#খোলা_জানালার_দক্ষিণে
#পর্ব_৩১
#লেখিকা_Fabiha_bushra_nimu
সময় তার নিয়মে স্রোতের ন্যায় ভেসে চলে যাচ্ছে। নিস্তব্ধ হয়ে গিয়েছে কিছু মানুষের হৃদয়। ভারাক্রান্ত মন ছন্নছাড়া মস্তিষ্ক নিয়ে কারো সাথে কথোপকথনে ব্যস্ত মুনতাসিম। তখনই দরজা জানান দেয় কেউ তাকে স্মরন করছে। বিরক্তিতে মুনতাসিমের মুখশ্রী কুঁচকে আসে। সে গম্ভীর কণ্ঠে ভেতরে আসার অনুমতি দিল। তাইয়ান কক্ষে এসে বিস্ময় কণ্ঠে বলল,
–আপনার সাথে দেখা করতে মেহেভীন ম্যাডামের আম্মু এসেছেন। দীর্ঘ এক ঘন্টা ধরে আপনার জন্য নিচে বসে অপেক্ষা করছেন। আপনি যদি একটু নিচে আসতেন। তাইয়ানের কথায় মুনতাসিমের মুখশ্রীতে রক্তিম আভা ছড়িয়ে পড়লো। সে রাগান্বিত হয়ে বজ্রকণ্ঠে বলল,
–আমাকে এখন বলছ কেন? কথা গুলো বলেই মুনতাসিম হন্তদন্ত হয়ে কক্ষের বাহিরে চলে গেল। ড্রয়িং রুমে মেহেভীনের আম্মু বসে আছে। প্রাপ্তি এসে রাইমা বেগমের গা ঘেঁষে বসে আছে। প্রাপ্তির কর্মকাণ্ডে রাইমা বেগম ভিষণ বিরক্ত। তখনই মুনতাসিম নিচে আসে মুনতাসিমকে দেখে রাইমা বেগম সালাম দেয়। মুনতাসিম সালামের উত্তর নিয়ে নিজেও সালাম দিল। সে কুশল বিনিময় করে বলল,
–আপনি আমার কক্ষে এসে আপনার কথা গুলো বলতে পারেন আন্টি। এখানে বিরক্ত করার অনেক মানুষ আছে। আমার কাজে ব্যাঘাত ঘটানো মানুষ গুলোকে আমি একদম পছন্দ করি না। মুনতাসিমের কথায় প্রাপ্তির মুখশ্রী অপমানে থুবড়ে গেল। ক্রোধে চোয়াল শক্ত হয়ে এল তার। মুনতাসিমের কথার ওপরে কথা বলার সাহস নেই বিধায় দাঁতে দাঁত চেপে কথা গুলো সহ্য করল। সে কোনো কথা না বলে হনহন করে উঠে চলে গেল। মুনতাসিম তাইয়ানকে নাস্তা বানানোর কথা বলে রাইমা বেগম কে উপরে যাওয়ার জন্য আহবান জানাল। মুনতাসিম আগে আগে হাঁটছে আর রাইমা বেগম পেছনে পেছনে হাঁটছে। মুনতাসিম নিজের কক্ষে এসে সোফায় রাখা ল্যাপটপ টা গুছিয়ে রাখল। রাইমা বেগম দরজায় দাঁড়িয়ে বলল,
–আমি কি ভেতরে আসতে পারি স্যার? রাইমা বেগমের কথায় মুনতাসিম লজ্জায় পড়ে গেল। সে দ্রুত উত্তর করল,
–আমি আপনার ছেলের মতো এভাবে স্যার সম্মোধন করে আমাকে ছোট করবেন না আন্টি।
–আপনি কত বড় মাপের মানুষ আপনাকে অসম্মান করে কথা বলার ক্ষমতা আমার আছে। আপনি আপনার বাসায় আমার প্রবেশ করতে দিয়েছেন। আপনার কক্ষে বসতে দিয়েছেন। এটাই তো আমার ভাগ্য ভালো জিনিসের কদর সবাই করে সে বড়ো হোক বা ছোট। রাইমা বেগমের কথায় মুগ্ধ হলো মুনতাসিম। মানুষটা মুহুর্তের মধ্যে যে কারো মন কেঁড়ে নিতে পারে তার কথার মুগ্ধতা দিয়ে, মুনতাসিম একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে মনে মনে বলল, “আপনি ঠিকই আমার মূল্যটা বুঝলেন। কিন্তু আপনার মেয়ে বুঝল না। সে যদি আপনার মতো করে আমায় বুঝতো। তাহলে আমাদের জীবনটা আজ অন্য রকম সুন্দর হতো। কথা ভাবতেই বুকটা ভারি হয়ে আসতে শুরু করল। নিজেকে স্বাভাবিক করে কোমল কণ্ঠে রাইমা বেগমকে উদ্দেশ্য করে বলল,
–আপনি আমায় তুমি করে বলতে পারেন। আপনি আমার বড় হয়ে আমাকে আপনি বলে সম্মোধন করছেন। এতে আমার ভিষণ খারাপ লাগছে। মুনতাসিমের কথা গুলো কর্ণপাত হতেই রাইমা বেগম হালকা হাসলো। ছেলেটা ভিষণ সুন্দর ভাবে কথা বলতে জানে। কথার মধ্যে কত সুন্দর ভদ্রতা বিরাজ করে। রাইমা বেগম মস্তক নুইয়ে মাটির দিকে দৃষ্টি স্থীর করল। সে গম্ভীর কণ্ঠে বলতে শুরু করল,
–আমি খবর নিয়ে জেনেছি। যে মেহেভীনের কেসটা নিয়ে তদন্ত করছে। সে আপনার বন্ধু হয় মূলত আপনিই তাকে রেফার করেছেন। আমি চাই আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত পৌঁছে যেতে আপনি নেহাল স্যারকে সাহায্য করুন। আপনার অনেক ক্ষমতা যে কাজটা আমরা একমাসে করব৷ সেই কাজটা আপনার এক ফোনে সাতদিনেও হতে পারে আবার একদিনেও হতে পারে। আপনি যদি আমার মেয়ের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টাটা করতেন। তাহলে আমি সারাজীবন আপনার কাছে কৃতজ্ঞ থাকব। তার বিনিময়ে আপনি যা চাইবেন আমি আপনাকে সেটাই দিব কথা দিলাম। রাইমা বেগমের কথায় মুনতাসিম চমকে উঠল। রাইমা বেগম এত তথ্য পেল কোথায়! মুনতাসিম বিস্ময় নয়নে রাইমা বেগমের দিকে দৃষ্টিপাত করে আছে। রাইমা বেগমের শেষ কথাটা কর্ণকুহরে আসতেই মুনতাসিমের হৃদয়ে প্রশান্তির হাওয়া বয়ে গেল। সে আগের ন্যায় নরম কণ্ঠে জবাব দিল,
–আপনি সত্যি কথা বলছেন? আমি যা চাইব আপনি আমায় সেটাই দিবেন!
–একবার চেয়ে দেখুন। বলুন আপনার কি চাই?
–সময় মতো চেয়ে নিব। ততক্ষণ আপনার অপেক্ষা করতে হবে।
–বেশ তবে তাই হবে। আমি আপনার চাওয়ার অপেক্ষায় থাকব।
–আপনি চিন্তা করবেন না। আমার দেহে নিঃশ্বাস থাকা অবস্থায় আমি মেহেভীনের শরীরে কলঙ্কের হাওয়া পর্যন্ত বইতে দিব না। আপনি গৃহে ফিরে যান নিশ্চিন্তে নিদ্রায় তলিয়ে যান। মেহেভীনের সব দায়িত্ব আমার তার সব চিন্তা আমি নিলাম। আমাকে একবার ভরসা করে দেখুন ঠকে গেলে পরবর্তীতে আমার মুখ আপনায় দেখাব না। মেহেভীনের সব দায়িত্ব আমার কথাটা মধুর মতো শোনাল রাইমা বেগমের কাছে। সে কত পুরুষকে দেখেছে কই আগে কোনো পুরুষ এভাবে মেহেভীনের দায়িত্ব নেয়নি। বরঞ্চ মেহেভীনের ক্ষতি করার চেষ্টা করেছে। তবে কি রাইমা বেগম ভয়ংকর রকমের ভালো কিছুর আভাস পাচ্ছে। একটা মানুষকে বাহির থেকে যেমনটা মনে হয়। তার সাথে কথা না বললে তার সাথে না মিশলে বোঝা যায় না মানুষটা আসলে কেমন। এর মাঝের তাইয়ান একটা গার্ডকে সাথে নিয়ে নাস্তা নিয়ে আসলো। রাইমা বেগম খাবে না কিছুই মুনতাসিমের জোড়াজুড়িতে হালকা কিছু আহার করলেন। রাইমা বেগম চলে যাচ্ছিলেন। তখনই মুনতাসিম আদুরে কণ্ঠে ডাকল,
–আজকে থেকে যান আন্টি দুপুর ভাত খেয়ে যাবেন। রাইমা বেগম মুনতাসিমকে যত দেখছে ততই মুগ্ধ হচ্ছে! এত বড় মাপের মানুষের মন এতটা সহজ সরল হতে পারে সেটা রাইমা বেগমের ধারনার বাহিরে ছিল। সে ভেবেছিল মুমতাসিম হয়তো তাকে কয়টা কড়া বাক্য শুনিয়ে বিদায় করে দিবে। সে কি জানত না মুনতাসিম মানেই মুগ্ধতা। মুনতাসিম প্রতিশোধে নয় ক্ষমায় বিশ্বাসী। সে ঘৃণায় নয় ভালোবাসায় পারদর্শী। একটা মানুষের কাছে যত আসা যায়। ততই মানুষটার সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। রাইমা বেগমের মুনতাসিমের গাল স্পর্শ করে আদর করে দিতে ইচ্ছে করল। এত মিষ্টি একটা ছেলে নিশ্চই কোনো এক ভাগ্যবতী মায়ের গর্ভের সন্তান। যেমন তার ব্যবহার তেমন তার শিক্ষা। রাইমা বেগম মিষ্টি হেসে বিদায় জানিয়ে চলে গেল।
মুঠোফোনটা হাতে নিতেই দেখল, নেহাল পনেরো বার ফোন দিয়েছে। মুনতাসিম বিলম্ব করল না। দ্রুত ফোন ব্যাক করল। ওপর পাশ থেকে রাগান্বিত কণ্ঠ স্বর ভেসে এল। নেহাল চেচিয়ে বলল,
–এই শা’লা মন্ত্রী হয়েছিস বলে যা খুশি তাই করবি! গুরুত্বপূর্ণ কথা বলছিলাম! কথা শেষ না করেই কল কাটলি কেন? কল কাটলি তো কাটলি একদম ভূতের মতো গায়েব হয়ে গেলি! আমাকে উলটা রাগ দেখাতে আসিস না। তুই মন্ত্রী হবার আগে আমার বন্ধু এটা ভুলে যাস না।
–তুই রাগ করিস না আমি একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ করছিলাম। সেজন্য না বলে কল কেটে দিতে হয়েছে। তোকে কতবার বলেছি। বন্ধুত্বের মধ্যে একদম নিজেদের পেশা টানবি না। আমি আগে যেমন তোর কাছে সাধারণ মুনতাসিম ছিলাম। আজও তেমনই আছি। এবার কাজের কথায় আসা যাক।
–আমার মনে হয় মেহেভীনের অফিসের কেউ এতটা গভীর ষড়যন্ত্র করেনি। দুই তিনটা তথ্য পেয়েছি। কিন্তু সেগুলো সব মেহেভীনের বিপরীত পক্ষে, এগুলো দিয়ে মেহেভীনকে নির্দোষ প্রমাণ করা সম্ভব নয়। আমাদের আসল মাথা খুঁজে বের করতে হবে। আমি শুধু মাথার খোঁজটা পাই গোড়া পর্যন্ত পৌঁছে যেতে দুই সেকেন্ড সময় লাগবে না। মুনতাসিমের বিচক্ষণ মস্তিষ্ক নাড়া দিয়ে উঠল। ক্রোধে নিজেই নিজের হাত দেওয়ালে বা’ড়ি মা’র’ল। মুনতাসিম ভেবেছিল কাজটা হয়তো অফিসের মধ্যে হয়েছে। সেজন্য নেহালকে অফিসের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত তল্লাসি চালাতে বলেছে। এদিকে রুপার কথা তার মাথা থেকেই বের হয়ে গিয়েছিল। এতবড় ভুল তার দ্বারা কিভাবে হলো ভাবতেই রাগে ললাটের রগ ফুলে ফুলে উঠেছে। মুনতাসিম ঘন গাঢ় শ্বাস নিয়ে বলল,
–আমার থেকে তুই অভিজ্ঞ বেশি তোকে আমি আগা দেখিয়ে দিচ্ছি। তুই গোড়া পর্যন্ত অনায়াসে চলে যেতে পারবি। মেহেভীনের কাজের মেয়েটা রুপা তার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত হস্তান্তর কর। আশা করছি তার সবকিছু সামনে আসলে বড়ো বড়ো মুখ গুলো সামনে চলে আসবে।
–আর কারো কথা তুই জানিস?
–জুনায়েদ খান নামের এক লোকের সাথে দেড় বছর ধরে ঝামেলা চলছিল মেহেভীনের। তুই চাইলে তাকে-ও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারিস। নেহালকে আর কিছু বলতে হলো না। নেহাল যথেষ্ট বুদ্ধিমান একটা ছেলে ছোট বেলায় থেকে সে বেশ মেধাবী। তাকে আঁটি ভেঙে শ্বাস দিতে হয় না। অল্প একটু বললেই সে খুব সহজে গভীরে চলে যেতে পারে।
দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হয়ে যাবার পরে আজ সেই কাঙ্খিত দিন চলে এসেছে। আজকে মেহেভীনের কেসের ফাইনাল রাই হবে। মেহেভীনের মা, মুনতাসিম, নেহাল, রুপা সবাই কোর্টে উপস্থিত। একটু পরেই জজ সাহেব কোর্টে উপস্থিত হতেই সবাই দাঁড়িয়ে সালাম দিল। জজ সাহেব আসার সাথে সাথেই মেহেভীনকে উপস্থিত করা হলো। নেহাল জজের কাছে একটা ফুটেজ প্রদান করল। যেখানে মেহেভীন ইউএনও সাহেবকে হুমকি দিচ্ছে। সেটা শুনে মেহেভীনের মস্তক নত হয়ে গেল। ফুটেজ টা দেখা হলে মেহেভীনকে বলা হলো,
–আপনার কি নিজের সম্পর্কে কিছু বলার আছে?
–এখানে আমার হুমকি দেওয়ার ফুটেজ টা শুধু দেখানো হয়েছে। কিন্তু ইউএনও সাহেব আমার যে অশালীন আরচণ করেছেন। সেই অংশটুকু কেনো কেটে দেওয়া হয়েছে? নেহাল মেহেভীনকে শান্ত কণ্ঠে বলল,
–আপনার নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার জন্য কোনো প্রমাণ আপনার কাছে আছে? মুহুর্তের মধ্যে মেহেভীনের চোখে মুখে অসহায়ত্ব ফুটে উঠল। আঁখিযুগল রক্তিম বর্ন ধারণ করেছে। আঁখিযুগলে অশ্রু এসে চকচক করছে। কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে সেগুলো গড়িয়ে পড়লো। মেহেভীন মস্তক নুইয়ে ধীর কণ্ঠে জবাব দিল,
–না। তখনই নেহাল আরো কিছু ফুটেজ জজের কাছে প্রদান করল। সেগুলো দিয়ে নেহাল বলতে লাগলো।
–এখানে অনেক গুলো ফুটেজ আছে জজ সাহেব। আপনি একটা একটা করে দেখলে বুঝতে পারবেন। মেহেভীনের কাজের মেয়েটা কিভাবে দিনের পর দিন মেহেভীনের আড়ালে অনৈতিক কাজ করে গিয়েছে। সে বৈধ দলিলের মধ্যে অধৈর্য দলিল প্রবেশ করিয়ে কাগজ গুলো সাইন করিয়ে নিয়েছে। এভাবে তিনি মেহেভীনের বিভিন্ন ক্লায়েন্টের কাছে থেকে অবৈধ অর্থ দাবি করেন। শুধু তাই নয় জুনায়েদ খান নামক এক ক্লায়েন্টের কাছে থেকে সে পুরো এক কোটি টাকা অর্থ নিয়েছে। তারা মেহেভীনের আড়ালে মেহেভীনের বাসায় গোপন বৈঠক বসায়। আমাদের দেশের বেশিভাগ মানুষ নিজেদের বাসার কাজের লোককে একটু বেশি বিশ্বাস করে থাকে। মেহেভীনের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। মেহেভীনের কাজের লোক অর্থাৎ রুপা মেহেভীনের সরলতার সুযোগ টাকে কাজে লাগিয়ে দিনের পর দিন তাকে ঠকিয়ে এসেছে। অবৈধ কাজের বিনিময়ে টাকা ঠিকি নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই টাকা গুলো মেহেভীন পর্যন্ত কোনোদিন আসেইনি। মেহেভীন এসব টাকার বিষয়ে কিছুই জানে না। বলতে গেলে মেহেভীনকে জানতে দেওয়া হয়নি। মেহেভীনের সাথে ইউএনও সাহেবের ঝামেলা চলছিল। মূলত সমস্যাটা এখানে থেকেই তৈরি হয়। ইউএনও সাহেব মেহেভীনের সাথে দিনের পর দিন অশালীন আরচণ করছিলেন, আপত্তিকর প্রস্তাব প্রদান করছিলেন। মেহেভীন তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিবে বলায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে যান। আর মেহেভীনকে ভয় দেখান সে মেহেভীনকে পদত্যাগ করাতে বাধ্য করবেন। তারপরে তিনি জুনায়েদ খান আর রুপাকে কাজে লাগিয়ে এতদূর আসেন। ইউএনও সাহেবের বাসায় যেদিন মেহেভীন যায়। সেদিনের ফুটেজও আছে। তারা এতটুকু করেই ক্ষান্ত হননি মেহেভীনকে মারার বুদ্ধিও তারা করেছেন। রুপা মেয়েটা তাদের এত সাহায্য করল। তারা সেই মেয়েটার উপকারের কথা ভাবেনি। রুপাকেও মারার পরিকল্পনা তারা করেছে। বোকা মেয়েটা বুঝল না কে তার আপন কে তার পর! অর্থের লোভ মানুষকে ধংস করে দেয়। রুপা কেও ধংস করে দিয়েছে। রুপার জালিয়াতি করে টাকা নেওয়া ইউএনও সাহেবের অশালীন আরচণ ও কথা রুপার মেহেভীনকে মারতে বলার কথা সবকিছু এই ফুটেজের মধ্যে আছে। আপনি সবকিছু দেখুন আর আপনার মতামত জাহির করুন জজ সাহেব। হিম শীতের মাঝে-ও পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। জজ সাহেব একটা একটা করে ফুটেজ দেখতে লাগলো। এগুলো মেহেভীনের ড্রয়িং রুমের ফুটেজ যেখানে মাহতাব উদ্দিনের কাগজের মধ্যে রুপা জুনায়েদ খানের কাগজ গুলো ঢুকিয়ে দিচ্ছে। জুনায়েদ খানের বাসায় রুপাকে যেতে আসতে দেখা হয়েছে। জুনায়েদ খানকে হুমকি দিতে দেখা যাচ্ছে। ইউএনও সাহেবের বাসায় মেহেভীনকে খু’ন করতে ও গা’লি দিতে দেখা যাচ্ছে। ইউএনও সাহেবের অশালীন আরচণ ও প্রস্তাবের কথা শোনা যাচ্ছে। দিনের পর দিন এত এত টাকা রুপাকে নিতে দেখা যাচ্ছে। সবকিছু দেখে ঘৃণায় মেহেভীনের সমস্ত শরীর রি রি করে উঠল। মেহেভীন ঘৃণা ভরা দৃষ্টিতে রুপার দিকে দৃষ্টিপাত করল। রুপা ভয়ে জমে গিয়েছে। মুখশ্রী বেয়ে তরতর করে ঘাম গড়িয়ে পড়ছে। সমস্ত শরীর থরথর করে কাঁপছে। শক্তি গুলো যেন পালিয়েছে। পুরো শরীর অবশ হতে শুরু করেছে। পালিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা সে হারিয়েছে। রুপার এক পাশে রাইমা বেগম অন্য পাশে মুনতাসিম। মুনতাসিমের অধরের কোণে স্নিগ্ধ হাসি বিরাজমান। রুপার পালিয়ে যাবার কোনো রাস্তাই খোলা নেই। সে মস্তক নুইয়ে কাঁপতে লাগলো।
চলবে…..
(বেশি অধৈর্য হলে গল্প শেষ হলে পড়বেন। ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। দু’দিন ধরে সময়ের আগে রেসপন্স করে দিচ্ছেন। ভাবছি এভাবে রেসপন্স হতে থাকলে নিয়মিত গল্প দেওয়া ধরব। গল্পের মধ্যে প্যাচ লাগাতে শান্তি লাগে। কিন্তু প্যাচ গুলো খোলার সময় আমি নিজেই আউলিয়া হয়ে যাই। আজকে অন্তত বলবেন পর্ব ছোট হয়েছে। সবাই রেসপন্স করবেন। ধন্যবাদ। শব্দসংখ্যা:১৮২৪)