#তোকেই_ভালোবাসি
#লেখনীতে_আমেনা_আক্তার_আখি
#পর্বঃ৮
“মিথু তুই বাড়িতে আসবি আমাদের বলে আসতে পারতি না?”
“তোমরা ব্যস্ত ছিলে?”
মিহুর প্রশ্নে মিথিলার খাপছাড়া উত্তর শুনে মিহু খানিকটা রেগে যায়।মিথিলার হাত টেনে ধরে ওর দিকে ঘুরিয়ে বলে,
“ব্যস্ত ছিলাম মানে!কি বলতে চাচ্ছিস?”
“ব্যস্তই তো ছিলে একে অপরের ছবি তোলা নিয়ে।আর এমন করছ কেন?আমার তো কিছু হয়নি?”
“এমন আমি করছি নাকি তুই করছিস?এভাবে কথা বলছিস কেন?”
“কিভাবে কথা বলছি?”
মিহু এবার মিথিলাকে ঝাকিয়ে বলে, “দেখ মিথু এ বাড়িতে আসার পর থেকে খেয়াল করছি,তুই কেমন যেন করছিস?কি হয়েছে বল আমাকে?”
মিথিলা মিহুর থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে বলে, “কিছু হয়নি আমার, আপু!”
“তুই বলবি আর আমি মেনে নিব!বল কি হয়েছে?”
“বললাম তো কিছু হয়নি?আর কতবার বললে বিশ্বাস করবে?”
মিথিলা কথাটা ঝাড়ি মেরে বলে।মিহু কিয়ৎক্ষণ মিথিলার পানে তাকিয়ে থাকে।কিছু না বলে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়।মিথিলা মাথা নিচু করে নেয়।কিছু সময় অতিবাহিত হতে সেও ঘর থেকে বেরিয়ে যায়।
—————————————–
“তোর সাহস দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে,তাই না রে?”
কথাটি কর্ণকুহরে প্রবেশ করতে মিথিলা পিছু ঘুরে তাকায়।ইয়াশ দাড়িয়ে আছে পিছনে।ইয়াশকে দেখেও মিথিলা না দেখার ভান করে আবার সামনে ফিরে।ইয়াশ গিয়ে মিথিলার পাশে দাড়িয়ে পরে।রাগী কন্ঠে বলে,
“কিরে,কথা বলছিস না কেন?”
মিথিলা নিশ্চুপ।একদ্যানে সে আকাশপানে তাকিয়ে আছে।কয়েক মিনিট যেতে ইয়াশ মিথিলার হাত টেনে ধরে।রাগ দেখিয়ে চিল্লিয়ে বলে,
“সমস্যা কি?কথা বলছিস না কেন?আর তোর সাহস কি করে হয় একা একা বাড়ি ফিরে আসার।আর এ বাড়িতে একা একা কি করছিস তুই?ডানা গজিয়েছে?”
“হাত ছাড়ো ভাইয়া?”
মিথিলা শান্ত কন্ঠে বলে ওঠে।ইয়াশ মিথিলার হাতটা আরেকটু জোরে চেপে ধরে।দাতে দাত চেপে বলে,
“ছাড়বো না কি করবি তুই?”
মিথিলা ছাপটা মেরে হাতটা ছাড়িয়ে নেয়।হাত উচিযে বলে,
“দেখুন আমি একা কেন এসেছি?বা এখানে একা কি করছি সেটা আপনাকে বলার প্রয়োজন মনে করছি না।তাই আপনি এখন যেতে পারেন!”
“তোর কথায় আমাকে চলতে হবে?”
“সেটা বলা হয়নি?”
“তো কি বলতে চাচ্ছিস? এটা তোর বাসা না যে তুই বের করে দিবি? ”
“বের করে দেওয়া হয়নি?আমার কাছ থেকে যেতে বলছি।আমাকে বিরক্ত করতে না করেছি?”
“আমি তোকে বিরক্ত করছি?”
“হ্যাঁ করছ।যাও এখান থেকে?”
ইয়াশ আর কিছু বলেনা।পাশে রেলিং এ একটা ঘুষি দিয়ে রাগ দেখিয়ে চলে যায়।মিথিলা চোখ বন্ধ করে ওখানে দাড়িয়ে থাকে।
———————————-
রাত ৯:৩০ মিনিট।গ্রামের এই সাড়ে ন’টা অনেক রাত বলা চলে।পিচ্চি বাহিনী সব ওই বাড়িতে চলে গেছে।তিতলি হক মিনহাজ হক ও চলে গেছেন।শুধু ইকবাল হক আর রুকমা হক আছেন।রুকমা হক তার বড় ভাইয়ের রুমের সামনে এসে থামে।দু’বার দরজায় কড়া নাড়ে।ভিতর থেকে ঢুকতে বললেই।রুকমা হক দরজা খুলে ঢুকে পড়ে।রুকমা হকের বড় ভাই নাজমুল হাসান রুকমা হককে দেখে তাকে বসতে বলে।রুকমা হক বিছানার এক কোণে গিয়ে বসে পড়ে।রুকমা হক বসতে নাজমুল হাসান বলে ওঠেন,
“তো কি ঠিক করলি?”
রুকমা হক নাজমুল হাসানের দিকে তাকিয়ে বলে,
“ভাই ছেলে তো একা আমার না।ওনারও ছেলে তো উনারও তো এতে সম্মতি থাকা লাগবে তাই না বলো।”
“ইকবালের কি এতে রাজি নয়!”
“তা এখনো বলতে পারছি না।তবে আমি বললে রাজি হয়ে যাবে।আর নীলা তো খারাপ না।বেশ ভালো একটা মেয়ে।এমন মেয়েকে কে না ঘরের বউ করতে চায় বলো?!কিন্তু চিন্তা তো ইয়াশকে নিয়ে?”
“ইয়াশ কে নিয়ে তুই চিন্তা করিস না।আমার মনে হয় ইয়াশ এ বিয়েতে না করবে না।আর আমার তো মনে হয় ছেলে-মেয়ে দুজন দুজনকে পছন্দও করে!”
নাজমুল হক কথাটা বলতে।রুকমা হকের সন্ধ্যায় ইয়াশ আর নীলার ঘটনাটা মনে পড়ে।মৃদু হাসি ফুটে ওঠে ঠোঁটে।রুকমা হক নাজমুল হকের দিকে তাকিয়ে হাসিমুখে বলে,,
“ঠিকই বলেছ ভাই।আচ্ছা আমি বাড়ি গিয়ে সবার সাথে এই নিয়ে কথা বলে দেখব।”
“তোর যা ভালো মনে হয়।”
“আচ্ছা তাহলে এখন উঠি।”
এই বলে রুকমা হক বেরিয়ে আসে।রুকমা হক বের হতে দেখে ইকবাল হক আগে থেকেই ওখানে দাড়িয়ে আছে।এতে রুকমা হক একটু ঘাবড়ে গেলেও নিজেকে সামলে নেয়।
চলবে,, ইন শা আল্লাহ 🍁
#তোকেই_ভালোবাসি
সকল পর্বের লিংক
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=122116347122106938&id=61553208165829&mibextid=2JQ9oc