খোলা_জানালার_দক্ষিণে #পর্ব_১০ #লেখিকা_Fabiha_bushra_nimu

0
666

#খোলা_জানালার_দক্ষিণে
#পর্ব_১০
#লেখিকা_Fabiha_bushra_nimu

প্রাকৃতিক শীতল বাতাস এসে মেহেভীনের শরীর স্পর্শ করে যাচ্ছে। মেহেভীন এক কাপ কফি নিয়ে বেলকনিতে আসলো। কিরণ ছড়িয়ে দেওয়া চাঁদটাকে গ্রাস করে নিয়েছে, এক টুকরো কালো মেঘের দল। মেহেভীন আঁখিযুগল বন্ধ করে বাসতের আলিঙ্গন অনুভব করছে। তখনই দক্ষিণ পাশে থেকে ডাক দেয়।

–একা একা কপি খাচ্ছেন ম্যাডাম।

–আমার মতো কফি খেতে চান।

–জি।

–তাহলে নিজের বাসায় বানিয়ে খান। কথা গুলো বলেই হাসোজ্জল মুখশ্রী খানা আড়াল করে নিল। মুনতাসিম হতভম্ব হয়ে মেহেভীনের দিকে দৃষ্টিপাত করে আছে। আর মনে মনে বলছে আচ্ছা বজ্জাত মেয়ে তো। কোথায় সে ভাবল মেহেভীন তাকে কফির নিমন্ত্রণ করবে। তা-না করে উল্টো অপমান করে দিল। মুহুর্তের মধ্যে মুনতাসিমের মুখটা থমথমে হয়ে গেল। যেন রজনীর সব আঁধার তার মুখশ্রীতে ঘনিয়ে আসছে। মুনতাসিমকে নিরব হয়ে যেতে দেখে, মেহেভীন উৎসুক দৃষ্টিতে মুনতাসিমের দিকে আঁড়চোখে তাকাল। মুনতাসিমকে মুখটা গম্ভীর করে রাখতে দেখে, মেহেভীন বলল,

–আপনি রাগ করলেন?

–আমার আবার রাগ আছে।

–তাহলে চুপ হয়ে গেলেন যে!

–আপনাকে বলব কেন?

–সেটাই তো আমাকে বলবেন কেন। কথা গুলো বলেই মেহেভীন কক্ষের মধ্যে চলে আসলো। হঠাৎ মেহেভীনের মনটা খারাপ হয়ে গেল। বিষাদ এসে ক্ষণে ক্ষণে রাজত্ব চালাতে লাগলো। একটু পরেই দরজায় কলিং বেল বেজে উঠলো। রুপা টিভি দেখছিল তার কাজে ব্যাঘাত ঘটায় বিরক্ততে মুখশ্রী কুঁচকে গেল। দরজা খুলে মুনতাসিমকে দেখে মুখটা গম্ভীর করে ফেলল। কিছুটা থমথমে কণ্ঠে জবাব দিল,

–এত রাতে আপনার কি চাই? আজকে আবার আপনার কি ফুরিয়ে গিয়েছে। রুপার কথায় মুনতাসিমের চোয়াল শক্ত হয়ে এল। মেয়েটার বেশি কথা বলাই মুনতাসিম সহ্য করতে পারে না। তবুও নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার প্রচেষ্টায় মেতে উঠেছে। বুকে ভরা হাহাকার আর অস্থিরতা নিয়ে বলল,

–তোমার আপাকে ডেকে নিয়ে আসো।

–এতরাতে আপাকে ডাকা যাবে না। আপা আমাকে বিরক্ত করতে নিষেধ করেছে।

–শুনো মেয়ে যা বলছি তাই কর। আমার কথা না শুনলে ফলাফল ভালো হবে না বলে দিলাম।

–আপনার কথা না শুনলে কি করবেন আপনি! রুপার এক একটা কথা মুনতাসিমের হৃদয়ে কাঁটার মতো বিঁধছে। প্রেয়সীর রাগ ভেতরটা ছারখার করে দিচ্ছে। প্রেয়সীর মলিন মুখ খানা মৃ’ত্যু যন্ত্রনার থেকে-ও বেশি যন্ত্রনা দেয়। মুনতাসিম নিজের ক্রোধ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে, নিজের সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করে নিজের হাত দেওয়ালে সাথে বাড়ি মা’র’ল। মুনতাসিমের ফর্সা মুখশ্রী রক্তিম বর্ন ধারণ করেছে। মুনতাসিমের ভয়ংকর রুপের সাথে পরিচিত হয়ে, রুপার অন্তর আত্মা কেঁপে উঠলো। থরথর করে কাঁপছে রুপা। শান্ত কণ্ঠে কথা বলা মানুষটার হঠাৎ করে কি হলো। মুনতাসিম পর পর আরো চারটে বা’ড়ি মা’র’ল। তা দেখে রুপা দৌড়ে মেহেভীনের কক্ষে গেল। মেহেভীনকে সবকিছু খুলে বললে, মেহেভীন রাগান্বিত হয়ে ছুটে এল। ড্রয়িং রুমে এসে স্তব্ধ হয়ে গেল। মুনতাসিম শান্ত নদীর ন্যায় সোফায় বসে আছে। মেহেভীন রুপার দিকে দৃষ্টিপাত করল। রুপার চোখে মুখে ভয়ের ছাপ এখনো স্পষ্ট। রুপার ভয়ার্ত চেহারা বলে দিচ্ছে রুপা মিথ্যা কথা বলেনি। কিন্তু মনুতাসিমের এমন শান্ত হয়ে থাকাটা অন্য কথা বলছে।

–আপনি নাকি নিজের হাতে প্রহার করছেন? মেহেভীনের কথায় বুকটা শীতল হলো। মস্তিষ্ক সজাগ হলো। মনের গহীনে থেকে কিছু শব্দ ভেসে এল। ভুল জায়গায় এসে ভুল কাজ করে ফেলছিস মুনতাসিম। একদিন তোর এই বিশ্রী রাগ আর রাগের মাথায় করা জঘন্য ব্যবহার কারনে তুই তোর সবকিছু হারিয়ে ফেলবি। কি এমন ক্ষতি হতো যদি নিজের রাগটা নিয়ন্ত্রণ করা শিখে নিতি। মুনতাসিম সত্য আড়াল করে গেল না। সহজ-সরল স্বীকারোক্তি দিয়ে বলল,

–জি আমি নিজেকে প্রহার করেছি।

–কেন করেছেন?

–আপনার বোনকে আমি বললাম আপনাকে ডেকে দিতে, কিন্তু সে আমার মুখে মুখে তর্ক করছিল। সেটা আমি সহ্য করতে পারছিলাম না। কেউ আমাকে রাগিয়ে দিলে, আমি নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। অন্যের ক্ষতি কখনোই আমার দ্বারা সম্ভব নয়। সেজন্য নিজের ক্ষতি করে রাগ নিয়ন্ত্রণ করি। মেহেভীন বিস্ময় নয়নে মুনতাসিমের দিকে দৃষ্টিপাত করে আছে। মানুষটা কিন্তু অসাধারণ ব্যক্তিত্বের মানুষ। কি সুন্দর রুপাকে তার বোন বলে সম্মোধন করল! তার জায়গায় হলে অন্য কেউ ঠিক কাজের মেয়ে উল্লেখ করত। আমরা রাগে বশিভূত হয়ে অন্যের ক্ষতি করার চেষ্টা করি আর মুনতাসিম অন্যের ক্ষতি করবে না বলে, সে নিজের ক্ষতি নিজে করে। মানুষটাকে বাহবা না দিয়ে পারছে না মেহেভীন। সে মানুষটা রাগের মাথায় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারে৷ তার মতো অসাধারণ ব্যক্তিত্বের মানুষ দু’টো নেই। মুনতাসিমের ব্যবহারে মেহেভীন মুগ্ধ হয়ে গেল। কিন্তু তা বাহিরে প্রকাশ করল না। সে গম্ভীর মুখশ্রী করে জবাব দিল,

–এত রাতে আমাকে আপনার কিসের জন্য প্রয়োজন?

–আপনি কি আমার ওপরে রাগ করছেন?

–আপনি কি আমার ভালোবাসার মানুষ!

–মানে?

–মানুষ যাকে ভালোবাসে তার ওপরে রাগ করে। আপনি কি আমার ভালোবাসার মানুষ যে, আমি আপনার ওপরে রাগ করতে যাব৷ এভাবে যখন তখন আমাদের বাসায় আসবেন না। আমরা দু’জন মেয়ে একসাথে বাসায় থাকি। রাতের বেলায় একটা পুরুষ মানুষ আসাটা সবাই সহজ ভাবে নিবে না। আপনার কোনো প্রয়োজন থাকলে সকালে আসবেন।

–এভাবে কথা বলছেন কেন আমার সাথে? আপনি সত্যি আমার ওপরে রাগ করেছেন। আপনি অনুগ্রহ করে আমার ওপর রাগ করে থাকবেন না। আপনি রাগ করে থাকলে আমি ভেতর থেকে জ্বলে পুড়ে দগ্ধ হয়ে যাব। এভাবে অপরাধের আগুনের জ্বালিয়ে পুড়িয়ে মা’র’বে’ন না। আপনার রাগ আমাকে ভিষণ ভাবে পোড়ায়। আমার বুকের কাছে এসে কান পেতে দেখুন। আপনার রাগ দেখে বুকটা কেমন অস্থির হয়ে উঠেছে। ভিষণ যন্ত্রনা করছে। বুকের বা পাশে চিনচিন করে ব্যথা করছে। অদ্ভুত ভাবে মুনতাসিমের প্রতি মেহেভীনের মনের গহীনে মায়া কাজ করতে লাগলো। মানুষটার কথার মধ্যে জাদু আছে। প্রতিটি কথায় কেমন আসক্ত হয়ে পড়ছে মেহেভীন। নেশার থেকে-ও বেশি ভয়ংকর মানুষটার কথা। পাথরের ন্যায় কঠিন হৃদয়টা কোমল হতে শুরু করছে। মানুষটার কথা গুলো তাকে খুব করে টানছে। এই প্রথম কেউ মেহেভীন মেহেভীনের রাগকে এতটা প্রাধান্য দিল। সে তো সাধারণ একটা মানুষ। তার রাগকে এত অসাধারণ ভেবে কঠিন ভাবে নেওয়ার কি আছে।

–আশ্চর্য! আপনি আমার সাথে এভাবে কথা বলছেন কেন? আমার রাগ আপনাকে কেন পোড়াতে যাবে। আমি আপনার জীবনের তেমন গুরুত্বপূর্ণ কেউ নই। মেহেভীনের কথায় হালকা হাসলো মুনতাসিম। মেহেভীন আরেক দফা মুগ্ধ হলো। পুরুষ মানুষের হাসি বুঝি এত সুন্দর হয়! কই আগে কখনো কাউকে গভীর ভাবে এতটা পর্যবেক্ষণ করেনি। তবে আজ তাহলে এই মানুষটাকে এতটা মুগ্ধ হয়ে কেন দেখছে সে। মানুষ টা হাসলে ভিষণ সুন্দর লাগে। মানুষটা হাসলে তার সাথে পুরো ধরনী হাসে। মানুষকে আগে কখনো হাসতে দেখেনি সে। অদ্ভুত অনুভূতি কাজ করছে মেহেভীনের সমস্ত শরীরে। আনন্দ লাগছে ভিষণ মানুষটার বিরক্ত করা। সারাক্ষণ জ্বালানো তার অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে। মেহেভীনের এক টুকরো সুখের মাঝে মুহূর্তের মধ্যে বিষাদ নেমে এল।

–আসলে কেউ আমার ওপরে রাগ করে থাকলে, আমার ভেতরে খুব লাগা কাজ করে। আমি সেটা সহ্য করতে পারি না। আপনার জায়গায় অন্য কেউ থাকলে, আমি এই একই কাজ করতাম। তখন আমি মজা করেছি। আমার কথায় দুঃখ পেয়ে থাকলে, আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখিত। মেহেভীনের মুখশ্রীতে দেখা গেল হতাশার ছায়া। সে কি ভেবেছিল আর কি হলো। মনটা মুহুর্তের মধ্যে খারাপ হয়ে গেল। এতক্ষণ সামান্য অভিমান হয়েছিল। এখন সত্যি সত্যি রাগ হয়ে গিয়েছে। মেহেভীন রাগ করিনি বলেই নিজের কক্ষ চলে গেল। মুনতাসিম আচমকা একা একা হাসতে হাসতে চলে গেল। রুপা বোকার মতো দু’জনের কান্ড দেখে ভাবাচ্যাকা খেয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

ঘড়ির কাঁটায় রাত সাড়ে বারোটা ছুঁই ছুঁই। আয়মান আর প্রাপ্তি ড্রয়িং রুমে বসে আছে। হয়তো নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তির জন্য অপেক্ষা করছে। অপেক্ষার প্রহর যেন শেষ হয় না। প্রাপ্তি কেমন ছটফট করছে। আয়মানও অস্থির হয়ে উঠেছে। দু’জন এখনো পুরোপুরি ভাবে সুস্থ হয়ে উঠেনি। সবকিছুর জন্য প্রাপ্তি মুনতাসিমকে দায়ী করেছে। কিন্তু আয়মান সহ পরিবারের সকলে মানতে নারাজ যে, মুনতাসিম এমন জঘন্যতম কাজ করতেই পারে না। বাড়ির ছেলে হয়ে নিজের বাড়ির ছেলে আর বউকে আহত করবে। এমন মন মানসিকতা মুনতাসিমের নেই। কিন্তু প্রাপ্তি কেন জানি মনে হয়। এই যে তারা ব্যথা পেয়েছে। সেটা মুনতাসিমই করিয়েছে। এই এলাকায় কার এত বড় সাহস যে, চৌধুরী বাড়ির ছেলের গায়ে হাত দিবে। সবকিছু মিলিয়ে এক করতে পারলেও প্রমাণের অভাবে মুনতাসিমকে দোষী প্রমাণ করতে পারছে না। রাতের শেষ প্রহর চলে এসেছে। তখনই দরজায় কলিং বেল বেজে উঠলো। প্রাপ্তি ধড়ফড়িয়ে উঠে বসলো। আয়মান ও সজাগ হলো। প্রাপ্তি গিয়ে দরজা খুলে নির্দিষ্ট মানুষকে চক্ষের সামনে দেখতে পেয়ে মানুষটাকে আলিঙ্গন করল। দু’জনের চোখেই অশ্রুকণা এ যেন শত বছরের ভালোবাসা জমে আছে। মানুষটাকে পেয়ে প্রাপ্তি খুশির শেষ নেই। আহ্লাদে আটখানা হয়ে গিয়েছে প্রাপ্তি। ভাই বোনের মিলন দৃশ্য দেখে আয়মানের বুকটাও প্রশান্তিতে ভরে উঠলো। মেয়েটা যতই খারাপ হোক এ বাড়িতে আসার পর থেকে, মানুষের অবহেলা আর লাঞ্ছনা পেতে পেতেই দিন গিয়েছে বেশি। কথার আঘাতে হয়েছে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন। নিজের প্রিয়তমার মুখশ্রীতে এক টুকরো হাসি তুলে দিতে পেরে, নিজেকে ধন্য মনে করছে আয়মান।

–তোমাকে কতদিন পর দেখলাম ভাইয়া। আমি তোমাকে আর বিদেশে যেতে দিব না৷ বাবা-মায়ের কাছে তোমাকে যেতে হবে না৷ তুমি সব সময় আমার কাছে থাকবে। তোমাকে আমি আমার চক্ষের সাথে সব সময় দেখতে চাই। তোমার মতো করে আমাকে কেউ বুঝে না ভাইয়া। আমাকে আর একা করে দিয়ে চলে যেও না। তুমি আমার শক্তি ভাইয়া। আমার একমাত্র ভরসা তুমি।

–কাঁদছিস কেন বোন। তোর ভাই তোর কাছে চলে আসছে। আমার এই দেহে রক্ত থাকা অবস্থায় তোকে আর কষ্ট পেতে দিব না। আমি জানি আব্বু আম্মু আমার ওপরে কি কারনে রাগ করে আছে। আমি মেহেভীনের সাথে যে কাজটা করেছি। তা সত্যি অত্যন্ত জঘন্যতম কাজ। জানিনা কোন মুখ নিয়ে মেহেভীনের সামনে যাব। তবুও মেহেভীনের থেকে আমার ক্ষমা চাওয়া উচিৎ। চাচা চাঁচি আমাকে হয়তো আর আগের মতো ভালো চোখে দেখে না। কিন্তু এবার আমি যোগ্য হয়ে এসেছি। আমি যে অন্যায় করেছি মেহেভীনকে বিয়ে করে, সেই অন্যায়ের প্রায়শ্চিত্ত করব। ভাইয়ের কথায় জ্বলে উঠলো প্রাপ্তি। বিস্ময় নয়নে ভাইয়ের দিকে দৃষ্টিপাত করে আছে। বিদেশ থেকে এসে তার ভাইয়ার মাথা টা খারাপ হয়ে গিয়েছে। নাকি চাচা চাঁচি ফোন দিয়ে তার ভাইয়ের মস্তিষ্ক সম্পূর্ণরূপে গ্রাস করে ফেলছে। তার ভাই দেশে আসার পরেও ঠিক ছিল। হঠাৎ করে তার কি এমন হয়ে গেল৷ যে সে মেহেভীনের মতো মেয়েকে বিয়ে করবে। সে থাকতে এটা কখনোই হতে দিবে না। প্রাপ্তির সমস্ত মুখশ্রীতে আঁধার ঘনিয়ে এল। আয়মান ও মুখটা গম্ভীর করে ফেলল। মুহুর্তের মধ্যে পরিবেশটা শীতল হয়ে উঠলো। নিস্তব্ধতার রেশ চারিদিকে ঘিরে ধরেছে। পিনপতন নিরবতা চলছিল। এমন সময় খট করে আওয়াজ হলো।

চলবে…..

(১২০০ রেসপন্স করলে পরবর্তী পর্ব কালকে দিব)

পরের পর্বটি সবার আগে পড়তে পেইজটি ফলো করে সাথে থাকুন👉 গল্পের ভান্ডার

আরো সুন্দর সুন্দর গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন হতে ভুলবেন না👉 লেখক-লেখিকার গল্পের ভান্ডার�

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here