তোমার_হতে_চাই ২ part : 9 writer : Mohona

0
122

#তোমার_হতে_চাই ২
part : 9
writer : Mohona

.

মেরিন : নিহারিকা…
মেরিন যেতে নিলো প্রহর হাত ধরলো।
প্রহর : কোথায় যাচ্ছো আপি?
মেরিন : কতোদিন পর নিহারিকা দেখো। দেখা করে আসছি আমি।
প্রহর : পাগল হলে আপি? ওখানে গেলেই ও তোমাকে কথা শোনাবে।
মেরিন : শুনে নিবো। ও আমার বড্ড স্নেহের।
মেরিন নিহারিকার দিকে এগিয়ে গেলো।
মেরিন : কেমন আছো নিহারিকা?
নিহারিকা পেছনে ঘুরলো। মেরিনকে দেখে আনন্দ হলো। আবার মুহুর্তেই সেই আনন্দ মাটি হয়ে গেলো। ঘুরে গেলো। মেরিন নিহারিকার সামনে গেলো।
মেরিন : কেমন আছো তুমি? মামা-মামী কেমন আছে?
নিহারিকা কোনো জবাব দিচ্ছেনা।
মেরিন : তুমি আগের থেকে আরো সুন্দরী হয়ে গিয়েছো।
নিহারিকা এমন আচরণ করছে যেনো মেরিন অদৃশ্য কেউ। প্রহর আর মেনে নিতে না পেরে এগিয়ে এলো।
প্রহর : আপি চলো।
প্রহরের কন্ঠ শুনে নিহারিকা থমকে গেলো। মেরিন বিষয়টা লক্ষ্য করলো।
প্রহর : কেনো সেধে সেধে অপমানিত হচ্ছো? চলো এখান থেকে। ওদের সাথে কথা বলার দরকার নেই।
প্রহর রেগে কথাগুলো বলছে কিন্তু মেরিন ওর কন্ঠে অভিমান খুজে পাচ্ছে।
নিহারিকা : অযথা সিন ক্রিয়েট করতে চেয়ে লাভ নেই। সফল হবেননা।
প্রহর : লিসেন ইউ…
প্রহর থেমে গেলো। ওরা দুজন দুজনের দিকে অপলক তাকিয়ে রইলো। মেরিন অবাক চোখে দেখছে। তখন ফাহিম ফিরে এলো। নিহারিকা নিজের অনুভূতির আন্দোলন উপেক্ষা করে ফাহিমের দিকে এগিয়ে গেলো।
নিহারিকা : কোথায় গিয়েছিলে?
ফাহিম : জীবন্ত মাদক খুজতে।
নিহারিকা : মানে?
ফাহিম নিহারিকার কোমড় জরিয়ে ধরলো।
ফাহিম : মানে বুঝে নাও।
নিহারিকা নিজেকে ছারিয়ে নিলো।
নিহারিকা : কি হচ্ছেটা কি? সবাই দেখছে।
ফাহিম আবারো নিহারিকার কোমড় জরিয়ে ধরলো।
ফাহিম : সো হোয়াট? আমি আমার হবু বউয়ের কোমড় জরিয়ে ধরেছি।
প্রহর সামনে থাকা স্ট্যান্ডে ঘুষি মারলো। এতে সবার দৃষ্টি ওর দিকে পরলো।
মেরিন : ভাইয়া… ইশ। কতোটা ব্যাথা পেয়েছো।
প্রহর : আপি চলো তো।
ফাহিম আবার মেরিনকে দেখলো। নিহারিকাকে ছেরে দিলো।
ফাহিম: টক্সিক বিউটি… হট এন্ড স্টাইলিশ। আই ওয়ান্ট হার।
প্রহর মেরিনকে নিয়ে অন্য শপে গেলো । প্রহর বাহানা করে ট্রায়ালরুমে গেলো। মেরিন অংক মিলাচ্ছে প্রহর-নিহারিকার। তখন হঠাৎ বুঝতে পারলো যে কেউ ওর ঘাড়ে ফু দিলো। মেরিন দ্রুত পেছনে ঘুরলো। দেখলো ফাহিম।
মেরিন : ইউ?
ফাহিম : ইয়াহ ইটস মি টক্সিক বিউট।
মেরিনের কপালে ভাজ পরলো। ফাহিম মেরিনের দিকে একটু ঝুকলো। মেরিন সরে গেলো।
ফাহিম : আর ইউ ফ্রি টুনাইট?
মেরিন ঠাস করে ফাহিমকে চড় মারলো। তখন প্রহরও বের হলো।
প্রহর : কি হয়েছে আপি?
মেরিন : দেখো তো ভাইয়া নিহারিকা কোথায়? নিয়ে আসো ওকে এখানে।
প্রহর : নিহারিকাকে…
মেরিন : গো।
প্রহর গেলো।
ফাহিম : হাও ডেয়ার ইউ? জানো আমি কে?
মেরিন : বড়লোক বাবার বিগরে যাওয়া ছেলে। তোমার বাবা আজকে থেকে ৩০বছর আগে আমার আম্মুর কাছে থাপ্পর খেয়েছিলো। আজকে তুমি খেলে। নিহারিকা আমার অনেক স্নেহের। ওর জীবন আমি নষ্ট হতে দিবোনা। নিহারিকার বিয়ে আমি তোমার সাথে হতে দিবোনা।
নিহারিকা : অ্যাজ ইফ আমি আপনার কথা শোনার জন্য বসে আছি।
মেরিন : নিহারিকা হি ইজ অ্যা ক্যারেক্টারলেস পার্সোন।
নিহারিকা : সবাইকে নিজের মতো মনে করেন?
প্রহর : হেই মাইন্ড ইউর ল্যাংগুয়েজ ।
মেরিন : ভাইয়া আমি কথা বলছিতো। নিহারিকা ওকে বিয়ে করলে তোমার জীবনটা বরবাদ হয়ে যাবে।
নিহারিকা : আমার জীবন আমি বুঝে নিবো। চলো ফাহিম।
নিহারিকা ফাহিমের সাথে চলে গেলো। নিহারিকাকে গাড়িতে বসিয়ে ওয়াশরুমে যাওয়ার নাম করে ফাহিম ফিরে এলো।
ফাহিম : হেই টক্সিক বিউটি… থাপ্পরটা খুব টেস্টি ছিলো। নিহারিকা তোমার খুব স্নেহের। তাইনা? এমনিতেও ওকে ইউজ করতে পারিনি বলেই বিয়ে করতে হচ্ছে। নো ওয়ারি বিয়ের পর ছেরে দিবো। ।
মেরিন কিছু বলার আগেই প্রহর ফাহিমের কলার ধরলো।
প্রহর : যদি নিহারিকার কোনো ক্ষতি করার চেষ্টা করিস তো তোকে আমি জানে মেরে ফেলবো।
ফাহিম : দেখা যাবে।
ফাহিম চলে গেলো। প্রহর রাগে ফোসফোস করছে । মেরিন সবটাই লক্ষ্য করছে।
প্রহর : চলো আপি।
মেরিন : হামম চলো।
ওরা বেরিয়ে গেলো। মল থেকে হোটেল পর্যন্ত যাওয়ার পথটুকু মেরিন প্রহরকেই দেখলো। চোয়ালটা শক্ত করে রেখেছে। কানটা লাল হয়ে গিয়েছে। ও প্রহরকে বেশ ভালোভাবেই চেনে। প্রহর রেগে গেলে ওর কান লাল হয়ে যায়।

.

রাতে…
মেরিন : ভাইয়া নিহারিকার কথা আচরণ অদ্ভুত ছিলো। নিহারিকা ফাহিমকে নিয়ে কথা আমাকে বলছিলো কিন্তু ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে বলছিলো। যেনো কথাগুলো ভাইয়ার জন্যই ছিলো। দুজনের দিকে দুজনের তাকাের ভঙ্গি… এমন তো নয় যে ওরা একে অপরকে ভালোবাসতো। আমার আর ক্ষীরবাদুরের জন্য ওদের সম্পর্কটা শেষ হয়ে গিয়েছে! এমনটা হলে আমি কোনোদিনো নিজেকে ক্ষমা করতে পারবোনা । সত্যিটা জানবো কি করে? আল্লাহ পথ দেখাও। ১টা পথ দেখাও। আমার জীবন নষ্ট হয়েছে হয়েছে। আমার ভাইয়ার জীবন আমি নষ্ট হতে দিবোনা। কিছুতেই না। ভাইয়াকে সরাসরি জিজ্ঞেস করলে কিছু তো বলবেও না। আমাকে সত্যিটা জানতে হবে। যে করেই হোক জানতে হবে। ভাইয়ার ডাইরী…
প্রহর নিহারিকার দেয়া উপহারটা হাতে নিয়ে বসে আছে।
প্রহর : আই ওয়ান্ট টু হেইট ইউ । আই জাস্ট ওয়ান্ট টু হেইট ইউ… তুমি আমার জীবনের অংশ নও । তুমি ওই অমানুষের বোন যে আমার আপির জীবন বরবাদ করেছে । দেখো আজকে অমনই এক মানুষ তোমার জীবনে আসতে চলেছে । কিন্তু আমি তোমার ভাইয়ার মতো না। আমি তোমার কোনো ক্ষতি হতে দিবোনা। বিকজ আই স্টিল লাভ ইউ।

.

পরদিন…
মেরিন : ভাইয়া… ভাইয়া।
প্রহর দরজা খুলল।
প্রহর : আপি।আসো ভেতরে আসো।
মেরিন ভেতরে ঢুকলো।
প্রহর : কি হয়েছে আপি?তোমাকে এমন লাগছে কেনো?
মেরিন : প্রচন্ড মাথা ব্যাথা করছে।
প্রহর : মেডিসিন নিয়েছো?
মেরিন : শেষ হয়ে গিয়েছে।
প্রহর : তুমি বসো আমি এখনই নিয়ে আসছি।
প্রহর ছুটে বের হলো।
মেরিন : সরি ভাইয়া। বাট আই নিড টু নো দ্যা ট্রুথ।
মেরিন খুজে ডাইরী বের করলো। পড়ে বুঝতে পারলো যে ওর সন্দেহই ঠিক। মেরিনের চোখ থেকে পানি পড়তে লাগলো। এরই মধ্যে প্রহর ফিরে এলো।
প্রহর : আপি তো…
মেরিনের হাতের ডাইরী দেখে থেমে গেলো। র হাত থেকে ঔষধ পরে গেলো। মেরিন প্রহরের দিকে এগিয়ে গেলো। ঠাস করে ১টা থাপ্পর মারলো।
মেরিন : বোনকে ভালোবাসার মানে এই নয় যে নিজের সকল শখ আহ্লাদ বিসর্জন দিবে ভাইয়া। মা-বাবা-ভাই-বোনা-লাভার … সবার জন্যই আলাদা আলাদা ভালোবাসার জায়গা থাকে। ১জনকে বেশি ভালোবাসা দিয়ে অন্যজনকে কম ভালোবাসার মানে এটা যে যাকে বেশি ভালোবাসা হলো তাকে অপমান করা হলো। আজকে আমি নিজের কাছে নিজে এতোটা ছোট হয়ে গিয়েছি যে আয়নাতে নিজেকে দেখতে পারবোনা। ক্ষীরবাদুরের সাথে যা হওয়ার আমার সাথে হয়েছে। যদি জমজ ভাইদের মধ্যেও ১জন খুন করে তবেও ওই ১জনকেই শাস্তি দেয়া হয়। অন্যজনকে নয়। কি ভেবেছিলে? আপির জন্য নিহারিকাকে বিসর্জন দিয়েছি সেটা জানলে আপি খুব খুশি হবে? সাবাসী দিবে? তোমাদের দুজনের এই ভুল ধারনার জন্য নিহারিকার জীবন আজকে বরবাদ হতে চলেছে। আসলে তোমাদের জন্য নয়। আমাদের জন্য ।আমার আর নীড়ের জন্য। কেবল আর কেবল আমাদের জন্য।
বলেই মেরিন বেরিয়ে গেলো।

.

নীড় সেই ফ্ল্যাটের বাহিরে পৌছালো যেই ফ্ল্যাটে ও আর মেরিন ৬টা মাস ছিলো। ও ফ্ল্যাটটা আজও বিক্রি করেনি। আর ১টা চাবি আজও রেখে দিয়েছে নিজের কাছে । তবে ও একটু অবাক হলো। কারন তালা সেই পুরোনোটাই ঝুলছে কিন্তু সেটা নতুনের মতোই চকচক করছে। নীড় তালা খুলে ভেতরে ঢুকে আরো অবাক হলো। ৫বছর বন্ধ হয়ে থাকলে কোনো জায়গা যেমন নোংরা হয়ে থাকার কথা তেমন নোংরা হয়ে নেই। ফ্ল্যাটটা দেখে মনেহচ্ছে যে বড়জোর ১মাস ধরে পরিষ্কার করা হয়নি বা কেউ পা রাখেনি । নীড় সুইচ চেপে দেখলো আলোও জ্বলছে। ফার্নিচার গুলো ঢেকে রাখা। সবকিছু নিজনিজ জায়গাতেই আছে। নীড়ের আর বুঝতে বাকী রইলোনা যে প্রায়ই মেরিন এখানে আসে । ওরকাছেও তো চাবি ছিলো।
নীড় : তবে তুমি ঢাকাতেই আছো… এই ফ্ল্যাট আমার থেকেও তোমার কাছে মূল্যবান। সেটা বোঝাই যাচ্ছে।
নীড় পুরো ফ্ল্যাট ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগলো। ২টা বেডরুমের এই মাঝারি সাইজের ফ্ল্যাটটার প্রতিটা কোনায় কোনায় ওদের স্মৃতি জরিয়ে আছে। কখনো কখনো ছোটছোট রোম্যান্স করেছে আর বেশিরভাগ সময় বড়বড় ঝগড়া। ১টা ঝগড়ার কথা ভেবে নীড় হাসলো। চোখের সামনে সেই ঝগড়াই কল্পনা করতে লাগলো। মারামারি করছে ওরা দুজন। মারামারি করতে করতে মিশে গেলো হাওয়ায়। নীড় জায়গা পরিবর্তন করলো । মনে পরলো অন্যমনস্ক হয়ে মেরিনকে কিস করার কথাটা। আর তার পরিবর্তের মেরিনের অদ্ভুত রিয়্যাকশন।
নীড় : পাগলি…
সবশেষে ঢুকলো ওদের বেডরুমটায়। রুমটায় বেশিক্ষন থাকা সম্ভব হলোনা। বেরিয়ে এলো।
নীড় : তুমি এখানেই আছো। খুজে বের করবো তোমাকে। ফ্রাইডে এনগেজমেন্টটা শেষ হোক। তোমাকে তো আমি খুজে বের করবোই।

.

৩দিনপর…
রবিন : তুমি এরজন্য আমাকে সিঙ্গাপুর থেকে ডেকে আনলে এখানে বাবাই?
মেরিন : হামম।
রবিন : ওদের বাড়ির মেয়েকে ওরা জেনেশুনে আগুনের কুয়োয় ফেলছে এতে আমরা কি করতে পারি?
মেরিন : নিহারিকাকে ভাইয়ার বউ করে এনে।
রবিন : কি বলছো কি বাবাই? ওই পরিবারের সাথে সম্পর্ক গরবো? অসম্ভব কোনোদিনো না। একভুল দুবার করেনা মানুষ। আর ওরা যা তোমার সাথে করেছে এবার নিজেরা সেটা ভোগ করতে চলেছে। যদিও চাই যেনো মেয়েটার জীবন নষ্ট না হয়।
মেরিন : মামা চোখের বদলে চোখ এর মতো ঘটনা যদি ঘটে তাহলে পুরো পৃথিবী অন্ধ হয়ে যাবে। আর ওরা মানুষ হিসেবে ভালো সেটা তু্মি অগ্রাহ্য করতে পারবেনা। আর নিহারিকা খুব ভালো মেয়ে।
রবিন : ওরা কেমন সেটা ৫বছর আগেই প্রমান হয়ে গিয়েছে।
মেরিন : মামা ভাইয়া আর নিহারিকা একে অপরকে ভালোবাসে…
রবিন : কি ? ওর এতোবড় সাহস ও ওই পরিবারের মেয়েকে ভালোবাসে? এমন ছেলেকে তো …
মেরিন : মামা মাথা ঠান্ডা করো। ওরা একে অপরকে ভালোবেসেছে অনেক আগে কিন্তু নিজেদেরকে নকল ঘৃণা করেছে ওই ঘটনার পর থেকে । মামা যদি আমার জন্য ওদের ভালোবাসা পূর্নতা না পায় তবে আমি বাঁচতে পারবোনা মামা। অনুমতি দিয়ে দাও মামা। রাজী হয়ে যাও মামা।
রবিন : আমার অনুমতিতে কি হবে? আমার একার রাজীতে কি হবে? নিহারিকার বাবা-মা আর স্বয়ং নিহারিকার কি করবে? বলো? জোর করে সম্পর্ক গড়ার ভয়াবহ পরিনাম সবাই ভোগ করেছি আমরা।
মেরিন : তোমার মত আছে কিনা তুমি আমাকে জাস্ট সেটা বলো।
রবিন : তোমার কথা আমার পক্ষে ফেলা সম্ভবনা বাবাই। আমি রাজী। কিন্তু কিছু করার নেই। আজকে নিহারিকার এনগেজমেন্ট।
মেরিন : এনগেজমেন্ট মানেই বিয়েনা। আর এনগেজমেন্ট হয়তো হয়েওনি এখনো । আর আমি হতে দিবোনা। তোমার ভাগনি আমি মামা। মেরিন বন্যা খান। তোমার মতোই জেদী । নিহারিকা ভাইয়ারই বউ হবে।
বলেই মেরিন বেরিয়ে গেলো।।
রবিন : আবার ওদের মুখোমুখি হতে হবে। ওহ নো বাবাই যে গেলো ওকে তো কতো কতো কথা শুনতে হবে। বাবাই এগুলো সহ্য করতে পারবে। না না… একদম পারবেনা। অপমান করবে ওরা। আই হ্যাভ টু গো। আই হ্যাভ টু গো।
প্রহর : বাপি ততুমি…
রবিন : ভালোবাসাকে ঘৃণার নাম যে ছেলে দেয় সে আমার ছেলে হতে পারেন।
প্রহর মাথা নিচু করে রাখলো। রবিন যেতে নিলো।
প্রহর : কোথায় যাচ্ছো বাপি?
রবিন : তোমার আপি তোমার জন্য যেচে অপমানিত হতে গিয়েছে । তুমি তোমার আপিকে ওর নিজের কাছেই দোষী বানাতে পারো কিন্তু আমি না। ১টা বার ভেবে দেখলেনা সত্যিটা বাবাই জানলে ওর মনের অবস্থা কি হবে? ভালোবাসাকে আগলে রাখতে হয় প্রহর । ভালোবাসা সবার ভাগ্যে হয়না। আমার বাবাইটার ভাগ্যেও হয়নি। তাই ভালোবাসার কদর করতে হয়।
রবিন আর দেরি না করে বেরিয়ে পরলো।

.

এনগেজমেন্টের অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গেলো। নীড়ের মনে পরছে ওর আর মেরিনের এনগেজমেন্টের কথা। চোখ বন্ধ করে কল্পনা করতে লাগলো।
হিয়া : জানু… মনে পরলো আমাদের এনগেজমেন্টের কথা! ঘরোয়াভাবে ছিলো কিন্তু এনগেজমেন্ট তো বলো।
হিয়া নীড়ের হাত নিয়ে রিং ফিঙ্গারে রিংটার ওপর চুমু দিলো। নিহারিকা-ফাহিম উপস্থিত হলো। রিং আনা হলো। ফাহিম রিং হাতে নিলো। তখন মেরিন হাজির হলো।
মেরিন : এক মিনিট…
সবাই মেরিনের দিকে তাকালো। এতোবছর পর এই চেনা মুখগুলোকে দেখে মেরিনের মন ভরে এলেও নিজেকে শক্ত রাখলো।
নীড় : লালঝুটি কাকাতুয়া!
নীলিমা নিহালের হাত খামছে ধরলো।
নিহাল : মামনি…
নীড় ছুটে এলো মেরিনের দিকে।
নীড় : তু…
মেরিন ওকে ইগনোর করে নিহারিকার সামনে গেলো।
মেরিন : তোমার তরফের সত্যিটাও নিশ্চয়ই তোমার ভাইয়া জানেনা… জানলে ওর ওপর দিয়ে কি হবে জানো!
নীলিমা : ননিহাল… ননিহাল… ও এখানে কি করছে? ওকে চচলে যেতে বলো.. চলে যেতে বলো চলে যেতে বলো।
নিহাল : নীলি নিজেকে শান্ত করো। প্লিজ স্টপ।
পলক : তুমি এখানে এসেছো কোন সাহসে? হাও ডেয়ার ইউ?
নীড় : পলক… ডোন্ট ইউ ডেয়ার।
আমজাদ : তুমি ক্ষেপলে বাবা নীড়? ওকে বের করে দেয়া দরকার।
নিহাল : ডোন্ট… ডোন্ট ডু দিস।
নিহাল মেরিনের দিকে এগিয়ে গেলো।
নিহাল : ও কি বলতে চাই দেখি?
হিয়া : আংকেল ওর কথা শুনবো কেনো আমরা?
রবিন : কারন এটা নিহারিকার জীবনের ব্যাপার ।
সবাই তাকিয়ে দেখে রবিন এসেছে পেছনে প্রহরও।
নীলিমা : ওদেরকে কেউ চলে যেতে বলো। প্লিজ চলে যেতে বলো।
মেরিন : এখন তো আমি চলে যাবোনা। আমার কাজ না হওয়া পর্যন্ত যে আমি কোনো কথা কানে নেই সেটা এখানে উপস্থিত অনেকেই জানে।
নিহাল : বলো মা… মেরিন কি হয়েছে?
মেরিন : বা… আং… বাবা প্রহর আর নিহারিকা একে অপরকে ভালোবাসে। আমার আর ক্ষীর… ওর মধ্যকার ঘটনার জন্য ওরা ওদের ভালোবাসা বিসর্জন দিয়েছে।
নিহাল : কি?
মেরিন : হামম।
নীড় : নিহারিকা এটা কি সত্যি?
নিহারিকা চুপ।
নীড় : এটা কি সত্যি নিহারিকা?
নিহারিকা : না এটা সত্যি না।
মেরিন : কেনো মিথ্যা কথা বলছো নিহারিকা?
নিহারিকা : আমি কোনো মিথ্যা কথা বলছিনা।
মেরিন : ভেবে বলছো?
নিহারিকা : হামম।
মেরিন : হামম…
মেরিন ধীরে ধীরে প্রহরের দিকে এগিয়ে যেতে লাগলো আর নিহারিকাকে জিজ্ঞেস করতে
লাগলো : তাহলে তুমি ভাইয়াকে ভালোবাসোনা।
নিহারিকা : না বাসিনা।
মেরিন : নিহারিকা প্রহরকে ভালোবাসেনা…
নিহারিকা : না ভালোবাসেনা।
মেরিন : যখন নিহারিকা প্রহরকে ভালোবাসেনা তখন প্রহর বাঁচবে কেনো?
দ্রুতই কথাটা শেষ করে মেরিন সামনের টেবিল থেকে কাঁচের গ্লাসটা নিয়ে এক বারিতে ভেঙে প্রহরের গলায় ধরলো। খানিকটা কেটেও গেলো প্রহরের গলা।
নিহারিকা : প্রহর…
নিহারিকা ছুটে এলো প্রহরের দিকে। টেনে প্রহরকে সরালো।
নিহারিকা : ককতোখানি ককেটে গগিয়েছে… ররক্ত পরছে। তুমি কি মানুষ? পাগল কোথাকার।
নিহারিকা ওর হাতের রুমালটা দিয়ে কাটা জায়গায় চেপে ধরলো। চেচিয়ে বলল ‘কেউ ফার্স্ট এইড বক্স নিয়ে আসো এক্ষনি।’ মেরিন হাসলো।

.

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here