তোমার_হতে_চাই ২ part : 10 writer : Mohona

0
119

#তোমার_হতে_চাই ২
part : 10
writer : Mohona

.

মেরিন হাসলো। রবিনের পাশে গিয়ে দারালো।
নিহাল : আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ খাবারের দিকে যান আপনারা। আজকে এখানে এখন এনগেজমেন্ট হচ্ছেনা।
সব অতিথি চলে গেলেন।
ফাহিম : এনগেজমেন্ট হবেনা মানে কি? এনগেজমেন্ট হবে। এখনই হবে।
ফাহিম রিং নিয়ে নিহারিকার দিকে যেতে লাগলো। সামনে দেয়াল হয়ে দারালো নীড়।
নীড় : আমার বাবা বলে দিয়েছেনা যে আজকে এনগেজমেন্টটা হচ্ছেনা। সো হচ্ছেনা। রিকুয়েস্ট করছি চুপচাপ একটু দারাও।
নীড় নিহারিকার সামনে গেলো। নিহারিকা নীড়কি জরিয়ে ধরে কাঁদতে লাগলো।
নিহারিকা : সরি ভাইয়া। ডরিয়েলি ভেরি সরি। আমি তোমাকে হার্ট করতে চাইনি। চাইনি আমি।
নীড় : পাগলিবোনটা আমার। প্রহর আমার বোনের চোখে যেনো আর কখনো কোনোদিনো পানি না আসে।
আমজাদ :এক মিনিট কি হচ্ছেটা কি? সবাই মনেহয় ভুলে যাচ্ছে যে নিহারিকা আমার মেয়ে । আর ওই প্রহরের সাথে আমি আমার মেয়ের বিয়ে দিবোনা । ওই পরিবারের সাথে আমি নতুন করে সম্পর্ক গড়তে চাইনা যে পরিবার আমার একমাত্র বোন-ভাগনের জীবন তছনছ করে দিয়েছে।
মেরিন : মামা আমি আপ…
আমজাদ : খবরদার আমাকে মামা ডাকবেনা।
মেরিন : বেশ ডাকবোনা। স্যার… আমি তো সমস্যার কারন। তাইনা? কিন্তু প্রহর তো আমার আপন ভাইনা। মামাতো ভাই। আর আমি তো ঢাকা থাকিও না। আর আমার মামা-মামী কেমন সেটা তো আপনি আর রানী ম্যাম ভালো করেই জানেন। রানী ম্যাম তো মামার বন্ধু।
আমজাদ : কে কখন রং বদলায় সেটা কেউ জানেনা। আমার মেয়েকে আমি ওই বাড়িতে বউ করে পাঠাবোনা।
রবিন : আমজাদ… আমি রবিন মাহমুদ যদি চাই এখন এই মুহূর্তে নিহারিকাকে নিয়ে যেয়ে আমার ছেলের সাথে বিয়ে দিতে পারি । আমার ক্ষমতা কতোটুকু সেটা আশা করি জানো। কিন্তু আমি সেটা করবোনা।
আমজাদ : যা পারো করে নাও। আমি ফাহিমের সাথেই নিহারিকার বিয়ে দিবো। নিহারিকার মত থাকুক আর না থাকুক।
রবিন : দেখো … জোর করে বিয়ে দেয়ার ফলাফল কি হয়ে সেটা নিশ্চয়ই নতুন করে বলতে হবেনা।
নিহাল : আমজাদ… সন্তানের খুশিতেই মা-বাবার খুশি। রাগের মাথায় ভুল সিদ্ধান্ত নিওনা।
নীড় : মামা প্রহরের গ্যারান্টি আমি দিচ্ছি। আমাকে তো বিশ্বাস করো বলো।
অনেক কথার পর আমজাদ রাজী হলো। নীড় তাকিয়ে আছে মেরিনের দিকে। মেরিন তাকিয়ে আছে নীলিমার দিকে।

.

একটুপর…
নিহাল : মামনি…
মেরিন নিহালের দিকে ঘুরলো।
মেরিন : ববাবা…
নিহাল মেরিনের মাথায় হাত রাখলো।
নিহাল : নীড় আমাকে সব বলে দিয়েছেরে মা সব বলে দিয়েছে।
মেরিন মাথা নিচু করে কাঁদতে লাগলো। নিহাল মেরিনকে স্নেহে জরিয়ে নিলো ।
মেরিন : সরি বাবা। সরি। আমার জন্য তোমার আর বাবার সম্পর্কটা শেষ হয়ে গিয়েছে। সরি বাবা। সরি…
নিহাল : সরি তো আমাদের বলা উচিত । আসলে আমরাই তোমাদের বিয়ে দিতে তারাহুরা করে ফেলেছিলাম। কতো কি শুনিয়েছি তোমাকে । ক্ষমা করে দিসরে মা…
মেরিন : বাবা তুমি কেনো ক্ষমা চাইবে বলো… কোনো দোষ নেই তোমাদের। দোষ তো আমাদের।
নীড় আড়াল থেকে দুজনকে দেখলো। এই দৃশ্য দেখে অভিভূত হলো। তখন দেখলো যে নীলিমা আসছে।
নীড় : ওহ নো মামনি আসছে। হুট করে এমন কিছু দেখলে অসুস্থ হয়ে পরবে।
নীড় ছুটে নীলিমার সামনে গেলো।
নীড় : মামনি তুমি কোথায় যাচ্ছো?
নীলিমা : তুমি আমার সাথে কথা বলবেনা। তোমার বাবা কোথায়?
নীড় : বাবাকে তো ওই দিকটাতে দেখলাম।মামার সাথে।
নীলিমা অন্যদিকে চলে গেলো।

.

পরদিন…
চৌধুরী বাড়িতে…
চৌধুরী পরিবারের সবাই আজকে তাদের বাড়িতে ঢুকলো। এতোদিন খালি থাকায় ধুলোবালি জমে ছিলো। তাই এই কদিন বাড়িটা পরিষ্কার করা হচ্ছিলো । আজকে সবাই বাড়িতে এলো। সকলের কতো কতো স্মৃতি জরিয়ে আছে এই বাড়িতে।
প্রান্তিক : ওয়াও… এতো বড় বাসা আমাদের মাম্মি?
নিলা : ইয়েস লাভ এটা আমাদের।
প্রান্তিক : ওয়াও।ইটস লাইক অ্যা প্যালেস।
রুপা : প্যালেসই তো। তোমার তিন দাদু খুব শখ করে পুরো পরিবারের জন্য এই বাসাটা বানিয়েছিলো। সবাই মিলে একসাথে থাকবে বলে।
প্রান্তিক : ওয়াও। তবে আমি এই প্যালেসের প্রিন্স।
সবাই হাহা করে হেসে দিলো। এই বাড়িটা নীলিমাকে মেরিনের কথা মনে করাচ্ছে। এখানে সেখানে দুষ্টুমি করতো। নীড়-মেরিন ঝগড়া করতো। মামনি মামনি বলে অস্থির হয়ে যেতো। অনেকসময় দুপুরে খাওয়ার সময় টেবিলে চরে বসতো আর ওকে খাইয়ে দিতে হতো। এটা খাবোনা ওইটা খাবো। নীলিমার মনে হতো মেরিন যেনো ওরই মেয়ে। বুকটা ভরে গিয়েছিলো মেরিনকে পেয়ে। নীলিমা কেঁদে উঠলো হাউমাউ করে । সবার হাসি থেমে গেলো।

.

রাতে…
নিহারিকা : প্রহর… প্রহর… প্রহর । কোথায় তুমি? প্র…
তখন শুরু হলো আকাশ আতসবাজী। নানা ধরনের আলোর মেলা। শুরু হলো ফুলের বৃষ্টি।
প্রহর : আই লাভ ইউ নিহারিকা… আই লাভ ইউ। আমি তোমাকে ভালোবাসি নিহারিকা। ভীষন ভালোবাসি। আই লাভ ইউ।
নিহারিকার এই মুহূর্তে সবথেকে বেশি ভাগ্যবতী নারী মনে হচ্ছে। আনন্দে চোখে পানি চলে এলো। প্রহরকে জরিয়ে ধরলো।
নিহারিকা : আই লাভ ইউ টু… আমিও তোমাকে ভালোবাসি প্রহর । ভীষন ভালোবাসি। তুমি যে আমার কি সেটা কেবল আর কেবল আমিই জানি ।
প্রহর নিহারিকার কপালে চুমু দিলো।
প্রহর : আমি আমাদের একটা নিকনেইম দিয়েছি।
নিহারিকা : কি?
প্রহর : প্রহরিকা।
নিহারিকা হেসে দিলো।
প্রহর : নিহারিকা এখন আমি তোমাকে কিছু কথা বলবো। তোমার রাগ উঠলে উঠতে পারে। কিন্তু তবুও তোমার কাছে রিকুয়েস্ট করছি যে আমার পুরো কথাটা ঠান্ডা মাথায় শোনার এবং বোঝার চেষ্টা করবে। ভয় পেওনা এমন কিছু বলবোনা যেটাতে তোমার অথবা তোমার পরিবারের অসম্মান হয়। শুনবে আমার কথাটা…!
নিহারিকা : বলো।
প্রহর : তোমার জন্য তোমার ভাইয়া কি সেটা যেমন আমি জানি তেমন আমার জন্য আমার আপি কি সেটা তুমি জানো। আমি আজকে এখানে আসার আগে আপিকে বলেছি যে আজকে তোমাকে প্রপোজ করবো। আপি আসার আগে আমার কাছ থেকে ১টা প্রমিস নিয়েছে। সেটা হলো এই যে , আমি যেনো আপিকে নিয়ে আমাদের মধ্যে কোনো প্রকারের কোনো ঝামেলা বা কথা কাটাকাটি না করি। আর তোমার নীড় ভাইয়াকে নিয়েও যেনো আমি তোমাকে কোনো উস্কানিমূলক কথা না বলি। সো আপির এবং তোমার জন্য আমি নিজেকে এবং তোমাকে প্রমিস করতে চাই আর সেই সাথে তোমার কাছেও প্রমিস চাই যে, আমরা ভাইয়া ও আপিকে নিয়ে নিজেদের মধ্যে কখনো ঝামেলা সৃষ্টি করবোনা । কারন এমনটা করলে আমার আপি আর তোমার ভাইয়া দুজনই খুব কষ্ট পাবে। প্রমিস করবে তুমি?
নিহারিকা প্রহরের কপালে চুমু দিলো।
নিহারিকা : কেনো করবো না? প্রমিস করলাম।
প্রহর : আমিও প্রমিস করলাম।
প্রহর-নিহারিকা : আমরা দুজন দুজনকে কথা দিলাম যে আমরা নিজেদের মধ্যে নীড় ভাইয়া আর মেরিন আপিকে নিয়ে কোনো ঝামেলা করবোনা।

.

মেরিন : বাবা…
কবির : হামম?
মেরিন : আমি লোক ঠিক করে দিয়েছি বাসার হলরুম , কিচেন , ডাইনিং রুম আর কয়েকটা বেডরুম পরিষ্কার করিয়েছি। বিয়ে পর্যন্তই তো কেবল থাকছি এখানে।
রবিন : আমি বুঝতে পারছিনা আমার বাসা যখন খোলা হচ্ছেই তখন আর তোমাদের বাসা খোলার কি প্রয়োজন? বাবাই তুমি কেনো এমন সিদ্ধান্ত নিলে বলো তো?
কনিকা : ও ঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছে বাবু। ওর জীবনে যা হওয়ার হয়েছে। এখন যদি প্রহরের জীবনটাও এলোমেলো হয়ে যায় তাহলে আমি অন্তত নিজেকে ক্ষমা করতে পারবোনা।
সনি : আপু কেনো এমন করে বলছো বলো তো? প্রহরের বিয়ে আর তোমরা কিনা ওই বাসায় থাকবে?
মেরিন : মামি… আম্মু বাবা তো সারাদিন এখানেই থাকবে। ওরা মন চাইলে রাত এখানে থাকবে বা ওখানে ।
রবিন : আর তুমি একা ওই বাসায়…
মেরিন : মামা… তুমি না বলেছিলে আমার ওপর আর কখনো কোনো জোর করবেনা। তাহলে? মামা আলাদা থাকা মানেই আলাদা হওয়ানা। একটু বোঝার চেষ্টা করো। তোমার নতুন মেয়ে বাসায় ঢুকতে চলেছে। সো বি হ্যাপী ।
রবিন মেরিনের মাথায় হাত রাখলো।
রবিন : কি দরকার ছিলো বাবাই এতো বড় হওয়ার? আমার ছোট্ট বাবাইটাকে যে ভীষন করে মিস করি।

.

হিয়া : মেরিন মেরিন মেরিন… আই জাস্ট হেইট দ্যাট গার্ল। এ নিশ্চয়ই আমার নীড়কে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করবে। না। এটা হতে পারেনা। নীড় কেবল আর কেবল আমার।
রিসা : হিয়া আসবো?
হিয়া জোর করে হাসি টেনে।
বলল : আসো ভাবি আসো।
রিসা : এই নাও তোমার খাবার।
হিয়া : রুমে আনতে গেলে কেনো খাবার? সবার সাথে বসেই খেতাম।
রিসা : আজকে সবাইকে যারযার ঘরেই খাবার দেয়া হয়েছে।
হিয়া : ওহ। ভাবি ১টা কথা বলি যদি কিছু মনে না করো।
রিসা : হামম করো।
হিয়া : আমি বেশি সুন্দর নাকি মেরিন? নীড়ের পাশে কাকে বেশি মানায়? আমাকে নাকি ওকে? কে নীড়ের জন্য পারফেক্ট ? আমি নাকি ও?
রিসা হাসলো।
রিসা : দেখো যতোযাই হোক ওদের ডিভোর্স হয়ে গিয়েছে। তাই এগুলো ভেবে লাভ নেই ।
হিয়া : তবুও বলোনা।
রিসা : মেরিনকে তো আমি তেমন করে চিনিনা। একদিনই দেখলাম। নীড় ভাইয়ার যে জেদরাগ দেখেছি সেটা দেখে এটা বলতে বাধ্য হচ্ছি যে মেরিনই বেস্ট। রাগ করোনা। আসছি।
বলেই রিসা চলে গেলো। আর হিয়ার হিয়ায় আগুন জ্বলতে লাগলো।

.

৩দিনপর…
রাতে…
মেরিনরা নিজেদের বাসায় এসে পরেছে। মেরিন কোমড়ের ব্যাথায় কাতরাচ্ছে। এপিঠওপিঠ করছে। কিছুতেই শান্তি পাচ্ছেনা। আজকে ঔষধও খেয়েছে। তবুও ভীষন যন্ত্রণা হচ্ছে। উঠে একটু হাটতে লাগলো। হেটে বারান্দায় গেলো। গ্রিলে হাত রেখে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। তখন ওর হাতের ওপর হাত পরলো কারো। অবাক হলেও বুঝতে বাকী রইলোনা যে এটা নীড়।
নীড় : হাতটা দাওনা উঠতে পারছিনা।
মেরিন কিছু না বলে ভেতরে চলে গেলো। রুমের দরজা লাগিয়ে দিলো।
নীড় : এটা কি হলো!
নীড় নিজে নিজেই উঠে এলো।
নীড় : এই তুমি এটা কি করলা? দরজা খোলো।
মেরিন খুললনা । অনেকবার বলার পরও মেরিন দরজা খুললনা।
নীড় : তুমি খুলবেনা তো? দরজা না খুললে কিন্তু আমি এখান থেকে লাফ দিবো।
মেরিন তবুও খুললনা। কারন ও জানে নীড় মিথ্যা কথা বলছে।
নীড় : বিদায় নিষ্ঠুর পিতিবি… আআআ…
মেরিন তাও খুললনা। এমন কি ১টা কথাও বললনা।
নীড় : এতো স্বার্থপর তুমি!
মেরিন চুপ।
নীড় : তুমি যদি জেদী হও তবে আমিও জেদী।
বলেই নীড় গ্রিলের ওপর দারালো। মেরিন দরজা খুলল ।
মেরিন : নেমে আসো।
নীড় নেমে এলো। ওর দিকে আসতে নিলে মেরিন নিজেও দূরে সরলো আর হাত দিয়ে ইশারাও করলো আগে না বারতে।
মেরিন : স্টে দেয়ার।
নীড় : বেশ্ আমি আগে বারছিনা। রিল্যাক্স । লালঝুটি কাকাতুয়া… যা হয়েছে সব বাদ দাও। ভবিষ্যতের কথা ভাবি চলো। দুজন মিলে পরিবারের সাথে দরকার হলে কোনো বড় ইমাম সাহেবের কাছে পরামর্শ নিবো। দেখবে ঠিক একটা পথ বের হবে ।
মেরিন : কিসের পথ বের হবে?
নীড় : আমাদের এক হবার।
মেরিন : এক্সকিউজ মি তোমাকে কি আমি বলেছি যে আমি তোমার সাথে আবারো এক হতে চাই?
নীড় : কিছু কথা বলার প্রয়োজন হয়না । আমি তোমার সাথে এক হতে চাই। তোমাকে নিজের বউ করতে চাই।
মেরিন : কিন্তু আমি তোমার বউ হতে চাইনা ক্ষীরবাদুর।
নীড় : মিথ্যা কথা কেনো বলছো?
মেরিন : মিথ্যা কেনো বলতে যাবো?
নীড় : সেটা আমরা দুজনই জানি।
মেরিন : ক্ষীরবাদুর … রাত হয়ে গিয়েছে। চলে যাও।
নীড় : কাকাতুয়া তুম…
মেরিন : গুড নাইট।
নীড় মনেমনে : এর সাথে অন্যভাবে খেলতে হবে।
নীড় : আচ্ছা ফাইন । নতুন করে সম্পর্ক নাই বা গরলে পুরোনো সম্পর্কটাই না হয় তাজা করলাম।
মেরিন : তোমার সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। সব সম্পর্ক শেষ।
নীড় : সব?
মেরিন : হামম।
নীড় : ঝগড়ার সম্পর্কটা!
মেরিন : হ্যা সে… না সেটাতো শেষ হয়নি।
নীড় : আমি তো সেটাই বলছি।
মেরিন : আমরা এখন বড় হয়ে গিয়েছি।
নীড় : মোটেও না।
মেরিন : মোটেও।
নীড় : আমি প্রমান করে দিতে পারি যে আমরা এখনো বড় হইনি। সেই আগেরই লালঝুটি কাকাতুয়া আর ক্ষীরবাদুরই আছি।
মেরিন : কি করে করবে?
নীড় : এখনই দেখবেও আর বুঝবেও।
বলেই নীড় মেরিনের কাছে গিয়ে মেরিনের দুই ঝুটি জোরে টান দিয়ে আর দেরি না করে পাইপ বেয়ে নেমে গেলো।
মেরিন : ক্ষীরবাদুরের বাচ্চা। আই উইল কিল ইউ।
নীড় : ন্যা ন্যা ন্যা ন্যা ন্যা ন্যা ন্যা ন্যা।
মেরিন এদিক ওদিক খুজতে লাগলো । দোলনায় থাকা কুশনটাই নীড়ের ওপর ছুরে মারলো। নীড় ক্যাচ ধরে ফেলল। মেরিন রুমে গিয়ে মোবাইল নিয়ে এলো। ওটা ছুরে মারলো। মোবাইলটা পরে ভেঙে গেলো।
মেরিন : আই উইল কিল ইউ।
নীড় : ওকে। বেটার লাক নেক্সট টাইম। গুড নাইট। বাই দ্যা ওয়ে আমি কিন্তু প্রুভ করে দিয়েছি ।
বলেই নীড় চলে গেলো। মেরিন বোকা বনে গেলো। আসলেই তো নীড় প্রমান করে দিলো । নিজের ওপরই রাগ হলো।

.

পরদিন…
আমজাদ , রবিন , নিহাল , কবির বসে আছে। নিহাল সত্যিটা জানে । তাই কবিরের ওপর কোনো অভিমান নেই। কিন্তু কবির তো আর সত্যিটা জানেনা। ওর মনে একরাশ্ অভিমান জমে আছে কবিরের মনে । ওরা আজকে প্রহর-নিহারিকার বিয়ের ব্যাপারে কথা বলতে। নিহারিকার ইচ্ছানুযায়ী ডেস্টিনেশন ওয়েডিং এর ব্যাবস্থা করা হলো। নিহাল কবিরের সাথে কথা বলতে চাইলেও কবির কোনো কথা না বলে চলে গেলো।
নিহাল মনেমনে : কবিরের সাথে কথা বলা প্রয়োজন। কিন্তু ও তো মনেহয়না কোনোক্রমেই আমার কোনো কথা শুনবে।

.

হিয়া : ক্ষীরবাদুর…
নীড় কফি খাচ্ছিলো। হিয়ার এই ডাকে নীড়ের মু়খ থেকে কফি বেরিয়ে এলো। পরলো হিয়ার ওপর।
নীড় : সরি সরি সরি…
হিয়া : ক্ষীরবাদুরের বাচ্চা। আই উইল কিল ইউ।
বলেই হিয়া নীড়ের হাত থেকে কফিটা নিয়ে নীড়ের মাথাতেই ঢেলে দিলো। নীড় সাংঘাতিক রেগে গেলো।
নীড় : হ্যাভ ইউ লস্ট ইট ? ইডিয়ট। আরেকবার এমন ফাজলামো করলে থাপরে গাল লাল করে দিবো। স্টুপিড।
নীড় ওয়াশরুমে গেলো।
হিয়া : আমি তো শুনেছি নীড়ের সাথে মেরিন এমন কতো কি করেছে। তাহলে আমাকে এমন করে বকলো কেনো? মাম্মা…
নীড় ওয়াশরুম থেকে টাওয়াল পরে বের হলো। দেখলো হিয়া এখনো দারিয়ে আছে।
নীড় : আ…
নীড় ছুটে ওয়াশরুমে ঢুকে গেলো। একটুপর বেরিয়ে এলো।
নীড় : তুমি এখনো দারিয়ে আছো কেনো এভাবে!
হিয়া : তো কি করবো!
নীড় : কিছু করতে হবেনা। তুমি থাকো আমি যাই। বাই।
নীড় মোবাইল আর গাড়ির চাবি নিয়ে বেরিয়ে গেলো।
হিয়া : দারাও নীড়… থুরি ক্ষীরবাদুর। শোনো। দারাও । যাহ চলে গেলো! কোথায় গেলো? মেরিনের কাছে? আমি ওকে ফলো করি।

.

বিয়ের কেনাকাটা সব শেষ করে সবাই পৌছালো সিলেট। সিলেট পৌছাতে পৌছাতে রাত হয়ে গিয়েছে। রিসোর্টে উঠলো। নিহারিকা মেরিনকে আর প্রহর নীড়কে যথাসম্ভব এরিয়ে চলছে। যদিই ভুলভাল কি়ছু বলে দেয় সেকারনে। নিহারিকার এনগেজমেন্টের দিন তো মেরিন হিয়াকে খেয়ালই করেনি। আজকে দেখলো।
মেরিন : এই হিয়া চিকনি চামেলী থেকে আমি আমি কি করে হয়ে গেলো? হেয়ার কালার ,হেয়ার কাট সব আমার মতো। ড্রেসআপও আমার মতো। অদ্ভুত !
তখন নীড় দেখলো নীড় আসছে।
মেরিন : ক্ষীরবাদুর এদিকেই আসছে। আসলেই চিপকাবে। অড সিচ্যুয়েশন হবে। বারবার একই কথা শুনতে ভালো লাগেনা। ঘুমও আসছে ভীষন। আমার রুম নাম্বার তো নাইন। কোনদিকে হতে পারে! যেইদিকেই হোক পালাই আগে এখান থেকে।
মেরিন পালালো।
নীড় : গেলো কোথায় লালঝুটি কাকাতুয়া? নির্ঘাত লুকিয়ে পরেছে। এক কাজ করি রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নেই এরপর খুজবো। আমার রুম নাম্বারটা কতো? নাইন।
নীড় নিজের রুমে পৌছালো। লাইট জ্বালিয়ে দেখে কেউ ওর বেজে ব্ল্যাংকেট গায়ে দিয়ে শুয়ে আছে।
নীড় : এটা হিয়া হলে খবরই আছে।
পরে দেখলো সেটা মেরিন।
নীড় : লালঝুটি কাকাতুয়া!

.

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here