ফুলকৌড়ি পর্ব (১৮) গল্প কপি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ #লেখনীাতে_শারমীন_ইসলাম

0
1155

#ফুলকৌড়ি
পর্ব (১৮) গল্প কপি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ
#লেখনীাতে_শারমীন_ইসলাম

কান্না থেমে গেল কৌড়ির।দরজার দৌড়গোড়ায় দাড়নো ছেলেটার উচ্ছ্বসিত কন্ঠের নির্বিকার কথায় কান্নাভেজা নজরজোড়া হয়ে উঠলো অসহায়।এই ছেলে তার মানসম্মান আর কিছুই রাখলো-না।সারাদিনে একদণ্ডও শান্তিতে থাকতে দেয়না।যখন তখন যেখানে সেখানে যারতার সামনে ওই লোকটাকে আর তাকে ঘিরে উল্টো পাল্টা কথা বলা শুরু হয়ে যায়।তার নরমাল প্রেশার বাড়িয়ে দেয়।এখন এমন একটা অবস্থা হয়েছে তার,এই ইতুড়ে ছেলেটা যেখানে থাকে ভুলেও সেখানের ছায়া মাড়ায় না কৌড়ি।কখন কার সামনে উল্টো পাল্টা কিছু বলে বসে,আর তার না অকালে আক্কা পাওয়ার টাইম চলে আসে।এই ছেলের জন্য না শান্তিতে কোথাও থাকা বসা যায়,আর না মনের দুঃখে শান্তি মতো কাঁদা যায়।এখন যদি ইভান ভাইয়ার কথার বর্ননা অনুযায়ী তার না হওয়া শ্বশুরবাড়ির,আর বরের ডিটেইলস সম্পর্কে জানতে চায় মান্যতা আপু।তবে কি’হবে?জানতে পারলে কি ভাববে মেয়েটা?আর তার কি লজ্জার শেষ থাকবে?
তারপর ওই ভয়ঙ্কর লোকটাকে আর তাকে ঘিরে এসব কথা যদি বাড়ির সবার কনে যায়,কেমন বিব্রতকর আর অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়তে

‘কৌড়ি শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে যেতে চায়-না মানেটা কি?আর ওর বরটা আবার কে?

গলায় আশ্চর্যতা নিয়ে জিজ্ঞেস করলো মান্যতা।ইভান দরজার সামনে থেকে এগোতে এগোতে বললো।

‘তোকে বলবো কেনো?এটা ফুলকৌড়ির আর আমার সিক্রেট ব্যাপার স্যাপার।তোর মতো পেট পাতলা মেয়েকে বলে,আমার না হওয়া বউমনির আমি সর্বনাশ ডেকে আনি।অসম্ভব!যে-কোনো মূল্যে যুদ্ধ বিদ্রোহ করে হলে-ও তাকে আমার বউমনি বলে চাই।

ইভানের সতেরো প্যাচানো কথা শুনে মান্যতার কপাল কুঁচকে গেলো।নিজের নামের অপমানটাও গায়ে মাখানোর সময় পেলো না।কৌড়ির দিকে তাকালো সে।মান্যতা তাকাতেই কৌড়ির অসহায় মুখটা আর-ও ছোটো হয়ে গেলো।সন্দেহভাজন গলায় জিজ্ঞেস করল।

‘ছোটো দাদাভাই এসব কি বলছে কৌড়ি?তোমার আর ওরমধ্যে কি সিক্রেট চলছে?তোমার আবার হঠাৎ বর, শ্বশুরবাড়ি,এসব আসলো কোথা থেকে?

উত্তর দিতে পারলো না কৌড়ি।মুখটা আরও ছোটো করে ফেললো।ইভানের দিকে অদ্ভুত নজরে তাকাতেই চমৎকার হেসে দিলো সে।সেটাও অদ্ভুত নজরে দেখলো মান্যতা।ইভানের বলা কথাগুলো না ভেবেচিন্তে হুটকরে বলে বসলো।

‘তুই কি কোনোভাবে কৌড়িকে এ-বাড়ির ছোটো বউ বানানোর ইঙ্গিত দিচ্ছিস?

‘আস্তাগফিরুল্ল্যাহ,এসব কি কথাবার্তা!এই গর্দভ আমি একটু আগে কি বললাম।ফুলকৌড়িকে আমি আমার না হওয়া বউমনি বললাম না।আর তুই না ভেবেচিন্তে কি আস্তাগফিরুল্ল্যাহ মার্কা কথাবার্তা বলে দিলি!বুঝেছিস তবে কেনো আমি তোকে মাথামোটা বলি।ওমনি ওমনি তো আর বলিনা।কথাবার্তা কাজকর্ম যেমন নামও তার তেমন হওয়া উচিত?তাই নয়কি ফুলকৌড়ি?ওহ স্যরি স্যরি আমার বউমনি?

কৌড়িতো কথা বলতেই ভুলে গেলো।এই ছেলের কথার পাল্টা কথা বলা মানে।এক পুকুর ভরাডুবি জলের মধ্যে একটুকরো ঢিক ফেলা।মান্যতা আশ্চর্য হয়ে বললো।–তারমানে?

‘ইয়েস, ফুলকৌড়িকে আমি দাদাভাইয়ের বউ বানাবো বলে কনফার্ম করে ফেলেছি?কনফার্ম মানে বিয়ে হোক আর না হোক,আমার দাদাভাইয়ের বউ হবে ফুলকৌড়ি।
অন্য কাওকে আমি মানিনা,মানবোও না।

মান্যতা বিমূঢ় হয়ে ইভানের মুখের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বললো–দাদাভাই আর কৌড়ি!একজন পানির মতো সহজ তো অন্যজন পাহাড়ের মতো দৃঢ় কঠিন।কিভাবে সম্ভব?নাকি তুই সম্ভব বানিয়ে নিয়েছিস?

‘সম্ভব নয় কেনো?আমাদের সবার ফুলকৌড়িকে পছন্দ এমনকি দাদাভাইয়ের বউ হিসাবেও পছন্দ।সো দাদাভাই না মানলে,আমরা হরতালে নামবো।আমাদের একটাই দাবী হবে,ফুলকৌড়িকে আমাদের বউমনি হিসাবে চাই।দাদাভাই আমাদের দাবী না মানা পর্যন্ত এ-দাবী চলতে থাকবে।দাদাভাই মানতে বাধ্য!আর এমনিতে-ও দাদাভাই মানতে বাধ্য।শুধু দাদাভাইয়ের বউটার সুমতি আর সম্মতি হলেই হয়।

ওহ তারমানে ছোটোদাদাভাইয়ের এটা নিজস্ব ভাবনা, বড় দাদাভাই জানে না কিছু।তবে ভাবনাটা মন্দ নয়।কিন্তু তাদের ওই গুরুগম্ভীর দাদাভাই জীবনে এই দাবী মানবে বলে মন হয়না তার।

‘ইভান ভাইয়া থামুন’না প্লিজ।আমার মাথা কেমন কেমন করছে?আপনার এ্সব ভয়াবহ উল্টো পাল্টা কথার জ্বলায় ক’দিন পর দেখবেন,আমি রাস্তা রাস্তায় ঘুরছি।

‘ঘুরবে রাস্তায়,সমস্যাটা কোথায়?দাদাভাই আছেনা।বউ রাস্তায় ঘুরবে,আর সে বসেবডে দেখবে নাকি।ধরে নিয়ে আসবে।তবুও আমার দাবী মানতেই হবে তোমাকে।

কৌড়ি অযথা আর কথা বাড়ালোনা।প্রবাদে আছে না,বিচার মানতে পারি তবে তালগাছটা আমার।মায়ামায়া মুখটা ছোটো করেই মান্যতার দিকে তাকিয়ে রইলো।মান্যতা সেটা দেখে বললো–ওর মাথার নাটবোল্টু আগে থেকেই ঢিলা আছে,এটাতো তুমি-ও জানো।দেখোনা,সারাদিন এরওর পিছে লেগে থাকা ওর কাজ।আপতত পড়াশোনাতো নেই,এজন্য মাথার কলকব্জা গুলো আর-ও নড়বড়ে কাজ করছে।এবার তাই তোমাকে নিয়ে পড়েছে,তোমার পিছু লেগেছে।ওর কথা কানে নিওনা।এক কান দিয়ে শুনে অন্য কান দিয়ে বের করে দাও।

‘এই তুই ওকে কি পরামর্শ দিচ্ছিস?নিশ্চয় উল্টোপাল্টা কিছু!যদি-ও ননদীনিদের কাজ হচ্ছে কূটনামি করে বেড়ানো।দৃষ্টান্ত আমাদের ফুফুমনি…..

‘ওই কি বললি তুই?

বাজখাঁই গলার আওয়াজ শুনে তথাস্তু হলো সবাই।মূহুর্তেই সবার গোলগোল নজর,দরজায় দাঁড়ানো নারীর পানে পড়লো।মান্যতা মিটিমিটি হাসলেও, কৌড়ি চোখ নামিয়ে মাথা নিচু করে বসে রইলো।এই মহিলাকে দেখলে কেনো জানেনা অকারণে তার কলিজায় কম্পন ধরে যায়।পরিস্থিতিতে না বুঝে কখন ছোটো বড় কথা শুনিয়ে দেয়!বেকুবের ন্যায় আগলা হাসলো ইভান
ফের টেনেটেনে বললো।

‘ওহ ফুফুমনি আপনি!আপনি তো কতো ভালো।আপনি কি আমার মা চাচিদেরকে জ্বালিয়েছেন নাকি?জ্বালান নি তো!আর না কখনো উনাদের সাথে কুটনামো করছেন!আমি তো মান্যতা-কে বলছিলাম,ও তো আর আপনার মতো নয়।আর বলতে গিয়ে কিভাবে জেনো আপনার নামটা মুখ থেকে ছিটকে বেরিয়ে এলো।ইশশ,এই মুখটা-ও না,ইদানীং টোটালি কন্ট্রোলে থাকতে চায়না।এতো কন্ট্রোল করার ট্রায় করি কন্ট্রোলই হয়না।আপনি তো মানুষ হোক বা তার মনমস্তিস্ক বেশ ভালোই কন্ট্রোল করতে পারেন।আমার মুখটা কিভাবে কন্ট্রোল করা যায় বলুন তো ফুপমনি?

জ্বলন্ত নজরে ইভানের দিকে তাকালেন ডালিয়া বেগম।কিভাবে ঘুরিয়ে পেচিয়ে বাহিরের একটা মেয়ের সামনে উনাকে চরম অপমানিত করলো ছেলেটা।একটা সময় ইভানের উপর কৃতিত্ব চলতো উনার।ছেলেটা উনার কথা সহজ সরল মনে বিশ্বাস করতো,মানতো।আর তারই প্রতিফলন অক্ষরে অক্ষরে ঘটাতো।সেই ছেলের হঠাৎই কি হলো!উনাকে তো মান্যই করে-না।কথায় কথায় ছোটোবড় কথা শুনিয়ে উনাকে উচিত জবাব দিতেও ছাড়েনা।বাপের মতো স্বভাব পেয়েছে কি-না! সারাজীবন রাস্তার লোক কুড়িয়ে কুড়িয়ে বাড়িতে নিয়ে এসে আশ্রয় দেবে।আবার তাদের নিয়ে যত্তসব মাতামাতি।পিরিত দেখানো।এখন এখানে দাঁড়িয়ে ইভানের সাথে তর্কবিতর্ক করলে আর-ও ছোটোবড়ো বেফাঁস কথা শুনিয়ে দিতে ছাড়বেনা ছেলেটা।বিধায় রাগে গজগজ করতে করতে চলে গেলেন তিনি।যাওয়ার আগে অদৃশ্য কারনে কৌড়ির পানে বিরক্তিময় দৃষ্টি ফেলে তাকে ছোটোকরে কটু কথা শুনিয়ে যেতেও ভুললেন না।

‘পরের মেয়ে।চাচা ভাইরা নিতে এসেছে,দিয়ে দেবে।তা-না,আহ্লাদ করছেন।বাড়তি ঝামেলা বাড়িতে ফ্রীতে পুষে রাখতে খুব ভালো লাগে।যত্তসব আদিখ্যেতাপনা !

ইভান, মান্যতা জানতো ফুফুমনির হঠাৎ এখানে পদচারণের কারণ কৌড়িকে ছোটোবড় কথা শোনানো।
তিনি শুনেছেন এবং দেখেছেন,কৌড়িকে নিজের বাড়ি থেকে তার চাচা নিতে এসেছেন।আর তিনি এটাও বুঝতে পেরেছেন,এবাড়ির কেউ কৌড়িকে সহজে যেতে দেবে না।তিনি এসব বিষয় নিয়ে রান্নাঘরে বসে গজগজ করছিলেন মায়ের সাথে,শুনে এসেছে ইভান।সুযোগ পেলে কৌড়িকেও যে দু’কথা শোনাতে পিছুপা হবেন-না, এটাও জানা ছিল ইভানের।ফুফুমনিকে এখানে আসতে দেখে সেই সুযোগ দিতে চাইছিলো না ইভান।সেটা রোধ করার জন্য ফুফুমনিকে উল্টো পাল্টা কথার জালে ফাসিয়ে নিজের দিকে মনোযোগী করতে চাইছিলো।
তবুও নিজের স্বভাবের বহিঃপ্রকাশ তিনি ঘটিয়েই গেলেন।যার যা স্বভাব!মেজাজ খারাপ হলো ইভানের।মাথা নিচু করে থাকা কৌড়ির পানে একপলক তাকিয়ে শব্দকরে পা ফেলে চলে গেলো সে।পায়ের শব্দে কান ধরে গেলো মান্যতার।সেদিকে খেয়াল না দিয়ে কৌড়ির দিকে ফিরে বললো।

‘মন খারাপ করো-না।ফুফুমনির কাজই হচ্ছে সবাইকে খোঁচা দিয়ে কথা বলা।আম্মু ছোটোমা বা কাওকেই বাদ রাখেন না কথা শুনাতে।তাই উনার কথা কানে নি-ও না।আমরা কেউ নেইনা।

মাথা নিচু রাখা অবস্থায় মাথা দুলিয়ে সম্মতি দিলো কৌড়ি।সেটা দেখে দীর্ঘশ্বাস ফেললো মান্যতা।বুঝলো, মেয়েটার মন খারাপ তো ছিলো।আরও মন খারাপ হয়ে গেছে।ফুফুমনি যে কেনো এরকম স্বভাবের,বুঝে আসে না মান্যতার।


‘বাহ,বিয়ের কনে দেখি নিজেই এসেছে বিয়ের আমন্ত্রণ জানাতে।বিষয়টা মন্দ না।এখনকার যুগ,এখন তো আর ছেলেরা বিয়ে করতে যায়না, উল্টে মেয়েরা আসে বিয়ে করতে।সেই হিসাবে তোমার নিমন্ত্রণের বিষয়টা কোনো ব্যাপারই না।তা কেমন আছো তন্ময়ী?

মা তাহমিনা বেগমের সাথে এ-বাড়িতে নিজের বিয়ের আমন্ত্রিত কার্ডটা দিতে এসেছে তন্ময়ী।ভাই গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য আসতে পারিনি।আর সে-ও আসতে চাইনি।তবে মা জোর করে নিয়ে এসেছেন।জোর করার কারন ছিলো,কিছু কেনাকাটা বাকি আছে।যাবার রাস্তায় তা সম্পূর্ণ করা।আর এ-বাড়ির সাথে ভাইয়ের দারুন একটা সুসম্পর্ক থাাকায় আসতেও হলো তাকে।তবে এবাড়িতে তার না আসার মহা কারণটা হলো,সামনে দাড়ানো অসভ্য ফাজিল মানুষটা।মা,সবার সাথে ভিতরে কথা বললে-ও,এই লোকটাকে এড়াতে তন্ময়ী মান্যতার সাথে ছাঁদে এসেছে।মান্যতার ফোনে জরুরি কোনো কল আসায়,সে কথা বলছে ছাঁদের অন্যত্র দাঁড়িয়ে।আর তন্ময়ী, ছাঁদে লাগানো বিভিন্ন নাম জানা অজানা মনোমুগ্ধকর ফুলের ফলের গাছগুলো দেখছিলো।মনেমনে কিছু কারনবশত আতঙ্কিতগ্রস্থও ছিলো।আর স্বয়ং সেই আতঙ্ক হাজির।তবে ইভানের মজার ছলে বলা কথাগুলোর উত্তর দেওয়ার প্রয়োজন মনে করলোনা।বিধায় চুপ রইলো।

‘কি হলো বলছো না যে, কেমন আছো?তবে তোমার চোখমুখের এক্সপ্রেশন তো বলছে খুবই ভালো আছো।বিয়েতে-ও খুব খুশি?বর বুঝি দারুণ হ্যান্ডসাম?

শেষের প্রশ্নটা ভ্রু নাচিয়ে জিজ্ঞেস করলো সে।ইভানের কথার মাঝে নিজের জন্য অবজ্ঞতা টের পেলো তন্ময়ী।ভিতরে ভিতরে জ্বললো।তবে বাহিরে তা প্রকাশ করলো না।ঠান্ডা গলায় বললো।

‘হ্যা খুব খুশি।বুঝতেই যখন পারছেন জিজ্ঞেস করছেন কেনো?

বিকালের গোধূলি লগ্নে উজ্জ্বল শ্যামবর্ণের মেয়েটার মুখের দিকে নির্নিমেষ তাকিয়ে রইলো ইভান।শ্যামবর্ণের নারীরা সত্যিই মায়াবিনী হয়।না-হলে সেই মায়ার রূপে কোনো পুরুষের বুকে উতালপাতাল তরঙ্গ বয়ে যায় কি করে!চারপাশে এতো সৌন্দর্যের ছড়াছড়ি থাকতে সেই শ্যামবর্ণ সৌন্দর্যে নজর মুগ্ধ হয় কিকরে!আর মেয়েটার ওই গোলগোল চোখ..উফফ!সেই চোখে নিজেকে অপরাধী হিসাবে বিবেচিত হতে দেখতেই শান্ত কন্ঠে বললো।

‘তুমি অকারণে আমাকে ভুল বুঝে,ভুল স্টেপ নিয়েছো
তন্ময়ী।

তন্ময়ীর কালোমনির গোলগোল সচ্চ চোখদুটো মূহুর্তেই জ্বলে উঠলো।গোল ফ্রেমের চশমার আড়ালে সেটাও লক্ষ্য করলো ইভান।তবে ইভানকে পাত্তা না দিয়ে শক্ত গলায় তন্ময়ী বললো।

‘আমি কখনো বুঝতেই চাই-না আপনার মতো বড়লোকদের ছেলেদের।সেখানে আপনাকে ভুল বোঝা তো অনেক দূরের কারন।

ট্রাউজারের দুপকেটে দু-হাত গুঁজে সটান হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলো ইভান।তন্ময়ী কথাগুলো বলতেই রাগে হাতের মুঠো শক্ত হয়ে এলো তার।তবে সামনে রমনীকে সেটা বুঝতে দিলোনা।তন্ময়ীকে ভেদ করে সামনে নজর দিলো।মান্যতা সামনের অদূরে মনোযোগ দিয়ে ফোনে কথা বলছে।এবার তন্ময়ীতে মনোযোগী হলো ইভান।মৃদু ঝুকলো তারপানে।ফের বললো।

‘তুমি যেটা করলে,ভুল নয় অন্যায় করলে।একদম ঠিক করলে না।ইভানকে তো চেনো না।তোমার জিনিস যখন,এবার চিনবে।চার চোখ দিয়ে একটু বেশিই দেখে ফেলেছো কি-না!

সেকেন্ড দেরী করলো-না ইভান।বড়োবড়ো পা ফেলে চলে গেল নিচে।রাগে চোখমুখ লাল হয়ে গেল তন্ময়ীর।নিজে মেয়েদের সাথে ফূর্তি করে বেড়াবে আর তাকে কথা রাখতে হবে।আর না রাখলে, তুমি কাজটা ঠিক করলেনা।নিজের বেলার সব ঠিক।বিয়ে তো সে করেই ছাড়বে।সব ঠিকঠাক।এবার করবে কি?

রাগ ক্রোধ ছাড়িয়ে মনেমনে ইভানকে ভেঙালো সে।ফের মনেমনে বললো—আমি ইভান!দেখি এবার সেই ইভানে কি করতে পারে!

ড্রয়িংরুমে বসে আছেন তাহমিনা বেগম।অনেক্ক্ষণ যাবত একটা মেয়েকে দেখছেন।আর আগেও এবাড়িতে আসা হয়েছে উনার। কিন্তু মেয়েটাকে তিনি দেখেছেন বলে মনে হয়না।এখনকার যুগ হিসাবে মেয়েটা বেশ সুশৃঙ্খল।শালিন শান্ত চলাফেরা।কথাবার্তাও নিন্মগামী।আর সৌন্দর্য তো নজরে পড়ার মতোন।কে মেয়েটা?ছেলের বিয়ে দেবেন বলে মেয়ে খুঁজছেন। তবে যেরকম মেয়ে তিনি খুঁজছেন বা চাইছেন, সেরকমটা মিলছেইনা।
তবে মেয়েটা কে,জিজ্ঞেস করবেন না-কি?মেয়েটাকে এতো মনে ধরেছে কৌতুহল চেপে রাখতে পারলেন না।সামনে বসা নিহারীকা বেগমে জিজ্ঞেস করেই ফেললেন।

‘আপা,ওই মেয়েটা কে?আগে তো এ-বাড়িতে কখনো দেখিনি তাকে।আপনাদের আত্নীয় বুঝি?

মৌনতার সাথে অদূরে দাঁড়ানো কৌড়িকে দেখিয়ে তাহমিনা বেগম কথাগুলো বলতেই,নীহারিকা বেগম সেদিকে লক্ষ্য করলেন।ফের মৃদু হেসে কিছু বলতে যাবেন তারআগে পাশে বসদ ডালিয়া বেগম চোখমুখ কুঁচকে বললেন।—আরেহ না আপা আমাদের আত্মীয় টাত্নীয় কিছু নয়।ওই ভাইজানের কোনো এক বন্ধুর মেয়ে।বাপ মা মরে গেছে,তাই ভাইজান বাড়িতে এনে বাড়তি ঝামেলা পুষছে।

ডালিয়া বেগমের বলা কটুবাক্যগুলো তাহমিনা বেগমের মোটেই ভালো লাগলো না।আর নীহারিকা বেগমের তো ভালোই লাগলো-না।অন্তত বাহিরের মানুষের সামনে নিজের খোলাসা থেকে না বের হলেই কি হতো না!মনে মনে ননদকে প্রবোধন করে, তাহমিনা বেগমকে উদ্দেশ্য করে বললো।

‘আসলে ব্যাপারটা তা নয়,আপা।মেয়েটা আমাদের রক্তের সম্পর্কিত কিছু না হলেও,এক-প্রকার আত্মার আত্মীয়।রক্তের সম্পর্ক না থেকে-ও কতো বন্ধন তো তৈরী হচ্ছে।আর সেসব সম্পর্ক আজীবন নিষ্ঠার সাথে চলে আসছে।এই দেখুন আপনাকে আমাকে,রক্তের সম্পর্ক ছেড়ে পড়ে আছি কোথায়।যেখানে রক্তের সাথে কোনো সম্পর্ক নেই।অথচ সম্পর্কগুলো কতো কাছের, কতো আপন।ওই মেয়েটার সাথে আমাদের সম্পর্কও তেমনটাই।রক্তের সম্পর্কের আত্মীয় নাহলে-ও আত্মার আত্মীয়,আপনজন।আপনার ভাই সাহেবের খুব ভালো একজন বন্ধুর মেয়ে।মেয়েটার মা মারা গিয়েছে জন্মের সময়,আর বাবা মারা গিয়েছেন এই কিছুদিন আগেই।
আপতত দাদিআপা ছাড়া কেউ নেই।নেই বলতে চাচা চাচিরা আছেন।তবে এখনকার যুগে নিজেরটা বাদে পরেরটা কে দেখে।তাই বলে মেয়েটা সম্বলহীন অসহায় নয়।তবে অর্থ সম্পদ, ঘরবাড়ি তো সবকিছু নয়।মাথার উপর একটা ছায়া সবার খুব প্রয়োজন। সেখানে মেয়ে মানুষের তো আরও প্রয়োজন। আর সেই প্রয়োজনটুকু শুধু আমরা করছি।অযথা না মেয়েটা এবাড়িতে থাকছে আর না আমরা পুষছি।

নিজের বিরুদ্ধে গিয়ে ভাবিকে কথা বলতে দেখেই ডালিয়া বেগম অসন্তুষ্ট হলেন। ভিতরে ভিতরে ক্ষুব্ধ হয়ে
বিরক্ত প্রকাশ করলেন, যত্তসব আদিখ্যেতা!প্রবোধন করে উঠে দাড়ালেন।মুখপ বিজবিজ করে চলে গেলেন।নীহারিকা বেগম দেখলেন,বুঝতে পারলেন। তবে কিছুই বললেন না।তাহমিনা বেগম সুশিক্ষিত নারী।নীহারিকা বেগমের বলা কথাগুলো বেশ বুঝলেন।আর মেয়ে মানুষের ছায়া হয়ে,তাদের পিতা ভাই স্বামীকে যে কি প্রয়োজন! সেটা তিনি খুব ভালো করে জানেন।তাদের লড়াইটা কেমন হয় এটাও উনার শিরায় শিরায় উপলব্ধি আছে।একটু আগের ভাবনাটা ফের মাথা চাড়া দিয়ে উঠলো উনার।বাবা,মা নেই তো কি হয়েছে।মেয়েটা ভালো হলেই হলো।মনেমনে নিজের ভাবনা নিয়ে কিছুসময় তেনোমনো করলেন।সিঁড়ির গোড়ায় দাঁড়িয়ে বেশ বিচক্ষণতার সহিত তাহমিনা বেগমকে লক্ষ্য করলো ইভান।বারবার কৌড়ির দিকে তাকাচ্ছে আর কিছু একটা ভাবছে।উনার মুগ্ধ নজর,আর ভাবান্নিত মুখাবয়ব।মোটেই সুবিধার ঠেকলোনা ইভানের কাছে।তার না হওয়া সংসারটা ভেঙে এবার তার ভাইয়ের না হওয়া সংসারটা ভাঙতে চাইছেন না তো উনি।উনার দৃষ্টিতো তেমনই ইঙ্গিত দিচ্ছে। তার বউটা ছিনিয়ে নিয়ে এবার ভাইয়ের বউয়ের পানে কুদৃষ্টি! ছিনিয়ে নেওয়ার প্লান।নো ওয়ে।বড়বড় পা ফেলে তাহমিনা বেগমের পাশে এসে বসলো ইভানে।ফের মা’কে উদ্দেশ্য করে বললো।

‘আন্টির জন্য এখনো নাস্তাপানির ব্যবস্থা করো-নি আম্মু?টেবিল খালি কেনো?

ছেলের ব্যবহারে অপ্রস্তুত হলেন,নীহারিকা বেগম।আশ্চর্য ছেলে উনার।মেহমানের সামনে এভাবে বলতে আছে।তাতে নিজেদের ও লজ্জা পেতে হয়,সাথে মেহমানকেও।এই ছেলের সুবুদ্ধি হবে কবে থেকে কে জানে!তবুও মেহমানের সামনে অপ্রস্তুত যখন করেছে উত্তর তো দিতেই হবে।মৃদু হেঁসে তিনি বললেন।

‘রানি চা বানাচ্ছে, তাই হয়তো দেরী হচ্ছে।চা টা হয়ে গেলেই দিচ্ছি।

‘এসবের দরকার ছিলোনা কিন্তু আপা।আমিতো এখনই
উঠবো।

‘দরকার ছিলো না মানে কি?অবশ্যই দরকার আছে।আপনি দাদাভাইয়ের বেস্ট ফ্রেন্ডের মা বলে কথা।আর এই জোয়ার্দার বাড়িতে আপনার আপ্যায়ন হবে-না,তা কিকরে হয়!কতোদিকের আত্মীয় আপনি।আপনি তো নিজেও জানেন না।

কপাল কুঁচকে ছেলের দিকে তাকিয়ে রইলেন নীহারিকা বেগম। এই ছেলে বলছেটা কি?তবে বাহিরের একটা মানুষের সামনে ছেলেকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারলেন না।শুধু বললেন —দেখি,ওদিকে রানির কতোদূর হলো।

সেসবে খেয়াল নেই তাহমিনা বেগমের।তিনি নিজের ভাবনায় ডুবে আছেন।আর কিছুক্ষণ পরপর কৌড়ির মায়াময় মুখটার দিকে তাকাচ্ছেন।সেটা দেখে এবার নিশ্চিত হলো ইভান।ভদ্রমহিলা মনেমনে কি আশা পোষন করছেন।তবে তা হতে দেওয়ার নয়।ইভান তো কখনোই হতে দেবেনা সেটা।কন্ঠে উচ্ছলতা প্রকাশ করে ইভান,উনাকে উদ্দেশ্য বললো।

‘মেয়েটা সম্পর্কে শুনছেন নিশ্চয়।

বেখেয়ালিতে উত্তর দিলেন তাহমিনা বেগম।ছোটো করে উত্তর দিলেন– হুমম!

‘মেয়েটাকে দাদাভাইয়ের বউ বানাতে চাইছেন আম্মু আব্বু।কেমন হবে বলুনতো?দাদাভাইয়ের পাশে দারুণ মানাবে না?

চমকে ইভানের মুখের দিকে তাকালেন ভদ্রমহিলা।তিনি কি ভাবলেন,আর এই ছেলে কি শোনালো।ভ্যাগিস বলবে বলবে করেও মুখে বললেন না নিজের ভাবনার কথা।নাহলে লজ্জার শেষ থাকতোনা।তবে মনেমনে মন খারাপও হলো উনার।যদিও এরকম মেয়ে কে হাতছাড়া করতে চায়।ইভান হাসি মুখে ফের বললো।

‘মেয়েটাকে আমাদের ও দারুন পছন্দ। পছন্দ হওয়ার মতো মেয়ে।আমরাও চাই,দাদাভাইয়ের বউ হিসাবে তাকে এবাড়িতে আজীবন আমাদের বউমনি হিসাবে রেখে দেওয়া হোক।আন্টি..বললেন নাতো,কেমন হবে দাদাভাইয়ের বউ হিসাবে মেয়েটা?

‘খুবই ভালো।

সন্তুষ্ট হলো ইভান।ভদ্রমহিলা এবার নিরেট নজরে কৌড়ির পানে তাকিয়ে রইলেন।সেটা-ও লক্ষ্য করলো ইভান।বুঝলো,একদেখায় কৌড়িকে উনার বেশ মনে ধরেছে।মনে ধরলে কি হবে,কৌড়ি শুধু দাদাভাইয়ের।আর কার-ও সে হতে দেবেনা কৌড়িকে।মহিলার পাশ থেকে উঠলো না ইভান।সে চলে যাওয়ার পর,ভদ্রমহিলা যদি মা’কে জিজ্ঞেস করে বডেন।আর তার মিথ্যা ধরা পড়ে যায়।তখন আরেক বিপত্তি।সেটা না হতে দেওয়ায়, বসে থাকলো সে।ওই বিষয়ে প্রশ্ন করলে বা প্রসঙ্গ উঠলে,এলেবেলে কথা দিয়ে প্রসঙ্গ ঘুরিয়ে দিতে পারে যেনো বিধায় বসে থাকা।নাস্তা আসলো।খাওয়া দাওয়া হলো তবে তার কথার বিষয়ে কথা উঠলোনা।একপর্যায়ে উনারা সবাইকে নিমন্ত্রণ দিয়ে চলে গেলেন।সেই চলে যাওয়ার পানে তাকিয়ে ইভান নিজের জীবনের চক্রটা-ও সাজিয়ে গুছিয়ে নেওয়ার চিন্তা ভাবনা মশগুল হলো।


সময়টা শরতের শেষ বিদায়ের দিন।আকাশের সাদা মেঘের তুলোরাশি গুলো হঠাৎ কালো মেঘপুঞ্জে ছেয়ে গেছে।কালবৈশাখীর ন্যায় উতালপাতাল ঝড়ো হওয়ার ন্যায় বৈরী বাতাস শুরু হলো।সময়ের ব্যবধানে হঠাৎই দুপুর বেলার চারপাশটা মধ্যরাতের ন্যায় অন্ধকারাচ্ছন্নে ছেয়ে গেলো।কাল থেকেই শরতের মিঠে-মিঠে রোদের আবহাওয়াটা অল্পঅল্প করে খারাপের দিকে এগোচ্ছিলো।আজ সকালের দিকেও আকাশটা সেই অল্পঅল্প খারাপেই সীমাবদ্ধ ছিল।হঠাৎ বেলা গড়াতেই আবহাওয়ার চরম অবনতি পর্যায়ে চলে গেলো।কালবৈশাখীর ন্যায় ঝড় হাওয়া শুরু হলো,সাথে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি।সেই ঝিরিঝিরি বৃষ্টিটা এখন ঝুমঝমে কুলকুলে বন্যায় পরিনত হয়েছে।মান্যতা আজ ভার্সিটিতে যায়নি।মৌনতার স্কুলে বারোটায় ছুটি হয়।ছুটি হওয়ার সাথে সাথেই চলে এসেছে সে।ইভান বাড়িতে নেই,বন্ধুদের সাথে দেখা করতে গেছে নাকি।ফোনটা-ও আপতত বন্ধ তার।এই ছেলেটাকে কখনো কাজের সময় পাওয়া যায় না,সবসময় অকাজের সময় তিনি পিছপিছে।দুপুর দুটো বাজতে গেলো কৌড়িটা এখনো বাড়িতে ফেরিনি।এই পরিস্থিতিতে ফেরারও কথা নয়।সেটা নিয়েই চিন্তিত নীহারিকা বেগম।এক জায়গায় স্থির হয়ে বসতে পারছেন না তিনি।মেয়েটার কলেজ ছুটি হয় একটায়।এখন বাজতে চললো দুটো,
অথচ মেয়েটা এখনো বাড়িতে ফিরলোনা।ঝড়বৃষ্টি নিয়ে তো এমনিতেই টেনশনে আছেন,মেয়েটা ফিরবে কি করে?আর তার থেকে-ও টেনশন হচ্ছে,উনার মমতাময়ী মন আজ অবিরত উল্টো পাল্টা গেয়ে চলছে।মেয়েটা কলেজের মধ্যে আছে নাকি এই পরিস্থিতিতে-ও বাহিরে বের হয়েছে!মেয়েটা ঠিকঠাক আছে তো,নাকি কোনো বিপদে পড়েছে!ঝড়বৃষ্টি থামার সাথে সাথে মেয়েটা ঠিকঠাক বাড়িতে ফিরতে পারবে তো!এরকম কতশত আবোলতাবোল গাইছে মন।কৌড়ি যে এখনো বাড়িতে ফেরেনি, এটা জাহিদ সাহেবকেও জানাননি তিনি এখনো।নাহলে মানুষটাও দুশ্চিন্তা করবেন।সাথে রাগ করবেন,আবহাওয়ার এমন অবনতি দেখেও মেয়েটাকে নিয়ে আসতে বাড়ির গাড়িটা কেনো পাঠানো হয়নি।বিষয়টা খেয়ালেই ছিলো-না উনার।এখন কি করবেন!হাফিজি তো আপতত বাড়িতে নেই।

ইভানের নাম্বারে আবারও ট্রায় করলেন। বারবার ট্রায় করতে থাকলেন।পেলেন না।মেজাজ চড়ে গেলো উনাার।মনেমনে হাজার বকাঝকা দিলেন ছেলেটাকে।সময় যতো ঘনাতে লাগলো, উনার অস্থিরতা ততোই বাড়তে থাকলো।একপর্যায়ে গিয়ে বাধ্য হয়ে নিভানকে ফোন দিলেন।নিভান ফোন উঠাতেই আতঙ্কিত গলায় ছেলেকে ডাকলেন।

‘ও নিভান।

চমকে উঠলো নিভান।মা তো কখনো এভাবে ডাকেনা তাকে।তবে আজ কি হলো?বাড়িতে কারও কিছু হয়নি তো।কিঞ্চিত বিচলিত হলো সে।বললো

‘কি হয়েছে মা?তোমার কন্ঠ এমন শোনাচ্ছ কেনো?বাড়িতে সবাই ঠিক আছে তো?

সময় নিলেন না নীহারিকা বেগম।বিচলিত গলায় বললেন—বাড়িতে সবাই ঠিক আছে।কার-ও কিচ্ছু হয় নি।তবে?

স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়লো নিভান।ফের বললো—তবে কি হয়েছে?

‘কৌড়িটা এখনো বাড়িতে ফেরেনি।বাহিরে কি অবস্থা দেখেছিস,মেয়েটাকে নিয়েতো আমার খুব টেনশন হচ্ছে বাবু।পরের বাড়ির মেয়ে কিছু হয়ে গেলে কি জবাব দেব।ইভান-ও বাড়িতে নেই,ফোনে-ও পাচ্ছি না ও-কে।বাড়ির গাড়িটা পাঠাবো,হাফিজও বাড়িতে নেই।ও বাবু তুই একটু ওর কলেজে গিয়ে দেখ না।আমি যে স্থির হতে পারছি-না।মনটা শুধু কু- গাইছে।

চলবে…..

আমার অল্পসল্প কমেন্ট বাসিরা,গল্প পড়ে নিজেদের অনুভূতি জানাবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here