মিশে_আছি_তোমাতে ❤ #Nusrat_Jahan_Bristy #Part_3

0
280

#মিশে_আছি_তোমাতে ❤
#Nusrat_Jahan_Bristy
#Part_3

“ওকে তাহলে শোনো ওই পেপার‌‌ গুলোই আমাদের বিয়ের কাবিন নামা আর রেজিস্ট্রেশন ফরম ছিলো যেটাতে সাক্ষী হিসেবে তোমার সব বন্ধুরা সাইন করেছিলো।”

তিশা আবিরের কথা শুনে হতভম্ব হয়ে বলে, “হোয়াট? কিন্তু লোকটা তো বলেছিলো এই রেস্টুরেন্টের নিয়ম নাকি সাইন করে খাবার‌ অর্ডার করতে হয়।”

আবির হেসে বলে, “তুমি এতটা বোকা আমি জানতাম না। যদি তুমি ভালো করে পেপার গুলো চেক করে দেখতে তাহলে হয়তো তুমি বুঝতে পারতে এগুলো কিসের পেপার ছিল। কিন্তু কি আর করার বলো তোমার কপালে‌‌ লিখা ছিল আমি তোমার স্বামী হবো তাই হয়তো এমন কিছু হয় নি।”

আবিরের এই হাসি হাসি মুখটা দেখে তিশার রাগ উঠে যায় আর আবিরের কলার চেপে ধরে।

“আপনার সাহস হলো কি করে আমাকে ঠকিয়ে বিয়ে করার।”

তিশা রাগের বশীভূত হয়ে ভুলেই গেছিলো যে ও আবিরের কলার ধরার কারনে আবিরের অনেকটা কাছে চলে এসেছে। আবিরের প্রতিটা নিঃশ্বাস তিশার মুখে আছড়ে পড়ছে। আবির তিশার দিকে মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে আছে। আবিরের এমন ভাবে তাকানো দেখে তিশা বুঝতে পারে যে ও আবিরের অনেকটা কাছে চলে এসেছে। তিশা আবিরের কাছ থেকে সরে আসতে চাইলে আবির তিশার উনমুক্ত কোমড় চেপে ধরে। আবিরের ছোঁয়া পেয়ে তিশা কেঁপে উঠে। আবির তিশাকে আরও কাছে টেনে নেয়।

“কি করছেন কি আপনি? ছাডুন আমাকে।”

“তুমিই‌ তো প্রথমে আমাকে ধরেছো তাহলে এখন ছাড়তে বলছো কেন?”

তিশা দাঁতে দাঁত চেপে বলে, “ছাড়ুন বলছি আমাকে।”

আবির ভ্রু উচু করে বলে, “যদি না ছাড়ি তাহলে কি করবে?”

“আপনার লজ্জা করে না একটা অচেনা মেয়েকে এভাবে ধরে আছেন। ছাড়ুন বলছি।”

আবির বাঁকা হেসে বলে, “কিহ? অচেনা মেয়ে তুমি কিন্তু আমার জানা মতে তো তুমি আমার বিয়ে করা একটা মাত্র বউ।”

তিশা আবিরের কাছ থেকে নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করতে করতে বলে, “আমি আপনাকে আমার স্বামী হিসেবে মানি না বুঝেছেন। আমাকে ছাড়ুন বলছি না হলে কিন্তু এর ফল ভালো হবে না।”

আবির তিশার মুখের কাছে নিজের মুখটা এনে বলে, “তোমাকে না ছাড়লে এর ফল ভালো হবে না তুমি বলছো তাই তো। ওকে দেখি তুমি কি করে আমার হাত থেকে ছাড়া পাও”

তিশা নিজেকে আবিরের কাছে থেকে ছাড়া পাওয়ার জন্য অনেক চেষ্টা করে কিন্তু একটা ছেলের কাছে তো আর একটা মেয়ের শক্তি কিছুই না। আবির তিশার দিকে নিজের দু ভ্রু নাচায়। তিশা তা দেখে বলে।

“ভালো হচ্ছে না কিন্তু আমি শেষ বারের মতো বলছি আমাকে ছাড়ুন না হলে কিন্তু আমি।”

“না হলে কিন্তু কি? কি করবে চিৎকার করবে?”

“হে তাই করবো।”

“ওকে করো।”

তিশা চিৎকার করতে যাবে সাথে সাথে আবির তিশার গোঁলাপি রাঙা ঠোঁটে নিজের ঠোঁট ছুঁয়ে দেয়। তাতে তিশার চোখ দুটো রাসগোল্লার ন্যায় বড় বড় হয়ে যায়। তিশা আবিরকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়ে নিজের ঠোঁট মুছতে থাকে। আবির তিশার এমন কান্ড দেখে মুচকি হাসে। তিশা রেগে বলে।

“আপনার সাহস কি করে হলো আমাকে কিস করার?”

আবির কোনো কথা না বলে তিশার সামনে থেকে চলে যায়। আবিরের এমন ভাবে চলে যেতে দেখে তিশার রাগটা আরও দ্বিগুন বেড়ে যায়। চিৎকার করে বলে।

“কি হলো? আমি তো আপনাকে কিছু জিঙ্গেস করছি।”

আবির প্যান্টের পকেটে হাত গুজে দাঁড়িয়ে সরল গলায় বলে, “হুম! কিছু বলছো কি তুমি?”

তিশা তপ্ত নিঃশ্বাস ফেলে বলে, “আপনার সাহস কি করে হলো আমাকে কিস করার। কোন অধিকারে আপনি আমাকে কিস করেছেন?”

আবির দু কাঁধ নাচিয়ে বলে, “কেন স্বামীর অধিকারে!”

“আর কত বার বলবো আমি আপনাকে আমার স্বামী হিসেবে মানি না।”

আবির তিশার দিকে এগিয়ে আসে। আবিরের এগোনো দেখে তিশা দু কদম পিছিয়ে বলে, “কি হলো আপনি আমার দিকে এগিয়ে আসছেন কেন? একদম এগোবেন না।”

তিশা পিছাতে পিছাতে দেয়ালের সাথে লেগে যায়। তিশা ভয়ে দু চোখের পাতা বন্ধ করে নেয়। আবির মুচকি হেসে তিশার চুলের খোপাটা খুলে দিয়ে তিশার কানের কাছে গিয়ে ফিসফিসিয়ে বলে।

“আপনি নিজেই একদিন আমাকে সব অধিকার দিবেন যেটা একজন স্বামীর কাছে থাকে‌ বুঝেছেন মাই মিসেস। যাই হোক ফ্রেশ হয়ে নাও।”

আবির তিশার কাছ থেকে সরে যেতে তিশা বাজখাই কন্ঠে বলে, “আপনাকে আমি কোনো দিনও আমার স্বামী হিসেবে মানবো না বুঝতে পেরেছেন আপনি মরে গেলেও না।”

আবির কোনো কথা না বলে টাওয়াল নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়। আর এই‌ দিক দিয়ে তিশা রাগে সাপের মতো ফুসছে আর বলছে।

“খুব শখ না আমাকে নিজের বউ করার। আমাকে তোর বউ করার স্বপ্ন যদি না ছুটিয়েছি তাহলে আমার নামও তিশা না। আমার জীবনটা নষ্ট করে দিয়েছিস তুই তোর জীবনটাও আমি নষ্ট করে দিবো তোর সাথেই থেকে।”

আবির ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে দেখে তিশা আগের জায়গাতে দাঁড়িয়ে আছে।‌

“আমাকে বকা দেওয়া যদি তোমার শেষ হয়ে থাকে তাহলে ফ্রেশ হত পারো গিয়ে।”

তিশা আবিরের দিকে বড় বড় চোখ করে তাকায় আবির তা দেখে বলে, “কি হলো এভাবে তাকাছো কেন আমার দিকে?”

তিশা বিড়বিড় করে বলে, “এই বেডা বুঝলো কি করে যে আমি তাকে বকছিলাম? নিশ্চয়ই ওয়াশরুম থেকে সব শুনেছে আমি কি কি বলছিলাম কিন্তু শুনলো কি করে ওয়াশরুমে তো তখন পানি পড়ার শব্দ হচ্ছিল।”

“জি না ওয়াশরুম থেকে কিছু শুনি নি তুমি কি কি এখন বলতে পারো সব আমার জানা আছেয যাও এখন ফ্রেস হও গিয়ে।”

তিশা আবিরকে একটা ভেংচি কেটে ওয়াশরুমে চলে যায়। তিশা ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে আবির ল্যাপটপ নিয়ে কাজ করছে। তিশা মনে মনে বলে।

“কাজ করা হচ্ছে না দাঁড়া তোর কাজ আমি করাছি। খুব শখ না আমাকে বিয়ে করে ঘরে তুলার এবার দেখ ঘরে বউ দেখলে কি অবস্থা হয়।

তিশা আবিরের সামনে গিয়ে হাজির হয়ে বলে, “এই যে আমার খুব খিদে পেয়েছে কিছু খাবার নিয়ে আসুন গিয়ে আমার জন্য।”

আবির কোনো কথা বলছে না চুপচাপ বসে আছে। তিশা বিরক্ত হয়ে জোরে চিৎকার করে বলে, “আরে আজব তো আমি আপনাকে কিছু বলছি তো।”

“কি হয়েছে? এভাবে ষাঁড়ের মতো চিৎকার করছো কেন?”

“কি আমি ষাঁড়!”

“তা নয় তো কি এভাবে ষাঁড়ের মতো চিৎকার করছো কেন তাহলে?”

“শুনুন যখন আমাকে বিয়ে করে এখানে এনেছেন তাহলে আপনার উচিত আমাকে খাওয়ানোর তাই আমাকে কিছু খেতে দিন।”

“ঘরে খাওয়ার মতো কিছু নেই।”

“মানে! তাহলে কি আমি না খেয়ে থাকবো।”

“হে থাকতে হবে।”

“নাহ আমি পারবো না আমার খুব খিদে পেয়েছে প্লিজ কিছু খাবারের ব্যবস্থা করেন।”

আবির সোফাতে আরাম করে বসতে বসতে বলে, “করবো তবে একটা শর্ত আছে।”

“শর্ত কি শর্ত?”

“শর্তটা খুব সহজ তুমি চেষ্টা করলেই হয়ে যাবে।”

“আগে বলুন কি শর্ত?”

আবিরের শর্তের কথা শুনে তিশার মাথায় মনে হচ্ছে যেন কেউ বারি দিছে। একে তো পেটের ভেতর ইঁদুর দৌঁড়াছে তার উপর আবার এমন শর্ত। তিশার মন চাইছে আবিরের গলাটা টিপে দিতে।

#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here