তোমার_হতে_চাই ২ part : 8 writer : Mohona

0
118

#তোমার_হতে_চাই ২
part : 8
writer : Mohona

.

২মাসপর…
নীড় আমেরিকা ফিরলো আর মেরিন বাংলাদেশ।
প্রান্তিক : চাচ্চু…
প্রান ছুটে নীড়ের কোলে এলো ।
নীড় : আমার প্রানবাচ্চাটা কেমন আছে?
প্রান্তিক : ভালো।
প্রনয় : এই তোর ২মাস?
নীড় :হয়ে গেলো দেরি দাদাভাইয়া।
প্রনয় : তোকে এমন লাগছে কেনো? কতো শুকিয়ে গিয়েছিস। চুল-দাড়ি-গোফের হাল এমন কেনো? পাগল লাগছে পুরো। মেন্টাল অ্যাসাইলামের পেশেন্টদেরও এমন অবস্থা থাকেনা। রিসার্চে কি এতো ডুবে যেতে হয়?
নীড় : সময় কোনদিক দিয়ে গিয়েছে বুঝতেই পারিনি…
প্রনয় :হামম। ফ্রেশ হয়ে নিয়ে নিজের অবস্থা ঠিক কর। রাতের মধ্যে তোকে মানুষরূপে দেখতে চাই। ইটস অ্যান অর্ডার।
নীড় : হামম দাদাভাইয়া।
নীড় নিজের রুমে গেলো।
প্রনয় : ওকে দেখে এমন কেনো মনে হচ্ছে ওর মনে নতুন করে তুফান উঠেছে? মেরিনের সাথে কি তবে দেখা হয়েছিলো লন্ডনে? আমি একটা কথা এই ৫বছরেও বুঝলামনা। নীড় কি মেরিনকে ভালোবেসে এমন হয়েছে! যদি ভালোবেসেও থাকে তবে এতো ভালো কবে বাসলো? আর ওকে বলেছিলামই যদি মেরিনকে ক্ষমা করতে চায় তবে যেনো করে দেয়? তাহলে!

.

বাংলাদেশে…
কনিকা : বড্ড শুকিয়ে গেছে মা।
মেরিন : সব মায়েরাই সেইম ডায়লগ মারে। আমি ভেবেছিলাম তুমি কিছু নতুন বলবে।
কনিকা : আমার ডলটার মুখে কেমন বিষন্নতার ছাপ। যতোই মেকআপের আড়ালে ঢেকে রাখা হোকনা কেনো মা কিন্তু ধরে ফেলেছি।
মেরিন : ভালো করেছো।
কনিকা : রাতে কি খাবে?
মেরিন : তোমার যেটা ইচ্ছা রান্না করো ।
কনিকা : হামম। মারে তোর মনটা খারাপ লাগছে । কি হয়েছে?
মেরিন : কিছুনা। টায়ার্ড । ঘুম পাচ্ছে। একটু ঘুমাবো।
কনিকা : হামম।

.

৩দিনপর…
মেরিন : তামিম কেসটা কি?
তামিম : ম্যাম ওপেন এন্ড শাট কেইস। এন্ড ভেরি কমন। শ্বাশুরির হাতে বউমা খুন। শ্বাশুরিটা জাদরেল টাইপ মানুষ।
মেরিন : কেইসটা নিয়ে কথা বলতে এসেছিলো কে?
তামিম : শুনে বিশ্বাস করবেননা কে?
মেরিন :কে?
তামিম :বউমার মা।
মেরিন : ইন্টারেস্টিং।
তামিম : শ্বাশুরিজাতটাই খারাপ।
মেরিন : একজনের জন্য সব শ্বাশুরিকে দোষ দিওনা। আচ্ছা শ্বাশুরির সাথে দেখা করবো। ব্যাবস্থা করো। আর তুমি পারমিশন নিয়ে ক্রাইম সিনে যাও।
তামিম : জী ম্যাম।

.

আমেরিকাতে…
হিয়া : জান…
নীড় হসপিটাল থেকে বের হতেই হিয়া ছুটে এসে নীড়কে জরিয়ে ধরলো। ।
হিয়া : আই মিসড ইউ সো মাচ।
নীড় : দেখি ছারো আমাকে। সবাই দেখছে।
হিয়া : দেখুক। তুমি আমার সম্পত্তি।
নীড় : হিয়া প্লিজ।
হিয়া ছেরে দিলো ।
হিয়া : আমার স্লিভটা ওপরে তোলো।
নীড় : হুয়াট?
হিয়া : হামম। তুলোনা বাবা।
নীড় : আই ডোন্ট লাইক দিস হিয়া। আর তুমি সেটা খুব ভালোমতোই জানো।
হিয়া : ইটস নাথিং ডার্টি ডার্লিং। সারপ্রাইজ আছে। প্লিজ। এই রিকুয়েস্টটা রাখো। প্লিজ প্লিজ প্লিজ।
নীড় অন্যদিকে তাকিয়ে স্লিভটা ওপরে তুলল।
হিয়া : অন্যদিকে তাকিয়ে থাকলে সারপ্রাইজটা দেখবে কি করে?
হিয়া নীড়ের গালে হাত রেখে নিজের দিকে ঘুরালো। নীড় একরাশ বিরক্তি নিয়ে তাকালো। দেখলো ওর নামের ট্যাটু।
হিয়া : হাও ইজ ইট? ডু ইউ লাইক ইট ?
নীড় : আই ডোন্ট লাইক ইট ।
হিয়া : আমি এতো ভালোবেসে তোমার নামের ট্যাটু করলাম। আর তুমি…
নীড় : ট্যাটু স্যাটু দিয়ে কখনো ভালোবালা প্রুভ হয়না।
হিয়া : কি করলে বুঝবে যে আমি তোমাকে ভালোবাসি?
নীড় : আমি জানি আর বুঝি যে তুমি আমাকে ভালোবাসো।
হিয়া : কিন্তু তুমি আমাকে ভালোবাসোনা। তাইনা?
নীড় চুপ। হিয়া নীড়ের মুখে মাথা রাখলো।
হিয়া : আজও এই জায়গাটায় কেবল তারই নাম । তাইনা?
নীড় চুপ।
হিয়া : তার চেহারা তোমার হৃদয়ে গাথা। তাইতো?
নীড় এবারও চুপ।
হিয়া : তোমার ওই চেহারা খুব প্রিয়। তাইনা? বেশ তুমি যদি চাও তাহলে আমি প্লাস্টিক সার্জারি করাবো। একদম ওর মতো করবো।
নীড় হিয়াকে সরালো।
নীড় : দেখো হিয়া নীড় আহমেদ চৌধুরী বর্ষন কখনো চেহারা দিয়ে কাউকে বিচার করেনা। পাগলামী করোনা। ডোন্ট বি সিলি। লাভ ইউরসেল্ফ।
বলেই নীড় চলে গেলো।

.

ঢাকায়…
১০দিনপর…
মেরিন : তামিম।
তামিম : জী ম্যাম?
মেরিন : কেসটা কােন জাস্টিসের আন্ডারে?
তামিম : জাস্টিস ইরিন জামান।
মেরিন : ড্যাম। পাবলিক প্রসিকিউটর কে?
নীর : ইটস মি ম্যাডাম।
মেরিন দরজার দিকে তাকালো ।
মেরিন মনেমনে : ওহ শীট।
নীর : মে আই কাম ইন?
মেরিন : প্লিজ কাম।
নীর : হাই।
মেরিন : হ্যালো।
নীর : ফিলিং লাকি বিকজ ইটস ইউ।
মেরিন : ফিলিং আনলাকি বিকজ ইটস ইউ।
নীর : যখন শুনলাম যে ডিফেন্স আপনি তখন আমি এক সেকেন্ড নেইনি কেসটা নিতে। কারন এই কেসে দুদিকেই আমার জিত। জিতলেও আমি জিতবো আর হারলেও আমি জিতবো। কারন প্রতিপক্ষ আপনি। বাট ইউ নো হুয়াট? আপনি হারতে চলেছেন।
মেরিন : উই উইল সি।
নীর : আসি। কালকে দেখা হচ্ছে কোর্টে। বাই মিসি।
মেরিন : বাই।
নীর : বাই! টি-কফি অফার করবেননা!
মেরিন : না। প্রতিপক্ষকে কেসের আগে আমি কিছু অফার করিনা । কোথাও যদি কিছু হয়ে যায় তাহলে দোষটা আমার ঘারে পরবে। বাট নো ওয়ারি কেসটা জেতার পর আমি আপনাকে ট্রিট দিবো।
নীর : উল্টোটাও হতে পারে। বাই।

.

আমেরিকাতে…
নীড় অবাক চোখে দেখছে হিয়াকে। হিয়া মেরিনের মতো হেয়ারকাট দিয়েছে । ওরমতোউ হেয়ার কালার করেছে। হাতভরে চুরি পরেছে। কারন মেরিনের স্বভাব প্রায় সবকিছুর সাথেই চুরি পরা। কিছুটা ওজনও বারিয়েছে। খানিকটা গুলুমুলুও লাগছে। পোশাকও পরেছে মেরিনের মতো। সেজেছেও মেরিনের মতো । টিপও দিয়েছে। পোশাকটা বুঝলো যে নিলার কাছ থেকে শুনেছে বা ছবি দেখেছে ।কিন্তু বাকীসব দেখে নীড় অবাক হলো। কারন কাউকে সরাসরি না দেখলে এমন করে কপি করা যায়না।
নীড় : এটা কি নতুন পাগলামো?
হিয়া : হামম। কেমন লাগছে আমায়?
নীড় : তুমি কিন্ত আজও হিয়াই আছো।
হিয়া : হামম। কিন্তু তোমার পছন্দের রঙে সেজেছি ক্ষীরবাদুর।
নীড় কিছু বলতে নিলো কিন্তু ওর মামার কন্ঠস্বর শুনে থেমে গেলো।
নীড় : মামা…
নীড় ছুটে নিচে গেলো। নীড়ের মামা আমজাদ এসেছে নিহারিকার এনগেজমেন্ট-বিয়ের গহনা কিনতে আর চৌধুরীদের দাওয়াত দিতে। দেশে যাওয়ার কথা শুনে সকলের চেহারার রং উড়ে গেলো। কিন্তু আমজাদেরও তো নীলিমা একমাত্র বোনই। বোনকে ছারা কি করে মেয়ের বিয়ে দেয়। তাই নীলিমার হাত ধরে কেঁদে দিলো। সবাই বাধ্য হলো যাওয়ার জন্য রাজী হতে।
নীড় মনেমনে : কেনো আবার ভাগ্য বাংলাদেশে টানছে?কি আছে আবার ভাগ্যে? আমি ক্লান্ত। জানিনা লালঝুটি কাকাতুয়া তুমি কোথায়? কোথায় গিয়ে তোমাকে পাবো? তোমার কাছে যে ক্ষমা চাওয়ার আছে । অন্যায় করে ফেলেছি তোমার সাথে। ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত যে আমার শান্তি নেই। এতো ভীরেও আজ আমি একা লালঝুটি কাকাতুয়া। ভীষন একা। তোমাকে ভীষন করে প্রয়োজন । ভীষন।তোমাকে ছারা আমি বড্ড একা। দেখি ভাগ্য কেনো বাংলাদেশে নিচ্ছে? পাই কিনা তোমার দেখা…

.

ঢাকাতে…
পরদিন…
জজ আগামী শুনানির তারিখ দিয়ে মুলতবি করে চলে গেলো। কেসটা ৭০শতাংশ নীরের দিকে।
নীর : শতভাগ জেতার রেকর্ড হয়তো ভাঙতে চলেছে ম্যাডাম। সরি ফর ইউ।
মেরিন : মিথ্যা সাক্ষি সাজানো খুব সহজ মিস্টার রহমান।
নীর : নো নো। নীর রহমান কখনে সাক্ষি আনেনা ম্যাডাম। এদিক দিয়ে কিন্তু আমার রেকর্ডও 100%।
মেরিন : আই নো।
নীর : তাহলে বললেন কেনো?
মেরিন : আমি আপনার কথা বলিনি।
নীর : অদ্ভুত তো আপনি প্রতিপক্ষ আমি। অথচ আপনি বলছেন আমাকে বলেননি!
মেরিন : হামম। আপনাকে বলিনি। কেউ তো আছে। তাকে বলেছি। বাই দ্যা ওয়ে গুড লাক।
নীর : গুড লাইক উইশ তো আপনার দরকার।
মেরিন : মে বি ইয়েস অর নো। হু নেভার নো।
বলেই মেরিন চলে গেলো।
নীর : এই মেয়ে কি রে….
মেরিন : তামিম গাড়ি ঘোরাও তো ।
তামিম : কেনো ম্যাম?
মেরিন : ক্রাইম সিনে চলো।
তামিম : জী ম্যাম।
ওরা ক্রাইম সিনে পৌছালো। ওরা সবার সাথে কথা বলল।
মেরিন : রানীর বেডরুম এবং ম্যাডাম ইরিন জামানের বেডরুমটা কোনটা?
বাড়ির কাজের লোকটা নিয়ে গেলো। মেরিন আর তামিম খুব ভালো সবটা পর্যবেক্ষন করে দেখলো । কিছু সুত্র পেয়েও গেলো। পরের শুনানীতে সেগুলো মেরিনের অনেক কাজে দিলো। বেশ অনুকূলে ছিলো সেদিনেরটা। কিন্তু তৃতীয় শুনানীতে আবার নীরের পাল্লা ভারী হলো। চতুর্থ শুনানীতেও মেরিনের লাভ হলোনা। মেরিন ১টা শেষ সুযোগ চেয়ে নিলো। মেরিন বেশ চিন্তায় পরে গেলো । তবে কি ও ভুল লোকের সঙ্গ দিলো? ইরিন জামান কি তবে সত্যিই অপরাধী ! মেরিনের মাথা কাজ করছেনা। মেরিনের দৃষ্টি পরলো হাতের আংটির ওপর।
মেরিন : রানীর এনগেজমেন্ট রিং ওর ভাসুরের হাতে কেনো? তামিম।
তামিম : জী ম্যাম।
মেরিন : মনে করো তোমার এনগেজমেন্ট বা বিয়ের পর তোমার বউ মরে গেলো…
তামিম : ম্যাম কি ভয়ংকর কথা বলছেন। এখনো তো এনগেজমেন্টই হলো আর আপনি আমার গার্লফ্রেন্ডকে মেরে দিলেন?
মেরিন : অবুঝের মতো কথা বলােনা তো। মনেকরতে বলেছি ।
তামিম : জী ম্যাম মনে করলাম।
মেরিন : তো তোমার বউ বা হবু বউয়ের মৃত্যুর পর তোমার বউয়ের এনগেজমেন্ট রিং কার কাছে থাকবে?
তামিম : আমার কাছে থাকবে।
মেরিন : যদি ওটা অন্যকোনো ছেলের লিটল ফিঙ্গারে থাকে তাহলে সেটার মানে কি?
তামিম : আপনি আমাকে এই প্রশ্ন করছেন!
মেরিন : হামম।
তামিম : কেনো?
মেরিন : কারন আমি তোমার কাছ থেকে উত্তরা জানতে চাই ।
তামিম : আমার বউ পরকীয়ায় লিপ্ত ছিলো। আর না হয় ছেলেটার ভালোবাসা একতরফা ছিলো ।
মেরিন : কারেক্ট।
পরের এবং শেষ শুনানীতে মেরিন প্রমান করে দিলো যে ভাসুর খুনী। কিন্তু খুনটা ভুল করে হয়েছে। মেরিন জিতে গেলো।
নীর : কি চিজ আপনি ম্যাডাম…! জাস্ট ফাটাফাটি । যাই হোক ডিনার কিন্তু পাওনা রইলো।
মেরিন : মেরিন কিছু বাকী রাখেনা। আজ রাত ৮টায় ইন্টারকন্টিনেন্টালে প্লিজ আসবেন।
নীর : অবশ্যই।
রাতে নীর গেলো । কিন্তু সেখানে মেরিন নয় তামিম ছিলো।
নীর : বাহ কি কপাল আমার!
তামিম : কপাল তো আমার খারাপ। আপনার সাথে ডিনারে আসা হলো।

.

মেরিনের কোমড়ের দিকটার ব্যাথা আজকে বেরেছে। লন্ডনে থাকার সময় ডক্টর কিছু নিয়ম দিয়েছিলো আর বলেছিলো সেগুলো স্ট্রিক্টলি ফলো করতে। আর মেডিসিন নিতে । লেফ্ট কিডনীতে সামান্য একটু সমস্যা দেখা দিয়েছে। মেডিসিন আর কিছু নিয়মের মাধ্যমেই ঠিক হয়ে যাব বলেছে। কিন্তু মেডিসিন নিতে ওর কোনোসময়ই ভালো লাগেনা।
রবিন : বাবাই…
মেরিন : হ্যা মামা
রবিন : কি হয়েছে বলো তো বাবাই? তোমাকে এমন লাগছে কেনো? খারাপ লাগছে? তুমি কি অসুস্থ?
মেরিন : আমি ঠিক আছি মামা। একদম ঠিক আছি।
রবিন : আবার ঢাকা যাবে কবে?
মেরিন : পরশু মামা।
রবিন : আচ্ছা তবে রেস্ট করো বাবাই।
মেরিন : মামা।
রবিন : হ্যা বাবাই?
মেরিন : কি বলার ছিলো?
রবিন : জরুরী কিছুনা বাবাই। সকালে কথা হবে।
রবিন চলে।
মেরিন : আজকে আমার মামা পর্যন্ত আমার সাথে কথা বলতে সংকোচবোধ করছে… আচ্ছা যদি কখনো মামা সত্যিটা জানতে পারে তাহলে কেমন করে রিয়্যাক্ট করবে? আমাকে কি ক্ষমা করতে পারবে! কিন্তু আমি কি ক্ষমার যোগ্য? মামা… সরি।। যে শাস্তিই দাওনা কেনো মেনে নিবো । তবুও বলতে সাহস পাইনা তোমাকে।

.

নীড়রা ঢাকা এসে পৌছালো। নিজেদের বাসায় ব্যাগটাাগ রেখে সবাই নিহারিকাদের বাসায় গেলো । কথাবার্তা বলল । নীড় বেশ বুঝতে পারছে নিহারিকার মন খারাপ। ও নিহারিকাকে ডেকে নিয়ে গেলো।
নিহারিকা : কি হয়েছে ভাইয়া?
নীড় : কি হয়েছে তোমার?
নিহারিকা : আমার আবা কি হবে ? কিছুইনা। আমি একদম ঠিক আছি।
নীড় নিহারিকার মাথায় হাত রাখলো।
নীড় : আমি তোমার ভাইয়ারে ভাইয়া। নীড় ভাইয়া। তোমার মুখ বলে দিচ্ছি যে তুমি ঠিক নেই। তুমি খুশিনা এই বিয়েতে। তোমাকে কি জোর করে বিয়ে দেয়া হচ্ছে? অন্যকাউকে ভালোবাসো?
নিহারিকা : না ভাইয়া। আমি অন্যকাউকে ভালোবাসিনা। আর আমাকে জোর করেও বিয়ে দেয়া হচ্ছেনা।
নীড় : সত্যি তো?
নিহারিকা : হ্যা ভাইয়া।
হিয়া : কি কথা হচ্ছে ভাইবোনের মধ্যে? ভাবি কি একটু শুনতে পারে ?
নিহারিকা : আসো হিয়া আপু।
হিয়া : আপু না। ভাবি বলো ভাবি। হিয়া ভাবি।
নিহারিকা : হিয়া ভাবি।
নীড় : তোমরা কথা বলো আমি আসছি।
হিয়া : কোথায় যাচ্ছো?
নীড় : কাজ আছে।
বলেই নীড় বেরিয়ে গেলো।
হিয়া মনেমনে : মেরিনের সাথে দেখা করতে যায়নি তো? না না মেরিনকে তো প্যারিসে দেখলাম। নিহারিকাকে জিজ্ঞেস করে দেখি।
হিয়া : নিহারিকা।
নিহারিকা : জী ভাবি।
হিয়া : মেরিনদের সাথে তোমার দেখা হয়?
নিহারিকা : কিভাবে হবে ভাবি? ওরা তো এই শহর ছেরে দিয়েছে।
হিয়া : ওহ।
মনেমনে : যাক বাবা কোনোভয় নেই।
নিহারিকা : ভাবি ওখানে আমাদের খোজ হতে পারে। চলো।
হিয়া : হ্যা চলো।
নিহারিকা মনেমনে : ভাইয়া তুমি ঠিকই ধরেছো। আমি কাউকে ভালোবাসি। কিন্তু এখন সেই ভালোবাসা ঘৃণার অন্তরায়। ঘৃণা করি আমি প্রহর মাহমুদকে।

.

নিহারিকাদের বাসা থেকে বেরিয়েই নীড় দেখে যে ওর তিন প্রানের বন্ধু দারিয়ে আছে। সূর্য-আকাশ-রাব্বি ।
নীড় : তোরা…
আকাশ : হামম। আমরা । কেমন আছিসরে তুই?
নীড় : ভালো। তোরা কেমন আছিস?
সূর্য : ভালো।
নীড় : আর ইমান?
রাব্বি : হয়তো ভালো আছে।
নীড় : এমন করে কেনো বলছিস বল তো?
রাব্বি : তো কেমন করে বলবো? এতোকিছুর পরও ও মেরিনের সাপোর্টে। বিশ্বাসই করতে চায়না। তোকেই সন্দেহ করে।
আকাশ : আচ্ছা বাদ দে তো । আজকে আমরা বন্ধুরা মিলে খুব আড্ডা দিবো।
নীড় : না… ইমানদের বাসায় যাবো।
তিনজন : কি?
নীড় : হামম।
কিন্তু গিয়ে দেখলো ইমান বাসায় নেই।

.

মেরিন হাইকোর্ট থেকে বের হচ্ছে তখন প্রহর এসে হাজির হলো।
মেরিন : ভাইয়া তুমি?
প্রহর : হ্যা আপি আমি।
মেরিন : হঠাৎ ঢাকাতে?
প্রহর : হামম। একটা মিটিং আছে কালকে। তাই আজই চলে এলাম।
মেরিন : ওহ।
প্রহর : আজকে অনেকদিন পর ভাইবোন ঢাকা ঘুরবো।
মেরিন : আজ হবেনা ভাইয়া। ইনভেস্টিগেশনে যেতে হবে যে।
প্রহর : ওকে দেন কালকে।
মেরিন : ট্রাই করবো।
প্রহর : ট্রাই? কোনো ট্রাইনা। আপি প্লিজনা।
মেরিন : ওকে বাবা ওকে।

.

পরদিন…
নিহারিকা ওর উডবি ফাহিমের সাথে এনগেজমেন্ট রিং পছন্দ করতে আর কিছু কেনাকাটা করতে বের হলো । আর ওদিকে প্রহর-মেরিনও ঘুরতে বের হলো। ১টা পর্যায়ে ওরা একই শপিং মলে পৌছালো। ফাহিমের নজর পরলো মেরিনের দিকে।
ফাহিম : ওয়াও বিউটি…
নিহারিকা : কিছু বললেন?
ফাহিম নিহারিকার কাধে হাত দিয়ে
বলল : ইউ আর টু হট ডার্লিং।
নিহারিকা কাধ থেকে ফাহিমের হাত সরিয়ে দিলো।
ফাহিম মনেমনে : সেই হট বিউটি কোথায় গেলো? চোখের নেশা ধরিয়ে গেলো।
ফাহিম : ডার্লিং চুজ করো আমি আসছি।
ফাহিম মেরিনকে খুজতে গেলো । ও বেরিয়ে যেতেই প্রহর আর মেরিন ওই শপটাতে ঢুকলো। প্রহর নিহারিকাকে দেখলো । ঘৃণা এক জায়গায় আর ভালোবাসা এক জায়গায়। এতোবছর পর নিজের ভালোবাসার মানুষকে দেখে প্রহরের যে কি আনন্দ হচ্ছে সেটা কেবল প্রহরই জানে।
মেরিন : ভাইয়া এমন করে কাকে দেখছে!
মেরিন এগিয়ে গেলো। দেখলো প্রহরের বরাবর নিহারিকা দারিয়ে আছে। মেরিনের ভীষন আনন্দ হলো।
মেরিন : নিহারিকা…

.

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here