হৃদকোঠোরে_রেখেছি_তোমায়🖤(৩) #Maisha_Jannat_Nura (লেখিকা

0
615

#হৃদকোঠোরে_রেখেছি_তোমায়🖤(৩)
#Maisha_Jannat_Nura (লেখিকা)

(৬)
সাদিক দ্রুত পায়ে গাড়ির কাছে যেতে শুরু করে সেইসময় ওর ফোন বেজে উঠে। প্যন্টের পকেটে হাত দিয়ে ফোনটা বের করতেই দেখে ফোন স্ক্রিনে সন্ধ্যা ম্যডাম নামে সেইভ করা নাম্বার থেকে কল এসেছে। সাদিক ওর ভ্রু যুগল কিন্ঞ্চিত কুঁচকে নিয়ে কল রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে সন্ধ্যা বললো….

—“মেজো ভাইয়া কি আপনার সাথেই আছেন?”

—“জ্বি , ম্যডাম। স্যার তো আমার সাথেই আছেন। কোনো বিশেষ দরকার পড়েছে কি?”

—“হ্যা , অনেক জরুরী দরকার। আজ বড় ভাইয়ার বিয়ে হওয়ার কথা ছিলো তো তরুনিমা ভাবীর সাথে কিন্তু এখানে বড় ঝা*মে*লার সৃষ্টি হয়ে গিয়েছে। যার ফলে বড় ভাইয়ার সাথে তরুনিমা ভাবীর বিয়ে ভে*ঙে গিয়েছে। এখন এই স*ম*স্যা সমাধান করার জন্য দাদীমা যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব মেজো ভাইয়াকে বাসায় ফিরতে বলেছেন। আপনি মেজো ভাইয়াকে বলুন আমার বলা কথাগুলো।”

—“ঠিক আছে ম্যডাম , আমি স্যারকে এক্ষুনি বলছি।”

—“হুম।”

এই বলে সন্ধ্যা কল রেখে দেয়। সাদিক ফোনটা পকেটে রেখে বললো….

—“সম*স্যার উপর সম*স্যা লেগেই আছে। না জানি বাসায় আবার কোন সম*স্যার সৃষ্টি হলো।”

এই বলে সাদিক আবারও উল্টোপথে হাঁটা ধরে কুশলের সামনে এসে দাঁড়ায়। এতোসময় পর সাদিককে গাড়ি ছাড়াই আসতে দেখে কুশল তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিয়ে সাদিককে দেখে প্রশ্ন করলো….

—“কি হয়েছে সাদিক?”

সাদিক বললো…..
—“স্যার , তরুনিমা ম্যডামের সাথে কনক স্যারের বিয়ে ভে*ঙে গিয়েছে আর সেই কারণে বাসায় বড় ধরণের ঝামে*লার সৃষ্টি হয়েছে। তাই এই সম*স্যার সমাধান করার জন্য দাদীমা যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব আপনাকে বাসায় ফিরতে বলেছেন।”

কুশল শান্ত স্বরে বললো…
—“আগে চাচাকে নিয়ে মেম্বারের বাসাটা দর্শন করে আসি তারপর বাসায় ফিরবো। তোমাকে যেই কাজটি দিয়েছিলাম তা সম্পন্ন করো সাদিক।”

পারিবারিক সমস্যার কথা শুনেও কুশলকে নরমাল থাকতে দেখে অবাক মুখশ্রী করে ওর থেকে বেশ খানিকটা দূরে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছে রশিদ, খালেক, আমজাদ নামের তিনজন কর্মচারী। সেইসময় রশিদ ফিসফিসিয়ে বললো.…..

—“এতোগুলো বছর ধরে স্যারের সাথে কাজ করছি, উঠা-বসা করছি কিন্তু কখনও ওনাকে কোনো বিষয় নিয়ে চিন্তিত বা ভী*ত হতে দেখি নি। সব বিষয়েই স্যার নিজের মনের ভিতর এতো কন*ফি*ডেন্স ও শ*ক্তি কিভাবে যে বজায় রাখেন তা ভেবে বের করা মুশ*কিল।”

রশিদের পাশ থেকেই খালেক বললো….
—“হুম ঠিক বলেছো ভাই।”

কিছুসময় পরই সাদিক একটা ব্লাক বিএমডব্লিউ গাড়ি এনে কুশলের সামনে দাঁড় করায়। কুশলের ডান হাতের পার্শেই দাঁড়িয়ে থাকা একজন গার্ড এগিয়ে আসতে নিলে কুশল হাত উঠিয়ে তাকে থামিয়ে দেয়।অতঃপর নিজেই গাড়ির দরজা খুলে চাচাকে পিছনের সিটে বসিয়ে দিয়ে নিজে ড্রাইভিং সিটের পাশে থাকা সিটটিতে বসে পড়ে। অতঃপর সাদিক গাড়ি স্টার্ট করে। কুশলের গাড়ির সামনে ও পিছনে আরো ২টি গাড়ি ভর্তি গার্ডসরাও যাচ্ছে মেম্বার এর বাসার উদ্দেশ্যে।

কিছুসময়ের মধ্যেই ওরা মেম্বার এর বাসার সামনে এসে উপস্থিত হয়। সব গার্ডসরা গাড়ি থেকে নেমে বাসার চারপাশ ঘেরাও করে ফেলে। কুশল গাড়ি থেকে নেমে গাড়ির পিছনের দরজা খুলে দিয়ে বললো…

—“চাচা , নামুন।”

চাষিটি গাড়ি থেকে নেমে কুশলের সামনে দাঁড়িয়ে বললেন….

—“বাবা , ঐ মেম্বারের ছেলেটা একদমই ভালো মানুষ না। আমার মাইয়াটার স*র্ব*নাশ করছে, মাইয়াটা এখন হাসপাতালে জীবন-মৃ*ত্যু*র সাথে ল*ড়া*ই করতেছে৷ তুমি ঐ উ*শৃং*খ*ল ন*ষ্ট মানসিকতার কা*পুরুষটাকে এমন কঠিন শা*স্তি দাও যেনো ওর শা*স্তি দেখে গ্রামে বসবাসরত বাকি ব*খা*টে , উ*শৃং*খ*ল কা*পুরুষগুলোর মনেও ভ*য়-ভি*তীর সৃষ্টি হয়।”

কুশল বললো…
—“ঠিক আছে, চাচা এখন ভিতরে চলুন।”

অতঃপর কুশল চাষিটিকে নিয়ে মেম্বার এর বাসার গেইট খুলে ভিতরে প্রবেশ করে। চাষিটিকে আঙিনায় দাঁড় করিয়ে কুশল ওদের ঘরের দরজার সামনে এসে দাঁড়ায়। সাদিক কুশলের আরেক পার্শে এসে দাঁড়াতেই কুশল বললো……

—“সাদিক , ডাকো মেম্বার সাহেবকে।”

সাদিক মেম্বার এর রুমের দরজায় কড়া নাড়তে নাড়তে উচ্চস্বরে মেম্বারকে ডাকতে শুরু করে….

—“মেম্বার সাহেব…ও মেম্বার সাহেব…দরজা খুলুন…আপনার সাথে বিশেষ দরকার নিয়ে সাক্ষাৎ করার জন্য কুশল চৌধুরী স্যার এসেছেন।”

খাবার রুমে মেঝেতে স্ত্রী আমেনা বেগম ও একমাত্র ছেলে মুরাদ হোসেন এর সাথে বসে মহসিন মেম্বার রাতের খাবার খাচ্ছিলেন। সেইসময় বাহির পথের দরজায় কড়া নাড়ার আওয়াজের পাশাপাশি কুশল চৌধুরী এসেছেন এমনটা শুনে মহসিন অর্ধেক খাবার থাকা প্লেটেই হাত ধুঁয়ে দ্রুত উঠে এসে দরজা খুলে দিতেই কুশল চৌধুরী আর তার পারসোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট সাদিককে দরজার বাহিরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে জোরপূর্বক নিজের মুখে হাসি ফুটিয়ে বললেন…..

—“স্যার , আপনি! কোনো প্রয়োজন থাক……..

মহসিন মেম্বারকে পুরো কথা শেষ করতে না দিয়ে কুশল তাকে পাশ কাটিয়ে রুমের ভিতর প্রবেশ করে। কুশলকে রুমে দেখা মাত্র আমেনা বেগম উঠে ভিতরের রুমে চলে যান। মুরাদ সেখানেই দাড়িয়ে অবাক দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে আছেন কুশলের দিকে। কুশল কোনো কথা না বলে দ্রুত পায়ে মুরাদের কাছে গিয়ে নিজের বাম হাত দিয়ে মুরাদের কলার্ট শক্ত ভাবে ধরে ওকে টানতে টানতে রুমের বাহিরে আনতে শুরু করে। কুশলের এমন কাজে মহসিন অবাকের চরম পর্যায়ে পৌঁছে গিয়ে কুশলের পিছন পিছন রুম থেকে বের হয়ে বললেন…..

—“স্যার….স্যার আমার ছেলেটারে এভাবে টানতে টানতে বাহিরে আনলেন কেনো! কি করছে আমার ছেলে! স্যার ওরে ছাইড়া দেন।”

কুশল মুরাদকে আঙিনার মাঝে এনে কলার্ট ছেড়ে ধা*ক্কা দিতেই মুরাদ আঙিনার উপর উ*পুর হয়ে পড়ে যায়। অতঃপর কুশল আঙিনার উপর পরে থাকা একটা লাঠি হাতে উঠিয়ে নিয়ে মুরাদকে মা*র*তে শুরু করে। কুশলের করা প্রতিটি আ*ঘা*তে আ*ঘা*তে মুরাদ জোরে জোরে আ*র্ত*নাদ করতে শুরু করে। মহসিন এগিয়ে আসতে নিলে সাদিক তাকে আটকে দিয়ে বললো….

—“আপনার ছেলে আজ অত্যন্ত ঘৃ*ণ্য একটি কাজ করেছে তাই ওর ক*ঠিন থেকে ক*ঠিন*তম শা*স্তি প্রাপ্য। আপনি এখন স্যারের কাছে যাবেন না।”

মহসিন উচ্চস্বরে প্রশ্ন করলেন….
—“কি করছে আমার ছেলে?”

সেইসময় চাষিটি মেম্বারের সামনে এসে দাঁড়িয়ে বললেন….
—“আপনার কা*পুরুষ ছেলেটা আমার বাচ্চা মেয়েটার স*র্ব*নাশ করে ওরে এতোটাই ক্ষ*ত-বি*ক্ষ*ত করে দিয়েছে যে আমার মেয়েটা এখন হাসপাতালের বিছানায় জীবন-মৃ*ত্যু*র সাথে ল*ড়া*ই করছে মেম্বার সাহেব। এই ক*’পুরুরষের কোনো মাপ হইবো না।”

চাষির কথা শুনে মহসিন স্ত*ব্ধ হয়ে যান। বাহির থেকে মুরাদের আ*র্ত*না*দ শুনতে পেয়ে মুরাদের মা আমেনা বেগম আর ঘরের ভিতর থাকতে পারলেন না। দ্রুত পায়ে ঘর থেকে বেড়িয়ে আসতেই আঙিনার মাঝে কুশলকে মুরাদের শরীর লাঠিকা*ঘা*ত করতে দেখে আমেনা বেগম ছুটে কুশলের পায়ের কাছে বসে পড়ে কাঁদতে কাঁদতে অনু*রোধ করলেন…..

—“বাবা , আল্লাহর দো*হাই লাগে আমার পোলাটারে আর মা*ই*রো না। আমার পোলাটার শরীর ফা*ই*টা র*ক্ত ঝ*ড়*তাছে। আর মা*ই*রো বাবা। দয়াকইরা এই মায়ের অনু*রোধ রাখো বাবা, আমার পোলাটার জীবন ভি*ক্ষা চাইতাছি তোমার কাছে বাবা।”

আমেনা বেগম এর কথাগুলো কুশলের কান পর্যন্ত হয়তো পৌঁছায় তখনি যখন তার চোখের পানি কুশলের পায়ের উপর পড়তে শুরু করে। কুশল তৎক্ষনাৎ মুরাদকে মা*রা বন্ধ করে লাঠিটা অন্যপাশে ছুঁ*ড়ে ফেলে দিয়ে আমেনা বেগমের থেকে দূরে সরে দাঁড়ায়। আমেনা বেগম মুরাদের কাছে গিয়ে ওর মাথাটা নিজের কোলের উপর নিয়া কাঁদতে কাঁদতে নিজের শাড়ির আঁচল দিয়ে ওর শরীরের র*ক্ত গুলো মুছতে শুরু করেন। মুরাদ য*ন্ত্র*ণায় মুখ দিয়ে গো*ঙা*নির মতো শব্দ বের করছে শুধু। মহসিন সাদিকের বাঁ*ধা ছাড়িয়ে ছুটে মুরাদের কাছে এসে বসে মুরাদের শারীরিক অবস্থা খা*রাপ দেখে অনু*রো*ধের স্বরে কুশলকে বললেন….

—“স্যার আমার ছেলেটা অনেক বড় অ*প*রাধ করে ফেলছে আমি মানছি। দয়াকরে ওরে প্রাণে মা*র*বেন না। আমার ছেলেটার অনেক য*ন্ত্র*ণা হচ্ছে। ওর শরীর ফা*ই*টা গেছে আপনার মা*ই*রে*র আ*ঘা*তে। অনেক র*ক্ত ও ঝড়তাছে। দয়াকরে আমার ছেলেটারে নিয়া হাসপাতালে যাইতে দেন।”

কুশল স্বাভাবিক কন্ঠে বললো….
—“ইচ্ছে তো করছিলো এই কা*পুরুষটাকে মা*র*তে মা*র*তে মে*রে ফেলি। কিন্তু একজন মায়ের আকূল অনু*রোধ আমাকে এই কাজটি করতে দিলো না। তবে ভাববেন না আপনার ছেলের শা*স্তি এতো অল্পতেই শেষ হয়েছে। এই মুহূর্তে ওকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারবেন কিন্তু ১ সপ্তাহ পর আবারও আপনার বাড়ির আঙিনাতে বিচারসভা বসবে। তখন এর আসল শা*স্তি*র ব্যবস্থা পুরো গ্রামবাসীর সামনে হবে। কোনো রকম চালাকি করে নিজের ছেলেকে কোথাও লুকিয়ে রাখার চেষ্টাও করবেন না। কারণ আপনাদের উপর আগামী ৭দিন আমার গার্ডদের ক*ড়া নজর থাকবে। সাদিক, একে হাসাপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করো।”

সাদিক মুরাদের কাছে এসে দাঁড়িয়ে মহসিনের সাহায্য নিয়ে মুরাদকে উঠিয়ে বাড়ির বাহিরে নিয়ে যায়। আমেনা বেগম ও ওদের পিছন পিছন চলে যান। চাষিটি কুশলের সামনে এসে দাঁড়াতেই কুশল বললো….

—“চাচা , আপনি কোনো চিন্তা করবেন না। আগামী ১সপ্তাহের মধ্যে আপনার মেয়ে সুচিকিৎসা পেয়ে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবে আর তারপর ওর সামনে ওর সাথে হওয়া অ*ন্যা*য়ের বি*চা*রও হবে।”

চাষিটি ছলছল দৃষ্টি নিয়ে বললেন…..
—“তোমার মতো ছেলে যেনো প্রত্যেক ঘরে ঘরে জন্ম নেয় বাবা।”

অতঃপর কুশল চাষিটিকে নিজের বাসায় পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেয়। এরপর সাদিককে সাথে নিয়ে শহরে নিজের বাসায় ফেরার উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পড়ে কুশল।

২ঘন্টার পথ অতিক্রম করে অবশেষে কুশলের গাড়ি চৌধুরী মেনশনের ভিতরে প্রবেশ করে। কুশল গাড়ি থেকে নেমে সামনের দিকে অগ্রসর হতে শুরু করে। চারপাশে চোখ বুলাতেই দেখে কোনো আত্নীয়-স্বজনরা নেই। বিয়ের বাড়ির পরিবেশ কেমন থ*ম*থ*মে রূপ নিয়ে আছে। কুশল চৌধুরী মেনশনের মূল দরজা দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করতেই দেখে চৌধুরী ও সিকদার পরিবারের সকল সদস্যরা ড্রয়িং রুমের সোফায় বসে আছেন। সন্ধ্যা কুশলকে দেখা মাত্রই উচ্চস্বরে বললো….

—“দাদীমা , মেজো ভাইয়া এসেছেন।”

সন্ধ্যার কথা শুনে সকলেই কুশলের দিকে তাকায়। কুশল স্বাভাবিক মুখশ্রী করেই নিজের জন্য বরাদ্দ করা সোফায় এসে বসে। সেইসময় সাগরিকা কিছুটা ক*ঠো*র গলায় কুশলকে উদ্দেশ্য করে বললেন….

—“তোমাকে আরো ৪ঘন্টা পূর্বে বাসায় ফিরতে বলা হয়েছিলো কুশল দাদুভাই। গ্রামে বসবাসরত সকলের স*ম*স্যা সমাধানে তুমি এতোটাই ব্যস্ত থাকো যে পারিবারিক সম*স্যা গুলোকে কোনোরূপ তো*য়া*ক্কা করো না।”

কুশল ওর শার্টের দুই হাতের কবজির বোতাম খুলে ভাঁজ করতে করতে কনুই পর্যন্ত আনতে শুরু করে। সাগরিকার কথাগুলো যে কুশলের উপর কোনো প্রভাব ফেলতে পারে নি তা কুশলকে দেখে উপস্থিত সকলেই বুঝতে পেরেছেন। তাই সাগরিকা একবার হ*তা*শার নিঃশ্বাস ফেললেন। পরক্ষণেই তারেক বললেন….

—“বড় মা , কুশল বাবা অনেক সচেতন ও সু-বুদ্ধিসম্পন্ন ছেলে। যেই কাজটি অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ কুশল বাবা আগে সেই কাজটি শেষ করে পরে বাকি কাজগুলোর দিকেও ফো*কাস করে। তাই এখন এসব বলে আর সময় ন*ষ্ট না করে আপনি বরং আসল বিষয় নিয়ে কথা বলুন।”

তারেকের কথায় সম্মতি জানায় উপস্থিত বাকিরাও। সাগরিকা শান্ত স্বরে সন্ধ্যায় হওয়া সকল ঘটনা কুশলকে খুলে বললেন। কুশল এখনও শান্ত থেকে চোখ বন্ধ করে ওর ঘাড়ে এক হাত রেখে ঘাড় এপাশ-ওপাশ নাড়াচ্ছে। কিছুসময় পর সাগরিকা আবারও কুশলকে উদ্দেশ্য করে বললেন…..

—“চৌধুরী বংশ ও সিকদার বংশের সম্মান এবং সম্পর্ক রক্ষা করার জন্য তোমাকে তরু দিদিভাইয়ের সাথে আজই বিবাহ বন্ধনে আ*ব*ব্ধ হতে হবে। এ ছাড়া আর কোনো সমাধান আমাদের কারোর কাছে নেই।”

কুশল সোজা হয়ে বসে শান্ত স্বরে বললো….

—“ঠিক আছে , এই বিয়ে নিয়ে আমার কোনো আপত্তি নেই।”

কুশলের সম্মতি পেয়ে উপস্থিত সকলের কলিজায় যেনো পানি এসে গিয়েছে। সাগরিকা বললেন….

—“কিন্তু তরু দিদিভাই তোমাকে বিয়ে করবে না বলে সেই সন্ধ্যা থেকেই নিজেকে ঘর*ব*ন্দী করে রেখেছে।”

—“তোমরা বিয়ের আয়োজন করো। আজ আর নতুন কোনো মেহোমানদের ডাকার প্রয়োজন নেই। কাজী সাহেবকে ডেকে পাঠাও। পরিবারের সকলের উপস্থিতিতেই বিয়ে হবে।”

এই বলে কুশল সোফা ছেড়ে উঠে সিঁড়ি বেয়ে দোতালায় চলে যায়। সকলে কুশলের যাওয়ার পানে তাকিয়ে রয়।
সাবরিনা বললেন….

—“আমার ছেলে তো বিয়ে করার জন্য রাজি হয়েছে। এবার আপনাদের মেয়েকে কিভাবে রাজি করাবেন আপনারা?”

তারেক স্বাভাবিক কন্ঠেই বললেন….
—“কুশল বাবার বলা শেষ কথা শুনে বুঝতে পারলাম আমার মেয়ের বিয়ের জন্য রাজি হতে খুব বেশি সময় লাগবে না।”

চলবে ইনশাআল্লাহ……….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here