মন_বাড়িয়ে_ছুঁই ❤ #পর্বসংখ্যা_৪১. #ফাবিয়াহ্_মমো .

0
69

#মন_বাড়িয়ে_ছুঁই ❤
#পর্বসংখ্যা_৪১.
#ফাবিয়াহ্_মমো .

অংশ ০১.

সূর্যের চাকাটা সম্পূর্ণ আলো হরণ করে চারধার অন্ধকার করে দিলো। প্রকৃতি যেনো নিরব হতে গিয়ে কুয়াশার প্রহেলিকায় ঘাপটি মেরে বসলো। কেমন শূন্য শূন্য আবহাওয়া চারপাশে ছড়িয়ে আছে, শূন্যতার সাথে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে আছে নিঃশব্দ রুমটা। আলোহীন রুম, সন্ধ্যার পর বাতি জ্বালানোর ইচ্ছে জাগেনি। খোলা জানালাটা লম্বা-লম্বা পর্দা দ্বারা আবৃত, বাইরে থেকে ঠান্ডা হাওয়াটা পর্দার বুক ফুলিয়ে শূন্যে তুলে দিচ্ছে, ওমনেই রুমের ভেতর প্রবেশ করছে দূরের নিয়নবাতির টিমটিমে আলো। স্টাডিটেবিলকে সামনে রেখে রকিং চেয়ারে বসে আছে মাহতিম। তার চোখের কপাটদুটো ক্লান্ত ভঙ্গিতে বন্ধ করে রেখেছে। মনের ভেতর বহুচিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে আজ। সেসব চিন্তাগুলো সারিবদ্ধ ভাবে সজ্জিত করে ভাবছে, একে-একে সব চিন্তার সমাধান ওই অন্ধকার রুমে নিঃসঙ্গ অবস্থায় ভাবছে। এসময় যদি এক কাপ গরম কিছুর আয়োজন হতো, তবে মন্দ হতো না। কিন্তু আবদার করতেও এখন সংযত থাকা লাগবে, যতটুকু সান্নিধ্য মেহনূরের প্রয়োজন ঠিক ততটুকুই সে পূরণ করবে। মন তো সবসময়ই প্রয়োজনের তুলনায় বেশি চায়, মনের সব খোরাক যদি সাথে-সাথে পূরণ হতো, তবে অপেক্ষার পর সুমিষ্ট আনন্দটা এতো উপভোগ্য ঠেকতো না। বন্ধ দরজাটা কে যেনো খুলছে, নব্ মোচড়ে অতি সাবধানে রুমের ভেতরে পা রেখেছে, আবার সুন্দর করে দরজাটা আগের মতো বন্ধও করে দিলো। মাহতিমের কর্ণধার হামেশার মতো এখনো সজাগ, সমস্ত ইন্দ্রিয় খুব সচলভাবেই চালনা করছে সে। যে মানুষটা রুমে ঢুকেছে তার পায়ের আওয়াজটাও কিছুক্ষণ নিঃশ্বাস আঁটকে অনুভব করলো, অনুমান শেষে নিঃশ্বাসটা স্বাভাবিক ভাবে ছেড়ে দিতেই ততক্ষণে উক্ত ব্যক্তি নিকটে এসে হাজির। বুকভর্তি লম্বা নিশ্বাস টানলো মাহতিম, এটাও তার নিজস্ব কায়দা। বাতাসে যেই গায়ের গন্ধ মিশে যায়, সেই গন্ধটা টেনে আরেকবার পরোখের কাজটা সেরে নিলো। রকিং চেয়ারে মাথা ও পিঠ হেলানো অবস্থায় চোখ বন্ধ রেখেই মাহতিম উক্ত ব্যক্তিকে চমকে দিয়ে বললো,

– আমি জেগে আছি মেহনূর। লুকোচুরির প্রয়োজন নেই।

আশ্চর্য হয়ে গলার কন্ঠনালি পযর্ন্ত শুকিয়ে গেলো। যেই মানুষটা চোখ বুজে প্রায় নিদ্রা মৌনে শান্ত হয়ে আছে, সে কি করে ঠিকঠাক অনুমানটা করতে পেলো? মাহতিম কি কানে ব্লুটুথ ডিভাইস লাগিয়েছে, বা এমন কিছু সিস্টেম আছে যেটা দ্বারা সে চোখ বুজেও সঠিক অনুমান করতে পারে? মেহনূর অবাক দৃষ্টিতে পিটপিট করে তাকিয়ে থাকতেই হঠাৎ একজোড়া চোখ চট করে তাক হলো। সঙ্গে সঙ্গে দেরি না করে কাঁচুমাচু ভঙ্গিতে চোখ নামিয়ে ফেললো মেহনূর। আশ্চর্য অবস্থার রেশ এখনো কাটেনি, বারবার চোরা দৃষ্টি দিয়ে মাহতিমকে একটু-একটু করে দেখছে। এমন অদ্ভুত মানুষ দ্বিতীয়টি দেখেনি মেহনূর, অন্ধকারের মধ্যেও মানুষটা যেনো সবই টের পাচ্ছে। আধো-আধো গলায় আবছা সুরে সঙ্কোচের সাথে বললো মেহনূর,

– আ-আ-আপনি কি করে বুঝলেন?

ফিসফিস করে হেসে দিলো মাহতিম। হাসিটা চোখে-মুখে স্থায়ী রেখে দাঁত দিয়ে নিচের ঠোঁটটা আবদ্ধ করে হাসি আঁটকালো, হাসির ছলকে তাকিয়ে থাকতেই তর্জনীটা দুবার নাড়িয়ে কাছে আসার ইশারা করলো। তর্জনীর নাড়ানো দেখে ঢোক গিললো মেহনূর। একবার থেমে যাওয়া তর্জনীর দিকে তাকালো সে, আরেকবার হাঁশফাঁশ দৃষ্টিতে মাহতিমের দিকে তাকালো। কালো শার্ট গায়ে হুড়ি পরা লোকটা এখনো নিচের ঠোঁট কামড়ে তার দিকে তাকিয়ে হাসছে, মেহনূর মাথাটা নিচে ঝুঁকিয়ে চেয়ারটার দিকে দু’কদম এগিয়ে যেতে লাগলো। রকিং চেয়ারটাও ‘ ঘ্যাড়ঘ্যাড় ‘ জাতীয় শব্দ করে উঠলে আড়চোখে দেখতে পেলো, মানুষটা এখন আর হেলে নেই। সে এখন সোজা হয়ে বসেছে, খুব দক্ষতার সাথে ফ্লোরে পা ঠুকে চেয়ারটা সম্পূর্ণরূপে মেহনূরের মুখোমুখি করে নিলো, মেহনূর এসে পায়ের কাছে দাঁড়ালে নিজের শূন্য হাতদুটো বাড়িয়ে দিলো মাহতিম। দুটো বাড়িয়ে দেওয়া হাতের দিকে একবার-একবার করে দৃষ্টি দিলো মেহনূর, নত চোখজোড়া বেখেয়ালি ভাবে উপরে তুলতে নিলে হঠাৎ সম্মোহন আবেশে থমকে গেলো সে। স্থির দৃষ্টির মাঝে হাসিমাখা চোখদুটো কেমন করে যেনো একীভূত হয়ে গেলো, মেহনূর একবারের জন্যও পলক ফেলার কথা চিন্তা করতে পারলো না। ধীরে-ধীরে বাড়িয়ে দেওয়া হাতদুটোর দিকে আনমনে হাত তুলতে লাগলো, নির্বিঘ্নে শূন্য হাতদুটোর উপর নিজের হাতজোড়া ধীরভাবে ছেড়ে দিতে থাকলো মেহনূর। ধীরগতিটা সহ্য হলো না মাহতিমের, সেই ধীরগতিকে এক লহমায় উপেক্ষা করে পাঁচ আঙ্গুলে মুঠোবন্দি করে সে নিজেই খাবলে ধরলো। শিরশির করে শিউরে উঠার সুযোগও পেলোনা মেহনূর, ক্ষণিকের ভেতর অকুন্ঠ হৃদয়ে হেঁচকা টান মারলো মাহতিম। পায়ের তলা থেকে ফ্লোরের সাদা টাইলস হড়কে যেতেই তৎক্ষণাৎ চোখ খিঁচে ফেললো মেহনূর, ভয়ে হৃৎপিন্ডটা যেনো একলাফ দিয়ে গলায় বসে গেছে। কিছুক্ষণ হা করে আতঙ্কের নিশ্বাসগুলো ছাড়তেই ছোট-ছোট চোখে তাকালো মেহনূর, বুকটা এখনো হুল্লোড় অবস্থায় ঢিপঢিপ করছে। ঠোঁট-গলা শুকিয়ে চৌচির যেনো, পানির জন্য খাঁ খাঁ করে দামাল করছে। কপালের উপর বিন্দু-বিন্দু ঘামও জমে গেছে মেহনূরের, ঘামের আস্তরনের উপর ছোট চুল এসে আষ্টেপৃষ্ঠে লেপ্টে আছে। লেপ্টানো চুলগুলো ডানহাতে সরিয়ে দিলো মাহতিম, সেই হাতটা দিয়েই মেহনূরের গালটা আদর করে ধরলো। মাথার পেছন থেকে খোপা পাঁকানো ব্যান্ডটা খুলে নিতেই বন্দি খাঁচার পাখির মতো কেশরাশি মুক্ত হতে লাগলো, প্রথমে ঘাড় ছুঁয়ে পিঠের উপর পরলো, এরপর অবাধে পিঠ ছাড়িয়ে ঝপ করে ফ্লোরের উপর জমা হলো। গালটা ধরে নিজের কাছে আনলো মাহতিম, সরু-চিকন নাকটার ডগায় আলতো করে নিজের নাক ছুঁইয়ে নিলো। অনুভূতির কাছে নত স্বীকার করে ফের চোখ বন্ধ করলো মেহনূর, মুক্ত হাতদুটো দিয়ে বেখেয়ালেই হোক, বা ইচ্ছাকৃত, সে মাহতিমের কলার দুটো হালকা করে চেপে ধরলো। নাকের উপর ছোট্ট স্পর্শ ছাপিয়ে শীতল কন্ঠে নরম সুরে বললো,

– তোমাকে চেনার জন্য বেশি কিছুর দরকার নেই।

উত্তর শুনে ভ্রু কুঁচকালো মেহনূর। চোখ খুলে চকিত ভঙ্গিতে প্রশ্ন ছুঁড়ে বললো,
– কেনো?
আবার হাসলো মাহতিম। গাল থেকে হাত সরিয়ে কোমরের ডানপাশটায় রেখে দিলো, মোলায়েম কন্ঠে ধীরভাবে বললো,
– মনে নেই?

ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকতেই হঠাৎ কাটা জায়গায় চুমুর ঘটনা মনে পরলো তার। আকস্মিক লজ্জায় চোখ নামিয়ে স্ফুট সুরে বললো মেহনূর,
– জ্বী।

লজ্জায় ছোটোখাটো হওয়া মুখটার দিকে দৃষ্টি রেখে চেয়ারে পিঠ ছেড়ে দিলো মাহতিম। কলার থেকে মেহনূরের হাতদুটো ফসকে যেতেই মেহনূর চোখ খুলে তাকালো। চেয়ারের দুই হ্যান্ডেলে সোজা করে হাত রাখলো মাহতিম, নরম রূপটা সাইডে ফেলে এবার যেনো মূখ্য রূপে ফিরে আসলো। মেহনূর হাসিশূন্য মুখটার কারণ ধরতে পারলো না, অকস্মাৎ লজ্জার বরফটা পানি হয়ে কৌতুহলের সাগরে হারিয়ে গেলো তার। সহজ রূপ পালটে কাঠিন্যের মোড়কে আবদ্ধ হলো মাহতিম, গলায় ঝাঁঝ-তেজ-দাপট মিশিয়ে বললো,

– আমাকে যদি কেউ ঠাস করে চ’ড় মারে, এর পরিবর্তে তুমি তাকে কি করবে? কোনো মিনমিনে জবাব চাই না। স্ট্যাট-কাট কোয়েশ্চ্যান করেছি, স্ট্যাট-কাট আন্সার দিবে। ভেলকিবাজি আমার সামনে করার চিন্তা করবে না মেহনূর। ভালো মানুষের মতো উত্তর দাও।

কথার তেজ দেখেই অবাক হয়ে গেলো মেহনূর। এই মূহুর্তে তাড়াতাড়ি জবাব না দিলে স্থিতি-পরিস্থিতি দুটো বাজে হয়ে যাবে। মেহনূর কয়েক সেকেন্ড চিন্তা করে মাহতিমের দিকে বললো,
– ওটা অবস্থার উপর নির্ভর করছে। যদি মা…

চট করে কথা কাটলো মাহতিম। শক্ত কন্ঠে বললো,
– মা আমার গায়ে কখনো হাত তুলেনা। তাকে স্কিপ করো।

আবারও ভাবনাচিন্তায় পরলো মেহনূর। এ কি জ্বালা? এমন অসময়ে কেমন জেরা চালাচ্ছে? মাহতিমকে যদি কেউ চড় মারে তাহলে মেহনূর তো কিছুই বলতে পারবে না। সে তো কখনো উঁচু গলায় ধমক পযর্ন্ত দেয়নি। নিজেকে সবকিছু থেকে গুটিয়ে রাখতে গিয়ে অন্যায়ের উপর গলা উঁচাতে শিখেনি। উলটো ছোট থেকে ধমক-মার-গালি খেয়ে বড় হয়েছে। কোনো উত্তর না পেয়ে অসহায় চোখে তাকালো মেহনূর, নিজের অযোগ্যতার উপর ধিক্কার দিতে ইচ্ছে করছে এখন। প্রচণ্ড কান্না পাচ্ছে, কেনো এসব বাড়ি থেকে শিখলো না? মেহনূরের নির‍ুত্তর-নিরুত্তেজ অবস্থা দেখে রাগে শরীরের চামড়া জ্বলে যাচ্ছে! মানুষ তো নিজের খাতিরেও একটু-আধটু গর্জে, একটা কাঠগড়ায় দাঁড়ানো আসামীও নানা মিথ্যে যুক্তি সাজিয়ে বেঁচে যায়, অথচ ওকে একা ফেলে গেলে জীবনেও স্বস্তিতে থাকবেনা মাহতিম। এবার রাগের হুঙ্কারটা রন্ধ্রে-রন্ধ্রে দামামা ফাটাচ্ছিলো, যা করতে চায়নি আজ মেহনূরের সাথে তাই করলো। মেহনূরের দু’বাহু বাঘের থাবার মতো খামচে ধরে কাছে টানলো মাহতিম, রাগান্বিত চাহনি দিয়ে উত্তপ্ত তেজে নিশ্বাসগুলো ফোঁস-ফোঁস শব্দ করে ছাড়ছিলো। মেহনূর দুপাটি দাঁত শক্ত করে ব্যথা চেপে নিলো, ব্যর্থ হয়ে গেলো সে। অন্তরের শিরায়-শিরায় ব্যথার ইন্ধন জেগে উঠতেই মস্তিষ্ক তখন চোখের বহিঃপথে অশ্রু ছেড়ে দিলো, দাঁত আরো শক্ত করলো মেহনূর। চোখ থেকে একটা অশ্রুও নিচে পরতে দিবে না, ব্যথা হোক, আরো হোক, এটাই তার প্রাপ্য! রাগটা কোনো আঙ্গিকেই কমার অবস্থাতে ছিলো না, মাহতিম সেটা চড়াও করে ফলিয়ে দিলো, দাঁত চিবিয়ে চিবিয়ে বললো,
– তোমাকে কেউ যদি চ’ড় মারতো, আমি ওর নাম-নিশানাই মুছে দিতাম! রজনী মামী তোমাকে আদর করে গিয়েছে, অনা সতেরটা শাড়ি নষ্ট করে দিয়েছে, দুজন মিলে তোমার সাথে মাইন্ড-গেম খেলছে তুমি এসব বুঝতে পারো না? তুমি কি শিশু? তুমি কি এখনো চাও, আমি কাজ ফেলে ছুটি নিয়ে তোমার সেবা করি? তুমি কবে বুঝতে শিখবে তোমার এখন নরম সেজে থাকলে চলবে না! তুমি এখন নিজেতে মত্ত নও মেহনূর! তোমার সাথে আমার অস্তিত্ব গেঁথে আছে। ক’দিন পর তোমার সাথে আমার শারীরিক-মানসিক-পারিবারিক-সামাজিক সবকিছু মিশে যাবে, আমি সর্বক্ষণ তোমার পাশে বসে থাকতে পারবো না বলদ মেয়ে! আমার চাকরী আছে আমার উপর একটা সুস্থ টিম আছে, একটা সুস্থ ডিপার্টমেন্ট নির্ভর করছে। সময়ে-সময়ে তাদের সাথে কাজ করাটা আমার কর্তব্য-ধর্তব্য দুটোই! তোমাকে কি করে বোঝাবো, আমি এখান থেকে এক পা সরিয়ে ফেললে তোমার দিকে মনোযোগ দেওয়ার পযর্ন্ত সময় নেই! তুমি প্রতিবার একেকজনের চ’ড়-থা’প্পর —

নরম হাত দিয়ে মুখে চাপা দিলো মেহনূর। মাথাটা ‘ না ‘ সূচকে নাড়িয়ে ঠোঁট উলটে বলতে লাগলো,
– মা উঠে যাবে, দোহাই চুপ করুন। আমাকে মারলে মারুন, যা খুশী তাই করুন। চিৎকার করলে মা উঠে আসবেন।

হাত সরিয়ে ক্রুদ্ধ চাহনিতে তাকিয়ে রইলো মাহতিম। রাগের আড়টা তখনো বজায় রেখে চলছে সে। মেহনূরের বাহুটা তাচ্ছিল্যের সাথে ছেড়ে দিতেই চোখ বন্ধ করে রাগ হজমের প্রক্রিয়া চালাতে থাকে। আঁচলে ভেজা চোখ শুষ্ক করতেই আর্দ্র কন্ঠে বললো মেহনূর,
– একটা প্রশ্ন করি?

কিছুক্ষণ নিরব থাকলে হঠাৎ শঠতার সাথে জবাব এলো,
– বলো,

প্রশ্নটা করবে-কি-করবে না এমন দ্বিধায় ফের ফাঁসলো মেহনূর। শেষপর্যন্ত গলা ঝেড়ে আমতা-আমতা সুরে বলে উঠলো,

– আপনি অনামিকার সাথে কি করেছিলেন? ও আপনাকে কেনো ‘ চরি’ত্রহীন ‘ বলে ডাকে? কেনো বলে আপনি আমাকে ভো’গের জন্য তুলে এনেছেন? ওর পিঠের দাগগুলো আপনি করেছেন না? আমি আপনার ভোগবস্তু?

দুই মিনিট যাবৎ কোনো শব্দ হলো না রুমে। একদম শান্ত, সুনশান, নিঃশব্দ হয়ে রইলো অন্দরখানা। উত্তরের অপেক্ষায় মেহনূরের তৃষ্ণার্ত মন উন্মুখ হয়ে ছিলো, এরপরই বিকট শব্দ যেনো পুরো রুমের ভেতরটা ঝালা-পালা করে দিলো! চুরচুর করে মারাত্মক এবং তীব্র শব্দে সবার ঘুম যেনো তখনই লন্ডভন্ড! একলাফে শয্যা ছেড়ে সবাই তখন শব্দ-উৎসের দিকে দ্রুতবেগে দৌঁড় লাগালো, সৌভিক দৌঁড়ের গতিতে সবাইকে পিছু ফেলে দরজার কাছে সবার আগে পৌঁছলো। এক ধাক্কায় দরজা খুলতে যাবে, ভেতর থেকে আরেকদফা শব্দ তেড়ে এলো, শব্দের উত্তেজিত আওয়াজে দুকান বরাবর হাত চেপে খিঁচে উঠলো সৌভিক। তাড়াতাড়ি উত্তেজনা কাটিয়ে দরজা খুলে ভেতরে ঢুকলো, ওমনেই ভয়ে-আতঙ্কে বিস্ফোরণ চাহনিতে ‘ মাহতিম ‘ বলে চিৎকার দিয়ে উঠলো!

– চলমান .

#ফাবিয়াহ্_মমো .

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here