অর্ধাঙ্গিত_পূর্নিমা পার্ট:৯

0
162

#অর্ধাঙ্গিত_পূর্নিমা
পার্ট:৯
Written By Ayat Mushtarih Ayan
.
.
নিফাদ এর সামনে বসে আছে আয়ান।তার নিজের কর্মের উপর আফসোস হচ্ছে।কেনো এতো নেশায় পরে গিয়েছিলো সে?কি আছে এখানে?আগেও কি এখানে এসেছে সে?এসব প্রশ্ন তার মাথায় ঘুরতেছে এমন সময় সামনে থেকে কারো হুংকার,
-এই কে তুই?এখানে কি করিস?
-আসলে আমি..
-তুই রাফইয়াদদের জগত থেকে এসেছিস তাই না?(নিফাদ)
-হে।আসলে আমার একটা জিনিস দরকার।
-যাদের চর্কি?
-না।যেখানে যাদুর চর্কি উৎপন্ন হয় সেই যন্ত্র।
.
আয়ানের কথা শুনে সবাই হা হা করে হাসতে থাকে।এতোদিন তো যাদুর চর্কিটার জন্য লোক আসতো।আজ একজন এসেছে সেই চর্কিটার যন্ত্র নিতে।বাহ ভালোই উন্নতি করেছে রাফইয়াদদের লোক।
.
এই এটাকে বন্দি করে রাখ গিয়ে যা।আর রুহি কে খোজ ভালো করে।
রুহির কথা শুনতেই আয়ানের দেহে যেনো পুনরায় প্রাণ পাখি ফিরে এলো।এর মানে রুহি এখান থেকে পালিয়েছে?এদের কাছে নেই?তাহলে আমারো পালাতে হবে।আর রুহিকে খুজতে হবে।আয়ানের কাছে কেউ আসতেই সে পিছন থেকে লাঠি বের করে দুইজনকে উড়িয়ে সরিয়ে দেয়।আয়ানের এমন ক্ষমতা দেখে অবাক হয়ে যায় নিফাদ।সে চর্কি বের করার আগেই আয়ান মাটিতে তার লাঠি দিয়ে বারি মারে আর সবাই চারিদিকে ছিটকে যায়।আয়ান যানে ১ঘন্টা লাঠি কাজ করবে না।সে দৌড়ে পালাতে থাকে সেখান থেকে।লক্ষ্য রুহিকে খুজে বের করা এরপর সেই যন্ত্র খোজা।
.
.
আহ নাটক করতে কি মজাই সে লাগে রে।ভয়ের নাটক।ভয় পাওয়ার নাটক।
মিমের রুপের গলায় টিপ দিয়ে আয়েশা বলতে থাকে।মিম অবাকে শেষ প্রান্তে।এমন শক্তি আয়েশার আছে সে একেবারেই জানতো না।
.
-কিরে অবাক হচ্ছিশ?খুব অবাক হচ্ছিস না??আরে তুই তো নিজেকেই চিনিশ না।
-আমি আমাকে চিনি না মানে?(ফুস ফুস করে বলতে থাকে মিম)
-আহা রে বেচারা আয়েশা।
-মাথা ঠিকাছে তোর? আমাকে নিজের নামে ডাকতেছিশ।
-আরে হে বে।তুই আসল আয়েশা।নিজেকে এবার তো চিনে নে।আর কতো ভ্রমে থাকলে কিভাবে হবে?
-মানে কি?
-আহা রে।মনে করো তোমার বিয়ের দিনের কাহিনি।যাদুর শক্তি তো তোর ছিলো, তোর ভাইয়ের ছিলো।তাও তোর শরীরে আমি প্রবেশ করলাম।আর আমার রুপ তোকে দিয়ে দিলাম। তোর স্মৃতি পালটে দিলাম।কেউ বুঝলি না?
-কি আবোল তাবোল বকতেছিশ?
-হা হা হা।তোর মালিক তো জানতো আমার শক্তির ব্যাপারে।তাও তোকে আজ এখানে কেনো পাঠাইছে বল তো?কারণ আমাদের প্ল্যান এটাই ছিলো।তোকে আমার হাতে মারবো আর আমি এই রুপ আজীবন এর জন্য পেয়ে যাবো।
.
এ বলে হাসতে থাকে আয়েশা।মিম আয়েশার হাসার সুযোগে কোন মতে বেচে বেরিয়ে যায়।তার মাথায় আসছে না।আসলেই কি সে আসল আয়েশা?কিন্তু এটা কি করে সম্ভব?কিন্তু সব কথার মাঝেও তো একটা কথা সত্য যে তার মালিক তাকে এই বিপদের মাঝে পাঠিয়েছে।তার তো সব জানার কথা ছিলো।সে ক্ষেপে তার মালিকের কাছে যাচ্ছে।আজ সে দেখে ছাড়বে।
.
.
রুহি আর তানজিলা বিপদের মাঝে পড়ে রয়েছে।কেউ বাচানোর নেই তাদের।তানজিলার জামার পিছনে হ্যাচকা টান পরে।সে মাটিতে পরে যায়।এমন সময় তার পা টেনে কেউ নিয়ে যেতে থাকে।চেচানোর আওয়াজ আসতে থাকে। কিন্তু রুহি কিছুই করতে পারছিলো না।টান দিয়ে তানজিলাকে সেই পুকুরের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।সবাই কিলবিল করে হাসছে।তাদের যেনো আজ উৎসব। রক্তের পিপাসা যেনো কত শত বছরের তাদের।
.
.
আয়ান চারিদিকে খুজতে থাকে রুহিকে কিন্তু কোথায় রুহির অস্তিত্ব পাওয়া যায় না।সে হতাশ হয়ে পরে।ঘন্টা খানেক পরে লাঠির শক্তি এলে সে লাঠিকে ছেড়ে দেয় রুহিকে খোজার জন্য।কিন্তু তা বার বার রাফইয়াদদের জগতের দিকে দেখাচ্ছিলো।আয়ানের লাঠির উপর সম্পুর্ন ভরসা ছিলো তাই সে সেদিকে হাটতে থাকে।কিন্তু কাছে যেতেই ফারজানার সাথে দেখা হলো।
-পাগল আপনি?মানুষ নেশা করে মাতলামি করে আর আপনি নেশা না করেই মাতাল হয়ে গেছিলেন।
-আমি কি করবো?নিজের উপর কন্ট্রোল ছিলো না।
-তো আবার এদিকে কই জান?
-রুহিকে খুজতে। আমার লাঠি দেখাচ্ছিলো যে রুহি রাফইয়াদদের জগতে।
-আরে এটা কেমনে সম্ভব?
-আমার লাঠি ভুল হতে পারে না।
-আহ ওকে তোমার লাঠি ঠিক কিন্তু সেখানে গেলেও রাজা রাফইয়াদ নিশ্চয়ই তার খেয়াল রাখবে কিন্তু তুমি যদি তার চাওয়া জিনিশ তাকে না দাও তাহলে সে তো রুহিকে ছাড়বে না।তুমি ওকে নিয়ে চিন্তা করো না।
-কিন্তু?
-কোন কিন্তু নেই।তুমি চলো যন্ত্রের খোজ এ।
.
তারা দুইজন যন্ত্রের খোজ এ বের হয়ে পরে।তারা মনে মনে যাই ভাবছে একে অপরে শুনতে পাচ্ছে।বাধ্য হয়ে তারা কিছু ভাবাই বাদ দেয়।ফারজানা জানে কোথায় আছে সেই যন্ত্র কিন্তু ভিতরে যাওয়ার সাহস তার নেই।কারণ সেখানে এমন কেউ আছে যার সামনে সে যাবে না।কি আছে সেখানে জানলে সে কিভাবে যাবে ভিতরে?
পাহাড়াদাররা পাহাড়া দিচ্ছে,
আয়ানকে দেখে তারা তেড়ে আসে।আয়ান তার লাঠি দিয়ে উড়িয়ে মারে তাদের।কিন্তু ভিতরে যাওয়ার আগে কোন মতেই ফারজানা বলতে রাজি নয় যে ভিতরে কি আছে।
আয়ান বাধ্য হয়ে না জেনেই ভিতরে প্রবেশ করে। কিন্তু ভিতরে প্রবেশ করে তার আত্মা কেপে যায়।এ কি দেখছে সে।৪ মাথা ওয়ালা সাপ।না এ সাপ না।শরীর৷ সিংহের।চার পা ওয়ালা জন্তু যা সিংহের মতো কিন্তু মাথার যায়গায় ৪টা সাপের মাথা।আয়ানকে দেখেই সে হিস হিস করতে করতে তেড়ে আসে আয়ানের দিকে।আয়ান দিকে কামড় দিতে গেলে আয়ন সাইডে সরে যায়।জিহ্বা বের করে হিস হিস করছিলো ৪ মাথা দিয়ে।এর চেয়ে ভয়ানক বিষয় আর নেই।সে যখন দাড়া তখন বোঝা যায় এতো ডায়নেসোরের মতো লম্বা জন্তু।এবার কি হবে?আয়ানের তো নিজের লাঠির সর্বোচ্চ শক্তি ব্যবহার করতেই হবে।কিন্তুসে যদি নিজের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে?
আয়ান নিজের আত্মা সেই জন্তুর মাঝে দিয়ে দিবে।এবং তা কন্ট্রোল করে আবার দেহে ফিরে আসবে।কিন্তু যদি ব্যর্থ হয় তাহলে সেই জন্তু আয়ানের উপর কন্ট্রোল নিয়ে নিবে।আয়ানের কিছু করার ছিলো না।সে বাধ্য হয়ে তা করে।আয়ান জানতো তার কষ্ট হবে কিন্তু সে সফল হয়।সে জন্তুর উপর সে কন্ট্রোল নিয়ে নেয়।তার দেহে প্রবেশ করে সে খুড়াতে খুড়াতে ভিতরের দিকে যায়।শরীরের অনেক শক্তি খরচ হয় তার তাই হাটতেও পারছিলোনা আয়ান।একটা দরজা খুলে প্রবেশ করে সে।সেখানে একটা যন্ত্র আছে।সে ওটা উঠেতে যাবে কিন্তু চারিদিক থেকে শুধু না আর না আসছিলো।মনে হচ্ছিলো হাজার হাজার মানুষ শুধু না করে যাচ্ছিলো আয়ানকে যে এটা নিয়ে যাশ না।
.
আয়ান সেই যন্ত্রটা অনেক কষ্টে তুলে।হঠাৎ একজন বৃদ্ধ পিছন থেকে বলে উঠে,যন্ত্রটা চালু করতে চাবির প্র‍য়োজন।আর চাবি স্বয়ং নাফিদ।
.
এবার তো আয়ান পড়ে যায় বিপাকে।এখন কি হবে??

.
#চলবে।
.

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here