শুধু_তুই #পর্বঃ১৬ #Rifat_Amin

0
184

#শুধু_তুই
#পর্বঃ১৬
#Rifat_Amin

ছাদে, প্রহরভাইয়ের ওখান থেকে নেমেই বাইকে উঠলো প্রেম৷ মনমেজাজ বিক্ষিপ্ত হয়ে যাচ্ছে। কারণে অকারণে রাগ হচ্ছে প্রচুর। আজকে প্রহরভাইয়ের বিয়ে হলো, অথচ কত ঝামেলা! কত শখ ছিলো বিয়েতে আনন্দ হবে। তা না! এখন আনন্দের থেকে মন খারাপ’ই হচ্ছে বেশী। দুটো বাইকে করে সেখান থেকে রওনা দিলো প্রেম আর সাব্বির। সোনিয়ার ব্যাপারটা সমাধান করতেই হবে৷ বাইক চালাতে চালাতে পকেট থেকে ফোন বের করে রাফিকে কল করলো প্রেম৷

-হ্যালো রাফি। বল ওদিকের কি খবর। (প্রেম)

-সবকিছু ঠিকঠাক। পিক পাঠাতে পারবো না। তুই জলদী আয়। (রাফি)

– সমস্যা নেই। আর পাঁচমিনিট। একটা কাজ কর। আবীরকে ফোন করে পাঠা তো ওখানে। আমার সাথে শুধু সাব্বির আছে। (প্রেম)

-ওকে, তারাতারি আয়। (রাফি)

ফোনটা কেটে দিয়ে দ্রুত বাইকের গতি বাড়িয়ে দিলো প্রেম। আজকেই এর শেষ দেখে ছাড়বে সে। সব বন্ধু একসাথে হলে একধরনের পাওয়ার কাজ করে পুরো টিমের মাঝে। আর মাথার উপর অলওয়েজ প্রহরভাই আর তাঁর বন্ধুরা তো আছেই। প্রেম হঠাৎ লক্ষ্য করলো পেছনে একটা প্রাইভেট কার ওদের ফলো করছে। সাব্বির এখনো সেটা বুঝেনি। প্রেমের জ্বলন্ত মস্তিষ্ক ঠিক বুঝে নিলো সামনে সমুহ বিপদ। যেভাবেই হোক এখান থেকে কেটে পড়তে হবে।

🌧️

অর্জন এখনো ছাদে প্রহরের সাথে আড্ডায় বিভোর। সদ্য বিয়ে করা প্রহর যেন ভুলেই গেছে বিয়ের কথা। ওর কাছে বিয়ে করাটাই জরুরী ছিলো। বর্তমানে সোনিয়ার আসল রহস্য জানা আর রশ্নিকে, সোনিয়ার থেকে সেভ রাখাই প্রহরের একমাত্র উদ্দেশ্য। ছাদের চতুর্দিকে রঙ্গিন আলো জ্বলছে। সেই আলোয় অর্জনের সাথে বসে আছে প্রহর৷ জীবনের গুরুত্বপূর্ণ দিন আজ, অথচ প্রহর যেনো বিয়ে করেই জিতে গেছে সবকিছু থেকে। অর্জন বসে ফোন টিপতে টিপতে বিরক্ত হয়ে যাচ্ছে। সে বিরক্ত কন্ঠে বললো,

– আজ না তোর বাসর রাত। এখানে আর কতক্ষণ থাকবি? আমি তো চলে যাবো এখন। ( অর্জন)

কথাটা বলেই দোলনায় সটান হয়ে শুয়ে পড়লো প্রেম৷ প্রহর নিরুত্তর চেয়ে থেকে বললো,

– তোকে আটকে রাখছে কে? (প্রহর)

অর্জন মহাবিরক্ত হলো। মনেমেজাজের উপর ১ চামচ বিরক্ত, ১ চামচ হাসি-খুশি ভাব আর একচামচ কষ্ট মিশিয়ে একধরণের যৌগ তৈরী সে করে বললো,

– তোর সাথে আজ এতদিন ধরে আছি৷ অথচ একমুহূর্তের জন্যও ভাবিনি তুই রশ্নিকে ভালোবাসিস। শুধু মনে হয়েছে বড়ভাই হিসেবে শাষণ করিস, হা-হা-হা। তুই জিনিয়াস রে। (অর্জন)

-এখানে হাসার কি আছে? আর আমি রশ্নিকে ভালো-টালো বাসি না ওকে! সোনিয়ার থেকে মুক্তি পেতেই এই বিয়েটা করলাম৷ (প্রহর)

– তুই প্লিজ আর মিথ্যা বলিস না। মুডটা আর খারাপ করিস না আমার। সবাই আগেও তোকে বলছিলো রশ্নিকে তুই ভালোবাসিস কি না! অথচ প্রতিবার’ই এড়িয়ে গিয়েছিলি। আচ্ছা বাদ দে। তুই যে এভাবে বিয়ে করবি তা এজন্মে ভাবি নি আমি! (অর্জন)

-পরের জন্মে ভাবিস না’হয়। এখন আম্মুর কাছ থেকে বাইকের চাবিটা নিয়ে প্রেমকে ফলো কর। (প্রহর)

– তোর ভাই যে চালাক! আমাদের থেকেও সে অনেক এক্সপার্ট। কোনদিন জানি ওর আন্ডারেই আমাদের চলতে হয়৷ মনে হয় না এই দিনটা খুব দূরে। আর সোনিয়া? সোনিয়ার বিষয়েও ওর খোঁজ নেয়া হয়ে গেছে দেখিস৷ (অর্জন)

প্রেম মুচকি হাসলো। দোলনায় বসতে বসতে বললো,

– আমি প্রেমকে ছোটবেলা থেকে যেভাবে তৈরী করতে চেয়েছি। সে তেমনভাবেই বড় হয়ছে। আমি জাস্ট ওকে ফ্রিডম দিয়েছি। বাট ও কি করছে না করছে সব খোঁজ তোরাই রেখেছিলি। শুধু মাঝে মাঝে ভাবি ও ঠিকপথে আছে কি না? মাঝে মাঝে ওকে আমি ঠিক চিনতে পারিনা! এত এটিটিউড কই পেলো ভাই?

অর্জন বসা থেকে উঠতে উঠতে বললো,

– এত চিন্তা করিস না। ওর নিজের খেয়াল রাখার মতো বয়স হয়েছে। ও সবকিছু ভেবে চিন্তেই করে। (অর্জন)

ঠিক তখনই প্রহরের ফোনে একটা মেসেজ আসলো। প্রহর ফোনে তাকিয়ে মেসেজটা পরেই চমকে উঠলো,

“তোমার ছোটভাই বেশী বেশী করছে। একবার হসপিটালে পাঠাইছিলাম জাস্ট। তাও ওর শিক্ষা হয় নাই। এবার কি করবো ভেবে দেখছো? আমি সবসময় কিন্তু ওর প্রতি আর ওর ফ্রেন্ডদের নজরে রাখার চেষ্টা করি। ওদের ব্যাক আসতে বলো। ”

আননোন নাম্বারের মেসেজটা পরার সাথে সাথেই প্রহরের ভেতরটা ধক করে উঠলো৷ অর্জন তড়িৎ গতিতে বসা থেকে উঠে বললো,

– তোকে আসতে হবে না। আমি আন্টির থেকে চাবিটা নিয়ে যাচ্ছি। টেনশন করিস না। রশ্নির সাথে একটু টাইম স্পেন্ড কর। ভালো লাগবে। (অর্জন)

ঠিক তখনই আরেকটা মেসেজ আসলো প্রহরের ফোনে,

” I think, I’m in a dan*ger.. But it’s far cry to go home back. Then what i do? ”

প্রহর মেসেজটা পরলো। টেনশনে ঘাম ছুটে যাচ্ছে একেবারে। কি করবে ভেবে পাচ্ছেনা । প্রহরকে এই রাতে পাঠানো ঠিক হয়নি, সেটা ভালো করেই বুঝতে পারছে সে। কিন্তু কি করার আছে এখন? অর্জন চলে গেছে। কিন্তু কোথায় যাবে? ওর লোকেশন তো ঠিক জানা নেই! প্রহর কাঁপা কাঁপা হাতে মেসেজ টাইপ করলো,

“Make up your best knowledge and imagine it’s exam. ”

মেসেজটা যখন প্রেমের কাছে পৌঁছালো তখন বাইকের গতি ৮০+। ইশারায় সাব্বিরকে থামতে বললো সে। আস্তে আস্তে থেমে গেলো দুজন। পেছনের কারটা’ও থেমে গেছে। সাব্বির এখনো কিছু বুঝেছি। প্রেম মেসেজটা পড়ার পর নিজেকে প্রস্তুত করলো। যদি বাইকের স্পিড ১০০+ করা যায় তাহলে পার হওয়া যাবে। কিন্তু, সামনে পুলিশ চেকপোস্ট। ধরা খেলেই বিপদ। সাথে দুজন শুধু। হুজুগে মাতাল হয়ে বাইক নিয়ে বেড়িয়ে পরা একদম ঠিক হয়নি। সেফটি নেয়া লাগতো অন্তত। প্রেম হেলমেট খুলে বললো,

– চল ঐ কারটার ওখানে যাই। সেই শুরু থেকেই কারটা আমাদের ফলো করতেছে। কথা বলা লাগবে। তার আগে মুখে মাস্ক পরে নে। (প্রেম)

-ওকে। লেট’স গো। (সাব্বির)

মাস্ক পরে, বাইকে উঠে আবার ব্যাক করলো তারা। প্রাইভেট কার’টার সামনে গিয়ে বাইক থামিয়ে নেমে পড়লো। চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার। এই যায়গায়টা একেবারে নির্জন। ঝিঝিপোকা বিরতিহীন ভাবে ডেকে চলেছে। আশেপাশে কোনো কোলাহল নেই, জনমানবহীন শুন্য প্রান্তর একেবারে। কারের সামনে গিয়ে গ্লাসে দুটো টোকা দিতেই ভেতর থেকে নেমে পড়লো একটা ছেলে আর একটা মেয়ে। ছেলেটা কালো মাস্ক পড়া৷ কিন্তু মেয়েটা’র মুখে কিছু নেই। মেয়েটা’কে কিছুটা চেনাচেনা লাগছে। কিন্তু এই মহুর্তে এসব ভাবার সময় নেই। কার এবং বাইকের হেডলাইটের আলোয় চারদিকটা কিছুটা আলোকিত হলো। প্রেম বললো,

– ফলো করছেন কেনো? (প্রেম)

কথাটা বলার সাথে সাথেই শর্ট*গান বের করলো কালো মাস্ক পরিহিত ছেলেটা। তার ঠিক একসেকেন্ডের মাথায় সাব্বির শু*ট করলো ছেলেটার হাতে। সাথে সাথে’ই ছিটকে পরলো ছেলেটার হাতের শর্ট*গান। দুসেকেন্ডে যে ঘটনা ঘটে গেলো তাতে প্রেম হতভম্ব দৃষ্টিতে সাব্বির আর ছেলেটার দিকে তাকিয়ে রইলো। জীবনে আরো একটা ভুল সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছিলো সে। ভাগ্যিস সাব্বির ছিলো। নাহলে যে কি হতো। হাতের যন্ত্রণায় তখন ছেলেটা কাতরাচ্ছে। ছেলেটার সাথে থাকা মেয়েটা ভয়ে তটস্থ। কি করবে ভেবে পাচ্ছেনা একদম। প্রেম তাৎক্ষণিক বললো,

– ছেলেটাকে গাড়িতে তুলে দিয়ে এখান থেকে কেটে পড়াই বুদ্ধিমানের কাজ। মনে হয় সামনের পুলিশ চেকপোস্ট ইতোমধ্যে গানের শব্দ পেয়ে গেছে। তুই তুলে দিতে ধর, আমি ভাইয়াদের জানিয়ে দিচ্ছি আমরা সেফ আছি আর এই রাস্তায় যেনো ভুলেও না আসে। ঠিক আছে? ফাস্ট কর। (প্রেম)

সাব্বির ছেলেটার পেট বরাবর কয়েকটা লাথি দিয়ে গাড়িতে উঠিয়ে দিলো। মেয়েটা ইতোমধ্যে গাড়িতে উঠে গেছে। সাব্বির ফট করে মেয়েটার পিক উঠিয়ে বললো,

– গাড়ি ড্রাইভ করতে পারলে তারাতারি এই ভাইয়াকে হসপিটালে নিয়ে যান। আমরা চললাম। আল্লাহ হাফেজ।

ঠিক তখনই হাতে বাইক চালানোর গ্লাফস পরে, মাটিতে পরে থাকা শর্ট*গান তুলে জঙ্গলের মধ্যে ঢিল ছুড়লো সাব্বির। এই মধ্যরাতে হঠাৎ পুলিশের গাড়ির আওয়াজ শোনা গেলো। অতঃপর তটস্থ ভঙ্গিতে প্রেম সাব্বিরকে বললো,

-লেটস গো। বাইকে ওঠ তারাতারি সাব্বির। (প্রেম)

তাৎক্ষণিক প্রেম আর সাব্বির সেখান থেকে কেটে পরলো একটু দূরে গিয়ে লক্ষ্য করলো সেই প্রাইভেট কারটা আবার এদিকেই আসছে। প্রেম সেটা দেখে মুচকি হাসলো। সাথে হাসলো সাব্বির। প্রেম ইতোমধ্যে অর্জন ভাইয়াকে আর প্রহরভাইকে জানিয়ে দিয়েছে ওরা সেফ আছে। অতঃপর রাফিকে ফোন করলো সে,

– ওখান থেকে চলে আয় রাফি। এতক্ষণ আমরা ঝামেলায় ছিলাম। যত দ্রুত সম্ভব আবীরকে নিয়ে ওখান থেকে বেড়িয়ে পর৷ কোনো রিষ্ক নিতে চাচ্ছি না। (প্রেম)

– আচ্ছা। বারবার মেয়েটা এদিকে তাকাচ্ছে। আমার মনে হয় এখান থেকে বেরিয়ে পরাই ভালো। (রাফি)

প্রেম ফোন কেটে বাইকের স্পিড ১০০+ করলো। এখন সব ঝামেলা মুক্ত। পুলিশ কখনো ধরতে পারবে না। প্রাইভেট কারটাও বোধহয় ইতোমধ্যে হসপিটালে চলে গেছে।

🌧️

প্রেমের মেসেজ পরেই শান্ত হলো প্রহর। কে এই অজ্ঞাত ব্যাক্তি যে আমাদের দুই ভাইয়ের উপর পরেছে? সোনিয়া একা কখনো এই কাজ করতে পারবে না। আজকের রাতটা পার হোক,,৷ কাল থেকে দেখা যাবে। একটু পর প্রেম ঢুকলো বাড়িতে। প্রহরের আম্মু দেখার সাথে চিল্লিয়ে বললো,

– রাত কয়টা বাজে? এই সময় বাইক নিয়ে কই গিয়েছিলি? (আম্মু)

প্রেম স্বাভাবিক স্বরে বললো,

– ভাইয়া একটা দরকারে মার্কেট পাঠিয়ে ছিলো। কাল দেখিও কি এনেছি তোমাদের জন্য। এখন ঘুমাও, রাত হয়েছে। (প্রেম)

প্রহরও সেই সুরে সুর মিলিয়ে বললে,

– হ্যাঁ আম্মু। একটু দরকারে পাঠিয়ে ছিলাম। প্রেম কিছু খাবি নাকি বাইরে থেকে খেয়ে এসেছিস? (প্রহর)

প্রেম একবার দেয়ালঘরিটার দিকে তাকিয়ে দেখলো রাত ১২ টা ১৩ বাজে। শরীরের জ্যাকেট টা খুলতে খুলতে বললো,

– বাইরে থেকে খেয়ে এসেছি। ঘুমাবো। (প্রেম)

আম্মু কি বলবে ভেবে পাচ্ছেনা। কাকে দোষ দেবে? প্রহরের দিকে দৃষ্টি রেখে বললো,

-এই তুই সবসময় ওকে সাপোর্ট করিস কেন বলতো? ওর বয়সী ছেলে মেয়ে গিয়ে দেখ বইয়ে মুখ গুজে আছে। (আম্মু)

প্রেম বিরক্ত কন্ঠে বললো,

– তো আমি কি করবো? ক্লাসের ফাস্ট বয় কি হইনা নাকি? (প্রেম)

মহুর্তেই আম্মুর মুখ অফ করে দিলো প্রেম। প্রেমের কান্ড দেখে প্রহর মুচকি হাসছে। প্রেম টেবিল থেকে একটা আপেল তুললো। একটা কামর দিয়ে আম্মুকে আপেলটা দিতে দিতে বললো,

– এটা খেয়ে মাথাটা ঠান্ডা করো ময়না। (প্রেম)

বলেই দৌড়ে নিজের রুমে চলে গেলো প্রেম। প্রহর মাথা চুলকাতে চুলকাতে বললো,

– রশ্নি কই আম্মু? ঘুমাইছে? (প্রহর)

আম্মু বিরক্ত কন্ঠে বললো,

– এতক্ষণে মনে হলো বিয়ে করেছিস তাইনা? ও আমার রুমে থাকবে আজ। ভাগ এখান থেকে। (আম্মু)

– ওহহ আচ্ছা (প্রহর)

কথাটা বলেই সেখান থেকে নিজের রুমের দরজায় দাঁড়িয়ে পরলো সে। প্রেমের সাথে কি একবার কথা বলে আসবো? না থাক! রেস্ট নিক। কাল কথা হবে। অতঃপর দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে পরলো সে। একদম ঘুটঘুটে অন্ধকার ভেতরটা। অথচ হালকা ফুলের গন্ধ আসছে কোথা থেকে? প্রহর অবাক হলো। সাধারণত নিজের ঘর কখনো অন্ধকার থাকে না। তবে আজ? প্রহর আন্দাজেই রুমের লাইটটা অন করার সাথে সাথেই চমকে উঠলো। পুরো রুমটা ফুলে ফুলে সাজানো
। বিছানায় এলোমেলোভাবে শুয়ে আছে রশ্নি। ঘুমিয়ে পড়েছে নাকি? এত তারাতারি রুমটাই বা কে সাজালো? কারো উপস্থিতি বুঝাতে গলা খাকারি দিলো প্রহর। সেই শব্দে আমার সদ্য চোখে আসা ঘুম ভেঙ্গে গেলো। কিন্তু নতুন কোনো যায়গায় নিজেকে আবিষ্কার করায় ঠিক বুঝে উঠতে পারলাম না আমি কোথায় আছি। আমি ঘুমে ঢুলতে ঢুলতে সামনে দাঁড়িয়ে থাকা সুদীর্ঘ পুরুষ মানুষটার দিকে তাকিয়ে রইলাম। প্রহরভাইকে দেখতে দেখতে বললাম,

– আমি স্বপ্ন দেখছি তাইনা প্রহরভাই? আপনি তো প্রায়’ই আমায় স্বপ্নে আসেন। আবার কোথায় হারিয়ে যান। (আমি)

প্রহরভাই বিছানায় বসতে বসতে বললো,

– তুই এখন তোর বরের ঘরে। আই মিন, বাসর ঘরে। আবার কিছু খেয়েছিস নাকি? বিয়ার? (প্রহর)

আমার ধ্যান কাটছে আস্তে আস্তে। ঘুমে চোখ জড়িয়ে আসছে। তবুও সামনের সুদর্শন পুরুষটির দিকে তাকিয়ে রইলাম। আর একবার নিজেরদিকে তাকিয়ে দেখলাম শাড়িটাড়ির অবস্থা খারাপ। ঐশী পড়িয়ে দিয়েছিলো। কিন্তু কখনো শাড়ি পরে ঘুমাইনি তো। কোনোমতে শাড়িটা নিজের শরীরের সাথে জড়িয়ে বললাম,

– আপনি এখানে কেনো প্রহরভাই? (আমি)

তখনও আমার ধ্যান কাটেনি পুরোপুরি৷ কখনো এত রাত পর্যন্ত জেগে থাকা হয় না আমার। আবার আজ পরিশ্রম বেশী হওয়ায় আরো চোখ জরীয়ে যাচ্ছে একেবারে। আমার কথায় প্রহরভাই মুচকি হেসে বললেন,

– তো এখন বিয়ে করে নিজের রুমটাও তোকে দিতে হবে নাকি৷ (প্রহর)

– দিলে দিবেন। এখন ডিস্টার্ব করিয়েন না। ঘুম পাচ্ছে ভীষণ। (আমি)

প্রহরভাই আমার কানের কাছে মুখ দিয়ে বললেন,

– নতুন নতুন বিয়ে করেছি। তবুও কি এভাবে দেবদাস মুডে থাকতে হবে বলতো? আর তুই কি সত্যি সত্যি এত জলদী ঘুমাস? তাহলে তো বিপদ। মহা বিপদ! এখন থেকে রাত জাগার ট্রাই কর। (প্রহর)

কথাটা বলার পর কানে আর গলায় সুরসুরি দিতে ভুললেন না উনি। মাথাটা মহুর্তেই গরম হয়ে গেলো আমার। যখন বুঝলাম এটা স্বপ্ন না। তখন লজ্জায় পারি মাটির নিচে ঢুকে যাই। কিন্তু বিছানার নিচে মেঝে থাকায় কম্বলের তলে ঢুকেই নিজেকে শান্ত করলাম।

চলবে?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here