#ইয়াসমিন_রিমা
#অসম_প্রেম
#পর্ব_২৪ টুইস্ট
আদিত্য চাইছে নিজেকে শেষ করে দিতে কিন্তু পারছে না।চোখ খুলে তাকালো। টেবিলের উপর কিছু ফল আর একটা ছুরি দেখতে পেল। আদিত্য নজর শুধু ওই ছুরির দিকে।আর মাথায় প্রেমাকে হাড়ানোর যন্ত্রনা ঘুড়ছে।আজ যা হোক একটা কিছু করেই ছাড়বে।
আদিত্য তৎক্ষণাৎ উঠে গেল। কিন্তু চোখের সামনে ঝাপসা প্রেমাকে দেখতে পেল।প্রেমা ওর সামনে হাঁটু গেড়ে বসে।ওর হাতে হাত রেখে বলতে শুরু করল।
, আপনি নিজের কোনো ক্ষতি করবে না। আপনি আমায় খুব ভালোবাসেন তাই না। দেখবেন আপনার ভালোবাসা একদিন সত্যি আপনার হবে। আমি ঠিক আবার ফিরে আসবো।আদিত্যর চোখে ধোঁয়াশায় আবার মিলিয়ে গেল। আদিত্য আবার অজ্ঞান হয়ে গেল। কোথাও যেন আদির প্রেমাকে ফিরে পাওয়ার আশা জাগলো।সবটাই আদিত্যর ভ্রম ছিল।
শ্রাবন খুব খুশি হয়ে ছিল প্রেমা চলে যাওয়াতে কিন্তু ও প্রতিশোধ এখনো পূরণ হয়নি।আদি কেরে নিয়ে ছিল। এখন তার শাস্তি পাচ্ছে।
কিছু দিন পর,
আলিশা মামী দুপুরের রান্না করছিল। আদিত্য ড্রইং রুমে সোফায় বসে ফোনে প্রেমার ছবি দেখছিল। অর্নবের পরিক্ষা শেষ তাই ভাইয়ের সাথে বসে টিভি দেখতে খেলা দেখছিল। তখনি একটা ছেলে বাড়িতে আসল হাতে কার্ড।
,হাই আদিত্য।
আদিত্য চমকে গেল। সামনে তাকালো।বলল
,কে তুমি।
, আমি হলাম তোমার বড় মার ভাইয়ের ছেলের।যার বিয়ের কথা বলেছে। আমি সিয়ান হক।
, ওহ্।
, দুদিন পর এংগেজমেন্ট । হোটেল ছারিনাতে।দেখ আমি তুমি যদি না যাও তাহলে আমাদের পুরো দলবল এসে কিন্তু নিয়ে যাবে। তখন আমায় দোষ দিতে পারবে না। ওরা সবাই বিদেশে আছে।কাল পরশু চলে আসবে।
,আলিশা, আচ্ছা আমরা যাব। পিছন থেকে বলল।
, ওহ্ বনটি। কেমন আছ তুমি। আমরা কিন্তু পর নই। তোমরাও আমাদের ই ভাই বোন। বিয়ে সব আয়োজন তোমাদের সামলাতে। তোমাদের ভাইয়ের বিয়ে না।
,অর্নব, ওহ্ মাঝে বোধ হয়। আমি ই বাদ পরে গেলাম।
,তা কেন হবে অর্নব তুমি তো আর এক ভাই।জান আমার ভাই বোনদের অভাব নেই। সবাই আসলে অনেক মজা হবে দেখবে।
,আলিশা,তা মানতেই হবে।ভাই বলে কথা।
,সিয়ান,আদি একদম মন খারাপ করবে না। আমরা আছি না। তোমার জন্য ওর থেকে ভালো একজন আসবে জীবনে।আর হ্যা আদি আমি একা হাতে সব সামলাতে পারছি না।ওরা তো কবে আসবে। তুমি এখন আমার সাথে চল । অনেক জায়গায় কার্ড দিতে হবে।একা থাকলে খারাপ লাগবে।চল কাজও হবে ঘোরাও হবে। অর্নব তুমি চলো।
, অর্নব,না আমার ম্যাচ শেষ হয়নি। গেলে মিস হয়ে যাবে।
,আদি, না সিয়ান তুমি যাও। আমার ইচ্ছে হচ্ছে না।
, আলিশা, তুই একবার বাইরে বের হ দেখবি ভালো লাগবে।
,সিয়ান,হ্যা বোনটি ঠিক বলেছ। তোমরা সবাই কিন্তু থেক। দুদিন পর অনুষ্ঠান।
সিয়ান জোর করে আদিকে নিয়ে গেল। সিয়ানের সাথে আদির ঘোরাঘুরি করে মন ভালো হয়ে গেল।সিয়ান আদি গাড়িতে বসে কথা বলছে আর চলছে সিয়ান চালাচ্ছে।
,সিয়ান, দেখবে যখন পাজি গুলো একসাথে হবে। তখন কি মজা মস্তি করে। কিভাবে সবার পিছনে লাগে। তুমি ওদের থেকে একটু থেক। ওরা যা পাজি।আদের একটা বন্ধু মহল আছে। সেখানে অনেক গুলোই বিয়ে করেছে।আর বেশি ভাগ দেখবে কাজিনের প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে। আমি অবশ্য আমার বন্ধুর নাইমের বোন সারিনার প্রেমে। এখন তার সাথেই বিয়ে।
,আদি ,তাই না কি।কি কর তুমি।
, আমি দেশের কিছু বিজনেস সামলাচ্ছি ।আর ওরা বিদেশে।
, তোমরার ফ্যামিলি তে কে আছে।
, আমার বাবারা দুই ভাই তিন বোন।তার মধ্যে তোমার বড় মা বড় ।মেজ নবিতা আর ছোট্ট ছবিতা ফুফু ডাক্তার।আর মেজ জায়ান শেখ আর ছোট্ট সিহাব খান ফুফা ব্যাবসা সামলাচ্ছে।মেজ ফুফুর দুই ছেলে।আয়ান বিদেশে বিজনেস এ আর আরিশ কলেজে সেকেন্ড ইয়ারে। ছোট্ট ফুফু র এক ছেলে পূর্ব সেকেন্ড ইয়ারে এক মেয়ে পূর্ণতা আর আরুতা একসাথে ইন্টার ফার্স্ট ইয়ারে পড়ে।আর আমার একটা বোন আছে হিমানি বিবাহিত একটা মেয়ে আছে। আমার বন্ধু সাইফকে বিয়ে করেছে। ছোট্ট চাচা জারিফ হক চাচী কবিতা প্রফেসর। তাদের দুই মেয়ে জমজ টায়রা টুসি ক্লাস নাইনে পড়ে। আমার বাবা সিরাজুল হক প্রফেসর। আমার মা লতা গৃহিণী।
,কি বলছ এতজন।
, হুম দেখেছ কত গুলো ভাই বোন।
,হু।
ওদের সাথে মিশতে মিশতে আদি একটু স্বাভাবিক হয়ে গেছে। বাড়ি এসেছে বাইরে বেরিয়ে ওর ফ্রেশ লাগছে।কাজে সবাই কে নিয়ে মেতে থাকলে কষ্ট কম হবে।
,,
আজ দেশের নাম করা হোটেল ছারিনাতে বিশাল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সিরাজুল হক এর ছেলে সিয়ান এর আংটি বদল। সেখানে সবাই উপস্থিত আছে চৌধুরী বাড়ির, শেহ্জাহান বাড়ির,হক বাড়ির, শেখ বাড়ির,খান বাড়ির। সবাই খুব হই হুল্লোড় করেছে।যারা বিদেশে ছিল তারা চলে এসেছে একজন মাএ বাকি।
পুরো দল এক হয়েছে। সবাই আড্ডায় মশগুল। তার মধ্যে
রিনা চৌধুরী বলেন
,কি রে তোরা সবাই এসেছিস আর একজন কোথায়। রেগে। ওনাকে কি নতুন ইনভাইটেশন লেটার দিতে হবে নাকি।
, আয়ান, মামনি একদম চিন্তা কর না।ও ঠিক আসবে।রওনা দিয়েছে।ওর ত অনেক কাজ থাকে।জানই ত কত বড় দায়িত্ব।
,আদিত্য,কার কথা বলছ আয়ান।
,সে আসলেই দেখতে পারবে। একদম ঝরের বেগে আসবে আর সব লন্ডভন্ড করে দিয়ে চলে যাবে।
, রিনা চৌধুরী, তোর ওর গুনকিত্তন করতে হবে না।তোর কাজ তুই কর। যখন যায় তারপর আর কোনো খবর থাকে না। রেগে।আজ আসুক খবর আছে ওর। আমাদের কোনো মুল্য নেই। সারাদিন খালি রাজনীতি ,সমাজ সেবা, গুন্ডামি মস্তানি,আর ব্যবসা। আজকের দিনে ও ঠিক টাইম মত আসতে পারছে না।
, আদি,কে আসতে পারছে না বড় মা।
,কে আবার তোর আপু।সে তার ইচ্ছা মতো চলে।আজ ওর কপালে দুঃখ আছে।যখনি আসবে তখনি একটা মারামারি করে আসবে। জীবনে কাউকে শান্তি তে থাকতে দেয়নি।
নবিতা রিনা চৌধুরী মেজ বোন এসে বলল
,আপা তুই শুধু শুধু টেনশন করছিস । মেয়ে টা চলে আসবে। ফোন করেছিল গাড়িতে আছে।ওর ফ্লাইট টেকঅফ করতে দেরি করেছে তাই।
, হিমানি,দেখ ও চলে আসবে একটু পরেই ত অনুষ্ঠান শুরু হবে।এর চলে আসবে।
,সাইফ,হ্যা শালিকা ঠিক চলে আসবে । হেসে। তার দুলাভাই তার জন্য অপেক্ষা করছে।
, হিমানি, তোমার বন্ধু আসলে।কত গুলো মার খাও দেখবনি। তোমাদের বন্ধু মহল এক হলে কে কোথায় পায় বাগে।
সবাই যে যার কাজে চলে।বাকিরা আড্ডায় ব্যস্ত। আদিত্য র দুচোখ আজও প্রেমাকে খুঁজে বেরায়।
,,,,
পথিমধ্যে কারো আগমন ঘটে।পরনে কালো প্যান্ট কালো শার্ট। কালো কোট একহাতের আঙ্গুলের ভাঁজে কাঁধে ঝোলানো।গায়ের রং দুধে আলতা। ফর্সা লম্বা ড্যাশিং স্মাট।চোখে ব্লাক সানগ্লাস। হাতে সব চেয়ে দামী ঘরি ।ফোন। পেছনে কিছু ডাকাতের মত ডাকসাই হ্যানসাম বডিগার্ড আছে।দেখেই বোঝা যায় কোনো মাফিয়া বা বিখ্যাত ব্যক্তি।চলার বেগ দূর্ত।
চলবে,