শুধু_তোমায়_ভালোবেসে #সূচনা_পর্ব #সাদিয়া_রহমান_হাফসা

0
332

_________________

পাত্রপক্ষকে চা-নাস্তা দেওয়ার সময় হঠাৎ পায়ে ধাক্কা লাগায় পাত্রী চা শুদ্ধ গরম চায়ের কাপটা ফেলে দিলো পাত্রের গায়ে! মেজাজ তিরিক্ষি হয়ে ওঠলো পাত্রের। নাতনির এই হতবুদ্ধিভাব দেখে বৃদ্ধা নূরী বেগম কুটিল হেসে পাত্রের মাকে শুনিয়ে মুখ ছিটকে বললেন,

– আঃ মরণ! হাঁটতে গেলে দশবার হোঁচট খায় এই মাইয়ারে নাকি তেনারা তেনাদের শিক্ষিত পোলার বউ করবে! আর কত রং-তামাশা যে দেখতে হয় আল্লাহ মালুম! সব লোভ, সম্পত্তির লোভ বুঝলি তো নিহাল? তোর শশুর তোর বউয়ের নামে যেই অর্ধেক সম্পত্তি দিছে ঐটা তো তোর হাবা বউ আমার রৌদ্র ভাইরে ঠকাইয়া পুরাটাই এই মুখপুড়ির নামে কইরা দিছে! তাই সম্পত্তির লোভে পইরা তোর বউ পটল তোলার সঙ্গে সঙ্গেই আইছে তাগো পোলা দিয়া এই ছেমরির বিয়া করাইয়া সম্পত্তি হাতাইতে। দেখবি বিয়ার পরে সব সম্পত্তি লেইখা নিয়া এই ছেমরিরে মাইরা গাঙে ভাসায় দিছে। নেতা পরিবার তাই কোনো ফ্যাসাদেও পড়বো নাহ্।

মধ্যবয়স্ক নিহাল আহমেদ তার মায়ের সাথে তাল মিলিয়ে বললেন,

– তা আর বলতে? কোথায় আছে না! মায়ের চেয়ে মাসির দরদ বেশি? এসব হলো তার চাক্ষুস প্রমাণ। আমাদের বাড়ির মেয়েরে নাকি আমরা ঠিক মতো পালতে পারবো না! আমি নাকি..

নূরী বেগম বাধা দিয়ে বললেন,

– আরে রাখতো! একদিকে ভালোই হইছে। এই ছেমরিরে যদি আমরা বিয়া দিতাম তাইলে তুই যৌতুক দিতে দিতে ফকির হইয়া যাইতি। না আছে রূপ না আছে গুন। না পারে ঠিকমতো কথা কইতে না-ই পারে সংসারের কাম করতে। প্রতিবন্ধী কি না কে জানে! কতবার তোর বউরে কইছিলাম পাগল খানায় দিয়া আইতে। আমার কথা তো শুনলো না-ই উল্টা নিজের সব সম্পদ এই প্রতিবন্ধী মাইয়ার নামে লিক্খা দিলো! ছেহ্! ওর কালিমুখ আজকে দেখছি না! দেখিস আজকে তোর দিনও খারাপ যাইবো সাথে আমারও।

এসব কথা শুনে সহসা উঠে দাড়ালো পাত্র। একমুহূর্ত দেরি না করে হনহনিয়ে বাইরে বেরিয়ে গেলো। তার দেখাদেখি তার মাও পিছু নিয়ে বেরিয়ে যায়। যাওয়ার আগে একরাশ ঘৃণার দৃষ্টি ফেলে যায় নূরী বেগম আর নিহাল আহমেদের দিকে। তারা চলে যেতেই পৈশাচিক আনন্দে দুইজনের চোখমুখ উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। নিহাল অত্যন্ত খুশি মনে সোফায় বসে দুইহাত শব্দ করে উরুর উপর রেখে বললেন,

– আপদ বিদায় হলো সাথে চিন্তাও গেলো। আম্মা আমি দোকানে যাচ্ছি তাহলে।

– হো সাবধানে যা। আমিও একটু বিশ্রাম নেই যাইয়া। কোমর ব্যথা হইয়া গেছে। ঐ ছেমরি এই যে জায়গাটা নোংরা করলি এইটা ভালোমতো পরিষ্কার করবি। সাতবার মুছবি। এক্কেবারে চকচক কইরা মুছবি। যদি এক চিমটি দাগও পাই তোর খবর আছে!

হুকুৃম ছেড়ে লাঠিতে ভর করে ভেতরের ঘরে বিশ্রাম করতে চলে গেলেন নূরী বেগম। সব নিশ্চুপ। বসার ঘরে ফের রাতের আগে আর কোলাহল হবে না। এতক্ষন যাবত যাকে ঘিরে এত শত কথা হলো সে খুব স্বাভাবিক ভাবেই গায়ের পুরনো রঙচটা ধূসর রঙের ওড়নাটা কোমরে বেঁধে নিয়ে চা পড়ে যাওয়া জায়গাটা পরিষ্কার করতে বসে পড়ে।


ইট কংক্রিটের নীলাভ কালো হাইওয়েতে ফুল স্পিডে ছুটে চলছে লাল রঙের ফেরারি গাড়ি। একটুপর পঞ্চমবারের মতো পাশের সিটে রাখা মোবাইল ফোনটা পুনরায় বেজে উঠে। ড্রাইভিং সিটে বসা লোকটি গাড়ির স্পিড আরও বাড়িয়ে দিলো। অতি দ্রুত হাইওয়ে পার করে কাঁচা সড়কে এসে গতি কমিয়ে রাস্তার একপাশে গাড়ি দাঁড় করিয়ে ফোন রিসিভ করে ভারী পুরুষালি গলায় বললেন,

– হ্যালো, আদনান সাখাওয়াত স্পিকিং!

অপর পাশ থেকে উৎকন্ঠা ভরা জবাব এলো,

– ভাইইইই! একটা দুর্ঘটনা ঘটায় ফেলছি।

আদনান ফোনের নাম্বার চেক করে দেখে এটা তার ভাইয়ের ১৫তম সিমকার্ড থেকে আসা কল। কেননা বাকি ১৪টা নাম্বার বর্তমানে তার ফোনের ব্লক লিস্টে সমাহিত। ঠোঁট গোল করে শ্বাস ছেড়ে বললো,

– প্রতিদিনই কোনো না কোনো দুর্ঘটনা ঘটাচ্ছিস এ আর নতুন কি?

– ভাই এটা সিরিয়াস দুর্ঘটনা।

আদনান গাড়ির সিটে হেলান দিয়ে আরাম করে বসে বললো,

– ওহ আচ্ছা।

– হসপিটালে যাওয়ার পথে একটা পেশেন্টকে দেখতে তার বাড়িতে গিয়েছিলাম। রাস্তাটা কি যে বাজে ভাইই তোকে কি বলবো! আমি তোকে এড্রেস দিয়ে দেবো। এখানকার মানুষের তোর মতো এমপির সহযোগিতা ভীষণ দরকার।

– হুমম..নেক্সট?

– কাঁচা সড়ক দিয়ে আসার সময় বাইকের ব্যালেন্স হারিয়ে ফেলি আর ওমনি বাইকের সাথে ধাক্কা খেয়ে রাস্তার পাশের ধানক্ষেতে পড়ে যায় একটা মেয়ে। আমি তাড়াতাড়ি ওকে তুলে দাঁড় করাতে গেলে আমার সাথে সেকি ঝগড়া করলো ভাইইই! হসপিটালে নিয়ে আসছি এখনও আমায় ননস্টপ যা নয় তা বলেই যাচ্ছে। এখন আব..

পুরো কথা শেষ করার আগেই আদনান রাগ মিশ্রিত গলায় বললো,

– তুই কি সারাজীবন এমন কেয়ারলেস-ই থাকবি আফসান!?

আফসান মিনমিন করে বললো,

– এবারের মতো বাঁচিয়ে দে। এরপর কেয়ার ফেয়ার ডেয়ার সব সেটিংস চালু করে একদম রেয়ার হয়ে যাবো, পাক্কা প্রমিজ।

– সেই পিচ্চিকাল থেকে এই একই কথা বলে তুই আমাদের সবার কানের পোকা খেয়ে দামড়া ব্যাটা হয়ে গেছিস তবুও এক ইঞ্চি পরিমাণ চেঞ্জ হসনি। তাই তোকে আমি বিশ্বাস করি না আর না-ই তোকে কোনো সাহায্য করবো। ফোন রাখ (ধমক দিয়ে)

– ভাইইইইই কাটবি না। এতক্ষণ শুনছিলি শিরোনাম এবার আসল নিউজটা শোন।

আদনান দাঁত কিড়মিড় করে বললো,

– আর কি শুনতে বাকি রেখেছিস!

– এই মেয়েটা বলছে ও নাকি থানায় অ্যাটেম্প টু মা/র্ডা/র কেস করে আমাকে চৌদ্দ শিকের ভেতরে চালান করে দেবে। আমি নাকি ওরে মার্ডার করতে গেছি অথচ ওর হাড্ডি-গুড্ডি কিচ্ছু ভাঙ্গে নাই। শুধু একটু চামড়া ছিলে গেছে আর ওড়নাটা বাইকের চাকায় লেগে ছোট-বড় দুই টুকরো হয়ে গেছে। বিশ্বাস মি ভাই! তখন থেকে এই পর্যন্ত আমি একশো হাজার বার সরি বলছি তাও মানে না উল্টো আমারে! আফসান সাখাওয়াত রে ভাষণ দিতেছে! মেয়ে তো নয় একেবারে ধানি লঙ্কা!

আদনান ‘চ’ সূচক শব্দ করে আফসোসের সুরে বললো,

– ইশশ্! এমন একটা মেয়ে যদি আমার মায়ের গুনধর ছোট ছেলের বউ হতো..!

আফসান মুখ কালো করে বললো,

– ভাই?

– কি?

– তুই এখানে আয় প্লিজ! লেডিস মামলা না হলে আমিই কিছু করতাম। মানুষের মতো লেডিস হলেও আমি ম্যানেজ করে নিতাম। কিন্তু এই সাপের মতো ফোঁসফোঁস করা নীল-নাগিনীরে ম্যানেজ করা আমার পক্ষে ইম্পসিবল-ই না অসম্ভব। প্লিজ ভাই কাম তাড়াতাড়ি।

আদনান ভাবলেশহীন হয়ে জবাব দিলো,

– পারবো না। নিজের ঝামেলা নিজে সামলা।

– দেখ ভাই, আমারে সেফ না করলে কিন্তু আমার থেকে বেশি ক্ষতি তোর আর বাবার-ই হবে। স্পেশালি তোর।

আদনান ভ্রু কুঁচকে বললো,

– তুই আমায় ভয় দেখাচ্ছিস!?

– ভবিষ্যৎ দেখাচ্ছি ভাই, তাও আবার ব্যাখ্যা সহ।

– ওহ রিয়েলি!

– ইয়েস, আজ যদি এই নীল-নাগিন আমার নামে মামলা করে তাহলে কি হবে জানিস?

– তুই-ই জানা।

– আমারে পুলিশ থানায় নিয়ে যাবে। তারপর জিজ্ঞেসাবাদ করবে। কথা বলার এক পর্যায়ে বাবার নাম জানতে চাইবে। আমি বলার পর তারা কিছুটা ভরকে যাবে, তাই শিউর হওয়ার জন্যে বলবে কই ভাই হে কেয়া? আমিও বলবো হ্যাঁ আলবাত আছে, ওয়ান অ্যান্ড অনলি পিস দ্য গ্রেট এমপি আদনান সাখাওয়াত ওরফে আদি। তারপর তারা হুড়মুড়িয়ে তোরে ফোন করে থানায় ডাকবে আমার জামিন করাতে।

একনাগাড়ে কথা শেষ করে বুকে হাত রেখে দম ছাড়ে আফসান। তারপর বিজ্ঞদের মতো তর্জনী আঙুল থুতনিতে রেখে বললো,

– জাস্ট কল্পনা ভাই, তুই আমারে নেওয়ার জন্যে থানায় গেলে তোর প্রেস্টিজ কই যাবে!

শয়তানি হেসে ফোনটা ডান কান থেকে সরিয়ে বাম কানে নিয়ে আদনান বললো,

– মাই ডিয়ার ছোটভাই, ডোন্ট ওয়ারি। অনেক বুদ্ধি তোমার। এটা যদি ভালো কাজে ব্যবহার করতে তাহলে তোমার আজকে এই দিন দেখতে হতো না। আর বাদ রইল আমার প্রেস্টিজ? সেটা তো থানায় গিয়ে তোর জামিন করালে যাবে। আমার ভাই বলে কি তোর সব পাপ দুধভাত? নো, নেভার! পাপ করছিস এবার ফল ভোগ কর।

আফসান কাঁদোকাঁদো হয়ে বললো,

– ভাইইইই ডোন্ট বি নিষ্ঠুর!

কোনো তোয়াক্কা না করে কল ডিক্লাইন করে পুনরায় গাড়ি স্টার্ট দিয়ে নিজের গন্তব্যের পথে চলতে লাগলো আদনান। ওদিকে আফসান বেচারার অবস্থা খুবই নাজেহাল। ইমারজেন্সি ওয়ার্ডের পাশে রাখা আসনে ধপ করে বসে পড়লো সে। আফসানের মতে মেয়েটার তেমন কোনো ক্ষতি-ই হয়নি তবুও মেয়েটি কেঁদে ভাসিয়ে দিচ্ছে। তাই অতিষ্ঠ হয়ে সোজা ইমারজেন্সিতে নিয়ে আসে। হসপিটালের নিয়ে আসার সময় সারাটা পথ সেই মেয়ে আফসানকে বকাঝকা করেছে, সাথে পুলিশের ভয় দেখানো তো আছেই।

– স্যার! কায়নাত ম্যাম কিছুতেই ইনজেকশন দিতে দিচ্ছে না।

নার্সের কথায় মাথা তুলে কপাল কুঁচকে আফসান বললো,

– হু ইজ কায়নাত ম্যাম?

– স্যার আপনি যাকে নিয়ে এসেছেন।

– ওহ খোদা! আই কান্ট টলারেট হার এনিমোর!

রেগে গিয়ে আফসান ইমার্জেন্সি রুমে প্রবেশ করে। সেখানে গিয়ে দেখে কায়নাত নামে মেয়েটা সমানে লেডিস ডক্টরের সাথে ত্যাড়ামি করেই যাচ্ছে। আফসান এগিয়ে গিয়ে বললো,

– ডক্টর, আমাকে দিন।

কথামতো ইনজেকশনের সিরিঞ্জ আফসানের হাতে দিয়ে ডক্টর সরে গিয়ে নার্সের পাশে দাঁড়ালো। সব সেট করে ইনজেকশন দিতে এগিয়ে যেতেই কায়নাত ছিটকে দূরে সরে বসে লেডিস ডক্টরকে বললো,

– আপনি কেমন ডাক্তার হ্যাঁ? আপনার কাছে যে না সে এসে ইনজেকশন চাইলো আর আপনি তাকে দিয়েও দিলেন! সে যদি ভুল জায়গায় পুশ করে দেয় তাহলেই তো আমি ইন্না-লিল্লাহ হয়ে যাবো! আপনারা কি বুঝতে পারছেন না এই বদ লোকটা আমায় প্রাণে মা/র/তে চাইছে!?

আফসান এবার রাগের সপ্তম আকাশে উঠে গিয়েছে। দাঁত কিড়মিড় করে কায়নাতের দিকে আঙুল তাক করে বললো,

– লিসেন মিস কাউয়াঠুঁটি, আমি যে সে নই আ’ম আ ডক্টর। সার্জন স্পেশালিস্ট। তাই আমার সম্পর্কে সম্মানের সহিত কথা বলবে। আর তোমাকে কোন সুখে মা/র/তে যাবো আমি! কে হে তুমি হা?

– কাউয়াঠুঁটি! এত্তো বড় সাহস আপনার! আর আপনি! আপনি তো সার্জন ডাক্তার কম গরুর ডাক্তার বেশি লাগতেছেন। তাইতো এতো মোটা ইনজেকশন নিয়ে আমার সামনে দাঁড়ায় আছেন। আপনারে আমি পুলিশে দেবো! খু/ন করতে চাইছেন আমায়!

পাশে উপস্থিত ডক্টর নার্স সবাই হা হয়ে আছে। আফসানের কান দিয়ে যেন ধোঁয়া বেরুচ্ছে। রাগে দাঁত কটমট করে বললো,

– নার্স! ডক্টর! ধরেন তো এইটারে। ওরে ইনজেকশন লাগাইয়া আমি নিজে থানায় যাইয়া বলবো প্লিজ এরেস্ট মি, নইলে এই কাউয়াঠুঁটিরে আমি সত্যি সত্যি খু/ন করে ফেলবো!


– মিস্টার আদনান সাখাওয়াত, তরুণ বয়সেই অনেক বড় দায়িত্ব পেয়েছেন আপনি। আশা করছি আপনার বাবা জনাব রাশেদ সাখাওয়াতের মতো আপনিও একজন সৎ, দায়িত্বশীল, নিষ্ঠাবান নেতা হয়ে নিজের দায়িত্ব পালন করবেন!

– জ্বি অবশ্যই! আমি এই অবস্থানে আসার জন্যে অনেক সাধনা এবং পরিশ্রম করেছি। আর তীব্র আকাঙ্ক্ষিত অর্জন সবসময় বেস্ট প্রাধান্য পায়, অন্তত আমার ক্ষেত্রে।

– গ্রেট! যেমনটা এখন আছেন শেষ অবধি একইরকম লয়্যাল থাকলে জনগণ কম ভোগান্তিতে পড়বে। আপনার পথচলার জন্যে শুভকামনা ও শুভেচ্ছা রইলো!

বুকের বাম পাশে ডান হাত রেখে মুচকি হেসে আদনান বললো,

– অসংখ্য ধন্যবাদ।

কথা শেষ করেই ল্যাপটপ বন্ধ করে চেয়ারে গা এলিয়ে দেয় আদনান। চোখ বুঁজে আঙ্গুলি দিয়ে কপাল টিপছে। সারাদিন ব্যস্ত সময় আর দীর্ঘক্ষন ল্যাপটপের সামনে বসে থাকায় মাথাটা ধরেছে খুব। একটু পর মাথায় কারো হাতের স্পর্শ পেয়ে চোখ খুলে আদনান।

– মামনি, কোনো কথা না বলে এভাবে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছো যে?

আলতো হেসে আদনানের মাথায় হাত বুলিয়ে আঁখি সাখাওয়াত জিজ্ঞেস করলেন,

– আদা চা খাবি?

– খেতে তো ইচ্ছে করছে।

আঁখি ছেলের হাতে চায়ের কাপ ধরিয়ে দিলেন। আদনান কাপে চুমুক দিতে যাবে তখনই তার স্মৃতিপটে ভেসে উঠে সকালের ঐ বিশ্রি ঘটনাটি। অনেকটা জোরজবরদস্তি করে তার মা বিয়ের জন্যে নিজেরই ফুপাতো বোনকে দেখতে গিয়েছিলো তাকে। অগত্যা ইচ্ছে না থাকা সত্ত্বেও যেতে হয়। কিন্তু যখনই পাত্রী আসে তখনই ঘটে যায় দুর্ঘটনা। তার গায়ের উপর চা ঢেলে দেওয়া হয় আর সেটা যে ইচ্ছাকৃতভাবে করা হয়েছে তা আদনানের চোখ এড়ায়নি। বৃদ্ধা নূরী বেগম পা দিয়ে ধাক্কা দেওয়ার ফলেই ওতসব ঘটে। সব মনে করে আবার মেজাজ তুঙ্গে উঠে যায় আদনানের। একটু বিরক্ত হয়েই মাকে বললো,

– আচ্ছা মামনি! এখনও কি তুমি শেষে ঐ বাড়িতেই আমার বিয়ে দিতে চাইছো?

– হ্যাঁ চাইছি। কেন তুই কি কাউকে পছন্দ করিস?

– নাআআ।

– তাহলে সমস্যা কোথায়?

– লাইক সিরিয়াসলি মামনি! ওমন একটা বর্বর ফ্যামিলির সাথে এখনও সম্পর্ক রাখাই যেখানে অহেতুক সেখানে তুমি নতুন আরেকটা সম্পর্ক গড়তে চাইছো! আর জিজ্ঞেস করছো সমস্যা কোথায়?

আঁখি ছেলের দিকে তাকিয়ে কড়া গলায় বললেন,

– ঐ পরিবারের সাথে কোনো সম্পর্ক গড়তে চাইছি না আমি। শুধু মেয়েটাকে বাঁচাতে চাইছি।



চলবে..

#শুধু_তোমায়_ভালোবেসে
#সূচনা_পর্ব
#সাদিয়া_রহমান_হাফসা

(শব্দসংখ্যা~১৭৩১। উল্লেখ্য স্থান, কাল, চরিত্র এবং ঘটনাসমূহ সম্পূর্ণ কাল্পনিক। যদি গল্পের কোনো থিম কোনো লেখক/লেখিকার প্রকাশিত লেখনী কিংবা কোনো ড্রামার বিশেষ পার্টের সাথে মিলে যায় তবে সেটা সম্পূর্ণ অনিচ্ছাকৃত এবং তার জন্যে লেখিকা ক্ষমাপ্রার্থী। আমার প্রিয় পাঠকের মাঝে যারা #গোপনে_চেয়েছি_তারে এর সিজন ২ এর চাইছিলো তারা #শুধু_তোমায়_ভালোবেসে কেই সিজন ২ ধরে নিতে পারেন। পুরনো চরিত্রগুলোর সাথে কিছু নতুন চরিত্রেরও দেখা মিলবে। কেমন লাগলো জানাতে ভুলবেন না যেন! ভুল-ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। হ্যাপি রিডিং💙💜)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here