ভালোবাসার_চেয়েও_বেশি 💞💞 #লেখিকা-Mehruma Nurr #পর্ব-১০

0
515

#ভালোবাসার_চেয়েও_বেশি 💞💞
#লেখিকা-Mehruma Nurr
#পর্ব-১০

★ক্লাসে বসে আছে নূর।পাশেই তানি বসে মোবাইল গুতাচ্ছে। একটু আগেই প্রফেসার ক্লাস নিয়ে চলে গেছে। কিছু স্টুডেন্ট ক্লাসেই বসে আছে, আর কিছু বাইরে চলে গেছে।
নূর অনেকক্ষণ যাবত একটা ম্যাথ নিয়ে বসে আছে। কিন্তু কিছুতেই বুঝতে পারছে না। একটু পর তানিকে জিজ্ঞেস করলো।
…এই তানি, তুই কি এই ম্যাথটা বুঝতে পেরেছিস?বুঝতে পারলে আমাকেও একটু বলনা?

তানি একটা ক্যাবলা মার্কা হাসি দিয়ে বললো।
…নূর তুই দুনিয়াতে আর মানুষ পেলি না?আমার মেধা সম্পর্কে তোর ধারণা নেই? যেখানে তুইই বুঝতে পারছিস না।সেখানে আমি বোঝার তো চান্সই নেই। আর আমি ম্যাথে কতো কাচা তা তুই জানিস।

নূর একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো।
…হুম, এখন কি করবো? তুই তো জানিসই আমার আলাদা কোচিং করার টাকা বা সময় কোনটাই নেই। কোনরকমে চাচার দেওয়া টাকা দিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছি। আলাদা কোচিং করতে গেলে অনেক টাকা লাগে। আর সবচেয়ে বড়ো কথা, ছোট মা আমাকে কখনো বাসার কাজ ফেলে কোচিংএ যেতে দিবে না।স্কুল কলেজে থাকতে কোনো সমস্যা হলে চাচা দেখিয়ে দিতো।এখন তো সেও নেই। কিন্তু এখন এই নতুন ম্যাথগুলো কিছুতেই বুঝতে পারছি না। কি করি বলতো?

তানি একটু ভেবে বললো।
…আরে চিন্তা করিস না। যে কোনো একটা উপায় বের হবেই দেখিস।
তানি সামনের সিটে তাকিয়ে একটা ছেলেকে দেখতে পেল। তানি একটা রহস্যময় হাসি দিয়ে নূরকে বললো।
…এই নূর সামনে তাকা ওই ছেলেটাকে দেখ।

নূর একবার ওদিকে তাকিয়ে আবার তানির দিকে তাকিয়ে বিরক্তির সুরে বললো।
…আমি আছি আমার টেনশনে। আর তুই ছেলে দেখে বেড়াচ্ছিস?

….আরে পুরো কথাটাতো শোন।শুনেছি ওই ছেলেটা অনেক ব্রিলিয়ান্ট স্টুডেন্ট।কলেজে নাকি টপ করেছিলো। বিশেষ করে ম্যাথ অনেক ভালো পারে।

নূর ভ্রু কুঁচকে বললো।
…তো?

…তো মানে আমরা ওই ছেলেটার কাছে যেয়ে যদি একটু হেল্প চাই। নিশ্চয় মানা করবে না।

নূর বললো।
…কি বলছিস তুই? চিনিনা জানিনা এমন একটা ছেলের কাছ থেকে এভাবে হেল্প চাওয়া কেমন দেখায়?আর তুই তো জানিস।এভাবে হুট করে কোনো অপরিচিত ছেলের সাথে কথা বলতে আমার অস্বস্তি লাগে।

…আরে টেনশন নিচ্ছিস কেন?আমি আছিতো, আমি কথা বলিয়ে দিবো।আর আমরা তো ক্লাসমেট। ক্লাসমেটরা একজন আরেকজনের হেল্প করবে এটাই তো স্বাভাবিক। এতে এতো সংকোচের কি আছে। তুই চলতো।
তানি নূরের হাত ধরে একপ্রকার টেনে নিয়ে গেলো। ছেলেটার সামনে এসে দাড়ালো দুজন।

হঠাৎ ওদের দুজনকে সামনে দেখে ছেলেটা হকচকিয়ে যায়। ওদের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে।
…ইয়েস্? এনি প্রবলেম?কিছু বলবেন আপনারা?

নূরের প্রচুর অস্বস্তি লাগছে। ও মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে। তানি একটু মুচকি হেসে বললো।
…হেলো ভাইয়া, আমি তানি আর ও নূর।

…ওহ, আমি জাবিন। নাইস টু মিট ইউ।

তানি একটু বিনয়ী স্বরে নূরকে দেখিয়ে বললো।
…আসলে ভাইয়া ওর একটু হেল্প লাগতো। আপনি যদি কিছু মনে না করেন? ওকে এই ম্যাথগুলো একটু বুঝিয়ে দিবেন প্লিজ?

জাবিন একবার নূরের দিকে তাকিয়ে দেখলো। তারপর সৌজন্যমুলক হাসি দিয়ে বললো।
…ইয়া শিওর, ওয়াই নট?আমরা তো ক্লাসমেট। একজন আরেকজনের হেল্প করতেই পারি। দেখি দেখাও কোনটা বুঝতে পারছো না।

তানি খুশী হয়ে নূরকে বললো।
…দেখেছিস আমি বলেছিলাম না? ভাইয়া নিশ্চয় আমাদের হেল্প করবে। এখন ম্যাথগুলো দেখা উনাকে।
নূর মাথা নাড়িয়ে সায় দিল। তারপর বইটা খুলে ম্যাথগুলো দেখালো জাবিন কে।

জাবিন দেখে বললো। এখানেতো অনেক গুলো আছে একটু সময় লাগবে। ক্লাসেতো আবার যেকোনো সময় প্রফেসার চলে আসতে পারে। তোমরা চাইলে আমরা লাইব্রেরীতে যেতে পারি।ওখানে আমাদের কেউ ডিস্টার্ব করবে না। ভালোভাবে বুঝাতে পারবো। আর তুমি চাইলে নোটও করে নিতে পারবে। কি বলো?

তানি সাথে সাথে বললো।
…হ্যা হ্যা ঠিক আছে। এটাই ভালো হবে। কি বলিস নূর?

নূর কি করবে বুঝতে পারছে না। ওর খুব অস্বস্তি লাগছে।কিন্তু কিছু করার নেই। ম্যাথগুলো বুঝতে হলে ওনার হেল্প নিতেই হবে। তাই ও রাজি হয়ে যায়। তারপর ওরা তিনজন বেরিয়ে যায় লাইব্রেরীর দিকে। ক্লাসের বাইরে আসতেই তানির ফোনে আবিরের ম্যাসেজ আসে। তানি মুচকি হেসে নূরকে একটু সাইডে নিয়ে বলে।
…নূর শোন না? তুই জাবিনের সাথে যা।আমি একটু পরে আসছি।

নূর হকচকিয়ে বললো।
…তুই আবার কোথায় যাচ্ছিস?আর আমি একা উনার সাথে কিভাবে যাবো?

…আসলে আবির একটু আমাকে দেখা করতে ডেকেছে। তুই যা, আমি একটু পরেই চলে আসবো। ওকে?
তানি আবার জাবিনের কাছে যেয়ে বললো।
…ভাইয়া আমার একটু কাজ আছে, আমি একটু পরেই আসছি।আপনারা ততক্ষণে লাইব্রেরীতে যেয়ে বসুন ওকে?

জাবিন বললো।
…ইয়া, ইটস টোটালি ফাইন।তুমি যাও কাজ সেরে আসো।

তানি চলে গেলো। নূর অনিচ্ছা সত্ত্বেও জাবিনের সাথে গেলো।

জাবিন খুবই হাসিখুশি আর মিশুক স্বভাবের।যেতে যেতে জাবিন নূরকে অনেক কথায় বলছে আর হাসছে। নূরের বিরক্ত লাগলেও স্মিত হাসছে। নাহলে আবার রুড দেখাই তাই।

আদিত্য, মাঠের একপাশে দাঁড়িয়ে আবির আর তাসিরের সাথে কথা বলছিল। আদিত্য কথা বলতে বলতেই স্বাভাবিক ভাবেই মাথাটা এদিক ওদিক ঘুরিয়ে সামনে আনতেই, এক মূহুর্ত থেমে ঝট করে আবার সিড়ির দিকে তাকায়।আদিত্য ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে দেখে,নূর একটা ছেলের সাথে হেটে যাচ্ছে। ছেলেটা কেমন বার বার নূরের দিকে তাকিয়ে হেসে হেসে কথা বলছে। আর নূরও তাতে সায় দিচ্ছে।
মূহুর্তেই আদিত্যের মেজাজ কেমন গরম হয়ে গেলো। চোয়াল শক্ত হয়ে এলো।
আদিত্যের এমন এক্সপ্রেশন দেখে, আবির আর তাসির অবাক হয়ে গেলো। হঠাৎ ওর আবার কি হয়ে গেলো? ওরা দুজনও আদিত্যের চোখ বরাবর তাকালো।আর তাকিয়েই বুঝতে পারলো রাগের কারণ। আবির আর তাসির দুজনই মুখ টিপে হাসছে।
আদিত্য দাঁতে দাঁত চেপে বললো।
…তোরা থাক আমি এক্ষুনি আসছি।
কথাটা বলেই আদিত্য দ্রুত চলে গেলো নূরের পিছে।
আবির তাসিরকে বললো।
….বেচারা ছেলেটা। কি জানি? আজকের পর আর বেচে থাকবে কিনা কে জানে? বলেই আবিরের এক হাত দিয়ে তাসিরের একহাতে তালি দেওয়ার মতো করে হাই ফাই দিয়ে, দুজনেই হাসা শুরু করে দিল।

নূর আর জাবিন লাইব্রেরীর ভেতরে ঢুকে একটা খালি টেবিল দেখে বসার জন্য এগিয়ে যায়।
জাবিন একটা চেয়ার টান দিয়ে নূরকে বসতে বলে। নূর বসার জন্য এগিয়ে যেতেই, হঠাৎ ফ্লোরে থাকা কার্পেটের সাথে পা আটকে পরে যেতে নেয় নূর।পরে যাওয়ার আগেই জাবিন নূরের দুবাহু ধরে পরে যাওয়া আটকায়। নূর ভয়ে চোখ মুখ খিঁচে বন্ধ করে নেয়।

ঠিক সেই মূহুর্তে আদিত্য চলে আসে। নূর আর জাবিনকে ওই অবস্থায় দেখে, আদিত্যের সারা শরীরে রক্ত টগবগিয়ে ওঠে।রাগের সপ্তম সীমায় পৌঁছে যায়। চোখ দুটো লালবর্ণ ধারণ করে। হাত দুটো শক্ত করে মুষ্টিবদ্ধ করে নেয়।
দাঁতে দাঁত চেপে বজ্র কণ্ঠে বলে ওঠে।
….কি হচ্ছে এখানে??

আদিত্যের কথায় নূর এক ঝটকায় চোখ খুলে সামনে তাকিয়ে দেখে জাবিন ওকে ধরে আছে। নূর ছিটকে সরে আসে জাবিনের কাছ থেকে। তারপর আদিত্যের দিকে তাকিয়ে নূর আৎকে ওঠে। আদিত্যের এমন ভয়ংকর রক্তিম চোখ দেখে নূরের অন্তর আত্মা কেপে ওঠে। আদিত্যের হঠাৎ এতো রাগের কারণ কি নূর ভেবে পাচ্ছে না।

আদিত্যর এমন রাগ দেখে লাইব্রেরীতে যারা যারা ছিল, সবাই ধীরে ধীরে বেড়িয়ে যায়।
বেচারা জাবিনও ভয়ে শেষ। আদিত্যকে ও চেনে।আর ওর রাগ সর্ম্পকেও শুনেছে।

আদিত্য ওদের আরও কাছে এসে দাড়ালো। একবার তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে নূরের দিকে তাকিয়ে আবার জাবিনের দিকে তাকিয়ে বললো।
…কেউ বলবে এখানে কি হচ্ছে?

জাবিন কোনরকমে কাঁপতে কাঁপতে বললো।
…কককিছু না ভ ভভাইয়া আমরা তো শুধু পড়াশো….

আর বলতে পারলো না জাবিন। তার আগেই আদিত্য হাত উঠিয়ে ওকে থামিয়ে দিলো।তারপর গম্ভীর কণ্ঠে জাবিনকে বললো।
…তুমি এখন যাও এখান থেকে। পরে তোমার সাথে কথা বলবো।
জাবিন মাথা ঝাকিয়ে সায় দিল। তারপর নূরের উদ্দেশ্য বললো।
…চল নূর আমরা যাই।

জাবিনের মুখে নূরের নাম শুনে আদিত্যের রাগে যেন আরো ঘি ঢেলে দেয়। আদিত্য রাগে কটমট করতে করতে বললো।
…আমি তোমাকে যেতে বলেছি, ওকে না।সো গো রাইট নাও।

জাবিন আর একমুহূর্তও দেরি না করে দৌড়ে চলে যায় ওখান থেকে।

জাবিন চলে যেতেই আদিত্য রাগী চোখে নূরের দিকে তাকায়।নূর ভয়ে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে।

আদিত্য নূরের হাত ধরে টান দিয়ে দেয়ালের সাথে পিঠ লাগিয়ে আটকে দেয়। রাগের মাথায় ও কি করছে,তার কোন হুঁশ নেই। আদিত্য নিজের বাম হাত দিয়ে নূরের ডান হাত শক্ত করে দেয়ালে চেপে ধরে রেখেছে আর ডান হাত নূরের বাম পাশে মাথার পাশে দেয়ালে ঠেকিয়ে রেখেছে। আদিত্যের দুই হাতের মাঝখানে নূর চোখ মুখ খিঁচে দাঁড়িয়ে আছে। ভয়ে ওর হাত পা ধরধর করে কাপছে।আদিত্যর হঠাৎ এতো রাগের কারণ ও কিছুতেই বুঝতে পারছে না।

আদিত্য রাগী স্বরে বলে উঠলো।
….কি করছিলে ওই ছেলেটার সাথে এখানে? আর ওর সাহস কি করে হলো তোমাকে টাচ্ করার।আর তুমি ওর সামনে ওরকম ভীতু ফেস করে ছিলে কেন?

নূর কি বলবে। ভয়ে ওর মুখ দিয়ে কোনো কথায় বের হচ্ছে না।
নূরের চুপ থাকা দেখে আদিত্যের রাগ আরো বেড়ে যায়। আদিত্য উচ্চস্বরে বলে।
….কথা বলছো না কেন? সে ইট ড্যাম ইট।বলেই ডান হাত দিয়ে দেয়ালে একটা বারি মারে আদিত্য।

আদিত্যের এমন ধমকে নূরের অন্তর আত্মা কেঁপে ওঠে। নূর কোনরকমে কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলার চেষ্টা করলো।
… আ আআমরা ম মম্যাথ ক ককরতে…… নূর ঠিকমত বলতেই পারছে না।

নূরের অবস্থা দেখে আদিত্যের এতক্ষণে হুশ আসে। আদিত্য নূরকে ছেড়ে দিয়ে উল্টো দিকে মুখ করে দাড়ায়।চোখ বন্ধ করে চুলের ভেতর দুই হাত ঠুকিয়ে চুল টেনে ধরে নিজের রাগ কন্ট্রোল করার চেষ্টা করে আদিত্য।

কিছুক্ষণ পরে নিজেকে একটু ঠিক করে নূরের দিকে তাকায় আদিত্য। মেয়েটা ভয়ে একদম চুপসে গেছে।
আদিত্য আলতো করে নূরের হাত ধরে নিয়ে এসে চেয়ারে বসায়। নিজেও নূরের পাশের চেয়ারে বসে পরে। একগ্লাস পানি এনে নূরকে দেয় খাওয়ার জন্য। নূর পনিটা হাতে নিয়ে ঢকঢক করে খেয়ে নিল।আদিত্য নরম সুরে নূরকে বলে।
….ওঁকে রিলাক্স। এতো ভয়ের কিছু নেই। এখন বলো কি করছিলে এখানে ওই ছেলেটার সাথে। আর ওই ছেলেটা কে?

নূর একটু দম নিয়ে আদিত্যকে সব খুলে বললো।
সব শুনে আদিত্য বললো।
…তো ম্যাথ বুঝতে পারছিলে না।সেটা ক্লাস শেষে আমাকে বলতে।আমি বুঝিয়ে দিতাম।ওই ছেলেটাকে কেন বলতে গেলে?

নূর একটু অবাক হয়ে বললো।
…আপনি বুঝাবেন!

…হ্যা, কেন? আমাকে দেখে কি তোমার মূর্খ মনে হয়? লন্ডনের ইউনিভার্সিটি নিশ্চয় আমার চেহারা দেখে আমাকে সাটিফিকেট দেইনি?

নূর আরো একদফা অবাক হয়ে বললো।
আপনি লন্ডনে পড়াশোনা করেছেন?

….জ্বি ম্যাডাম। এখন বলুন দেখি কি বুঝতে পারছেন না আপনি?

নূর ওর বই বার করে আদিত্যকে দেখালো।কোথায় কোথায় ওর সমস্যা হচ্ছে?
আদিত্য সুন্দর করে সব বুঝিয়ে দিচ্ছে নূরকে।
নূরও সুন্দর করে বুঝে সেটা নোট করে নিচ্ছে।
নূর নোট করছে আর আদিত্য মুগ্ধ হয়ে নূরের দিকে তাকিয়ে আছে।
নূরের শরীর থেকে সেই মন মাতানো মিষ্টি গন্ধটা আসছে। আদিত্য ভেবে পায়না নূরের শরীর থেকে সবসময় বেলীফুলের সুভাস কোথা থেকে আসে।এটা কি কোনো পারফিউম? কিন্তু এটাতো কোনো কেমিক্যালের ঘ্রাণ না। একদম পিওর ন্যাচারাল মনে হয়। নূর টেবিলে ঝুঁকে লেখার কারণে ওর মাথাটা নিচু হয়ে আছে। আদিত্যের একটু লোভ হয়।ও এই সুযোগে নিজের মুখটা একটু নিচু করে নাকটা নূরের মাথার কাছে নিয়ে নূরের চুলের ঘ্রাণ নিতে থাকে।নূরের এই মাতাল করা ঘ্রাণে আদিত্যের নেশা ধরে যাচ্ছে। ইচ্ছে করছে আরো গভীর ভাবে এই গন্ধে মেতে থাকতে।
নূরের সেদিকে কোনো খেয়াল নেই। ও ওর মতো লিখেই যাচ্ছে।

একটু পরে আদিত্য নিজেকে একটু সামলে নিয়ে সোজা হয়ে বসে।
ম্যাথ করা শেষ হলে আদিত্য বলে।
…শেষ? নাকি আর কোথাও সমস্যা আছে?

নূর বললো।
…না না আপাতত আর কোনো সমস্যা নেই। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আমাকে হেল্প করার জন্য।

আদিত্য একটু মুচকি হেসে বললো।
…ধন্যবাদ বলতে হবে না। এরপর থেকে কোনো সমস্যা হলে সোজা আমাকে বলবে বুঝেছো?অন্য কোনো ছেলের কাছে যাবে না ওকে?

নূর মাথা নাড়িয়ে হ্যা বুঝালো।

তারপর একটু গলা খাঁকারি দিয়ে বললো।
…আর একটা কথা। খবরদার আমি ছাড়া কখনো কোনো ছেলের সামনে ভয় পাবে না।তোমার এই ভীতু মুখটা অন্য কোনো ছেলে যেন দেখতে না পায়। তুমি জানো?তোমার এই ভীতু মুখটা কতো সুন…..
আনমনেই কথাগুলো বলতে বলতে আদিত্যের হুঁশ আসে ও কি বলতে যাচ্ছিলো। তাই পুরো কথা না বলেই থেমে যায়।

নূর ভ্রু কুঁচকে তাকায় আদিত্যের দিকে। আদিত্যের কথা সব ওর মাথার উপর দিয়ে বাউন্সার যাচ্ছে। নূর কিছুই বুঝতে পারছে না আদিত্যের কথা।

আদিত্য কথা ঘুরানোর জন্য বললো।
…ঠিক আছে এখন ক্লাসে যাও।ক্লাস শেষে সময়মতো চলে এসো ওখানে।

নূর মাথা ঝাকিয়ে হ্যা বুঝায়।

আদিত্য চলে যেতে নিয়ে আবার ফিরে এসে বলে।
…আর একটা কথা। ওই ছেলেটার থেকে দূরে থাকবে বুজেঝ?

নূর কিছু না বুঝলেও মাথা ঝাকিয়ে হ্যা বুঝায়। আদিত্য চলে যায়।
নূর বসে ভাবে, উনার আজ কি হয়েছে? কেমন অদ্ভুত বিহেব করছে।
তারপর নূরও উঠে ক্লাসে চলে গেলো।

চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here