#মিশে_আছি_তোমাতে ❤
#Nusrat_Jahan_Bristy
#Part_10
আবির সাদা শার্ট কালো প্যান্ট পড়ে পকেটে দু হাত গুজে দাঁড়িয়ে আছে। তিশা অবাক হয়ে বলে।
“এসব আপনি কখন পড়লেন?”
আবির বাকা হেসে বলে, “কেন? কিছু দেখতে পারো নি দেখে তার জন্য খুব আফসোস হচ্ছে তোমার?”
“কি আজে বাজে কথা বলছেন আপনি? আপনাকে দেখতে আমার বয়ে গেছে সরুন আমার সামনে থেকে।”
আবির বোকার মতো বলে, “যাহ বাবা এতে এতো রাগের কি আছে? তুমি আমাকে দেখতেই পারে তাতে আমি রাগ করবো না বরং আমার ভালোই লাগবে।”
তিশা কিছু বলে না। এই ঠোঁট কাটা লোকের সাথে কথা বলে কোনো লাভ নেই তাই সোজা আলমারি কাছে গিয়ে আলমারির ভেতর থেকে ব্যাগ বের করে। আবির দেখে বলে, “কোথায় যাচ্ছো তুমি?”
“কলেজে যাচ্ছি আমি। অনেক দিন হয়ে গেছে তো কলেজে যাই না তার জন্য আজকে কলেজে যেতে হবে আমাকে।”
“তাহলে চলো আমি তোমাকে কলেজে দিয়ে আসি।”
“না আমি একাই যেতে পারবো।”
“জেদ করো না তিশা তোমার কিছু হয়ে গেলে।”
“আমার কিছু হবে না বুঝতে পেরেছেন আপনি। আর একটা কথা আপনি চিন্তা করবেন না আমি পালিয়ে যাবো না। যেহেতু আপনাকে আমি কথা দিয়েছি সেই কথা আমি রাখব”
“আরে আমি জানি তুমি কথা রাখবে। কিন্তু আমি তোমাকে কলেজে দিয়ে আসি আর তুমি ব্রেকফাস্ট করেছো?”
“হুম করেছি আর আমি কলেজে একাই যাবো আজকে।”
“ওকে ওকে তুমি কলেজে একাই যাও তবে গাড়ি নিয়ে যাও প্লিজ।”
তিশা আবিরের কথার কোনো উত্তর না দিয়ে বের হয়ে যায়। আবির ড্রাইভারকে ফোন করে বলে, “তিশা কলেজে যাবে ওকে কলেজে পৌঁছে দিয়ে আসবে।”
আবির ফোন কেটে অফিসে যাওয়ার জন্য রেডি হয়ে নিচে গিয়ে ব্রেকফাস্ট করে সাথে নিরবও ব্রেকফাস্ট করছে। এমন সময় আবির নিরবকে বলে।
“নিরব তুই কালকে থেকে অফিসে জয়েন করবি।”
“না ভাইয়া আমি এখন অফিসে জয়েন করতে পারবো না।
“কেন পারবি না?”
“আসলে ভাইয়া সবে মাত্র দেশে এলাম।”
“তো কি হয়েছে কালকে থেকে তুই অফিসে জয়েন করবি এটাই শেষ কথা।”
নিরব মাথা নিচু করে বলে, “ঠিক আছে ভাইয়া।”
“তোর নামে যেই কোম্পানিটা আছে ওইটাতে তোকে আমি কালকে এমডি হিসেবে জয়েন করাবো তাই কালকে রেডি হয়ে থাকবি। আমি আর কত দিন দুটো কোম্পানিটা একসাথে সামলাবো বলতো এবার তো তোকে সবকিছু বুঝে নিতে হবে নাকি।”
“আচ্ছা ভাইয়া আমি কালকে রেডি হয়ে থাকব।”
“ঠিক আছে আমি এখন আসি।”
________
আবির বাড়ি থেকে বের হয়ে গাড়িতে উঠে ড্রাইভারকে বলে, “সোহেল তিশাকে কলেজে পৌঁছে দিয়েছো তো।”
“না স্যার ম্যাডাম তো একাই চলে গেছে।”
“কি? একা চলে গেছে মানে তুমি বলো নি গাড়িতে করে যাওয়ার জন্য।”
“বলেছি আমি কিন্তু ম্যাডাম বলেছে ওনি নাকি আগে যেভাবে চলাফেরা করতো এখনও সেভাবেই চলবে।”
আবির মনে মনে বলে, “এই মেয়েটাকে নিয়ে আর পারা গেলো না আগের ও আর এখনের ওর মাঝে আকাশ পাতাল তফাৎ আছে। কেন বুঝতে চাইছে ও এখন আবির রহমানের স্ত্রী।”
সোহেল বলে, “স্যার এখন কি করবো? কলেজে যাব নাকি অফিসে যাবে?”
“কলেজে চলো।”
“আচ্ছা স্যার।”
আবির তিশাকে ফোন করে। তিশা একা একা রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে এমন সময় ফোন বেজে ওঠে। তিশা ফোনের স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখে আউট নাম্বার তিশা ফোনটা রিসিভ করে বলে।
“হ্যালো! কে বলছেন?”
“তুমি গাড়ি নিয়ে যাও নি কেন তিশা? আর আমার নাম্বারটা তুমি এখনও সেইভ করো নি কেন?”
তিশা গলার স্বর শুনে বুঝতে পারে এটা আবির। তিশা নিজের কন্ঠে তেজ এনে বলে, “আমার ইচ্ছে তাই গাড়ি নিয়ে আসি নি। আর আপনার নাম্বার আমি ইচ্ছে করে সেইভ করে নি তাতে কোনো সমস্যা?”
আবির দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে বলে, “আগে বলো তুমি গাড়ি নিয়ে যাও নি কেন?”
“বললাম তো আমার ইচ্ছে তাই গাড়ি নিয়ে যাই নি।”
“তিশা তুমি কেন বুঝতে চাইছো না তোমার যদি কিছু হয়ে যায় তো।”
তিশা কিছু বলতে যাবে এমন সময় তার সামনে হঠাৎ করেই একটা গাড়ি এসে থামে। তিশা ভয়ে দু কদম পিছিয়ে যায়। গাড়ি থেকে বের হয়ে আসে একজন পুরুষ মানুষ। পুরুষ মানুষটিকে দেখে তিশা বলে।
“আপনি এখানে?”
ওপর দিকে আবির বলে যাচ্ছে, “তিশা কি হলো? কে তোমার কাছে এসেছে তিশা? হ্যালো তিশা।”
তিশা ফোনটা না কেটেই কান থেকে ফোনটা নামিয়ে হাতে রেখে দেয়। সামনে দাঁড়িয়ে থাকা পুরুষ মানুষটিকে রেগে বলে, “কি হলো এভাবে রাস্তার সামনে গাড়ি থামানোর মানে কি?”
“আমার ইচ্ছে হলো তাই।”
“আপনার ইচ্ছে মানে।”
“তোমার হাজবেন্ড তোমাকে একা ছেড়ে দিলো যে।”
“তো তাতে আপনার সমস্যাটা কি?”
এদিকে আবির খুব চিন্তায় পড়ে যায় তিশার সাথে যে লোকটা কথা বলছে তার কন্ঠ শুনে। আবির অস্থির হয়ে সোহেলকে বলে।
“সোহেল তাড়াতাড়ি গাড়ি চালাও।”
“ওকে স্যার।”
_______
তিশার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা রবিনকে রাগী গলায় বলে, “আপনার প্রবলেম কি বলুন তো?”
রবিন দু কাঁধ নাচিয়ে বলে, “আমার তো কোনো প্রবলেম নেই। তবে আমার একটা আফসোস আছে তোমার মতো সুন্দরী আর হট মেয়েকে আমি বিয়ে করতে গিয়েও বিয়ে করতে পারি নি। তবে নো প্রবলেম আমি জানি তুমি আবির রহমানকে একদম পছন্দ করো না। তাই তুমি চাইলে এই রবিন শিকদারের কাছে চলে আসতে পারো। তোমার জন্য আমার বাড়ির দরজা আর মনের দরজা সবসময় খোলা থাকবে বেবি।”
“আপনার সাহস কি করে হলো একজন বিবাহিত মেয়েকে এসব কথা বলার। আর আমি জানতাম যে আপনি একজন বাজে লোক মেয়েদেরকে নিয়ে আপনি,,,,, আমার কথাটা বলতেও ঘৃণা হচ্ছে তারপরও আমি আমার বাবার কথা রাখার জন্য আপনাকে বিয়ে করতে রাজি হয়েছি। বাবা তো আর জানতো না আপনি কেমন লোক। আমি ভেবেছিলাম বিয়ের পর হয়তো আপনি ভালো হয়ে যেতে পারেন। কিন্তু কথায় আছে না স্বভাব যায় না মূলে। আর এখন মনে হচ্ছে আপনার থেকেও আবির রহমান শত গুনে অনেক ভালো।”
আবির ফোনে তিশার প্রত্যেকটা কথা কথা শুনতে পারছে। রবিন তিশার কথা শুনে উচ্চ স্বরে হেসে বলে।
“বাবা দুই দিনেই আবির রহমান এত ভালো হয়ে গেল। আমি তো জানতাম তুমি আবির রহমানকে অপছন্দ করো। তাহলে দুইদিনে কি এমন করলো আবির রহমান তোমাকে যে এক্কেবারে তার নামে তোমার মুখ থেকে ভাল ভাল কথা বের হচ্ছে।”
“আপনার প্রবলেম কি বলুন তো আমাকে রাস্তা দিন। না হলে কিন্তু আমি এখানে সব মানুষ ছড়ো করব চিৎকার করে।”
“আরে আরে এত হাইপার হওয়ার কি আছে এখানে? আমি চলে যাচ্ছি তো বেবি তুমি কেন শুধু শুধু চিৎকার করে নিজেকে কষ্ট দিনে। তবে এটা মনে রেখো যদি আবির রহমান তোমাকে কিছু না করতে পারে আই মিন বুঝতেই পারছো কিসের কথা বলছি,, তাহলে আমার কাছে চলে আসবে। কারন আমি সব কিছুই করতে পারি কারন আমি আবির রহমানের মতো না যে অনুমতির জন্য অপেক্ষা করব।”
তিশা দাঁতের চোয়াল শক্ত করে নেয়। রবিনের এমন কু কথা শুনে তিশা না পারছে সইতে আর না পারছে কিছু বলতে। রবিন চোখ টিপ দিয়ে বলে।
“আজকে আসি তাহলে ডার্লিং।”
রবিন চলে যায়। তিশা কানে রবিনের বলা কথা গুলা এখন বাজছে এক সময় সহ্য করতে না পেরে ডুকরে কেঁদে উঠে রাস্তার মাঝেই বসে। তিশা এভাবে কান্না করতে দেখে অনেক মানুষ ছড়ো হয়ে যায়। আবির তিশার কান্না স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছে ফোনের ভেতর থেকে। সোহেল মানুষের ভিড় দেখে গাড়ি থামিয়ে বলে।
“স্যার এখানে এত মানুষ কেন? হয়তো ম্যাডাম ওই খানেই আছেন।”
আবির গাড়ি থেকে তাড়াতাড়ি নেমে ভিড়ের ভেতর ঢুকে দেখে সত্যি তিশা রাস্তায় বসে অঝোরে কান্না করছে। আবির তাড়াতাড়ি করে তিশার কাছে যায়। সোহেলও আবিরের পিছন পিছন আসে। আবির তিশার সামনে হাটু গেড়ে বসে নরম গলায় বলে।
“তিশা কি হয়েছে? এভাবে কান্না করছো কেন?”
তিশা মুখ তুলে তাকিয়ে দেখে আবির। তিশা কান্নামিশ্রিত গলায় বলে, “ওও আমাকে।”
তিশা কান্না করার জন্য ঠিক মতো কথা বলতে পারছে না। আবির তিশাকে জড়িয়ে ধরে। তিশাও আবেগের বশে আবিরকে এক হাত দিয়ে। আবির তিশা চোখে জল মুছে বলে।
“তিশা প্লিজ শান্ত হও। কিছু হয় নি চলো আমার সাথে।”
আবির তিশাকে কোলে তুলে নিয়ে গাড়িতে বসিয়ে সোহেলকে বলে, “সোহেল বাড়িতে চলো।”
“জি স্যার।”
এমন সময় আবিরের ফোনে কল আসে আবির ফোনটা রিসিভ করে বলে, ” মিটিং ক্যানসেল করে দাও। আজকে কোনো মিটিং হবে না।”
রহমান ভিলাতে গাড়ি এসে থামে। আবির তিশাকে কোলে করেই নিয়ে বাড়ির ভেতরে ঢুকে নিজেদের ঘরে এসে তিশাকে খাটে বসিয়ে দিয়ে বলে, “প্লিজ জান এবার তো কান্নাটা থামাও।”
আবির তিশার চোখের পানি মুছে বলে, “তোমাকে যে কাঁদিয়েছে তাকে এর মূল্য দিতে হবে।”
তিশা আবিরের দিকে তাকিয়ে দেখে রাগে আবিরের কপালের নীল রগটা ফুলে ওঠেছে। আবির দাঁতে দাঁত চেপে বলে।
“তুমি বসো আমি আসছি।”
“কোথায় যাচ্ছেন আপনি?”
“আসছি আমি। তুমি বিশ্রাম করো।”
আবির কথাটা বলে ঘর থেকে বের হয়ে চলে যায়। তিশা চিন্তায় পড়ে যায় আবিরের হঠাৎ করে এমন রাগ যেতে দেখে। তিশা চিন্তিত স্বরে বলে।
“ওনি হঠাৎ এতটা রেগে গেলেন কেন? তাহলে কি ওনি রবিনের বলা প্রত্যেকটা কথা শুনেছে আমি তো তখন ফোনটা কাটতে ভুলে গেছিলাম। তাহলে কি ওনি রবিনের কাছে গেছে? কি হবে এখন ওনি যে খুব রেগে আছেন?”
________
আবির অনেকটা জোরেই গাড়ি ড্রাইভ করছে। রাগে আবিরের শরীর যেন ফেটে যাচ্ছে। আবির রবিনের অফিসে ঢুকে সোজা রবিনের কেবিনে এসে রবিনকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই রবিনের কলার ধরে বলে।
“তোর সাহস কি করে হলো আমার স্ত্রীকে এসব বাজে কথা বলার?”
রবিন আবিরের মুখে একটা ঘুষি মারে তাতে আবিরের ঠোঁট কেটে যায়। আর আবির দূরে চিটকে পড়ে। রবিন রাগী স্বরে বলে।
“তোর স্ত্রী… ও আমার স্ত্রী হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তুই ওকে আমার কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছিস। আর আমি একশো বার এসব কথা বলব যখনেই ওকে আমি রাস্তায় পাব বুঝলি।”
আবির চিৎকার করে বলে, “হারা মির বাচ্চা তোকে আজকে আমি মাটিতে পুতেই ফেলবো যাতে করে তোর ওই মুখ দিয়ে আর কিছু না বলতে পারিস।”
আবির রবিনকে ধরতে যাবে সাথে সাথে দুজন সিকিউরিটি গার্ড রবিনের কেবিনে ঢুকে আবিরকে ধরে ফেলে। রবিন চেয়ারে আরাম করে বসে বলে।
“কি রে? তুই আমাকে মারতে এসেছিস তাই না এবার তোকে যদি আমি মেরে দেই তাহলে কেমন হবে বলত?”
আবির দাঁতে দাঁতে চেপে বলে, “আমাকে ছেড়ে তো দেখ কে কাকে মারে?”
“আরে আমি জানি তুই কি করতে পারিস তাই তো তোকে ছাড়বো না বুঝলি। আর রইল তোর বউয়ের কথা ওকে তো আমি আমার কাছে আনবই। আর তুই ওকে যে সুখটা দিতে পারিস নাই ওইটা আমি ওকে দিব।”
আবির চিৎকার করে বলে উঠে, “কু*র বাচ্চা তোকে আমি আজকে।”
আবিরকে যেই দুজন ধরে রেখেছিল তাদের কাছ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে রবিনের কাছে এসে রবিনকে এলোপাতাড়ি মারতে শুরু করে। রবিনও আবিরকে মারে। আবিরকে কেউ কিছুতেই থামাতে পারছে না। এমন সময় নিরব আর তিশা আসে। তিশা এসব দেখে উচু গলায় বলে।
“আবির আপনি এসব কি করছেন? প্লিজ থামুন।”
আবির তিশার কোনো কথাই কানে নিছে না ও তো রবিনকে মারতে ব্যস্ত। তাই তিশা এক প্রকার বাধ্য হয়ে আবিরের কাছে গিয়ে আবিরকে থামাতে চেষ্টা করে। কিন্তু আবির রাগের বশে তিশাকে ধাক্কা মারে। আবির যখন বুঝতে পারে ও তিশাকে ধাক্কা মেরেছে তখনেই আবির তাড়াতাড়ি করে তিশার হাত ধরে নিজের বুকে এনে তিশাকে জড়িয়ে ধরে। তিশা ভয়ে জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে। আর তিশা খুব অবাক হয় ওকে এভাবে বাঁচানোর জন্য। তিশা নরম গলায় বলে।
“প্লিজ আবির এবার থামুন প্লিজ।”
আবির রবিনের দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে বলে, “আজকে তুই আমার হাত থেকে বেঁচে গেলি শুধু মাএ তিশার জন্য। কিন্তু পরের বার তুই আর বাঁচবি না। এখন আধমরা করেছি পরের বার এক্কেবারে শেষ করে দিব।”
আবির তিশার হাত ধরে রবিনের অফিস থেকে বের হয়ে যায়। আবির গাড়িতে উঠে গাড়ি ড্রাইভ করছে আর তিশা আবিরের পাশেই বসে আছে। আবিরের কপাল আর ঠোঁট থেকে রক্ত পড়ছে। আবিরের পিছনের গাড়িতে নিরব আর গার্ডরা আছে। তিশা ভয়ে ভয়ে বলে।
“আবির প্লিজ আপনি শান্ত হোন আমি জানি আজকে যদি আমি গাড়ি নিয়ে যেতাম তাহলে হয়তো এমনটা হতো না। আই এম রিয়েলি সরি আর এমন ভুল কখন হবে না।”
আবির কোনো কথা বলছে না শুধু গাড়ি ড্রাইভ করেই যাচ্ছে। গাড়ু এসে থামে রহমান ভিলার সামনে। আবির গাড়ি পার্ক করে তিশার সাথে কোনো কথা না বলে সোজা ঘরে চলে যায়। নিরব তিশার পাশে এসে দাঁড়িয়ে বলে।
“ভাবি আপনি প্লিজ ভাইয়াকে গিয়ে সামলান। আজকে ভাইয়া ভীষন রেগে আছে।”
“হুমম।”
তিশা তাড়াতাড়ি করে ঘরে যায়। তিশা ঘরে গিয়ে থেকে আবির সোফাতে বসে আছে মাথা নিচু করে। তিশা ফাস্ট এইড বক্স এনে আবিরের কাছে এসে বসে তুলাতে সেবলন লাগিয়ে আবিরের ক্ষত স্থানে লাগতে যাবে সাথে সাথে আবির তিশার হাত ধরে বলে।
“দরকার নেই এসব আমার।”
“কি বলছেন আপনি এসব? না হলে রক্ত পড়া বন্ধ হবে না।”
“আমার রক্ত পড়লে তাতে তোমার কি?”
“আমারেই সব বুঝতে পেরেছেন আপনি। বেশি জেদ করবেন না তো আমাকে ক্ষত স্থানটা পরিস্কার করতে দেন।”
তিশা ধমক দিয়ে কথাটা বলে আবিরকে। আবির তো তিশার এমন রুপ থেকে অবাক। তিশা আবিরের ক্ষত স্থানে সেবলন লাগতেই আবির ব্যথায় কুঁকড়ে ওঠে। তিশা তা দেখে ব্যাকুল কন্ঠে বলে।
“সরি সরি খুব জ্বালা করছে তাই না। আমি ফু দিছি আর জ্বালা করবে না।”
তিশা আবিরের কপালের ক্ষত স্থানে সেবলন লাগাছে আর ফু দিছে। আবির তিশার দিকে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে আবিরের প্রতি তিশার এমন কেয়ার করা দেখে। তিশা আবিরের মাথায় ব্যান্ডেজ লাগিয়ে দেয়। এবার তিশা আবিরের ঠোঁটের কোণাতে ঔষধ লাগাছে আর ফু দিছে। তিশা আবিরের এতটা কাছে কখন চলে এসেছে সেটা বুঝতেই পারি না। আবিরের চাওনি দেখে তিশা বুঝতে পারে ও আবিরের অনেকটা কাছে চলে এসেছে। তিশা চলে যাবে এমন সময় আবির তিশার হাত ধরে নিজের কোলে এনে বাসায়। তিশা নিজেকে আবিরের কাছ থেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করে বলে।
“কি করছেন ছাড়ুন আমাকে?”
“একটু আগে তুমি কি বলেছিলে?”
“কি বলেছি?”
“এটাই যে আমার শরীরের থেকে রক্ত ঝরলে তোমার যায় আসে। কেন তোমার যায় আসে আমার শরীর থেকে রক্ত পড়লে? তুমি তো আমাকেই পছন্দই করো না তাহলে আমার শরীর থেকে রক্ত পড়লেই বা কি আর আমি মরলে বা…. ।”
আবিরের মুখে মরার কথাটা শুনে তিশা আবিরের মুখ চেপে ধরে বলে, “প্লিজ এমন কথা বলবেন না।
আবির তিশার হাতটা মুখ থেকে সরিয়ে বলে, “কেন বলব না? আমি মরলে তুমি তো খুশিই হবে তাই না কারন আমি মরলে তো তুমি আমার কাছ থেকে মুক্তি পেয়ে যাবে।”
তিশা আবিরের এই কথার উত্তর না দিয়ে বলে, “প্লিজ আমাকে ছাড়ুন।”
“না আগে বলো আমার কিছু হলে তোমার কি যায় আসে?”
তিশা আবিরের কোল থেকে নিজেকে জোর করে ছাড়িয়ে বলে, “তবে শুনুন আমার কি যায় আসে?
#চলবে