ফুলকৌড়ি (১৩) #লেখনীতে_শারমীন_ইসলাম

0
204

#ফুলকৌড়ি
(১৩)
#লেখনীতে_শারমীন_ইসলাম

কফির মগটা শক্তহাতে চেপে রেখেছে নিভান।মোটাসোটা পরিপুষ্ট সিরামিকের কফিমগ না হয়ে যদি সাধারণ প্লাস্টিক বা কাঁচের কোনো মগ হতো,হয়তো এতোসময় জিনিসটা দুমড়েমুচড়ে হাতের মুঠোয় চলে আসতো।হঠাৎই এমন অনুভূতি হওয়ার কারনটা কি,বুঝেও বুঝতে চাইলো না সে।তবে মেয়েটার সাথে ইভানের ফ্লাটিং এর ব্যাপারটা বুঝতে চেষ্টা করলো।যে মধুময় বাক্যগুলো মেয়েটাকে উল্লেখ্য করে আওড়ালো ইভান। তা কি শুধুই ফ্লাটিং নাকি তারমতো মনোভাব নিয়েই,নিজের প্রিয় ঘুমটা বিসর্জন দিয়ে ছাঁদে এসেছে ইভান?তাহলে তখনকার গাওয়া গানটা কি মেয়েটাকে উদ্দেশ্য করেই ছিলো?তবে কি মেয়েটার প্রেমে পড়েছে ইভান?মূহুর্তেই ঘাড় ফিরিয়ে ইভানের হাসি-হাসি মুখের দিকে তাকালো নিভান।নিরেট চোখে সেই হাসি হাসি সুদর্শন মুখের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে পর্যবেক্ষণ করলো তাকে।ছেলেটা তো এমন স্বভাবেরই,তাই তাকে দেখে বিশেষ কিছু অনুধাবন করতে পারলো না।তবে কেনো এই সাতসকালে ইভান এখানে?জিজ্ঞেস করবে কি?কি বলেই বা জিজ্ঞেস করবে!সামনে তাকালো নিভান।নজর গিয়ে পড়লো সেই কাঙ্ক্ষিত জায়গাটাতে গিয়ে তবে মেয়েটা সেখানে নেই।পুরো লন এরিয়ায় চোখ ঘুরিয়ে নিয়ে আসলো নিভান।কোথায় নেই মেয়েটা।চোখ ঘুরিয়ে সেই শূন্য বেঞ্চেটাতে এনে স্থির রাখলো।মূহুর্তেই কানে এলো ইভানের সুরেলা গলার প্রতিধ্বনি।

‘এইতো ক’দিন আগে-ও তুমি ছিলে অচেনা।
আজ যে চোখের আড়াল হলে প্রানে বাঁচি-না।

তড়িৎ গতিতে পাশে ফিরলো নিভান।ইভান পাশে নেই।পিছে ফিরে দেখলো,ছাঁদের গেট পেরিয়ে সিঁড়িপথে হাঁটা দিয়েছে সে।তবে কাঁটার মতো বিঁধে দিয়ে গেছে নিভানের মস্তিষ্কে গানের বার্তাগুলো।সেদিকে শান্ত নজরে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে,সামনে ফিরলো নিভান।
নজর রাখলো সেই একই শুন্যস্থানে।তবে কি তখনের আর এখনের গাওয়া গানের বাক্যগুলো মেয়েটাকেই উদ্দেশ্য করেই গাইলো ইভান!সেরকমই তো ইঙ্গিত দিলো।কি মনে করে শক্ত হাতে চেপে রাখা কফিমগটা ছুঁড়ে মারলো,সেই শুন্যস্থানটিতে।নিশানা এতো তীক্ষ্ণ ছিলো, ঠিক জায়গামতো গিয়েই পড়লো কফিমগটা।হয়তো কৌড়ি সেখানে বসে থাকলে,তার শরীরের কোথাও লেগে এতোসময় ক্ষত হয়ে যতো।সে-রকমই হয়তো দূর থেকে ছুঁড়ে দেওয়ায় ক্ষত হয়ে ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছে মগটা।তবে শব্দ ফিরত আসেনি।কার উপরে এই অযথা রাগ?আর কি কারনে বা এই খেয়ালিপনা?চোখ বুঁজে ফেললো নিভান।মূহুর্তেই বদ্ধ দুয়ারে ভেসে উঠলো,স্বপ্নে-দেখা ক্রন্দনরত সেই একজোড়া চোখ।তারপর নাফিমের মোটাসোটা বাহু-ভেদ করে একজোড়া ডগরডগর ভয়ার্ত নজর।সেদিন শেষ বিকালের লাল কমলারঙা গোধুলী আলোয় শান্ত শোভিত সেই সুন্দর মুখাবয়ব।অফিসে নিজের স্পেশাল বেডে গুটিশুটি মেরে শুয়ে থাকা ঘুমন্ত মায়াবীনি এক রমনী।আরও আরও কতশত স্মৃতি জোগাড় করে ফেলেছে এই নজর!কেনো?সারাদিনে কত নারী নজরে পড়ছে,আশেপাশে শত সুন্দরীর ভীড়।তাদের সকলকে উপেক্ষা করে এই নারীটার চলাবলা কেনো স্মৃতিচারিত করে জড়িয়ে নিয়েছে মন মস্তিষ্কে?সে কি নিজ থেকে চেয়েছিলো স্মৃতিরোমন্থন করতে?চাইনি তো!সাধারণ সব নারীদের মতোই উপেক্ষিতোই তো করেছিলো।তবে কেনো আচমকা দখল করলো সে নারী তার হৃদয়!মন, মস্তিষ্কে!কতোশত সৌন্দর্যময়ীকে এ-নজর উপেক্ষিত করলো।তবে কেনো ওই মায়াহরিনীটাকে উপেক্ষিত করতে পারলোনা মন মস্তিষ্ক?আর না উপেক্ষিত করতে চাইছে।কেনো….?এতোসময় মন হাজারও প্রশ্ন আওড়ালেও,মুখ বললো।

‘ও নারী সত্যিই যাদুকারীনি।

সূর্যের এলোমেলো রশ্মি দিগন্তে মিটিমিটি ছড়িয়ে পড়তে শুধু করেছে।লৌহ কঠিন যন্ত্রের ন্যায় শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা নিভান,সেই উদায়িত সূর্যের পানে তাকলো।শক্ত চোয়ালে,কঠিন মুখাবয়ব করে সেদিকে নিরেট নজরে চেয়ে রইলো।সকালের উদিত হওয়া সূর্যের রশ্মির তীক্ষ্ণতার চেয়েও তার মুখাবয়বের তীক্ষ্ণতা,চাহুনি জেনো ভারী ঠেকলো।অকারণে কেনো এই কঠিনভাবমূর্তি,এই তীক্ষ্ণতা ভর করলো নিজের ভিতর-বাহিরে জুড়ে,বুঝতে পেরে আরও শক্ত হয়ে এলো নিজের মুখাবয়ব।মুখ নয় এবার মন বললো–যদি সে সত্যিই যাদুকারিনী হয়ে থাকে,তবে সেই যাদুবলে শুধু তাকেই রেখে কেনো ক্ষান্ত হচ্ছে না?অন্যকে-ও কেনো সেই যাদুতে মোহাবিষ্ট করছে?কেনো?

সূর্যের রশ্মি বাড়তেই ঘেমে-নেয়ে একাকার হয়ে গেলো।ললাট,চিবুক গলা বেয়ে দরদরিয়ে নোনাজল নামতে থাকলো,তবুও সেদিকে কালক্ষেপণ করলো না।কি কারনে নিজের প্রতি এই শাস্তি মন বুঝলে-ও, শরীর বুঝলোনা।শরীর চাইলো ছায়াস্থল তবে মন ভ্রুক্ষেপহীন।

আজ পুরো একমাস কৌড়ি এবাড়িতে।বাড়ির মানুষগুলো বিভিন্ন স্বভাব চরিত্রের হলেও বেশ ভলো, আর অমায়িক।এই ত্রিশদিনে কাছের মানুষ হয়েছে প্রায়সই,তবে কথা কম হয়েছে, দাদুমা, দীবাআপু আর ওই চোখমুখ শক্তকরে থাকা মানুষটার সাথে।তবে কাছের মানুষগুলো বাদেও ওই তিনজন মানুষের থেকেও এতোদিনে কোনো খারাপ আচরন কৌড়ি পায় নি।বাহিরের মানুষ বলে তীক্ষ্ণ কোনো বাক্যও শুনতে হয়নি তাকে।তবে কাল সন্ধ্যা থেকে জাহিদ আঙ্কেলর বোন ডালিয়া বেগম,এবাড়িতে পদার্পণ করার পর থেকে কেমন কপাল কুঁচকে অদ্ভুত নজরে তাকিয়ে থাকছে তারদিকে।কিছু তীক্ষ্ণ ছোটোছোটো কটুবাক্যের শিকারও হতে হয়েছে তাকে।সেখান থেকেই মন খারাপ কৌড়ির।দাদািআপার কাছে বাড়ি চলে যেতে ইচ্ছে করছে।একটুও থাকতে ইচ্ছে করছেনা এবাড়িতে।হঠাৎ কাল থেকে মনেহচ্ছে, এতোবড় আলিশান বাড়ি হওয়া সত্ত্বেও এবাড়িতে শান্তি নেই।তার সুখ তার শান্তি, স্বস্তির নিঃশ্বাস সব ওই ছোট্টো বাড়িটায়।যেখানে কেউ তাকে ছোটো করে খোঁটা দিয়ে কথা বলার সাহস পায়না।খেয়ে থাকুক না খেয়ে থাকুক,কারও কটুবাক্য শুনতে হয়না।কেনো দাদিআপা তাকে এখানে পাঠালো?যা ছিলো কপালে,তাইই না-হয় হতো।সইতো।তবু-ও পরাধীনতার শিকলে এভাবে জড়বস্তুর ন্যায় থাকতে হতোনা।

বিগত দুদিন ধরে কলেজে যাচ্ছে কৌড়ি।আজ শুক্রবার।কলেজ না যাওয়ার কারনে,নিজের জন্য বরাদ্দ করে দেওয়া রুমটায় বসে একমনে কথাগুলো ভেবে চলেছে সে।রুমের বাহিরে কেনো জানি পা রাখতে মোটেও ইচ্ছে করছেনা তার।নিজেকে কেমন ছোটো মনেহচ্ছে।বাহিরের মানুষ,আশ্রিতা!যদি-ও সে আশ্রিতা তবে এই একমাসে এই বাড়ির কারও ব্যবহারে সেটা মনে হয়নি যেটা আজ খুবকরে মনেহচ্ছে।

‘মন খারাপ তোমার, ফুলকৌড়ি।

নাফিমের কথায় তাকালো তারদিকে।মুখে জোরপূর্বক হাসি টেনে উচ্ছ্বসিত কন্ঠে বললো–মন কেনো খারাপ থাকবে?

‘তাহলে আমি এতোবার ডাকলাম,শুনলে না কেনো?

ডেকেছে নাফিম!ভাবনায় এতো ডুবে ছিলো খেয়াল হয় নি হয়তো।কন্ঠের উচ্ছলতা বজায় রেখে বললো—তুমি ডেকেছিলে,আমি-তো খেয়ালই করিনি।স্যরি!

কৌড়ির পাশঘেঁষে বসলো ছেলেটা।মুখ ভারকরে গম্ভীর কন্ঠে বললো।—আমি জানি তুমি কি ভাবছিলে।

অবাক হলো কৌড়ি।কিছু বলতে নেবে তার আগেই ফের গম্ভীর কন্ঠে বললো–ফুপিমনির কথায় তুমি কষ্ট পেয়েছো,তাই না?জানো, উনাকে না আমারও একটু-ও ভালো লাগেনা।সবসময় কেমন করে কথা বলে।আম্মু সিরিয়াল দেখে না,ওই সিরিয়ালের খারাপ কুটনি মহিলাদের মতোই উনার কথা,আচারন।যা আমার একটুও ভালো লাগেনা।এজন্য আমার ফুপিমণিকেও আমার একটুও পছন্দ নয়।

‘এসব কি কথা নাফিম।এভাবে বলতে নেই।উনি তোমার গুরুজন হন-না।আর গুরুজনদের নিয়ে এভাবে বলতে আছে?বলতে নেই।নাফিমতো গুড বয়।আর গুড বয়-রা কখনো ব্যাড বয়দের মতো কথা বলেনা।

নাফিমের মাথায় হাত বুলিয়ে কথাগুলো বললো কৌড়ি।চোখ তুলে তাকালো নাফিম।মুখ এখনো তার ভারাক্রান্ত।বললো–ফুপিমণি ভালোভাবে কথা বলতে পারেন না!ভালো করে কথা বললে তো হয়ে যায়।তবে কেনো বলেন না?তিনি ভালো করে কথা বলেন না এজন্য তো উনাকে আমার ভালো লাগেনা।আর আমার ফুপিমণিকে ভালো না লাগলে,তো আমি কি করবো?

‘তবুও ওভাবে বলতে নেই।আর কখনো বলবেনা। ঠিক আছে?

অনেক্ক্ষণ বাদে হালকা মাথা দুলিয়ে সম্মতি জানালো নাফিম।ফের বললো—বড়মা তোমায় খেতে ডাকছে।চলো।

খেতে যেতে কৌড়ির একটু-ও ইচ্ছে করছেনা।তবু-ও ডাকতে পাঠানো মানুষটাকে সে অসম্মান করতে চায়না।মানুষটা তাকে এই একমাসে এতো আপন করে নিয়েছে,এতো ভালোবাসা দিয়েছে।মায়ের মতো করে কাওকে পাওয়া এবং তার মমতা ভালোবাসার,আদর শাসনের ছায়াতলে থাকা সত্যিই ভাগ্যের ব্যাপার।সারাদিনে মানুষটা প্রচুর ব্যস্ত থাকে, তারমধ্যও নিয়ম করে কৌড়ির ভালোমন্দের খোঁজখবর নিয়ে চলেছে প্রতিনিয়ত।তাই উনার ডাকতে পাঠানোটা উপেক্ষা করা সমুচিত মনে করলো না।না যাওয়াটা অভদ্রতাও মনে হলো।হাত টান পড়তেই দেখলো,নাফিম হাতের আঙুল আঁকড়ে ধরে টানছে।

‘চলো।

ইচ্ছের বিরুদ্ধে উঠে দাঁড়ালো কৌড়ি।নাফিমের ডাককে মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দিয়ে সামনে এগোলো।

রোজ এই সময়টায় বাড়িটা থাকে নিস্তব্ধ। কেউ বাড়ি থাকেনা।খেয়েদেয়ে যেযার কর্মস্থল বা স্কুল কলেজ চলে যায়।আর আজ বাড়িতে থাাক সত্ত্বেও সবাই এখনো ঘুমে।দশটার বেশি বাজতে চললো অথচ কারও খাওয়া দাওয়ার কোনো হদিশ নেই।বাপ ছেলেদের সাথে পাল্লা করে মেয়ে দুটো আজ ঘুমিয়ে। কতোবার ডাকতে পাঠালেন,নিজেও ডেকে এলেন।অথচ এখনো তাদের খোঁজ নেই।এসব নিয়েই ছোটো জায়ের সাথে টুকিটাকি বকেই চলেছেন নীহারিকা বেগম।বড় জায়ের মৃদুস্বরের বকা শুনে স্বান্তনা রহমান দীর্ঘশ্বাস ফেললেন।তিনিও একদফা বকে ধমকিয়ে ছেলেটাকে তুলতে পারলে-ও, ছেলের বাবা আর মেয়েটাকে এখনো তুলতে পারলেন না।প্রতি শুক্রবারের দিনটা এলেই এরকম এলোমেলো সকালটা পার হয়ে যায়।কৌড়িকে আসতে দেখেই নীহারিকা বেগম বকা থামিয়ে বললেন।

‘এসেছিস?তবে বোস।তুই আর নাফিম আপতত খেয়ে নে।ওরা যে যখন উঠবে,পারলে যেযার মতো সে তখন খেয়ে নেবে।ওদের আশায় বসে থাকলে,সকালে আর কারও খাওয়া হবেনা। না খেয়ে বসে থাকতে হবে।

অন্য দিন হাজার বাহানা করলেও আজ নাফিম চুপচাপ খেতে বসলো।বিষয়টা স্বান্তনা রহমানের হজম না হলেও,কিছু বললেন না।কৌড়ি মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানিয়ে নাফিমের পাশের চেয়ারটায় খেতে বসলো।নীহারিকা বেগম খাবার বেড়ে দিলেন দু’জনকে।ফের কিছু লাগলে,নিজেদের নিয়ে নিতে বলে রান্নাঘরে ঢুকলেন।কিছুসময় বাদে সেখানে হাজির হলেন ডালিয়া বেগম।কৌড়িকে দেখেই নাকমুখ কুঁচকে গেলো উনার।
বাড়িটা কি আশ্রম বানিয়ে রেখেছে,যার যখন বাপ মা মরে যাবে।এবাড়িতেই তাকে এনে সমাদর করতে হবে!আর এই বাড়ির মানুষগুলোও হয়েছে সেরকম।বিশেষ করে উনার ভাই আর ভাবি।একেবারে দয়ার সাগর।যা উনার একটুও পছন্দ নয়।ডায়নিংয়ে এসে বসতে বসতে গলা চড়াও করে নীহারিকা বেগমকে উদ্দেশ্য করে বললেন।

‘বুঝলে ভাবী।বড়ভাইয়ের না বাড়িটার নাম বেলা শেষে রাখা উচিত হয়নি।বাড়িটার নাম রাখা উচিত ছিলো, আশ্রিতাদের আশ্রম।এটাই এ-বাড়ির যোগ্য নাম বলে মনেহয় আমার।

রান্নাঘরে বেসিনে থালাবাসনের টুংটাং শব্দতুলে কাজ করছিলো রানী।হাত থেমে এলো তার।এরকম খোঁটা এবাড়িতে কতো শুনেছে সে।তবে নিজের আশ্রয় না থাকায় আর কতোগুলো ভালো মানুষের জন্য এখনো টিকে আছে এখানে।বিয়ের পর একটা সময় মনে হয়েছিলো,এবার বুঝি নিজের বলে একটা জগত হলো।সেটাও একটা সন্তানের অভাবে কপালে সইলো না।দীর্ঘশ্বাস ফেলে টুংটাং শব্দ তুলে আবার-ও কাজে মনোযোগ দিলো সে।খাওয়া থেমে গেলো কৌড়ির-ও।নিঃশ্বাস ভারী হয়ে এলো।কটাক্ষ করে বলা কথাগুলো কাকে উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে বুঝতে বাকী রইলোনা তার।গালের মধ্যে থাকা খাবার গলায় কাঁটার মতো বিঁধে রইলো।অজান্তে দু’চোখের কোল ভরে এলো।
নীহারিকা বেগম হতবাক হয়ে চেয়ে রইলেন।শেষ পর্যন্ত এই মেয়েটাকে-ও কটাক্ষ করতে ছাড়লোনা।নিজের মেয়ের জায়গায় বসিয়ে এই মেয়েটাকে একবার ভাবতে পারলোনা।প্রচন্ড মেজাজ খারাপ হলো উনার।স্বান্তনা রহমান নাকমুখ কুঁচকে ফেললেন।কিছু বলতে যাবেন তারআগে পুরুষালী গলার আওয়াজে তিনি চুপ হয়ে গেলেন।

‘ঠিকই বলেছেন ফুপুমনি।নাহলে আপনিই বা থাকতেন কোথায়?আপনিও তো এবাড়ির আশ্রিতা।শুনেছি মেয়েরা বিয়ের পর নাকি বাপের বাড়ির আশ্রিতা হয়ে যায়।

চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here