমাকে বাচাতে ফিয়ে মেয়েটা নিজের প্রাণ হারালো।আমাকে না বাচালে কি এমন হতো?নাহয় অন্য একটা নর পিশাচের কাছে ধর্ষণ হতাম।সেই ধর্ষণের থেকে হয়তো এই মৃত্যু অনেক ভালো তবে আমার জন্যে অন্যকে তো মরতে হতো না।
.
.
আয়ান তার লাঠিকে আবার ইশারা করে রুহির খোজ নিতে কিন্তু তা বার বার রাফইয়াদদের জগতের দিকে দেখাচ্ছিলো।সে এবার লাঠির পথ ধরে চলতে থাকে।কিন্তু ফারজানা বার বার বলছিলো যে ওদিকে না যেতে।নর পিশাচদের বসবাস সেখানে।কিন্তু আয়ান নাছোড়বান্দা।কতো হারামি শিক্ষা করেছে জীবনে।আর এই নরপিশাচ।এদের ও দেখে নিবে।
.
কিছুক্ষণের মাঝেই ভয়ঙ্কর সেই মাঠে প্রবেশ করে আয়ান।কিন্তু সেখানে যেনো উৎসব চলছিলো।৪ মাথা ওয়ালা জন্তুটার আওয়াজ শুনে রুহি পিছনে তাকায়।সে আরো বেশি ভয় পেয়ে যায়।এমন জন্তু সে আগে দেখেনি।আয়ান ও রুহিকে দেখে ফেলে।কিন্তু জন্তুটা যতো রুহির দিকে এগুচ্ছিলো রুহি কি করবে ভেবে পাচ্ছিলো না।কারণ সে আয়ানকে দেখে নি।সে সামনে যাবে নাকি পিছনে যাবে।চারিদিকে মৃত্যু দেখতেছিলো সে।সে আর চাপ না নিতে পেরে অজ্ঞান হয়ে যায়।এদিকে রুহিকে অজ্ঞান হতে দেখে আয়ান লাফ দিয়ে নামে আর রুহির কাছে দৌড়ে যায়।রুহির মাথা নিজের কোলে রাখে।
.
-রুহি,এই রুহি?
রুহি উঠছিলো না।আয়ান পানি কোথায় পাবে এখন?যে রুহির চোখে মেরে ওকে উঠাবে?সামনে তো মনে হচ্ছে সবাই মরণ কান্না কাদছে।আয়ান কিছু ভেবে ওঠার আগেই কেউ একজন সেই জন্তুটার চার মাথা কেটে ফেলে।মনে হলো ধারালো কিছু এসে সেই জন্তুটার মাথায় কোপ দিলো।ছটফট করতে করতে মাটিতে লুটিয়ে পরে সে।তার উপর থাকা যন্ত্র এবং নিফাদ ও পরে যায়।ফারজানা চেচিয়ে উঠে।আরে আমি বলেছিলাম এখানে না আসতে।রাফইয়াদদের সবচেয়ে শক্তিশালী জায়গা এটা।এখানের পিশাচদের সাথে পেরে উঠা মুখের কথা না।হঠাৎ চারিদিক থেকে কিচ কিচ আওয়াজ ভেসে আসতে থাকে।পাশে চেয়ে দেখে হারো জল জল করা চোখ আয়ানের দিকে তাকে আছে আর তার দিকে আসছে।সে লাঠি বের করে কিন্তু তার লাঠিও কাজ করছে না।আওয়াজ এতো তীব্র ছিলো যে রুহির জ্ঞান ফিরে যায় সে উঠেই দেখে আয়ান সামনে।তার যেনো স্বপ্ন মনে হচ্ছিলো।এটাও সম্ভব?সত্যি কি আয়ান তার কাছে?সে তো এক প্রকার কেদেই দেয় হাওমাও করে।ভালোবাসার মানুষটাকে কাছে পাওয়ার অনুভূতিটাই বোধ হয় এমন।যা পৃথিবীর সব কিছুর থেকে বেশি।কষ্টের সময় ভালোবাসার মানুষটা কাছে থাকলে যেনো মৃত্যুকেও বরণ করে নেওয়া যায়।রুহি আয়ানকে জড়িয়ে ধরে।আশেপাশের সব দেখেও যেনো নিশ্চুপ সে।
.
আয়ান ভেবে পাচ্ছে না কি করবে।কিভাবে বাচবে এই মৃত্যু কোপ থেকে।হঠাৎ আলোক রশ্নির মতো কিছু একটা উপর থেকে এসে পরে আয়ানের সামনে।সব পিশাচের দল ভয়ে পালাতে থাকে।আরে এতো রাজা রাফইয়াদ।সে এখানে কেনো?আমাকে বাচাতে এসেছে?সে কিভাবে জানলো আমরা এখানে?সব ভাবার আগেই জায়গা খালি।রুহি আয়ানকে ধরে কেদেই যাচ্ছে কিচ্ছুক্ষণ এর মাঝেই অনেক লোক সেখানে এসে যায়।আর সেই যন্ত্র আর নিফাদ কে ধরে মহলের দিকে নিয়ে যায়।আয়ান আর রুহিকে সাথে নিয়ে রাজ প্রাসাদে উঠে সে।
.
রাত এ কিছু হয় নি।পরের দিন সকালে আয়ান বিদায় চায় ইউসুফকে তাদের হাতে দিয়ে দিতে বলে।কিন্তু তখন আয়ানকে যা শুনতে হয় তা কল্পনার বাহিরে।
.
-ইউসুফ কে ছেড়ে দিন তাহলে।
-আয়ান একটা গল্প শুনবে?
-হুম বলুন।
-তুমি যেই নিফাদ কে এনেছো না,সেটা আমার শরীরের দ্বিতীয় অংশ।সরাসরি নিফাদ কে আনার কথা তো আর বলতে পারবো না।তাই যন্ত্রের কথা বলেছিলাম।জানতাম যন্ত্রের জন্য নিফাদকে লাগবে।এক কাজে দুই কাজ।এবার রাজত্ব আমার।বলে চাকু ঢুকিয়ে দেয় আয়ানের শরীরে।এবার তুই ব্যাথায় কাতরাতে থাক আর আমার গল্প শোন…
.
.
.
#চলবে
.
.
টুইস্ট কেমন লাগলো জানাবেন…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here