খোলা_জানালার_দক্ষিণে #পর্ব_৩২ #লেখিকা_Fabiha_bushra_nimu

0
306

#খোলা_জানালার_দক্ষিণে
#পর্ব_৩২
#লেখিকা_Fabiha_bushra_nimu

চারিদিক সুখানুভূতিতে মেতে উঠেছে। মেহেভীনকে বেকসুর খালাস করে দেওয়া হয়েছে। রাইমা বেগমের আঁখিযুগলে অশ্রুকণা এসে হানা দিয়েছে। যেকোনো সময় ভারী বর্ষণের ন্যায় জমিনে গড়িয়ে পড়বে। আস্তে আস্তে কোর্ট ফাঁকা হতে শুরু করল। পুলিশ এসে রুপাকে আটক করল। জুনায়েদ খান ও ইউএনও সাহেবকে ধরার কার্যক্রম শুরু হয়ে গিয়েছে। জুনায়েদ খানকে ধরা গেলে-ও ইউএনও সাহেবের খোঁজ মিলেনি। রুপাকে পুলিশ নিয়ে যাচ্ছিল তখনই মেহেভীন রুপার সমানে গিয়ে উপস্থিত হয়। মেহেভীনকে দেখে রুপার মস্তক নুইয়ে যায়৷ তবুও নিজেকে বাঁচানোর বৃথা চেষ্টা করে বলল,

–আমি ছোট মানুষ অনেক বড় ভুল করে ফেলছি আপা। আমাকে আপনি বাঁচান। আমি আর কখনো এমন ভুল করব না। আপনি চাইলে আমাকে বাঁচাতে পারবেন। আমি জেলে যেতে চাইনা। আপনি না আমায় বলেছেন। আমি আপনার ছোট বোনের মতো বড় বোন হয়ে ছোট বোনের ভুলটা মাফ করা যায় না। আমি আপনার জীবন থেকে অনেক দূরে চলে যাব। তবুও আপনি আমায় জেলে যেতে দিয়েন না। রুপার কথায় মেহেভীনের মস্তক জ্বলে উঠল। সে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারল না৷ নিজের সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করে রুপার গালে ক’ষে থা’প্প’ড় বসিয়ে দিল। রাগান্বিত হয়ে বলল,

–পায়ের জুতাকে কখনো মাথায় তুলতে নেই। আমি আপন ভেবে পায়ের জুতাকে মাথায় তুলেছিলাম। এতটুকু শাস্তি আমার প্রাপ্য ছিল। এবার তুই বুঝবি তোর অবস্থান টা ঠিক কোথায়। তুই পায়ের জুতা ছিলি তার সারাজীবন পায়ের জুতাই থাকবি। চাকরানী চাইলেই রাজরানী হতে পারে না। তুই অবৈধ অর্থ উপার্জন করে চাকরানী থেকে রাজরানী হতে চেয়েছিলি না। সৃষ্টিকর্তা ছাড় দেন কিন্তু ছেড়ে দেন না। তাই তোকে তোর অবস্থান দেখিয়ে দিল। আমার তোকে খু’ন করে ফেলতে ইচ্ছে করছে। দুধকলা দিয়ে এতদিন ঘরে কাল সাপ পুষেছিলাম। কথা গুলো বলতে বলতে মেহেভীন নিয়ন্ত্রণ হারা হয়ে গেল। আচমকা রুপার গলা চেপে ধরলো। অদ্ভুত ভাবে মেহেভীনের শক্তি দ্বিগুণ বেড়ে গিয়েছে। রুপা বাঁচার জন্য ছটফট করছে। দু’জন মহিলা পুলিশ মেহেভীনকে দূরে সরিয়ে দেয়। একজন মহিলা পুলিশ বলল,

–আইন নিজের হাতে তুলে নিবেন না ম্যাম। আমাদের কাজ আমাদের করতে দিন।

–এই মেয়ে যেন এতটুকু শাস্তি ও কম না পায়। আপনাদের সর্বোচ্চ শাস্তি যেন এই মেয়ে পায়। মেহেভীনের কথায় মহিলা পুলিশ দু’টো রুপা নিয়ে চলে গেল। রুপা ছাড়া পাবার জন্য ছটফট করছে। কিন্তু দু’জন মানুষের সাথে পেরে উঠছে না। পুরো কোর্ট ফাঁকা হয়ে গিয়েছে। রাইমা বেগম, নেহাল আর মুনতাসিম রয়ে গিয়েছে। নেহাল হাসোজ্জল মুখশ্রী করে ভা উচ্চারন করতেই মুনতাসিম জোরে নেহালের পায়ের ওপরে পা রাখল। নেহাল ব্যথায় কুঁকড়িয়ে উঠল। নেহালের আর্তনাদ শুনে, মেহেভীনের দৃষ্টি নেহালের ওপরে পড়লো। মেহেভীন নেহালের কাছে এসে বলল,

–আমাকে নির্দোষ প্রমাণ করার আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমি সারাজীবন আপনার কাছে কৃতজ্ঞ থাকব।

–আমার কাজই এটা আমাকে ধন্যবাদ দিতে হবে না। যদি দিতে হয় তাহলে মুনতাসিমকে দিবেন৷ সে আমাদের অনেক সাহায্য করেছে৷ আমি আপনার কাছে থেকে বেশি কিছু চাই না৷ আমাকে আপনাদের বি..উচ্চারণ করতেই মুনতাসিমের দিকে নজর যায়। মুনতাসিম অগ্নি দৃষ্টিতে তার দিকে চেয়ে আছে। মেহেভীন এখানে না থাকলে তাকে এতক্ষণে ধংস করে দিত মুনতাসিম। আঁখিযুগল দিয়ে তাকে শতবার ভষ্ম করে দিচ্ছে। নেহালের কণ্ঠনালিতে শব্দ গুলো এসে আঁটকে গেল। আমার কাজ আছে বলেই সে দ্রুত কোর্ট থেকে বেড়িয়ে গেল। মুনতাসিম চলে যাচ্ছিল। তখনই মেহেভীন ডাকলো।

–স্যার। মেহেভীনের ডাক উপেক্ষা করার ক্ষমতা তার কোনোদিনই ছিল না। আজ ও সে প্রেয়সীর ডাককে উপেক্ষা করতে পারল না৷ দৃষ্টি ঘুরালো পেছনের দিকে। মেহেভীন নরম কণ্ঠে বলল,

–আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ বিপদে পাশে থাকার জন্য।

–একজন বন্ধুর বিপদে পাশে দাঁড়ানোই প্রকৃত বন্ধুর কাজ। আমি কখনোই নির্দোষ ব্যক্তির শরীর কলঙ্ক লাগিয়ে আরামে বসে থাকতে পারি না। আমার শরীরে যদি কেউ কলঙ্ক লাগায় তাহলে আমি নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে জানি৷ ঠিক তেমনই আমার বন্ধুর শরীরে যদি কেউ মিথ্যা বোঝা চাপিয়ে দেয়। আমার যতটুকু সাধ্য আছে। সেটা প্রয়োগ করে তাকে সাহায্য করতেও জানি। ধন্যবাদ দিয়ে আমাকে ছোট করতে হবে না। ভালো থাকবেন আসছি। আমি কাজ ফেলে রেখে এসেছি আমাকে যেতে হবে। কথা গুলো বলেই মুনতাসিম বিলম্ব করল না। দ্রুত পায়ে স্থান ত্যাগ করল। মানুষটার অভিমান তার ভালোবাসার মতোই প্রখর। অভিমান ভাঙাতে যে প্রচুর কাঠ কয়লা পোড়াতে হবে। সেটা মেহেভীন গভীর ভাবে উপলব্ধি করতে পারছে। রাইমা বেগম দিন পর দিন ছেলেটার প্রতি মুগ্ধতা বেড়েই চলেছে। মুনতাসিমের মাকে রাইমা বেগমের ভিষণ দেখতে ইচ্ছে করে। গর্ব করে বলতে ইচ্ছে করে, মানুষের মতো মানুষ করেছেন ছেলেটাকে। এমন সোনার টুকরো ছেলে কয়জনের হয়? কথা গুলো ভাবতে ভাবতে মেয়েকে নিয়ে বাসার উদ্দেশ্য রওনা হলেন। মেয়ের বাসায় দু’টো দিন থেকে চলে যাবে। ফরিদ রহমান একটি বারের জন্য মেয়ের খোঁজ নেয়নি। রাইমা বেগম বাসায় ফিরছে না। সেটা নিয়েও প্রচুর অশান্তি করেছে। বাবা কি আসলেই এমন হয়? ভাবতেই মেহেভীনের বুকটা ভারি হয়ে আসতে শুরু করল।

অভাগী যেদিকে যায় কপাল পুড়তে পুড়তে যায়। কথাটার সঠিক মর্ম আজ মেহেভীন উপলব্ধি করতে পারছে। এত কষ্ট সাধ্য সাধনা সবকিছু অসৎ এর কাছে এসে হেরে গেল। তাতে কি যায় আসে নিজের সন্মান নিয়ে ফিরতে পেরেছে সে। এটাই তার কাছে বিশাল কিছু। নিজের সন্মান বিক্রি করে তো আর কাজে থাকতে পারবে না। এই জন্যই বোধহয় মানুষ বলে সৎ পথে কষ্ট বেশি আর অসৎ পথে বন্ধু বেশি৷ মেহেভীন তার মায়ের কাছে ফোন দিল। ত্রিশ সেকেন্ডের মতো চুপ ছিল মেহেভীন। রাইমা বেগম অস্থির হয়ে বলল,

–আমার কিন্তু ভিষণ চিন্তা হচ্ছে তোর কি হয়েছে বলবি?

–মা আমার চাকরিটা চলে গিয়েছে।

–কেন কি হয়েছে?

–সেই ঘটনার পরে কিছু মানুষ আমার সাথে খুব অশালীন আরচণ করতে লাগছিল। যা আমি সহ্য করতে পারছিলাম না। আমার নামে একে পর এক মামলা আসছিল। আমি কিছু নিয়ম ও ভঙ্গ করেছি মা৷ সেজন্য আমাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেছে। মেহেভীনের কথায় রাইমা বেগম নিস্তব্ধ হয়ে গেল। কারো কণ্ঠনালি দিয়ে কোনো বাক্য উচ্চারিত হচ্ছে না। রাইমা বেগম দ্বিধাদ্বন্দে ভুগছেন। সে মেহেভীনকে খবর টা দিবে কি না৷ রাইমা বেগম স্বাভাবিক কণ্ঠে বলল,

–আমি জানি তোর মনের অবস্থা ঠিক কতটা খারাপ। এটাও জানি তোর ভেতরে ছোটখাটো একটা ঝড় বয়ে যাচ্ছে। সমস্যা যেন আমাদের সমস্যায় ফেলতে না পারে। বরঞ্চ আমরা চেষ্টা করব সমস্যাকে সমস্যায় ফেলতে। আমি তোকে কি বোঝাতে চেয়েছি আশা করি বুঝতে পেরেছিস? আল্লাহ তায়ালা আমাদের মাঝে মাঝে দুঃখ-কষ্ট দিয়ে পরীক্ষা করেন৷ ধৈর্য হারা হোস না আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্য করেন।

–সব ভালো কেন আমার সাথেই করেন আম্মু। জীবনের পাপের বোঝা খুব বেশি হয়ে গিয়েছে। তাই তিনি এভাবে আমাকে তিলে তিলে শেষ করে দিচ্ছেন।

–তুই রাগ করে এসব কথা বলছিস। আল্লাহ তায়ালা আমাদের থেকে যা কিছু কেঁড়ে নেন৷ তার থেকে দ্বিগুন ফিরিয়ে দেন৷ তুই নিরাশ হোস না তিনি যতটুকু কেঁড়ে নিয়েছেন। তার থেকে দ্বিগুন খুব তাড়াতাড়ি ফিরিয়ে দিবেন। মানুষের ওপরে ভরসা করলে নিরাশ হবি খালি হাতে ফিরে আসবি। কিন্তু আল্লাহ তায়ালাকে ভরসা করে দেখ তিনি তোকে নিরাশ ও করবে না৷ আবার খালি হাতেও ফিরিয়ে দিবেন না। পৃথিবীতে মানসিক শান্তির আরেক নাম মা। এই যে ভেতরটা জ্বলে পুড়ে যাচ্ছিল। অসহ্য যন্ত্রনায় শরীরটা ছটফট করছিল। মস্তিষ্ক অকেজো হয়ে গিয়েছিল। চিন্তায় মস্তক থম মেরে গিয়েছিল। এত অশান্তির মধ্যে অজানা আনন্দ অনুভূত হচ্ছে মেহেভীনের। চিন্তিত মস্তক নিজেকে বোঝাতে আর মানাতে নেমে পড়েছে।

উত্তপ্ত মস্তিষ্ক টগবগে মেজাজ রাগান্বিত চেহারা রক্তিম আঁখিযুগল নিয়ে বাবার সামনে বসে আছে মুনতাসিম। মুনতাসিমের বাবা গম্ভীর মুখশ্রী করে ছেলের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। বাবা-ছেলের মধ্যে কিছু মুহুর্ত তর্কাতর্কি হয়েছে। পরিবেশ শীতল করতে দু’জনই নিস্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। মুনতাসিমের বাবা শান্ত হয়ে কোমল কণ্ঠে বলল,

–তোমার বয়স তো আর কম হয়নি। আমি চাই তোমার বিয়ে দিতে তুমি আমার মতামতকে উপেক্ষা করতে পারো না। তুমি রীতিমতো আমার মতামতকে অসন্মান করছ মুনতাসিম।

–আমি আপনাকে কতবার বলব আব্বা। আমি বিয়ে করব না৷

–নিজের বয়সের দিকে নজর দিয়েছ! এই বয়সে বিয়ে করবে না। তাহলে কোন বয়সে বিয়ে করবে? আমার ও তো মন চায়। ছেলে-মেয়ে বিয়ে দিয়ে নাতি-নাতনীর মুখ দেখতে।

–এক ছেলেকে বিয়ে দিয়ে দেখলেন না নাতি-নাতনীদের মুখ। আবারও একটা লা’শ বের হয়ে যাবে চৌধুরী বাড়ি থেকে যদি আমার সাথে ছলনা করার চেষ্টা করছেন।

–সে আজ আমার থেকে বহুদূর। আমি তোমার জন্য আমার না হওয়া নাতি-নাতনীর মুখ দেখতে পারিনি। তাই তোমাকেই আমার না দেখা স্বপ্নটা পূর্ণ করে দিতে হবে। বাবার কথায় মুনতাসিম লজ্জায় কুঁকড়ে গেল। নিজের বিয়ে নিয়ে বাবার সাথে কথা বলতে সে ভিষণ লজ্জা পায়। লজ্জা আর জড়তার কারনেই নিজের মনের কথা বাবার কাছে প্রকাশ করতে পারছে না। বাক্য গুলো যেন ছুটি নিয়েছে। যে মানুষটার একটা কথায় সবাই বাকরুদ্ধ হয়ে যায়৷ আজ সেই মানুষটা কথা বলার শব্দ হারিয়েছে।

–আমি তোমাকে সাতদিন সময় দিলাম। তুমি সাত দিনের মধ্যে নিজের সিদ্ধান্ত জানাবে। আমি আমার বন্ধুর মেয়েকে আমাদের বাসায় নিমন্ত্রণ করেছি। সে চৌধুরী বাড়িতে আসবে। তুমি তার সাথে ঘুরবে ফিরবে মিশবে। তারপরে যদি তোমার তাকে ভালো লাগে তবে আমি সামনের দিকে আগাব বুঝেছ। মুহুর্তের মধ্যে মুনতাসিমের ভেতরটা জ্বলে উঠল। দু-হাত মুষ্টিবদ্ধ করে আছে। দাঁতে দাঁত চেপে বাবার কথা গুলো সহ্য করে নিল। বাবার মতামতকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করার ক্ষমতা তার নেই। সে রাগান্বিত হয়ে কক্ষ থেকে বের হয়ে গেল। রিয়াদ চৌধুরী একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন। তার অজানা কারনে মেহেভীনকে পছন্দ নয়। দু’জনের দুরত্বের কথা জেনেই ছেলেকে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করে চায় সে। কিন্তু ছেলে তার নাছোড় বান্দা নিজের সিদ্ধান্তে অটুট থাকবে। মেহেভীনকে রাস্তা থেকে সরানোর জন্য একটা পথ অবলম্বন করবেন তিনি। সেই পথ যদি কাজে লেগে যায় তাহলে আলহামদুলিল্লাহ। আর না হলে মনের বিরুদ্ধেই ছেলের সুখ বেছে নিবে সে।

রাইমা বেগমের কণ্ঠ কেমন জানি শোনালো। মেহেভীন বুঝতে পারছে। তার মা তার থেকে কিছু আড়াল করার চেষ্টা করছে। মেহেভীন নিজের দুঃখ গুলো খুব যতনে মনের মধ্যে লুকিয়ে রেখে বলল,

–তোমার কি হয়েছে আম্মু? আমাকে একদম মিথ্যা বলার চেষ্টা করবে না। আমার মা তো এত সহজে নিস্তেজ হয়ে যাওয়ার মতো মানুষই না। মেহেভীন কিছু একটা আঁচ করতে পেরেছে কথা টা ভাবতেই চমকে উঠল রাইমা বেগম।

–পরে শুনিস।

–আমি এখনই শুনব৷ রাইমা বেগম দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন। সে সত্য টা দু’দিন পরে সবার সামনে চলে আসবে৷ সেটা দু’দিন আগে আসলে ক্ষতি কি? তাই মেহেভীনের মা দম নিলেন৷ কিছু সময়ের ব্যবধানে বলার জন্য প্রস্তুত হলেন। শব্দ গুলো যেন কণ্ঠনালিতে এসেও হারিয়ে যাচ্ছে। নিজের অশ্রু গুলো সংবরণ করে বলল,

–তোর বাবা খু’ন হয়েছে মেহেভীন। সাতদিন ধরে তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না৷ আজকে খবর পেয়েছি তাকে খু’ন করে ছয় টু’ক’রো করা হয়েছে। একটা ভিডিও ক্লিপ তারা সংগ্রহ করতে পেরেছে। কিন্তু তোর বাবার খন্ড গুলো তারা এখনো উদ্ধার করতে পারেনি। উদ্ধার করার কার্যক্রম চলছে। কথা গুলো কর্ণকুহরে আসতেই মেহেভীনের মনে হলো কেউ তার শরীরের সমস্ত হার গুলো গুঁড়ো গুঁড়ো করে দিয়েছে। এক মুহুর্তের জন্য তার রুহু কেঁপে উঠল। পুরো শরীর অবশ হয়ে আসতে শুরু করেছে। হিতাহিত জ্ঞানশূন্য গয়ে পড়েছে বুকের মধ্যে ভিষণ ফাঁকা ফাঁকা লাগছে। মানুষটা যতই খারাপ হোক মানুষটা তার বাবা ছিল। যার হাত ধরে সে হাঁটতে শিখেছে। যার উষ্ণ ভালোবাসায় সে বড় হয়েছে। কিছু দিনের করা খারাপ ব্যবহারের কাছে কি সারাজীবনের ভালোবাসা বৃথা যেতে পারে! মেহেভীনের মনে হচ্ছে জীবনের শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে সে। আর একটা ধাক্কা দিলে দেহ থেকে প্রাণ পাখিটা খাঁচা ফেলে উড়াল দিবে। এক ধাক্কায় ভেঙে পড়ার মতো মানুষ মেহেভীন নয়। বারবার ধাক্কা দিলে পাহাড় ও ভেঙে পড়ে সেখানে মেহেভীন একজন মানুষ মাত্র।

চলবে…..

(পৃথিবীতে কঠিন কাজ গুলোর মধ্যে একটা কাজ হচ্ছে পাঠকদের মন বোঝা। ব্যাপার টা এমন হলো না যে আপনার নাম রুদিয়া আর কারো নাম রুদিয়া হওয়া যাবে না। হলেই বলতে আপনার দেখেই কপি করছে। তাদের নিজেস্ব কোনো মাথা নেই। আমার গল্পে দু’টো সিন কোন এক মুভির সাথে মিলি গিয়েছে। সেটা দেখে আপনারা বললেন মুভির কপি আবার কেউ কেউ বললেন কপিরাইট লেখিকা। কত সহজেই বলে দিলেন তাই না। আপনারা যতটা সহজে বলেন। আমি ততটা সহজে মেনে নিতে পারি না। দীর্ঘ সময় ব্যয় করে হাতের চোখের ক্ষতি করে এত কষ্ট করে গল্প লেখি। দুই লাইন মিলের জন্য কত সহজে বলেন কপি। বিশ্বাস করেন তখন আমার কলিজায় এসে লাগে। আবার কিছু পাঠক আছে সবকিছু না জেনে অন্যের হ্যাঁ তে হ্যাঁ আবার না তে না মেলায়। অন্যকে এভাবে তেল না দিয়ে নিজের মতামত জাহির করবেন। আমি এটাও বলেছি পুরো গল্প মিলে নাকি, নাকি পুরো পর্ব মিলে? আপনারা এটাও বললেন পুরো গল্প না আবার পুরো পর্ব ও না আংশিক কিছু মিল পেয়েছেন। আমি বলেছি কপি হলে এডিট করব না হলে ডিলিট করব। আপনারা নিজেরাই বললেন পুরো গল্প নয়। খালি দু’টো সিন আপনি আপনার মতো কন্টিনিউ করেন। কপি লেখে আমার কি লাভ ভাই? আমি কি টাকা পাই নাকি কেউ আমায় টাকা দেয়? আমি দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে টিভিই দেখি না। তাহলে কোন মুভির সাথে কোন অংশ টুকু মিলে গিয়েছে। সেটা কিভাবে বুঝব! দু’টো পর্বে দু’টো সিন শুধু মিল পেয়েছেন। আরো দু’টো পর্ব পড়ে দেখতে পারতেন। আসলেই কাহিনি এক হয় নাকি। তখন না হয় বলতেন মেনে নিতাম। আপনারা বরঞ্চ মুভিটাই দেখবেন। আমার গল্প তো কপি পরের কাহিনি নিশ্চই আপারানা জানেন। কপি জিনিস পড়ে শুধু শুধু সময় নষ্ট করবেন না। আমি আমার খারাপ লাগা থেকে কথা গুলো বলেছি। আমার কথায় আঘাত পেলে মার্জনা করবেন। সবাই রেসপন্স করবেন ধন্যবাদ। শব্দসংখ্যা:১৯৪৮)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here