#তোমার_হতে_চাই ২
part : 11
writer : Mohona
.
নীড় : লালঝুটি কাকাতুয়া!
নীড় হাসলো।
নীড় : আল্লাহ নিজেই হয়তো চান তুমি আমি এক হই। ওয়েট আমি এখনই ফ্রেশ হয়ে আসছি।
নীড় ফ্রেশ হয়ে এলো। ড্রেসিং টেবিলের ওপর ও কার্ডের মতোই ১টা কার্ড । নীড় সেটা হাতে নিলো।
নীড় : এটাতে নাইন লেখা। কিন্তু আমার তো এটা নয়। তারমানে এটা কাকাতুয়ার।। কিন্তু ২টা একই নাম্বারের কার্ড কিভাবে? ১মিনিট আমার কার্ডে উল্টাে দিকে তো বাংলাতেও নাম্বাক লেখা ছিলো। এটাতেও হবে। আরে এটা তো ছয় নম্বর । তারমানে ম্যাডাম সিক্সকে নাইন ভেবেছে । যাক ভালোই হয়েছে। ধন্যবাদ আল্লাহ । এতোকিছু যখন করেছো তখন আরেকটু করো। আমার বউ করে দাও ওকে। ওকে ছারা বাঁচতে পারবোনা। একটা পথ বের করে দাও।
নীড় মেরিনের কপালে চুমু দিয়ে ঘুমিয়ে পরলো।
.
সকালে…
মেরিনের ধাক্কায় নীড় নিচে পরে গেলো।
নীড় : এই মেয়ে জীবনেও শুধরাবেনা।
নীড় উঠে এসে আবার মেরিনের পাশে শুয়ে পরলো। মেরিনকে দেখতে লাগলো । মেরিন নরেচরে উঠলো। চোখ মেলল নীড়কে দেখতে পেলো।
নীড় : হাই।
মেরিন আবার চোখ বন্ধ করলো। নীড় ভালোমতোই জানে এখন বিনা মেঘে ব*জ্রপাত হতে চলেছে । তাই ও রেডি হয়ে রইলো। মেরিন চোখে মেলল এরপর মারলো চিল্লানি। নীড় মেরিনের মুখ চেপে ধরলো।
নীড় : চিল্লানোর ম*হারোগ আছে তোমার। থামো।
মেরিন : তুমি আমার রুমে কি করছো?
নীড় : ম্যাডাম এটা আমার রুম ।
মেরিন : একদম বা*জে কথা বলবেনা। এটা তোমার রুম কি করে হতে পারে? আমার কার্ডে নাইন লেখা ছিলো।
নীড় : সেতো আমার কার্ডেও লেখা। সামনে নাইন পে়ছনে নয়।
মেরিন : আমারটাতেও আছে।
নীড় : তোমারটাতে নয় লেখা নেই।
মেরিন : আছে।
নীড় : নেই।
মেরিন : বললামনা আছে ।
নীড় : না থাকলে কি দিবে?
মেরিন : বাবাজীকা ঠুল্লু।
বলেই মেরিন উঠে কার্ডটা হাতে নিলো।
মেরিন : এই দেখো নাইন লেখা।
নীড় : এবার নয় লেখা দেখাও।
মেরিন : এই দে… অ্যা।
নীড় : এটাতে ছয় লেখা। তাইতো?
মেরিন :ছয় কেনো লেখা? তুমি নিশ্চয়ই নয়কে ছয় করেছো।
নীড় : সেটা আমি কেনো করবো?
মেরিন : সেটা তুমিই ভালো জানো। ইচ্ছা করে তুমি করেছো।
নীড় : এক্সকিউজ মি তোমার সাথে রুম এন্ড বেড শেয়ার কেনো করতে যাবো আমি? রুম এন্ড বেড শেয়ার করতে হলে আমি হিয়ার সাথে করবো। ও আমার ফিওনসে। বয়সটাও একটু কম। ওর সাথে রোম্যান্স করার মজাই আলাদা। সো তোমার নয়কে ছয় বানানোর আমার কোনো ইচ্ছা নেই। বরং তুমিই নয়ছয়ের বাহানা করে আমার রুম , আমার বেড দখল করেছো।
মেরিন : ক্ষীরবাদুরের বাচ্চা।
বলেই মেরিন হাতের সামনে যা যা পেলো সব ছুরতে লাগলো।
নীড় : অ্যা… করেকি করেকি।
মেরিন : আই উইল কি*ল ইউ।
বলেই মেরিন ছুরতে লাগলো। নীড়ও ছুর*তে লাগলো মেরিনের দিকে । ছু*রাছুরি করতে দুজন বাহিরে বেরিয়ে এলো । যেহেতু আজ সন্ধ্যায় এনগেজমেন্ট তাই ডেকোরেশনের জিনিসপত্র ছরিয়ে ছিটিয়ে আছে। নীড়-মেরিন সেগুলো দিয়েও যু*দ্ধ করছে। ঝ*গড়া করছে। হাঙ্গামা শুনে সবাই ছুটে এলো। এদিকে রবিন আর ওদিকে নীলিমা এখনো আসেনি। সব শেষে আসলো। সবার পেছনে দারানো ওরা। না চাইতেও নিলা হেসে দিলো।
তিন্নি : বড় ভাবি এটা আমাদের গুরুগম্ভীর নীড় ভাইয়া?
ইশিতা : কি দেখছি এসব?
নিলা : এগুলো দেখা শেষ। রোজ হতো এমন যু*দ্ধ।
হিয়া তো দেখছে আর জ্ব*লছে।
কবির এগিয়ে এলো।
কবির : কি হচ্ছে কি এসব?
মেরিন : দেখোনা বাবা ও নয়ছয় করেছে?
নীড় : ছোটবেলার মতো মিথ্যেকুরি লালোঝুটি কাকাতুয়া কোথাকার? বাবা ওর কথা একদম বিশ্বাস করবেনা। ও নয়ছয়ের বাহানা করেছে।
কবির : ম…
মেরিন : ওয় আমার বাবা আমার কথা শুনবে। বুঝেছো ক্ষীরবাদুর?
নীড় : আমার বাবা আমার কথা শুনবে…হ্যা। বাবা আমারও। আমার কথা শুনবে।
কবির : আ…
মেরিন : আমার বাবা।
নীড় : আমার বাবা …
মেরিন : আমার বাবা…
নীড় : আমার বাবা…
কবিরের এক হাত ধরে মেরিন টানছে অন্য হাত ধরে নীড় টানছে । কথা বলার সুযোগ তো অনেক আগেই হারিয়ে। এখন বেচারা অবস্থা খারাপ। না চাইতেও বাকীদের মুখে হাসি চলে এলো। ওদের মাথা থেকে অতীত যেনো বেরিয়ে গিয়েছে।
রবিন মনেমনে : এমন বাবাইকে গত ৫বছরে আমি খুজে পাইনি…
নীলিমা মনেমনে :এমন নীড়কে ৫বছরের মধ্যে দেখিনি…
নিহাল : আচ্ছা তাহলে আমি কার বাবা?
মেরিন : আমার বাবা।
নীড় : আমার বাবা।
মেরিন : আমার বাবা।
নীড় : আমার বাবা।
বলেই নীড় গিয়ে নিহালের হাত ধরলো।
নীড় : আমার বাবা।
মেরিনও গিয়ে নিহালের অন্য হাত ধরলো।
মেরিন : আমার বাবা।
‘আমার বাবা’ যুদ্ধ করতে করতে মেরিনের চোখ পরলো নীলিমার দিকে। ওর ঠিক পাশেই রবিন। ওদের দুজনের মুখের এক্সপ্রেশন বাকীদের মতো নয়। মেরিন নিহালের হাত ছেরে দিলো। দুদিক দিয়ে দুজন টানছিলো নিহালকে। তাই মেরিন ছেরে দেয়ায় নিহাল নীড়ের দিকে ঝুকে গেলো নীড় পরে গেলো।
নীড় : স্টু*পিড কাকাতুয়া।
মেরিন ওখান থেকে চলে গেলো। নীড় উঠে দারালো।
নীড় : লালঝুটি কাকাতুয়ার বাচ্চির জন্য গায়ে ময়লা লেগে গেলো।
হিয়া ছুটে এসে নীড়ের শরীর থেকে ধু*লাবালু ঝেরে দিতে লাগলো। নীড়ের চোখ পরলো ওর মায়ের দিকে । প্রথমে মেরিনকে ইচ্ছা করে রাগালেও এরপর যা হয়েছে তা স্বাভাবিকভাবে অভ্যাসগত কারনেই করেছে।
.
মেরিন পুকুরে পা ভিজিয়ে বসে আছে। ছোটছোট পাথর ফেলছে।
মেরিন : লালঝুটি কাকাতুয়া… তুই আর ছোট নেই। ক্ষীরবাদুর উ*স্কে দিলো আর তুইও ক্ষে*পে গেলি। ভুলে গিয়েছিস ক্যাম্পিং এ কি হয়েছিলো? ছিঃ ছিঃ ছিঃ … ভাবলেই নিজের ওপর নিজের ঘৃনা জাগে। নিজেকে অপ*বিত্র মনে হয়। পুরো পরিবার আছে এখানে। হিয়া আছে। কোন ফিওনসে মেনে নিবে এসব? সবথেকে বড়কথা মামনি… মামনি তোকে …
তখন রবিন এসে পাশে বসলো।
রবিন : সবথেকে বড় কথা মামনি নয়।
মেরিন মামার দিকে তাকালো।
রবিন : সবথেকে বড়কথা তালাক এবং নীড়ের ধো*কা।
মেরিন : সরি মামা।
রবিন : ডোন্ট বি বাবাই। আজকে যে বাবাইকে দেখেছি সেই বাবাইকে গত ৫টা বছর ধরে মিস করেছি। লাকটা দেখো যারজন্য আমার বাবাইকে হারিয়েছিলাম তারজন্যই আবার ফিরে পেলাম।
মেরিন : সরি মামা। আমি জানি এসব ইলি*গাল।
রবিন : আমাদের ধর্মে কিছু বিধিনিষেধ আছে। তা*লাক হবার পর আবারো সেই ছেলেমেয়েদেরই মেলামেশা অ*বৈধ হয় তা ঠিক। কিন্তু এরমানে এই নয় যে দেখা হলে কথা বলা যাবেনা। তাই আজকের জন্য লজ্জিত হওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই বাবাই। যেহেতু ভাগ্যক্রমে ওদের পরিবারের সাথেই আবার সম্পর্ক গড়তে হচ্ছে তখন নীড় তুমি তো দূরের কথা আমরা কেউই এরিয়ে চলতে পারবোনা। অন্তত এই বিয়েটা শেষ না হওয়া পর্যন্ত তো নাই। তাই অ*পরাধবোধের কোনো কারন নেই। বুঝেছো?
মেরিন : হামম।
রবিন মেরিনের মাথায় হাত রাখলো। মাথায় চুমু দিলো।
রবিন : মামা সবসময় তোমার সাথে আছে বাবাই। মামা তোমাকে ট্রাস্ট করে। সবথেকে বেশি।
মেরিন : যদি কখনো জানো যে আমি তোমার বিশ্বাস ভে*ঙেছি তাহলে কি করবে?
রবিন হাসলো ।
রবিন : কিছুই করবোনা। কারন গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি যে সেই দিন কখনো আসবেনা।
মেরিন : মনে করো আসলো।
রবিন : আসবেনা । আর তাই আমি মনে করতেও চাইনা। আমার বাবাই আমার বিশ্বাস ভাঙতে পারেনা। নেভার। পরে যেতে পারো। তুমি কিন্তু সুইমিং জানোনা। চলো।
মেরিন : একটু বসি মামা! ভালো লাগছে।
রবিন : হামম।
রবিন চলে গেলো।
মেরিন মনেমনে : আমি যে তোমার বিশ্বাস ভেঙে বসে আছি মামা… তোমাকে যে সত্যিটা জানাতেও ভয় করে। জানিনা কি হবে তুমি সত্যিটা জানলে । আমি খুব খারা*প মামা। তোমার বাবাইটা সত্যিই খুব খারা*প।
.
নীলিমা : আমি কিছু জিজ্ঞেস করেছি নীড়।
নীড় : তুমি তিলকে তাল বানাচ্ছো মামনি।
নীলিমা : মোটেও না। একটুও ভাবলেনা হিয়ার কেমন লাগতে পারে? ওর কতোটা ক*ষ্ট লাগতে পারে।
নীড় : আই ডোন্ট কেয়ার মামনি। আর তারথেকেও বড়কথা আমি এমন কিছু করিনি যে হিয়ার ক*ষ্ট লাগবে। যে ঘটনা ঘটেছে সেটা আমার লালঝুটি কাকাতুয়ার ঘটবেই। ইটস কমন।
নীলিমা : তুমি ভুলে যাচ্ছো যে তোমাদের ডি*ভোর্স হয়ে গিয়েছে।
নীড় : ভুলিনি আমি। আর চাইলে়ও এটা ভুলতে পারবোনা আমি। এই তিক্ত সত্যিটা ভোলা সম্ভবনা ।
নীলিমা : তিক্ত সত্য! তোমাদের ডি*ভোর্সটা তোমাদের কাছে তিক্ত সত্য!
নীড় : অফকোর্স।
নীলিমা : যা বললে তা আবার বলো।
নীড় : মামনি… তুম…
নীড় নীলিমার দিকে ঘুরে দেখে চোখ মুখ উল্টে নীলিমার যায় যায় অবস্থা।
নীড় : মামনি… মামনি। ও মামনি…
নীড়ের এমন ডাক শুনে মেরিন ছুটে এলো।
মেরিন : মামনি… কি হয়েছে মামনির?
নীড় : জ্ঞান হারিয়েছে।
দুজন মিলে নীলিমাকে শুইয়ে দিলো।
নীড় : বাবা… প্লিজ কাম।
নীড়ের ডাকে নিহাল , নিহারিকা , হিয়া ছুটে এলো ।
নিহাল : নীলি…
নীড় নীলিমার পা মাসাজ করছে। নিহারিকা গিয়ে অন্য পা মাসাজ করছে। নিহাল গিয়ে এক হাত ধরলো।
হিয়া : দেখি সরো।
মেরিন : কেনো?
হিয়া : হাত মাসাজ করবো।
মেরিন : তো করোনা।
হিয়া : তুমি না উঠলে করবো কি করে?
মেরিন কথা না বারিয়ে উঠে গেলো। নীড় মাসাজ করতে করতে রে*গে হিয়ার দিকে তাকালো। মেরিন পানির গ্লাস নিয়ে এলো।
নীড় : পানির গ্লাস নিয়ে ঘুরছো কেনো?
মেরিন : তোমার মাথায় ঢালবো বলে।
নীড় : সাহস থাকলে ঢেলে দেখাও।
মেরিন : তুমি আমার সাহসের পরীক্ষা নিচ্ছো ?
নীড় : হ্যা নি…
নিহারিকা : গাইস ফুপ্পি।
মেরিন : ওহ মামনি।
হিয়া : খবরদার মামনি ডাকবেনা মামনিকে।
মেরিন যেনো শুনতেই পায়নি। ও নীলিমার চোখে মুখে পানি ছিটিয়ে দিলো।
হিয়া : কি করছো কি?
মেরিন : সাপের খেলা দেখাচ্ছি।
কয়েকবার পানি ছিটানোর পর নীলিমার জ্ঞান ফিরলো।
নীড় : মামনির জ্ঞান ফিরেছে। দেখো দেখো।
মেরিন : সেটা আমরা দেখতেই পারছি ডক্টর বিম্বো।
নীড় : তুমি আমাকে বিম্বো বললে কার সাহসে?
মেরিন : নিজের পার্সোনাল সাহসে।
নীড় : ঝ*গড়া করা ছারা।
মেরিন : না নেই। তু…
নীলিমা : কি হচ্ছেটা কি এখানে?
হিয়া : দেখোনা আন… মামনি এই মেয়েটা গায়ে পরে আমার ক্ষীরবাদুরের সাথে ঝ*গড়া করছে।
নীড়-মেরিন : ওয়… তোমার ক্ষীরবাদুর মানে?
সবাই চমকে উঠলো।
মেরিন : দেখো হিয়া টিয়া তুমি ক্ষীরবাদুরকে আমার আই মিন তোমার নীড় , তোমার বর্ষন , তোমার কলিজা কিডনী , ফুসফুস, হার্ট , বাবু , সোনা , ধনিয়া , পুদিনা , আদারসুন , দই মিষ্টি যা ইচ্ছা ডাকো। কিন্তু ক্ষীরবাদুর না। আর তোমার ক্ষীরবাদুর তো নাই। ক্ষীরবাদুর ডাকে কেবল আমার অধিকার।।
নীলিমা : আমার ছেলের ওপর তোমার কোনো অধিকার নেই। বুঝতে পারছো তুমি?
মেরিন : না। আই মিন সেটা নতুন করে বোঝার কি আছে? আমি তো জানি সেটা। আমি জানি ক্ষীরবাদুরের ওপর আমার কোনো অধিকার নেই। কিন্তু এই ডাকটার ওপর আছে।
নীলিমা : এই মেয়েকে এখনি চলে যেতে বলো। ওর মুখটাকে আমার আর সহ্য হচ্ছেনা।
মেরিন : ওকে ফাইন । আমি এই আমার মুখটা ঢেকে নিলাম।
নীলিমা : এই মেয়ে তুমি এক কথা একবারে বোঝোনা?
মেরিন : না। ক্ষীরবাদুর মামনি হুট করে এমন অ*জ্ঞান হলো কেনো?
নীলিমা : তুমি আমার ছেলেকে কোনো প্রশ্ন করবেনা।
মেরিন : মামনি আমি এখন একজন ডক্টরকে প্রশ্ন করছি। বলো ক্ষীরবাদুর।
নীড় এতোক্ষন ধরে লক্ষ্য করলো যে নীলিমা মেরিনের সাথে কথা কাটাকাটি ঠিকই করছে কিন্তু ওর চোখেমুখে রাগ নেই। নিহালও তাই খেয়াল করলো।
মেরিন : বলছোনা কেনো…📢।
নীড় : আস্তে। মামনি মনেহয় রেগ্যুলার মেডিসিন নাওনি। তাইনা?
নীলিমা চুপ।
নিহাল : আধঘন্টা আগে লাঞ্চ করেছো এখন চুপচাপ মেডিসিন গুলো খাবে।
নীলিমা : আমি খাবোনা খাবোনা খাবোনা।
মেরিন : চুপ একদম চুপ। খাবোনা মানে কি? খেতে হবে।
নীলিমা একেবারে চুপ হয়ে গেলো।
মেরিন : বাবা মেডিসিনদাও।
নিহাল যখন মেরিনের হাতে ঔষধগুলো দিলো তখন অবাক হয়ে গেলো। এতোগুলো মেডিসিন!
মেরিন : ওপেন ইউর মাউথ।
নীলিমা মুখ খুলল। মেরিন ঔষধ খাইয়ে দিলো।
মেরিন : দ্যাটস লাইক অ্যা গুড গার্ল। এখন রেস্ট করো। এই আমি চললাম।
বলেই মেরিন চলে গেলো।
নীলিমা : তোমরা সবাই যাও। আমি একটু আরাম করবো।
সবাই চলে যেতে নিলো।
নীলিমা : হিয়া…
হিয়া : জী আন্টি মানে মামনি।
নীলিমা : একটু বসো তো আমার কাছে।
হিয়া : হামম।
হিয়া রইলো বাকী সবাই চলে গেলো।
.
মেরিন : বাবা…
নিহাল : হামম।
মেরিন : মামনির কি হয়েছে? এতোগুলো মেডিসিন কেনো?
নিহাল : মানসিক রো*গ।
মেরিন : কারনটা নিশ্চয়ই আমি?
নিহাল : হ্যা বা না কিছুই বলতে পারছিনা । মানলাম তোমার ওপর রা*গ। কিন্তু তবুও তো মন খুলে ডক্টরকে বলতে হবে। কো অপারেট তো করতে হবে। ফিলিংসটা তো শেয়ার করতে হবে। রা*গ ছারা আর তো কিছু প্রকাশই পায়না। সাইকিয়াট্রিস্টেরও এই একই কথা। সে একবার বলেছিলো অপরাধবোধ। কিন্তু বাস্তবে নীলিমার মধ্যে কোনো অপরাধবোধ নেই। যেটা আছে সেটা হলো ত…
নিহাল থেমে গেলো।
মেরিন : থামলে কেনো বাবা? বলোনা… যেটা আছে সেটা হলো আমার ওপর রা*গ। আই নো দিস।
নিহাল : যাও গিয়ে রেডি হয়ে নাও।
মেরিন : হামম।
মেরিন রুমে গেলো।
মেরিন : রা*গ ছারা অন্যকোনো অনুভূতি প্রকাশ পায়না। অ*পরাধবোধ তো পায়ইনা। তবে ডক্টর অ*পরাধবোধ কেনো উল্লেখ করলো?
তখন মেরিনের মনে পরলো ডি*ভোর্সের দিন কোর্টের কথাটা। জজ যখন জিজ্ঞেস করলো যে মেরিনকে আপনি ডি*ভোর্স চান কিনা তখন মেরিন নীলিমার দিকে তাকিয়েছিলো। নীলিমা বহু আগে থেকেই মেরিনের দিকে তাকিয়েছিলো । কিন্তু যেই ও নীলিমার দিকে তাকালো তখন নীলিমা চোখ ঘুরিয়ে নিলো। বিষয়টা মেরিন ঠিক বুঝেছিলো। যখন মেরিন বলেছিলো যে হ্যা চাই তখন নীলিমার চোখ থেকে পানি গরিয়ে পরেছিলো। সাথেসাথে ও মেরিনের দিকে তাকিয়েছিলো।
মেরিন : ১মিনিট… আমি হয়তো জানি কিসের অপরাধবোধ। কিন্তু সেটা কেউ জানেনা। সেদিন মামনি আমার কাছে এসে ওগুলো বলেছিলো। আর সেদিন রাতেই মামনির অসুস্থ হওয়ার কথা শুনে ক্ষীরবাদুর ছুটে চলে যায়। এরপর কোর্টের সেই দৃশ্য । আর এখন এই অসুস্থতা। নাও ইটস ক্রিস্টাল ক্লিয়ার ফর মি…
.
সন্ধ্যার পর…
শুরু হলো প্রহর-নিহারিকার এনগেজমেন্টের জমজমাট অনুষ্ঠান । আনন্দ উৎসব চলছে। কিন্তু মেরিন সেই থেকে আপন মনে ভাবছে কি করে নীলিমাকে ঠিক করা যায়? একবার হাওয়ায় আকিবুকি করছে একবার মাথার টোকা দিচ্ছে ।
নীড় : ওয় মাথা খারাপের গোডাউন মানুষ পা*গল বলবে । যদিও সবাই জানে তুমি পাগল। কিন্তু তুমি ভাবছোটা কি?
মেরিন : তোমাকে বলবো কেনো? তো…
তখন হিয়া এন্ট্রি মারলো। অস্বাভাবিক সুন্দর লাগছে।
মেরিন : তোমার মনে ঘান্টি বাজতে চলেছে।
নীড় : কি ?
মেরিন : রিমেম্বার দ্যাট সং? তুনে মারি এন্ট্রিয়া দিল মে বাজি ঘান্টিয়া টাং টাং টাং…
নীড় : যার এন্ট্রি মারার কথা সে তো এন্ট্রি মেরেছেই। তাও অনেক আগে। ঘন্টাও তো বেজেই চলেছে ।
মেরিন : বাজে না বকে সামনে তাকাও। দেখো।
নীড় : দেখছিই তো।
মেরিন কলেজ স্টুডেন্টদের মতো আচরণ করোনা তো। সামনে তাকাও।
নীড় একরাশ বিরক্তি নিয়ে সামনে তাকালো। দেখলো হিয়া আসছে।
নীড় : এটা তো হিয়া।
মেরিন : হামম।
নীড় : আমি ভাবছি তুমি না জানি কার কথা বলছো?
মেরিন : আরে দেখো হিয়াকে। ভ*য়ংকর সুন্দর লাগছে। আমি ছেলে হলে তো আমিও ক্রাশ খেতাম।
নীড় : কিন্তু আমার কাছে যে অপশন নেই।
মেরিন : এক্সকিউজ মি।
নীড় : দারাও লালঝুটি কাকাতুয়া।
মেরিন : আবার কি?
নীড় : তুমি কি জে*লাস নও!
মেরিন : আমার কাছেও অপশন নেই।
বলেই মেরিন চলে গেলো। হিয়া এলো নীড়ের সামনে।
হিয়া : কেমন লাগছে আমায়?
নীড় : সুন্দর।
হিয়া : কেবল সুন্দর ?
নীড় : অনেক সুন্দর। ক্রাশগার্ল লাগছে।
হিয়া : থ্যাংক ইউ।
নীড় : মোস্ট ওয়েলকাম। এক্সকিউজ মি।
বলেই নীড় চলে গেলো।
হিয়া : আই লাভ ইউ …
.
চলবে…