ইয়াসমিন_রিমা #অসম_প্রেম #পর্ব_৩৫

0
483

#ইয়াসমিন_রিমা
#অসম_প্রেম
#পর্ব_৩৫

, ওহ্। কিন্তু শুনেছিলাম যে ভাবি না কি তোমাকে ছেড়ে চলে গেছে।যে চলে গেছে তাকে তুমি এখানো ভালো বাসো। সত্যি আদি ভাবী কিন্তু অনেক লাকি ছিল কিন্তু ব্যাড লাক।তোমার ভালোবাসা বুঝলো না।সরি আদি ভুল করে তোমাকে ভাবির কথা মনে করিয়ে দিয়েছি। I’m really really sorry 😞

, it’s ok ফারহান। তুমি শুধু দোয়া কর আমার বউ যেন আমার কাছে ই ফিরে আসে।

,তা তো চাই ।কিন্তু যে মানুষ টা তোমাকে ছেড়ে যেতে পারলো।সে ত একটা বারো ও তোমার কথা ভাবলো না আদি।

, আদিত্য, আসলে আমি জীবনে শুধু ওকেই ভালোবাসি আর বাকি সারাজীবন ঠিক এভাবেই বাসবো।সত অবহেলা থাকলেও।

,ফারহান, তুমি দেখি ঠিকই আমারি মতন। আমি ও না সেই প্রেমার সাথে প্রথম দিন দেখা থেকে ই ভালোবাসি। আর এখনও বাসি।আর সারাজীবন এভাবে ভালোবাসবো।

আদিত্য প্রচন্ড রেগে আছে। মনে হয় যেন ওর কলিজা ছিঁড়ে নিয়েছে। চোখ বন্ধ করে রাগ কন্ট্রল করলো। বেশিক্ষণ এভাবে থাকলে আর নিজেকে ঠিক রাখতে পারবে না। সময় আসলেই সব কড়ায় গন্ডায় হিসেব তুলবে।

দুজনে বেশ ভালো গল্পে মেতেছে। সারাটা দিন আড্ডা দিয়েছে। দুজনের একটা ফ্রেন্ডলি সম্পর্ক হয়েগেছে। ফারহান আদিত্যর থেকে দশ বছরের বড় তবুও। বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছে।

,,,,,,

এদিকে,

প্রেমা কন্ট্রাকশন সাইডে কাউকে খুঁজে চলেছে।কে হতে পারে। কারন প্রেমার আজ অবধি কোনো সন্দেহ ভুল হয়নি। কে খুব চেনা কেউ ছিল।ভাবছে আর খুঁজছে। সারাদিন এভাবে কাটলেও বিকেল গড়িয়ে আশার দিকে।একটা বয়স্ক লোক কে দেখে স্তব হয়ে গেল।সিরি দিয়ে নিচে নামছিল মাথায় একটা সিমেন্ট এর মাখা খালি করাই ছিল। শুধু অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। মাথা থেকে পা পর্যন্ত চোখ বুলিয়ে নিল।

সময় সত্যি পরিবর্তনশীল।

একটা সময়ের দাম্ভিক মানুষটাও আজ দিনমজুর খাটছে।
সময়ের ব্যবধানে মানুষ কতটা পাল্টে যায়।

চোখ ছলছল করে ওঠলো।পড়নে ছেড়া একটা গেঞ্জি আর পুরোনো একটা লুংগি।ধুলোময়লা মাখা।খালি পায়ে নোখ গুলো ও বড় হয়ে কালচে হয়ে আছে। চেহারায় বয়সের ছাপ। শরীর ভেঙ্গে ঝুকে গেছে। তবুও কাজ করছে। সত্যি আজ মানুষ টা কতটা অসহায়।দেখতে দেখতে লোক টা পাশ কেটে চলে গেল।

,প্রেমা , এই যে শুনছেন।

, someone, ময়লা গামছা দিয়ে মুখ মুছে।হ্যা বলেন।

, আপনি এই বয়সে কাজ করছেন।

, কি করমু পেটের দায়।কাম করি।

, আপনার কেউ নেই।মানে আপনার বউ বাচ্চা।

, মলিন মুখ করে, না আমার সব ছিল কিন্তু আমি সবাই রে হারাইয়া ফেলছি। চোখের পানি মুছে। আমার একখান মাইয়া আর পোলা আছিল।বউ আছিল সব চইলা গেছে।

, কেন গেছে আপনি এই অসুস্থ শরীরে ও কাজ করছেন।

পাশে থেকে এক বৃদ্ধা বললো,ম্যাডাম উনার কেউ নাই বাড়ি ঘর ও নাই। আমাগো লগে রাস্তা পাশে রাত কাটায়।

,প্রেমা, what । আপনারা এই বয়স্ক শরীর নিয়ে কেন কাজ করছেন। এখানে বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। রাগ দেখিয়ে।আজ থেকে আপনাদের আর কোনো কাজ করতে হবে না।আর আপনাদের বাড়ির লোকের নাম্বার বা ঠিকানা দিন। তাদের সাথে আমি যোগাযোগ করব।

, some one,ম্যাডাম আমাগো কাজ থেইকা বাইর কইরা দিবেন না।আমরা কোনো কাম নষ্ট করি নাই। আমাগো একটু আটটু ভুল হইতেই পারে। আমাগো ক্ষমা কইরা দেন। বলেই পায়ে পড়ে গেল।বাকি সবারি একই অবস্থা।

সবাই বলতে লাগলো।ম্যাডাম আমাগো কাম থেইকা বাইর কইরা দিবেন না। সবার ভিতরে ভয় কাজ করছে।

প্রেমা, আমার পা ছাড়ুন।আর আপনাদের কে কাজে রেখেছে। চোখ গরম করে।ফের যদি আমি কাউকে কাজে দেখি তার কি অবস্থা হবে ভাবতেই পারবে না।

এরমধ্যে বিদেশ থেকে এসিস্ট্যান্ট আসলো।প্রেমার সাথে দেখা করতে কন্ট্রাকশন সাইডে।প্রেমার সকল কাজের বা হাত যে সকল আপডেট দেয়। সকল কাজ হ্যান্ডেল করে। খুব ভালো করেই জানে প্রেমার কথা না শুনলে ওর কি হাল করবে। প্রেমা কতটা খারাপ সেটা রাজু খুব ভালো করেই জানে।একজন পাওয়ারফুল ওমেন। সকল কাজ পেছন থেকে প্রেমা কলকাটি নারে আর সেই ইনফরমেশন সামনে থেকে দেয় রাজু ।ম্যাডামের নুন খেয়েছে গুনগান ত করতেই হবে।ম্যাডামের কথায় উঠে আর বসে।

,রাজু,ম্যাডাম আপনি এখানে।

,প্রেমা, ওহ্ চলে এসেছ ।

,ম্যাডাম বডিগার্ড ছাড়া চলছেন এটা অনেক বড় রিস্ক।

,ডেবিল মার্কা হাসি দিয়ে,তাই না কি যে আসবে তার কি হবে সেটা খুব ভালো করেই জানো। আমার সাথে লাগতে আসা আর জান নিয়ে দৌড়ানো দুটোই একই।

, কিন্তু তবুও ম্যাডাম।

,আহ চিৎকার করে রাজু।

,সরি ম্যাডাম।

,ম্যানেজার কোথায়।বলতেই ম্যানেজার চলে আসলো।
ম্যাজার,সরি ম্যাডাম।

,প্রেমা, আমি সরি শুনতে অভ্যস্ত নই। ওকে।

,ম্যানেজার, ওকে ম্যাডাম।

, ওদের কাজে কে রেখেছে।

, কেন ম্যাডাম। আমি।

, উল্টে আমাকে প্রশ্ন করা হচ্ছে। রাগি চোখে তাকিয়ে। রাজু কাল থেকে এটাকে ও কাজ থেকে বার করে দিবি। নতুন কাজে রেখেছিস না। এবার হারে হারে টের পাবে।

,ম্যানেজার, আমার চাকরি কেরে নিয়েন না। কেঁদে কেঁদে প্লিজ।

,রাজু,ম্যাডাম এক কথা দু বার বলে না। তুমি জানতে না। কোনো কন্ট্রাকশন সাইডে বয়স্ক লোক বা বাচ্চা দের দিয়ে কাজ করানো নিষেধ। এটা ই নিয়ম।

,প্রেমা,রাজু বেশি কথা আমার পছন্দ নয়। বলেই বৃদ্ধা লোকগুলোর সামনে চলে গেল।

বৃদ্ধা লোকগুলো বলতেই লাগলো।ম্যাডাম আমাদের কেউ নেই। আমাদের কাউকে বাড়ি থেকে বের দিয়েছে। আমরা বৃদ্ধা বলে।আর কাউকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখেছিল কিন্তু দেখানেও অবাব বলে বেরিয়ে আসতে হয়েছে।কি করমু কাজ কইরা খাই।আর দিন শেষে রাস্তায় ঘুমাই।

সত্যি ওনাদের কথাগুলো শুনে চোখে পানি চলে আসলো।এই বৃদ্ধা বয়সে কত কাজ করে খেতে হচ্ছে।যে ছেলে মেয়ে কে এত ভালোবাসা যত্ন করে বড় করেছে তারাই বোঝা মনে করে বাড়ি থেকে বের করে দেয় বা বৃদ্ধাশ্রমে পাঠায়। জীবন টা সত্যি খেলার পুতুল মনে হচ্ছে। প্রয়োজন ফুরিয়ে গেলেই সময় শেষ।

প্রেমা,রাজু ওনাদেরকে নতুন ঠিকানায় পাঠিয়ে দাও।আর কখনো যেন কোনো কাজ না করে। আসলে সবাই মানুষ কিন্তু মনুষ্যত্বা নেই।

,,,

নতুন ঠিকানা হলো দেশের নাম করা বড় বৃদ্ধাশ্রম ও অনাথ আশ্রম। যেখানে সহশ্রাধিক বৃদ্ধা ও অনাথ শিশুরা আছে। যেখানে সবাই হাসি খুশি খুব সুন্দর জীবন যাপন করছে। যেখানে মানসিক শান্তির অভাব নেই। শুধু একটু কমতি আছে। শিশুদের বাবা মার ভালোবাসা আর বৃদ্ধাদের সন্তানের ভালোবাসা। জীবন বরই অদ্ভুত।

,,

, some one,ম্যাডাম আমাগো বাইর কইরা দিয়েন না।

,প্রেমা, আপনার নাম ত অজয় মল্লিক তাই না। ওহ্ সরি মিস্টেক হয়ে গেল। অজয় চৌধুরী হবে।কি তাই তো।

,আজয় চৌধুরী, অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।কে এই মেয়ে।যে এভাবে নির্দিধায় বলে দিল।,কে আপনি।

,ডেবিল মার্কা হাসি দিয়ে, লুকোচুরির ত একটা সীমা থাকা দরকার তাই না।

, অজয় চৌধুরী,কে তুমি।

, পকেটে হাত ঢুকিয়ে, আমি হলাম এই কন্ট্রাকশনের মালিক।হা হা হা। কেমন জেন রহস্য ময় হাসি। কথায় হাজারো রহস্য জরিয়ে আছে।

, অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে,কে তুমি। তোমার নাম কি।
বাকি সব লোক কন্ট্রাকশন সাইডে কাজ করা সবাই জরো হলো।

,সে টা জেনে কোনো লাভ নেই। রাজু কে চোখের ইশারায় বললাম উঠিয়ে নিয়ে আসতে।বলেই চলে গেল। সবাই ভাবছে কি হচ্ছে এসব।

অজয় চৌধুরী ভেবেই চলেছে।কে এই মেয়ে টা ।যে কি না তার নাম বলেদিল। কোন অতীত জরিয়ে আছে। পদবী পাল্টে ফেলেছে সেটা ও কিভাবে জানলো

গাড়িতে উঠে বাড়ির দিকে রওনা দিলাম। সারাদিনের কাজে সন্ধ্যা হয়ে গেল।রাজু ড্রাইভারের পাশে বসা ।

,রাজু,ম্যাডাম ওই লোকটার সম্পর্কে আপনি এত কিছু কিভাবে জানলেন।

,প্রেমা,একটা রহস্যময় হাসি দিয়ে। সেটাই তো রাজু।খেলা এইবার জমবে। আগে আগে দেখো হোতাহে কেয়া।হা হা হা হা।

,রাজু,হা হা হা হা হা। সত্যি আপনার তারিফ করতেই হয়।ম্যাডাম আপনার বুদ্ধি তে পারা সত্যি কষ্টকর।

,প্রেমা,হা হা হা হা

চলবে,,
🔴কপি করা নিষেধ।🔴

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here