অনুভূতিরা_শব্দহীন লেখনীতে: #ইসরাত_জাহান_তন্বী ষট্ ত্রিংশ পর্ব (৩৬ পর্ব)

0
400

#অনুভূতিরা_শব্দহীন
লেখনীতে: #ইসরাত_জাহান_তন্বী

ষট্ ত্রিংশ পর্ব (৩৬ পর্ব)

অফিসের পার্টি স্থ°গিত হয়ে গেছে। কারণ সহজ, দুলালের দু°র্ঘ°ট°না। বেঁচে থাকা কঠিন হলেও আল্লাহ্ তাকে বাঁচিয়ে দিয়েছে। শরীরের নব্বই শতাংশ অংশ পু°ড়ে গেছে, কন্ঠনালি পু°ড়ে গেছে। তার স্ত্রীর শরীরের সত্তর শতাংশ অংশ পু°ড়েছে। দুজনের অবস্থাই ভয়াবহ, শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ণ ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করানো হয়েছে দুজনকে।

অফিসে খবরটা পেয়ে শরীফ ওদেরকে দেখতে আসলেও ইমতিয়াজ আর মৃত্তিকাকে বাসায় পাঠিয়ে দিয়েছে। এসবের পিছনে যে শাফিন আছে তা বুঝতে খুব একটা বুদ্ধি খাটানোর প্রয়োজন নেই।

বাসায় এসে মৃত্তিকা ব্যাগটা টেবিলে রেখে বলল,
“সবকিছুর একটা লিমিট থাকে, কোথায় থামতে হবে সেটা জানা উচিত। একের পর এক খু°ন করেই যাচ্ছে। আর..”

মৃত্তিকার কথার মাঝেই ইমতিয়াজ বলে,
“আর আমরা হাতপা গু°টিয়ে বসে ভাবছি পরের পালা কার।”

মৃত্তিকা ইমতিয়াজের চোখের দিকে তাকালো। তার দৃষ্টি স্থির। ইমতিয়াজ পলক ফেলে বলল,
“শাফিনের মৃ°ত্যু আমার হাতেই হবে।”

মৃত্তিকা ইমতিয়াজকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে বলে,
“কেন তাকে মা°রবেন? তাকে মে°রে নিজে বাঁচতে পারবেন? (একটু থেমে) আপনার কিছু হলে আমি কি করবো?”
“তুমি আমাদের সন্তানকে নিয়ে থাকবে।”

মৃত্তিকা চমকে উঠে। এ কোন কথা বলে দিলো ইমতিয়াজ। মৃত্তিকা রুমে চলে আসে। হিজাবটা খুলে রেখে হাত দিয়ে চুল গোছাচ্ছে। কাঁধ পর্যন্ত এসেছে তার চুলগুলো। ইমতিয়াজ ওর পিছনে এসে দাঁড়িয়ে সেও হাত দিয়েই চুল গোছানো শুরু করে।

মৃত্তিকা আয়নার দিকে তাকিয়েই বলল,
“আমাকে নকল করছেন কেন?”
“কোথায় দেখলে আমি তোমাকে নকল করছি। আমি তো আমার চুল ঠিক করছি।”
ইমতিয়াজ মৃদু হেসে উত্তর দিলো।

মৃত্তিকা নিজের মেকআপ উঠাতে উঠাতে বলল,
“আমি স্পষ্ট দেখছি আপনি আমাকে নকল করছেন।”

ইমতিয়াজ জোরে হেসে দেয়। কিছুক্ষণ দুজনের হাসাহাসি চলে। তারপর বেশ সিরিয়াস হয়েই ইমতিয়াজ জিজ্ঞাসা করে,
“তোমার মনে হয় দুলাল আর তার স্ত্রী বাঁচবে?”

মৃত্তিকা মাথা নাড়িয়ে বলে,
“আল্লাহ্ ভালো জানে, (একটু থেমে) কিন্তু আপনি কেন বলেছেন শাফিনের মৃ°ত্যু আপনার আপনার হাতে?”
“তোমার মনে হয় না তাহমিনার প্রতি°শো°ধ না নিলে তাহমিনার কাছে আমি ক্ষমা পাবো না? সবটা জেনেও আমি চুপ করে আছি, শান্তি কি পাচ্ছি আমি?”

মৃত্তিকা ইমতিয়াজের দিকে ফিরে বলে,
“আর আমি শান্তি পাবো আপনাকে ছাড়া?”

দুজনের দৃষ্টি দুজনের দিকে নিব°দ্ধ হলো। মৃত্তিকা একটা ঢোক দিলে গিলে ইমতিয়াজের কাছে এসে মিনমিনে স্বরে বলল,
“আমি যেরকম বাবা ছাড়া বড় হয়েছে আপনি কি চান আমাদের সন্তানও সেই ভাবেই বড় হবে?”

ইমতিয়াজ উত্তর না দিয়ে চলে গেল। মৃত্তিকা আবারো আয়নার দিকে তাকিয়ে নিজের মুখ পরিষ্কার করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। মৃত্তিকা জানে ইমতিয়াজের কাছে এ প্রশ্নের কোনো জবাব নেই।

ঘন্টাখানেক দুজনে আর কোনো কথাই বলল না। মৃত্তিকা নিজের মতো রান্না করলো, দুজনে রাতের খাবার খেলো, এশার নামাজ পড়লো। কিন্তু চুপ।

নামাজ শেষে জায়নামাজ গুছিয়ে রাখছে মৃত্তিকা, তখনই ইমতিয়াজ বলে,
“চলো তোমার বড়মণির বাসায়।”
“এখন? মানে এই রাতে?”
“হুম, আমি হসপিটালে যাবো তাই তোমাকে রেখে যাবো।”

ইমতিয়াজ টিশার্ট খুলে শার্ট পড়তে থাকে। মৃত্তিকা বলে,
“কোনো দরকার আছে ওখানে যাওয়ার?”

ইমতিয়াজ ওর সামনে এসে দাঁড়িয়ে বলে,
“বাটন লাগিয়ে দাও।”

মৃত্তিকা কপাল কুঁচকে মৃদু হেসে শার্টের বোতাম লাগানো শুরু করে। ইমতিয়াজ বলে,
“শত হোক সে আমাদের পার্টনার আর এখানে পুলিশ কে°ইস হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। সো যেতেই হবে।”
“আমি একা থাকতে পারবো।”

মৃত্তিকার অভিমানী সুরটা ইমতিয়াজ এক তুড়িতে বুঝে গেল। বারবার কাছে এসেও এক না হতে পারার আ°ক্ষে°প তো মৃত্তিকার রয়েছে। ইমতিয়াজ ওর দুইগালে হাত দিয়ে কপালে চুম্বন করে বলল,
“তুমি যেমন আমাকে ছাড়া শান্তি পাবে না, তেমনি আমিও তোমাকে ছাড়তে পারবো না।”

মৃত্তিকা মাথা তুলতে নিলে ইমতিয়াজের ঠোঁটের সাথে ওর চোখের পাপড়ির স্পর্শ হলো। ইমতিয়াজ হেসে দেয়, মৃত্তিকা ওর কলার টে°নে কাছে নিয়ে আসে। এরমাঝেই মিউকোর হানা, মিউমিউ ডাকে ইমতিয়াজের কাছে আসে। মৃত্তিকা সরে যায়। ইমতিয়াজ মিউকোকে কোলে নিয়ে বলল,
“কোনো মিউকোই আমাকে ছাড়ে না, যেতে তো হবে নাকি?”

মৃত্তিকা হিজাব পড়তে শুরু করে। লাজুকতা তার চোখে আর উপচে পড়া হাসিতে।
______________________________________

দুইদিন পর, দুলালের ভাই ও শ্যালক মিলে এই দু°র্ঘট°নায় মামলা করেছে। দুলালের স্ত্রী কিছুটা কথা বলতে পেরেছে, সে পুলিশকে জানিয়েছে কেউ একজন বাসায় এসেছিল এবং ইচ্ছাকৃতভাবেই এ ঘটনা ঘটেছে। ব্যস, সেই একজনকে খোঁজা শুরু। সিসিটিভি ফুটেজে শাফিনকে স্পষ্ট দেখা গেছে। ছবি দেখানোর পর দুলালের স্ত্রী তাকে চিনতেও পেরেছে। দোকান থেকে তাকে গ্রে°ফ°তার করে নিয়ে গেছে পুলিশ। দেশের বড়বড় টিভি চ্যালেনে দেখাচ্ছে এই খবর, শিল্পপতি দুলাল ফেরদৌসীকে হ°ত্যা°চেষ্টার মা°ম°লায় গ্রে°ফ°তার তারই বন্ধু শাফিন।

কলেজের অফ পিরিয়ডে ফোনে স্ক্রল করার সময় নিউজটা চোখে পড়ে আহনাফের। শাফিনের চেহারা সে দেখেই চিনে ফেলে। তাহলে তার আন্দাজ সঠিক, শাফিনই সেই লোক।

আহনাফ আপন মনে ভাবে,
“তবে কি তাহসিনার দু°র্ঘ°টনায় এর হাত আছে?”

আহনাফ ঢাকায় যাবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়। তবে সারাহ্-কে একা ফেলে যাওয়াটাও ঠিক নয়, আবার ওর এই অবস্থায় সফর করাটাও ঠিক নয়। তবুও একটা রিস্ক সে নিতে চায়। বাবাকে বুঝিয়ে হলেও সারাহ্-কে রেখেই যাবে সে।

আব্বাস সাহেবকে কল করে আহনাফ। বাবাকে বোঝানো খুব একটা কঠিন কাজ নয়। আব্বাস সাহেবকে সবটা বুঝিয়ে বলতেই উনি বুঝলেন। তবে তাহসিনার পরিবারের কথাটা আহনাফ এড়িয়ে গেল, বাবার কাছে এটা বলা লজ্জার।

কলেজ ছুটির সময় সারাহ্-র সাথে দেখা। সে পুকুরের কাছে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে। আহনাফ ওর কাছে গিয়ে ওর হাত ধরে বাইরে নিয়ে যেতে যেতে বলল,
“ঢাকায় যাবো আজকে।”
“কেন? কোনো সমস্যা?”

অটোতে বসে আহনাফ বলল,
“সমস্যা না, আমি গাড়ি দেখতে যাবো, কিনবো আমি। তুমি বাসায় থাকবা।”

সারাহ্ আহনাফের হাত জড়িয়ে ধরে বলল,
“আমিও যাবো।”
“বাচ্চাদের মতো বিহেভ করো না।”
আহনাফ একটু ধ°মক দেয়। সারাহ্ হাত ছেড়ে সোজা হয়ে বসে।

বাসায় এসে আহনাফ রুমে গেল। প্রতিদিনের মতো আজকেও দুপুরের খাবার গরম করে রেখেছেন আব্বাস সাহেব, রান্না তো সারাহ্ সকালেই করে যায়।

আহনাফ ফ্রেশ হয়ে এসে সারাহ্-কে চুপচাপ বসে থাকতে দেখে বলল,
“কি গো, চুপ যে?”

সারাহ্ বালিশে হেলান দিয়ে মুখ ঘুরিয়ে বসে রইলো। আহনাফ এসে ওর কোলে মাথা রেখে শুয়ে বলল,
“মাথা টি°পে দাও, ব্য°থা করতেছে।”

সারাহ্ ওর মাথায় হাত দেয় না। আহনাফ আবারো বলল,
“একটু স্বামী সেবা করো, সওয়াব হবে।”

সারাহ্ অভিমান করে বলে,
“আপনি বউকে ব°কেন, সওয়াব পাবেন।”

আহনাফ জোরে হেসে উঠে বসে। সারাহ্-র গলায় ঠোঁট ছুঁইয়ে দেয়, বরাবরের মতোই সারাহ্-র বাধা উপেক্ষা করে সে। সারাহ্-র মুখটা নিজের দিকে ঘুরিয়ে বলল,
“মান করে না ঐশী রানী।”

সারাহ্ অন্যদিকে মুখ ঘুরালে আহনাফ ওর গালে তর্জনী আঙ্গুল স্পর্শ করায়। সারাহ্ চোখ বন্ধ করে বলল,
“শুয়ে পড়ুন, মাথায় হাত বুলিয়ে দেই।”

ওর ঘনঘন নিশ্বাস আহনাফ অনুভব করে। মুচকি হেসে বলল,
“আগে খেয়ে নাও, তারপর স্বামী সেবা করো।”

সারাহ্ দ্রুত উঠে চলে যায়। এই লোকটা একটা ব°জ্জা°তের সেরা। যখন তখন যেরকম উপায়ে হোক ওকে লজ্জা দিতেই হবে। আহনাফ হেসে উঠে ডাইনিং এ আসে।
______________________________________

পরদিন সকালে, হাসপাতাল থেকে থানায় এসেছে ইমতিয়াজ, মৃত্তিকাও সাথে এসেছে। দুলালের দু°র্ঘ°ট°নার পর হাসপাতালে থাকছে ইমতিয়াজ, পুলিশের নানান জিজ্ঞাসার মুখে মৃত্তিকাকে সে ফেলতে চাচ্ছে না। তাই এই দূরত্ব তৈরি।

শাফিনের সাথে কাউকে দেখা করতে দেয়া হচ্ছে না। দূর থেকে তাকে দেখে মৃত্তিকা। শাফিন র°ক্ত°চক্ষু নিক্ষেপ করে মৃত্তিকার দিকে, মৃত্তিকা ওর নজর দেখে। পুলিশের মাঝ থেকেই শাফিন হাত উঁচিয়ে আঙ্গুল উপরে নিচে দিয়ে মৃত্তিকার শরীর ইঙ্গিত করে। ইমতিয়াজ এগিয়ে যেতে নিলে মৃত্তিকা ওকে বাধা দেয়।

ইমতিয়াজের হাত ধরে বলল,
“প্লিজ, ঝা°মেলা কইরেন না। আমার ভ°য় লাগছে তার দৃষ্টিতে।”

ইমতিয়াজ মৃত্তিকাকে নিয়ে বাইরে আসে। আহনাফ এসেছে, ইমতিয়াজ ওর সাথে হ্যান্ডশেক করে। আহনাফ ভ্রূ উঁচিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,
“অবশেষে সে ধরা পড়লো।”

ইমতিয়াজ বাঁকা হাসে। বলে,
“তোমার মনে হয় লিগ্যাল ওয়েতে ওর কিছু করা যাবে? এতোগুলো খু°ন ঠান্ডা মাথায় করেছে, এখন তাড়াহুড়ায় ধরা পড়েছে। জন্মগত শ°য়°তান সে, ওকে..”

ইমতিয়াজ কিছু বলতে নিলে মৃত্তিকা ওর শার্টের হাতায় মু°ঠ করে ধরে। মৃত্তিকা জানে সুযোগ পেলে ইমতিয়াজ শাফিনকে মে°রে ফেলবে।

ইমতিয়াজ থেমে গিয়ে পিছনে তাকায়। মৃত্তিকা নিচুস্বরে বলে,
“আর কিছু বলিয়েন না।”
ইমতিয়াজ ওর কথা শুনে, আর কিছুই বলে না।
আহনাফ হেসে অন্যদিকে চলে যায়। সাংবাদিকদের ভীড় আছে এখানে। হঠাৎ একটা কথা ছড়িয়ে পড়ে যে দুলাল ফেরদৌসী মা°রা গেছে। ইমতিয়াজ খবরটা শুনেই শরীফকে কল করে সত্যতা জানতে চাইলে উত্তর আসে,
“সবটাই সত্য, এইতো কিছুসময় আগেই সে মা°রা গেছে।”

তাহমিনাকে কিভাবে মা°রা হয়েছিল তা শুধু দুলালই জানতো। মৃত্তিকা ওইটুকু অংশ ভিডিও করেনি। ইমতিয়াজ একটু আশাহত হয়।

“মৃত্তিকা, চলো তোমাকে বাসায় দিয়ে আমি হসপিটালে যাবো।”
“আমিও যাবো।”
“জে°দ করো না।”

মৃত্তিকা ওর হাত ধরে বলে,
“আপনাকে একা ছাড়লে আমার খুব চিন্তা হয়।”

মৃত্তিকার শত অনুরোধ ইমতিয়াজ শুনে না। ওকে বাসায় রেখেই সে হাসপাতালে যায়। দুলাল ফেরদৌসীর ছেলে কলরব এসেছে, বাবার ম°র°দেহ নিয়ে অঝোরে কাঁদছে।

ইমতিয়াজ থমকে যায়, মনে পড়ে নিজের সেই দিনের কথা। কত আর বড় ছিল, কলেজে পড়তো। বাবার লা°শে°র খাটিয়া বয়ে নেয়ার ক্ষমতা তো তখন ছিল না। তবুও নিতে হয়েছিল। ওই গো°র°স্থানের গেইট পর্যন্ত সবাই আদর করেছে, এরপর যেন সবটাই পালটে গেল। সব চিত্র এলোমেলো হলো।

দুলালের পো°ড়া দেহটা দুইদিন হাসপাতালে কুঁ°কড়েছে, নিজের চোখের সামনে যে পা°পগুলো সে করতে দিয়েছিল। তিনজন জলজ্যান্ত মানুষকে অ°মানুষের মতো হ°ত্যা করেছিল, তার প্রতি°শো°ধ প্রকৃতি নিয়েছে৷ এখন সেই হাশরের ময়দানের ফয়সালার অপেক্ষা করবে সে, অপেক্ষা করবে ইসরাফিল (আ.) এর শি°ঙ্গায় ফুৎকারের। তার আগে থাকবে এক জীবন, যার নাম কবর।
______________________________________

বিকালে সুরভি এসেছে বাবাকে দেখতে। শর্ত দেয়া আছে দূর থেকে দেখতে হবে। যেহেতু দুলাল মা°রা গেছে তাই সে এখন খু°নের আসামী। পুলিশ তো আর জানে না যে সে একটা খু°ন করেনি, এর আগেও এসবের অনেক রেকর্ড তার আছে আর সে এসব থেকে বের হয়েও এসেছে। শাফিন বেশ নিশ্চিন্ত আছে, পুলিশ ওর কিছুই করতে পারবে না সে জানে।

নয়মাসে পড়তে আর কিছুদিন বাকি আছে সুরভির। এইতো কিছুদিন পরই সে মা হবে। বাবার হাতে সন্তানকে তুলে দেয়ার খুশি ওর আর নেই। তানজিমের কাছ থেকে তাহমিনার কথা সে শুনেছে। এখনো যে স্থির আছে এটাই বেশি।

শাফিনের থেকে বেশ খানিকটা দূরে দাঁড়ালো। দুচোখে তার অশ্রুধারা। বাবার গ্রে°ফ°তারের দুঃখ নয় এটা। তাহমিনার জন্য এ কান্না। সে কি তার মেয়ের বয়সী ছিল না? তার কি নিজের স্বপ্ন পূরণের অধিকার ছিল না?

সুরভি একটু এগিয়ে গিয়ে শাফিনকে বলে,
“আমাকে দেখে তোমার লো°ভ হয়নি বাবা?”

কতটা কষ্ট, কতটা অসহায়ত্ব থেকে একটা মেয়ে তার বাবাকে এই কথাটা বলতে পারে তা কেবল আল্লাহ্ই জানেন। সুরভি জোরে জোরে নিশ্বাস নিতে নিতে বেরিয়ে আসে। দেলোয়ারা থানায় আসেননি। উনি এখনো শাফিনের এসব ঘটনা বিশ্বাস করতে পারছেন না।

চলবে….