মিশেছো_আলো_ছায়াতে #Writer_Sintiha_Eva #part : 40

0
193

#মিশেছো_আলো_ছায়াতে
#Writer_Sintiha_Eva
#part : 40

🍁🍁🍁

মুহুর্তেই হাস্যজ্জ্বল পরিবেশ টা থমথমে হয়ে যায়। উপস্থিত সকলের চোখে -মুখে এখনো আতঙ্ক বিরাজমান। সবাই একত্রে পাহাড়ের নিচের দিকে তাকায়। গভীরতার মাপ টা বোধহয় জানা নেই কারোরই। এখান থেকে পড়লে জীবিত ফেরা দুষ্কর। সবাই নিচ থেকে দৃষ্টি সরিয়ে সামনে দৃষ্টিপাত করে। আতঙ্কে সবার শরীর কাঁপছে।

আদি চোখ বুঁজে নিজের বুকে থাকা রমণীকে শক্ত করে আঁকড়ে ধরে। ভয়ে সারা শরীর থরথর করে কাঁপছে। বুকের ভেতর ঢিমঢিম শব্দ হচ্ছে। কিছুক্ষণ আগের ঘটনা বারংবার চোখ সামনে ভেসে উঠছে।

আচমকায় আদির হাত থেকে সিমথির হাত ছুটে যায় পিছলিয়ে। আদি নিজেও কিছু টা ঝুঁকে পড়ে। সিমথির এক পা শূন্যে ভেসে যায়। আদি তৎক্ষনাৎ সিমথির ডান হাত টেনে নিজের দিকে টান দেয়। এতে করে সিমথি চিটকে এসে আদির বুকে পড়ে। আদি পেছনের দিকে দুপা পিছিয়ে যায়। সিমথিকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।

সম্পূর্ণ দৃশ্যপট চোখের সামনে ভাসতেই আদির হাতের বাঁধন আরেকটু গভীর হয়। নিজের উপর নিজের চরম রাগ হতে শুরু করে। আদি তো চেয়েছিলো সিমথিকে ভয় দেখাতে। ভেবেছিলো একটু মজা করবে। কিন্তু এমন একটা বিপদের সম্মুখীন হবে এটা কেউই ভাবেনি। আদি ভাঙা গলায় বলে উঠে,,,,,

আদি : কাউকে এতোটা বিশ্বাস করিস না সিয়াজান। তুই জানতিস আমি হাত ছাড়লে নিচে পড়ে যাবি তবুও কেনো নিজেকে বাঁচানোর ট্রাই করলি না।

সিমথির নিজের কাঁধে তরল কিছু অনুভব করে চমকে উঠে। ওর সিক্স সেন্স বলছে আদি কাঁদছে। সিমথি আদিকে ছেড়ে মেহেরের দিকে কিছু একটা ইশারা করে। মেহের সিমথির ইশারা বুঝতে পেরে মাথা নাড়িয়ে সায় দেয়।

মেহের : চলো আমরা নিচে নামতে থাকি ওরা আসুক।

মেহেরের কথায় সবাই একবার ওদের দিকে তাকিয়ে নিচে নামতে শুরু করে।

সিমথি ওদের চলে যেতে দেখে আদির হাত টেনে পাহাড়ের মাঝে আসে। অতঃপর নিচে বসে পড়ে পাশে আদিকে ও টান দিয়ে বসায়। আদি চুপচাপ বসে পড়ে। নিজেকে ভীষণ অপরাধী মনে হচ্ছে আদির। আজ ওর জন্য সিমথির অনেক বড় একটা বিপদ হয়ে যেতো।

সিমথি : আমি তো ভাবতাম আপনি ভীষণ সাহসী। আফটার অল আপনি আমার বর। কিন্তু এতোটুকুতেই যে শীতলক্ষ্যা নদী বানিয়ে ফেলতে জানেন এটা তো আমি জানতাম না।

সিমথির কথায় আদি সিমথির দিকে তাকায়। সিমথির দৃষ্টি আদির দিকেই। আচমকা আদি সিমথিকে জড়িয়ে ধরে শব্দ করে কেঁদে দেয়। সিমথি হতবাক। ছেলে মানুষ সহজে কাঁদে না এটা সিমথি জানতো। কিন্তু এই ছেলে এভাবে কাঁদছে কেনো তাহলে।

আদি : এতো ভালোবাসিস কেনো আমাকে।

সিমথি : কারণ আপনি ভালোবাসার যোগ্য

আদি : আমি অনেক খারাপ সিয়াজান। আমার জন্য আজ তোর এতোবড় একটা ক্ষতি হতো। আমি কেবল তোকে কষ্টই দিলাম

সিমথি : আপনি খারাপ আমি তো ভালো তাই না। আর আপনার দ্বারা যদি একটু আধটু ভুল না হয় তাহলে আপনি যে আমাকে এতো ভালোবাসেন এটা কিভাবে জানতাম বলুন।

আদি : আমি তোকে তোর মতো ভালোবাসতে কেনো পারলাম না।

সিমথি : উফফস আদি তুমি কান্না থামাও। নয়তো এখন সত্যি সত্যি ধাক্কা মারবো। এমন ভাবে কাঁদছো যেনো আমি সত্যি সত্যি ম/রে গেছি।

আদি : সিয়াজান ( ধমকে)

সিমথি : এইইই তুমি আমাকে ধমকাচ্ছো।

আদি : এসব বাজে কথা একদম বলবি না।

সিমথি : আচ্ছা এবার কান্না থামান। আপনি যে এতো ছিচকাদুনে আগে জানতাম না তো।

আদি : জানলে কি করতে

সিমথি : কি আর করতাম আরো কয়েক বছর আগে বিয়ে করে আপনাকে বড় করতাম। ট্রেনিং দেওয়াতাম বউকে কিভাবে ভালোবাসতে হয়। কোথায় আমি পড়ে যেতে নিচ্ছিলাম তো আমি কাঁদবো আর আপনি আমাকে বুকে জড়িয়ে চুমু খাবেন আর সান্ত্বনা দেবেন। তা না আপনি ভ্যাঁ ভ্যাঁ করে কাদছেন আর আমি সান্ত্বনা দিচ্ছি। হায় কপাল ( কপালে হাত দিয়ে)

আদি : আমি তো বুকে জড়িয়ে চুমু খেতাম। তা তুই কি আমাকে চুমু খেয়েছিস। আর বুকে তো আমিই জড়ালাম৷ নে এবার চুমু খা।

আদির কথায় সিমথি ভ্রু কুঁচকে তাকায়।

সিমথি : ধ্যাততত অসভ্য লোক একটা। একটু আগে কাঁদছিলেন আর এখনই অ/স/ভ্য/তা/মি শুরু হয়ে গেলো।

সিমথির কথায় আদি হেসে উঠে। সিমথি চোখ মুখ কুঁচকে উঠে দাঁড়ায়। অতঃপর হাঁটা লাগায়। পেছন পেছন আদি হাসতে হাসতে আসে। দূর থেকে ওদের আসতে দেখে সায়নরা স্বস্তির শ্বাস ছাড়ে।

____________

সাজেকে সর্বত্র মেঘ, উচুঁ-নিচু পাহাড়ের সমাহার।
সাজেক পিসাসু মানুষের সবচেয়ে কৌতুহলী জায়গা হচ্ছে কলাংক পাহাড়। সাজেকের রুইলুই পাড়া থেকে ট্রেকিং করে কলাংক পাহাড়ে যাওয়া যায়৷ বর্তমানে সবাই সিমথিরা সবাই সেই পাহাড়ের সামনেই দাঁড়িয়ে আছে। এখানে পর্যটকদের পাহাড়ে উঠতে অবশ্যই বাঁশের লাঠি ব্যবহার করতে হয়। ইশান আর আয়াশ দুজন মিলে গিয়ে সবার জন্য লাঠি আর পানি নিয়ে আসে। পাহাড়ের কিছুটা পিচ্চিল হওয়ায় সবাই বেশ সাবধানতা অবলম্বন করে উপরে উঠছে। নিচে থেকে গেলো মিম, আদ্র আর মেহের। মূলত মেহের এসব লাঠি সাঠি নিয়ে উঠতে পারে না। আর মিম আদ্র কে নিয়ে উঠতে পারবে না তারজন্য।

মেঘা : ইয়ার কালকেই তো চলে যাবো

সিমথি : কেনো আরো থাকার ইচ্ছে আছে।

রোদেলা : এমন একটা জায়গা কে ছাড়তে চাই বল।

সিমথি : আমি ছাড়তে চাইছি।

তরী : তুই হলি রোবট মানুষ যার মধ্যে কোনো অনুভূতি শক্তি নেই।

আদি : এটা বলো না শালিকা। তোমার এই রোবট বোনই আমার মতো মাসুম বাচ্চা কে ওর জালে ফাঁসিয়েছে।

পেছন থেকে আদির কথায় সিমথি ব্যতিত সবাই হেঁসে দেয়। সিমথি চোখ পিটপিট করে পেছন ফিরে আদির দিকে তাকায়। আদি চোখ টিপে ঠোঁট কামড়ে হেঁসে দেয়।

আদি : সিয়া জান আমাকে দেখার জন্য পুরো সময় পরে আছে সামনে যাও।

সিমথি : নির্লজ্জ লোক একটা। আমি আপনাকে জালে ফাঁসিয়েছি। কি অশ্লীল কথাবার্তা।

আদি : আমি নির্লজ্জ এটার প্রমাণ তো তুমি প্রতি দিন-রাতই পাও।

আদির কথায় সিমথি হাতে লাঠি উঠিয়ে আদির দিকে এগুতে নিলে আদির ধমকে থেমে যায়।

আদি : মারবো টেনে একটা। ফাজিল একপা এগুলে ধাক্কা মারবো। পাহাড় পিচ্চিল দেখিস না। পরে গেলে তোর হাড়গোড় ও খুঁজে পাবো না। মারামারি পরে করিস।

সিমথি : মারবো টেনে একটা। এটা ওটা ঢং করার জায়গা পায় না। আমি কি একা পড়বো নাকি আপনাকে নিয়েই পড়বো। হুহহ

আদিকে ভেঙিয়ে সিমথি হাঁটতে শুরু করে। আদি অসহায় দৃষ্টিতে সায়নের দিকে তাকায়।

সায়ন : ক্ষেপিকে ক্ষেপিয়েছিস এর মাশুল খুব সুন্দর ভাবে দিতে হবে।

আদি : আমার শ্বাশুমা কি ওরে পেটে নিয়ে আগুন খেয়েছিলো কথায় কথায় এমন আগুন হয় কেনো। তোর বোনের জন্য দিন-রাত চব্বিশ ঘণ্টা আমার বাড়িতে ফায়ার সার্ভিস রাখতে হবে। ওর তেজের আগুনে কখন আমি ঝলসে যায় তখন তো ফায়ার সার্ভিসের কর্মীর প্রয়োজন আমাকে বাঁচানোর জন্য।

আয়াশ : ভাই তুই এখনই মরে যা। সিমথির তেজের আগুনে না ঝলে পাহাড় থেকে লাফিয়ে পড়।

আদি : তোদের আঙ্কেল মামা ডাক শোনানোর জন্য হলেও আমাকে বাঁচতে হবে। ইউ নো না আমি আবার মহান পুরুষ। কত মানুষ আমার দিকে তাকিয়ে আছে।

ইফাজ : আদি ভাই চুপ যাও। তোমার দুই সমুন্দি এখানে আছে। আমাদের সামনে আমাদের বোনকে নিয়ে এমন কথা বলা সাজে না।

আদি : এমা ইফাজ ভাইয়া আমি তো তোমাদের কথা ভেবেই বললাম।

আফিন : এই ভাই সূর্য সিমথি ম্যামকে আমরা যেমন রাগী বদমেজাজি ভাবতাম উনি ততটা ও না তাই না।

সূর্য : সেটাই তো। উনি বাইরে একজন আর ভেতরে সম্পূর্ণ ভিন্ন একজন।

সায়ন : এই সূর্য তোমরা এতো পিছিয়ে পড়লে কেনো।

আহান : আসছি ভাইয়া।

অতঃপর সবাই আবার হাঁটা লাগায়। এই পর্যন্ত সিমথি একবারো ও আদির দিকে তাকায়নি। আদি ফোন বের করে সিমথিকে টেক্সট করে সিমথি সিন করে রেখে দেয়।

সিমথি : আহ নেকামো। সবার সামনে ধমকে চুপিচুপি সরি বলছে। নাটক ( বিড়বিড় করে)

আদি : আদি আব তু গায়া। ঘুমন্ত বাঘিনী জেগে উঠেছে। এতোদিন তো ভালোই রোমান্টিক মুডে ছিলো এখন আবার রণচণ্ডী লুক নিচ্ছে কেনো। ( মনে মনে)

অতঃপর সবাই পাহাড়ের চুড়ায় উঠে দাঁড়ায়। সাদা সাদা মেঘ চারদিকে উড়ে বেড়াচ্ছে। মুহুর্তেই আবার সবুজে ঘেরা দৃশ্য ভেসে আসছে। আদিবারা সবাই মেঘ ধরতে ব্যস্ত হয়ে যায়। আদি সিমথিকে একপাশে মুখ গোমড়া করে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে খারাপ লাগে। তখন ওভাবে না বকলেই হতো। কিন্তু সিমথি ওভাবে তেড়ে আসাতে একটা বিপদ হতে পারতো তাই তো আদি বকলো।

আচমকা গালে ঠান্ডা কিছুর স্পর্শে সিমথি চমকায়। গালে হাত দিয়ে ভেজা কিছু অনুভব করে সামনে তাকাতেই চোখ পড়ে একদলা মেঘ সিমথির চারপাশে উড়ছে আর কিছু মেঘ গায়ে এসে মিলিয়ে যাচ্ছে। সিমথি হেসে উঠে। আদি মুগ্ধ দৃষ্টিতে সিমথির হাস্যজ্জ্বল মুখশ্রীর দিকে তাকিয়ে থাকে। মেয়েটা অল্পতেই খুশি।

_________________

রাতের দিকে সবাই বারবিকিউ পার্টির আয়োজন করেছে। পাহাড় থেকে ঘুরে আসার সময় সবাই মুরগী নিয়ে এসেছে। ছেলেরা আপাতত বারবিকিউ তৈরি করতে ব্যস্ত। মাঠের মাঝখানে আগুন জ্বালিয়ে তাতে আস্তো মসলা মাখানো মুরগি গুলো পুড়াচ্ছে। মুরগির সাথে আছে বাঁশের কোরল আর নান রুটি। মেয়েরা বসে সবাই আড্ডা দিচ্ছে। আদি কাজের ফাঁকে ফাঁকে সিমথির দিকে তাকাচ্ছে। কিন্তু সিমথি একবারের জন্য আদির দিকে তাকায়নি।

আদি : আমার অভিমানী অর্ধাঙ্গিনী তোর অভিমানের স্রোতে আমি ভেসে যাচ্ছি। এটা কি তুই সত্যিই বুঝতে পারছিস না। ( মনে মনে)

সায়ন : এহেম এহেম তোর চোখের দৃষ্টি টা এদিকে আন ভাই চিকেন তো পুড়িয়ে ফেলছিস।

আদি : তোর বোন যে আমার অন্তর পুড়াচ্ছে সেদিকে তো তোর খেয়াল নেই।

ইফাজ : সিমথি যতটা রাগী, বদমেজাজি। আপন মানুষের কাছে ততটা আহ্লাদী। তুমি ওভাবে ধমক দেওয়ায় অভিমান হয়েছে। আবার ও অল্পতেই খুশি। এখন বাকিটা দেখার দায়িত্ব তোমার।

ইফাজের কথায় আদি দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে। অতঃপর কিছু একটা মনে হতেই ঠোঁটের কোণায় হাসি ফুটে উঠে। সায়ন সেদিকে তাকিয়ে হাসে। ওর যা বোঝার বুঝে গেছে।

আফিন : তুই কি দ্য কিলার কুইনের ননদের প্রেমে পড়েছিস নাকি সূর্য।

আচমকা আফিনের কথায় সূর্য হকচকিয়ে যায়। আদিবার থেকে দৃষ্টি সরিয়ে সামনে তাকায়। আফিন আর আহানকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে ঘাবড়ে যায়। আমতা আমতা শুরু করে। কি বলবে সাতাশ বয়সী যুবক হয়ে একুশ বয়সী একটা বাচ্চার মেয়ের প্রতি ভালোবাসাময় অনুভূতি অনুভব করছে। এটা শুনলে ওর দুই বন্ধু নির্ঘাত জীবন হারাবে।

আহান : কি রে চুপ কেনো।

সূর্য : ক কি আ আবোল তাবোল বকছিস। আ আমি আসছি।

সূর্য কথা কাটাতে উঠে চলে যায়। আদিবা আড়চোখে সূর্যর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আটকে রাখা নিঃশ্বাস ছাড়ে। সূর্যকে এভাবে সম্মোহনী দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতে দেখে আদিবার শ্বাস আটকে আসছিলো। ভাগ্যিস সূর্য উঠে গেছে নয়তো অক্সিজেনের অভাবে হয়তো মা/রা/ই পড়তো আদিবা।

অতঃপর রাতে খাওয়া-দাওয়ার পার্ট চুকিয়ে সবাই বারোটা অবধি আড্ডা দেয়। কাল সন্ধ্যার দিকে সবাই রওনা হবে এটা ঠিক করে যে যার রুমে যায়।

সিমথি নিজের রুমে এসে থমকায়। পুরো রুম অন্ধকার। ব্যাপার কি। আদি তো প্রায় মিনিট চল্লিশের মতো হবে এসে গেছে। তবে বোধহয় ঘুমিয়ে গেছে। সিমথি গাল ফুলিয়ে লাইটের সুইচের দিকে অগ্রসর হয়। তখনই পুরো রুমে লালচে লাইটের আলো ছড়িয়ে পড়ে। সিমথি চমকায়। পুরো রুম গোলাপ দিয়ে ডেকোরেশন করা। বাতাসের সাথে চেনা ঘ্রাণ নাসারন্ধ্রে পৌঁছাতেই সিমথি চোখ বুঁজে শ্বাস নেয়। এসবকিছু আদির পাগলামি। সিমথি পেছন ফিরে থমকায়। আদি নেভি ব্লু শার্ট পড়ে পেছনে দাঁড়িয়ে আছে। লাল আলোয় মুখ টা ভীষণ স্নিগ্ধ লাগছে। সিমথি একটা শুকনো ঢোক গিলে। নিজেকে শান্ত করে ওয়াশরুমের দিকে অগ্রসর হয়। কিন্তু আদির গলায় চির পরিচিত আবৃত্তি শুনে থমকায়।

” পরের জন্মে বয়স যখন ষোলই সঠিক
আমরা তখন প্রেমে পড়বো

মনে থাকবে।

সিমথি নিশ্চুপ আদি সিমথি ঝাকায়।

আদি : কি হলো মনে থাকবে

সিমথি : মনে থাকবে

” বুকের মধ্যে মস্তো বড় ছাদ থাকবে শীতল পাটি বিছিয়ে দেবো।
সন্ধ্যে হলে বসবো দুজন
একটা দুটো খসবে তাঁরা
হঠাৎ তোমার চোখের পাতায়
তারার চোখে জল গড়াবে
ক্লান্ত কবি গান গাইবে
তখন আমি চুপটি করে
দু’চোখ ভরে থাকবো চেয়ে
মনে থাকবে?

সিমথি : মনে থাকবে।

আদি সিমথির পেছন দাঁড়িয়ে চুলে মুখ গুঁজে

এই জন্মের চুলের গন্ধ পরের জন্মে থাকে যেনো
এই জন্মের মাতাল চাওয়া পরের জন্মে থাকে যেনো

মনে থাকবে?

সিমথি : ম মনে থাকবে

এই জন্মের পরিপাট্য সবার আগে ঘুচিয়ে দেবো
তুই কাঁদলে গভীর সুখে
এক নিমিষেই সব টুকু জল চুষে নেবো

মনে থাকবে?

সিমথি : মনে থাকবে।

আর যা কিছু হই বা না হই পরের জন্মে তিতাস হবো
দোলমঞ্চের আবির হবো শিউলিতলার দুর্বো হবো
শরতকালের আকাশ দেখার অন্তহীন সকাল হবো
মনে থাকবে?

সিমথি : মনে থাকবে

পরের জন্মে তোমায় নিয়ে বলতে ভীষণ লজ্জা করছে

পরের জন্মে তোমায় নিয়ে বলতে ভীষণ লজ্জা করছে
ভীষণ ভীষণ লজ্জা করছে
পরের জন্মে তোমায় নিয়ে

মনে থাকবে

সিমথি : মনে থাকবে

এই জন্মের দূরত্ব টা পরের জন্মে ঘুচিয়ে নেবো

মনে থাকবে

আবেগে সিমথি অভিমান ভুলে আদিকে ঝাপটে ধরে গলায় চুমু খায়। অতঃপর ঘোর লাগানো কন্ঠে বলে

সিমথি : মনে থাকবে।

চলবে,,,,,

( ভুলক্রটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। ধন্যবাদ)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here